Tareq Nurul Hasan's Blog, page 9

October 6, 2020

২০১৬, ৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার

  তীব্র একটা মাথাব্যথা নিয়ে সামনের কালো স্ক্রিনের দিকে চুপ করে তাকিয়ে আছি। মনে হচ্ছে যেন মাথার ভেতরে করোটির আকাশে বর্ষার ঘন কালো মেঘ ভিড় করে আছে অনেকগুলো। একটা লম্বা কোনো বাঁশের লাঠি দিয়ে সেগুলোকে ঠেলে সরিয়ে দিতে মন চাইছে। ডান দিক থেকে ঠেলতে ঠেলতে মেঘগুলোকে বাম দিক দিয়ে বের করে দেয়া গেলে ভালো হতো। অথবা বাম থেকে ঠেলে ঠেলে ডান দিক দিয়ে। জাস্ট মাথা থেকে বের করে দেয়া আর কি, যেমন করেই হোক। 

মাঝে মাঝে আবার সেই মেঘে বজ্রপাতও হয়, ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায় তখন। কপাল আর চোখের মধ্যবর্তী   কোনো একটা অংশ হঠাৎ চিড়িক দিয়ে ওঠে। আমি বামদিকের চুল টেনে ধরি। তাতে কাজ হয় না, তখন চুলের ভেতরে আঙুল চালিয়ে মেঘগুলোকে এদিক ওদিক সরিয়ে দিতে থাকি। কিছু সরে সরে যায়, কিছু রয়ে যায়।

আমার মনে হতে থাকে চার বছর আগের যে কোনো একটা দিন, পুরনো হয়ে যাওয়া আমাদের সেই দোতলা বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে উঠে এসে আম্মু যদি এখন আমার কপালে হাত রাখতো, মেঘগুলো ঝরে গিয়ে মাথা ব্যথাটাও নিশ্চিত কোথাও চলে যেত। 

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on October 06, 2020 03:50

September 24, 2020

মারজারি বারনার্ড | লেখালেখি- ২

Marjorie Faith Barnard


 মারজারি বারনার্ড - এর দি পারসিমন ট্রি- খুব বিষণ্ণ একটা গল্প। মনোলগের মত করে লেখা। 

শহরতলীর একটা নির্জন রাস্তার পাশে গল্পের কথকের বাড়ি। সে বাড়ির জানালায় দাঁড়িয়ে সে রোজ বাইরে চেয়ে থাকে। গল্পজুড়ে একাকীত্ব আর অপেক্ষা। রাস্তার উল্টোপাশের জানালায় সেই মেয়েটিকে দেখা যাবে কি না…। 

“Her window was open all day long now, very fine thin curtains hung in front of it and these were never parted. Sometimes they moved but it was only in the breeze.” 

গল্পের এই অংশটুকু পড়ে হঠাৎ চমকে গেলাম। পড়া থামিয়ে এক মুহুর্ত চুপ করে থাকতেই যেন কানে ভেসে এলো, “সারাদিন গাছের ছায়ায়, উদাসী দুপুর কেটেছে; যা শুনে ভেবেছি এসেছ, সে শুধু পাতারই আওয়াজ… সারাদিন তোমায় ভেবে…।” 

শহর, দেশ অথবা সময়ের পার্থক্য মুছে দিয়ে কেমন করে যেন দু’জন মানুষের বেদনা মিলে মিশে যায়। 

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 24, 2020 19:11

September 10, 2020

হেমিঙওয়ে | লেখালেখি - ১

Ernest Hemingway

গল্পের চরিত্র বোঝাতে গিয়ে আমরা Character শব্দটা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি। 
খেয়াল করে দেখেছি, লেখার আগে আমি ক্যারেক্টারগুলো নিয়ে অনেক সময় নিয়ে চিন্তা করি, গল্প বা প্লটের তুলনায় অনেক বেশি সেটা। কারণ ঘটনা বা প্লট আসলে কেবল একটা জায়গা তৈরি করে দেয় চরিত্রের জন্যে, তার বেশি কিছু নয়। 

ভাবতে ভাবতে সেই চরিত্রগুলো একেবারে সিনেমার মত জীবন্ত হয়ে এলে তারপরে তাদের নিয়ে গল্প লেখা শুরু করি। কারণ লেখাটা তখন আমার জন্যে সহজ হয় অনেক। আমার সবগুলো গল্পই এভাবে লিখেছি, কোনও ব্যাতিক্রম নেই। ইদানীং এই ভাবনাগুলোকে একটা প্রসেসে ফেলার চেষ্টা করছি। নিজের সুবিধার জন্যেই।

ভাবার চেষ্টা করছি, একটা চরিত্র কী করে জীবন্ত হয়ে ওঠে?

সেটা একটা উপায়েই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সম্ভব। যদি সেই চরিত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড জানি আমরা। মানে গল্পে তার যতটুকু উপস্থিতি, সেটার আগে-পরের ঘটনাও যদি জানা থাকে আমাদের। যেমন, সেই চরিত্রের ছোটবেলা, তার ভাবনা, ভয় এবং ভালোবাসা নিয়ে যদি আমরা জানি। 

আরও সহজ করে বললে, যদি সেই চরিত্রের স্মৃতি বা মেমরিজে আমাদের access থাকে, তাহলেই হয়তো সেই চরিত্রের ‘জীবন্ত’ হয়ে ওঠা সম্ভব। 

হেমিঙওয়ে-র ‘আ মুভেবল ফিস্ট’-পড়তে গিয়ে দেখলাম, চরিত্র বোঝাতে এক জায়গায় ক্যারেক্টার না লিখে হেমিঙওয়ে লিখেছে- People. 

আমার মনে হলো, তাইতো! গল্পের জন্যে ভাবতে গিয়ে যদি ক্যারেক্টার না ভেবে পিপল ভাবি, তাহলেই ভাবনার গতিপথ সহজতর হয়ে যায়। ক্যারেক্টার-এর মধ্যে যে একটা বায়বীয় এবং অধরা একটা ব্যাপার আছে, পিপল-এ বরং তার উল্টো— আমাদের আশেপাশের চলেফেরা  মানুষের মত জীবন্ত একটা অবয়ব আছে। 

গল্পের জন্যে ‘ক্যারেক্টার’ না ভেবে ‘পিপল’ ভাবাটা বেশি কাজের হবে বলে মনে হচ্ছে। 

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 10, 2020 07:55

হেমিঙওয়েঃ ১ | লেখালেখি

গল্পের চরিত্র বোঝাতে গিয়ে আমরা Character শব্দটা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি। 

খেয়াল করে দেখেছি, লেখার আগে আমি ক্যারেক্টারগুলো নিয়ে অনেক সময় নিয়ে চিন্তা করি, গল্প বা প্লটের তুলনায় অনেক বেশি সেটা। কারণ ঘটনা বা প্লট আসলে কেবল একটা জায়গা তৈরি করে দেয় চরিত্রের জন্যে, তার বেশি কিছু নয়। 

ভাবতে ভাবতে সেই চরিত্রগুলো একেবারে সিনেমার মত জীবন্ত হয়ে এলে তারপরে তাদের নিয়ে গল্প লেখা শুরু করি। কারণ লেখাটা তখন আমার জন্যে সহজ হয় অনেক। আমার সবগুলো গল্পই এভাবে লিখেছি, কোনও ব্যাতিক্রম নেই। ইদানীং এই ভাবনাগুলোকে একটা প্রসেসে ফেলার চেষ্টা করছি। নিজের সুবিধার জন্যেই। 

ভাবার চেষ্টা করছি, একটা চরিত্র কী করে জীবন্ত হয়ে ওঠে? 

সেটা একটা উপায়েই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সম্ভব। যদি সেই চরিত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড জানি আমরা। মানে গল্পে তার যতটুকু উপস্থিতি, সেটার আগে-পরের ঘটনাও যদি জানা থাকে আমাদের। যেমন, সেই চরিত্রের ছোটবেলা, তার ভাবনা, ভয় এবং ভালোবাসা নিয়ে যদি আমরা জানি। 

আরও সহজ করে বললে, যদি সেই চরিত্রের স্মৃতি বা মেমরিজে আমাদের access থাকে, তাহলেই হয়তো সেই চরিত্রের ‘জীবন্ত’ হয়ে ওঠা সম্ভব। 

হেমিঙওয়ে-র ‘আ মুভেবল ফিস্ট’-পড়তে গিয়ে দেখলাম, চরিত্র বোঝাতে এক জায়গায় ক্যারেক্টার না লিখে হেমিঙওয়ে লিখেছে- People. 

আমার মনে হলো, তাইতো! গল্পের জন্যে ভাবতে গিয়ে যদি ক্যারেক্টার না ভেবে পিপল ভাবি, তাহলেই ভাবনার গতিপথ সহজতর হয়ে যায়। ক্যারেক্টার-এর মধ্যে যে একটা বায়বীয় এবং অধরা একটা ব্যাপার আছে, পিপল-এ বরং তার উল্টো— আমাদের আশেপাশের চলেফেরা  মানুষের মত জীবন্ত একটা অবয়ব আছে। 

গল্পের জন্যে ‘ক্যারেক্টার’ না ভেবে ‘পিপল’ ভাবাটা বেশি কাজের হবে বলে মনে হচ্ছে। 

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 10, 2020 07:55

September 3, 2020

হযবরল | সুকুমার রায়

 

হযবরল হযবরল by Sukumar Ray
My rating: 5 of 5 stars

গল্প লিখতে বসে যদি কখনও কল্পনার রসদে টান পড়ে তাহলে এই বইটি পড়ে নিয়ে আবার লেখায় ফিরতে পারেন।
আবার সম্পূর্ণ উল্টো ব্যাপার যদি ঘটে; নিজের গল্পে যদি লাগামছাড়া কল্পনার যোগান দেয়া নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন; যদি মনে হয়, বেশি হয়ে যাচ্ছে কি না, পাঠকে নিতে পারবে কি না, অথবা আপনি সামলাতে পারবেন কি না, তাহলেও এই বইটি পড়ুন।
এটি নিছক কোনও হাসির বই নয়।
বাঙালী লেখকদের জন্যে এটি অসীম উৎসাহ আহরণের নিমিত্তে অত্যাবশ্যকীয় একটি টেকস্টবুক।


View all my reviews
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 03, 2020 21:45

পরানের গহীন ভিতর | সৈয়দ শামসুল হক

 পরানের গহীন ভিতরপরানের গহীন ভিতর by Syed Shamsul Haque
My rating: 5 of 5 stars

মনে করতে পারছি না প্রথম কবে পড়েছিলাম, কিন্তু এত বছরের ব্যবধানে সম্পূর্ণ বইটা মাত্রই তৃতীয় বা চতুর্থবারের মত পড়া হলো। অথচ খুব পরিচিত লাইনগুলো বারবার দেখা বা শোনার জন্যেই কীরকম মাথায় ঢুকে বসে থাকে সবসময়, প্রায়শই বিড়বিড় করে আউড়ে যাই। এবারে পুরো বই পড়তে গিয়ে কিছু লুকনো মণি মাণিক্যের খোঁজ পেলাম।
যেমন এই লাইনটা- 'আমার আন্ধার নিয়া দেয় না সে একটাও তারা।'
অথবা এটা- 'মানুষ বোঝে না বইলা পুন্নিমার চান এত হাসে।'
শেষ করে অনেক কিছুই মনে হলো।
মনে হলো - এই বিশ্বায়নের যুগে বসে কোনও রকম মিশেল এড়িয়ে কি এরকম বিশুদ্ধ মাটিমাখা অনুভূতির কবিতা লেখা সম্ভব? মনে হলো- সৈয়দ হকের মত প্রতিভাবান মানুষ খুব বেশি কি পেয়েছে বাংলা ভাষা?

View all my reviews

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 03, 2020 21:44

August 19, 2020

আমরা সংস্কৃতিপ্রেমী বাঙালী সমাজ-

 আমরা হাসির গানে ভুঁড়ি দুলিয়ে হাসি, দুঃখের গান শুনে আহা উঁহু করে চোখে পানি আসুক বা না আসুক ফ্যাতফোত করে নাক টানি ঠিকই। নতুন গান শুনে হাততালি দিই, পিঠ চাপড়ে দিই, সেই গান ভুল বানানে লিখে এসএমএস পাঠিয়ে প্রেমিকার সাথে পেম-পেম খেলি। কিন্তু ক্ষুধার্ত শিল্পী সে গানের মূল্য চাইতে এলে এমন একটা ভাব করি যেন আমাদের পেটে লাথি মারল কেউ। ব্যাটা শিল্পী হয়েছিস, টাকা আবার কী? দুঃস্থ না হলে শিল্পী হওয়া যায় নাকি?

যুগটাই হলো ফ্রি-এর যুগ। ইন্টারনেটের জন্যে প্রতি মাসে বিল তো দিচ্ছিই, সেখান থেকে গানশুনতে আবার টাকাও দিতে হবে? যা বাবা! গান শুনে লাইক দিচ্ছি, শেয়ার দিচ্ছি, মাগনা প্রচার হচ্ছে না বলো? সেগুলোকেই নুন মরিচ মাখিয়ে পান্তা ভাতের সাথে খেয়ে ফেলো!

ছবি আঁকেন? প্লিজ দিন না এঁকে আমার পোষা কুকুরটার একটা হাস্যমুখের ছবি! ও আচ্ছা, তুমি ফটোগ্রাফার? আমার ছেলের খৎনা পরশুদিন, ছবি তুলে দিয়ো বাছা, টাকা হয়ত পাবে না কিন্তু লোকে চিনবে তোমাকে।

আপনি লেখক? সে তো আমিও লিখি; কেন, ফেইসবুক স্ট্যাটাস! ও আচ্ছা আচ্ছা, কবিতা? আবার উপন্যাসও! বাহ বাহ বেশ তো। তা ভাই বইয়ের দাম কতো? ২ ডলার!!! ইশ, জ্ঞান বিক্রি করছেন ভাই? ছি ছি ছি। পিডিএফ নেই?

জ্বি ভাই, সংস্কৃতিপ্রেমী গর্বিত বাঙালী সমাজ আমরা।
আমাদের গায়কদের মেরে ফেলে তাদের চামড়া দিয়ে আমরা টি-শার্ট বানাই। আমাদের মগজে নৈতিকতা কিংবা মূল্যবোধের জায়গা নেই কোনও, সেখানে কয়েক গিগাবাইট পিডিএফ ঠাসা!


লিংক ১ঃ গায়ক আসির আরমানের পোস্ট 

লিংক ২ঃ ইউটিউবে আইয়ুব বাচ্চু ও তাঁর ছেলে 

1 like ·   •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on August 19, 2020 17:02

August 8, 2020

| আশফাক নিপুণের টেলিফিল্ম 'ভিক্টিম' |

|| স্পয়লার এলার্টঃ নাটকের গল্প বলে দেয়া নেই কিন্তু সমাপ্তি নিয়ে ইঙ্গিত আছে ||

গতকাল সন্ধ্যায় নাটক দেখা শেষ হওয়ার পরে প্রথমেই মাথায় এসেছিলো, সুন্দর একটা নাটক কিন্তু শেষটা আরও ভালো হতে পারতো।

তখন মনে পড়লো কয়েকদিন আগে মার্গারেট এটউড এর 'ব্লুবেয়ার্ড'স এগ' গল্পটা পড়ে নিজের নোটসে এক লাইনে লিখে রেখেছিলাম, "সব গল্পকেই হয়তো সুনির্দিষ্ট কোনও সমাধান দেয়ার দরকার পড়ে না, বরং সমস্যা তৈরির সময়ের স্ট্রাগলকে বিষয়বস্তু করেও একটা গল্প খুব ভালো মানের হতে পারে।"

এটউডের গল্পের জন্যে আমার এই উদার নীতি আর আশফাক নিপুণের গল্পের জন্যে এই খুঁতখুঁতানি মনোভাবের কারণে নিজের উপরেই বিরক্ত হলাম খুব। এটাকে আমার বাঙালী মনের সঙ্কীর্ণতা ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না!

সে যাই হোক, শেষ কথা হলো, বহুদিন পরে খুব সুন্দর একটা বাংলা টেলিফিল্ম দেখলাম। যত্ন নিয়ে ভাবা গল্প আর সেই সাথে প্রত্যেকটি চরিত্রের অসাধারণ পরিমিত এবং সাবলীল অভিনয়ের ক্রেডিট নিঃসন্দেহে নির্মাতার।

আশফাক নিপুণের করা কাজ এখন থেকে খুঁজে খুঁজে দেখবো বলে ঠিক করে ফেললাম।

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on August 08, 2020 22:02

July 18, 2020

বাংলা ইবই এলো কাদের হাত ধরে?

| বাংলা ইবই এলো কাদের হাত ধরে? | 

মাসতিনেক ধরে একটা খুব দারুণ ভালো ব্যাপার ঘটে চলছে বাংলা বইয়ের জগতে, সেটা হচ্ছে, হঠাৎ করে অনেকগুলো প্রকাশনী এবং অনেক পাঠক বাংলা ইবই প্রকাশে ও পাঠে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।এতগুলো বছর আন্তর্জালে বাংলা ইবই ছিল খুবই স্বল্প-সংখ্যক, একেবারে হাতে গোনা যাকে বলে। তুলনায় এ বছরের প্রথমার্ধেই বিভিন্ন ইবুক স্টোরে বাংলা ইবইয়ের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

এর চেয়ে খুশির খবর আমার জন্যে আসলেই আর কিছু নেই। লম্বা সময় ধরে বাংলা ইবইকে জনপ্রিয় করতে এর খুঁটিনাটি নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে আসছি। গত কয়েকবছরে বেশ কয়েকটি বইয়ের ক্রমবর্ধমান বিক্রি এ ব্যাপারে আমাকে আরও বেশী আশাবাদী করে তুলেছে। যদিও বাংলাদেশে অনলাইন পেমেন্ট এবং ইবুকস্টোরের ব্যবহার সহজসাধ্য না হওয়ায় দেশের বাজারে ইবই প্রকাশের বাঁধা এখনও কাটেনি, তবে দেশের বাইরে বাংলা ইবইয়ের পাঠকসংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে, সম্ভবত, এই মহামারীর কারণেই, ঘরে বসে সহজলভ্য হবার সুবাদেই বাংলা ইবই প্রকাশের হার অনেক বেড়েছে।

এর মধ্যেই হঠাৎ খেয়াল করলাম, বাংলা ইবই কারা প্রথম প্রকাশ করা শুরু করেছেন বা কে কত আগে থেকে বাংলা ইবই প্রকাশ করে আসছেন- এ বিষয়ে কেউ কেউ নিজেই দাবী তুলছেন, আবার কেউ বা দুয়েকটি প্রকাশনীকে বাংলা ইবইয়ের পাইওনিয়ার বলে পিঠ চাপড়াচ্ছেন। এদিকে যাদেরকে বাহবা দেয়া হচ্ছে, তাঁরা সম্ভবত সঠিক তথ্যের অভাবেই সেই চাপড় পিঠ পেতে আরাম করে নিয়ে নিতে কোনও দ্বিধা করছেন না।

এসব দেখে শুনে এতদিন খুব একটা রা করিনি। প্রয়োজন মনে করিনি কারণ মনে হচ্ছিল এগুলো আসলে তেমন কোনও ব্যাপার নয়, বাংলা ইবই বাড়ছে এটাই আসল কথা।

কিন্তু ফেইসবুকে ইবই সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি গ্রুপে আসা যাওয়ার সুবাদে এরকম তথ্যের উপস্থিতি ইদানীং অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় আমি ভাবলাম, অন্তত বইদ্বীপের টাইমলাইনটুকু কোথাও লিখে রাখি। কেউ না কেউ কোনও একদিন সত্যের খোঁজ করতে গিয়ে এই লেখাটি খুঁজে পেতেও পারে, হয়ত এটা তখন কাজেও লাগবে।

বাংলা ইবই নিয়ে বইদ্বীপের টাইমলাইন।

১/ ০৪ মে ২০১২-

- 'কাঠের সেনাপতি' বইটির ইবুক ভার্সন বের করি smashwords ডট কম ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। প্রকাশক হিসেবে আমার নিজের নামই ছিল কারণ তখনও বইদ্বীপ প্রকাশনী প্রতিষ্ঠা করিনি। এ বইটিতে সে সময় প্রচুর কারিগরি ত্রুটি ছিল, ফন্ট ভাঙ্গা বা ভেতরের ফরম্যাটিং ঠিক-ঠাক ছিল না। পরবর্তীতে এটি ঠিকঠাক করে আরও দু'বার প্রকাশ করি ২২ অক্টোবর এবং ০৭ নভেম্বর ২০১২ সালে।

২/ ০৪ ডিসেম্বর ২০১২-

-বইদ্বীপ প্রকাশনীর ব্যানারে এবারে প্রথম ইবইটি প্রকাশ করি। এটির নাম 'ইলিয়াসের ঘোড়া'। সেই সময়ের অনুপাতে এর ভেতরে ভুল প্রায় ছিল না বললেই চলে। এটার আউটপুট নিয়ে বেশ খুশি ছিলাম আমি। ইপাব এবং মোবি দুই ভার্সনেই নির্ভুল আউটপুট এসেছিল এই বইটির।

৩/ ১৫ ডিসেম্বর ২০১২-

- বইদ্বীপ বিষয়ক প্রথম ঘোষণাটি আমার ব্লগ 'করি বাংলায় চিৎকার'- এ প্রকাশ করি।

৪/ ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪-

- এর মাঝে আরও কয়েকটি বই পরীক্ষামূলকভাবে প্রকাশ করে যখন মোটামুটি একটা কার্যপ্রণালী দাঁড় করাতে পারলাম, তখন সেগুলি একসাথে করে প্রকাশ করি 'ইবই রন্ধন প্রণালী'। যেন বাংলা ইবই যারা ভবিষ্যতে প্রকাশ করতে চান তাঁরা একটা দিকনির্দেশনা হাতে নিয়ে কাজ এগুতে পারেন। সম্প্রতি গত বছরের ডিসেম্বরে এই বইটি হালনাগাদ করে নতুন করে প্রকাশ করি 'বাংলা eBook' নামে। এই বইটি সবগুলো ইবুক স্টোর থেকে কয়েক হাজারবার ডাউনলোড করা হয়েছে। 

এবার একটা জরুরী তথ্য দিই।

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য তবে কী? বইদ্বীপ-কে বাংলা ইবইয়ের পাইওনিয়ার দাবি করা?

না, একদমই তা নয়।

প্রথম যখন স্ম্যাশওয়ার্ডস সাইটটি খুঁজে পাই, পাওয়া মাত্রই আমার মাথায় আসে, এখান থেকে যেভাবে ওয়ার্ড ফাইল আপলোড করে ইংরেজি বই বের করা যায়, একইভাবে বাংলা ইবইও কি বের করা সম্ভব? প্রবল উৎসাহ নিয়ে আমি যখন কাঠের সেনাপতি-র পাণ্ডুলিপি গুছিয়ে নিয়ে অবশেষে ইবই প্রকাশ করলাম, তার কিছুদিন বাদেই ভালমতন খুঁজতে গিয়ে দেখি ঐ সাইটেই 'দুপুর মিত্র' নামে একজন কবি/ লেখক ইতোমধ্যেই সেখানে বাংলা ইবই প্রকাশ করেছেন, সেই বইটির নাম ছিল '৪৪ কবিতা'। তখন খেয়াল করি এই বইটির প্রকাশকাল হচ্ছে- ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২।

এই বইটি দেখে আমার উৎসাহ শতগুণ বেড়ে যায়। আমি তখন পরের বইগুলোর পরিকল্পনা শুরু করি।

আমি ইতিহাসবিদ নই। প্রথম কে বাংলা ইবই প্রকাশ করেছিলেন এ তথ্যের খোঁজ আমি করিনি। কেউ ঠিকঠাক খুঁজলে এর আগের কোনও ইবই পেলেও পেয়ে যেতে পারেন; আবার না-ও পেতে পারেন।

আমার বক্তব্য এইটুকুই।

- তারেক নূরুল হাসান/ বইদ্বীপ/ ১৮ জুলাই ২০২০

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on July 18, 2020 08:52

July 9, 2020

নিরালা নীলে | আসাদুজ্জামান নূর


৬৪ পৃষ্ঠার বইয়ের শেষ এগার পাতায় ছবি দেয়া। ভূমিকা এবং বারো পৃষ্ঠার প্রথম লেখাটি শুধু নূরের নিজের লেখা। বাকি সব অনুলিখন। 
এই বইয়েয়ে লেখকের নামের জায়গায় আসাদুজ্জামান নূর থাকাটা কি সঠিক হয়েছে? 
আমার তা মনে হচ্ছে না। 

ভূমিকায় তিনি জানিয়েছেন- অনুলেখকের অসহনীয় চাপে পড়ে এই বই প্রকাশিত হয়েছে। চাপের কারণ কী জানি না, কিন্তু সে চাপে রাজি না হলেই হয়ত ভাল হতো। 

আসাদুজ্জামান নূর খুব প্রিয় মানুষ বলেই বইটি শেষমেশ পড়ে গেলাম। অভিনয় শুধু নয়, তাঁর আবৃত্তি, নাটকে সংলাপ যেভাবে বলেন এবং সর্বোপরি তাঁর বাংলা উচ্চারণের আমি দারুণ ভক্ত। সেই ভাললাগা থেকে, বইয়ে তাঁর একমাত্র স্মৃতিকথাটুকু পড়লাম। 
এটুকুই খুব ভাল লেগেছে। 

বাকিটুকু নিয়ে কিছু না-ই বলি, থাক।
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on July 09, 2020 00:34

Tareq Nurul Hasan's Blog

Tareq Nurul Hasan
Tareq Nurul Hasan isn't a Goodreads Author (yet), but they do have a blog, so here are some recent posts imported from their feed.
Follow Tareq Nurul Hasan's blog with rss.