রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন Quotes
রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
by
Pramathanath Bishi37 ratings, 4.03 average rating, 6 reviews
রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন Quotes
Showing 1-8 of 8
“যে কাজ একাকী করা যায় বাঙালী তাহা করিতে পারে। পাঁচজনে মিলিয়া কাজ করিতে গেলেই বাঙালী দলাদলি ও মাথা-ফাটাফাটি করিয়া বসে। সাহিত্য এককের সাধনা, বাঙালী তাহাতে ভারতীয় জাতির মধ্যে অবিসংবাদী শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করিয়াছে। প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা পাঁচজনের কাজ--- বাঙালীর তাহাতে দুর্বলতার অন্ত নাই।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“তখন পোস্টমাস্টার ছিলেন যতীন বিশ্বাস নামে এক ভদ্রলোক। তিনি ডাকের কাজ ও তারের কাজ দুইই করিতেন; সেইজন্য আমরা তাঁহার নাম দিয়াছিলাম ডাকতার।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“অর্ধপণ্ডিতই সর্বদা ধরা পড়িবার ভয়ে সরসতাকে বর্জন করিয়া চলে।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“লোকে বলিত, জ্যামিতি বুঝিয়া লইলে নাকি মুখস্থ করিবার আর প্রয়োজন হয় না। হয়তো তাই। কিন্তু ওরকম বিপজ্জনক ঝুঁকি লইবার সাহস আমাদের ছিল না।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“গাম্ভীর্যের চূড়া হইতে এক পা ফসকাইলেই একেবারে হাস্যকরতার অতলস্পর্শী খাদ।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“একদিনের ঘটনা আমার মনে আছে। এবার একটা গল্প ফাঁদিয়াছিলাম। সমালোচনাপ্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ বলিলেন, গল্পটা এমনভাবে আরম্ভ হইয়াছে, যেন অনেক আড়ম্বর করিয়া রেলে চড়িয়া বোম্বাই যাত্রার মতো; কিন্তু অকালে অকস্মাৎ শ্রীরামপুরে আসিয়া রেল-কলিশন ঘটিয়া সব শেষ হইয়া গেল। মনে ভাবিলাম, কিছুই তাঁহার ভাল লাগিবে না। সেদিনের পুডিং ও আনারসের কথা মনে পড়িয়া যাইত। সেদিন তবু সান্ত্বনার জন্য বাস্তব রস ছিল, আর আজ ছোটোবড়ো সকলের সম্মুখে এমন মার! এখন বুঝিতেছি, এই-সব নিদারুণ আঘাতে আমাদের সাহিত্যিক রুচি তৈরি হইয়া গিয়াছিল। প্রথম রচনা লিখিয়াই ‘বাহবা, বেশ হইয়াছে’ শুনিবার দুর্ভাগ্য যাহাদের হয় তাহারা বড়োলোকের আদুরে দুলালের মতো, প্রথম যথার্থ আঘাতেই একান্ত অসহায় অনুভব করে। এখন যখন পাঠকেরা আমার লেখা সম্বন্ধে প্রতিকূল মত প্রকাশ করে তাহারা হয়তো ভাবে, লোকটা এইবার লেখা ছাড়িয়া দিলে বাঁধা যায়। কিন্তু, আমি মনে মনে হাসিয়া ভাবি, ‘তোমাদের সমালোচনা তো শিখণ্ডীর বাণ, আমি স্বয়ং গাণ্ডীবীর বাণ সহ্য করিয়াছি এমন শক্ত আমার প্রাণ।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“মণিকবি থাকে, খায়-দায়, কিন্তু তাহার মনে শান্তি নাই। আশ্রমের ছোটো বড় সকলকে সে কবিতা শুনাইয়াছে, প্রত্যেকের কাছ হইতে সার্টিফিকেট আদায় করিয়াছে, কেবল রবীন্দ্রনাথকে ধরিতে পারে নাই। মাঝে মাঝে সে আসিয়া শুনাইয়া যায়, "আজ কবীন্দ্রকে দূর হইতে দেখিলাম", "আজ তাঁহার গান শুনিলাম"। কিন্তু, হায়, প্রত্যক্ষভাবে সে তাঁহাকে আজও ধরিতে পারিল না। এ দিকে রবীন্দ্রনাথও সতর্ক হইয়া গিয়াছেন। কবিকে কবি ভয় না করিলে আর কে করিবে!”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
“সে সকালবেলা আশ্রমে আসিয়া এক চক্র ঘুরিয়া নিজের হাজিরা বিজ্ঞাপিত করিয়া তার পরে কোথায় যে লুকাইত কেহ খুঁজিয়া পাইত না। কেবল আশ্রমের দণ্ডধারী অধ্যাপকদের নিয়মিত কামাইয়া দিত, আর কাহাকেও সে বড়ো গ্রাহ্য করিত না। অনেকদিন সাধনার পরে তাহাকে খুঁজিয়া পাইলে অগত্যা দাড়ি কামাইতে বসিত। ক্ষুরে কখনো সে শান দিত না। ক্ষুরের প্রথম টানেই গালে রক্ত বাহির হইত। আহত ব্যক্তি আপত্তি করিলে বলিত, "বাবু, এ-ই যে লড়াই হচ্ছে তাতে কত লোকের হাত পা কাটা পড়ছে, কই, তারা তো আপত্তি করে না --- আর এইটুকুতে আপনি কাতর হচ্ছেন?"
"তা হোক বাপু, তুমি অন্য ক্ষুর বের করো।"
আব্বাস তখন দ্বিতীয় ক্ষুর বাহির করিত; সেখানা বোধ করি আরো ভোঁতা।
"আহা আব্বাস, প্রাণ যে গেলো, তোমার আর কি ক্ষুর নেই?"
আব্বাস তখন তাহার শেষ অস্ত্রখানা বাহির করিত। সেখানা ভোঁতাতম।
আহত ব্যক্তি আর কী করিবে? অর্ধেক কামাইয়া তো আর ওঠা যায় না; সে ক্রমাগত পাশে সরিতে সরিতে এক সময় গিয়া দেয়ালে বাধা পাইত। আর যখন সরিবার উপায় নাই, তখন দেয়ালে ঠাসিয়া ধরিয়া আব্বাস সবলে ক্ষৌরকার্য সমাধা করিত। তার পরে আর সে ব্যক্তি বহুদিন পর্যন্ত তাহার শরণাপন্ন হইত না। আব্বাসের প্রথম ক্ষুরের নাম রক্তকিঙ্কিণী, দ্বিতীয়খানা হাড়ভেদী, তৃতীয়খানার নাম দেয়ালঠেসী।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
"তা হোক বাপু, তুমি অন্য ক্ষুর বের করো।"
আব্বাস তখন দ্বিতীয় ক্ষুর বাহির করিত; সেখানা বোধ করি আরো ভোঁতা।
"আহা আব্বাস, প্রাণ যে গেলো, তোমার আর কি ক্ষুর নেই?"
আব্বাস তখন তাহার শেষ অস্ত্রখানা বাহির করিত। সেখানা ভোঁতাতম।
আহত ব্যক্তি আর কী করিবে? অর্ধেক কামাইয়া তো আর ওঠা যায় না; সে ক্রমাগত পাশে সরিতে সরিতে এক সময় গিয়া দেয়ালে বাধা পাইত। আর যখন সরিবার উপায় নাই, তখন দেয়ালে ঠাসিয়া ধরিয়া আব্বাস সবলে ক্ষৌরকার্য সমাধা করিত। তার পরে আর সে ব্যক্তি বহুদিন পর্যন্ত তাহার শরণাপন্ন হইত না। আব্বাসের প্রথম ক্ষুরের নাম রক্তকিঙ্কিণী, দ্বিতীয়খানা হাড়ভেদী, তৃতীয়খানার নাম দেয়ালঠেসী।”
― রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
