নীল রোলার লাল রোলার Quotes

Rate this book
Clear rating
নীল রোলার লাল রোলার নীল রোলার লাল রোলার by Smaranjit Chakraborty
84 ratings, 3.67 average rating, 15 reviews
নীল রোলার লাল রোলার Quotes Showing 1-19 of 19
“আমি হাসলাম। উইন্ডস্ক্রিন দিয়ে আকাশের দিকে তাকালাম। দেখলাম ওই দূরে, চাঁদের ওপরে, রাত্রির কালো চুলের মাঝে রুপোলি বাঁকের মতো জেগে আছে একটু দাগ। আলোর দাগ। দেখলাম, আলোর ছোট্ট রুমাল নেড়ে টুপুনের সেই ধূমকেতু ভেসে যাচ্ছে অনন্তের দিকে। ভেসে যাচ্ছে, চলে যাচ্ছে... কিন্তু সে-ও এক দিন ফিরে আসবে আবার। একদিন আবার দেখা দেবে মানুষকে। আসলে সব কিছুই ফিরে আসে। এ জীবন সমুদ্রের মতো, তাতে আপনি যা-ই ফেলে দিন না কেন, দেখবেন একদিন না-একদিন সে ঠিক কোনও না-কোনও ভাবে আপনার কাছে ফিরে আসছে। হ্যাঁ, তাতে কষ্ট থাকবে, রাগ থাকবে। কিন্তু জানবেন, তাতে আবার নীল রোলার, লাল রোলারও থাকবে। শুধু একটু পরিশ্রম আর সততা দিয়ে আপনাকে সেটা মেনে নিতে হবে মাত্র।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“কিন্তু বলুন, পালানো না গেলেই যে সেটাকে মেনে নেবে মন, তা তো নয়। আমিও তাই আজও বিচ্ছেদ, কষ্ট, ভুল বোঝাবুঝি এ সব মেনে নিতে পারি না।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“কিন্তু সেই অল্পবয়সে আমি বুঝিনি কষ্টকে এমন মুখ চেপে ধরে আটকানো যায় না। বন্ধ করে রাখা যায় না। তার পর তো কত কষ্ট পেয়েছি। কত জন ভুল বুঝেছে। ছেড়ে চলে গিয়েছে। অকারণে কষ্ট দিয়েছে, অপমান করেছে। আমিও নানা ভুল করেছি। আমার জন্যও অন্য লোকজন কষ্ট পেয়েছে। আমিও চলে এসেছি কারও না-কারও জীবন থেকে। আর এ সবের মধ্যে বুঝেছি, যাওয়া-আসা, কষ্ট-যন্ত্রণা জীবনেরই অঙ্গ। এর থেকে পালানো যায় না।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“অনেকেই এমন হয়। না পাওয়া অবধি অস্থির হয়ে থাকে। আর যেই মনে হয় পেয়ে গিয়েছে, অমনি তাকে হেলাফেলা করে। টেকেন ফর গ্রান্টেড করে নেয়।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“সত্যি, প্রেম আমাদের মনখারাপ করে দেয়। একা করে দেয়। হাজার লোকের মাঝেও একা করে দেয়। স্তব্ধ করে দেয়। প্রেম আমাদের এমন করে ভেঙে ফেলে যে, ভালবাসার মানুষ ছাড়া আর কেউ আমাদের জোড়া লাগাতে পারে না।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমি এই শেষ দুপুরে গাড়ির বনেটে হেলান দিয়ে আশপাশের উঁচু উঁচু বাড়ির দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম, ছোটবেলাটা কী অদ্ভুত। আমরা কত কিছু বিশ্বাস করি। পৃথিবী যে অমনটা নয়, সেটা বুঝতে-বুঝতেই কখন যেন বড় হয়ে উঠি, অবিশ্বাসী হয়ে উঠি, কুচুটে আর হিংসুটে হয়ে উঠি। আমরা যে ক্রমশ জটিল মানুষ হই, তার কারণ কি ছোটবেলায় ভেঙে যাওয়া আমাদের নানা বিশ্বাস।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“মাঝেমাঝে এমন একটা সময় আসে যখন আমাদের অসহায়ের মতো সব কিছু সহ্য করে নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমার মনের মধ্যে একটা অস্থিরতা চলছিল। মনে হচ্ছিল একএকটা দিন থাকে, যা একদম ভাল যায় না। মানে, বিশাল কিছু যে গোলমাল হয় তা নয়, কিন্তু গলার কাঁটা আর চোখের বালির মতো সারাক্ষণ একটা অস্বস্তি লেগেই থাকে।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমি এই মেয়েটার জন্য একসময় পাগল হয়েছিলাম। মনে পড়তেই কেমন অবাক লাগল আমার। মনে হল সেই আমির থেকে এই আমি কতটা দূরে যে চলে এসেছি। পুরনো আমির দিকে এখনকার আমি কেবল নিস্পৃহ দৃষ্টিতে তাকাতে পারি শুধু। আর কিছু পারি না। সময় সত্যি অমনিপোটেন্ট।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আসলে আমরা, বড়রা, হয়তো সব কিছুকেই কমপ্লিকেটেড করে ফেলি। ইগো আমাদের শেষ করে দেয়। যা করলে জীবন সহজ সুন্দর হয়ে যায় তা আমরা করি না। মনের কথা সহজে বলি না। সাধারণ অসুখকে ক্রনিক না-করা অবধি আমাদের শান্তি নেই।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“সানিলা তাকাল আমার দিকে। তার পর বলল, “আবার পালাচ্ছে।” হ্যাঁ আমি পালাই। সব কিছুর থেকে আমি পালিয়ে থাকি। মানুষজনকে আমি ঠিক সামলাতে পারি না। তাদের ঠিক গুছিয়ে রাখতে পারি না। ভয় লাগে আমার। কাউকে কষ্ট দিয়ে ফেলব ভেবে ভয় লাগে। আমি নিজে কষ্ট পাব ভেবে ভয় লাগে। বেকার অশান্তি হবে ভেবে ভয় লাগে। তাই আমার ব্যবহার দেখে সানিলা বলে, আমি পালিয়ে যাই।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমি দেখেছি মানুষের যত বয়স বাড়ে, সে তত একা হতে থাকে।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমি হাসলাম। মানে, আর কী করব বুঝতে পারলাম না। আমার বুকের মধ্যে আশ্চর্য একটা কষ্ট হচ্ছে। আনন্দ হচ্ছে। যেন বহু পুরনো আর বিপজ্জনক বাড়ির রেলিং-ভাঙা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। আর সেই বারান্দাটা যেন যে-কোনও সময়ে ভেঙে পড়বে পড়বে ভাব।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আসলে সাহসীরা জীবনকে ঘাড় ধরে নিজের বশে আনে। আর আমার মতো সেন্টিমেন্টাল ও ভিতুরা মনখারাপের দোহাই দিয়ে জীবন থেকে পালায়।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমি আর অপেক্ষা না করে সিঁড়ির দিকে এগোলাম। আমার এ সব জটিলতা ভাল লাগে না। আসলে কী জানেন, এখন ভাবলে অবাক লাগে, আমি কী ভাবে এই মেয়েটার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। আজ বুঝি, সেটা প্রেম ছিল না, ছিল অবসেশন। কাউকে পাচ্ছি না বলেই যেন তার জন্য মরে যাওয়ার মতো অবস্থা। ‘ডিজ়ায়ার অফ দ্য মথ ফর দ্য স্টার”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“বুড়োদা হাসল এবার। বলল, “আমি আমার লাইফ নিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করছি, বুঝলি। বুঝতে চাইছি মায়া কী। কোথায় মানুষ কষ্ট পায়। কেন পায়? আমি এমন একটা পরিবেশ গড়তে চাইছি, যেখানে সব দুঃখ এসে আনন্দে মিশে যাবে।” “মায়া কী, বুঝলে?” আমি জিজ্ঞেস করলাম। “আমার মনে হয়েছে, কোনও কিছু থেকে কিছু ফেরত পাওয়ার ইচ্ছেটাই হল মায়া। আমি কাউকে ভালবাসলাম, সে-ও ইন রিটার্ন আমায় ভালবাসবে। এটাই মায়া। এই যে মনের এক্সপেক্টেশন, এটাই মায়া। এটা কাটাতে পারলে আমাদের ভাল থাকা আটকায় কোন শালা।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“এই চুয়াল্লিশ বছরের জীবনে আমি একটাই কথা বুঝেছি। লিভ অ্যান্ড লেট লিভ। বেকার অন্যের লাইফে কাঠি করে লাভ নেই। একটাই তো জীবন, কী হবে ঝামেলা পাকিয়ে?”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“বেঁচে থাকাটাই যেন একটা স্ক্যাম।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার
“আমি একটা তীব্র কষ্ট নিয়ে বছর পাঁচেক ঘুরলেও, তার পরে কিন্তু আমার সেই ঘোরটা কেটে গিয়েছিল। ফলে ফোনটা পাওয়ার পর, দুঃখ, আনন্দ, শ্লাঘা বা জিঘাংসা ধরনের কিছু আমার মনে জাগেনি। বরং মনে হয়েছিল, আবার কেন ঝামেলা ভাই। আসলে আমি সবার থেকে দূরে, আড়ালে নিজের মতো একাএকাই থাকতে চাই। এই পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যাকে দেখলে আমার মনে এখনও উচাটন হবে। মনে হবে আমি এর সঙ্গে বাকি জীবনটা কাটাতে চাই।”
স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী, নীল রোলার লাল রোলার