ইউরোপ থেকে ফিরে শহরে পা রেখেই রণন জানতে পারে তার বাবা বাহাত্তর বছর বয়সে বিয়ে করেছেন আবার। প্রাথমিকভাবে একটু খারাপ লাগলেও তারপরে বাড়ির কাকা-পিসিদের ব্যবহার দেখে রণনের মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি আসতে শুরু করে। পাঠকদের সঙ্গে গল্প করার ভঙ্গিতে রণনের জবানিতে এগোতে থাকে এই উপন্যাস। জানা যায় সে একজন লেখক। পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত। জানা যায় তার অতীত— মায়ের কথা, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেড়ে আসার কথা। কাহিনি এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে রণনের জীবনে অতীত থেকে এসে পড়ে একজন। আর সেখান থেকেই গল্প বইতে থাকে অন্য এক খাতে। রণনের কথার মধ্যে দিয়েই ছোট পিসি, হরিদা, সানিলা, টুপুন, টফি পিসি, তান্নি-সহ আরও নানান চরিত্ররা ফুটে ওঠে। তাদের জীবনের গল্প এসে মেশে রণনের জীবনে। মিলিত ধারার মতো বইতে থাকে কাহিনি। আর বাড়ির পেছনের বাগানে পড়ে থাকা নীল রোলার লাল রোলার মাঝে মাঝেই ফিরে আসে ঘটনায়! ‘নীল রোলার লাল রোলার' উপন্যাস, মানব জীবনের মতোই এক আনন্দ ও বেদনার সম্মিলন। আনন্দ আর আলোময় কথন ভঙ্গিমার মধ্যে এই উপন্যাস বুনে রেখেছে হাসি ও চোখের জলের সোনা-রুপোর জরির কাজ। ভালবাসার নিবিড় রঙ্গোলি!
স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর জন্ম ১৯ জুন ১৯৭৬, কলকাতায়। বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত। প্রথম ছোটগল্প ‘উনিশ কুড়ি’-র প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত। প্রথম ধারাবাহিক ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত। শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কার ২০১৪, এবিপি এবেলা অজেয় সম্মান ২০১৭, বর্ষালিপি সম্মান ২০১৮, এবিপি আনন্দ সেরা বাঙালি (সাহিত্য) ২০১৯, সানডে টাইমস লিটেরারি অ্যাওয়ার্ড ২০২২, সেন্ট জেভিয়ার্স দশভুজা বাঙালি ২০২৩, কবি কৃত্তিবাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩, উৎসব পুরস্কার ২০২৪, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড ২০২৪, আনন্দ পুরস্কার (উপন্যাস: '‘শূন্য পথের মল্লিকা') ২০২৫ ইত্যাদি পুরস্কারে সম্মানিত ।
যেমন হয়, স্মরণজিতের এই গল্পটাও ঠিক তেমন। এবারের নায়ক রণন মধ্যবয়সী ও কথাসাহিত্যিক। বাস্তবজীবনে প্রচুর নিন্দামন্দ শুনে লেখক এবার সখেদে তার নায়ককে দিয়ে বলিয়েছেন, " আপনাদেরও কি এসব পড়ে কষ্ট হল একটু? যদি হয়, তা হলে আমায় মার্জনা করবেন। আপনাদের কষ্ট দেওয়া আমার জীবনধর্ম নয়। আমি খুব ছোট্ট এবং সামান্য একজন লেখক। বাংলা সাহিত্য আমাকে মনে রাখবে না জানি। তাই যে ক'টা দিন আছি, আমি মানুষকে কষ্ট দিতে চাই না। আপনারা কখনও যদি দুর্ঘটনাবশত আমার লেখা পড়ে থাকেন, দেখবেন আমি হাসিখুশি, ভালবাসা আর আনন্দময় মিলনাত্মক গল্পই লিখি। সেই গল্প, যেখানে সবাই খুশি থাকে। যেখানে যে যাকে ভালবাসে তাকে অধিকাংশ সময়ই পেয়ে যায়। সেই গল্প যেখানে কেউ বইয়ের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে চোখ মোছে না।"
যদিও আমি পুরোপুরি একমত নই, কিন্তু জাত সাহিত্যিক অমলদার সাথে বাজারি লেখক রণনের কথোপকথন শুনে হাসি চাপা দায়। স্মরণজিৎ পড়তে ভালো লাগে আমার। কিন্তু তার শুরুর দিকের জমজমাট লেখা এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না।
স্মরণজিৎ এর লেখা আমার একটু আরাম আরাম লাগে। শীতের দিনে বেলা পড়বার আগেই গোসল করে দুপুর রোদে তাপ পোহাবার মতো আরাম। অনেকেই কেন জানি তার লেখা পছন্দ করে না। যা হোক। এই উপন্যাসের প্রধাণ চরিত্র রনো আর আমি মিলেমিশে একাকার। কেউ যেন আমাকেই রনো বানিয়ে বইয়ের পাতায় এঁকে দিয়েছে। তাই বোধয় আরেকটু বেশি ভাল লাগলো। এই যেমন প্রায় বাহাত্তর বয়সী বাবা আবার বিয়ে করায় রনোর কোন ক্ষোভ নেই কিন্তু বাবার নতুন স্ত্রীর প্রতি গদ্গদ আচরণ রনোকে নিজের মৃতা মা যে আজীবন মুখটা চুপটি করে মাথা নামিয়ে সংসার করে গেল তার জন্য কাঁদায়। কাউকে না বলাটা খুব দুষ্কর তার জন্য। জগতের সকল প্রানী খুশি হোক এটা রনোর মানিয়ে চলবার পন্থাই না কেবল, মন থেকে চাওয়াও। অথচ বুকের ভেতরের খচখচানিটাও থাকে। থাকে তো পৃথিবীতে এমন মানুষ- কেউ তাদের গল্পটা বেশি বলে না। সকলে শুধু মুখরা, স্মার্ট মানুষের গল্প শুনতে চায়।
তো মোদ্দা কথা। বই আমার ভালই লেগেছে। শারদীয় সংখ্যায় প্রকাশিত উপন্যাস এ বছরের। ছুটি ছুটি একটা ভাব ঠিকই এনে দিলো মনে।
▫️আচ্ছা, লেখক এইরকম একটা প্রেমের উপন্যাসের নামকরণ করতে এমন অদ্ভুত টাং টুইস্টার ব্যবহার করলেন কেন ? আসুন পড়ে দেখি...
"কলকাতার কোন একটা ক্লাব সস্তায় বিক্রি করে দিচ্ছিল তাদের ক্রিকেটের পিচ রোল করার দুটো রোলার । ঠাকুরদা কিনে নেন । আর কিনে বাড়িতে নিয়ে আসার পরে এরকম আশ্চর্য রং করান । নীল রোলার, লাল রোলার । সেই অদ্ভুত টাং টুইস্টারের এমবডিমেন্ট যেন ।
কাকু আমায় বলেছে ঠাকুরদা এমন দুটো রং বেছেছিলেন, কিন্তু শুধু মজা করার জন্যই নয় । এর নাকি একটা গুহ্য কারণও ছিল । লাল হল রাগের রং আর নীল বেদনার । ঠাকুরদার বক্তব্য ছিল, নীল রোলার নাকি সমস্ত দুঃখ বেদনা আর লাল রোলার নাকি সমস্ত রাগ ক্ষোভ গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে এ জীবন আনন্দে আর ভালবাসায় পূর্ণ করে দেবে । ঠাকুরদার মতে, এই জীবনে এমন নীল রোলার, লাল রোলার আমাদের সবার দরকার ।"
ইউরোপ থেকে শহরে পা দিয়েই রণন জানতে পারল তার বাবা নাকি বাহত্তর বছর বয়সে আবার বিয়ে করছে তাও নাকি বোনের বেস্ট ফ্রেন্ড কে যে একসময় তাকে রাখী পরাত। সাময়িক মন খারাপ কাটিয়ে সে মেনে নে ব্যাপার টা। অন্য দিকে হঠাৎ করে রণনোর পুরোনো সময় থেকে একজন তাদের বাড়িতে থাকা শুরু করে সম্পূর্ণঅপ্রাসঙ্গিকভাবে। এক দিকে বাবার বিয়ে অন্য দিকে পুরোনো সেই মানুষ! রণন কি সত্যিই এবার সংসারী হবে নাকি সারা জীবন এভাবেই কাটিয়ে নেবে। এই নিয়ে রণনোর স্বীকারোক্তিতে সম্পূর্ণ উপন্যাস। এই গেলে লেখকের কথা এবার আসা যাক আমার কেমন লাগলো উপন্যাসটি পড়ে, সত্যি বলতে প্রথম বার পড়বার পড়ে ভালো লাগেনি। কিছু কিছু জা়গায় ভীষণ ভালো তবে পুরো উপন্যাস টা পড়ে আমি ভীষন আশাহত। লেখকের আগের মত জমজমাট উপন্যাস আমি খুঁজে পারছিনা । আপনাদের কি মতামত?
কথায় আছে, ওস্তাদের মার শেষ রাতে.. কিন্তু আমি কোনো ওস্তাদ নই। আবার মিঠুন চক্কোত্তির মতো আমার মারে অত দমও নেই ফলে এই প্রবাদ আমার ক্ষেত্রে একদমই খাটে না। তবে পাঠকের দপ্তর গ্রুপের নির্দেশিকা অনুযায়ী ফাল্গুন BOTM-র বইয়ের রিভিউ স্বাভাবিকভাবেই পোস্ট করতে হবে ফাল্গুনের মধ্যেই এবং আজই হচ্ছে তার শেষ দিন। অতএব আমরা প্রবাদবাক্য টিকে একটু ধরেই না হয় এগোই, কেমন? এবার আসি বইটির টিজারে.. অবশ্য এখানেও একটা গেরো আছে। যে গল্পের মালা অনুভূতির ফুল দিয়ে গাঁথা হয়েছে তা দূর থেকে অতটা ভালো লাগবে না। তবে কাছে এসে হাতে নিয়ে দেখলে অর্থাৎ গল্পটি পড়া শুরু করলে রামধনুর সাতটি না হলেও মিনিমাম পাঁচটি রঙ নিয়ে মনের ভিতরে বেশকিছু চিত্রকলা ফুটে উঠবেই এ আমি জোর গলায় বলতে পারি। জানি জানি, আবেগের বশবর্তী হয়ে বাক্যটি লম্বা করে ফেলেছি। আপনারা পিলিজ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। যাগ্গে যাক। মোদ্দা কথাটা হচ্ছে, এই গল্পটিও সেরকমই গোত্রের। গল্পের কথক ইউরোপ থেকে ফিরে জানতে পারে তার বাবা আবার বিয়ে করে ফেলেছেন। সবকিছু বুঝে ওঠার এবং হজম করার আগেই একের পর এক চরিত্র ও তাদের নানান কার্যকলাপে তার জেটল্যাগের পারদ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। গল্প এগোনোর সাথে সাথে চুপিসারে সম্পর্কের নতুন ইকোয়েশনও তৈরি হতে শুরু করে আর ... নাহ্ এর বেশি বললে আমার পাপ হবে। আর সেই পাপ খন্ডন করার জন্য কোনো সাধু মহারাজকেও আমি চিনি না, তাই সোজা চলে যাই "কেমন লাগল" সেকশনে,
~ গল্পের চরিত্ররা এবং তাদের কার্যাবলী এই বইয়ের সম্পদ। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা মাতিয়ে রেখেছে।
~ বইমেলাতে বেশ কয়েকজন বলছিল, "এটা গল্প না করণ জোহরের সেট? দেশে এতকিছু ঘটছে সেই সবের উল্লেখ নেই। আছে শুধু কিছু বড়োলোকের বখাটে ছেলেমেয়েদের ন্যাকামো.. ধুসসসস..।" দেখুন, আমি জানি আশেপাশের পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয়। আমি নিজেও বেশকিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী খেতাব নিয়ে বসে আছি। কিন্তু তারমানে এটা নয় আমি সবকিছু খারাপ ভাবেই দেখতে বা পড়তে চাইব। এখানে যাদের কথা বলা.. তারা হয়তো অনেকটাই ব্লেসড। অনেক কিছুই তারা না চাইতেও পেয়ে গেছে। কিন্তু তা বলে তাদের সমস্যার কোনো দাম নেই? মানছি, এইসব সমস্যায় কারুর হাগাও আটকায় না। কিন্তু এমন অনেককিছু আছে যা আটকে যায়। ফলে তাদের ক্রাইসিস গুলোকেও মান্যতা দেওয়া উচিত।
সত্যি বলছি, আমি গল্পটি পড়ে আনন্দ পেয়েছি। লেখকের অন্যান্য গল্পগুলোর মত এখানেও বেশকিছু ফাটাফাটি লাইন আছে যা পড়তে, ভাবতে ও বলতে দুর্দান্ত লাগে। ফলে সেই মণিমুক্তো গুলোকে নিয়ে চিত্তাকর্ষক একটি রিভিউ নামোনোই যেত। কিন্তু আমার মনে হল এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে যেভাবে ত���র ভালো বা খারাপ লাগাগুলো ব্যক্ত করে, আমিও তাই করি। যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে বইটি অবশ্যই পড়ুন। আর মনঃপূত না হলে ফাল্গুনের মতো এ রিভিউক��ও না হয় টাটা করে দেবেন। সব্বাইকে দোলের শুভেচ্ছা। জীবন গল্পের মতো সুন্দর ও রঙিন হোক। নমস্কার!
স্মরণজিৎ চক্রবর্তী এর লেখায় এক ম্যাজিক আছে, আমার মতো যারা স্মরণজিৎ পড়তে ভালোবাসে তাদের অবশ্যই ভালো লাগবে। আমরা যারা স্মরণজিৎ বাবু এর লেখা পড়ি তারা জানি তার লেখার কিছু নিজস্ব প্যাটার্ন আছে। তবে এই উপন্যাস টা একদম অন্যরকম খুব সহজভাবে একটা গল্প বলা যা পড়তে বেশ লেগেছে আমার। স্মরণজিৎ বাবুর অন্য যে কোনও উপন্যাসএ প্রথম পর্বের ঘটনার মিল বা প্রশ্নের উত্তর হয়তো ৩-৪ টে পর্ব পরে পাওয়া যায়(এই ধরনের লেখা পড়তে আমার বেশ লাগে)। কিন্তু এই গল্প একদম পরপর সাজানো, স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড স্টোরি। তাছাড়া স্মরণজিৎ বাবুর লেখা পড়লে বেশ কিছু সুন্দর চরিত্রের নাম জানা যায়, এই উপন্যাস তার ব্যতিক্রম নয়। তবে স্মরণজিৎ বাবুর লেখা ভালো লাগার আরো একটা কারণ আছে , তার লেখার মধ্যে পসিটিভ ভাইবস আছে, যা মনখারাপ কে ভালো করে দেয়। নীল রোলার লাল রোলার এমনই এক মন ভালো করা রমকম উপন্যাস।
এবার আসি উপন্যাস এর কথায়। এই উপন্যাস এর শেষ এ লেখক বলেছেন যে নীল রোলার লাল রোলার এবং টুপুনের ধূমকেতু ছাড়া সবকিছু কাল্পনিক। কিন্তু আমার মনে হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে লেখক তার নিজের জীবনের কিছু কথা বলে ফেলেছেন। এই যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে আসা, পারিবারিক ব্যবসা, একটা বড় প্রকাশনী থেকে লেখালেখি এবং আর এক চরিত্র অমল দত্ত সবকিছু ঘুরে ফিরে যেন লেখক এর সাথে কোথাও মিল আছে। গল্পের প্রধান চরিত্র রণন এর মুখ দিয়ে বাকী চরিত্র গুলো কে দেখানো হয়েছে। পুরো গল্পটাই রণন নিজের মুখে বলেছে। এই উপন্যাস পড়তে পড়তে আমার গাল চওড়া হয়েছে সবসময়, লেখক এর এতো সুন্দর হিউমার সেন্স আমি আগে কোন গল্পে (আমার পড়া) পাইনি। প্রথমে গল্পের প্লট টা দেখেই চমকে উঠেছিলাম , ৪৪ বছরের রণন এর বাবা ৭২ বছর বয়স এ বিয়ে করেছে! এ কেমন প্রেমের গল্প রে ভাই? যেখানে গল্পের হিরো ৪৪ বছর এ ব্যাচেলর আর তার বাবার বিয়ে নিয়ে গল্প শুরু হয়েছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন যারা স্মরণজিৎ এর প্রেমের উপন্যাস পড়তে ভালোবাসেন তারা পড়া শুরু করে বইটা আর রাখতে পারবেন না। এই গল্পের বেদনা, রাগ, মনখারাপ কে লেখক নীল রোলার লাল রোলার দিয়ে গুঁড়িয়ে আমাদের আনন্দ উপহার দিয়েছেন।
এই উপন্যাস টি অবস্যই স্মরণজিৎ বাবুর সেরা সৃষ্টি নয় কিন্তু মন ভালো করার জন্য যে কোনোদিন পড়া যেতে পারে।
আচ্ছা, ছোটোবেলায় কখনও মজার খেলা, "বাবলা গাছে বাঘ বসেছে" কথাটা তাড়াতাড়ি বলতে হবে এই খেলাটা খেলেছেন? আর সেই তাড়াতাড়ি বলার চক্করে "বাবলা গাছে বাপ বসেছে" বলে ফেলেছেন? যদি করে থাকেন তাহলে হয়তো আমার মতো এই বইটা পড়তে গিয়ে আপনারও এই খেলাটা খুব মনে পড়বে। কারণ যতবার আপনি এই 'নীল রোলার লাল রোলার' কথাটা একসাথে একটু দ্রুত বলতে যাবেন ততবার 'নীল লোলার লাল লোলার' হয়ে যাবে। আর অনেক বার চেষ্টা করার পর আপনিও নিজের মনে নিজের ছোটবেলাকে মনে করে হাসবেন। আচ্ছা,যাক সেসব কথা এখন গল্পের বিষয়ে আসি। আমি এটা নিয়ে স্মরনজিৎ বাবুর দুটো উপন্যাস পড়লাম প্রথমটা খুব একটা মনে ধরনি তাই এনার গল্পের প্রতি খুব একটা আগ্রহ আর জন্মায়নি। তবে ইয়ার এই উপন্যাসটা পড়ার পর আমি রীতিমত ফ্যান হয়ে গেলাম ওনার। একটা খুব সাদামাটা গল্প যেখানে তেমন বিশেষ কোনো ভিলেন টিলেন কেউ নেই রহস্য নেই কিন্তু তার পরেও এতো সুন্দর ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখে যে এতো সুন্দর ভাবে পাঠকের মধ্যে একটা প্রশ্ন তৈরি করা যায় যে এর পর কি হবে, এর পর কি হবে, সেটা সত্যিই অসাধারণ। আর তার সাথে এটাও খুব সুন্দর ভাবে উনি বুঝিয়েছেন যে যেটা আমরা বিশ্বাস করি ভালোবাসা বলে সেটা হয়তো ভালোবাসা নাও হতে পারে। সময় না এলে ভালবাসা হয়তো প্রকাশ পায় না। করো ক্ষেত্রে হয়তো সেটা কুড়ি কারো বা ষাট।
🍁 উপন্যাস:- নীল রোলার, লাল রোলার 🍁লেখক:- স্মরণজিৎ চক্রবর্ত্তী 🍁 প্রথম প্রকাশ:- শারদীয় দেশ ১৪৩০ 🍁 মুদ্রিত মূল্য:- ২৬০ টাকা
"আসলে সব কিছুই ফিরে আসে। এ জীবন সমুদ্রের মতো, তাতে আপনি যা-ই ফেলে দিন না কেন, দেখবেন একদিন না-একদিন সে ঠিক কোনও না-কোনও ভাবে আপনার কাছে ফিরে আসছে। হ্যাঁ, তাতে কষ্ট থাকবে, রাগ থাকবে। কিন্তু জানবেন, তাতে আবার নীল রোলার, লাল রোলারও থাকবে। শুধু একটু পরিশ্রম আর সততা দিয়ে আপনাকে সেটা মেনে নিতে হবে মাত্র।"
এটি লেখকের লেখা আরও একটি প্রেমের উপন্যাস। লেখক এবার সানিলা,রণন আর পৌষালির ত্রিকোণ প্রেমের গল্প শুনিয়েছেন আমাদের। আর শুনিয়েছেন জীবনের গল্প, সম্পর্কের গল্প। বিষয়বস্তুতে নতুনত্ব কিছু পেলাম না। তাই আর বিস্তারিত বর্ণনায় গেলাম না।
উপন্যাসটা পড়ে আমার মোটামুটি লেগেছে। ব্যক্তিগত রেটিং ৩/৫।
📌সব সময় জটিল কঠিন জীবনের গল্প লিখতে ইচ্ছে করে না। মাঝে মাঝে মনে হয় গল্প হোক সহজ-সরল। শেষ শরতের সকালে ফুলগাছের ওপর উড়ে বেড়ানো ফিনফিনে প্রজাপতির মতো। মনে হয় জীবনও তেমনই হোক। আমার নিজের অর্থ, যশ, প্রতিপত্তি বাড়ানোর ফিকিরে তৈরি হওয়া ঝামেলা-ঝঞ্ঝাটের চেয়ে সহজ-সরল জীবনই বেশি ভাল লাগে। মনে হয় একদিন তো চলেই যাব এই পৃথিবী থেকে, সেখানে অনর্থক জটিলতা বাড়ানোর মানে কী!
After so long I read a bengali book which is aligned with my energy. It is fun, light hearted, realistic with a very strong message of family values. The artistic and humorous way to showcase daily family lives of a bengali household with never ending dramas are funny yet touching.
Loved the writing of author and definitely will check out more of his work.🫶🏽
বিলেত ফেরত ছেলে বাড়ি ফিরে দেখে বৃদ্ধ বয়সে তার বাবা আবার বিয়ে করেছেন - তাও আবার তার পিসির বান্ধবীকে। এই নিতে শুরু হলো গল্প। এরপর ধীরে ধীরে এলো আরো চরিত্ররা। আহামরি কিছু নয়, তবে বইটা পড়ে আমি খুব হেসেছি। তাই পুরো নম্বর দিতেই হলো।