সহী দিননামা
৭১
একাত্তর নামে নতুন একটা চ্যানেল হয়েছে দেখছি।
এখানে বাংলা টিভি দেখা বেশ হ্যাপার কাজ। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নানা প্যাকেজ নিতাম একসময়, কিছু বিজ্ঞাপন আর স্প্যাম ভরা ফ্রি সাইট দিয়েও কাজ চলেছে একদা, আপাতত সব ঘুরে টুরে আইপিটিভি বাক্সে থিতু হয়েছি। বেশ ভালই সার্ভিস দিচ্ছে। যদিও সবগুলো বাংলা চ্যানেল আসে না। অনেকগুলো ভালো চ্যানেলই নেই, সময়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট নেই, মাছরাঙাও নেই। কিন্তু একাত্তর কেমন করে যেন চলে এলো। এবং আসার পর থেকেই, ক্রিকেটের জন্যে যদি চ্যানেল নাইন খুলে বসে না থাকি, তাহলে যে চ্যানেলটা এখন বেশি দেখা হয়, তার নাম একাত্তর।
দেশের প্রথম ফুল হেইচডি চ্যানেল বলে দাবি করছে প্রায়শই, ছবির মানও আসলেই চমৎকার। ওদের দুটা ডকুমেন্টারি দেখলাম, দুটোই বেশ ভাল লেগেছে। ঘুরে ফিরে যদিও দেখাচ্ছে বারেবারেই। অনুষ্ঠান নির্মাণেও খানিকটা ভিন্নতা চোখে পড়ছে। হঠাৎ করে সেই একুশের সামিয়া জামান আর সামিয়া রহমানকে একসাথে আবার দেখতে পেয়েও ভাল লাগছে বেশ।
আমার শুধু একটা ব্যাপারেই খটকা, নামটা নিয়ে। একুশ চলে, বায়ান্নও, হয়তা বিজয় বা স্বাধীনতা-র মত শব্দগুলোও বহুব্যবহারে জৌলুশ হারিয়ে সর্বসাধারণের পকেটের রুমাল হয়ে গেছে। কিন্তু, আমার মনে হচ্ছে, একাত্তর নাম দিয়ে কাউকে অনুমোদন না দিলেই পারতো সরকার। আমাদের দেশেতো কোন কিছুই ধ্রুব নয়। এ টিভির মালিকপক্ষ কে বা কারা জানি না, ধরে নিলাম যোগ্য লোকেরাই মালিক এখন। কিন্তু সরকার বদলালে যে সেটাও বদলাবে না তার নিশ্চয়তা কী? অথবা, সময়ের সাথে সাথে মালিকের চরিত্রও বদলে যাবে না তারই বা গ্যারান্টি কী?
একাত্তর নামের চ্যানেল যদি একসময় জামাতপন্থী আচরণ শুরু করে সেটা মেনে নিতে খারাপই লাগবে।
টু ডু, টা ডা
অনেক কিছু করবো করবো বলে ভাবি। একটা লিস্ট ঝুলিয়ে রাখা আমার ঘরের নোটিশ বোর্ডে। মোবাইলেও নানা রকম লিস্ট। সপ্তায় অন্তত একটা ব্লগ লিখবো বলে ভাবি, হয় না। বেশ কিছু গল্প লেখা শুরু করে মাঝপথে আটকে আছে, শেষ করা হয়ে উঠছে না।
তবে হবে নিশ্চয়। সেদিন লিস্টের শেষে গোটা গোটা হরফে বড় করে লিখে দিলাম, ফিনিশ সামথিং!!
কিছু একটা তো শেষ কর বাপ!
তালাশ
আমির খানের মুভি দেখা হয় নিয়মিত। রাং দে বাসান্তির পরে আমির খান কোন না কোন ভাবে জড়িত আছেন এরকম ছবি মিস না করার চেষ্টা করি। খুব একটা লস হয়নি এখন পর্যন্ত। এমনকি অফ ট্র্যাকের কিছু ছবি যেমন ডেলহি বেলি অথবা ধোবিঘাটও বেশ ভাল লেগেছে।
সম্প্রতি দেখলাম তালাশ।
আমার কাছে মনে হয়, ভুতের সিনেমার সবচেয়ে বড় মাইনাস পয়েন্ট হলো যে তারা ভুতের সিনেমা। এটুকু যদি মেনে নেয়া যায়, তাহলে তালাশ আসলে বেশ ভাল একটা ছবি। সাসপেন্স ছিল যেখানে যেটুকু দরকার, একদম ঠিক সময়ে রহস্যের জট খুলেছে। ছবির সবচেয়ে দুর্বল দিক হলো অতৃপ্ত আত্মা বিষয়ক লজিক এবং সেটুকু প্রতিষ্ঠা করার অংশটুকু। কিন্তু এখানেও ব্যাক টু স্কয়ার ওয়ান, মানে ওই যে, যদি আমরা এটা মেনে নিয়ে দেখা শুরু করি যে এটি আসলে একটি ভুতের সিনেমা...।
সবমিলিয়ে মন্দ লাগেনি।
গ্রিশাম
রাহাত খানের অমল ধবল চাকরি পড়া শেষ হলো। যে ভাললাগা নিয়ে শুরু করেছিলাম বইটা, শেষ করলাম সে পরিমাণ মুগ্ধতা নিয়েই। এমন কিছু আহামরি গল্প নয়, সেই সময়ের কয়েকজন যুবক যুবতীর প্রাত্যহিক জীবনের খন্ডচিত্র নিয়ে লেখা। কিন্তু মুগ্ধ হয়েছি ভাষার ব্যবহার দেখে, ঐ অল্প পরিসরেই লেখকের চিন্তার গভীরতা দেখেও চমকে উঠেছি বারকয়েক।
সমান্তরালে শেষ করলাম জন গ্রিশামের দি ফার্ম। পড়া শেষে খানিক ভেবেছি নানা বিষয়ে।
দেখলাম যে, বড় হয়ে আসলে খুব বেশি থ্রিলার পড়িনি। থ্রিলারের নব্বই-ভাগই পড়া হয়েছে কিশোর বয়সে, সেবা প্রকাশনীর বদৌলতে। সে সময়ে ঘটনার গলিঘুঁপচিতে হারিয়ে যেতাম থ্রিলার পড়তে পড়তে। নায়কের মৃত্যু আশঙ্কায় একেবারে জায়গামতন গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠতো তখন। লাস্যময়ী নায়িকার লাল টুকটুকে অধরের কল্পনায় কত রাত নির্ঘুম কেটে গেছে। পড়ার জগতের দরজা খুলে দিয়ে থ্রিলার ব্যাপারটা কেমন করে যেন মাঝে লম্বা সময় ডুব মেরে ছিলো।
সম্প্রতি আবার ফিরে এসেছে সে বিপুল বিক্রমে। জেফরি আর্চারের দুটা বই দুমাদুম পড়া হয়ে গেলো। এ প্রিজনার অব বার্থ এবং ফলস ইম্প্রেশান। পড়তে পড়তেই গল্পের গাঁজাখুরিত্ব নিয়ে বেদম হাসি পেয়েছে। এ প্রিজনার অব বার্থ এর মত এরকম হাস্যকর অবাস্তবতা এমনকি থ্রিলারেও দেখা যায় না। কিন্তু আশ্চর্য এই, এটা টের পাওয়ার পরেও বইটা শেষ না করে উঠতে পারিনি। পড়ছি আর লেখককে গাল মন্দ করছি, ধুর ব্যাটা কী সব লিখছে, কিন্তু রাতের খাবার পরে মাথার পাশে ল্যাম্প জ্বেলে পড়তে পড়তে রাত ভোর করে ফেলেছি। থ্রিলারের মজা আবার ফিরিয়ে আনলো এই আর্চার মশাই।
তুলনায় গ্রিশাম পড়ে আরও ভাল লাগলো। গ্রিশামের আরও কিছু বই টপাটপ পড়ে ফেলতে হবে।
লিস্টে আরও কিছু ভাল বইও আছে। আজ থেকে ধরলাম মঈনুল আহসান সাবের এর ঠাট্টা। মণিকা রশিদকে ক্রমাগত জ্বালাতন করে করে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কিছু বই পেলাম। ওগুলো পড়া ধরতে হবে। হিমু ভাই একেবারে আচমকাই আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন উদয়ন ঘোষের লেখার সাথে। আগে পড়িনি, এমনকি শুনিওনি। আপাতত তার ছোটগল্পের বইটির ভূমিকা পড়ে কাছা মেরে বসলাম।
ভ্রমণ আনন্দময় হবে সন্দেহ নেই।
একাত্তর নামে নতুন একটা চ্যানেল হয়েছে দেখছি।
এখানে বাংলা টিভি দেখা বেশ হ্যাপার কাজ। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নানা প্যাকেজ নিতাম একসময়, কিছু বিজ্ঞাপন আর স্প্যাম ভরা ফ্রি সাইট দিয়েও কাজ চলেছে একদা, আপাতত সব ঘুরে টুরে আইপিটিভি বাক্সে থিতু হয়েছি। বেশ ভালই সার্ভিস দিচ্ছে। যদিও সবগুলো বাংলা চ্যানেল আসে না। অনেকগুলো ভালো চ্যানেলই নেই, সময়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট নেই, মাছরাঙাও নেই। কিন্তু একাত্তর কেমন করে যেন চলে এলো। এবং আসার পর থেকেই, ক্রিকেটের জন্যে যদি চ্যানেল নাইন খুলে বসে না থাকি, তাহলে যে চ্যানেলটা এখন বেশি দেখা হয়, তার নাম একাত্তর।
দেশের প্রথম ফুল হেইচডি চ্যানেল বলে দাবি করছে প্রায়শই, ছবির মানও আসলেই চমৎকার। ওদের দুটা ডকুমেন্টারি দেখলাম, দুটোই বেশ ভাল লেগেছে। ঘুরে ফিরে যদিও দেখাচ্ছে বারেবারেই। অনুষ্ঠান নির্মাণেও খানিকটা ভিন্নতা চোখে পড়ছে। হঠাৎ করে সেই একুশের সামিয়া জামান আর সামিয়া রহমানকে একসাথে আবার দেখতে পেয়েও ভাল লাগছে বেশ।
আমার শুধু একটা ব্যাপারেই খটকা, নামটা নিয়ে। একুশ চলে, বায়ান্নও, হয়তা বিজয় বা স্বাধীনতা-র মত শব্দগুলোও বহুব্যবহারে জৌলুশ হারিয়ে সর্বসাধারণের পকেটের রুমাল হয়ে গেছে। কিন্তু, আমার মনে হচ্ছে, একাত্তর নাম দিয়ে কাউকে অনুমোদন না দিলেই পারতো সরকার। আমাদের দেশেতো কোন কিছুই ধ্রুব নয়। এ টিভির মালিকপক্ষ কে বা কারা জানি না, ধরে নিলাম যোগ্য লোকেরাই মালিক এখন। কিন্তু সরকার বদলালে যে সেটাও বদলাবে না তার নিশ্চয়তা কী? অথবা, সময়ের সাথে সাথে মালিকের চরিত্রও বদলে যাবে না তারই বা গ্যারান্টি কী?
একাত্তর নামের চ্যানেল যদি একসময় জামাতপন্থী আচরণ শুরু করে সেটা মেনে নিতে খারাপই লাগবে।
টু ডু, টা ডা
অনেক কিছু করবো করবো বলে ভাবি। একটা লিস্ট ঝুলিয়ে রাখা আমার ঘরের নোটিশ বোর্ডে। মোবাইলেও নানা রকম লিস্ট। সপ্তায় অন্তত একটা ব্লগ লিখবো বলে ভাবি, হয় না। বেশ কিছু গল্প লেখা শুরু করে মাঝপথে আটকে আছে, শেষ করা হয়ে উঠছে না।
তবে হবে নিশ্চয়। সেদিন লিস্টের শেষে গোটা গোটা হরফে বড় করে লিখে দিলাম, ফিনিশ সামথিং!!
কিছু একটা তো শেষ কর বাপ!
তালাশ
আমির খানের মুভি দেখা হয় নিয়মিত। রাং দে বাসান্তির পরে আমির খান কোন না কোন ভাবে জড়িত আছেন এরকম ছবি মিস না করার চেষ্টা করি। খুব একটা লস হয়নি এখন পর্যন্ত। এমনকি অফ ট্র্যাকের কিছু ছবি যেমন ডেলহি বেলি অথবা ধোবিঘাটও বেশ ভাল লেগেছে।
সম্প্রতি দেখলাম তালাশ।
আমার কাছে মনে হয়, ভুতের সিনেমার সবচেয়ে বড় মাইনাস পয়েন্ট হলো যে তারা ভুতের সিনেমা। এটুকু যদি মেনে নেয়া যায়, তাহলে তালাশ আসলে বেশ ভাল একটা ছবি। সাসপেন্স ছিল যেখানে যেটুকু দরকার, একদম ঠিক সময়ে রহস্যের জট খুলেছে। ছবির সবচেয়ে দুর্বল দিক হলো অতৃপ্ত আত্মা বিষয়ক লজিক এবং সেটুকু প্রতিষ্ঠা করার অংশটুকু। কিন্তু এখানেও ব্যাক টু স্কয়ার ওয়ান, মানে ওই যে, যদি আমরা এটা মেনে নিয়ে দেখা শুরু করি যে এটি আসলে একটি ভুতের সিনেমা...।
সবমিলিয়ে মন্দ লাগেনি।
গ্রিশাম
রাহাত খানের অমল ধবল চাকরি পড়া শেষ হলো। যে ভাললাগা নিয়ে শুরু করেছিলাম বইটা, শেষ করলাম সে পরিমাণ মুগ্ধতা নিয়েই। এমন কিছু আহামরি গল্প নয়, সেই সময়ের কয়েকজন যুবক যুবতীর প্রাত্যহিক জীবনের খন্ডচিত্র নিয়ে লেখা। কিন্তু মুগ্ধ হয়েছি ভাষার ব্যবহার দেখে, ঐ অল্প পরিসরেই লেখকের চিন্তার গভীরতা দেখেও চমকে উঠেছি বারকয়েক।
সমান্তরালে শেষ করলাম জন গ্রিশামের দি ফার্ম। পড়া শেষে খানিক ভেবেছি নানা বিষয়ে।
দেখলাম যে, বড় হয়ে আসলে খুব বেশি থ্রিলার পড়িনি। থ্রিলারের নব্বই-ভাগই পড়া হয়েছে কিশোর বয়সে, সেবা প্রকাশনীর বদৌলতে। সে সময়ে ঘটনার গলিঘুঁপচিতে হারিয়ে যেতাম থ্রিলার পড়তে পড়তে। নায়কের মৃত্যু আশঙ্কায় একেবারে জায়গামতন গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠতো তখন। লাস্যময়ী নায়িকার লাল টুকটুকে অধরের কল্পনায় কত রাত নির্ঘুম কেটে গেছে। পড়ার জগতের দরজা খুলে দিয়ে থ্রিলার ব্যাপারটা কেমন করে যেন মাঝে লম্বা সময় ডুব মেরে ছিলো।
সম্প্রতি আবার ফিরে এসেছে সে বিপুল বিক্রমে। জেফরি আর্চারের দুটা বই দুমাদুম পড়া হয়ে গেলো। এ প্রিজনার অব বার্থ এবং ফলস ইম্প্রেশান। পড়তে পড়তেই গল্পের গাঁজাখুরিত্ব নিয়ে বেদম হাসি পেয়েছে। এ প্রিজনার অব বার্থ এর মত এরকম হাস্যকর অবাস্তবতা এমনকি থ্রিলারেও দেখা যায় না। কিন্তু আশ্চর্য এই, এটা টের পাওয়ার পরেও বইটা শেষ না করে উঠতে পারিনি। পড়ছি আর লেখককে গাল মন্দ করছি, ধুর ব্যাটা কী সব লিখছে, কিন্তু রাতের খাবার পরে মাথার পাশে ল্যাম্প জ্বেলে পড়তে পড়তে রাত ভোর করে ফেলেছি। থ্রিলারের মজা আবার ফিরিয়ে আনলো এই আর্চার মশাই।
তুলনায় গ্রিশাম পড়ে আরও ভাল লাগলো। গ্রিশামের আরও কিছু বই টপাটপ পড়ে ফেলতে হবে।
লিস্টে আরও কিছু ভাল বইও আছে। আজ থেকে ধরলাম মঈনুল আহসান সাবের এর ঠাট্টা। মণিকা রশিদকে ক্রমাগত জ্বালাতন করে করে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কিছু বই পেলাম। ওগুলো পড়া ধরতে হবে। হিমু ভাই একেবারে আচমকাই আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন উদয়ন ঘোষের লেখার সাথে। আগে পড়িনি, এমনকি শুনিওনি। আপাতত তার ছোটগল্পের বইটির ভূমিকা পড়ে কাছা মেরে বসলাম।
ভ্রমণ আনন্দময় হবে সন্দেহ নেই।
Published on December 03, 2012 18:37
No comments have been added yet.
Tareq Nurul Hasan's Blog
- Tareq Nurul Hasan's profile
- 21 followers
Tareq Nurul Hasan isn't a Goodreads Author
(yet),
but they
do have a blog,
so here are some recent posts imported from
their feed.

