তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র Quotes
তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
by
Bibhutibhushan Bandyopadhyay787 ratings, 4.57 average rating, 102 reviews
তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র Quotes
Showing 1-26 of 26
“তারানাথ হেসে বলল-না, এই গল্পটা শেষ হয়ে গেল। আমি রইলাম, পৃথিবী রইল তার বৈচিত্র্য নিয়ে, অমরজীবন রইল। সবচেয়ে বড় কথা-তোমরা রইলে আমাকে দিয়ে গল্প বলিয়ে নেবার জন্য। অবিলম্বে আবার শুরু করব।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“আমি খুব সাধারণ রক্তমাংসের মানুষ। সাধনা করে কিছু শক্তি পেয়েছিলাম, এইমাত্র। কিন্তু অমরজীবনের প্রকৃত পরিচয় আমিও জানি না। না জানাই বোধহয় ভালো। আমরা বুঝতে পারবো না, কেবলমাত্র বিভ্রান্ত হবো। যদি পরজন্ম বলে কিছু থাকে, তবে হয়তো আবার তার সঙ্গে দেখা হবে।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“মুহূর্তে মুহূর্তে উন্নতি হচ্ছে আবহাওয়ার। এ যেন আরো বিস্ময়কর। মেঘ করে ঘনিয়ে এসে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে দুর্যোগ শুরু হওয়াকে তবু কোনরকমে মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু সেই ঘনঘোর দুর্যোগ কাটবার যে স্বাভাবিক ছন্দ আছে তাকে অগ্রাহ্য করে এই অলৌকিক উন্নতি ভয় ধরিয়ে দেয়।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“মৃত্যুঞ্জয় তার হাতের ছড়িটা নিয়ে ফিরে যাচ্ছে তাঁবুর দিকে। মাঝে মাঝে থেমে গিয়ে কাঠিটা দিয়ে মাটিতে কী মেপে দেখছে। তার অপস্রিয়মাণ চেহারার দিকে তাকিয়ে মনে হল এই বিশাল জগতের তুচ্ছাতিতুচ্ছ তৃণখণ্ড থেকে অনাদ্যন্ত মহাকাশে জ্বলন্ত নক্ষত্রের দল পর্যন্ত একটা অদৃশ্য, কিন্তু অত্যন্ত বাস্তব আত্মীয়তার সূত্রে গ্রথিত। প্রাত্যহিকতার মায়ায় সত্যের ওই অগ্নিময় জ্বলন্ত রূপ আমাদের চোখে পড়ে না। কলকাতা শহরের এঁদো মেসের ঘর নয়, সমস্ত বিশ্বের বিচিত্র বিস্ময়পূর্ণ পরিধিই আমারও জীবনের পরিধি, জ্বলন্ত নক্ষত্রবেষ্টিত সত্যের অলাতচক্র।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“মাটিই তো সব। মাটিতে সৃষ্টি, এই মাটিতে প্রতিষ্ঠা, মাটিতে মৃত্যু। মাটিতে মহাকাল মিশে থাকে। বৈদ্য যেমন রোগীর নাড়ি থেকে শরীরের গতিক বুঝতে পারে, তেমনি মাটি শুঁকে সবকিছু বলে দেওয়া যায়।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“দুর্যোগ আর দুঃসময়ের দুটো রূপ আছে। একটা রূপ আমাদের সন্ত্রস্ত করে, অন্যটা একধরনের বিচিত্র আনন্দের জন্ম দেয়। মানুষ যতই বলুক, সে শুধুমাত্র শান্তির পূজারী নয়। তাহলে আদিম যুগ থেকে মানবসভ্যতা একটুও অগ্রসর হত না। আরামে গাছের ছায়ায় শুয়ে গান গেয়ে দিন কাটানোর সুযোগ ছেড়ে মানুষ চিরকাল বেরিয়ে পড়েছে অজানার হাতছানিতে। প্রায়ান্ধকার বনের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমারও গা-ছমছম করা অনুভূতি আর আনন্দ একসঙ্গে হল।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“রাত তখন প্রায় আড়াইটে। রূপোর মতো চাঁদ পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে বিশাল পাকুড়্গাছের পেছনে। মৃদু হিমের ছোঁয়া বাতাসে, কী যেন কী কত কথা মনে পড়ে যায়। স্বার্থ হিংসা আর হানাহানির মধ্যেও মনে হয় আকাশ মধু, বাতাস মধু। মনে হয় মৃত্যু আর অন্ধকার সত্য, কিন্তু তাঁর চেয়েও বড় সত্য মুক্ত জীবনের আনন্দ।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“জীবনে কিছু কিছু ব্যাপার আছে যা রূঢ় হলেও সত্য। ওকে জায়গায় থেকে জীবন কাটাবো এমন ইচ্ছে থাকলে তো বাড়িতেই থাকতাম, মাকে কাঁদিয়ে গৃহত্যাগ করতাম না। ভালবাসা, বন্ধুত্ব, প্রীতির সম্পর্ক-এসব খুব ভাল জিনিস, কিন্তু যে মোহ মহোত্তর সত্য থেকে আমাদের আড়াল করে রেখেছে তার থেকে মুক্তি পেতে হলে যতই কষ্ট হোক পথে বেরিয়ে পড়তে হবে। আমি আপনাদের ভালবাসায় জড়িয়ে পড়েছি। এবার যেতে হবে।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“রাত তখন প্রায় আড়াইটে। রূপোর মতো চাঁদ পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে বিশাল পাকুড়্গাছের পেছনে। মৃদু হিমের ছোঁয়া বাতাসে, কী যেন কী কত কথা মনে পড়ে যায়। মনে হয় মৃত্যু আর অন্ধকার সত্য, কিন্তু তাঁর চেয়েও বড় সত্য মুক্ত জীবনের আনন্দ।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“পানিফলের ঝাঁক অর্ধেক পুকুর ছেয়ে থাকে, কিন্তু যে কোন একটা জায়গা ধরে টান দিলে সবটা একসঙ্গে নড়ে ওঠে। আমাদের বেঁচে থাকাও ঠিক তাই। আলাদা ঘটনা বলে কিছু হয় না। সবকিছু সবকিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি তুমি দেবদর্শন অমরজীবন জীবন মৃত্যু হাসি কান্না-সব।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“যে কোনও ভালবাসাই শেষ পর্যন্ত স্বার্থের ওপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে থাকে-মাও যে শিশুকে ভালবাসেন, তা ওই ভালবাসার পরিবর্তে বাৎসল্যের রসঘন তৃপ্তিদায়ক অনুভূতি হয় বলেই। তবু নিছক বৈষয়িক স্বার্থের চেয়ে কি তা ভাল নয়? কোন না কোন আসক্তি যদি জীবনে থাকতেই হয়, তাহলে ঈশ্বরের নিষ্কাম আসক্তি থাকুক।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“সরল বিশ্বাসের মূল্য তার সারল্যেই। কিছু পাব বলে আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না, ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে ভাল লাগে বলেই তা করি। যদি কেউ অন্যরকম করে, তবে তা দোকানদারি। বাবার সম্পত্তি পাব, তাই বাবাকে ভালবাসি-এ কেমন কথা?”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর না জানাই থাক। তাতে জীবন সরস থাকে, জীবনে বিশ্বাস থাকে, আনন্দ থাকে। সব জেনে ফেলতে নেই।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“তোমরা ভাব তারানাথ গল্প বললেই বোধ হয় কেবল কষ্ট, দুঃখ আর ভয়ের গল্প বলে। কিন্তু সেটা সত্যি নয়। আমি জীবনের গল্প বলি, জীবন যেমন বিচিত্র উপলব্ধির মালা দিয়ে গাঁথা, আমার গল্পও তাই। কখনও মেঘ, কখনও রোদ্দুর।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“মনে হয় সৃষ্টির গভীরতম কারণটা ঈশ্বর মানুষের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য আড়াল করে রেখেছেন। সে রহস্য জানতে পারলে সৃষ্টির আর কোনও সার্থকতা থাকবে না। গোলকধাম খেলেছ তো? সেই যে কড়ি চেলে, কাগজে ছাপা ছকের ওপর গুটি এগিয়ে নিয়ে খেলা। জন্ম থেকে শুরু হয়ে বিদ্যালয়, কর্মক্ষেত্র, আদালত, পতিতালয়, শৌণ্ডিকালয়, মন্দির ইত্যাদির খোপে আঁকা ঘর পেরিয়ে খেলুড়েকে একটু একটু করে ওপরে উঠতে হয়। সবচেয়ে ওপরের খোপের নাম হচ্ছে গোলকধাম। সেখানে পৌছলেই খেলা শেষ। তারপর ছক আর গুটি তুলে ফেলা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। আমাদের জীবনও তাই। সবকিছু জেনে ফেললেই খেলা শেষ। সেটা ভগবান চান না। তা একদিক থেকে ভালই, খেলা চলছে চলুক না।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“সবকিছুর যে ব্যাখ্যা থাকতেই হবে তার কী মানে আছে। কিছু কিছু আবছা আড়াল থাক না, তাতে জীবন সরস হয়ে ওঠে।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“ভালো আর মন্দ, আলো আর অন্ধকার সৃষ্টির মুহূর্ত থেকেই বর্তমান, বৈপরীত্য আছে বলে সৃষ্টির সার্থকতা আছে। দানবিকতার ওপরে ঐশ্বরিকতার প্রতিষ্ঠাই মানুষের সাধনা।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“মানুষকে ভালোবাসার চেয়ে বড়ো ধর্ম আর নেই।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“বিত্তের মোহে আমরা চিত্তকে বড়ই উপেক্ষা করেছি।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“কলেজে আই.এ. পড়ার সময় কোলরিজের 'রাইম অফ দি অ্যানসেন্ট ম্যারিনার' পাঠ্য ছিল। অধ্যাপক উইলিং সাসপেনশন অফ ডিসবিলিফ বলে একটা সাহিত্যিক জাদুর কথা বলেছিলেন। অপ্রাকৃত কাহিনি পড়ার আগে পাঠক মনকে প্রস্তুত করে নেয়, তার অবিশ্বাসকে সাময়িকভাবে মুলতুবি রাখে।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“পয়সা কম উপার্জন করিনি জীবনে। বৈষয়িক লোক হলে অনেক জমিয়ে ফেলতে পারতাম। পয়সার মায়া নেই আমার। দিন চলে গেলেই খুশি। যাবার সময় ক'টা পয়সা গাঁটে বেঁধে নিয়ে যেতে পারব মনে কর?”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“মোটের ওপর জীবনটা বেশ ভালই কেটেছে। যদি সুযোগ পাই তাহলে আবার ফিরে আসব পৃথিবীতে। আবার আম কুড়োতে যাব ঝড়ের দিনে, খেলা করব মায়ের কোলে-সুখ-দুঃখ সহ্য করতে করতে বড়ো হয়ে উঠব।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“বাংলার বাতাসে বৈরাগ্য আছে, বুঝলে? কিছুক্ষণ চুপ করে খোলা হাওয়ায় বসে থাকলে মনে হতে শুরু করে-কে কার? কী হবে অনর্থক উন্নতির চেষ্টা করে?”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“তারপর সবকিছু ছেড়ে ফেলবার ভঙ্গিতে হাত নেড়ে তারানাথ বলল-যাক, যা গিয়েছে তা তো আর ফিরবে না। বরং আমার স্মৃতিতেই সমস্ত উজ্জ্বল হয়ে থাক।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“ভাবো তো, জিতটা তো নিপীড়িতজনেরই হল? চৌধুরীপরিবার বেঁচে গেলে সেটা ঈশ্বরের ন্যায়বিচার হত কি? পৃথিবীর আদালতে এই মানুষগুলো বিচার পায় না, বড় আদালতে যে এখনো সুবিচার হয়, তা তো প্রমাণিত হল।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
“নাস্তিক আর অবিশ্বাসীরাই অলৌকিক গল্পের ভালো শ্রোতা হয়।”
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
― তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র
