লোটাকম্বল Quotes
লোটাকম্বল
by
Sanjib Chattopadhyay387 ratings, 4.08 average rating, 56 reviews
লোটাকম্বল Quotes
Showing 1-30 of 48
“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“সুখে, দুঃখে, শান্তিতে, অশান্তিতে, সত্যকে হারিয়ে ফেলো না। উদার দৃষ্টিতে দেখবে। কখনও উৎকণ্ঠিত হবে না। বিপদে হারিয়ে ফেলো না নিজেকে। মনকে ধরে রাখবে কেন্দ্রবিন্দুতে, প্রদীপের স্থির শিখার মতো। মনকে শান্ত রাখবে, এক সেকেন্ডের জন্যেও দৃঢ়তা হারাবে না। মন হবে টলটলে তরল, নমনীয়, উদার, উন্মুক্ত, স্বাধীন। শরীর যখন বিশ্রামে তখনও মন যেন একাগ্রতা না হারায়। প্রচণ্ড ব্যস্ততা ও বিক্ষিপ্ততাতেও মাথা যেন ঠান্ডা ও স্থির থাকে। শরীর যেন মনের দ্বারা প্রভাবিত না হয়, মনও যেন শরীর নিরপেক্ষ থাকে। মনকে ধরে থাকবে, শরীরটাকে ভোলার চেষ্টা করবে। মনকে সবকিছু জানাবে, কিন্তু বাজে ব্যাপারে মাথা ঘামাবে না। বাইরের ব্যাপারে মাথা ঘামাবে না, নিজের ভেতরের শক্তিকে জাগাবার চেষ্টা করবে। ক্ষুদ্রকে বৃহতের ধারণা করতে হবে, বৃহৎকে ক্ষুদ্রের। সততাই একমাত্র মন্ত্র। জ্ঞানের পরিধি বাড়াও। জগতের সবকিছু জানো, বিচার, অবিচার সৎ, অসৎ। সমস্ত শিল্প ও দক্ষতা আয়ত্ত করো। পৃথিবী তোমাকে যেন ঠকাতে না পারে, যেন বোকা না বানাতে পারে।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“একটা প্রতীকে তোমার মন স্থাপন করো। যেমন বৃক্ষ। সবসময় মনে করবে তুমি একটা বিশাল গাছ। সেই গাছে অসংখ্য পাতা। একটা দিন মানে অসংখ্য মুহূর্ত। কয়েক কোটি মুহূর্ত নিয়ে একটা দিন। একটা দিন মানে ষড়ঋতু। তোমার সকাল হল বসন্ত। মুকুলিত মুহূর্তের পত্রসম্ভার নিয়ে বৃক্ষরূপী তুমি দিন শুরু করলে। দ্বিপ্রহর হল গ্রীষ্ম। মধ্যাহ্নের দিন ঢলে যাওয়ার বিষণ্ণতায় বর্ষার অনুভূতি। অপরাহ্নের শরতে তুমি দিবসের ফসল তুলবে গোলায়। সন্ধ্যার হেমন্তে নামবে নির্জনতা। দিনের চোখ বুজে এল। যাত্রা করো, যাত্রা করো যাত্রীদল, পাখি ফিরে চলো কুলায়, ব্যস্ত জনপদ শান্তির কর্মবিরতির আচ্ছাদনে। রাত আসছে, আসছে শীত, আসছে জৈব-নিদ্রা। একে একে ঝরে গেল একটি দিনের সব মুহূর্তের পাতা। প্রতিটি মুহূর্ত যেন কারণে ঝরে। অকারণে নয়। কর্মের যজ্ঞাগ্নিতে আহুতি দাও তোমার ওই বিল্ববৃক্ষের এক-একটি ত্রিপত্র। ত্রিপত্র মানে, স্মরণ, মনন, নিদিধ্যাসন।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“হরিশঙ্কর বললেন, ধর্ম ছাড়া কি পৃথিবীতে আর কিছু নেই? ছোটদাদু বললেন, অবশ্যই আছে। ভোগ আছে, দুর্ভোগ আছে। সাফল্য-অসাফল্য আছে। রোগ শোক জরা ব্যাধি আছে। ধর্ম হল বিচার। ধর্ম হল গণিত। ধর্ম হল হিসেব। ধর্ম হল ইনসেক্টিসাইড, পেস্টিসাইড। ধর্ম হল বুদ্ধি। লেজেগোবরে না হওয়ার কায়দা। বাঁচব, মরার সময় মরব। রোজ একবার করে মরব না। ধর্ম মানুষকে ঝকঝকে একটা জীবন দান করে। ধর্ম হল অলৌকিক এক টুথপেস্ট। মনের দাঁতকে ঝকঝকে করে। জীবনের দুর্গন্ধ দূর করে। ধর্ম নিয়ে ন্যাকামি চলে না, কাব্য চলে না। রোমান্টিকতা চলে না, ধর্ম হল কোদাল। মনের কৃষিকাজ ধর্মের কোদাল ছাড়া চলে না। হয় না।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“আদার ওয়ার্লডে যাওয়ার পথ ভারী সূক্ষ্ম। পথ আছে। সেটা স্কুল নয়। ভেরি মাইক্রসকোপিক। চেষ্টা করতে হবে, আঁকুপাঁকু করতে হবে। এই জগতের নিয়মে সে জগৎ চলে না। সেখানে টাইম সাইকল ভিন্ন। সেখানে গ্রাভিটি নেই। সে জলে লোহা ভাসে, শোলা ডুবে যায়।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“সহজে কেউ শান্ত হয়! মানুষ নয় তো, সবাই এক একটি তোলা উনুন। অশান্তির কালো কয়লা জীবনের আঁচে জ্বলছে।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“সুখে বাঁচার কায়দাটা কী? দুঃখটাকে মেনে নেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি। রিক্ততার মধ্যে পূর্ণতার অনুভূতি। প্রত্যাশা বর্জিত জীবন। আমাকে কেউ কিছু দেবে না, পারলে কেড়ে নেবে, পথ আর বাধা দুটোই থাকবে একসঙ্গে। কেউ আমার প্রশংসা করবে না, নিন্দাই করবে। আমাকে নিয়ে আলোচনা হবে না, হবে সমালোচনা। আমার কোনও বন্ধু থাকবে না, সকলেই শত্রু। সকলেই আমাকে ব্যবহার করবে। যারা কাছে আসবে, আসবে স্বার্থের কারণে। স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে আর চিনতে পারবে না। আমার ভাল হলে সবাই দুঃখ পাবে, খারাপ হলে ভয়ংকর আনন্দ হবে। তোমাকে শুধু দিতে হবে, পাবে না কিছুই। পৃথিবীতে ভালবাসা নেই, আছে ঘৃণা। জীবন একটা খেলা, চালে ভুল হলেই হার।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“ছোটদের ম্যাগাজিনে এক ধরনের ধাঁধা ছাপা হয় দেখেছিস? একটা ম্যাপের মতো, রোড ম্যাপ। একগাদা পথ। একটার ঘাড়ের ওপর দিয়ে আর একটা চলে গেছে, দুটোকে জড়িয়ে তৃতীয় আর একটা। সব পথই কিছু দূর পর্যন্ত গিয়ে আর নেই। আটকে গেছে। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার একটা পথই খোলা আছে। সেটাকে খুঁজে নিতে হলে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি চাই, কনসেনট্রেশন চাই। পৃথিবীর জটিল আবর্ত থেকে পথ চিনে লক্ষ্যে পৌঁছোবারও সেই একই কায়দা। দৃষ্টি স্থির, মন স্থির।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“জীবন থেকে সরে গিয়ে জীবনের নকশা দেখে নিতে হয় মাঝে মাঝে। মনকে সরাও, মনকে ঢোকাও। ঘাড়-মুখ গুঁজড়ে সংসারে পড়ে থেকো না। সবেতেই আছি আবার কিছুতেই নেই। ইউ লিড এ লাইফ অ্যান্ড লার্ন দি আর্ট অফ লিভিং।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“সবসময় ভাববে তুমি একজন অথরিটি। তুমি কারও চেয়ে কম যাও না। কেউ তোমার চেয়ে শক্তিশালী নয়। হারার আগে হেরে যাবে না। লড়াই করে হারো, হারবে। আমি ভয় করব না ভয় করব না/ দু’বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না॥”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“হঠাৎ হরিশঙ্কর আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললেন, কেন এমন বিরস বদন হেরি সখী। বড় বিপদে পড়েছ তাই না? কোথায় তোমার সুখশয্যা! সুদৃশ্য স্নানঘর, সুগন্ধী সাবান! Soak your life in a gallon of danger, spice it with powder of time and slowly roast it in the fire of your courage and enjoy a good dinner. বুঝলে কিছু? এক গ্যালন বিপদে জীবনটাকে চোবাও, চূর্ণ সময়ের মশলা মেলাও, সাহসের আঁচে ধীরে ধীরে রোস্ট করো, বসে যাও জীবনের মহাভোজে। আজ তাই হবে। তোমাদের সন্দেশ মারা ফুরফুরে আধ্যাত্মিকতার কোনও স্থান নেই রক্তমাংসের পৃথিবীতে। এটা এক ধরনের রোমান্টিকতা। বড়বাবুদের বিলাসিতা। লাঙল, কোদাল, কুড়ুল, খোন্তা, ছোরাছুরি, কাড়াকাড়ি, ছেঁড়াছিঁড়ি, এই হল জীবন। কোথায় গেল তোমাদের হিউমার? মুখ দেখে মনে হচ্ছে বধ্যভূমির দিকে চলেছ!”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“জন্ম এক যন্ত্রণা, ক্ষয় এক যন্ত্রণা, রোগ এক যন্ত্রণা, মৃত্যুও এক যন্ত্রণা, দুঃখ, শোক, কাতরতা, বিলাপ, হতাশা, শুধু যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা। যা পছন্দ করি না তার মধ্যে পড়ে থাকা যন্ত্রণা, যা পছন্দ করি তার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াও এক যন্ত্রণা। যা পেতে চাই তা না পাওয়া এক যন্ত্রণা, এই দেহ, পঞ্চভূতের এই পিণ্ড যা শুধু ভোগ করতে চায়, সব যন্ত্রণার উৎস এই দেহ।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“নিজেকে বিপদের মধ্যে ফেলবে, কষ্টের মধ্যে ফেলবে, ঝুঁকি নেবে, বেরিয়ে আসবে লড়াই করে। একটু ক্ষতবিক্ষত হবে, হয়তো মরতে মরতে বেঁচে যাবে; কিন্তু বাঁচাটা শিখবে।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“এক মুহূর্তে বিশ্ব জুড়ে কত কাণ্ড হয়ে যায় মোহন! এই মুহূর্তে কত জন্মাল, কত মরল, কত খুন হল, কত সংসার ভাঙল! কত বরফ জল হয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ল। কত মানুষ এগোল, কত মানুষ পেছোল। এই মুহূর্তে একটা ট্রেন গন্তব্যের দিকে কতটা এগিয়ে গেল। সে খবর রাখো মোহন?”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“বাট মাই সান, ইফ ইট ইজ নট এ বার্ড? যদি পাখি না হয়ে একজন প্যারালিটিক মানুষ হয়? এ ক্রিপল? তাকে বকে, ধমকে, তিরস্কার করে, যন্ত্রণা দিয়ে হাঁটাতে হয়। দয়া করলে, অনুকম্পা দেখালে তার ক্ষতি হয়। জীবনের দীর্ঘপথ পড়ে আছে তোমার সামনে, যে-পথে তোমার সঙ্গী হবে না কেউ, সেই পথে হাঁটার শক্তি তোমাকে অর্জন করতে হবে। প্রেমের কাছে, সহানুভূতির কাছে, সাহায্যের কাছে, মানুষের করুণার কাছে নিজেকে বিকিয়ে দিয়ো না। এই তো আসল কুরুক্ষেত্র পিন্টু। কেউ কারও নয়। না ঘর মেরা, না ঘর তেরা। নিজের এই অসুস্থতার সময় অবশ্যই বুঝে গেছ নির্ভর করার মতো একজনই আছেন, তিনি কে? তুমিও জানো না, আমিও জানি না। কেউই জানে না। জাস্ট এ ওয়াইল্ড গেস। একটা অনুমান মাত্র।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“হরিশঙ্কর অদ্ভুত উত্তর দিয়েছিলেন, তোমরা খুলবে না ভেবে চাবি ঘোরাচ্ছিলে, আর আমি ঘুরিয়েছিলুম খুলবে ভেবে। এই সামান্য তফাত। বলেছিলেন, দেশলাই কাঠি জ্বালাবার আগেই যদি ভাবো নিবে যাবে, তা হলে নিববেই; আর সেটা যদি একেবারেই ভুলে যাও কাঠি কখনওই নিববে না। একে বলে অ্যাপ্রোচ। একে বলে উইল। দুটো কথা আছে, আই ক্যান আর আই ক্যান নট। আমি পারি আর আমি পারি না। একটা শক্তি আর একটা দুর্বলতা।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“আদর্শ ও চরিত্র। আদর্শ কাকে বলে? সমস্ত জীবনের স্বাভাবিক পরিণতির দিকে নজর রেখে সফল জীবনের ছক তৈরি করা। চরিত্র হল, অভ্যাসের দাসত্ব না করা। নৌকোর দাঁড় দেখেছ? দু’পাশে দুটো। একই সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে চলে, জলে ওঠাপড়া করে। মন আর আদর্শ এই দুটো হল দাঁড় আর সংযম হল দাঁড় বাইবার তাল, ছন্দ। কোনওটাই তোমার আয়ত্তে আসেনি। নিজেকে দর্শন করার ক্ষমতাটাও জাগাতে পারোনি।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“বিশাল বড় একটা সিন্দুক খুলে যদি দেখা যায় ভেতরটা একদম ফাঁকা তা হলে মনের যে অবস্থা হয়, আমার মনের অবস্থাও ঠিক সেইরকম। শূন্যতাও হাসে। শূন্যতারও দাঁত আছে। ভাষাহীন ভাষা আছে, অবয়ব আছে। ফাঁপা একটা চেহারা। বিশাল এক ইঁদারার মতো। অতল।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“উত্তরে সন্ন্যাসী লিখলেন, সাইলেন্ট প্রেয়ার। কৃপা করো, কৃপা করো। জপই একমাত্র পথ। নাম জপ। ঈশ্বর আর নিয়তি দুটোকেই বোঝার চেষ্টা করো। ঈশ্বরের মর্জি বুঝতে হলে বুঝতে হবে, কেন তাঁর এমন ইচ্ছে হল! কেন তিনি করলেন এমন? আর নিয়তিকে বুঝতে হলে জানতে হবে, আমাদের জীবনের অনেক কিছুই নিয়তির এক্তিয়ারে। নিয়তির হাতে যা, তার পেছনে না-ছোটাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। জন্ম আর মৃত্যু নিয়তির হাতে, ধন, মান, মর্যাদা, মোক্ষ ঈশ্বরের হাতে।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“মুকু নামছে সিঁড়ি দিয়ে। কাঁধের কাছে হাত রেখে কোনওরকমে বললুম, আমাকে ছেড়ে এইভাবে চলে যাচ্ছ মুকু? আমার যে কেউ নেই।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“আমার বলতে ইচ্ছে করছিল, মুকু, ভালবাসা বোঝো? তারপরেই মনে হল, প্যানপ্যানে শোনাবে। ভালবাসা শব্দটাই ভালবাসার শত্রু। ভালবাসা একটা ভাবমিশ্রিত, সেবা, সাহচর্য, অবস্থিতি, সহ্যশক্তি। হাত ধরে নীরবে হাঁটা। ওটা বোধের ব্যাপার, বলার নয়।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“পৃথিবীতে একবারই এসেছ, মেয়েদের আঁচল ধরে না ঘুরে, ঈশ্বরের হাত ধরে ঘোরো। হয়তো পাবে না কিছুই, যতই না পাবে, তত পেতে চাবে, ততই বাড়িবে পিপাসা আমার, ওগো ফুরাবে না তুমি, ফুরাব না আমি, তোমাতে আমাতে হব একাকার।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“এবারের সব ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে উজ্জ্বল, প্রোজ্জ্বল এক জীবনের প্রত্যাশী। যে-জীবনে কাম বলে কোনও আকাঙক্ষা থাকবে না। রমণীর জন্যে থাকবে না কোনও ব্যাকুলতা। ওইটাই তো এইবারের জীবনে কাল হয়ে উঠেছে।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“যে ভালবাসে মেয়েরা তাকে ভালবাসবে না। কিছুতেই না, কোনও দিনও না। এইটাই নিয়ম। যে ঘৃণা করবে, তাকেই জয় করার জন্যে এগিয়ে যাবে। সব লিভিংস্টোনের জাত।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“মাঝে মাঝে মানুষ দিবাস্বপ্ন দেখে। কল্পনায় প্রাসাদ রচনা করে। কারও কল্পনা বাস্তব হয়, কারও হয় না। ভেলভেটের বাক্সে জড়োয়ার অলংকারের মতো সঙ্গে সঙ্গে ঘোরে। মাঝে মাঝে জীবনের অলস মুহূর্তে বের করে নাড়াচাড়া করে। আবার তুলে রেখে দেয়। তাতেও কত সুখ! পাওয়ার চেয়ে না-পাওয়ার আনন্দ প্রভূত। বিষণ্ণতার চেয়ে একান্ত উপলব্ধি আর কী আছে!”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
“চলো, ওপরে চলো। বলাইবাবু, আমরা তো আছি! এক যায়, আর এক থাকে। মানুষের মতো ভুলতে শেখো। এই দেখো, একে একে আমার তো সবাই চলে গেছেন। যান না, আমি ধীরে ধীরে সব ভুলে যাব। একে একে নতুন চরিত্র এসে আমার চারপাশে ঘিরে বসবে। মাইফেল চলবে দিনের পর দিন। তারপর আবার একদিন সব ভোজবাজি! শুন্য কার্পেট, ছেঁড়া ফুলের মালা, ঘুঙুরের দানা, বাতি ম্রিয়মাণ, ভোরের পানসে আলো, ঘুলঘুলিতে তন্দ্রাতুর পায়রার ডানার ঝটাপটি, মৃতের নিশ্বাসের মতো ফিকে বাতাস। ছিল সব, নেই কিছু। নদীর এক পাড় ভাঙে, আর এক পাড় গড়ে। চলো বলাইবাবু, ওপরে চলো। তুমি আমার কোলে উঠে চলো। বর্ষার দুপুরের স্মৃতি। মাতামহ একেই বলতেন—সব ধুস।”
― লোটাকম্বল
― লোটাকম্বল
