ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং Quotes

Rate this book
Clear rating
ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং by Shoroli Shilon
60 ratings, 3.07 average rating, 25 reviews
ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং Quotes Showing 1-30 of 44
“একটা জেব্রা ক্রসিং মনে করিয়ে দেয় আমাদের জীবনটা আসলে ডোরাকাটা। সে কাটার ভাজে পুলি পিঠায় নারিকেলের মতো মুড়িয়ে থাকা সুখ এবং ক্লান্তি পর্যায়ক্রমে জায়গাবদল করে মাত্র।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“শুরু থেকেই যা ঠিক নয় তার উপসংহারে নেমে আসে ধ্বস। মাঝের সময়টা শুধু ভ্রম হয়ে আনন্দ দিতে থাকে অনবরত। সে এক অপার্থিব সুখ। কিছু সময়ের এই সুখকে প্রশ্রয় দেওয়া মানে একই বৃত্তে ক্রমান্বয়ে চলতে থাকা।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“অনুমান করেছিলাম বলেই বুঝতে পেরেছিলাম—হয়তো তার একজন বন্ধুর দরকার ছিল তখন; যে বন্ধুটি তার যাবতীয় সমস্ত একাকীত্বকে নিমিষেই গিলে ফেলবে।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“খোদা আমি এ কোন ভুল লাইটহাউজের সন্ধান পেয়েছি?’
আমার মৃত্যু দাও, খোদা। আমার মৃত্যু দাও।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“যন্ত্র হয়ে জন্মালে আজন্ম যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাত বহন করা যায়, মানুষ হয়ে জন্মালে তার কী সমাধান?”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“আফসোস কি আগেও করিনি! বারবার কিসের যেন আফসোসে মারা গিয়েছি। আবার, আফসোস ঠেলে রগরগে সাহস দেখাতে গিয়েও বিপদে পড়েছি। নতুন নতুন আরো কয়েক ডজন আফসোস এর জন্ম হয়েছে।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“মধ্যরাত পেরিয়ে এসেছে প্রায়। চারটে বেজে ছাপ্পান্ন মিনিট। লুসিড ড্রিমস এ জীবন্ত করুণ ক্যাকোফোনি কপাল জুড়ে হাতুড়ি পিটায়। এলার্ম বাজার আগেই উঠে পড়ে। অফিসে যেতে হবে যে! আগেরদিন ইস্ত্রি করে রাখা কালো শার্ট-প্যান্ট পড়তে ইচ্ছা করে না। হঠাৎ করে ভ্যাপসা গরম ভেসে আসে। টলটলে জলে ভেসে ওঠা চোখে ঘুম চশমার চিকন ফ্রেমে কয়েদির মত নিষ্প্রভ। আরও একটা দিন, নতুন ভোর, কর্পোরেট জীবন যুদ্ধ, "ডু নট স্কিপ মিলস" টুং করে বেজে ওঠা, বাসে ঠাসাঠাসি করে ঘরে ফেরা, নিঃসঙ্গ রাত, আধ খাওয়া সিগারেটের ধোঁয়া আর পোলকা ডট টাই-এর ফিসফিসিয়ে বলতে থাকা, "রাত আর কত বাকি?”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“মানুষ এমন এক আজব প্রাণী যে আগাগোড়া খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে কোথায় তার খারাপ হয়, কোথায় গিয়ে সে ঠকে, কিংবা কোথায় গিয়ে সে মরতে মরতে বাঁচে! দিনশেষে সব ভেঙে যাওয়ার করুণ পূর্বাভাস পেয়েও কোনোকিছুর তোয়াক্কা করে না। "এবার আমি নিজেকে ঠিকই সামলে নেবো।"—নিজেকে বয়ান দেয়, নিজেও মানে না। সান্ত্বনা দেয়, দিতেই থাকে নিয়মমাফিক রোজ সকালে, বিকালে, মধ্যরাতে কিংবা লুসিড ড্রিমস এ সজাগে! সান্ত্বনা চেয়ে ভয়ংকর দ্বিতীয় বস্তুটি কী হতে পারে?”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“কিছু মানুষ প্রত্যেকের জীবনেই আসে। এক একজনের সময়সীমা এক এক রকম। তুই যে জিনিসই অবলম্বন করবি একদিন না একদিন সেটার সময় ফুরোবেই।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“তবে একসময় আমি বুঝতে উঠতে শুরু করি–প্রয়োজন ফুরালেই বোধহয় সবকিছুর ইতি টানতে হয়! হোক সেটা কালি ফুরিয়ে যাওয়া কোনো বলপেন কিংবা সম্পর্ক!”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“সান্ত্বনার আবডালে একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে আঁকড়ে ধরতে চায় সাময়িক সময়ের জন্য ঠিকই। এতে দোষের কিছু নেই। তবে 'অভ্যাস' নামক ভয়ঙ্কর বস্তু এসে সবকিছু বদলে দেয়। পরবর্তীতে আঁকড়ে ধরা মানুষটা থেকেই বেরিয়ে আসার সান্ত্বনা খুঁজে বেড়াতে হয় অদৃশ্যে..”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“অজস্র বার ভেঙে পড়তে দেখেছি কৌশিককে। তবে আমি জেনেছি, ভেঙে পড়া মানুষকে কখনো সান্ত্বনা দিতে নেই। মানুষকে তার নিজেকে সামলানোর কৌশল রপ্ত করতে হয়। ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে পাখিরা যেমন একটা আশ্রয়ের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে, মানুষও তেমনি মরিয়া হয়ে ওঠে একটা ঘরের জন্য। যে ঘর হবে মেহগনির ডালের মতো মজবুত আর স্থায়ী।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“দাঁড়িপাল্লায় একপাশে ওজনের সব বাটখারা রেখে দেখিস অপরপাশটা কতটা উঁচুতে উঠে যায়। অথচ পাল্লার ভেতরটা একদম খালি। কাউকে খুব ভালোবাসলে সে এতটাই ওপরে চলে যায় যে ওপর থেকে বাটখারাগুলোকে খুব নগন্য মনে হয়।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“যে মানুষটার কাছে তুই মানে রাখিস তার উপস্থিতি কেমন জানিস?
প্রাচীন কোনো বটগাছের মত।
শুধুমাত্র যেদিন থেকে তুই বুঝতে পারবি যে গাছটা আর থাকবে না। তোকে আর বাতাস দেবে না, ছায়া দেবে না। সেদিন থেকেই তুই সজাগ হবি। এমন স্থির, শান্তির আশ্রয় হারাতে তুই ভয় পেতে থাকবি। কারোর মূল্য বুঝতে তাই তার অনুপস্থিতি খুব দরকারি!”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“এত কাছের মানুষটার এত দূরে চলে যাওয়া কীভাবে মেনে নিবে জয়িতা? হঠাৎ করে কার কাছে গিয়ে কাঁদবে, হাসবে? মরে তো আর যাচ্ছেনা ঊর্মি। এই আধুনিক যুগে যোগাযোগ করার কত মাধ্যম! তবুও এক অসহ্য শূন্যতা ঘিরে ধরে তাকে। কিছু আর ভাবতে চায় না জয়িতা। অনুভূতি শূন্য হতে চায় ফের। সেখানে যেতে চায় যেখানে গেলে সব খালি হয়ে যাওয়ার ভয়ে বারবার মরে যেতে হয় না!”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“অথচ দেখ আমরা তাদের জন্যই মরে যাই, আমাদের অনুপস্থিতিতে যাদের কিছু যায় আসে না।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“কাল্পনিক ভাবনাকে তো কতভাবেই আকার দেওয়া যায়। যেমনটা লুসিড ড্রিমস এ দেওয়া যায়। সুখের কিংবা ক্লান্তির ছাঁচে গড়া সে আকার। কিন্তু বাস্তবে আমরা কতটুকু সজাগ? খেয়ালের বাইরেও তো কতকিছু ঘটে। যেটা চাইলেও নিজস্ব পরিপ্রেক্ষিতের ভিত্তিতে বিচারের অনুপযোগী হয়। সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাই অদূরদর্শী ভবিষ্যৎকে কল্পনা করে। যেটায় নিজের ক্ষতির সম্ভাবনা তুলনামূলক কম।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“মানুষ সময়ে ভাবে, অসময়ে ভাবে। ভাবতে ভাবতে অনুভূতি শূন্য হয়ে যায়। আবার শূন্যের খাতা ভরে ওঠে অঙ্কে, একদম কানায় কানায়! এ ভরে ওঠা মেনে নিতে আজকাল অনেক বেশি কষ্ট হয় জয়িতার। কবে না জানি সব আবার খালি হয়ে যায়।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“একসময় সে মানুষটা কথা বললে মনে হতো চারপাশে বেহালা বাজছে। ঘোর নামক অতল গহ্বর সমস্ত অস্তিত্বকে চুম্বকের মতন টানছে। যে অন্ধকার অর্ধেক ডুবন্ত জাহাজের একজন নাবিকের চোখের জ্যোতিতে ধরা পড়ে সে অন্ধকারে নিলীন হয়ে যাওয়াটাও নিছক কোনো ভ্রম নয়। তবে ধোয়া-ছোঁয়ার বাইরের মানুষকে আর কতটুকুই বা ধরে রাখা যায়! ধরতে পারলে মানুষ ছেঁড়ে দেওয়ার ঝুঁকি নেয়। আর যে ধরতে গেলেই সব পিছলে যায়, তার কথা লিখতে গেলে শুধুশুধু কালির অপচয়।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“ছোটবেলায় দেখেছিল দাদিকে উল দিয়ে সোয়েটার বুনতে। কত যত্নই না লুকিয়ে ছিল শুকনো চামড়ার ঐ দুই হাত জুড়ে! এমন উষ্ণতা পেটে মোচড় দিলে মনে হয় অপেক্ষাও বুঝি এত মধুর হয়!”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“অক্টোবরের শেষে শীতের একটা আমেজ আসে। সেটা সবাই লক্ষ করে। লক্ষ করে না যেটা সেটা হচ্ছে ঠিক লেইট সেপ্টেম্বরে দিনে ভ্যাপসা গরমের পরে রাতে যে এক ধরনের মৃদুমন্দ হাওয়া বয়; সে সময়টা। কেমন জানি শীত আসবে আসবে একটা ভাব। জানিয়ে রেখে যায় সে আসবে কিন্তু খানিকটা পরে। অনেকটা শীতের এই আগাম বার্তার মতো নাফিসাকে কেউ জানিয়ে রাখে না কেউ আসবে তার জন্য। কিন্তু ও অপেক্ষা করে, করতেই থাকে।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম আর আমার ভেতরের কু-ডাকটাও আস্তে আস্তে গুটি থেকে আলগা হওয়া সুতার মত লম্বা হতে থাকলো..”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“মা বললো, ক্ষিধে পেলে স্পর্ধা ভুলে যেতে হয়।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“তার পরের বছরই কক্সবাজার ট্যুর থেকে ফিরে এসে বড় আপু মা'কে একটা শঙ্খ এনে দেয়। ওটায় কান পাতলে নাকি সমুদ্রের গোপন আওয়াজ শোনা যায়। প্রায়ই শঙ্খটায় কান পেতে বসে থাকতো মা। আমি মনোযোগ সহকারে দেখতাম কী যত্নটাই না নিয়ে মা মিথ্যা সমুদ্রের গর্জন শুনছেন।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“বিখারনে কে লিয়ে এক দিল চাহিয়ে।
অর মার্দ কো দিল নেহি হোনা চাহিয়ে।
জিসকা দিল হ্যায়, ওহ বাস এক ফাটা হুয়া কাগাজ কি তারাহ।
যো এক সাস কি সাথ উড় যায়ে।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“বাবার ভেতরে এসব ছিলো না কখনোই। যত্ন সহকারে আত্নার বেড়ে ওঠার ব্যাপারে তার ছিল অনীহা। তবে রোজ  সকালে-বিকালে কবুতরগুলোকে খাবার দিতে ছাদে যেতেন বাবা। অহমিকা, তেজ, গর্বকে কখনো মরতে দেওয়া যাবে না। পুরুষমানুষ মানেই যেন এসমস্ত কিছুর এক পুরু আবরণ।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“তার প্রতিক্রিয়া ছিলো ভাবলেশহীন আর একদিকে তাকিয়ে রইলো বিরতিহীনভাবে। শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস জানান দিল আমরা দু’জনেই কেউ কাউকে সাহায্য করতে পারলাম না।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“সিসিফাসের বারবার পাথর ঠেলে ওপরে নিয়ে যাওয়া এবং গাধার মালামাল বহন করার যোগসূত্র বুনতে বুনতে, চোখ ডলতে ডলতে আবিষ্কার করে ফেলি রাস্তা-ই একমাত্র মোকাম। তবে সে রাস্তায় খুঁটিস্বরূপ কি গাঁথলে অস্তিত্বের এই বিশাল ভারটা তার কাঁধ থেকে নামবে সেটা ভাবতে ভাবতে মাগরিব সন্ধ্যার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। আকাশে কমলা রঙের ঘোড়া নীল সাগরে নিমজ্জিত হয়। নতুন করে পুরোনো দিনের ইস্তফার জানান দেয়, রাতের যাত্রারম্ভ।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“তবে যাই বলেন সবকিছুর পরে একটা ‘কিন্তু’ থেকেই যায়।
সেই ‘কিন্তু’ টাকেই তো আর বইতে পারছি না। তাই আমি জাগতিক সমস্ত যোগাড়যন্ত্র থেকে মুক্তি পেতে চাই।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
“প্রত্যেকটা মানুষ দুনিয়াতে আসে কিছু উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। কেউ টিকে থাকে, টিকে থাকতে হয় এজন্য। কেউ টিকে থাকতে চায় না, কেউ পারে না। আমি এসব দলের মধ্যে পড়ি না। জীবন যথেষ্ট মূল্য কিংবা উদ্দেশ্য বহন করে কিনা তাতে দাঁড় করাতে হয় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। শুধু আটকে আছি অদৃশ্য এক গোলকধাঁধায়। যেখান থেকে বের হওয়ার পথ আমার জানা নেই। শুধু অপেক্ষায় আছি আমার উদ্দেশ্যের মৃত্যুর অন্তিম সৎকারের।”
Shoroli Shilon, ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং

« previous 1