ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল - বাঙ্গালির সেরা উৎসব

সকালে বাজার যাওয়ার পথে দাঁড়িয়ে একবার আলোচনা সেরে নিয়েছেন অ-বাবু। ক-বাবু টেক-স্যাভি। সেকটর পাঁচ এ কাজ করেন। তাই মাছের দরদাম করার ফাঁকে নিজের স্মার্ট ফোনে চেক করে নিচ্ছেন, বিশেষজ্ঞ দের মতামত জেনে নিচ্ছেন। মাছওলার ও কৌতূহল কম না। তাই ক-বাবু কে জিগ্যেস করে সেও জেনে নিল বিজ্ঞ ব্যাক্তি দের মতামত। দ-বাবু দুধ-অলার সঙ্গে এক ঘণ্টা ধরে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করেও কিছু স্থির করে উঠতে পারলেন না।
শিশু থেকে বুড়ো কেউ বাদ নেই। রকে রকে মেলা। রবিবারের দুপুর, খেয়ে দেয়ে ভাত ঘুম দেবার বদলে দলে দলে সবাই যোগ দিচ্ছে রকের আড্ডায়। এমনিতে যাদের রোদে বেরোতে খুব আপত্তি, ঘর থেকে বেরিয়ে টুক করে এসি গাড়িতে উঠে পড়েন আর অফিস পৌঁছে বেস্মেন্টে গাড়ি পার্ক করেন, তারাও হাফ হাতা শার্ট পরে আজ বাইরে বেরিয়েছেন, পাড়ার চায়ের দোকানে এসেছেন।
ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল বলে কথা। গুগল অব্দি ডুডল বানিয়ে বসে আছে!
কোনদিনও বলে পা ঠেকিয়ে থাকুন বা না, আজ সবাই ফুটবল বিশেষজ্ঞ। জোর আলোচনা, বেজায় তর্ক। জার্মানি না আর্জেন্টিনা – জিতবে কে? চুলচেরা বিচার চলছে দু-দলের সব খেলোয়াড় দের শক্তি আর দুর্বলতার। মেসি কি একা পারবে? শেষ হাসি আজ হাসবে কে?
এর মধ্যে শ-বাবু খবর নিয়ে এলেন বিখ্যাত তারকা রা কে কাকে সমর্থন করছেন। উনি টালিগঞ্জ-এর এক প্রযোজক এর অফিস এ কাজ করেন। তারকা দের সঙ্গে ওঠা বসা আছে ওনার।
পাঁচু ওর বন্ধুদের সঙ্গে দোকানে গিয়ে সাদা আকাশি রঙ কিনে এনেছে – মুখে আর্জেন্টিনা-র পতাকা আঁকবে। দ্যাখাদেখি আবার গোপাল-ও জার্মানি–র লাল কালো আর হলুদ রঙ কিনে আনিয়েছে বাবাকে দিয়ে।
পাঁচু আর গোপাল - দুদলই গিয়েছিল পাড়ার দাদু, ৯০ বছরের বটলোচনকে বলতে কানে তুলোর পুটলি গুঁজে ঘুমোতে। কিন্তু উনি একবাক্যে এদের দুর দুর তাড়িয়ে দিয়েছেন – ছোঁরা-গুলো ভাবল কি করে যে উনি ঘুমাবেন? বয়স হয়েছে বলে কি খেলা দেখবেন না? আজকালকার ছেলে গুলো বোঝে নাকি খেলার মাথামুণ্ডু?
সময় যত এগোচ্ছে, বাড়ছে উত্তেজনা। নখ খেয়ে খেয়ে আর রাতে কিছু খাবার খিদে নেই।
হোক না মাঝ রাত। থাকনা কাল অফিস। আজ বাঙ্গালির সারারাতের উৎসব। সাধে কি কথায় বলে সব খেলার সেরা বাঙ্গালির তুমি ফুটবল!
Love,

© copyright 2014 – All rights reserved
Riot of Random

Published on July 13, 2014 11:57
No comments have been added yet.