Ghost World – By Daniel Clowes (A review in Bengali)
দেবকুমার মিত্র ভারতবর্ষের সেরা কমিক্স / গ্রাফিক নভেল বোদ্ধা এবং শিক্ষকদের মধ্যে একজন। আমার সৌভাগ্য-ই বলতে পারেন, যে আমার সুযোগ হয়ে গেলো তাঁর ‘comics and graphic novels appreciation ‘ নামক একটি অনলাইন কোর্স এ অংশগ্রহণ করার। একেবারে অজ্ঞ না হলেও (মানে standard stuff , ওয়াচমেন , ডার্ক নাইট রিটার্নস, পার্সেপোলিস, আর বাচ্চা বয়েসে টিনটিন এস্টেরিক্স DC কমিক্স অমর চিত্রকথা নারায়ন দেবনাথ ময়ূখ চৌধুরী – ওসব পড়েছি), জানি কম, বুঝি কম – ন্যারেটিভ ফলো করতেই জানি, ব্রেইডিং – ফেইডিং বুঝি না। অ্যালিসন বেকডেল, স্পিগেলম্যান , স্যাকো – এদের নাম শুনেছিলাম, পড়ি নি। ম্যাকক্লাউড দের তো নাম ও শুনি নি. বুঝতাম না, rather . কয়েকটা ক্লাস করে এখন তো মস্তিষ্কের প্যানেল গাটার সবকিছু একসাথে খুলে যাচ্ছে। অসাধারণ , লাইফ-চেঞ্জিং কোর্স একেবারে। এ নিয়ে পরে আবার লিখবো, অন্য কোনো গুডরিডস রিভিউ তে.
যাকগে – ভনিতা শেষ. আমার ২০২১ সালের প্রথম বই হলো একটি গ্রাফিক নভেল, ড্যানিয়েল ক্লোস-এর গোস্ট ওয়ার্ল্ড।
বইয়ের প্রধান চরিত্রদ্বয় ইনিড আর রেবেকা (বেকি), সবেই প্রাপ্তবয়স্কা মার্কিন লেট-টিন , তবে ১৮ বছর বয়েস হলেই কী আর কেউ বড় হয়ে যায়? স্কুল শেষ – তাহলে কী এবার কলেজ? না অন্য কিছু?
তাদের জীবনের এই সময়টার কয়েকটা মাসের দলিল এই বই।
তারা নিজেদের মতন করে জীবনকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে – জীবনকে বুঝতে শিখছে। বন্ধু হলেও – এরা ঠিক জয়-বীরু টাইপের বন্ধু নয়. এ বন্ধুত্বতে গভীরতা আছে, সমন্বয় আছে, একটি হালকা সমকামী আভাস-ও আছে; আবার ঈর্ষা, সন্দেহপরায়ণতা – কিছুমাত্রায় bullying ও নেই তা নয়. অর্থাৎ জটিল সম্পর্ক –
কার্ডবোর্ড ফিল্মি নয়। যেরকম সাধারণ মানুষের হয়।
দুজনের আর্থসামাজিক অবস্থা হয়তো একদম এক-ই নয় , ইনিড উচ্চমধ্যবিত্ত, বেকি হয়তো তার থেকে কিছুটা কম. ইনিড পড়াশুনোয় ভালো, বাবার সামর্থ আছে – হয়তো কলেজে যাবে। বেকি নীল-চোখ, সোনালী-চুল সুন্দরী। এ নিয়েও দুজনের মধ্যে সামান্য কমপ্লেক্স নেই তা নয়.
দুইজন-ই বেশ নাইহিলিস্টিক, একটু বেশিমাত্রায় সিনিক্যাল, রুঢ়প্রকৃতি এবং রুক্ষভাষী – ১৮-বছরের কিছুটা মিসফিট বাচ্চারা যেরকম হয়. একটি নিতান্তই downmarket কফি-পার্লার-এ বসে আশেপাশের পৃথিবীকে, শহুরে সভ্যতাকে দেখছে তারা – ব্যাঙ্গ করছে, টিটকিরি দিচ্ছে – আর নিজেদেরকেও চিনতে শিখছে। নিজেদের কমপ্লেক্স, ভয়, সংশয়, নিরাপত্তাহীনতা, একাকীত্ব , ভালোবাসা, রাগ, ঘৃণা, অভিমান – এগুলোকেও বুঝতে শিখছে।
স্লাইস-অফ-লাইফ গল্প এটা – ন্যারেটিভ ফিক্শন নয় , বলাই বাহুল্য যে গল্পের শেষে সাংঘাতিক কিছু একটা উপলব্ধি হবে না – উপলব্ধি ছড়িয়ে আছে বইয়ের প্রতি পাতায়, প্রতি প্যানেলে।
একটা কঠিন প্রশ্ন : বইটা যেহেতু আমার বেশ লেগেছে। তবে একজন তুলনামূলক-ভাবে বয়স্ক পাঠক হিসাবে আঠারো-বছরের চরিত্রদের নিয়ে লেখা বইটার সঙ্গে relate করতে সমস্যা হবে না? মানে, ক্যাচার ইন দা রাই – টাইপের বইয়ের সঙ্গে তো আর মধ্য-তিরিশে relate করা যায় না…
আমার উত্তর – কিছুটা হয়তো হবে. তবে ধরে নিন – ক্যাচার ইন দা রাই – ১৮-বছর বয়স্কদের জন্যেই লেখা। ওই ফোনি হ্যান ফোনি ত্যান মধ্য-কুড়িতেই বেশ meh লাগে। আমার অন্ততঃ ক্যাচার ইন দা রাই সেরকমই লেগেছে। সেই তুলনায় গোস্ট ওয়ার্ল্ড বোধহয় আপনার পড়ার সেরা সময় ওই মধ্য-কুড়িতেই। গল্পের চরিত্রদের সঙ্গে একটু বয়সগত দূরত্ব , আর সেই দূরত্বজনিত পার্সপেক্টিভটা হয়তো চরিত্রদের বোঝার জন্য ভালো। সাদা কালোর মাঝখানের জগতের সঙ্গে একটু পরিচয় থাকলেই হয়তো এই বইটা সবচেয়ে ভালো বোঝা যায়।
তবে আমার মতো বুড়ো হাবড়ার ও তো বেশ লাগলো। পড়ে দেখতে পারেন।
Recommended, and a strong 4 on 5.


