লাইফলাইন
আমার সমবয়সী বন্ধুদের মধ্যে প্রায় সবাই গাড়িবাড়ি কিনে 'সেটলড'। শতকরা নব্বইজন ঘোর সংসারী, উইকেন্ড প্ল্যান করতে হলে ছয় মাস আগে জানাতে হয়, বাকিরা পরিবারের 'দায়িত্ব' বুঝে নিয়েছে। ব্যাটাদের পিএফ থেকে পেনশন প্ল্যান, মুচুয়াল ফান্ড থেকে রিটায়ারমেন্ট স্কিম, সব পাক্কা। মাঝেমধ্যে কথা হয়। তখন আমার মুখে কথা সরে না। ইনভেস্টমেন্টের কথা জিগোলে আমি মুচকি মুচকি হাসি, অ্যাপ্রেসেল আর কেরিয়ারের প্রশ্ন শুনে মাথা চুলকোই। বাড়ির লোকে তো হাল ছেড়ে দিয়েছে। বন্ধুরাও অনেকে আড়ালে, অনেকে সামনেই হাসাহাসি করে। দু' একজন তো ঠাট্টা করে বলেই দিয়েছে, সুদীপ নাকি চিরকালের ফার্স্ট বয়! মাধ্যমিকে স্কুলের পঞ্চাশ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল! বেনারসে হইচই পড়ে গিয়েছিল সেই ঘটনা নিয়ে! সেই ছেলের কিনা এই দশা! শেষমেশ কিনা সে ভবঘুরে হয়ে গেল? দায়িত্বজ্ঞানহীন আর ইমম্যাচুয়ার তকমা তো আমার অনেক আগেই জুটেছে। সকলের এক ভাবনা, এই উলোঝুলো, বাউন্ডুলে স্বভাব নিয়ে আমি বাঁচব ক্যামনে? পরেরবার এই প্রশ্নের সামনে পড়লে (পড়ব ঠিকই) যথারীতি উত্তর দেব না সরাসরি, কিন্তু মনে মনে এই সূর্যাস্তের স্মৃতিটা ঝালিয়ে নেব। রিও দে জ্যানেইরো। আট জুলাই, দু হাজার বাইশ সাল। আমার জীবনের বেস্ট সূর্যাস্ত। সুগারলোফ মাউন্টেনের ওপর থেকে দেখা সেই স্মৃতি কোনও ছবিই ঠিকঠাক ধরতে পারবে না জানি, কিন্তু আমার মনের ক্যামেরার অসাধ্য কিছুই নেই। আমি কাজের জিনিস ভুলি না। আই উইল রিমেম্বার! আই উইল রিমেম্বার এভরি মোমেন্ট অফ ইট!থাক! এই মুহুর্তগুলো থাক! এই আমার ইনভেস্টমেন্ট! আমার সঞ্চয়! আমার লাইফলাইন! এবং আমার লাইফ! যতদিন বাঁচব, এই স্মৃতিগুলোই আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে। বাকি জানা তো সবকো হ্যায় হি!(ঠিক কী দেখলাম সেটা ছবিতে বোঝানোর কোনও উপায় নেই। মাফ করবেন।)
Published on November 24, 2022 04:23
No comments have been added yet.


