পোর্তো (প্রথম পর্ব)



Porto Douro River
পোর্তো।পর্তুগালের উত্তর প্রান্তে থাকা এই শহরের মাটিতে পা রাখতেই প্রথম আমার মাথায় যেই ভাব এলো,সেটা রোমাঞ্চ নয়।আনন্দ অথবা উদ্বেগও নয়।এই অনুভূতির নাম মুক্তিবোধ।ইংরেজীতে যাকে বলে লিবারেশন।
এতকাল ঘর বাড়ি,শহর,রাজ্য,দেশের মায়ায় পড়ে কাটিয়ে দিয়েছি।বই পড়ে মনে মনে পাড়ি দিয়েছি দূরদেশে।বিপদসংকুল, অজানা পথে পিঠে রুকস্যাক নিয়ে দিনের পর দিন কাটাবো,এই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে।গরীব দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে,মন যতই বিপ্লব করুক না কেন,মাথা ঠিক তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে সোজা পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।বড় জোর পাহাড়ে অথবা সমুদ্রের ধারে নিশ্চিন্তে কয়েকদিনের ছুটি অথবা ছোট ছোট ট্রেকিং করে নির্জনতার সঙ্গলাভ!ব্যাস,এইটুকুই।
আজ প্রথম পোর্তোতে এসে মনে হলো এতকাল যাবৎ বুনে রাখা সংসারের মায়াজাল ছিঁড়ে গেছে শেষমেষ।বাড়ি ফেরার তাড়া নেই।আগামী কয়েক মাস পথে পথে কাটবে অপরিচিত দেশের বুকে।পরিচিত জীবনের বাস্তব থেকে বহুদূরে আমি পথিক হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি দেশে দেশে।নতুন দেশ,নতুন মানুষ,নতুন অভিজ্ঞতা।স্পেইন থেকে পর্তুগাল,পর্তুগাল থেকে আবার দক্ষিণ স্পেইনের আন্দালুসিয়া,তারপর এগিয়ে যাবো ফ্রান্স,বেলজিয়াম হয়ে পূর্ব ইউরোপের দিকে।একবিংশ শতান্দীর এই পথ পরিক্রমা যতই স্বচ্ছল আর সুবিধেযুক্ত হোক না কেন,আদতে প্রতিদিন এক আনকোরা এডভেঞ্চার আমাদের অপেক্ষা করে  আছে।কত গল্প আর মুহূর্তকথা আমরা সঞ্চয় করছি ঝুলিতে।কয়েক বছর পর ঝুলি খুলে উঁকি দেব,এই স্মৃতিকথার আবেশে আবিষ্ট হয়ে থাকবো।  

সকালবেলায় মাদ্রিদের আভেনিদা দে আমেরিকা বাসস্টপ থেকে আলসা কোম্পানির বাসে করে পোর্তো পৌঁছতে পৌঁছতে আমাদের সন্ধ্যে হয়ে গেল।পথে সালামাঙ্কা,গুয়ার্দা পেরিয়ে এসেছি।দিগন্তবিস্তৃত তৃণভূমি,অরণ্য,পাথুরে জমি চোখের সামনে থেকে সরে সরে গেছে।যতদুর পর্যন্ত দৃষ্টি যায়,খোলা প্রান্তর।কোন কিছুই দৃষ্টিকে আড়াল করে না।ছোট বড় নদী,ছোট ছোট জনপদ।মাঝে কয়েকবার বাস দাঁড়িয়েছে গ্যাসের জন্যে,যাত্রী তুলতে নামাতে।আমরাও পেটে দানাপানি দিয়েছি সেই সময়।আমাদের সঙ্গেই বাসে উঠেছিল একটি পাঞ্জাবি ছেলে,আমাদের দেখে নিজে থেকেই সাহায্যের বাণী শুনিয়েছে দেদার।নিজে সে বেশিদূর লেখাপড়া করেনি,পাঞ্জাব থেকে এসে এখানে প্রথমে এক রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ নিয়েছিল,তারপর অন্য কাজ নিয়ে চলে গেছে লিসবন।পাঞ্জাবিরা ভাগ্য ফেরাতে অনেকেই দূরদেশে গিয়ে কাগজপত্তর না থাকলেও বেআইনি ভাবে হলেও ব্যবসাপত্তর,চাকরিবাকরি করে,ঘরকুনো হয়ে বসে থাকার লোক তারা নয়,আমাদের ছেলেটিকে এই নিয়ে বেশ গর্বিত মনে হল।ইম্মিগ্রেশানের কড়াকড়ি শুরু হয়েছে সিরিয়ান রেফিউজিদের আসার পর থেকে,পারমিট না থাকলে কাঁড়ি কাঁড়ি লোকজনদের ধরে তাদের নিজের দেশে ডিপোর্ট করা হচ্ছে,এই নিয়ে বেচারাকে বেশ রাগারাগি করতে শুনলাম।ইতিমধ্যে সে আমাদের ক্রীমপাউরুটি  খাইয়েছে,অতএব তার কথায় হুঁ হাঁ করে  গেলাম অনবরত।Image result for madrid to porto landscapeMadrid to Porto on the way
পোর্তো আর লিসবনের মধ্যে একটি জায়গাতেই যাওয়া যাবে সীমিত সময়ে,সেই নিয়ে রীতিমত মাথা ঘামিয়েছি।(এছাড়াও ব্রাগা,সিন্ত্রা,ফারো,কোএম্বরা,এভেইরো,বেলেম অনেক অপূর্ব ছোট ছোট শহর আছে,সেইগুলো এই যাত্রায় দেখা সম্ভব হবে না)পোর্তো আর লিসবন,পর্তুগালের এই দুটো শহরই অতীব সুন্দর,ঐতিহ্যের সাথে আধুনিক আদবকায়দা রপ্ত করে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে পর্তুগালকে অনেক ওপরে তুলে দিয়েছে।শেষ পর্যন্ত আমরা পোর্তোর পক্ষেই ভোট দিয়েছি।লিসবন রাজধানী বলে সেখানে ভিড়ভাড় খানিক বেশি,ইউরোপের প্রতিটা রাজধানীই নানান সংস্কৃতির মিশেল।নানা দেশের নানা জাতের লোক থাকে,কাজকর্মে ব্যস্ততা ঘিরে থাকে।আধুনিক জীবনযাত্রা খানিকটা হলেও দেশের স্বাভাবিক রূপকে গ্রাস করে।সেইদিক থেকে পোর্তো অনেকটাই একইরকম থেকে গেছে প্রাচীন কাল থেকে।আধুনিকতার জোয়ার এসেও পুরোনো শহরের ঐতিহ্যে দাঁত বসাতে পারেনি।ডোউরো নদীর ধারে দাঁড়ালে মধ্যযুগের ব্যবসায়িক বন্দরের আভিজাত্য আত্মসাৎ করা যায় সহজেই।  
ইউরোপের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে থাকা এই ছোট্ট দেশটি কি করে যে একসময় পৃথিবীর সিকি ভাগের ওপর উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল,সে নিয়ে আজও গবেষণা চলছে।প্রায় সাতশো খ্রিস্টপূর্বে সেল্টিক উপজাতি উত্তর থেকে এসে পর্তুগালে প্রবেশ করে।তারা পর্তুগালে লোহার ব্যবহার চালু করে,সেই লোহা নিয়ে কাজ করতে করতে একসময় দেখা যায় এখানকার লোকজন লোহার কাজে বেশি সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠেছে।নানান জায়গায় লোহাকে ব্যবহার করে যন্ত্রপাতি বানাতে শুরু করেছে তারা।একসময় টিনের আর তামার ব্যবসা করতে লেবনান থেকে আসে ফীয়নেসিয়ানরা,আসে গ্রীকরা,জার্মানির নানা জাতি উপজাতিও এসে হাজির হয় এখানে।২১০ খ্রিস্টপূর্বে রোমানরা যখন ইবেরিয়া আক্রমণ করে পর্তুগালের মধ্যভাগে সেল্টিক জনজাতি 'লুসিটানি'দের শাসন চলছে।রোমানদের প্রায় চল্লিশ বছর ধরে যুদ্ধে ঘোল খাইয়ে ছিল তারা।তারপর রোমানরা আধিপত্য বিস্তার করলেও খুব বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনি।স্পেনের সঙ্গেই পঞ্চম শতাব্দীর আশেপাশে ভিসিগথরা আক্রমণ করে পর্তুগাল,তখনকার সুয়েবি রাজাদের কচুকাটা করে রাজত্ব করতে থাকে,তারপর দুশ বছর পর মুররা এসে হাজির হয় দক্ষিণ পর্তুগালে।উত্তরের ছোট ছোট রাজ্যগুলো সেই সময় অধিকার করেছে নানান জাতের লোক। Portugal historyএকের পর এক যুদ্ধ হয়েই চলেছে লেওন,আস্তুরিয়া,গ্যালেসিয়ার রাজাদের মধ্যে।কয়েকশো বছর ধরে যুদ্ধ বিগ্রহ চলার পর একসময় লেওন আর অন্যান্য রাজ্যগুলো সংযুক্ত হয়ে পর্তুগাল রাজ্যের গঠন করে।রাজা আলফনসো নিজেকে পর্তুগালের সম্রাট ঘোষিত করে মুরদের আক্রমণ করেন।১১৩৯ সালে মুরদের পরাজিত করে আলফোনসো পর্তুগালের নানান শহরের পুনর্নির্মাণ করতে থাকেন।
প্রায় হাজার বছর ধরে চলা যুদ্ধ বিগ্রহ এখানেই থেমে থাকেনি।এর পরেও নানান ভোগান্তি লেখা ছিল মানুষের কপালে।লিসবন রাজধানী হওয়ার পর ব্ল্যাক প্লেগে দেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায়।একের পর একে বিদ্রোহ হতে থাকে,কিন্তু এই অরাজক রাজতন্ত্রের মধ্যেই ব্যবসা বুদ্ধি শানিয়ে উঠেছিল পর্তুগিজদের।নানা দেশ থেকে নানা লোকে যেই শিল্প নিয়ে এসেছিল এত শতাব্দী ধরে,সেই সব শিখে নিয়ে নিজের মতন করে সেই শিল্প কাজে লাগাতে শুরু করে এখানকার ব্যবসায়ীরা।১8০০ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে পর্তুগাল নৌবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠে।একের পর এক পর্তুগিজ জাহাজ ব্যবসা করতে বেরিয়ে পড়ে সমুদ্রে।মরক্কো,ভারতবর্ষ,ব্রাজিল,চীনদেশ নানান জায়গায় হাজির হয় তারা।বহু জায়গায় উপনিবেশ তৈরী হয়।হেনরি দি নেভিগেটরের তত্বাবধানে সঞ্চালিত এই সমস্ত সামুদ্রিক অভিযানের যুগকে পর্তুগিজরা 'এজ অফ ডিসকভারি' আখ্যা দিয়েছে।ভারতবর্ষ থেকে মশলা রপ্তানি হচ্ছে,আফ্রিকা থেকে হিরে,ব্রাজিলের উপনিবেশে পাওয়া গেছে সোনার খনি,পর্তুগাল এই সময় ফুলেফেঁপে উঠেছিল।
ইকুইজিশনের পর থেকে পর্তুগালের অবস্থার অবনতি শুরু হয়।১৮০৭ সালে ফ্রেঞ্চদের আক্রমণের পর থেকে পর্তুগিজরা স্পষ্ট ভাবে দু ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়,একদল রাজতন্ত্রের সমর্থক, অন্যেরা গণতন্ত্র চায়।এদিকে সম্রাট মিগেলের ছেলে পেদ্রো রাজা হলেও রাজকার্যে উৎসাহী নয়।একের পর এক বিপ্লব আর গৃহযুদ্ধ হলেও কিছুই ঠিক হয় না।একশ বছরের এই জের কাটিয়ে ১৯৩২ সালে সেনা অধিনায়ক কর্নেল সালাজার প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্পেনের জেনারেল ফ্রাঙ্কোর মতনই স্বৈরতন্ত্র চালাতে শুরু করেন।প্রায় চল্লিশ বছর পর তার পদত্যাগের পর বিপ্লব শুরু হয়ে নতুন করে।১৯৭৪ সালে যখন গণতন্ত্র বাস্তবায়িত করা হয়,পর্তুগাল নেহাৎই গরীব দেশ ছিল।কিন্তু গত তিরিশ বছরেই এখানকার লোকজন ঘুরে দাঁড়িয়েছে নতুন করে।অলিভ,পোর্ট ওয়াইন,পর্যটন সব ব্যাপারেই তাবড় তাবড় দেশকে টেক্কা দিয়ে আর্থিক ভাবে সাবলীল হয়ে উঠেছে পর্তুগাল।
কাসা মিউজিকাতে নেমে বাস ধরে আমাদের গন্তব্যের দিকে এগোনো হলো।মাদ্রিদের তুলনায় এখানে বিকেলে রোদের তেজ অনেক কম,খানিকটা মেঘের আভাসও আছে।আমাদের থাকার ব্যবস্থা এয়ার বি এন বির হোস্ট মারিয়ার নিজস্ব বাড়িতে,সেখানে পৌঁছতে খুব একটা সময় লাগলো না।মারিয়ার পাড়াটা শান্ত,লোকজনের হইহল্লা নেই।এপার্টমেন্ট এর সামনেই স্কুল কলেজের ছাত্রের জন্য বিশাল এক ফুটবলের মাঠ তৈরী করা হয়েছে।মাঠের ছাদ ঢাকা,ইনডোর স্টেডিয়াম বললে অতিশয়োক্তি হবে না।সবুজ মখমলের মত ঘাস ছেয়ে আছে সেইখানে।দেখলে নিজেই মাঠে নেমে পড়তে ইচ্ছে করে খেলার জুতো মোজা পরে। 
মারিয়ার ফ্ল্যাট পাঁচতলায়।এখানকার সব বাড়িতেই সদর দরজার সঙ্গে কলার সিস্টেম লাগানো থাকে।টেলিফোনে রিং করতেই মারিয়া দরজা খুলে দিল।লিফটে করে ওপরে উঠে গেলাম।মারিয়া আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিল।আমাদের চেয়ে বয়সে সে খুব বড় নয়,ভারতবর্ষে একাধিকবার ঘুরে গেছে।তার বাড়িটা এত সুন্দর করে সাজানো যে একবার দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।ছিমছাম দুটো ঘর,একটা ডাইনিং স্পেস,একটা রান্নাঘর।মারিয়া নানা দেশে ঘুরেছে,সেখানকার স্মৃতি চিহ্ন,ছবি দিয়ে আগাগোড়া জড়িয়ে রেখেছে তার ছোট্ট বাড়িটিকে।Living-roomMaria's apartment
Living-roomMaria's Studyআমাদের ঘরের জানলা দিয়ে ফুটবলের মাঠটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।বিছানার পুরু কম্বলের পাশাপাশি বেডসাইড টেবিলে রাখা রিডিং ল্যাম্প,সাজানো আছে কয়েকটা বই।সারা বাড়িতে রুচির ছাপ স্পষ্ট।মারিয়ার ব্যবহারও অতি অমায়িক।কিছুক্ষণের মধ্যেই তার সঙ্গে আমাদের এমন বন্ধুত্ব হয়ে গেল যেন কতকাল ধরে আমরা একে অপরকে চিনি।পেশায় সে একজন এক্যুপাঞ্চার স্পেশ্লিস্ট কিন্তু স্বাধীন ভাবেই কাজ করতে ভালোবাসে।বেশ কয়েক বছর এশিয়ার নানান দেশে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছে।এক ফাঁকে বেরিয়ে এখানকার সুপারস্টোর চেইন 'পিঙ্গে ডোসে' থেকে কিছু খাবারদাবার কিনে এনেছি।রান্নাঘরটা সুন্দর।হাতের কাছে বাসন কোসন,তেল মসলা সব কিছুই মৌজুদ।ভাত ডাল চড়িয়ে মারিয়ার সঙ্গে আড্ডা চলতে লাগলো। 
পর্তুগালের কুইসিন বিশ্ববিখ্যাত,কত রকমের খাবার যে এখানে লোকে খায়।বেশিরভাগ খাবারেই যদিও মাংসের আধিক্য।ডোউরো নদী শহরের এক প্রান্তে গিয়ে উত্তর অতলান্তিক মহাসাগরে ঝাঁপ দিয়েছে,অনেক মাছ ধরা পড়ে জালে।সেইসব মাছও খেতে ভালবাসে পোর্তোর লোকে।এখানের নিজস্ব ক্রঁসে(একধরনের মাখন দিয়ে তৈরী করা পাউরুটি,বিশেষ করে ফ্রান্সে ব্রেকফাস্টে খাওয়া হয়),ফরাসী দেশের ক্রঁসে থেকে অনেকটাই আলাদা।
Coffee and croissant, typical Portuguese breakfast| © ilolab/ShutterstockCoffee and croissant, typical Portuguese breakfastতার ওপর আছে এখানকার জনপ্রিয় পদ 'ফ্রান্সিন্হা।' ফ্রান্সিন্হা আসলে এক ধরণের স্যান্ডউইচ কিন্তু তার বাহার দেখলে ভিরমি খেতে হয়।পুরু করে দেওয়া হ্যাম,চার পাঁচ ধরণের সেঁকা মাংসের কিমা আর স্টিকের সঙ্গে টমেটো আর বিয়ার সস মিশিয়ে পরিবেশন করা হয় এই বিশালদেহী স্যান্ডউইচ।আদ্যপান্ত চীজে মোড়া।Related imageFrancesinhaএকটা স্যান্ডউইচ খাওয়া ছেলেখেলা নয়।কডফিশের নানান ব্যাঞ্জনও বেশ জনপ্রিয়।মারিয়া অবশ্য স্বাস্থ্যসচেতন,এসব সে কিছুই খায় বলে তো মনে হলো না।বিকেল সাতটার পর মারিয়া কিছুই খায় না।এমনিতেই তার রান্নাঘরে নানান হারবাল চা,ওট আর ফল দেখে আন্দাজ করেছিলাম সেটা।কিন্তু নিজে না খেলেও মারিয়া ম্যাপে আমাদের নানান রেঁস্তরা দাগিয়ে দিল পর্তুগিজ কুইসিন চেখে দেখার জন্যে।পোর্তোর পুরোনো শহরের কেন্দ্র নদীর ধারে রিভিয়েরা অঞ্চলে,জায়গাটিকে ১৯৯৬ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।মেট্রোতে যাওয়াই যায়,হেঁটে গেলেও মিনিট কুড়ির বেশি লাগবে না।সকাল সকাল রিভিয়েরার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ব ঠিক হলো। 
মারিয়ার সঙ্গে আড্ডা মেরে যখন শুতে গেলাম তখন রাত বারোটা।একজন আদ্যপান্ত পর্তুগিজ বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিয়ে নিজেকে বেশ পর্তুগিজ পর্তুগিজ মনে হচ্ছে।'বোয়া নইতে' বলে পর্তুগিজ ভাষায় নিজেকে গুড নাইট বলে ঘুমের সমুদ্রে জাহাজ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। Image result for portoRiviera

(ক্রমশঃ)  
পরের পর্ব এখানে পড়ুন

পোর্তো ( দ্বিতীয় পর্ব)
বই কিনতে হলে:
আমি নিরুদ্দেশ হতে চেয়েছিলাম






 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on October 01, 2020 10:49
No comments have been added yet.