* Title: আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী * Author: Anne Frank, Subhash Mukhopadhyay (translator) * ISBN: 9848260587 * Publisher: Nath publishing * Format: Softcover * Page count: 198 * Language: Bengali * Description: ঠিক তেরো বছর বয়েসে ডায়েরি লিখতে শুরু করেছিল এক সদ্যকিশোরী। তারপর দু বছর দু মাস। পনেরো বছর দু মাস বয়সী কিশোরী শেষ আঁচড় টেনেছিল ডায়েরির পাতায়। তার ঠিক সাত মাস পরে এই পৃথিবীর জল-মাটি-হাওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল সেই কিশোরীর। অথবা হয়নি। রয়ে গেছে। রয়েই যাবে। সেই কিশোরীর সেই ডায়েরি, দু বছর দু মাসের দিনলিপি-আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি। বাবার নাম অটো ফ্রাঙ্ক, মায়ের নাম এডিথ। জার্মানির বাসিন্দা তাঁরা, ধর্মে ইহুদি। অটো-এডিথের প্রথম সন্তান মারগট, জন্ম তার ১৯২৬ সালে। দ্বিতীয় সন্তান আনা, আনা ফ্রাঙ্ক, জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ জুন। ঠিক তখনই জার্মানির মাটিতে মাথা তুলছে হিটলার, সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে তার নাৎসি বাহিনী। ইহুদিদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে তারা। অনেক ইহুদিই জার্মানির পাট চুকিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্য কোনও দেশে, নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। ১৯৩৩ সালে দেশ ছাড়লেন অটো ফ্রাঙ্কও। চলে গেলেন হল্যান্ডে। আনা ফ্রাঙ্ক তখন চার বছরের শিশু। তার ছ' বছর পর শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পৃথিবী দখলের স্বপ্ন দেখছে হিটলার। জার্মানি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনকে, কারণ তিনি ইহুদি। হল্যান্ডের আলো-হাওয়ায় বড় হচ্ছে আনা ফ্রাঙ্ক। হল্যাণ্ডের নিরাপদ আশ্রয়ও আর নিরাপদ রইল না। ১৯৪১ সালে হিটলারের নাৎসিবাহিনী হল্যান্ড দখল করল। শুরু হল ইহুদিদের ওপর অত্যাচার। অসংখ্য ইহুদিকে পাঠানো হল বন্দীশিবিরে। ১৯৪২ সালের জুলাই মাসে শমন এল অটো ফ্রাঙ্কের নামে। অর্থাৎ-হাতছানি দিল বন্দীশিবির। সেই ডাকে সাড়া দিলেন না অটো ফ্রাঙ্ক। নিজেদের অফিস-বাড়ির পেছনদিকে এক গোপন আস্তানায় আশ্রয় নিলেন সপরিবারে। সঙ্গে রইল আরেকটি পরিবার। সাহায্য করলেন কয়েকজন বন্ধু। আনা ফ্রাঙ্ক তখন তেরো বছর এক মাসের সদ্যকিশোরী। তারপর পঁচিশটা মাস। পঁচিশ মাস পর, ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট, গোপন আস্তানায় হানা দিয়েছিল নাৎসিবাহিনী, আটজন 'ইহুদি' মানুষকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল বন্দীশিবিরে। জার্মানির আউশভিৎস্ বন্দীশিবিরে ১৯৪৫ সালের ৬ জানুয়ারি মারা যান আনার মা। মারগট আর আনাকে পাঠানো হয় আরও দূরবর্তী বেরজেন-বেলসেন বন্দীশিবিরে। ১৯৪৫-এর ফেব্রুয়ারির শেষদিকে অথবা মার্চের শুরুতে সেখানেই মারা যায় মারগট। আর মার্চ মাসেই, ওই বন্দীশিবিরেই, শেষবারের মতো চোখ বুজেছিল পনেরো বছর ন মাসের সেই কিশোরী-আনা ফ্রাঙ্ক। বন্দীশিবির থেকে ফিরতে পারেননি ফান ডান পরিবারের তিনজন সদস্য এবং ডাঃ ডুসেল-ও। মৃত্যুর অন্ধকার থেকে ফিরে এসেছিলেন শুধু একজন: অটো ফ্রাঙ্ক। আর তখনই তাঁদের দুই শুভার্থী, এলি আর মিপ, তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন লাল ডোরাকাটা মলাটের একটা ডায়েরি এবং আরও কিছু কাগজ-আনার লেখা। আনার দিনলিপি। আনার গল্প-উপন্যাস-স্মৃতিকথা। প্রকাশিত হয়েছিল সেই দিনলিপি-এই 'আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি'। তারপর ইতিহাসে। এক সদ্যকিশোরীর দিনলিপি অনুদিত হয়েছে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ভাষায়, তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র, মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক। এই ডায়েরিতে প্রায়শই খুঁজে পাওয়া যাবে সত্যিই-কিশোরী আনাকে, পরক্ষণেই পাঠককে বিস্মিত করে সামনে এসে দাঁড়াবে আশ্চর্য-গভীর আনা ফ্রাঙ্ক। দৈনন্দিন বর্ণনার পাশাপাশি তেরো থেকে পনেরোর দিকে হেঁটে-চলা কিশোরী অনায়াসে কথা বলে গেছে দর্শন, ঈশ্বর, মানবচরিত্র নিয়ে, প্রেম-প্রকৃতি-জীবনবোধ নিয়ে। সেইসঙ্গেই ফুটে উঠেছে সমকালীন ইতিহাস, ইহুদিদের লাঞ্ছনা-যন্ত্রণা-সংগ্রাম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছবি। লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখত আনা, স্বপ্ন দেখত মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকার। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়েস হত সত্তর বছর। সে বেঁচে নেই। ঝরে গেছে কুঁড়িতেই। অথবা ঝরেনি, ঝরে না। অনেক অনেক সত্তর পেরিয়েও, বেঁচে থাকে তারা- স্রষ্টারা। বেঁচে আছে আনা, মৃত্যুর পরেও, কারণ বেঁচে আছে তার দিনলিপি, আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি-যার মৃত্যু নেই।
* Author: Anne Frank, Subhash Mukhopadhyay (translator)
* ISBN: 9848260587
* Publisher: Nath publishing
* Format: Softcover
* Page count: 198
* Language: Bengali
* Description: ঠিক তেরো বছর বয়েসে ডায়েরি লিখতে শুরু করেছিল এক সদ্যকিশোরী। তারপর দু বছর দু মাস। পনেরো বছর দু মাস বয়সী কিশোরী শেষ আঁচড় টেনেছিল ডায়েরির পাতায়। তার ঠিক সাত মাস পরে এই পৃথিবীর জল-মাটি-হাওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল সেই কিশোরীর। অথবা হয়নি। রয়ে গেছে। রয়েই যাবে। সেই কিশোরীর সেই ডায়েরি, দু বছর দু মাসের দিনলিপি-আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি। বাবার নাম অটো ফ্রাঙ্ক, মায়ের নাম এডিথ। জার্মানির বাসিন্দা তাঁরা, ধর্মে ইহুদি। অটো-এডিথের প্রথম সন্তান মারগট, জন্ম তার ১৯২৬ সালে। দ্বিতীয় সন্তান আনা, আনা ফ্রাঙ্ক, জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ জুন। ঠিক তখনই জার্মানির মাটিতে মাথা তুলছে হিটলার, সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে তার নাৎসি বাহিনী। ইহুদিদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে তারা। অনেক ইহুদিই জার্মানির পাট চুকিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্য কোনও দেশে, নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। ১৯৩৩ সালে দেশ ছাড়লেন অটো ফ্রাঙ্কও। চলে গেলেন হল্যান্ডে। আনা ফ্রাঙ্ক তখন চার বছরের শিশু। তার ছ' বছর পর শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পৃথিবী দখলের স্বপ্ন দেখছে হিটলার। জার্মানি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনকে, কারণ তিনি ইহুদি। হল্যান্ডের আলো-হাওয়ায় বড় হচ্ছে আনা ফ্রাঙ্ক। হল্যাণ্ডের নিরাপদ আশ্রয়ও আর নিরাপদ রইল না। ১৯৪১ সালে হিটলারের নাৎসিবাহিনী হল্যান্ড দখল করল। শুরু হল ইহুদিদের ওপর অত্যাচার। অসংখ্য ইহুদিকে পাঠানো হল বন্দীশিবিরে। ১৯৪২ সালের জুলাই মাসে শমন এল অটো ফ্রাঙ্কের নামে। অর্থাৎ-হাতছানি দিল বন্দীশিবির। সেই ডাকে সাড়া দিলেন না অটো ফ্রাঙ্ক। নিজেদের অফিস-বাড়ির পেছনদিকে এক গোপন আস্তানায় আশ্রয় নিলেন সপরিবারে। সঙ্গে রইল আরেকটি পরিবার। সাহায্য করলেন কয়েকজন বন্ধু। আনা ফ্রাঙ্ক তখন তেরো বছর এক মাসের সদ্যকিশোরী। তারপর পঁচিশটা মাস। পঁচিশ মাস পর, ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট, গোপন আস্তানায় হানা দিয়েছিল নাৎসিবাহিনী, আটজন 'ইহুদি' মানুষকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল বন্দীশিবিরে। জার্মানির আউশভিৎস্ বন্দীশিবিরে ১৯৪৫ সালের ৬ জানুয়ারি মারা যান আনার মা। মারগট আর আনাকে পাঠানো হয় আরও দূরবর্তী বেরজেন-বেলসেন বন্দীশিবিরে। ১৯৪৫-এর ফেব্রুয়ারির শেষদিকে অথবা মার্চের শুরুতে সেখানেই মারা যায় মারগট। আর মার্চ মাসেই, ওই বন্দীশিবিরেই, শেষবারের মতো চোখ বুজেছিল পনেরো বছর ন মাসের সেই কিশোরী-আনা ফ্রাঙ্ক। বন্দীশিবির থেকে ফিরতে পারেননি ফান ডান পরিবারের তিনজন সদস্য এবং ডাঃ ডুসেল-ও। মৃত্যুর অন্ধকার থেকে ফিরে এসেছিলেন শুধু একজন: অটো ফ্রাঙ্ক। আর তখনই তাঁদের দুই শুভার্থী, এলি আর মিপ, তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন লাল ডোরাকাটা মলাটের একটা ডায়েরি এবং আরও কিছু কাগজ-আনার লেখা। আনার দিনলিপি। আনার গল্প-উপন্যাস-স্মৃতিকথা। প্রকাশিত হয়েছিল সেই দিনলিপি-এই 'আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি'। তারপর ইতিহাসে। এক সদ্যকিশোরীর দিনলিপি অনুদিত হয়েছে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ভাষায়, তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র, মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক। এই ডায়েরিতে প্রায়শই খুঁজে পাওয়া যাবে সত্যিই-কিশোরী আনাকে, পরক্ষণেই পাঠককে বিস্মিত করে সামনে এসে দাঁড়াবে আশ্চর্য-গভীর আনা ফ্রাঙ্ক। দৈনন্দিন বর্ণনার পাশাপাশি তেরো থেকে পনেরোর দিকে হেঁটে-চলা কিশোরী অনায়াসে কথা বলে গেছে দর্শন, ঈশ্বর, মানবচরিত্র নিয়ে, প্রেম-প্রকৃতি-জীবনবোধ নিয়ে। সেইসঙ্গেই ফুটে উঠেছে সমকালীন ইতিহাস, ইহুদিদের লাঞ্ছনা-যন্ত্রণা-সংগ্রাম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছবি। লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখত আনা, স্বপ্ন দেখত মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকার। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়েস হত সত্তর বছর। সে বেঁচে নেই। ঝরে গেছে কুঁড়িতেই। অথবা ঝরেনি, ঝরে না। অনেক অনেক সত্তর পেরিয়েও, বেঁচে থাকে তারা- স্রষ্টারা। বেঁচে আছে আনা, মৃত্যুর পরেও, কারণ বেঁচে আছে তার দিনলিপি, আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি-যার মৃত্যু নেই।
Cover image:
(I clicked the picture of cover)