Kumar discovers a puzzle engraved in a human skull. The skull was stored by his grandfather long ago. Unable to solve the puzzle he consults with his close friend Bimal to find out the secret behind it. Bimal is adventurous and also a professor of Anthropometry. They solve the puzzle and realise that this is nothing but a clue of hidden Tibetan treasure which is concealed in a undisclosed spot in a dense jungles of Neora Valley. By this time Bimal's elder brother, Hiranmoy is Kidnapped by some unknown group. Bimal and Kumar together start an adventure to recover the treasure and rescue Hiranmoy but one Karali is also in a hunt for this treasure. Karali is ruthless and dare to capture it at any cost.
একটু দেরি করে বোধহয় পড়লাম বইটা । আরও আগে পড়লে আরও বেশি ভালো লাগতো সে ব্যাপারে নিশ্চিত । যে সময়ে লেখা, শুধু তার জন্যেই স্যালুট ডিজার্ভ করেন লেখক । আগাগোড়া খাটি অ্যাডভেঞ্চার আর গুপ্তধন শিকার । বিমল-কুমার ডুয়োকেও খাপছাড়া লাগেনি । একজন অতিরিক্ত সাহসী, একজন একটু ভীতু গোছের ।
কাহিনী কিছু কিছু জায়গায় বর্ণনার কমতি ছিল বলে মনে হয়েছে, তবে সেটুকু লেখক পুষিয়ে দিয়েছেন প্রকৃতির বর্ণনা দিয়ে । কুমার বিমল যেখানে গিয়েছে সেখানকার আশপাশের অঞ্চলের বর্ণনা খুব গুছিয়ে লেখেছেন । আর সিলেটের ছাতকের আশপাশ অঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় এরকম অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে অন্য কোন বই পড়া হয়নি আগে ।
তবে কাহিনী যেভাবে শেষ হল, সেটাই আমাকে টেনেছে বেশি । দেখলাম এই জুটিকে নিয়ে লেখা আরও কয়েকটা গল্প আছে, ওগুলোও পড়ে ফেলতে হবে ।
বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, যখন ঘরকুনো বাঙালী আরও বেশি ভীরু আর আরামপ্রিয় ছিলো, যখন বাংলার কিশোর সমাজের জন্যে অ্যাডভেঞ্চার বইয়ের নামে কিছুই ছিলো না, সে সময়ে 'চাঁদের পাহাড়', 'যকের ধন' কী অদ্ভুত ব্যাপারই না ছিলো!
হেমেন্দ্রকুমার রায়কে ধন্যবাদ তিনি লিখেছিলেন কুমার আর বিমল ডুয়োর কাহিনি। হয়তোবা বিমলের সাহস দেখে দু'কদম নিজের অঞ্চলের বাইরে রেখেছিলো আরও কিছু তরুণ।
খাপছাড়া কিছু জায়গা আছে, যাত্রা, কর্মকাণ্ড, ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনা অত নিখুঁত নয়। কোথাও অতিরিক্ত শারিরীক শক্তি বা কোথাও বর্ণনাতে বিস্তারিতের অভাব মনে হয়েছে। কিন্তু সে সময়ের প্রেক্ষাপটে যেটুকু লেখা হয়েছে শিলং, খাসিয়া পাহাড় বা বন-জঙ্গল নিয়ে, মন্দ না। সিলেট-ছাতকের দিকে তখন কয়জন কলকাতা নিবাসী আসতো? আমি এখনো খুব বেশি লেখাতে এই অঞ্চলের বিবরণ পড়িনি। ভালো লেগেছে তাই আরও। আবার গল্পের মধ্যে দিয়েই সেই এলাকার বিখ্যাত জিনিসের বিবরণ এসেছে, গল্পে গল্পে ভূগোল পাঠের মতো।
আগে পড়া হয়েছিলো না, পড়লাম এবার। ভালো লেগেছে, এখনো ছোট কেউ যদি পড়ে, উপভোগ করাতে পারার কথা
মানুষ হতে হলে ডানপিটে হও। এত সাহস পায় কোথায় মানুষ! অচেনা অজানা পথ ধরে চলতে পারে কেমনে মানুষ! জীবনের কাছে যত চাওয়া পাওয়া তার সবটুকুই ওই ডানপিটে মানুষ গুলাই পায় হয়তো।
এ্যডভেঞ্চার জাতীয় গল্প খুব কম পড়া আমার। এই গল্পটা আগা গোড়া অ্যাডভেঞ্চারে মোড়া। গল্পের শুরু থেকে শেষ অবদি টান টান উত্তেজনা। কিসের পর যেন কী ঘটে! ভৌতিক গল্প না হলেও ভয়ের একটা আমেজ অনায়াসেই মনের ভেতর চলে আসে। আর বিমল- কুমারের অ্যাডভেঞ্চার দেখে মনে হয় চলে যাই কোন এক অজানা অচেনা স্থানে যেখানে শুধু পথে পথে বাধা আসবে আর, সব কিছু ডিঙ্গিয়ে সূর্যের মতো দীপ্ততার সাথে এগিয়ে যাব বহুদূর 😉।
আহা কি টীম! একজন একেবারে সাক্ষাত বীরপুরুষ যে কোনো কিছুরই পরোয়া করেনা আর আরেকজন ভীতুর ডিম্ব, প্রতি পদেপদে হাল ছেড়ে দিতে প্রস্তুত! হেমেন্দ্র কুমার এমন একটা জুড়ি মেলালেন কিভাবে!
আর এতো বানান ভুল কেন বইয়ে? প্রুফ রিডিং করা হয়নি নাকি?
"এ পরাজয় আসলেই সহ্য করার নয়"😓 যা হোক,গল্পটা পড়ার চেয়ে মির্চি তে শুনতেই বেশ লাগলো। থ্রিলিং ছিল,ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক গুলোও সুন্দর। Biodiversity Conservation Organizations নোট করাও শেষ হলো গল্প শুনতে শুনতে। তবে হ্যাঁ, হুট করে এখন আমারো বের হয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে আসামের খাসিয়া পাহাড়, রুপনাথের গুহা,প্রাচীন বুদ্ধমঠ এ। যকের ধন না পেলেও ভালোই এডভেঞ্চার পাবো।
প্রথমবার পড়েছিলাম ছোটোবেলায়। মনে পড়ে খুব একটা আহামরি লাগেনি। ততদিনে চাঁদের পাহাড় পড়ে ফেলেছি, সেই অর্থে আর কোনো অ্যডভেঞ্চার বইই ভালো লাগে না। এই এত্তদিন বাদে, যখন বিমল কুমারের সাথে আরো একবার যকের ধনের খোজে বেড়িয়ে পড়লাম। ভেবেছিলাম, এবারে হয়তো এক তারা আরো খসবে।
কিন্তু সেটা একেবারেই হলো না।
যতই বড়ই হয়েছি, হেমেন রায়কে বিস্তর দুষেছি। ছেলেবেলার সেই ভালো লাগা দিন কে দিন কমেছে। পাঠক হিসেবে তাই আজকে একটা গাট্টা খেলুম যেন। আহা, নেহাত একটু শিশুপাঠ্য গল্প লিখতেন। মাঝে মধ্যে কিছু বিদেশি গল্প উপনাসের ছায়া পাওয়া যেত তার সাহিত্যে। তবে কিই বা হয়েছে তাতে। পথপ্রদর্শক ছিলেন। নিয়ম করে রহস্য-রোমাঞ্চ অভিযানের গল্প লিখতেন সেই সময়। ঐতিহাসিক রচনায় তার অবদান বিস্তর। যতই হোক, তার অবদানটা অদেখা করা অন্যায়।
গল্পে ডিটেইলিং এর স্পষ্ট অভাব। বর্ণনার খামতি, সাথে কুমার বাদে কোনো চরিত্রের মানসিক চিন্তাধারা লেখক তুলে ধরতে অক্ষম। কিন্তু তাও বলবো, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের যকের ধন (পড়ুন : জোকার দহন) না দেখে থাকলে - আর ওই পাড়া মারাবেন না, এই বইটিই আরেকবার পড়ে ফেলুন।
বিমল ডাকাবুকো-সাহসী-একগুঁয়ে, কুমার একটু ভীরু কিন্তু তদাচ নির্মল। অ্যডভেঞ্চার প্রিয় এই প্রজন্মরা হয়তো বাংলার বুক থেকে ইদানিং লোপ পেয়েছে। শঙ্কর আলভারেজদের সাথে, কোনো এক দুর্গম গুপ্তধনের খোঁজে গিয়ে, হয়তো আর ফেরেনি তারা। কিন্তু অনেককাল পূর্বে��� সেই হেমেন রায়ের বদান্যতায়, বাঙালির এই অভিযাত্রিক মনোভাব আজও মানুষ মনে রেখেছে। এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ভবিষ্যতেও রাখবে।
''আমরা যেনো ��লার জন্যই জন্মেছি। আমরা যেনো মৃত্যুর দিন পর্যন্ত খালি চলবো আর চলবোই।"
উত্তম পুরুষে লেখা কিশোর ক্ল্যাসিক উপন্যাসটির চরিত্র মূলত পাচটি। গল্পকথক কুমার, প্রতিবেশি বড় দাদা বিমল, বিমলের চাকর রামহরি, খল চরিত্র করালী আর কুমার কুকুর বাঘা।
কুমারের দাদুর মৃত্যুর পর তার ব্যক্তিগত একটি বাক্স থেকে অদ্ভুত একটি জিনিস প্রকাশিত হয়। অদ্ভুত সেই বস্তুটি হলো মৃত ব্যক্তির খুলি। আর সেই খুলির সাথে লেখা কিছু সংকেত আর একটি নোটবুক যেখানে রয়েছে গুপ্তধনের সন্ধান।
অতঃপর কুমার তার নিজের কুকুর বাঘাকে নিয়ে প্রতিবেশী বড় দাদা বিমল আর চাকর রামহরির সাথে জোট করে বেরিয়ে পরে আসামের সেই দুর্গম পাহাড়ের উদ্দেশ্য। কিন্তু পথে বাঁধা হয়ে দাড়াল করালী যে কুমারের দাদুর বিশেষ পরিচিত হবার কারণে আগে থেকেই গুপ্তধনের ইতিহাস জানত। আর তারপর? সব বলে দেবে নাকি, জানতে চাইলে নিজেরা পড়ুন
এই লেখাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র মূলত বিমল। প্রচন্ড সাহসী এবং সামর্থ্যবান বিমলের কাছে কুমারের উপস্থিতি যেন একদম বেমানান।
হেমেন্দ্রকুমার রায়ের প্রথম কোন লেখা পড়লাম এবং মুগ্ধ হলাম। যেন উনি উপন্যাস লিখার চেষ্টা করেননি বরং পাঠকদের একটা গল্প শোনাতে চেয়েছেন। এই উপন্যাসের পরবর্তী অংশের নাম আবারো যকের ধন । আশা করি কিশোর ক্ল্যাসিক যারা পড়েন তাদের প্রতিটি লেখাই ভাল লাগবে
বইটা যে বয়সে পড়া দরকার ছিল সে বয়সে বইটা পাইনি। যে বয়সে বইটা পেয়েছিলাম সে বয়সে বইটা আর পড়ার ইচ্ছে হয়নি। অবশেষে সব বাধা কাটিয়ে বইটা পড়লাম। প্রায় নব্বই বছর ধরে বইটা কম-বেশি কেন আলোচিত তা বোঝা গেলো। বইটা লেখার ক্ষেত্রে হেমেন্দ্র কুমার রায় যে যথেষ্ট খাটাখাটুনি করেছেন তার ছাপ স্পষ্ট। ঐ আমলে বড় অংশ অ্যাডভেঞ্চার লেখক যেখানে আপন মনের মাধুরী মিশায়ে যা খুশি তাই লিখে দিতেন সেখানে শ্রীযুক্ত রায় মহাশয় যথেষ্ট খোঁজখবর নিয়ে বইটা লিখেছেন। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আর জীবনযাত্রার রূপান্তরকে কালানুরূপ পরিবর্তন করে দিলে গল্পটা এখনকার সময়েও ভালো ফিট্ করে যাবে। বছর দুই আগে এর নাকি নতুন চলচিত্রায়ণ হয়েছে - দেখা হয়নি। সেটা বরং না দেখি, বইটাই বরং মাথায় থাক।
লোডশেডিং। হারিকেনটা একটু উসকে দেওয়া। দুই পা ভাঁজ করে সোফার উপর তুলে নিয়েছি। হাতে "যকের ধন"। পড়তে পড়তে আর কোন বাহ্যজ্ঞান নেই। হঠাত খেয়াল করলাম পা-টা কখন যেন নামিয়ে নিচে রেখেছি। ইলেকট্রিক শক খাওয়ার মত করে তুলে ফেললাম তাড়াতাড়ি। হঠাৎ যদি সোফার তলা থেকে বের হয়ে আসে যক্ষ!
"যকের ধন" আমাকে এই অনুভূতি দিতে পেরেছে। অনেকের সাথে কথা বলেছি পরে এই বইটা নিয়ে। কেউই আমার মত উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে নি। পড়ার সময় আমার বয়সটা সম্ভবত একটা ফ্যাক্টর ছিল। এটা আসলে কিশোর ক্ল্যাসিক। বড় হয়ে যাওয়ার পর পড়লে আর তেমন লাগে না সম্ভবত।
এইটার সিক্যুয়েল "আবার যখের ধন" খুঁজেছি অনেক। পাগলের মত। পাইনি। এখনো খুঁজি। কেউ খুঁজে দিতে পারলে বা পড়ার ব্যবস্থা করে দিলে তাকে খাওয়াব :/
আধুবুড়ো বয়সে পড়লাম বলেই হয়তো ঠিক জুতসই লাগলো না। এ বইটা পড়ার সঠিক বয়স হাই স্কুল পড়ুয়া অবস্থায়। অবশ্য কাহিনীর বুননে, বর্ণনায়, চরিত্রের গঠনে সবকিছুতেই বেশ ত্রুটি নজরে পড়েছে, এবং আমার বিশ্বাস সেটা হাই স্কুলে পড়া বয়সে পড়লেও আমার চোখে পড়তো। অনেকটাই ছেলেমানুষী লেখা, ছেলেমানুষদের জন্যই লেখা।
আমার রেটিং দুই তারা। যে সময়ের প্রেক্ষাপটে বসে এই উপন্যাস লেখার কথা ভেবেছেন লেখক, চিন্তা করলে আরো এক তারা বাড়িয়ে দেয়া যায়।
ক্লাস সিক্সে পড়া ভাতিজির হাতে তুলে দিয়ে দেখি তার পাঠ অভিজ্ঞতা কি রকম।
হঠাৎ করেই টের পেলাম বহুদিন বাংলায় কোন থ্রিলার পড়া হয়নি৷ অগত্যা 'যকের ধন' এর পিডিএফ খুলে পড়তে বসে গেলাম। সত্যি বলতে গল্পটা আমার এত ভালো লেগে যাবে সে আশা একেবারেই করি নি৷ একে তো বয়সটা হয়তো একটুখানি বেশিই এই গল্প উপভোগের জন্য, উপরন্তু গুডরিডসে বেশিরভাগ রিভিউতেই দেখলাম 'ভুল বয়সে পড়াজনিত' বড় ধরনের না হলেও মাঝারি ধরনের অসন্তোষ জানানো হয়েছে। বইটা পড়ার পর এ অসন্তোষগুলোর কারণ বোধহয় কিছুটা আঁচ করতে পারি।
একটা এ.আই.(AI) কে যদি এ পর্যন্ত বাংলা ভাষায় লেখা যাবতীয় মৌলিক থ্রিলার গেলানো হয়, এবং এরপর তাকে নির্দেশ দেয়া হয় তার এই জ্ঞানের আলোকে জেনেরিক একটা উপন্যাস দাঁড় করাতে, বেচারা এ.আই. হয়তো প্লটওয়াইজ 'যকের ধন' এর চেয়ে খুব বেশি আলাদা কিছু দাঁড় করাতে পারবে না। গুপ্তধনের হাতছানি, গোপন সাংকেতিক লিপি, দুর্ধর্ষ এক শত্রু, দুর্গম অরণ্যে ভ্রমণ, অতিপ্রাকৃতের ভয়, এমনকি প্রবল অনুগত এক ভৃত্য চরিত্র পর্যন্ত - বাংলা থ্রিলার সাহিত্যের কোন কমন এলিমেন্ট এতে নেই? কিন্তু অবশ্যই এখানে মূল বিষয়টা হচ্ছে রচনার সময়কাল। হেমেন্দ্রকুমার রায়ের বিমল-কুমার জুটি নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস এটি, প্রথম প্রকাশ খুব সম্ভবত ১৯৩০ এর দশকে(সঠিক তারিখটি বেশ খোঁজাখুঁজি করেও জানতে পারলাম না)। সেই সময়ে এই প্লটলাইন নিশ্চয়ই জেনেরিক ছিল না। বরং পরবর্তী প্রায় ৯০ বছরে এইখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বহু গল্প লেখা হয়েছে, তাই এখন জেনেরিক লাগছে। ক্লাসিক হবার বিড়ম্বনা!
কাহিনি হলো এমন - আসামের গভীর অরণ্যের মাঝে প্রকাণ্ড খাসিয়া পাহাড়, তার বিখ্যাত রূপনাথের গুহার মধ্য দিয়ে সু��ূর চীনদেশে চলে যাওয়া যায় বলে জনশ্রুতি আছে। প্রাচীন যুগে চীনের এক রাজা এই পথে এসেই ভারতবর্ষ আক্রমণ করেছিলেন বলে পর্যন্ত শোনা যায়। এই রূপনাথের গুহার অদূরেই এক পরিত্যক্ত বৌদ্ধ মঠে কোন এক রাজা তার সমুদয় ধন-সম্পদ এক যক তথা প্রেতযোনির পাহারায় লুকিয়ে রেখে যুদ্ধে যান। যুদ্ধে রাজার মৃত্য হবার পর এই ধন-সম্পদের আর কোন দাবিদার রইল না।
মূল গল্পের শুরু যখন এক মড়ার মাথার খুলিতে লিখে যাওয়া গুপ্ত সংকেত অনুসারে এই গুপ্তধন উদ্ধারে ব্রতী হলো নিতান্তই গোবেচারা প্রকৃতির কুমার, অসম সাহসী বীর ও বুদ্ধির ঢেঁকি বিমল, বিমলদের বিশ্বস্ত পারিবারিক ভৃত্য রামহরি এবং কুমারের পোষা কুকুর বাঘা। কিন্তু গুপ্তধনের লোভে তাদের পিছু নিলো বিকট-দর্শন করালী ও তার গুণ্ডা দল, যারা গুপ্তধনের জন্য খুন পর্যন্ত করতে রাজি।
প্লট নিয়ে বহুত কথা বললাম। এইটা বলে শেষ করি যে অন্যদের যে কারণে(জেনেরিক প্লট) এই বই অত ভালো লাগেনি আমার আবার ঠিক একই কারণে এত ভালো লেগে গেছে। ঠিক যা যা চাইছিলাম একটা বইয়ে তার সবই পেয়ে গেলাম - চাহিদা আর প্রাপ্তির এমন অপূর্ব সম্মিলন আমার জীবনে শেষ কবে ঘটেছিলো স্মরণে আনতে পারছি না।
হেমেন্দ্রকুমারের লেখন-শৈলী ছিমছাম কিন্তু ভারি সুন্দর। তাঁর লেখায় উপমার ব্যবহারের কিছু উদাহরণ দেই। "সেদিন অমাবস্যা! চারদিকে অন্ধকার যেন জমাট বেঁধে আছে। কেবল জোনাকিগুলো মাঝে মাঝে পিটপিট করে জ্বলছে - ঠিক যেন আধার-রাক্ষসের রাশি রাশি আগুন চোখের মতো" কিংবা "কচি কচি ফুলগুলোকে দেখে মনে হলো, এরা যেন বনদেবীর খোকা-খুকি।"
লেখার শুরুটা পড়ে আমার ছোটবেলায় কোথাও বেড়াতে যাবার আগের দিন রাতে যেমন অনুভূতি হয় ওমন হচ্ছিলো। উপন্যাসের চরিত্রগুলোর সাথে আমিও আসাম ঘুরে এলাম এরকমই লাগলো। এমনকি প্রথমদিন রাতে জঙ্গলে ক্যাম্প ফেলার পর বিমল কুমারকে যে ভূতের গল্প শুনিয়েছিলো তাও দেখি আলাদা এক চ্যাপ্টার করে উল্লেখ করে মূল কাহিনির সাথেই সুন্দর করে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা একসাথে অ্যাডভেঞ্চারে যাওয়ার পুরো ফিল-টাকে আরো জোরালো করেছে।
বিমল-কুমারের কেমিস্ট্রি অসাধারণ। কুমারকে মনে হলো বাঙালি মায়ের আদরের ছেলের আদর্শ প্রতিনিধি। আমাকেও বইয়ের পাতা ছেড়ে উঠে এসে বাস্তবে অ্যাডভেঞ্চারে যেতে বাধ্য করা হলে কুমারের মতই অবস্থা হত কিনা, তাই তার সাথে বেশ সিমপ্যাথাইজ করতে পারলাম।
কাহিনির সমাপ্তিটুকু যেভাবে হলো তাও বেশ মনে ধরলো। সবমিলিয়ে যতক্ষণ বইটা পড়েছি খুব অসাধারণ একটা সময় গেছে আমার। 'চাঁদের পাহাড়' যেই বয়সে পড়েছি সেই বয়সে পড়ার সুযোগ হলে নিঃসন্দেহে অল টাইম ফেভারিট শেলফে জায়গা করে নিত!
কুমারের দাদা এক সন্যাসীকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করার ফলে গুপ্তধনের সন্ধান লাভ করে৷ কিন্তু একা সেই গুপ্তধনের খোঁজ কষ্টকর ব্যাপার ভেবে তার বন্ধু করালীর সাথে আলোচনা করে৷ কিন্তু করালী ছিলো লোভী মানুষ। সে একাই তা ভোগ করার চেষ্টা চালালে কুমারের দাদা আর যাত্রা করেননি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর তার সিন্দুক থেকে একটি মরার মাথা ও একটি পকেটবুক পায় কুমার৷ যেখানে ছিলো গুপ্তধনের সন্ধান যা যকের ধন নামে পরিচিত। কুমারও তার চেয়ে বয়সে বড় বন্ধু বিমলের সাথে বিষয়টি আলাপ করলে বিমল যকের ধনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে।
কিন্তু ততদিনেও হাল ছাড়েনি করালী। এতদিন নজর রেখেছেন তাদের উপর। যার ফলে যাত্রা শুরু হওয়ার আগেই একের পর এক বিপদ আসতে থাকে বিমল-কুমারদের উপর। প্রাথমিক যাত্রাই সেগুলো কাটিয়ে উঠলেও পাহাড়, জঙ্গল ও গুহার মধ্যে একের পর এক আক্রমণ চালায় করালী। কিন্তু শেষ পরিণতি কী হয়েছিলো?
বইপড়ুয়াদের এই বইটি অনেক আগেই শেষ। যারা আমার মত বয়স করে পড়েছেন তাদের সবার মতামত আরেকটু আগে পড়লে হয়তো স্বাদটা বেশি পেতেন। যাইহোক আমার কাছে চলতি ভাষা হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। এত আগের লেখা এত প্রাঞ্জল ভাষায় পড়তে পারবো ভাবিনি। ছোট ভাই বোনদের জন্য সাজেস্ট করতে পারেন বইটি।
এই বই সবার এত প্রিয় কেন? বইটা কি চাঁদের পাহাড়ের আগে লেখা না পরে? চাঁদের পাহাড় যকের ধনের চেয়ে অনেক বেশি টান টান উত্তেজনাময় লেগেছিল। নাকি এ আমার বয়সের দোষ?
যকের ধন - একসময় বাংলার রূপকথায় এই শব্দযুগল রাজত্ব করে বেরিয়েছে। সাধারনভাবে যকের ধন বলতে পুরোনো দিনের গুপ্তধনকে বোঝানো হলেও এর পেছনে আছে এক নির্মম কুসংস্কার। নিঃসন্তান ধনী বুড়োরা গোপনে কোন এতিম বাচ্চাকে তাদের সম্পদের সাথে মাটির কুটরি চাপা দিয়ে দিত। তাদের বিশ্বাস ছিল এই বাচ্চা মরে গিয়ে যক্ষ হবে আর যতদিন যোগ্য উত্তরসূরী পাওয়া না যায় এই সম্পদ পাহাড়া দিবে। রবীন্দ্রনাথ এর একটি হৃদয় বিদারক ছোটগল্প আছে যখের ধনের প্রথা নিয়ে।
আচ্ছা, এই কিশোর উপন্যাসের কথায় আসি। এটা এমন এক সময়ে লেখা যখন বাংগালীর ছেলেরা জীবন বাজি রেখে এডভেঞ্চারে যাবে একথা খোদ বংগদেশীয় সাহিত্যিকও ভাবেনি। এডভেঞ্চার করবে যতসব রাজপুত্ররা। তারা পংকীরাজে চড়ুক বা সোনার কাটি, রুপার কাটি বদলাবদলি করুক, তাতে ছাপোষা বাংগালীদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু হেমেন্দ্রবাবু এই স্টেরিওটাইপ ভেংগে দেখিয়ে দিলেন বাংগালীর ছেলেরাও প্রাণ বাজি রেখে এডভেঞ্চারে যেতে পারে। বিমল-কুমার মোটেই বিরাট অর্থলাভের আশায় এই গুপ্তধনের পিছু ধাওয়া করে নি। তাদের তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল কেবল তারুণ্যের তীব্র কৌতুহল আর ঝুঁকিকে উপভোগ করার তরুগ বয়সের তুমুল আকাঙ্ক্ষা।
বার বার বাধা এলেও তারা থামে নি, রহস্যের শেষটা দেখার জন্য এগিয়ে গেছে সাহস আর বুদ্ধিমত্তার সাথে। গল্পের শেষে তাই তারুণ্যেরই জয় হয় পরাজিত হয় লোভী প্রৌঢ়ত্ব।
এই উপন্যাসের সবচেয়ে ভাল লেগেছে যে ব্যাপারটা তা হল লেখক বাস্তব বিমুখ হন নি। চাইলেই গল্পে অলৌকিকতা ঢুকাতে পারতেন। প্লটের শুরুতেই এরকম কিছু সুযোগ রেখেছিলেন। কিন্তু তারপরও অলৌকিক বিষয়বস্তু না এনেই বাস্তব কিন্তু দারুন উত্তেজনার সাথে উপন্যাসটি শেষ করেছেন। লেখকের টার্গেট অডিয়েন্স ছিল কিশোররা আর আমরা চাই না আমাদের কিশোররা কোন অলৌকিকতার উপর নির্ভরশীল হয়ে দমে যাক। তারা নিজের উদ্দমেই অসম্ভবকে সম্ভব করবে।
তাই লেখকের এই "সুযোগ থাকা সত্ত্বেও " অলৌকিকতার দারস্থ না হওয়ার ব্যাপারটা প্রশংসনীয়।
Re-read this classic after a long long while as part of a reading challenge. I couldn't like it as much as I had loved it on my first read. Still very good.
It has been so many days I have read such a juvenile adventurous book. Took me to my old 'Tin Goyenda' days. Jaker Dhan is all about treasure hunting. When Kumar found a skull and a pocket-book of his Grandpa, it was revealed that there were clues about the location of hidden treasure in those things. With friend Bimol, he set for Assam, where the treasure was hidden. And there was this villain Karali who had been trying to sabotage the hunt throughout the journey. The story is typical, but of course, a good one. It is the writing skill of Hemendrakumar made the book more enjoyable. However, the most fascinating thing about the book is the geographical description of the locations like Srihatta, presently Sylet, and Khasia mountain.
বয়সকালে পড়তে পারলে আরও অনেক ভাল লাগত। গল্পের উত্তেজনা বজায় রাখতে গিয়ে বেশ কিছু যায়গায় কুমার-বিমলের বোকামি ও বজায় রাখতে হয়েছে। এইটাই যা খারাপ লেগেছে। মড়ার খুলি র গায়ে অংকিত সিম্বল এর অর্থোদ্ধার যারা করতে পারে তাদের কাছ থেকে এসকল অসাবধানতা আর বোকামি আশা করা যায় না। ঠাকুর দাদার পকেট বুক এ যে যকের কথা বলা হয়েছে তার ব্যাপারেও লেখক আর পরে কিছু খোলাসা করলেন না।
'মানুষ যদি হতে হয়,তবে ডানপিটে হও।' ডানপিটে বিমলের পাশে ভীতু কুমারকে কিছুটা বেমানান লাগছিল।কিছু জায়গায় মনে হয়েছে বর্ণনার অভাব। তাড়াহুড়া করা হয়েছে। তবে শেষের মেসেজটা খুব ভালো লাগলো। 'যকের ধন যে পায়, তাকেই যক হতে হয়।'
যকের ধন একটি কিশোর এডভেঞ্চার উপন্যাস।উপন্যাসের দুই মূল চরিত্র বিমল আর কুমার। ভারতীয় উপমহাদেশের এক প্রাচীন প্রথা যক।কুমারের দাদুর মৃত্যুর পর পুরোনো এক বাক্সে এই যকের ধনের সন্ধান পাওয়া যায় ।বাক্সে ছিল সংকেত অঙ্কিত একটা মরার খুলি আর একটা নোট বুক।এই যকের ধনেরই খোজে দুই বন্ধু পারি জমায় খাসিয়া পাহাড়ের উদ্দেশ্যে। সাথে ছিল বিমলের কর্মচারী রামহরি আর কুমারের পোষা কুকুর বাঘা। তাদের যাত্রার শুরু থেকেই কুমারের প্রতিবেশী করালী মুখুয্যে বারংবার বাধার সৃষ্টি করে । বিমলের প্রানের সংশয়ের সৃষ্টি হয় একাধিকবার। শেষে কি সন্ধান পাওয়া গিয়েছিলো যকের ধনের নাকি তা রহস্য হয়েই থেকে গিয়েছিল! প্রাপ্তি আর ব্যর্থতার এক অদ্ভুত খেলা দেখা যায় উপন্যাস শেষে। উপন্যাসের অনেক উক্তির মধ্যে খুব মনে ধরার মতো একটা উক্তি হলো, "মানুষ হতে হোলে ডানপিটে হও"।আহা,,,