প্রায় তিন বছর ধরে মুশকান জুবেরিকে খুঁজে যাচ্ছে নুরে ছফা। তবে এবার সে একা নয়, প্রবল ক্ষমতাবান আরেকজন মানুষও মরিয়া হয়ে উঠেছে রহস্যময়ি এই নারীকে খুঁজে পেতে। সেই ক্ষমতাবানের সাহায্য নিয়ে নতুন উদ্যমে নেমে পড়ে ছফা, দ্রুতই আবিষ্কার করে মুশকান সম্পর্কে এতোদিন যা জানতো সবটাই মিথ্যে! নতুন গল্পটি বরং অনেক বেশি যৌক্তিক এবং বিশ্বাসযোগ্য! এক গোলকধাঁধায় ঢুকে পড়ে ছফা। তার কোনো ধারনাই নেই কোন্ সত্যটি জানতে পারবে শেষে। এতোদিন এই রহস্যময়ি নারী কোথায় ছিলো-এ প্রশ্নের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে, কিভাবে ছিলো! আর পাঠক যখন সেটা জানতে পারবে আরেকবার শিহরিত হবে, আবিষ্কার করবে মুশকানের প্রহেলিকাময় জগত!
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের দুই বাংলায় জনপ্রিয় এবং পাঠকপ্রিয় উপন্যাস রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’র দ্বিতীয় উপাখ্যান রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি’র প্লট বিস্তৃত হয়েছে ঢাকা-সুন্দরপুর ছাড়িয়ে কলকাতা অবধি।
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
জমল না। অনেক বেশি টানাটানি করে ফেলসেন লেখক মনে হইল। যদিও দুইদিনে শেষ করে ফেলসি ৪৩০ পেইজের বই, কিন্তু শেষটা জানার থেকে বই শেষ করার আগ্রহটাই বেশি ছিল। সব মিলায় প্রথম বই পড়ে যে এক্সপেকটেশন আর উত্তেজনা ছিল, তার পুরাটাই শেষ।
Can’t remember the last time I read something for 5 hours straight and finished a 432 page book in one sitting. The writer handled the story pretty well, made it quite well gripped. The first hundred page was a bit mundane, the rest was quite well paced. Had a few issues with some plot points and some logics, but overall the book had a pretty thrilling ride.
নাজিম সাহেবের লেখার উপর প্রথম থেকেই আমার একটা নেতিবাচক ভাব ছিল তার বাস্টার্ড সিরিজের একটা উপন্যাস পড়ে। মনে হয়েছিল একদম হুমায়ুন আহমেদ কে কবর থেকে তুলে এনে সেই গল্পে বসিয়ে দেয়া হয়েছিল। তা সে জিনিস নিয়েতো ফারুকি সাহেবের সাথেও কম জল ঘোলা হলো না! পুরান কথা থাক। সেই নেতিবাচক ভাবটা রবিন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি পড়ে বেশ কেটেও গিয়েছিল। এই বইটা পড়লাম প্রকাশ হবার বেশ পরে। পড়বার আগ্রহই ছিল না কারণ প্রথম পর্বের সমাপ্তি পারফেক্ট ছিল। দরকার ই ছিল না। ছবার ব্যর্থতা, আর মুশকান জুবেরির রহস্যময় অন্তর্ধান বা পলায়ন একটা থ্রিল থ্রিল ভাব দিচ্ছিল যেন শীতের বিকালে হালকা ঠাণ্ডায় গায়ে শাল জড়িয়ে উনুনের পাশে বসে থাকার মতো। ঘরের ভেতর গিয়ে মোটা উলের সোয়েটার পরবার দরকারই নেই। তারপরও বই বের হলো, পড়লামও এতদিন পর। কিন্তু পড়ে বুঝলাম আসলেই দরকার ছিল না। এখন আবার শুনি সামনে আরও একটি বই বের হচ্ছে। সেই বইয়ের নাম কি হবে তা জানা ছাড়া আর কোন আগ্রহ আমার নেই। তবে গরিবের নোলান প্রথম বইটি বড় পর্দায় আনতে যাচ্ছেন তা শুনে ভাল লাগলো। যদিও কাস্ট দেখে একটুখানি হতাশ হতাশ লাগে তাও!
গত বেশ কিছুদিন ধরে মনমেজাজ খারাপ থাকলেই নাজিমুদ্দিন সাবের একটা বই নিয়া বসি, যাতে তারে মন খুলে অভিশাপ দিয়ে নিজের মন হালকা করতে পারি। বলতেই হবে, এ পর্যন্ত তিনি আমার আশা পূরণে কখনোই ব্যর্থ হন নাই। তবে এই বইটা সব প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে, যাকে বলে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট। পড়ার পর থেকে মাথায় কেবলই একটা গান ঘুরপাক খাচ্ছে-- "যে রাজার রাণী নাই, সে রাজা গাঞ্জা খায়"। লেখককে অতিসত্ত্বর পাঠক সমাজের পক্ষ থেকে একজন রাণী যোগার করে দেয়ার আহবান জানাই, যাতে তিনি গাঞ্জা খাওয়া বন্ধ করে পাঠক সমাজকে এই গঞ্জিকার হ্যাংওভার থেকে রেহাই দেন।
অনুরোধে মানুষ ঢেকি গেলে আমি রবীন্দ্রনাথ গিললাম । তাও দ্বিতীয়বারের মতো । ব্যাপারটা আমার কাছে প্রথম পার্টেই একটু গোলমেলে এবং অশান্তিজনক লাগছে । একজন ডাক্তার রে ডিবি , র্যা ব , মিলিটারি কেউ ই ধরতে পারতেছে না । নুইসেন্স ! বেশ কয়েক বছর আগে , অমুক তমুকরে ধরে ,তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটেকুটে ,ভালো মতো তেল মশলা দিয়ে ,রান্না করে খেয়ে ফেলার অভিযোগে অভিযুক্ত হন শহর থেকে দূরে অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টের মালিক । তিনি সাধারণ জনগণের কাছে বিশ্বকবি তার রেস্টুরেন্টে কখনো খেতে আসে নাই দাবী করে এক্সট্রিম হাইলাইটে চলে আসেন । তারপর তদন্ত করে জানা যায় ঐ মহিলা ক্যানিবালিজম ফ্যানিবালিজমে আসক্ত ; উদ্দেশ্য – অমরত্ব অর্জন । ম-মাংস ভক্ষণের জন্য এই ভদ্রমহিলার সবচাইতে বড় দুইটা সুবিধা হলো সে একজন ডাক্তার এবং ভালো রাঁধুনি । তদন্তে আসল রহস্য জানার পরে এর পেছনেই সর্দি কাশির মতো লেগেছিলো ডিবি নামের কলঙ্ক নুরে ছফা । আধুনিক বাংলা সাহিত্যে কোন মেয়েমানুষ আইনের লোকজন রে মনে হয় না মুশকান জুবেরি মতো নাকানি চুবানি খাওয়ায়তে পারছে। এইটা একটা হিস্টোরি হয়ে থাকবে । ‘’রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’’ পড়ার পর থেকে শুধু মহিলা ডাক্তার না দুনিয়ার সকল ডাক্তারদের প্রতি ই আমার একটা ইস্পিশাল ভীতি জন্মায় গেছে । আর এখন পর্যন্ত কোন নির্দিষ্ট প্রত্যঙ্গ টা খেলে অমরত্ব পাওয়া যায় ক্লিয়ার না করায় ভীতি টা আরো টেকসই হইছে । পরিচিত অথবা অপরিচিত ডাক্তাররা আন্তরিকভাবে বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে এখন আর খুব গর্বিত কন্ঠে বলি না যে শরীর একদম ঠিক আছে । চোখমুখ কাতর করে কখনো বলি কিডনি তে সমস্যা ,কখনো লিভার ঠিক মতো কাজ করে না , কখনো চোখে সমস্যা , কখনো হৃৎপিণ্ড অনিয়মিত ইত্যাদি সিত্যাদি বলে এড়ায় যাই ।তা সেই ভীতি ভাবছিলাম দ্বিতীয় খন্ড পড়লে যাইবে গিয়া । ছফাসাবের উপর একটা ক্ষীণ আস্থা ছিলো যে এইবার হয়তো মহিলারে ধরতে পারবে (এই রেহ ! স্পয়লার দিয়ে ফেললাম নাকি! আহা ! এই লাইনটা ভুলে যাইয়েন কেমন?) কিন্তু ভীতি আরো ডাবল হয়ে গেলো । কিছু বই আছে যা একবার শেষ করলে আর দ্বিতীয়বার শুরু করতে নাই । প্রথম খন্ড পড়ে আমার তাই মনে হয়েছিলো । মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন সাহেবের এত্ত বছর বাদে স্বর্গীয় বিশ্বকবি রে নিয়ে একবার টানাহেঁচড়া করার পর আরো একবার প্রবল উৎসাহে ঐ কাজ করতে দেখে, উপন্যাস পড়তে পড়তে বৃদ্ধের জন্য বারবার মায়া লেগেছে (আহারে লোকটা!) । যাই হোক স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ পাঠককূলের অনেকেই মুশকানের ভক্ত আছে । তাদের অনেকের অনুরোধেই হয়তো রবীন্দ্রনাথ রে নিয়ে এই দ্বিতীয়বার হাঙ্গামা । কাহিনীতে প্রচুর ইলাস্টিক ব্যবহারের কারণে হজম করতে অনেক কষ্ট হলো । অবশ্য সান্ত্বনার কথা হলো রবীন্দ্রনাথের কষ্টের কাছে পাঠকের কষ্ট কিছুই না । ধূলিকণা ।
মুশকান জুবেরী সেকেন্ড পার্ট। মানুষ মেরে খেয়ে ফেলা মহিলাটার পেছনে আবার লেগে যায় ডিবি অফিসার নূরে ছফা। এবার ছফার পেছনে আছে প্রাইম মিনিস্টারের পিএস। আবার সুন্দরপুরে থেকে তদন্ত শুরু করে ছফা। পেয়াজের খোলসের মত খোলস খুলতে খুলতে খুব কাছে এসে যায় জুবেরীর। কিন্তু তারপর??? লেখক বিশাল বই লিখেছেন। পড়তে খুব আরাম লাগে লেখার সাবলীলতার কারণে। টুইস্ট পাইতে পাইতে শেষে গিয়ে বুঝবেন ব্যাপারটা কি। কিন্তু নূরে ছফাকে আরো বুদ্ধিমান হওয়া দরকার। লেখককে অনুরোধ উনাকে আরেকটু কমপ্লেন খাওয়ায় কমপ্লে��� বয় বানান। মুশকান জুবেরী এমনও বুদ্ধিমতী নন যাকে বাংলাদেশের পুলিস ধরতে পারবে না। আর কেএস খান ক্যারেক্টরটাকে আরেকটু ইনভলভড করলে বেশী মজা ���াওয়া যাইত। পরিশেষে বলতে চাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি নিয়া তথ্যগুলার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
রেটিং ৩.৫ গল্পের বিষয়বস্তু আগেরটার থেকেও বেশি বাস্তবসম্মত ছিল। কিন্তু জানিনা কেন লেখক বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় চরিত্র ও ঘটনার অবতারণা দিয়ে বারবার দীর্ঘায়িত করেছেন বইটাকে। শুরুর দিকে তো অর্ধশত পৃষ্ঠা জুড়ে কোনো অগ্রগতিই নেই বরং শুধু আগের ঘটনাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার বলে গেছেন। এসব কারনে বারবার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলাম। এবং এভাবেই পুরো বই জুড়েই এমন ভাবেই অপ্রয়োজনীয় সব ঘটনা দিয়ে বইটা বড় করেছেন এবং রীতিমত বিরক্ত করেছেন। তবে শেষের দিকটা বেশ উত্তেজনাবহুল ছিল। মুশকান আগের বারের মতই এবারও মুগ্ধ করেছে। অন্যদিকে ছফাকে বাংলাদেশের গড়পড়তা আর দশজন সাধারন পুলিশের থেকে বেশি কিছু লাগেনি। পার্থক্য শুধু তার কাছে ক্ষমতা অনেক বেশি। এই ব্যাপারে অনেকটা আশাহত হয়েছি। কাকতালীয় ব্যাপার গুলো খুবই বেশি ঘটেছে বলতেই হয়। লেখক কি আর বুদ্ধি দিয়ে মিলিয়ে দিতে না পেরে এত কাকতালীয় ঘটনার সৃষ্টি করলেন কিনা কে জানে!
ফেসবুক গ্রুপে জ্বালাময়ী সব নেগেটিভ রিভিউ দেখে এতদিন পড়া হয় নাই৷ কিন্ত আমার কাছে এতটাও খারাপ লাগে নাই৷ পাঠকদের বোধহয় প্রত্যাশার পারদ অতিমাত্রায় ছিল বলে নাকাল হয়েছেন৷ আমার তোহ নেগেটিভ রিভিউ দেখেই পারদে সত্তুর শতাংশ ছাড় হয়ে গেল! ৪৩২ পৃষ্ঠার বই একটানা সাড়ে পাঁচ ঘন্টায় পড়ে শেষ করলাম৷ কিছুক্ষেত্রে প্রথম বইটার তুলনায় সেকেন্ড পার্ট ভালো লেগেছে৷ অনেকদিন এভাবে একটানা গতিময় কোনো থ্রিলার ধাঁচের বই পড়া হয় না৷ কিছু জায়গায় ড্রামাটিক / সিনেমাটিক/ যাই হোক, গল্পের প্রতিটা মোড়ে একটা তৃপ্তির ঢেঁকুর না চাইতেই উঠে আসে৷
তবে নূরে ছফার আসলে গর্জন বেশি, বর্ষণ কম! ডিবির সেরা অফিসার যদি প্রতিটা ক্লু পাওয়ার পর — " আসলেই! এইটা ত মাথায় আসেনি৷ ভেবে দেখা উচিত ছিল৷"— শুনলেই বিরক্তি এসে যায়৷ আরেহ ব্যাটা তিন বছর ধরে ভাবলি কি তাহলে? অফিসার হিসাবে নাছোড়বান্দা, তবে এমন চিন্তাভাবনা নিয়ে আগামী সাত জন্মেও মুশকান জুবেরিকে জব্দ করা সম্ভব হবে না৷
রবীন্দ্রনাথ খেতে এসে দু'দন্ড শান্তি দিলেও, এমনি এমনি এসে মোটামুটি হতাশ করেছে। লেখকের উপরে অতিরিক্ত এক্সপেক্টেশন থাকার কারণেও এমনটা মনে হতে পারে।
যাইহোক, অভারঅল লেখা এবং গল্পের বুনন বেশ ভালো। তবে থ্রিলের পরিমাণ কম- চমকপ্রদ, পিলে চমকে দেওয়ার মতো কোনকিছুই নাই। না আছে তেমন কোন নতুনত্ব। টুইস্ট আছে, তবে মোটামুটি প্রেডিক্টেড। প্রথম দুইশো পেজ যথেষ্ট বোরিং হলেও, বাকিটা বেশ দ্রুতগতির ছিলো। শেষের দুইশো পেজ এক বসাতেই পড়া গেছে। একটা সময় এসে মনে হচ্ছিলো বইটা অতি দুর্দান্ত হতে যাচ্ছে, কিন্তু শেষ ৫০ পেজ ভালো লাগেনি।
বি দ্রঃ তিনটি স্টার দেওয়া হচ্ছে শুধু লেখকের ভালো লেখণী এবং গল্প বুননের অসাধারণ কারুকাজ দেখানোর জন্য।
সিরিজ জাতীয় কোনো কিছু দেরি করে উপভোগ করার একটা সুবিধা আছে। সিক্যুয়েল এর জন্য মুখিয়ে থাকতে হয় না।আমিও সেদিক থেকে সুবিধা নিলাম। গতকালই ১ম পার্ট টা শেষ করে এটা শুরু করেছিলাম। মুশকান জুবেরির কি হল শেষে!!শেষে খেলাম ধোঁকা! তৃতীয় পার্টের জন্য বসে থাকো!!
শুরুর দিকটা ধীর গতিরই মনে হল। তাতে কি শেষটা তো জানতে হবে,তাই আরও আগ্রহ নিয়ে পড়েই গেলাম। মাঝের দিকটা জমে উঠেছিল কিন্তু শেষের দিকে পুরাই খিঁচুড়ি হয়ে গেল।কষ্টও পাইলাম আবার বিরক্তও হইলাম! শেষে এদের একটা বিহিত করা দরকার ছিল। মনে হল কাহিনী টেনে টেনে বড় করা হয়েছে। আর এই ছফা ভাইয়ের তো ঠিকঠাক কিছু করার ক্ষমতা আছে বলেও মনে হল না। তৃতীয় পার্ট এর ব্যাপারটা না এনে এখানেই শেষটা দেখালে ভাল হতো :(
"রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি" এবারেও এটা একটা রেসটুরেন্টেরই নাম। তবে মুশকান জুবেরির না।
#রিভিউ রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো আসেননি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাতিঘর প্রকাশ পৃষ্টা: ৪৩২
মুশকান জুবেরিকে মনে আছে? ঐযে সেই রহস্যময়ী, যে ডিটেকটিভ নূরে ছফাকে পরাস্ত করে পালিয়েছিল। তিন বছর পর নূরে ছফা এখনো কাতর তার জন্য। বিরহে নয়, তাকে ধরতে না পারার, তার হাতে পরাস্ত হওয়ার ব্যর্থতায়। কিন্তু এরই মধ্যে তিনবছর পর নূরে ছফা তাকে ধরার জন্য একটি কারণ পেয়ে গেল। মুশকানের একজন ভিক্টিম ছিল মহাক্ষমতাধর প্রধানমন্ত্রীর পিএস এর ভাগ্নে। পিএস ব্যক্তিগত কারণেই উঠে পড়ে লেগেছে তার ভাগ্নের খুনিকে ধরতে। এ কাজটি সে ছফাকে দিল। ছফা বুঝে উঠতে পারল না কোথা থেকে সে শুরু করবে। সে শরণাপন্ন হল ডিবির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএস খানের। সুন্দরপুর থেকেই তদন্তের কাজ শুরু করল ছফা। সেখানে আগের রহস্যে ঘেরা রেস্টুরেন্টের জায়গায় গড়ে উঠেছে এক লাইব্রেরি। এ জায়গা থেকেই মুশকানকে ধরার বড় ধরনের এক ক্লু পেয়ে গেল ছফা। ছফা কি পারবে মুশকান নামক রহস্যময়ী, নরখাদককে ধরতে নাকি পড়তে হবে কানাগলিতে? এ পথে অন্য কোনো বিপদ অপেক্ষা করে নেই তো? তিনবছরের ব্যর্থতা ঘুচানো কি সম্ভব ছফার? জানতে হলে পড়তে হবে রবীন্দ্রনাথ কখনো এখানে আসেননি।
রবীন্দ্রনাথ কখনো এখানে খেতে আসেননির পরবর্তী বই হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ কখনো এখানে আসেননি। দারুন ফাষ্ট পেসড একটি বই। ছোট ছোট অধ্যায়ে বিভক্ত। আপনাকে টেনে ধরবে। থ্রিলের দিক থেকে বইটা ভালো নম্বরই পাবে। আগের কাহিনীর সাথে মিল রেখে প্লটটাও অসাধারণ। এবার আসি চরিত্র প্রসঙ্গে। ডিটেকটিভ হিসেবে নূরে ছফা অসাধারণ। তবে একটু শান্ত প্রকৃতির। পিএস আশেক মাহমুদ চরিত্রটি বেশ দাম্ভিকতায় ভরপুর। বাংলাদেশের ক্ষমতার অপব্যবহারকারীর ভালো উদাহরণ তিনি। একজনের কথা না বললেই না। তিনি হলেন ডিটেকটিভ কেএস খান। যার উপস্থিতি ছিল বেশ স্বল্প, কিন্তু সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এ চরিত্র প্রথম দেখা যায় নাজিম উদ্দিন সাহেবের জাল বইটিতে। সেখান থেকেই আমি এ চরিত্রের বুদ্ধিমত্তার ভক্ত। নূরে ছফা হয়তো এ কাহি���ীর নায়ক, তবে তাকে লিড কিন্তু কেএস খান করেছেন। আশা করি কেএস খানকে নিয়ে আলাদা একটা সিরিজ হবে। মুশকান জুবেরিকে নিয়ে কিছুই বলার নেই। চরিত্রটি একই সাথে কাহিনীর মূল উপজীব্য ও খলনায়িকা। তার ক্রাইম সেন্স চরমমাত্রায় পৌঁছেছে এবার। এবার কি সে পারবে ছফাকে ফাঁকি দিতে? নাকি তার জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যুফাঁদ?
কাহিনী বিল্ড আপ বেশ ভালো ছিল বইয়ের। তবে শেষে আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। সম্ভবত এর পরের কিস্তিতে সে আশা মিটবে। পরীক্ষার ব্যস্ততায় অনেক লম্বা সময় নিয়ে পড়লাম। স্ট্রেস কাটাতে বেশ সাহায্য করেছে বইটা। মস্তিষ্কে গতি প্রয়োগ করতে চাইলে বইটি পড়ে ফেলতে পারেন। হ্যাপি রিডিং।
(অনেকে বলেছিলেন প্রথম পার্টটা না পড়ে এটা পড়লে অসুবিধা হবে কিনা। উত্তর হল সামান্য কিছু স্পয়লার ছাড়া বিশেষ কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা না। প্রথম পার্টটা পড়ে নেয়ায় ভালো)
থ্রিলার হিসাবে বেশ ভালো। একদম শুরু থেকেই কাহিনীর ঘনঘটা, উপর্যুপরি ট্যুইস্ট, ঢাকা- কলকাতা- ঢাকা ট্রীপ সবমিলিয়ে জমে ক্ষীর। তবে কাহিনীটা পড়তেই ভালো লাগে, বাস্তবতার সাথে মেলালে বোঝা যায় কাহিনীকে শ্বাসরূদ্ধকর রূপ দিতে গিয়ে গল্পের গরুকে তিন তলা বিল্ডিঙে উঠিয়ে ফেলেছেন লেখক।
নূরে ছফার মতো বলদ পুলিশ কীভাবে ডিবি অফিসার হয়, জানি না। সে সব পরামর্শ নেয় কে এস খানের কাছ থেকে। গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের নাম্বার টোকার কথা তার মনে থাকে না। প্রভাবশালী কারোর হস্তক্ষেপ ছাড়া তার জেরায় কেউ মুখও খোলে না। তাকে আমার জড়বুদ্ধিসম্পন্ন লোক মনে হয়েছে। আমি চাই নেক্সট বইয়ের আগে যেন ছফাকে ভালোমতো আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ানো হয়। এই উপন্যাসে কেএস খানের ডাক্তার বান্ধবীর কী প্রয়োজন, তাও বুঝলাম না।
ছফার গাধামী আর কাহিনীতে অতিরিক্ত প্যাঁচ থাকায় পাঁচ তারা দিলাম না, তবে দিতে পারলে খুশি হতাম।
প্রথম বইটা পড়ার পর আশা একটু বেশিই ছিল এই বইটা নিয়ে আর এই ভাবে চিন্তা করলে বলা যায় পাঠকহিসেবে আপনি আশাহত হতে পারেন । এখানেই লেখক চালাকি করেছেন । তিনি পুরো গল্পটা এমনভাবে লিখে গেছেন যে আপনাকে শেষ অব্ধি পড়তেই হবে। রহস্যময়ী সেই নারীর অতীতের অনেক স্মৃতি চারণ হয়েছে বলতে পারেন এই বইটায়। আবার বলতে পাঠকের অনেক কৌতুহল মেটানোর চেস্টা করা হয়েছে ।সর্বোপরি নূরে ছফা ও মুশকান জুবেরির পরিনতি জানতে আপনি আবারও অপেক্ষা করে থাকবেন। বি:দ্র:: নতুন একটা টুইস্ট আছে এই বইটাতে আর তা জানার জন্য নিজ দ্বায়িত্বে পড়ে ফেলুন “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি”
রবীন্দ্রনাথ যদি বাঁচিয়া থাকিতেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস উনার নাম লইয়া এমন টানাটানি ছেনাছেনির ছেলেখেলা দেখিলে বোধকরি এ জীবনে জোড়াসাঁকো ছাড়িয়া কোথাও যাইতেন না।
মরনের আগেও যদি ঘুণাক্ষরে টের পাইতেন এহেন ছুটোছুটি করিয়াও নূরে ছফা ছ্যাবলার মতো জুবেরী দেবীর হাতের উড়ন তুবড়ি হইয়া বারংবার ভূপাতিত হইবে,উনি নিশ্চিত ঐ অগতির একখান সদগতি পরপার থেকে প্রপার চ্যানেলের মাধ্যমে অবশ্যই করিতেন।
অবশ্য কে কি করিবে তাতে আমার কি আসে যায়,পরপর দুইখানা অখাদ্য পড়িয়া অরুচি ধরার আগেই আপাতত কাটিয়া যাওয়াই উত্তম বলে অনুমান করছি।
রেটিং:💥 পুরান প্রেমের (আগের খন্ড)টানে একখান তারা না দিয়ে পারলুম না. ১৫/০৭/২২
" মনেরে আজ কহ যে, ভালো মন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে। " - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - " রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো আসেননি " এর কাহিনী শুরু হয় " রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি " এর তিন বছর পরে। ডিবির তুখোড় অফিসার নুরে ছফা এখনো রহস্যময়ী নারী মুশকান জুবেরিকে খুঁজছে। কিন্তু এত দিনে কেস এক কানাগলিতে এসে পৌঁছে গিয়েছে তাই মোটামুটি হতাশ সে। - কিন্তু ঠিক এ সময় নুরে সফা পেয়ে গেল সরকারের এক প্রভাবশালী নেতার কাছ থেকে অকল্পনীয় এক ক্লু এবং সবধরনের সাহায্য। নতুন উদ্দমে কেস তদন্তে নেমে গেল সে। সাবেক ডিবির তুখোড় অফিসার কে এস খানের পরামর্শে আবারো শুরু করলো সুন্দরপুর থেকে এই অমীমাংসিত কেসের তদন্ত। - আর এর ফলেই শুরু হয় মুশকান জুবেরি আর নুরে ছফার ইঁদুর - বিড়াল খেলার আরেক মহাকাব্য। যা পাঠককে নিয়ে যাবে সুন্দরপুর থেকে ঢাকা, লন্ডন থেকে কলকাতার গলিঘুপচিতে।এখন নুরে ছফা কি পারবে এবার মুশকান জুবেরিকে ধরতে ? আর এবার ধরতে গিয়ে যে নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে নুরে ছফা সেগুলোর উত্তর কি ? সত্য মিথ্যার এ গোলোকধাধার শেষ কোথায় ? এ সব কিছুর উত্তর জানতে হলে পড়তে হবে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর " রবীন্দ্রনাথ কখনো এখানে আসেননি "। " - " রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো আসেননি " লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর ২০১৫ সালের আলোচিত বই " রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি " এর সিক্যুয়েল। কাহিনী যেখানে শেষ হয়েছে তার তিন বছর পর থেকে এর মূল ঘটনা শুরু হয়। লেখা প্রথম থেকেই বেশ আকর্ষণীয়। তবে মাঝে কাহিনী কিছুটা প্রেডিক্টেবল হয়ে গেলেও শেষ দিকে আবারো কাহিনী গতি পায়। লেখকের লেখনী বরাবরের মতোই সহজিয়া তাই পড়তে বেশ আরাম লেগেছে। ছোট ছোট অধ্যয়ে ছোট বড় টুইস্ট পাঠককে লেখার সাথে জমিয়ে রাখায় বেশ সাহায্য করবে। - চরিত্রের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ফোকাস পেয়েছে নুরে ছফা। একজন চৌকষ ডিবি অফিসারের সবধরণের শেড তার ভিতরে পাওয়া গেছে। তবে নূরে সফার চেয়ে বেশি জোশ লেগেছে কে এস খানকে। পুরোনো বেশ কিছু চরিত্রকে পাওয়া গেছে এ বইতে যার ভিতরে কয়েকজনের অতীত ইতিহাস বেশ অবাক করেছে। নতুন চরিত্রের ভিতরে এক চরিত্রকে দুর্দান্ত লেগেছে (কে সেটা পাঠকরা বই পড়লেই বুঝে যাবেন ) ,তবে নাটের গুরু এবারেও মুশকান জুবেরি। এবার সে ফিরে এসেছে আরো রহস্যময় এবং ভয়াবহ রূপে,তার সম্পর্কে আর কিছু বললেই স্পয়লার হয়ে যাবে তাই আপাতত এটুকুই লিখলাম,তার চরিত্রের বাকি রহস্য জানতে হলে তা পড়তে হবে বইতে ! - " রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো আসেননি " বইয়ের আরেক দুর্দান্ত কাজ হচ্ছে এর প্রচ্ছদ। প্রচ্ছদশিল্পী সিরাজুল ইসলাম নিউটনের এই দুর্দান্ত প্রচ্ছদ বইটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বইতে এবার রবীন্দ্রনাথ তার বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে প্রথম বইয়ের চেয়েও বেশি জায়গায় এসেছে। গল্পের পাশাপাশি বর্তমান সময়ের বেশ কিছু আর্থ সামাজিক পেক্ষাপট গল্পে ফুটে উঠেছে। ৪৩২ পৃষ্ঠার মোটা বই হলেও বাধাই বেশ ভালো। তাই শেষ করার পরে সবমিলিয়ে বইটিকে একেবারে পয়সা উসুল মনে হয়েছে। - এক কথায় , পয়সা উসুল থ্রিলার বলতে যা বোঝায় সব উপকরণই রয়েছে " রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো আসেননি " তে। লেখকের পরবর্তী লেখা পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
মুশকান জুবেরি সুন্দরপুর থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর কেটে গেছে আরও তিনটি বছর।নুরে ছফা এখনো খুঁজে যাচ্ছে মুশকানকে।নুরে ছফার কর্মজীবনের একমাত্র আনসলভড কেস 'মুশকান জুবেরি'।"যে মাটিতে আছাড় খাইছেন সেই মাটি থেকেই আপনারে উঠতে হইবো" - গুরু কেএস খানের পরামর্শ মেনে নুরে ছফা ছুটে যায় আবার সেই সুন্দরপুরে।অবিশ্বাস্যভাবে হাতে চলে আসে একটি ক্লু,যা নুরে ছফাকে নিয়ে যেতে পারে অধরা মুশকানের কাছে।শেষ পর্যন্ত নুরে ছফা কি পারবে মুশকানকে ধরতে?নাকি আবারও ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে মুশকান জুবেরি?
প্রথমেই আসা যাক প্রচ্ছদ আলোচনায়।রবীন্দ্রনাথ সিরিজের প্রথম বইয়ের প্রচ্ছদে একজন নারীর অবয়ব দেখা গেলেও দ্বিতীয় বইটিতে দুজন নারীর অবয়বের দেখা মেলে।স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করে নেয়া যায় যে এবার মুশকানের সাথে অন্য এক নারীকে নিয়ে কনফিউশান অথবা মুশকানের কোন সঙ্গীর দেখা পাওয়া যাবে এই পার্টে।ব্যক্তিগতভাবে একটা থ্রিলার বইয়ের এরকম প্রচ্ছদ - যা কিনা গল্প রিভিল করে দিতে পারে,আমার ভালো লাগেনি।
'রবীন্দ্রনাথ' সিরিজের প্রথম পার্টের দুর্দান্ত লেখনী আর ফিনিশিং এর কারণে স্বভাবতই এর সিক্যুয়েলের প্রতি প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বী।তার বিনিময়ে লেখক আমাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছেন।প্রশ্ন জাগে শুধুমাত্র বিক্রির নেশায় লেখক তাড়াহুড়ো করে এই বই লিখে ফেলেছেন কিনা?পৃথিবীতে মানুষকে পরিমাপ করার জন্যে জনপ্রিয়তা একটি দুর্দান্ত প্যারামিটার।মানুষ জনপ্রিয় হওয়ার জন্যে কি না করে?প্রথম পার্টের সফলতায় লেখক ক্যারিড হয়ে গিয়েছেন।শুধুমাত্র লেখার জন্যে যে লেখা সে লেখা না লেখাই বরং ভালো।
একটা থ্রিলার বইতে আপনি কি আশা করেন সাধারণত?ফাস্ট পেইসড গল্প,টুইস্ট এন্ড টার্নস,জমজমাট লেখনী,বুদ্ধির খেলা - এসবই তো,তাইনা?দুর্দান্ত একটা প্রথম পার্টের পর এর সিক্যুয়েল পড়তে এসে আপনি যদি দেখেন প্রথম ১৫০ পৃষ্ঠায় গল্প একটুও আগায়নি,বরং আজাইরা প্যাচাল আর অহেতুক চরিত্রের আমদানি করে শুধু পৃষ্ঠা ভরেছেন লেখক,তাহলে কেমনটা লাগে?যে মুশকানের জন্যে বইটা এতো জনপ্রিয় সে মুশকানের দেখা পাওয়াই দুর্লভ।আর নুরে ছফার কথা নাইবা বলি।এতো দুর্বল বুদ্ধিমত্তা নিয়ে এই লোক নাকি তার জীবনের সব কেস সলভ করে ফেলেছে।হাস্যকর!!
'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি' একটি চরম বিরক্তিকর বই।লেখক এবং প্রকাশক তাদের ব্যবসায়িক লোভ চরিতার্থ করার জন্যে পাঠকদের এভাবে ধোঁকা না দিলেও পারতেন।
সিরিজের প্রথম বইটি পড়েছি তিন বছর আগে।দ্বিতীয় বইটি পড়লাম আজকে! এতো অসম্ভব রকমের থ্রিলিং কাহিনী নাজিম উদ্দিন স্যারের দ্বারাই সম্ভব.... এক বসায় শেষ করলাম।প্রতিটি পৃষ্ঠায় থ্রিল, এক সুষম বন্টনে এগিয়ে চলেছে কাহিনী,কোথাও একবিন্দু ফাঁক নেই! তৃতীয় বই "রবীন্দ্রনাথ এখানে এসেছিলেন" বইটি এই বছরের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হবে.... অপেক্ষার প্রহর গোণার সময়... দেখা যাক মুশকান জুবেরী,নূরে ছফা আবার কি নতুন খেল দেখায়! মাইন্ড ব্লোয়িং!
গত বছর জন্মদিনের ঠিক আগের দিন পড়েছিলাম। সাথে ধুম জ্বর, সমানতালে চকলেট সেবন। মুখটা চিরতা অনুরূপ বিষিয়ে ছিল। কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে, আমি ডার্ক চকোলেট খাচ্ছিলুম না। তবে কি জ্বর হেতু টেস্ট বাডস্-রা premature অবসর নিয়েছিল? মনে তো হয় না। মানে এই বই পড়তে বসলে, জ্বিহ্বা কে কি দোষ দেওয়া যায়?
নো ওয়ান্ডার, গুরুদেব এখানে কখনো খেতে বা স্বশরীরে আসেন নি। যদি আসতেন, তবে বাঙালির একটা নোবেল ফস্কে যেত।
রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি' কয়েক বছর আগে পড়া হলেও কিছুদিন আগে সিরিজটি দেখা হয়েছিল এক ছুটির দিনে। সে কারণেই পরের কাহিনি জানতে দ্বিতীয় বইটি হাতে নেওয়া। তবে একই ধরণের বয়ান আর ইঁদুর-বেড়াল কাহিনি টেনে দীর্ঘ করা দেখে হতাশ হতে হলো...
বাচ্চা বয়সে হেলামি করে আমরা অনেকেই মুখের চুইংগাম দুই হাত টেনে লম্বা করতাম মিষ্টি স্বাদ চলে যাবার পরে, মনে আছে?
লেখক একই কাজ করছে। রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি বইটা হচ্ছে মিষ্টি স্বাদ, আর এইটা হচ্ছে চুইংগাম দুই হাত দিয়ে বড় করার মত :3 -_- যথেষ্ট আশাহত হয়েছি।
3.5/5!! কাহিনী লম্বা করা হয়েছে- বলতেই হয়! কিন্তু শেষের দিক আর মাঝে কিছু জায়গা বাদ দিলে তেমন বিরক্তিকর লাগেনি, থ্রিল কম! আগেরটার মত শেষটা আকর্ষণীয় হয়নি :( বিস্তারিত পরেহ, ঘুমাব!!!! *_* আম্মু উঠে দেখে ফেললে বিরাট গন্ডগোল হয়ে যাবে!!
ভালো লাগলো না। ঠিক জমলো না ব্যাপারটা। অযথা টেনে টেনে লম্বা করা সাথে বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় দৃশ্য এবং সংলাপ। ছফাকে এতটা দূর্বল হিসেবে কেন উপস্থাপন করলেন লেখক বুঝলাম না। গল্পের বেশ কিছু জায়গা প্রচন্ড বিরক্তির উদ্রেক করেছে। গল্প শেষ করেই মনে হল বেঁচে গেলাম।
বইঃ রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ঘরানাঃ সাসপেন্স থ্রিলার/ক্রাইম প্রচ্ছদঃ সিরাজুল ইসলাম নিউটন পৃষ্ঠাঃ ৪৩২ মুদ্রিত মূল্যঃ ৫০০ টাকা ধরণঃ হার্ডকভার
কাহিনি সংক্ষেপঃ মুশকান জুবেরির কথা মনে আছে? মফস্বল শহর সুন্দরপুরে যে রহস্যময়ী নারী গড়ে তুলেছিলো 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি' নামের এক অসাধারণ রেস্টুরেন্ট। যেখান থেকে তিন বছর আগে গল্পটা শুরু হয়েছিলো। কয়েকজন মানুষকে গুম ও খুনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলো মুশকান জুবেরি।
আজ, এই বর্তমান সময়ে এসে তিন বছরেরও বেশি আগের সেই ঘটনার মূল হোতা মুশকান জুবেরির খোঁজে হন্যে হয়ে এখানে-ওখানে চষে বেড়াচ্ছে ডিবি'র ইনভেস্টিগেটর নুরে ছফা। কিন্তু এবার আরো একজন মানুষ খুঁজে পেতে চান মুশকানকে। প্রবল ক্ষমতাধর এই মানুষটা আশেক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর পিএস। তিন বছর আগে সুন্দরপুরের 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি'-তে গিয়েই নিখোঁজ হয়েছিলো পিএস আশেক মাহমুদের একমাত্র ভাগ্নে হাসিব। ঠিক কি করেছিলো ওর সাথে দীর্ঘযৌবনা মুশকান জুবেরি, সেটা জানতেই এবার তাঁর এতো তোরজোর। আর তাই মুশকানের পেছনে ছুটে চলা নুরে ছফাকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেন ক্ষমতাধর মানুষটা।
মুশকানকে খুঁজতে আবারো সেই সুন্দরপুর থেকেই সবকিছু শুরু করলো ডিবি'র ইনভেস্টিগেটর নুরে ছফা। ডিবি'র রিটায়ার্ড কিংবদন্তী খোদাদাদ শাহবাজ খান ওরফে কেএস খানের নানা সাজেশনও নিলো সে৷ সুন্দরপুর গতো তিন বছরে অনেক বদলে গেছে। জমিদারবাড়ির পুরোটা জুড়ে গড়ে উঠেছে দারুন এক স্কুল। রেস্টুরেন্টটা বদলে গেছে 'রবীন্দ্রনাথ' নামের এক লাইব্রেরীতে। আর এই সমস্ত কিছুর দায়িত্বে থাকা বৃদ্ধ মাস্টার রমাকান্তকামার থেকে শুরু করে মুশকান জুবেরির আরেক সুহৃদ ডাক্তার আসকার ইবনে সায়িদ, অনেকের মুখোমুখিই হতে হলো নুরে ছফাকে।
ছফাকে উড়ে যেতে হলো কলকাতা শহরেও, যেখানে গতো তিন বছরে নিখোঁজ হয়েছে আরো কিছু মানুষ যেগুলোর প্যাটার্ন পুরোপুরি মিলে যায় মুশকানের কাজের স��থে। দৃশ্যপটে ধীরে ধীরে আগমন ঘটলো পিএস আশেক মাহমুদের গানম্যান আসলাম, সুন্দরপুরের সেই স্কুলের গানের টিচার সুস্মিতা সমাদ্দার ও নিখোঁজ প্লাস্টিক সার্জন ডাক্তার দয়াল প্রসাদ মল্লিকের। রহস্যময়ী মুশকানকে নিয়ে একেকবার একেকরকম গল্পের সম্মুখীন হলো নুরে ছফা৷ কোনটাকে ছেড়ে কোনটা বিশ্বাস করবে, তার এক অদ্ভুত প্রহেলিকাময় জগতে প্রবেশ করলো সে। আরো একটা ভয়ঙ্কর প্রশ্নের উদয় হলো ঠিক সময়ম���ো। আর প্রশ্নটা হলো 'কি' খেলে আসবে দীর্ঘজীবন?
মুশকান জুবেরি আর নুরে ছফার চলমান দ্বৈরথে আরো একবার ঘটে গেলো নানা ঘটনা। শেষমেষ কি ছফা সফল হবে ওকে ধরতে, নাকি অধরাই থেকে যাবে সে?
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি'। সেখানে আমরা পাঠকরা পরিচিত হই মুশকান জুবেরি নামের অসাধারণ এক কুক ও ক্যানিবালের সাথে, যে আন্দিজ প্লেন ক্র্যাশের একজন সারভাইভার ছিলো। ডিবি'র ইনভেস্টিগেটর নুরে ছফার সাথে আর ইঁদুর বিড়াল খেলার শুরু সেখান থেকেই। আর এই ২০১৯ সালে এসে প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় কিস্তি 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি'। নুরে ছফা যে এখনো কয়েকটা গুম-খুনের আসামী মুশকানকে ধাওয়া করে যাচ্ছে, তা আবারো দেখা গেলো।
এবারকার প্লটটা শুধুমাত্র বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং কলকাতা পর্যন্ত তদন্তের স্বার্থে পাড়ি জমাতে হয়েছে নুরে ছফাকে। গল্পের প্রয়োজনেই এসেছে নতুন আরো কিছু চরিত্র। গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে পুরোনো কিছু চরিত্রেরও। মোটামুটি বিশাল কলেবরের 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি' সত্যি বলতে দারুন এক পেজ টার্নার। ছোট ছোট অধ্যায়ে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন উপন্যাসটা যেভাবে লিখেছেন আর যেভাবে গল্পটা সাজিয়েছেন, পাঠক বাধ্য হবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা প্রবল উত্তেজনাকে সঙ্গী করে।
ভয়াবহ এক রিডার্স ব্লকের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম গতো দুই/আড়াই মাস। এই বইটা আমাকে সম্ভবত সেই ব্লক থেকে মুক্তি দিয়েছে। বেশ দ্রুত শেষ করেছি বইটা। অনেকেই বলেছিলেন 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি' নাকি এর প্রথম পর্বের মতো অতোটা 'কড়া' না। আমার কাছে অবশ্য সেরকম কিছু মনে হয়নি পুরোটা শেষ করার পরেও। আসলে প্রথম কোন কিছুর সাথে পরবর্তী কিছুকে মেলাতে যাওয়াটাই ঠিক না। স্বতন্ত্রতার একটা ব্যাপার থাকে প্লটে। আরো একটা সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার হলো, আমরা ভালো কিছু পড়লে ওটার পরবর্তী কিস্তির জন্য অবচেতন মনেই আমাদের ভেতরে একটা হাই এক্সপেকটেশন সৃষ্টি হয়। তাই শেষমেষ অনেকের এক্সপেকটেশনই পূর্ণরূপে পূরণ হয়না। যদিও আমার কাছে এই দ্বিতীয় কিস্তিটা যথেষ্ট ভালো লেগেছে।
বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ, কেউ কেউ কথা রাখে, ১৯৫২ - নিছক কোন সংখ্যা নয়, জাল-এর মতো বেশ কিছু পাঠকপ্রিয় মৌলিক থ্রিলারের লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের সাসপেন্সফুল লেখনীর দেখা পেয়েছি 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি'-তেও। পাঠককে আটকে রাখতে বেশ ভালোভাবেই জানেন তিনি। আর এখানেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি৷ তেমন কোন টাইপিং মিসটেক বা ভুল বানান খেয়াল করিনি। বাতিঘর প্রকাশনী যে এই ব্যাপারগুলোতে সিরিয়াস হচ্ছে, দেখে ভালো লেগেছে। মুশকান জুবেরির ভয়াবহ প্রহেলিকাময় জগতে সম্ভবত আবারো পাঠককে নিয়ে যাবেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। কারণ, গল্পটা শেষ হয়নি। সেজন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
সিরাজুল ইসলাম নিউটনের করা প্রচ্ছদটা চমৎকার লেগেছে। তবে বইয়ের বাঁধাইটা আরো শক্তসমর্থ করা উচিৎ ছিলো বইটার যেহেতু পৃষ্ঠাসংখ্যা নেহাত কম না, আর সংরক্ষণের একটা ব্যাপার এর সাথে জড়িত।
আমার রেটিং- ৪.২ স্নায়ুর টানটান ভাবটা আগের বইটার তুলনায় বেশি অনুভব করেছি এবার। থ্রিলার হিসাবে যথার্থ মনে হয়েছে। পুরোটা সময় উত্তেজনা বজায় রেখেছেন লেখক। শুধু কিছু বিষয় আমার কাছে কিঞ্চিৎ ডিস্টার্বিং লেগেছে। (অবশ্য বইটা ভাল লেগেছে বলেই নেতিবাচক ব্যাপারগুলো মনের মধ্যে খোঁচা দিয়েছে) ১। সবচেয়ে বিরক্তিকর যে ব্যাপারটা ছিল সেটা হচ্ছে লেখক এর সর্বনাম ব্যবহার এর দুর্বলতা। মাঝে মধ্যে এই জন্য খেই হারিয়ে ফেলেছি। হারানো খেইকে খুঁজতে গিয়ে একই লাইন দুই এর অধিক বার ও পড়তে হয়েছে। (দ্রুতগতির থ্রিলার এ ইহা খুব ই বিরক্তিকর) ২। কিছু জায়গায় অকারণেই জার্গন ব্যবহার আর তার বিশ্লেষণ করেছেন লেখক। (দরকার ছিল না) ৩। বইয়ের কলেবর বৃদ্ধির প্রতি বোধ হয় লেখক এর বেশি মনোযোগ ছিল। অনেক গুলো প্যারাগ্রাফ আর অনেক গুলো বাক্য অতিরিক্ত মনে হয়েছে। তার চেয়েও বিরক্তিকর ছিল কিছু ঘটনার এক এর অধিক বার বর্ণনা। ৪। বই এর বাঁধাই লোকাল অনলাইন শপ এর চেয়ে নিম্নমানের ছিল। (বাতিঘর এর কাছে আমাদের প্রত্যাশা আগের তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি)
এতো গুলো কথা বলার কারণ একটাই। আশা রাখি লেখক এর সব গুলো বই ই আমি পড়ব ভবিষ্যতে। তাই এই রিভিউ টা এক অর্থে লেখক এর কাছে অনুরোধ, যেন তিনি এই ব্যপারগুলো একটু খেয়াল রাখেন পরবর্তীতে। (রিভিউটা যদি ভুল করেও লেখক এর নজরে আসে এবং বিবেচনাগ্রাহ্য হয় তবে বই দেবতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব)
রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি বইটি পড়ে খুবই তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম। এরপর যখন শুনলাম এই বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় বের হচ্ছে তখন খুবই আশা নিয়ে বইটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষা করার পর রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি বইটা যখন হাতে পেলাম তখন উৎকন্ঠার আর শেষ ছিল না। বই নিয়ে বলতে শুরু করলে, প্রথমেই বলতে হয় বইয়টা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। মোট ৪৩২ পেইজের বইয়ের প্রথম ২০০ পেইজই একদমই অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু বইয়ের মধ্যম ভাগ থেকে একদমই টানটান উত্তেজনা ছিল।
বইয়ের শেষভাগ পাঠক হিসেবে আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্ব রাখে। আর এই শেষভাগের উপর বিবেচনা করেই ১টা তারকা কম দেয়া হয়েছে।
ঘটনা যেভাবে এগোচ্ছিল তার তুলনায় মুশকানকে ধরতে পারা/না পারাটা বেশ দ্রুত সংঘটিত হয়ে গিয়েছে। ডাক্তারের তৈরি করা confusion টা এবং তার খোলাসা হওয়াটা চকমপ্রদ ছিল। কে এস খানের ব্যপ্তি আর একটু বেশি আশা করেছিলাম। শেষ দিকের তাড়াহুড়োটা ছাড়া বাকি সবই ভালো লেগেছে। কিন্তু লেখকের কাছ থেকে প্রতিবারই তাঁর নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া প্রত্যাশা করি। (প্রথম রিভিউ লিখে ফেললাম) 😀