Buddhadeva Bose (also spelt Buddhadeb Bosu) (Bengali: বুদ্ধদেব বসু) was a major Bengali writer of the 20th century. Frequently referred to as a poet, he was a versatile writer who wrote novels, short stories, plays and essays in addition to poetry. He was an influential critic and editor of his time. He is recognized as one of the five poets who moved to introduce modernity into Bengali poetry. It has been said that since Tagore, perhaps, there has been no greater talent in Bengali literature. His wife Protiva Bose was also a writer.
Buddhadeva Bose received the Sahitya Akademi Award in 1967 for his verse play Tapaswi O Tarangini, received the Rabindra Puraskar in 1974 for Swagato Biday(poetry) and was honoured with a Padma Bhushan in 1970.
কল্লোল যুগের পঞ্চ পাণ্ডবের অন্যতম প্রধান পাণ্ডব বুদ্ধদেব বসুর শৈশব আর কৈশোরে বাংলাদেশে কাটানো সোনালি দিনগুলোর স্মৃতিচারণ এই বই। বুদ্ধদেব বসুর রেজাল্ট নিয়ে এখনো লোকে কথা কয়। সেদিন সৈয়দ শামসুল হকের আত্মকথায়ও দেখলাম বুদ্ধদেব বসুর প্রতি অকৃত্রিম উচ্ছ্বাস। এই ব্যক্তির জীবনী নিয়ে স্বভাবতই আগ্রহ ছিল। তাই তাঁর আত্মস্মৃতি "আমার ছেলেবেলা" মোটামুটি একবসায় পড়ে ফেললাম।
বুদ্ধদেব বসু তাঁর বইয়ের পয়লাতেই পাঠককে মনে করিয়ে দিয়েছেন নিজের শৈশব আর কৈশোরের সময়কে তিনি ইতোমধ্যে বন্দি করেছেন নিজের কিছু রচনায়।
জন্মেছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে কুমিল্লাতে। জন্মের সময়ই মা মারা যায়, বাবা আবার বিয়ে করে।বিমাতার সংসারে যেতে হয়নি। পুলিশে চাকুরে নানা আর নানি তাঁকে আপন করে নিয়েছিলেন নিজের সন্তানের মতো।
প্রায় শতবর্ষ পূর্বের অবিভক্ত বঙ্গের কুমিল্লার বর্ণনা আছে। দারোগা দাদুর চাকরির জন্য চলে আসতে হয় নোয়াখালিতে। সেই নোয়াখালি আজকের নয়। ব্রিটিশ শাসনকালের নোয়াখালির উচ্চবিত্ত বাঙালি হিন্দু পরিবারের সংস্কৃতির নির্যাস পাই বুদ্ধদেবের স্মৃতিতে। নানা ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিশেষ অনুরক্ত। তাই ইংরেজির প্রতি আলাদা আকর্ষণের জন্যই হোক কিংবা নাতির দুনিয়াবি কল্যাণের কথা ভেবেই হোক - মুখে বোল ফোটার পর থেকেই দাদু তাঁকে ইংরেজি বুলি শিখিয়েছেন। আস্তে আস্তে আগ্রহী করে তুলেছেন ইংরেজি ভাষার প্রতি। আট-নয় বছরে যখন বাঙালি শিশু ইংরেজির ভয়ে তটস্থ থাকে। সেই বয়সে ইংরেজি ছড়া রচনায় মনোনিবেশ করেছিলেন বুদ্ধদেব বসু! এহেন ছেলে পরবর্তীতে ইংরেজি সাহিত্যে রেকর্ড পরিমাণ নম্বর পাবে না তো কে পাবে?
মা মরা সন্তান বলে নানা-নানিসহ সবার আলাদা স্নেহ পেতেন। বাড়িতে মাসিক সাহিত্য পত্রিকা, সংবাদপত্র রাখবার সংস্কৃতি ছিল। সাহিত্যের বইপত্র পড়ারও ঝোঁক ছিল। সেই সুযোগের শতভাগ সদ্ব্যবহার করেছেন কিশোর বুদ্ধদেব।চড়কা কেটেতেন জেলে যাওয়ার প্রয়াসে। স্বরাজের প্রতীক্ষায় প্রহর গোণা মানুষদের হতাশ হতে দেখেছেন।
রবীন্দ্রনাথের লেখার সাথে পরিচয় হওয়ার আগেই পড়ে ফেলেছেন বিস্তর কবিতা, গল্প আর উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথকে আবিষ্কার নিয়ে অনেকের যতটা আলাদা ভাবালুতা থাকে সযত্নে সেসব এড়িয়ে গেছেন। ক্লাস এইটে ঢাকায় পাকাপাকিভাবে চলে আসেন। ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। সেই সময়কার কলেজিয়েট স্কুলের কথা বলতে গিয়ে প্রাসঙ্গিকভাবে স্মরণ করেছেন জগন্নাথ কলেজের কথা। স্বীকার করেছেন স্কুলে পড়া বুদ্ধদেব অবাক বিস্ময়ে দেখতেন কলেজে পড়ুয়া প্রেমেন মিত্তিরকে।
স্কুলের স্মৃতিতে সেই সময়ে পাঠ্যক্রম সম্পর্কে ধারণা পেলাম। ব্রিটিশ সূর্যের গুণকীর্তন অনেকটা পাঠ্যবইয়ের সহায়তায় প্রোপাগান্ডার মতো মগজ ধোলাইয়ের কথাও বলেছেন বুদ্ধদেব বসু। ঢাকায় রবীন্দ্রনাথের সংবর্ধনা কিংবা ঢাকার সাহিত্যাঙ্গনের অনেক তারকারাজির নাম পেলাম। যারা এখন কালের ধুলোয় মিশে গেছেন।
সাহিত্যিক, সমালোচক বুদ্ধদেব বসু আকাশ থেকে পড়ে একদিনে এতটা স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল হয়ে যাননি। এর প্রস্তুতি বুঝি শুরু হয়েছিল তার সেই ইংরেজিভক্ত দাদুর হাত ধরে। এরপর আর থামায় কে? বুদ্ধদেব বসুর স্মৃতিতে বিশশতকের প্রথমের পূর্ববঙ্গের গ্রাম আছে, ঢাকা আছে,সাহিত্য আছে আর আছে বাঙালি মধ্যবিত্ত হিন্দু পরিবারগুলোর পারিবারিক আবহের নিখুঁত ছবি। সবই পাবেন বুদ্ধদেব বসুর ঝরঝরে গদ্যে, চমৎকার শব্দের গাঁথুনিতে নির্মিত গতিশীল বাক্যের চলন্ত ট্রেনে। যে ট্রেনের গন্তব্য বিশ শতক!
এমনিতে সারাদিন ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে চলা, তথ্য -উপাত্ত-ডাটার কচকচানি, অংকের মারপ্যাঁচে ক্লান্ত-শ্রান্ত মন। তারপর এমন আহ্বান... যেন এক চিলতে প্রশান্তির ছোঁয়া! মন উল্লসিত না হয়ে পারে?
কিন্তু এ কি? গল্পে যেই না ডুব দিয়েছি, ওমনি বললেন;
তারপর, কি কি গল্প করলেন? কেমন লাগল? এসব প্রশ্ন থেকে যায়, তাইনা? কিন্তু ওসবে কি এসে যায়? থাকুক না চুলচেরা বিশ্লেষণ, ওসব কি আমার কাজ? মুহূর্তের এইযে ডুবে যাওয়া... আমার এই ডুবে যাওয়াতেই শান্তি। বিশ্লেষণের কাজটা নাহয় আমার আগামীর 'আমি'র জন্য তোলা রইল।
বুদ্ধদেব বসুর ছেলেবেলার তিন শহর ছিল কুমিল্লা, নোয়াখালি আর ঢাকা, তাই তার 'আমার ছেলেবেলা' প্রায় চেনা একটা আবহের মধ্যেই রাখলো আমাকে। নোয়াখালিতে থাকার সময় সেখানকার পাশ ঘেঁষে চলে যাওয়া সাগরের মত মেঘনার যে ছবি তিনি এঁকেছেন, সেই ছবি আমিও দেখেছি ;চাঁদপুরে যাওয়ার বেলায় মেঘনা আর পদ্মার বৈপরীত্যের আবছায়াও আমার অপরিচিত নয়। কিন্তু এই চেনা সুরের তার কেটে গেল তার ঢাকা বাসের পর্যায় শুরু হওয়ার পর থেকেই। যে পুরানা পল্টন আমার কাছে প্রতিদিনের কর্মস্থলের পথে এক টুকরো মূর্তিমান বিভীষিকা, সেই পুরানা পল্টনের বিশাল বিস্তৃত মাঠ, সারিবদ্ধ সবুজ আর রোমান্টিক নৈঃশব্দ আমার পক্ষে কল্পনা করা অসাধ্য। কিন্তু বুদ্ধদেবের পুরানা পল্টন ঠিক তাই। এই অভিশপ্ত জায়গা, যেখানে এখন ক্ষণকাল তিষ্ঠানোর অভিপ্রায় অকল্পনীয়, সেখানেই বুদ্ধদেব পেয়েছিলেন তার প্রথম কাব্যিক উচ্চারণ, যা পরে পরিণত হয়েছিল 'বন্দীর বন্দনা'য়! আজকের ঢাকার কোন নাগরিকের পক্ষে হয়ত এই কার্যকারণ বুঝা অসম্ভব।
কিন্তু বাংলার এই একজন প্রাবন্ধিকের অনুভূতির সাথেই তো আমি গভীর নৈকট্য অনুভব করি, তাই হয়তো একমাত্র তিনিই পারেন তার অন্য সময়ের পুরানা পল্টনের স্মৃতি রোমন্থনে এই সময়ের আমাকেও সংগী করে নিতে।
তাই হয়তো আজকে রাতে পুরানা পল্টন আমার কাছে এক রহস্যময় রোমান্টিক নস্টালজিক আবেগের নাম হয়ে এসেছিল।
কাল যখন আবার এ সময়ের পুরানা পল্টনে বাসের শতচ্ছিন্ন আসনে অপেক্ষা করতে থাকবো পুলিসের হাতের দিক বদলের, তখন হয়ত হারিয়ে যাওয়া বুদ্ধদেবের পুরানা পল্টন মুহুর্তের জন্য আমার অপেক্ষা করার হতাশা ভুলিয়ে দিবে।
বুদ্ধদেব বসুর আত্মজীবনী পড়ার ইচ্ছা ছিল অনেকদিনের। কারণ ভদ্রলোক যেহেতু আমাদের দেশি ভাই সে হিসেবে তার আত্মজীবনীতে বাংলাদেশের বর্ণনা থাকা খুব স্বাভাবিক স্পেশালি যে শহরগুলোতে তিনি এককালে থেকেছেন। কুমিল্লায় জন্ম, আর খুব স্বাভাবিকভাবে কুমিল্লার কোন স্মৃতি তার নেই। ছেলেবেলা কেটেছে নোয়াখালিতে। আফসোসের বিষয় লেখকের ছেলেবেলার নোয়াখালির কোন অস্তিত্ব এখন আর নেই, নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বহুকাল আগে। আর লেখকের প্রথম যৌবন যে ঢাকায় কেটেছে, এ যুগের বাসিন্দা হয়ে সে ঢাকা আমার কাছে সম্পূর্ণ অচেনা (বর্ণনা পড়লে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে, এ কেমন ঢাকা)। এই বই এমনি সাধারণ বুদ্ধদেব বসুর 'লেখক এবং কবি বুদ্ধদেব বসু' হয়ে উঠার চেষ্টা বলা যেতে পারে।
"প্রায় অজ্ঞান বয়স থেকেই আমি চা-খোর, ততদিনে এমন বয়সে পৌঁচেছি যখন সকালবেলায় আধো-ঘুমের মধ্যে লোহার কেটলির ঘণ্টাধ্বনি শুনেও আনন্দ পাই, পিঙ্গলবর্ণ চায়ের রসে ধবল দুধ যখন ঘন মেঘের মধ্যে হালকা মেঘের মতো মিশে যায়, আমার মনে হয় একটি সচল রঙিন ছবি দেখছি। আর তার স্বাদ—গোলাপফুল-আঁকা ধোঁয়া-ওঠা পেয়ালায় প্রথম চুমুক—তুলনা হয় না!"
লেখকের জীবদ্দশায় শেষের দিকের লেখা। লেখাগুলো বিচ্ছিন্ন কিন্তু পড়ে ভালো লেগেছে। আত্মজীবনীমূলক লেখা সব সময়ই ভালো লাগে। আর সেটা পছন্দের লেখক হলে তো কথাই নেই।
বুদ্ধদেব বসুর শৈশবপর্বের স্মৃতিকথার এই মায়াময় সংকলন পড়তে পড়তে প্রতিটি অনুচ্ছেদ থেকে ছড়িয়ে পড়া নস্টালজিয়ার সুবাস নাকে লেগেছে। আর গদ্য? সে তো বলাই বাহুল্য! পদ্যের-ছোঁয়া-লাগা তাঁর গদ্য আমাকে তরতরিয়ে ঠেলে দিয়েছে পরবর্তী পাতা ওল্টানোর কাজে। আর তাছাড়া, বুদ্ধদেবের চোখে দেখা সেকালের পূর্ববঙ্গের ইতিহাসও একটি প্রামাণ্য দলিল বটে; তাই ইতিহাসপ্রেমীদের অবশ্যপাঠ্যের তালিকায় বইটি থাকতেই পারে।
ব্যক্তিগত গল্পগুলো কেন যেন সবসময়েই ভালো লাগে পড়তে। সেটা যদি বুদ্ধদেব বসুর লেখা হয়, তাহলে পড়ার আগ্রহ আর গতি দুই-ই বেড়ে যায়। কারণটা স্পষ্ট - তার কবি/লেখক হিসেবে সুনাম এবং লেখনীর ধার কারো অজানা নয়। সেই সুবাদেই বইটা হাতে তুলে নেয়া। মাত্র ১১৬ পাতায়, অনাড়ম্বর ভাষায়, নিজের ছেলেবেলা যে তুলে ধরা যায়, তা ধারণার বাইরে ছিল। অপ্রয়োজনীয় গল্প বা তথ্য দিয়ে পাঠককে ক্লান্ত করেননি। এই restraint-ই বুদ্ধদেব বাবুর একটা বড় শক্তি!
'সাড়া' উপন্যাস পড়েছি কয়েকদিন আগে, মূলত ওখানকার সাগরই সম্ভবত লেখক নিজে 'আমার ছেলেবেলা পড়ে যা বুঝলাম। মধু মধু! এরকম আত্মজীবনী পড়লে আত্ম-আত্মার শান্তি।
বুদ্ধদেব বসুর লেখা আমার বিশেষ পড়া হয় নি। তার নাম শুনলেই আমার মনে পড়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশি মার্ক নাকি তিনিই তুলেছিলেন। এখনো সে রেকর্ড আছে কিনা জানি না। এমন একজন ছাত্র কেই এই রেকর্ড করতে মানায়, সে শুধু মেধাবীই নয়, যার সাহিত্যক মন ও আছে। "আমার ছেলেবেলা" পড়ে মনে হয় বুদ্ধদেব বসুর কাছেই এই রেকর্ড থাকা সাজে। শীতের সকালে ঠাকুরদা তাকে বলছেন - "Do you see what I see ?" আর বালক বুদ্ধদেব বলছেন - "A tree", "A dog", "A bullock-cart" । সাত বছর বয়সে পারিবারিক চিঠি আর ডায়েরি লিখতেন ইংরেজিতে। সেই সময়ই ঠাকুরদার কাছে শুনতেন, শেকসপিয়র আর শার্লক হোমস। নয় বছর বয়সে লেখা তার প্রথম কবিতাও ইংরেজিতে। তখন তার প্রিয় বই - " A thousand and one gems of English poetry"। বুদ্ধদেব বসু "হয়ে উঠার" পেছনে তার ঠাকুরদার ভূমিকা অসাধারণ। শেষ বয়সে মৃত মেয়ের এই সন্তানকে তারা শুধু ইংরেজিতেই বড় করে তুলেন নি। তাকে একটা সাহিত্য সংস্কৃতি এর মধ্যেও এনেছেন। ১৯ শতকের প্রথম দিকে পূর্ববঙ্গ অবহেলিত। সেই অবহেলিত দেশের বিরান শহর নোয়াখালীতে " মাসে মাসে আসে অনেকগুলো ছোট-বড় পত্রিকা। দাদামশাই আমাকে কলকাতা থেকে ভি . পি. ডাকে বই আনিয়ে দেন মাঝে মাঝে।" নদী ভাঙ্গনে ধসে পড়া বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন এক বান্ডিল বাছা বাছা বই, যেখানে অন্যরা হয়তো ভিড় করেছে কম দামে জিনিশপত্তর কেনার জন্য ।
ছেলেবেলা বা শৈশব কখন শেষ হয়। যখন যে বয়ঃসন্ধি পার করে, এটাই স্বাভাবিক উত্তর। কিন্তু বুদ্ধদেব বসু এর মতে তার ছেলেবেলা শেষ হয়েছে, যখন তিনি তার নিজের সক্ষমতা অর্জন করেছেন। যখন তিনি রবীন্দ্র, সতেন্দ্র দত্তের বাইরে নিজের কবিতার ভাষা তৈরি করেছেন। আঠার বছর বয়সে লেখা "বন্দীর বন্দনা" নামে সেই কবিতা থেকে কিছু দেয়ার লোভ সামলাতে পারছি না।
"প্রবৃত্তির অবিচ্ছেদ্য কারাগারে চিরন্তন বন্দী করি’ রচেছো আমায়- নির্মম নির্মাতা মম! এ কেবল অকারণ আনন্দ তোমার! মনে করি, মুক্ত হবো; মনে ভাবি, রহিতে দিবো না মোর তরে এ-নিখিলে বন্ধনের চিহ্নমাত্র আর। রুক্ষ দস্যুবেশে তাই হাস্যমুখে ভেসে যাই উচ্ছ্বসিত স্বেচ্ছাচার-স্রোতে, উপেক্ষিয়া চ’লে যাই সংসার-সমাজ-গড়া লক্ষ-লক্ষ ক্ষুদ্র কন্টকের নিষ্ঠুর আঘাত; "
বই থেকে যে অনেক কিছু পাবেন এমন কিছু না। কিন্তু অনেক চিন্তার খোরাক আছে।
বেশ একটা ছন্নছাড়া ভাব আছে বুদ্ধদেব বসুর আত্মজীবনীর এই প্রথম অংশে। পূর্ববঙ্গকে, এর গ্রামীণ জীবনকে খুব পছন্দ হয়নি তাঁর তা অকপটে স্বীকার ক'রেছেন। তাঁর এই সৎ উচ্চারণ ভাল লেগেছে। আমার নিজের শহর ঢাকার বিংশ শতাব্দীর প্রথম একচতুর্থাংশের সময়কালটার কথা পড়েছি উৎসাহ নিয়ে। উনি যে এক সময়ে ওয়ারির র্যাংকিন স্ট্রিটে থাকতেন তা জেনে পুলকিত হয়েছি, আমি নিজেও জীবনের প্রথম ১১ বছর ঐ রাস্তায়ই থেকেছি, তার বর্ণনায় উঠে আসা পুরোনো ঢাকাকেও আমি বেশ চিনি। তবে ঘটনাক্রম এলোমেলো ঠেকেছে।