খ্যাতনামা এক বাংলাদেশি বিজ্ঞানীকে তার বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলো। ডাক পড়লো ডিটেক্টিভ আসিফ আহমেদ ও তার দলের। অনিশ্চয়তার সঙ্গে যুক্ত হলো একটি কিডন্যাপ কেস। তদন্ত শুরু হতেই খুব দ্রুত পাল্টে গেলো ঘটনা প্রবাহ--রসায়ন থেকে অ্যালকেমি, খ্রিস্টের জন্মের চার হাজার বছর আগ থেকে বর্তমান বাংলাদেশে-কল্পনাতীতভাবে বিস্তৃত এই রহস্যের সমাধান লুকিয়ে আছে সামনে থাকা তথ্যগুলোর এক এবং কেবল একটিমাত্র অংশে। সেটাই খুঁজে বের করতে হবে। স্বভাবতই এলো বিপত্তি। সার্বক্ষণিক বাধা আসছে অদৃশ্য কোন গুপ্তসঙ্ঘের ইশারায়। প্রধান সাসপেক্টকে হাতের নাগালে পেয়েও কেসটার মিমাংসা করা গেলো না। প্রতিঘণ্টায় কাহিনীর মোড় ঘুরে যাচ্ছে। কোটি কোটি মানুষের চোখের সামনে থাকা সত্যটা খুঁজে বের করতে গিয়েও গলদঘর্ম হয়ে উঠলো ডিটেক্টিভ। কিন্তু কারও ধারণাও নেই, সত্যটা কাঁপিয়ে দিতে পারে গোটা বাংলাদেশকে।
Kishor Pasha Imon is a famous Bangladeshi crime writer.
Musa Ibne Mannan, known by the pen name KP Imon, is an accomplished writer who initially gained recognition through his short stories on social media. Over the course of his career, he has written over 220 short stories, captivating his online audience with his vivid imagination and storytelling skills. Building on his success in the digital realm, Imon went on to establish himself as a prominent novelist, with his works being published in both Bangladesh and India.
His regular publishers are Batighar publications, Abosar Prokashona Songstha, and Nalonda in Bangladesh. Abhijan Publishers solely publish his books in India. He is the author of 13 novels and translated 9 books to Bengali till date (5/10/23).
He graduated from the Department of Mechanical Engineering at Rajshahi University of Engineering & Technology. Presently, he resides in Dallas, TX, focusing on his PhD studies in Mechanical Engineering at UT Dallas after completing his MS at Texas State University.
His other addictions are PC gaming, watching cricket, and trekking.
ভালো লাগলো। এই প্রথম লেখকের কোন লেখা পড়লাম(থৃলার)। যদিও তার ছোটগল্পগুলোর কথা প্রথমে শুনেছি, কিন্তু বাংলা ইবুক পড়তে পারিনা, তাই এটাই তুলে নিয়েছি। যে জিনিসটা প্রথমে নজরে পড়েছে, তাহল কোন ধরণের জড়তার অনুপস্থিতি। এক সিকুয়েন্স থেকে আরেম সিকুয়েন্সে যাওয়ার ফ্লুয়েন্সি চোখে পড়ার মতো। কথাটা বললাম কারণ এটা তার প্রথম মৌলিক উপন্যাস :) মিথস্ক্রিয়াকে কোন জনরায় ফেলা যায়? আমি কন্সপিরেসি থৃলার বলব। সাথে হিস্টোরিকাল ফিকশনের চমতকার মিশ্রণ। এধরণের বইগুলোতে যা যা থাকার কথা - আদর্শ একজন গোয়েন্দা, ভারীক্কী চালের একজন প্রফেসর, মাঝে মাঝে ঐতিহাসিক ব্যাপারগুলো নিয়ে কথাবার্তা তার কোনকিছুরই কমতি ছিল না। একজন প্রফেসরের খুন রহস্য ভেদ করতে গিয়ে ডিটেক্টিভ আসিফ জড়িয়ে গেল অনেক বড় একটা কন্সপিরেসির সাথে। শুরু হয় ইঁদুর বিড়াল খেলা। পুরো বই জুড়ে উত্তেজনা ছিল, কাহিনীও ঝুলে পড়েনি কোথাও। একটানা পড়ে গিয়েছি(যদি বইয়ের মাঝে মাঝে ইতিহাসের ব্যাপারগুলো পড়তে কারো অস্বস্তি লাগে, তাহলে তার হয়ত একটু কষ্ট হবে)। অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো :)
বইটা শুরু করেছিলাম নিতান্তই গোয়েন্দা কাহিনীর উপর দুর্বলতা থেকে, বলে রাখা ভালো বরাবরই আমার শোচনীয় রকম দুর্বলতা আছে গোয়েন্দা কাহিনী এবং গোয়েন্দা নিয়ে 😋 প্রথমেই কিশোর পাশা ইমন take a bow from me,what a writing it was!
বইটা লিখতে যেয়ে যে আপনার যথেষ্ট পরিমাণে পরিশ্রম করতে হয়েছে পড়তে যেয়েই বোঝা গেছে, একসাথে ইতিহাস র্ধম বিজ্ঞান ভৌগোলিক সীমানা গুলোকে এক সুতোয় বাঁধা সহজ কিছু নয়, কাহিনীতে এগুলো তরকারিতে দেয়া পাঁচফোড়ন এর মতো কাজ করেছে যা লেখাটাকে আরো সমৃদ্ধ করেছে, কিন্তু এত এত তথ্য ছিল যে অনেক সময় আমাকে কোনো কোনো পাতা ২-৩ বার ও পড়তে হয়েছে পুরোটা বুঝতে, কখনও মনে হচ্ছিল ক্লাসে প্রফেসর যেমন খটমটে লেকচার দেন আর তা শুনতে শুনতে তন্দ্রা বিলাস হয় তেমনি আমার হচ্ছিল, সবকিছু একসাথে না দিয়ে একটু ছেড়ে ছেড়ে দিলে পাঠকের পড়তে সুবিধা হবে.
ইলুমিনাতি নিয়ে আমার জ্ঞান ছিল টিমটিমে বাতির মত,আর মিথরাস মেসন প্যাগান নিয়ে তো ছিলাম তিমিরেই এগুলো নিয়ে তথ্য আমার কাছে বুফে খাওয়ার মত যত খুশী তত নাও.জাবির ইবনে হাইয়ান থেকে শুরু করে নিউটন পর্যন্ত আলকেমীর প্রভাব এবং তাকে পুঁজি করে মেসন কর্মসূচি, নিজের পছন্দের অনেক ব্যক্তির স্যাটানিজমের প্রতি নিবেদন দেখে একপ্রকার দুঃখই লেগেছে but my question is ১-really all of them were devoted to Lucifer?(excluded zabir ibne)২-লুই আই কান কি আসলেই ফ্রি মেসন হয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণ করেন? প্রশ্নের উত্তর জানলে দয়া করে দিবেন কেউ এগুলো কতটা সত্যি আর কতটা কাহিনী জন্য লেখা.
কাহিনীর সূত্রপাত তানভীর আহমেদ জালাল নামক বিজ্ঞানীর রহস্যময় মৃত্যু থেকে তার ডালপালা ছড়িয়ে পড়ে যখন তার একমাত্র ছেলে বিজয় নিখোঁজ হয়ে যায় এবং তার নিজের মৃত্যুর কারণ ও পদ্ধতি নিয়ে, প্রথমে রমিজ খানের কথায় তাকে নারীলোভী স্বার্থপর এবং েমসনদের সহযোগি হিসেবে যথেষ্ট পরিমানে ঘৃনার জন্ম দেয় কিন্তু পরে বাংলাদেশকে মেসনমুক্ত করার জন্য নিজের ছেলেকে উৎসগ,ইরফানের বোন ঈশিতাকে বাচানোর চেষ্টা সবশেষে নিজের আত্মহুতি দেওয়া এসবের পর শ্রদ্ধা ঘৃণার থেকে দ্বিগুণ হয়ে গেছিল.
আমার কাছে detective আসিফের থেকে ইরফানের চরিত্রে বেশি সাবলীলতা ফুটে উঠেছে এরকম একজন ঠান্ডা মাথার দুঃসাহসী বুদ্ধিমান বোনের জন্য নিবেদিত প্রাণ কিডন্যাপার আমি খুব কমই পেয়েছি কোনো বইতে, তবে তার বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে সুলেমান (আঃ) এর আমল থেকে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে মেসন প্যাগান আর মিথরাস নিয়ে জ্ঞান দেখে সত্যিই department of hostage sabotage থাকলে যে কতটা ভালো হত তাই মনে হচ্ছিল:-P আসিফের চরিত্র এখানে ইরফানের তুলনায় ম্লান হয়ে গেছে supporting character হিসেবে ডঃ রমিজ খান, শাহেদ জামান, জিয়া বা ঝুঁকি নিয়ে হুলিয়া জারি হওয়া সহকর্মীদের সাহায্য ও সতর্ক করা তৃনা প্রতে্যকেই মনে রাখার মত, তবে বেশি চমকেছি ডানা বাতশিভা এবং রিয়াজুল করিমের চরিত্র চিত্রায়নের.
overall this book was a pleasure to read and the writer deserve a thanks ☺
দেশের সনামধন্য বিজ্ঞানী তানভীর জালালের রহস্যময় মৃত্যুতে ধাঁধায় পড়ে যায় সবাই। সুপারিশ দিয়ে আনা হয় ডিটেকটিভ আসিফকে। সহকারী জিয়াকে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমে পড়েন। কিন্তু জানা যায় বিভিন্ন গুপ্তসংঘের ইতিহাস। আন্তর্জাতিক কেমিস্ট্রের সাথে কি কোনো যোগাযোগ ছিল? আচমকা কেস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের শতভাগ সাফল্যের অধিকারী ডিটেকটিভকে! আমেরিকা থেকে ছুটে আসে এফবিআইয়ের দুজন এজেন্ট। বিজ্ঞানীর একমাত্র ছেলে বিজয়কেও পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও! তাহলে কি কিডন্যাপ করেছে কেউ? শহরের অন্ধকার গতিতে পাওয়া গেছে কিশোরীর লাশ। গলায় দাঁতের ক্ষত। কে যেন রক্ত শুষে নিয়েছে! ভ্যাম্পায়ার থিওরিকে এতদিন মিথ ভেবে কি তাহলে ভুল হয়েছে? আসিফ মরিয়া হয়ে ওঠে, ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে ভয়ানক কিছু হতে চলেছে দেশের মাটিতে! কিন্তু কী?
পরিসরে যেমন ছোট নয় তেমনি বইয়ের প্লটও কিন্তু ছোট নয়। বরং বিস্তরই বলা চলে। মেসন, প্যাগান, ইলুমিনাতি, মিথরাস, অ্যালকেমিস্ট, ইসলামিক ও খ্রিস্টীয় ইতিহাস, গুপ্তসংঘ সাথে বেশ কিছু মিথ, ফিকশন ও থিওরির মিশেলে দারুণ একটা কনসেপ্ট। ওহ, হ্যা অনেক ডিসঅর্ডার নিয়েও জেনেছি। বইয়ের বলার মতো একটা দিক হলো ডিটেলিং। এতো খুটিনাটি লেখক তুলে ধরেছেন যে ফিকশন, নন-ফিকশনের গোলকধাঁধায় পড়ে গেছিলাম। তবে এতো বিশাল আলোচনা অনেকের বিরক্তের কারণও হতে পারে তবে আমার ভালো লেগেছে।
শুরুতে মনে হয়েছিল রুপকথার ভ্যাম্পায়ারের দেখা পাবো বা এমনও হতে পারে ল্যাবে বানানো কোনো ভ্যাম্পায়ার। কিন্তু ভ্যাম্প বয় আমার আশার তুলনায় কমই ফোকাস পেয়েছে। মিস্ট্রি, থ্রিলের পাশাপাশি একশন সিনের পরিমাণও ভালোই ছিলো। ইরফানের ক্ষত থেকে বুলেট বের করা আর জিয়ার টর্চারের বর্ণনা পড়ে শিউরে উঠেছিলাম! বইয়ের চরিত্রায়ন ভালো লেগেছে। ডিটেকটিভ- ক্রিমিনাল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের অংশটা জোস। আসিফ-ইরফান ফোকাস বেশি পেলেও জিয়া চরিত্রটাকে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। বেচারার উপর দিয়ে ঝড় বহে গেছে কিন্তু রসিকতা ছাড়ে নায়। ওভারঅল জমজমাট একটা থ্রিলার।
এবারের বইমেলায় কেনা প্রথম বই পড়া শেষ হল আজকেই। বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ দেখে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছিল। রসায়ন, আলকেমি, গুপ্তসংঘ- এই কয়টা শব্দ দেখতেই আমিও বুঝে নিয়েছিলাম এই বইয়ে ইল্যুমিনাটির কথা থাকবেই। বাইরের থ্রিলার বইয়ের কমন অনুষঙ্গ হলো এসব গুপ্তসঙ্ঘ। তারা আদ্যিকাল থেকে আমাদের মাঝে লুকিয়ে আছে, কোন না কোন স্বার্থ বাস্তবায়ন করার ���ন্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে- এসব পড়তে পড়তে অভ্যস্ত রেগুলার থ্রিলার পাঠকেরা। বাংলাদেশের পটভূমিতেও এই থিম নতুন না, ভেন্ট্রিলোকুইস্ট বইটার কথাই মনে পড়ছে সবার আগে। এর আগেও আমি অন্য কোন একটা বইয়ে দেখেছি সিমিলার থিম, নামটা খেয়াল আসছে না এখন।
যাই হোক, বইটা পড়া শুরু করলাম। একদম প্রথমেই থামতে হলো। লেখক অবিকল ড্যান ব্রাউনের ন্যায় বলতে চাচ্ছেন যা লেখা বইয়ে সবই ফ্যাক্টের উপরে ভিত্তি করে। বইয়ের ৮০% ই বলে ফ্যাক্টের উপরে নির্ভরশীল, বাকিটা লেখকের কল্পনা। বেশ আশা নিয়ে শুরু করলাম পড়া আবার।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী তানভীর জালাল নিহত হয়েছেন, তার মৃত্যুর তদন্ত করতে হাজির হলেন দুই হোমিসাইডের অফিসার। তাদের তদন্ত থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করলো আলকেমির সাথে তানভীর জালালের লিংক। সে থেকে শুরু হলো নানা গুপ্তসংঘের আগমন। প্যারালালি চলতে থাকে আরেকটা কেসের সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে এই প্রফেসরের মৃত্যুর, সেই কেস আবার ভ্যাম্পায়ার নিয়ে। আমি এই পর্যন্ত পড়েই বেশ কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম- আলকেমি, ইল্যুমিনাটি, ফ্রিমেসন, ভ্যাম্পায়ার- লেখক বেশি প্যাচ দিয়ে ফেলছেন কি না!
নাহ, আমার সন্দেহ প্রায় অমূলক ছিলো তা বলতেই হবে। বইয়ের রহস্যের শেষ খুব ভালো ভাবেই হয়েছে, প্রতিটা প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়েছে, প্রত্যেকের ক্যারেক্টার আর্ক স্যাটিস্ফাইং এন্ডিং পেয়েছে। লেখক বইয়ের শেষ পার্টে বাংলাদেশের সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা কয়েকটা জিনিস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন- আমি বহুদিন পরে বাধ্য হয়েছি বই রেখে গুগল সার্চে নামতে। শেষ আমি জেমস রোলিংস এর সিগমা সিরিজ পড়তে যেয়ে এমন চমকেছিলাম, বই রেখে গুগল সার্চ করতে হয়েছিল। ফ্রিমেসনদের এদেশে অস্তিত্ব এককালে ছিল বলে জানতাম, বাট লেখক গ্র্যান্ড লজের পজিশনিং যেভাবে দেখিয়েছেন আমি পুরোই চমকে গিয়েছিলাম। খৃস্টের জন্মের চার হাজার বছর আগে শুরু হওয়া কিছুর সাথে এই ২০১৬ সালের বাংলাদেশের সূত্র খুঁজে বের করা যেতে পারে, কল্পনাও করিনি সেটা কখনো। ত্রুটি ধরতে চাইলে এখানেও বলতে পারতাম এই রকম সিগনিফিক্যান্ট পজিশনিং এ বদলোকের ঘাটি দেখানো অনেক আগে থেকেই থ্রিলার মুভি/বইয়ে ক্লিশে হয়ে গেছে- বাট আমাকে পুরোপুরি চমকে দেয়ার জন্যে প্রশংসা লেখকের প্রাপ্য।
বইয়ের বেশ কিছু দিক ভালো লাগেনি। অনেক সময় মনে হয়েছে পুরো হিস্টোরি ক্লাস হয়ে যাচ্ছে বইটা। প্রাচীন নানা ধর্মের সাথে এসব গুপ্তসঙ্ঘের নীতিমালার মিল দেখানোর পার্টে মনে হয়েছে লেখক কস্ট করে যা পড়াশুনা করেছেন তার শোধ তুলছেন আমাদের পাঠকদের উপরে। বেশ কয়েক জায়গায় দুই-তিন পৃষ্ঠা করে স্কিপ করেছি তাই- এন্ডিং বুঝতে কোন সমস্যা হয় নি তাও। অনেক বেশি সঙ্ঘের আমদানি করা হয়েছে, আমার মতে সবার দরকার ছিল না। কেমিস্ট্রির একজন প্রফেসর কথায় কথায় প্রাচীন হিস্টোরি থেকে কোটেশন দেন- কস্টকল্পনা সেটাও। কি জানি, নিটপিকিং করছি হয়তো। অন্য অনেকের হয়তোবা বইটা পড়ে পার্ফেক্ট মনে হবে।
বাতিঘরের বইয়ের আগের কমন সমস্যা যেটা ছিল- বানানের প্রতি খেয়াল না রাখা- সেটা এ বইয়ে প্রায় নেই বললেই চলে। দুই-তিন জায়গায় মাত্র ভুল আছে, যার থেকে বেশি ভুল মেইবি আমি এই রিভিউ লেখতে যেয়ে করেছি। এক জায়গায় পোপ হয়ে গেছে পল, আর আপনি- তুমির কনফিউশন আছে দুই-এক জায়গায়। প্রকাশককে অনেক ধন্যবাদ এগুলো নজরে আনার জন্যে।
যাক মেলার প্রথম বই পড়া শেষ। মোটামুটি ভালোই লেগেছে। এবার শেষের কবিতা পড়ে শেষ করতে হবে, নেক্সট ক্লাসের হোমওয়ার্ক :v
থ্রিলার হিসেবে বেশ ভালো বই। কিছু ক্ষেত্রে জোর করে বহুল পরিমাণ তথ্য বইটাতে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। লেখকের মৃগতৃষা বইটা মিথষ্ক্রিয়ার আগেই পড়ে ফেলায় এই বইটা একটুখানি immature মনে হয়েছে।
লেখকের প্রথম মৌলিক বই হিসেবে বেশ ভালো। যদিও তাঁর আর কোন বই পড়া হয়নি। নিজে অনেক পড়াশুনা করেছেন সাথে পাঠকের ক্লাসও নিয়েছেন। বইয়ের বিস্তার আরেকটু কম হলে ৪★ দেয়া যেতো।
নিজ বাসায় খুন হলেন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিজ্ঞানী তানভীর জালাল। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বেই আলোড়ন উঠল। সেনাবাহিনীর চীপ অব স্টাফের নির্দেশে খুনটি তদন্তের দায়িত্ব পেল হোমিসাইডের ডিটেকটিভ আসিফ। খুনের জন্য প্রথমেই সন্দেহ করা হল বিজ্ঞানীর আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী বিজ্ঞানী ডক্টর খানকে। কিন্তু ডক্টর খানের সাথে কথা বলেই আসিফ জানতে পারল বিজ্ঞানী তানভীর জালালের আরেক অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকের কথা, বিশ্বকে পায়ের তলায় এনে ফেলার শপথ নেয়া এক গুপ্ত সংঘের কথা। বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচালে আসিফ যখন দুলছে, তখন সবাই খেয়াল করল খুনের পর থেকেই ডক্টর তানভীর জালালের ছেলে বিজয়কে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। রেস্টুরেন্টের এক সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ল, বিজয়কে কিডন্যাপ করেছে কুখ্যাত এক কিডন্যাপার ইরফান, ফ্যান্টম হিসেবেই যার বেশি খ্যাতি। আসিফ ভাবছে বিজয়কে কিডন্যাপ করার রহস্য কি? এতে কার স্বার্থ লুকিয়ে আছে? ভেবে কোন কূল কিনারা বের করতে পারছে না।
এদিকে ডক্টরের খুনের তদন্ত করার জন্য আমেরিকা থেকে এফবিআই এর দুজন এজেন্ট এল। তারা এসেই প্রথমে আসিফকে তার কেস থেকে সরিয়ে দিল। অন্য একটা মার্ডার কেসের দায়িত্ব দেয়া হল তাকে। কিন্তু নিয়তি বলে একটা কথা আছে! আসিফের কেসটির ক্রস কানেকশন ঘটল ডক্টর তানভীর জালালের কেসটির সাথে। দৃশ্যপটে আবারও আগমন ঘটল আসিফের। কিন্তু সেটা ভাল চোখে দেখল না কেউই। যে চীপ অফ স্টাফের নির্দেশে আসিফ প্রথমে এই কেসের দায়িত্ব পেয়েছিল, তার নির্দেশেই অসিফকে রোগ এজেন্ট ঘোষণা করা হল। নির্দেশ দেয়া হল দেখা মাত্রই গুলি করার। সহকারী জিয়াকে নিয়ে ডুব দিতে বাধ্য হল আসিফ। বাধ্য হল কিডন্যাপার ইরফানের সঙ্গে একই সাথে কাজ করতে। ইরফানের সহয়তায় সে জানতে পারল বিশ্বকে কারায়ত্ব করার স্বপ্ন এই গোপন সংঘটনটির আজকের না, আরো হাজার বছর আগের। হাজার বছরের প্লান নিয়ে ওরা ধীরে ধীরে এগুচ্ছে। বাংলাদেশে সফলতার দ্বারপ্রান্তে প্রায় পৌঁছেও গেছে ওরা। দাঁতে দাঁত চেপে আসিফ প্রতিজ্ঞা করল, যেভাবেই হোক এই বদ্ধ উন্মাদের গোষ্ঠীকে সে রুখবেই। কিন্তু যেখানে শত্রু/মিত্র কে- সেটাই আলাদা করা দায়, সেখানে কিভাবে সফল হবে সে?
ছোট ভাই কিশোর পাশা ইমনের সাড়ে তিনশো পৃষ্ঠার বিশাল উপন্যাস মিথস্ক্রিয়া পড়ে শেষ করলাম। এর আগে তার বেশ কিছু ছোট গল্প পড়েছিলাম। যে দুইটি চরিত্র নিয়ে এই বইটার কাহিনী এগিয়ে গেছে, আসিফ এবং ইরফান, এই দুজনকে নিয়েও একাধিক গল্প পড়া হয়েছিল। এই দুজনকে একসাথে দেখার ইচ্ছা ছিল অনেক দিনের। তবে এই দুজনের প্রথম মেলবন্ধন যে এই বিশাল প্রেক্ষাপটের উপন্যাসে হবে তা ধারণাতেও ছিল না।
বইটি পড়তে বসলেই পাঠক বুঝতে পারবেন, এই বইটি লেখার জন্য ছেলেটাকে কি পরিমাণ খাটতে হয়েছে। হাজার বছরের ইতিহাসকে এক সুতোয় গাঁথা তো আর সহজ ব্যাপার নয়। তাও আবার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেসবকে যৌক্তিক ভাবে উপস্থাপন করা- সহজ কাজ নয় মোটেও।
তবে দুয়েকটা বিষয়ে আমার ছোটখাটো খটকা আছে। ডক্টর খান, যিনি কেমিস্ট্রির একজন প্রসিদ্ধ গবেষক, মেসন এবং মিথরাজের মত গোপন বিষয় নিয়ে এত কিছু জানলেন কিভা���ে? তারচেয়েও বড় কথা হচ্ছে, ডক্টর খান যেখানে ১৫ বছর গবেষণা করার পর এইটুকু জানতে পেরেছেন, সেখানে মাত্র অল্প কয়েকদিনে ইরফান এতকিছু জানল কিভাবে, যেখানে পৃথিবীর খুব বেশি মানুষ এসব নিয়ে জানে না। এটা কি একটা অসংজ্ঞতি নয়?
সব কথার শেষ কথা, বইটা পড়ে আমি মুগ্ধ। প্রথম মৌলিক থ্রিলার হিসেবে কেপি যথেষ্ট ভাল কাজ দেখিয়েছে। দোয়া করি, সামনে যেন এরচেয়েও ভাল কাজ পাই। :)
ধর্ম আর ক্ষমতার রাজনীতি বুঝুন। কীভাবে তার নিয়ন্ত্রণের হাতবদল হয়, সেটা বোঝার জন্য প্রচুর পড়াশোনা করুন। বেশ কিছু কনস্পিরেসি থিওরি ঝেড়ে-মুছে বের করুন, যেগুলো উপরোক্ত জিনিস নিয়ে আপনার পড়াশোনার সঙ্গে ফিট করা যায়। কিছু রুটিন চরিত্র তৈরি করুন যারা এক-একটা স্টিরিওটাইপের পক্ষে মানানসই। ঘণ্টায় একশো চল্লিশ কিমি গতিতে পুরো ব্যাপারটা চালিয়ে দিন। কাজটা সহজ নয়। আমি-আপনি এইসব করতে গেলে ফেল করব। কিশোর পাশা ইমন পাশ করেছেন। আপনি কি তার রিপোর্ট-কার্ড দেখতে চান? পড়ে দেখতে পারেন। সময়টা নেহাত খারাপ কাটবে না। ব্যস, এটুকুই।
গুপ্ত সংঘের কচকচানি আরেকটু কম থাকলে বইটা আর উপভোগ্য হত, পড়তে পড়তে একটা সময় মনে হইসে ইতিহাস পরতেসি,লেখক বেশ পরিশ্রম করসে সন্দেহ নাই তবে Dan Brown এর ছায়া থেকে মুক্ত হতে পারলে সামনে আর ভাল ভাল বই পাওয়া যাবে তার কাছ থেকে......
তানভীল জালাল, একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা বাংলাদেশী কেমিস্ট। ছেলের অসুস্থতাজনিত কারণে হার্ভাডের চাকরী ছেড়ে এসে বাংলাদেশে বসবাস করা শুরু করেন। গাজীপুরে বাসা নিয়ে স্থাপন করেন নিজস্ব ল্যাব। এই বিজ্ঞানী হঠাৎ করে খুন হন নিজস্ব ল্যাবে, যেখানকার নিরাপত্তা কিনা নিশ্ছিদ্র। রহস্য সমাধানের দায়িত্ব পড়ে এসে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের আসিফের কাছে। এদিকে ঢাকা শহরের অন্যান্য জায়গায় এক রহস্যজনক লোক খুন করতে থাকে বিভিন্ন নারী ও পুরুষকে। খুনের ধরন অবাক করা। মৃতদের গলায় পাওয়া যায় দাতের দাগ। এই কেস আবার দেয়া হয় আরেক অফিসার রেজাকে। আমেরিকান নাগরিক হবার সুবাদে তানভীর জালালের কেসে এফবিআই এসে নাক গলায় আর তারা আসিফকে বাদ দিয়ে রেজাকে নেয়। রেজার কেস এসে পড়ে আসিফের কাছে। এ পর্যন্ত সব বেশ সাধারণই ছিল। এরপরে গল্প যত ভিতরে যেতে থাকে হুরমুর করে সব পরিবর্তন হয়ে যেতে থাকে। দৃশ্যপটে চলে আসে দুর্দান্ত এক ক্রিমিনাল ইরফান। ইরফানের বোনকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায় অদৃশ্য এক সংগঠন। কি চায় এই সংগঠন? সেগুলা পড়তে গেলে পুরা বইটা পড়া লাগবে।
বাংলাদেশি একজন লেখকের কাছে থেকে এত বড় আর প্যাচালো উপন্যাস আশা করিনি। লেখকের পড়া প্রথম বই এটা। উপন্যাসটা প্রাচীন ইতিহাসের সাথে করে আধুনিক বিজ্ঞানের একটা চমৎকার মিশেল। যদিও মাঝে ইতিহাসের লেসনটা বেশী হয়ে গেলেও আমার কাছে খুব একটা খারাপ লাগেনি। কিন্তু অনেকেরই এতটা পড়তে হয়ত বিরক্ত লাগতে পারে। আর লেখকের খুঁটিনাটি দিকে অনেক বেশীই নজর। এ ব্যাপারটা অনেকটা পশ্চিমের লেখকের সাথে মিল পাওয়া যায়। আরেকটা জিনিস হল এ বইটা ড্যান ব্রাউনের ধাচে লেখা বলে আমার মনে হয়েছে। প্লট আর গল্পের ধারা অমনই লাগল। প্রথম পড়া উপন্যাস হিসেবে বলা যায় আমি ভালই লেগেছে। লেখকের বাকি উপন্যাসগুলার দিকেও হাত দিতে হবে বলেই মনে হচ্ছে।
সুন্দর প্লট। তবে অনেক ইতিহাসের সমাহার, একটু হিজিবিজিই লেগেছে। শুরুতে যে 'আলকেমি' নিয়ে ভেতরে ঢোকা, সেই আলকেমির কোনো সার্থকতা পেলাম না, এটা ছাড়াও অন্যকিছু দিয়ে গুপ্তসংঘের কথা আনা যেতো। ভ্যাম্প বয়কে না আনলেও চলত। ড্যান ব্রাউনের ছাপ সবজায়গায়। স্পেশালি- ডক্টর খান, ডিটেক্টিভ, জিয়া, মি. সালেহিন ও ফরহাদ যখন ডক্টর খানের বাসায় মেইন মিলের পরে ডেজার্ট খায়, ফরহাদ কিছুক্ষণের জন্য সরে যায়। "দ্য দা ভিঞ্চি কোড"-এর কথা মনে পড়ে যায়। লেখায় নবীনত্বের ছাপ প্রবল। আশা রাখি পরবর্তী মৌলিক উপন্যাসসমূহে তা থেকে বেরিয়ে আসবেন। শুভকামনা। কিশোর পাশা ইমনের ছোটগল্প ও অন্যান্য লেখা পড়েছি অনলাইনে, এমনিতে তিনি চমৎকার লিখেন।
দারুণ কাজ বলতেই হবে! পড়তে যেয়েই বুঝতে পেরেছি কিশোর পাশা ইমনকে নিঃসন্দেহে প্রচুর খাটতে হয়েছে। ফ্রি মেসন, ইলুমিনাতি, মিথরাস সহ গুপ্তসংগঠন গুলোর প্রাচীন ইতিহাস সহ এদের প্রভাব কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তা কল্পনাতীত।
পড়তে যেয়ে মাঝেমধ্যেই সন্দেহ নিয়ে গুগল করতে হয়েছে। এর আগে এসব নিয়ে ভাসা ভাসা জ্ঞান ছিল। কিন্তু এবার অনেকটাই হানতে পারলাম।
হোমিসাইড ডিটেক্টিভ আসিফকে ঠিকঠাক মনে হয়েছে। প্রফেসর খান কেও নিজের জায়গায় পারফেক্ট মনে হয়েছে। তবে ভালো লেগেছে ইরফানকে। জিয়া মোটামুটি। কিন্তু শেষ পরিণতি খারাপ লেগেছে। যদিও কাহিনীর সাথে মিলালে তেমন কিছুই না (!)
লেখক জ্ঞান জাহির করছেন, পড়তে যেয়ে এমনটা মনে হওয়া অমূলক কিছু না। কিন্তু এসব ব্যাপারে আগ্রহ থাকায় বিরক্ত লাগেনি। মোদ্দাকথা, বেশ টানটান উত্তেজনার সাথে জ্ঞান সমৃদ্ধ করাটা বেশ উপভোগ করেছি।
পড়া শেষ! এখন আমার অনেক কাজ! বহু কিছু খতিয়ে দেখতে হবে কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যা। যেহেতু লেখক ভূমিকায় নিজেই বলেছেন এই বইয়ের ৮০ ভাগ তথ্যই সত্যি তার সাথে ২০ ভাগ কল্পিত! শুরুতে আর মাঝের দিকে যদিও বর্ণনা একটু বেশি তবে তা গল্পেরই প্রয়োজনে এবং উপাদেয়, অযথা বাজে গল্প নয়। দুর্দান্ত লেগেছে পড়তে। সেই সাথে বারবার মনে হচ্ছিলো এই গল্প নিয়ে কোনো ওটিটি প্লাটফর্মে ৮-১০ পর্বের একটা সিরিজ হলে বেশ হতো! একমাত্র বিরক্তির জায়গা ছিলো ভুলভাল বানান যেটা এতো সুন্দর প্লটের উপন্যাসের সাথে কোনোভাবেই যায় না! নইলে রেটিং ৫/৫ দিয়া যেতো!
নিজের ল্যাবে খুন হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন রসায়নবিদ তানভীর জালাল। তার খুনের কেসে ডাক পড়ল উদেয়মান একই সাথে খ্যাতিমান হোমিসাইড ডিটেকটিভ আসিফ। যদিও কেসটা তাদের হাতে আসার কথা ছিল না কিন্তু সেনা বাহিনীর চীফ অফ স্টাফের অনুরোধে তাকে কেসের দায়িত্ব নিত হয়। প্রথম দৃষ্টিতে এটা লক রুম মিস্ট্রি কিংবা হু ডান ইট টাইপের মিস্ট্রি থ্রিলার মনে হলেও পরতে পরতে চমক আসতে থাকে। তানভীর জালাল খুন হবার দিনই লাপাত্তা হয়ে যায় তার একমাত্র ছেলে বিজয়। ধারনা করা হয় তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে��� কিন্তু কিডন্যাপার কোন এমাউন্ট দাবি করেনি। খটকা লাগে আসিফের। খটকা লাগাটা সন্দেহে পরিনত হল যখন দেখল বিজয়কে কিডন্যাপ করেছে অপরাধ জগতের সামনের সারির এক সন্ত্রাসী ফান্টম এরফান।
একই সময়ে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতন আমেরিকা সরকার এফবি এই পাঠিয়ে দেয় তদন্দের কাজে। কিন্তু এফবিআই এসেই কেস থেকে সরিয়ে দেয় আসিফকে। সন্দেহ হয় আসিফের। যদিও তার হাত পা বাধা। তাকে দেওয়া হয় ভ্যাম্পেয়ারের কেস। ভাগ্যের ফেরে সেই কেস অভার ল্যাপ করে তানভীর জালালের কেসের সাথে। পুনরায় বাগড়া দেয় এফবিআই। আউটল ঘোষণা করা হয় তাকে। সুট টু কিল হুলিয়া জারি হয় তার আর তার সহকারী জিয়ার নামে। যেন তারা কোন মহা শক্তিধর কারো লেজে পাড়া দিয়েছে। তদন্ত এগোতে থাকে আর আস্তে আস্তে উন্মাচিত হতে থাকে বাংলাদেশকে নিয়ে হাজার বছর ধরে জড়িয়ে থাকা এক গোপন সংস্থার কনস্পিরেসি। সামান্য লোকবল আর রিসোর্স নিয়ে এত বিপদের মাঝেও কি আসিফ পারবে দেশকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে? নাকি খুন হয়ে যাবে দিনে দুপুরে?
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ প্রচুর প্রচুর তথ্যে ঠাসা বই। কিছু পর পরই বই এ লেকচার ক্লাসের মতন সব তথ্য দেওয়া হয়েছে উদার হস্তে। বোঝায় যাচ্ছে কি পরিমান খাটতে হইছে। মাশুদুল হক এর পর অনেক দিন পর অন্য কোন লেখকের বই এ এত তথ্যের সমাবেশ দেখলাম।
লেখকের প্রথম মৌলিক হিসেবে বইটাকে চার রেটিং দেয়াই যায়। বইটা পড়ে একজনকে বলেছিলাম, কেপির লিখনশৈলী রুক্ষ সুন্দর। অর্থ্যাৎ লেখনিতে যত্নের অভাব খানিকটা লক্ষনীয় কিন্তু পড়ে ভালো লেগেছে আমার। লেখকের প্রথম বই হিসেবে আরেকটা দোষ পাওয়া যায়, ইনফো ডাম্পিং। লেখকরা অনেক পড়াশোনা করে বই লিখলে, পাঠকের উপরে সেটা চাপিয়ে দিতে চায়। এই বইটায় সেটা প্রকাশ্য। তবে কেপি তার পরের বইগুলোতে এই দোষ কাটিয়ে উঠেছেন।
সিক্রেট অর্গানাইজেশন, খুনের তদন্ত, বেশ বড়সড় জায়গা জুড়ে ষড়যন্ত্র, খানিকটা কেপিয় একশন, ইরফানের আকর্ষণীয় উপস্থিতি, থ্রিল মিলিয়ে বইটা বেশ উপভোগ করেছি, তবে ইনফো ডাম্পিংয়ের কারণে যেই বিরক্তি এসেছিল কিছু জায়গায়, সেটা লুকালাম না।
লেখকের প্রথম বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। রেকমেন্ডেড।
ইন্সপেক্টর আসিফ কে আমার একদমই নিজেকে জাহির করা, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী একটা মানুষ বলে মনে হলো। আচ্ছা, ইহুদীরা কি বাবার দিক থেকে ধর্ম পায়? আমার জানা মতে মা ইহুদি হলে তার ছেলে মেয়েও ইহুদি হয়।তাহলে বাতশিভার মা বাংলাদেশি হলে সে কিভাবে ইহুদি হলো? এটা আমার জানার ভুলও হতে পারে অবশ্য!
উত্তেজনা ছিল কিন্তু ডিটেক্টিভের পাক নামির জন্য তা মাঠে মারা গেল।
বইটা পড়ে লেখককে ড্যান ব্রাউনের ফ্যানবয় মনে হলো। প্রচুর লেকচার আছে পুরো বই জুড়ে, বিষয়টা বেশিরভাগ সময় বোরিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। লেখকের প্রথম মৌলিক বই হিসেবে ভাবলে হয়ত দুর্বলতাগুলো কিছুটা ইগনোর করা যেতে পারে। অনেক দিন পর ক্লাসিকের বাইরে একটা বাংলা বই পড়া হলো। প্রুফরিডিং দেখে হতাশ হওয়া থেকে নিজেকে আটকাতে পারলাম না।
ওই কি আর, কয়েকটা ড্যান ব্রাউন পড়ে শয়তান, ধর্ম, কন্সপাইরেসি থিওরি, ইতিহাস- সব মিশিয়ে দিলাম ঘুঁটা। তবে তার ওপর লেখক নিজের ক্রিয়েটিভিটির মাল-মশলা দিয়েছেন। উপন্যাস গতিময়, সাসপেন্স আর টুইস্টে ভরপুর। পড়তে উপভোগ করেছি। কিন্তু ওই এলকেমির মত ফ্যান্টাসির জন্য বেশি গাঁজাখুরি লেগেছে।
প্রথমদিকে খুব ইন্টারেস্ট নিয়েই পড়া শুরু করি লেখক এর বইটি। কিন্তু মাঝপথে এসে সেই ইন্টারেস্ট হারিয়ে ফেলি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অধ্যায়ের শেষে এসে লেখক ইন্টারেস্ট ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে আমি মনে করছি। ভ্যাম্পবয়ের চরিত্রটিকে অহেতুক বলে মনে হয়েছে। শেষের কতগুলো অধ্যায়ে যেয়ে আবার আগের ইন্টারেস্ট ফিরে পেয়েছিলাম যদিও.... যাইহোক লেখকের পড়া এটিই আমার প্রথম বই। পার্সোনাল রেটিং ৩.৫ । ৪ দিতে পারলাম না 😐
শেষের কিছু অংশ ছাড়া আগা-গোড়া বিরক্তিকর এবং ভুলে ভরা একটা বই।অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ঠাসা,পড়তে গেলে মনে হয়েছে হয় ফ্রি-মেসনের উপরে পিএইচডি ডিগ্রী করছি বা লেখক নিজের জ্ঞান জাহির করার ধান্ধায় নেমেছেন।টেনে হিঁচড়ে কাহিনী বড় করা হয়েছে।পুরোপুরি ফালতু বলা যাচ্ছেনা,ফালতু থেকে এক রেটিং উপরে রাখা যায়।
পজিটিভ দিক- যদিও আগেই বলেছি অপ্রয়োজনীয় তথ্যে ঠাসা,তবুও বইয়ের একমাত্র পজিটিভ দিক এটাই।আপনি যদি জানতে চান,জানার প্রতি আগ্রহী হন,তাহলে বইটা আপনার জন্য ভালো একখানা সোর্স।বুঝাই যাচ্ছে এইসবের জন্য লেখককে প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়েছে,এজন্য উনাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।বেশকিছু নতুন জিনিস জেনেছি।
নেগেটিভ দিক- প্রচুর পরিমাণ তথ্যই এই বইয়ের অন্যতম নেগেটিভ দিক।অযথা অনেক তথ্য ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে,পড়তে পড়তে বিরক্তি এসে গেছে,খেতে না পারলে মানুষ যেমন গিলে ফেলে,এটাকেও আমার গিলে ফেলতে হয়েছে,এখনো উগড়াইনি।
ভুলের আধার বলা যায়।এতগুলো ভুল নোট করেছি,বুঝতেছিনা এতগুলো লেখব কীভাবে,তাই অল্প কয়েকটা দিয়েই কাজ চালাই--
পৃষ্ঠা-১৮ তোফায়েল আসিফকে বলছে, ‘সম্ভবত পয়জন,স্যার।তবে পয়জনটা মুখ দিয়ে প্রবেশ করেনি। সমস্যা হলো পরে আসিফ ডানা বাতশিভাকে প্রধানতম সাসপেক্ট করে সে তানভীর জালালের রাঁধুনী বলে!! পৃষ্টা ২০ এ আসিফের ভাবনা থেকেই বুঝা যেতে পারে মুখ দিয়ে বিষ প্রবেশের ধারণার কথা-- ‘’দ্বিতীয় সমস্যা ,প্রফেসর খুব সম্ভবত বিষ প্রয়োগে নিহত হয়েছেন।এটুকু জানা গেছে,জানা যায়নি বিষ।টা তার শরীরে কিভাবে ঢুকলো।কয়েকভাবেই সেটা করা যেতে পারে।রাতের কিংবা দুপুরের খাবারের সময় কিংবা প্রফেসরের দৈনন্দিন কোন মেডিকেশন নেয়ার অভ্যাস বা প্রয়োজন থাকলে সেই ছুতোতেও খাইয়ে দেওয়া সম্ভব।‘ তোফায়েল যখন আগেই বলে দিয়েছে মুখ দিয়ে বিষ প্রবেশ করেনি তখন আসিফ কেন এই কথা ভাবলো বুঝিনি।আমার বুঝার সমস্যা নাকি আসিফের মেমোরি লস??
পেইজ ৭৪- ‘আব্রাহাম লিংকন-যাকে আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতা বলা চলে-............ ফ্যাক্ট-আমেরিকা স্বাধীনতা-প্রাপ্ত হয় ৪ জুলাই,১৭৭৬।আব্রাহাম লিংকনের জন্ম-১৮০৯ সাল। একই পেইজে,আব্রাহাম লিংকনকে বলা হয়েছে আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট,তাও একবার না,দুই দুই বার।যদিও আমরা জানি আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট-জর্জ ওয়াশিংটন।
মাঝখানের ভুলগুলো নিয়ে আর লেখছিনা,রচনা হয়ে যাবে।আমরা চলে যাই শেষের দিকে-
পেইজ ৩৩০- ‘মৃত অসপেক্স আর ধৃত রিয়াজুল করিমের ব্যাপারে সাথে সাথে ইজরায়েলের সাথে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ।�� এরপর নিচেই আবার বলেছেন-- ‘ইজরায়েলের সাথে যেহেতু বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগ করার সম্ভাবনা নেই.........’ যদ্দুর জানি ইজরায়েলের সাথে বাংলাদেশের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।লেখক যে সেটা জানেন সেটা ২য় কোটেশনেই বুঝা যায়।তারপরও কেন তিনি ১ম কোটেশনে যোগাযোগের কথা আনলেন বুঝলাম না।
বইটার ৬৬ নং অধ্যায়টা চলেছে খুবই তাড়াহুড়োয়,যেন ম্যাজিকের মত ধাম ধাম করে সব কাজ হয়ে গেল!!
সবচেয়ে বিরক্তিকর চরিত্র হলো-সৈকত।ভ্যাম্পায়ার হওয়ার জন্য প্রয়োজন এমন সব রোগই তারে ধরল??ব্যাপারটা খুব বেশি কাকতালীয় হয়ে গেলনা??
আর কিছু বললাম না,ব্যক্তিগত অভিমত দিলাম,কারো ভালো লাগতে পারে কারো নাও লাগতে পারে।আশা করি লেখকের সামনের লেখাগুলো আরো ভালো হবে
কিশোর পাশা ইমন ভাইয়ার অনলাইনে ছড়িয়ে থাকা ছোট থ্রিলার গল্পগুলো অনেক আগে পড়লেও এই প্রথম। এখানে লেখক ফ্রি মেসন সহ অনেক গুপ্ত সংগঠন ও মিথের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন। সেক্ষেত্রে মিথস্ক্রিয়া নামটি যথাযথ।
খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. তানভীর আহমেদ জালাল গাজীপুরে তাঁর নিজ বাড়িতে খুন হন। একই সময়ে নিখোঁজ হয়ে যায় তার একমাত্র ছেলে বিজয় আহমেদ। বিজ্ঞানী তানভীর জালাল শুধু বাংলাদেশ নন, আমেরিকাতেও সমান ভাবে পরিচিত, তাই উপরমহল থেকে এ খুনের দ্রুত সমাধানের চাপ আসে। তাঁর খুনের রহস্য সমাধান করতে ডাক পড়ে হোমিসাইডের ডিটেক্টিভ আসিফ আহমেদ ও তার দলের। ঠিক একই সময়ে শহরের অপর প্রান্তে আবির্ভাব ঘটে এক ভ্যাম্পায়ার খুনীর। শহরে আরও দুটি খুন হয়। সেই দুটি খুনের কেস সমাধানের দায়িত্ব পড়ে আসিফের প্রতিদ্বন্দ্বী, পরশ্রীকাতর ডিটেকটিভ রেজার কাঁধে। ঘটনা প্রবাহ রসায়ন থেকে অ্যালকেমি, খ্রিস্টের জন্মের চার হাজার বছর আগ থেকে বর্তমান, ফ্রী মেসন ইত্যাদি একের পর এক রহস্য বেরিয়ে আসে। হঠাৎ করেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। প্রফেসর তানভীর জালালের কেস থেকে আসিফকে সরিয়ে তদন্তের ভার নিল এফবিআই। তারা বেছে নেয় রেজাকে। অন্যদিকে আসিফকে দেয়া হয় ভ্যাম্পায়ার কেসের দায়িত্ব। প্রধান সাসপেক্টকে হাতের নাগালে পেয়েও কেসটার মিমাংসা করা যায় না। কিন্তু আসিফ যখন দেখল দু’টো কেসই একটি অপরটির সাথে সম্পর্কযুক্ত, তখনই সত্যটা তার সামনে পরিষ্কার হতে লাগল। কিন্তু তখনি কোনো এক অদৃশ্য বলে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল আসিফ ও তার সহকারী জিয়ার উপর।সাথে তাদের নামে হুলিয়া জারি করা হয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা কুখ্যাত এক কিডন্যাপাররের সাথে কেসটার তদন্তে নামে আসিফ। বাংলাদেশের এক স্পর্শকাতর জায়গায় মেসনদের লজ আবিষ্কার করে তারা। শেষ পর্যন্ত কি হয়? কে খুন করে বিজ্ঞানীকে? কেন? অন্যদুটি খুনও কেন হয়? খুনের সাথে কিডন্যাপের কি সম্পর্ক? তাছাড়া আরো যত রহস্য আছে ফ্রী মেসন, অ্যালকেমি ইত্যাদি এগুলোরই বা কি সম্পর্ক এই খুনগুলোর সাথে? সবগুলো ঘটনাই কি আলাদা আলাদা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, নাকি একই সূত্রে গাঁথা?
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ বইটা পড়ে বেশ কয়েকটি শব্দের সাথে আমাকে নতুন করে পরিচিত হতে হয়েছি। সেগুলো সম্পর্কে জেনেছি। মূলত ফ্রী মেসন শব্দটার সাথে আমি আগে কখনওই পরিচিত ছিলাম না। এটা পড়ে ফ্রী মেসনদের এবং আরো কয়েকটি গুপ্ত সংঘের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পায়। বিষয়গুলো সম্পর্কে আমি ইন্টারনেটেও সার্চ দিয়ে দেখি। সেখানেও এগুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে লেখা আছে। ইন্টারনেটে আরেকটি জিনিস চোখে পরে, আমাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও নাকি ফ্রী মেসনের সদস্য ছিলেন! সে যাহোক বইটা লেখার সময় লেখক প্রচুর পড়াশুনা করেছেন, প্রচুর শ্রম দিয়েছেন এই বইয়ের পেছনে তা বইটা পড়লেই বোঝা যায়। আর বইয়ের প্রচ্ছদটা কাহিনীর সাথে যথোপযুক্ত। নিঃসন্দেহে কাহিনীর সাথে মিল রেখেই প্রচ্ছদ করা হয়েছে। বইয়ের প্রচ্ছদ দেখলেই কাহিনী সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা পাওয়া যায়।
কন্সপিরেসি থ্রিলার জনরার এই উপন্যাসটি লেখকের প্রথম মৌলিক উপন্যাস। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফ্রি মেসনকে নিয়ে এসে লেখা কাহিনী প্রথমে 'ভেন্ট্রিলোকুইস্ট' এর মতো মনে হলেও (যেখানে লেখকের কাছ থেকে 'মতো' টা আশা করাই যায় না) মিথষ্ক্রিয়া পরে ধারণা পালটে দিয়েছে বহু বহুগুণে। ইলুমিনাতি একটা ওপেন সিক্রেট, পেছনে থাকা ফ্রি মেসনও। কিন্তু মিথরাস? এমনকি কিং সলোমনের সময় থেকে চর্চিত এই গুপ্তসঙ্ঘ নিয়ে লেখেননি ড্যান ব্রাউনের মতো বাকি লেখকরাও! 'নোভাস অর্ডো সেকলোরাম' বা নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে দাজ্জালের আগমনের উপযোগী বিশ্ব গড়ে তুলছে বহু নামে চেনা যে সংগঠনটি, ইতিহাসের প্রতিটা পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করার তাগিদে বাংলাদেশেও যে তাদের পা পড়বে না এমনটা ভাবা যায় না। নিহত প্রফেসর তানভীর জালাল কেন নিজেকে 'আলকেমিস্ট' পরিচয় দিতেন? ঢাকায় চাঞ্চল্যকর ভ্যাম্পায়াররূপী খুনীর সাথেই বা তার সংযোগ কী?
প্রাচীন গুপ্তসঙ্ঘের ইতিহাসে বাংলাদেশকে যুক্ত করার চেষ্টাটা আমার কাছে মোটেই 'ভেন্ট্রিলোকুইস্ট'এর মতো বেখাপ্পা লাগেনি, বরং বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়েছে, খোদ বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক পরিবর্তনে আসলেই হাত ছিল ফ্রি মেসনদের! কিশোর পাশা ইমনের উপন্যাসগুলোর মাঝে এই প্রথম তরুণ বা ছাত্রের বাইরে একজন প্রটাগনিস্ট পেলাম, হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের আসিফ। জিয়া, প্রফেসর রিয়াজ, বেপরোয়া কিডন্যাপার ইরফান (যে বর্তমান প্রজেক্টের সুতো ধরে ফ্রি মেসনদের সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান রাখে), ভ্যাম্পায়ার সৈকতদের টিমের রসায়ন আমার বেশ ভালো লেগেছে, প্রতিটা দরকারে টুকিটাকি রোলগুলো প্লে করেছে সবাই মিলে। লেখকের একশন ডিজাইন বরাবরই ভালো, সঙ্ঘাতের সময়কার বর্ণনা খটকা লাগায় না বা উত্তেজনা কমায় না কখনোই। আর কাহিনীর শিফটিং খুবই স্মুদ, পড়তে ক্লান্তি লাগে না, ঝুলেও যায় না কোথাও।
হিস্টোরিকাল আর কন্সপিরেসি থ্রিলার যেমনটা হয় সাধারণত, কাহিনীর খোসা ছাড়ানোর লেকচারে পার হয়ে যায় লম্বা সময়। একদমই না জানা তথ্যের চমক পাঠককে আটকে রাখে সে জায়গাটায়। থ্রিলার সচরাচর ওয়ান টাইম রিডই, দিতীয়বার 'মিথষ্ক্রিয়া' আমি পড়বো না। দিনশেষে প্লটটাও যে পুরো হাইপোথিসই, এর বাইরে পাঠক কিছু ভাববে না। থ্রিলার হয়েও পাঠককে সমূলে নাড়াতে পারে কম লেখাই, লেখকের তৃতীয় মৌলিক 'যে হীরকখন্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল'এ পাঠক তার পরিচয় পাবেন।
শেষ কথা। পরের দুই মৌলিকের শেষে এসে সিকুয়েলের জন্য ক্ষুধা জাগিয়ে গেছেন লেখক। কিন্তু 'মিথষ্ক্রিয়া'র সিকুয়েলের প্রয়োজনটা কাহিনী শেষে দেখা যায় নি। একমাত্র আসিফ-ইরফানকে নতুন গল্পে দেখতে চাওয়া ছাড়া।
ভালো লেগেছে। ইলুমিনাতি, মেসন এদেরকে একেবারে বাংলাদেশে এনে ফেলাটা ভালোই লেগেছে। শেষটা চমতকার ছিলো। শেষে যে এমন কিছুই হবে তা আগে থেকে আন্দাজ করলেও লেখক যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন এতোটাও কল্পনা করিনি।
একটানা পড়ে যাওয়ার মতো উৎসাহ কেন জানি পাইনি।ঘটনাগুলো কেমন যেন অসংলগ্ন মনে হয়েছে।গল্পের বুনন ও গাঁথুনি এর চেয়ে ভালো হলেও পারতো।অনেক তথ্যবহুল।শেষটাতে এসে ভালোই লেগেছে।
বইঃ মিথষ্ক্রিয়া লেখকঃ কিশোর পাশা ইমন জনরাঃ থ্রিলার পৃষ্ঠাঃ ৩৫১ প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি' ১৬ প্রকাশনীঃ বাতিঘর। ... প্রথমে ধন্যবাদ দিচ্ছি কেপি ভাইকে এতো তথ্যবহুল একটা বই উপহার দেওয়ার জন্য। অসাধারণ কাজ দেখিয়েছেন লেখক। বলতেই হবে। তাছাড়া, বাংলাদেশে তরুণ লেখকদের মধ্যে আর কেউ এতটা তথ্যবহুল থ্রিলার বই প্রকাশ করেছেন কিনা আমার জনা নেই।
সার-সংক্ষেপঃ নিজ বাসায় খুন হলেন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিজ্ঞানী তানভীর জালাল। তার মৃত্যুতে শুধু বাংলাদেশ নয়, খোদ আমেরিকাও নড়ে চড়ে বসলো। সারা বিশ্বেই আলোড়ন সৃষ্টি হলো এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুতে। সেনাবাহিনীর চীপ অব স্টাফের নির্দেশে খুনটি তদন্তের দায়িত্ব পেল হোমিসাইডের ডিটেকটিভ আসিফ এবং তার সহকারী জিয়া। যদিও কেসটি তাদের হাতে আসার কথা ছিলোনা। কিন্তু সেনাবাহিনীর চীপ অব স্টাফের নির্দেশ তো আর অমান্য করা যায়না। তদন্তে নামার দেড় দিনের মাথায় তাকে সরিয়ে ডিপার্টমেন্টের আরেক ডিটেকটিভ-কে নিয়োগ দেয় সদ্য আমেরিকা থেকে আসা দুই এফবিআই এর সদস্য। এদিকে আসিফ-কে দেওয়া হয় ডিটেকটিভ রেজার মার্ডার কেসের দ্বায়িত্ব। কিন্তু দেড় দিনের তদন্তে তুখোড় ডিটেকটিভ আসিফ ও তার সহকারী রেজা অনেক তথ্যই জেগাড় করে ফেলেন। একই সাথে লক্ষ্য করেন বিজ্ঞানী তানভীর জালালের মৃত্যুর পর থেকে তার একমাত্র ছেলে বিজয় নিখোজ! ডিটেকটিভ আসিফের পাওয়া তথ্যে অনুসারে খুনের জন্য প্রথমেই সন্দেহ করা হল বিজ্ঞানীর আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী বিজ্ঞানী ডক্টর খানকে। কিন্তু ডক্টর খানের সাথে কথা বলেই আসিফ জানতে পারল বিজ্ঞানী তানভীর জালালের আরেক অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকের কথা, এবং এক গুপ্ত সংঘের কথা যার শেকড় হাজার বছর আগের!
ডিটেকটিভ আসিফ-কে যখন তানভীর জালালের কেস থেকে সরিয়ে ডিটেকটিভ রেজার মার্ডার কেসের দায়িত্ব দেয়া হলো তখন সেই কেস নিয়ে ঘাঁটতে গিয়ে দেখে তার নতুন কেসটির ক্রস কানেকশন ঘটল ডক্টর তানভীর জালালের কেসটির সাথে। নিয়তির খেইল! দৃশ্যপটে আবারও আগমন ঘটল আসিফের। কিন্তু সেটা ভাল চোখে দেখল না কেউই। যে চীপ অফ স্টাফের নির্দেশে আসিফ প্রথমে এই কেসের দায়িত্ব পেয়েছিল, তার নির্দেশেই অসিফকে রোগ এজেন্ট ঘোষণা করা হল।
কিন্তু ততদিনে আসিফ অনেক তথ্যই জোগাড় করে ফেলেছে তানভীর জালালের মৃত্যুর। এবং এর পেছনে কার কিংবা কাদের হাত আছে। আরেকটু এগিয়ে বললে কোন সংঘের হাত আছে! আর সেজন্যই এখান থেকে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। তাই মনে মনে অঙ্গিকারবদ্ধ হলো যেভাবেই হোক বাংলাদেশকে এই 'গুপ্ত সংঘ' থেকে রুখবেই। কিন্তু কি সেই গুপ্ত সংঘ এবং কিভাবে রুখবে ?
"মিথস্ক্রিয়া" এই শব্দটির অর্থ "পারস্পরিক ক্রিয়া" বা "অন্ত ক্রিয়া" অর্থাৎ দুটি বা একাধিক কার্যকলাপ যখন একই উদ্দেশ্য সাধন বা বৃহত্তর কোনো স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে করা হয় তাই "মিথস্ক্রিয়া"
⚜️এক বিখ্যাত জনৈক প্রফেসর এর দেহ যখন তার নিজের ল্যাব এই পাওয়া যায়, সু সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি হাওয়ায় তার তদন্তের ভার এসে পড়ে, ডিটেকটিভ আসিফ আহমেদ এর ওপর। তদন্তে নেমে দেখা যায়, তার ছেলে "বিজয়" কে কিডন্যাপ করেছে দেশে একপ্রকার মিথ বোনে যাওয়া কিডন্যাপ "ইরফান" ওরফে ফ্যান্টম। খুন হওয়ার প্রত্যেকের সাথে "ও. টো" বলে একটি সংগঠনের কিসের এত ঘনিষ্ঠতা? একই সময়ের কোনো এক আততায়ীর হাতে খুন হল ,এক ১৬ বছরে তরুণী ও এক টিচার , স্বাভাবিক ভাবেই এই খুনের তদন্তের দায়িত্ব এসে পরে একই ডিপার্টমেন্ট এর আর এক অফিসার ডিটেকটিভ রেজার ওপর । এই দুই ঘটনা কি পৃথক ঘটনা ? নাকি একি সূত্রে গেথে আছে দুটি? নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও অনেক ঘটনা ও তার পূর্ববর্তী সুবিশাল একটা ইতিহাস ও তার ওপর নির্ভর করে আছে বিশাল এক কর্মকাণ্ড ? তদন্তের ব্যাপার কেন হঠাৎ এফবিআই এজেন্ট পাঠালো, বাংলাদেশের মত একটা ছোট্ট দেশে যেখানে এরকম ঘটনা "চাঞ্চল্য" সৃষ্টি করলেও অনভিপ্রেত নয় এই রহস্যের গভীরতা ঠিক কতটা? যার তল খুঁজে পেলে পাল্টে যাবে গোটা দেশের ভবিষ্যত্ ।
⚜️ পাঠ প্রতিক্রিয়া --- সুবিশাল এই উপন্যাস এর মূল বিষয় বস্তু শুধু "খুন" নয় তার থেকেও অনেক বড় ঘটনা যা একটা গোটা দেশের ভবিষ্যত্ বদলে দিতে পারে। "খুন" একটা সামান্য অনুঘটক এর কাজ করেছে গোটা উপন্যাসে । লেখক দক্ষতায় সাথে "কিছু প্রাচীন ধর্মীয় বিশ্বাস" ও তাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নানান প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কার্য্য কপাল ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর ও নির্মম হতে পারে তার একটা সুগভীর চিত্র তুলে ধরেছেন ।।
⚜️ ৩৫২ পাতার এই উপন্যাস এ যেমন রয়েছে "ফ্রি মেশান" দের উৎপত্তির ইতিহাস ঠিক সেভাবেই রয়েছে "ইলুমিনাতি" মত সংগঠনের গুপ্ত রীতিনীতির সুগভীর আলোচনা ।। রয়েছে প্রাক " ইন্দো ইরানিয়ান" ধর্মীয় ইতিহাসের সুবিশাল আলোচনা যা সত্যি রোমাঞ্চকর । "মিথরাস" সম্পর্কে এর আগে সত্যি কোনোদিন জানতাম না।। যেভাবে সুন্দর ভাবে একটা খুনের উপন্যাসের মাধ্যমে গোটা একটা প্রান্তের ধর্মীয় বিশ্বাসের উৎপত্তির বিষয়ে আলোকপাত করেছেন তা সত্যি মনে রাখার মতো ।।
⚜️ মাল্টি ডাইমেনশনাল ইনসিডেন্টস কে যেভাবে মাল্টি ডাইমেশানাল ইনভেস্টিগেশন ও ইন্সিডেনেস এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন , এক কথায় অনবদ্য লেগেছে।।
⚜️ গল্পের চরিত্র গুলিকে অত্যন্ত বিস্তারিত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন , কি ডায়লগ হোক কিংবা মূল গল্পের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের কার্যকলাপ ।।
⚜️ বড়ো উপন্যাস হাওয়ায় গল্পের গতি প্রথম থেকেই যথেষ্ট গতিময় হলেও মাঝে এসে সত্যি কমেছে , এবং তার যে নির্দিষ্ট কারণ আছে তা স্পষ্ট ।
⚜️ উপন্যাসের ক্লাইম্যাক্স টা এক প্রকার অবর্ণনীয় , অনেক বই পড়েছি কিন্তু এটা সত্যি মনে রাখার মতো । অনবদ্য লেগেছে এক কথায়।।
✨ যে বিষয় গুলো ভালো লাগলো না - বড় উপন্যাসের ক্ষেত্রে , গতি একটা বিশাল ফ্যাক্টর , এ ক্ষেত্রে সত্যি কিছু জায়গা একটু অযথাই বেশী তথ্য দেওয়ায় হয়েছে, এতটা না দিলেও হত। "সৈকত" চরিত্রটি মানান সই লাগে নি, উপন্যাসের নেগেটিভ দিক বলতে এটাই চোখে পড়েছে। যুক্তি দিয়ে শেষে মিলিয়ে দিলেও খাপছাড়াই লাগলো।। *জিয়া* চরিত্রটির মৃত্যু হওয়া উচিত ছিল বলে আমার ব্যক্তিগত মতামত , তিনটে আঙ্গুল বাদ পড়লে কোনো মেয়ে বেঁচে যাবে এটা বাড়াবাড়ি ।। ক্লাইম্যাক্স অসাধারণ হলেও ক্লাইম্যাক্স এর এক্সপ্লেনেশান বড্ডো গোলমেলে ঠেকে��ে। তার সাথে বাংলাদেশের আন্তজার্তিক সম্পর্কের বিষয়টিও ।। এক কথায় একটু বেশিই লাগল।।
✨ কাহিনী হিসেবে দেখতে গেলে সত্যিই চমৎকার , পড়ে অনেক কিছু জানার যেমন রয়েছে , ঠিক সেভাবে রয়েছে ব্যক্তিগত পর্যালোচনার বিষয়টিও।। অনেক প্রশ্ন তুলে দেবে পাঠক দের মনে "ধর্ম" সম্পর্কে ।। "তবে যার শেষ ভালো তার সব ভালো" বলে একটা কথা আছে এই বই শ্রেষ্ঠত্বের দাবি না করলেও শ্রেষ্ঠ বলাই যায়।।
রেটিং যদি করি তাহলে 🔸গল্পের প্লট ১০ এ ৮ 🔸গল্পের কমপ্লেক্সিটি ১০ এ ৮ 🔸গল্পে ইনফর্মেশন এর ব্যবহার ১০ এ ৬ 🔸 ক্লাইম্যাক্স ১০ এ ৯.৫
হঠাত করেই খুন হয়ে যায় দেশের একজন নামকরা বিজ্ঞানী এবং কেমিস্ট তানভীর আহমেদ। খুনের ইনভেস্টিগেশন এর দায়িত্ব এসে পড়ে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট এর চৌকস ইনভেস্টিগেটর আসিফ আহমেদ এবং তার সহকারি জিয়ার ওপর। তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনাক্রমে পরিচয় হয় তানভীর আহমেদের প্রতিদ্বন্দ্বী কেমিস্ট ড. রমিজ খানের সাথে। যার আছে কেমিস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন গুপ্ত সংগঠন এর ওপর অগাধ জ্ঞান। . . রমিজ খান দাবি করে তানভীর আহমেদ শুধু একজন কেমিস্ট না বরং একজন আলকেমিস্ট! ওদিকে আনোয়ার নামের একজন শিক্ষক এবং ক্রিশ্চিনা নামের এক তরুনীর জোড়া খুনের ইনভেস্টিগেশন এর দায়িত্বও এসে পড়ে আসিফের ঘাড়ে। ঘটনাক্রমে জানা যায় এ দুজনের খুনী এমন একজন যাকে খুন করেছে একজন ভ্যাম্পায়ার! আধুনিক যুগে এসেও কি তবে ভ্যাম্পায়ার এর অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে বাধ্য হবে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট? . . আলকেমি নিয়ে গবেষনা করতে গিয়ে কি তানভীর আহমেদ সত্যিই খোদ শয়তানের সাহায্য নেয়? অথবা জড়িয়ে পড়ে গুপ্তসংগঠন ফ্রি মেসন অথবা মিথরাসের মত প্রাচীন কোনো সংগঠনের সাথে? তানভীর জালালের ছেলে বিজয়কেই বা কেন কিডন্যাপ করা হয় একটা গুপ্ত সংগঠনের দ্বারা? অথবা যদি বলি বাংলাদেশের সংসদ ভবনের নিচে আছে গুপ্ত বাড়ি যেটা একটা মেসনারি লজ? . . 'মিথস্ক্রিয়া' হলো বিভিন্ন গুপ্ত সংগঠন, মিথ, বাস্তবতা, সিম্বলিজম, প্রাচীন বিশ্বাস, নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার এর এক মিশেল। সহজ করে বললে রবার্ট ল্যাংডনের 'দ্য দা ভিঞ্চি কোড' এর মতই গুপ্ত সংগঠন নিয়ে লেখা হয়েছে বইটি! অনেক প্রাচীন বিশ্বাস, তাদের রীতি, ইলুমিনাতি, ফ্রি মেসনারি, মিথরাস এদের সম্পর্কে জানা যাবে বইটি থেকে। সাথে বেশ কিছু শ্বাসরুদ্ধকর টুইস্ট তো আছেই! . . প্রচ্ছদের কথা না বললেই নয়। বইয়ের কাহিনী তো বটেই প্রচ্ছদ টাও খুব চমৎকারভাবে মিলে গেছে বইয়ের কাহিনীর সাথে। বানান ভুল ও খুব একটা ছিলোনা। তো অপেক্ষা কিসের? শুরু করে দিন!