নতুন গাড়ি কিনে প্রথমদিন রাস্তায় নেমেই রহস্যজনক দুর্ঘটনার শিকার হলো সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেন। এটা আর নিছক কোনো সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে থাকলো না - নাটকীয়ভাবেই মোড় নিলো ঘটনাপ্রবাহ। সমস্ত রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলো ১৯৫২! হত্যা-ষড়যন্ত্র, অপরাজনীতি, সামাজিক অবক্ষয়ের বাস্তবচিত্র বেরিয়ে এলো এক এক করে। অনেকগুলো ঘটনার জটপাকানো রহস্য আর সেই রহস্যের সমাধান দিতে পারে কেবল ১৯৫২-কারণ এটি নিছক কোনো সংখ্যা নয়!
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
এই পর্যন্ত যারা পড়েছে বইটা তারা সবাই খুবই পজিটিভ রিভিউ দিয়েছে। আমি আর তাহলে নেগেটিভ কি বলব?? আসলেই বইটা ভাল লেগেছে, যদিও যে গতিতে বইটা ছুটছিল সে অনুপাতে সারপ্রাইজ দিতে পারে নাই, কারণ প্লট এর একাংশ নেক্সাস এর সাথে খানিকটা মিলে যায়(আমার মতে) তাই ঐ মূল সার্প্রাইজ টা আমাকে তেমন নাড়া দিতে পারেনাই, তবুও বলব নি:সন্দেহে বাংলাদেশ এর পরিপ্রেক্ষিতে লেখা এটা অন্যতম সেরা থ্রিলার্। গল্পের ক্যারেক্টার গুলা খুবই সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, কাউকেই অতিরিক্ত নায়োকোচিত কিছু করতে হয় নাই। গল্পের কারণে যে পার্শ্বচরিত্র গুলো আনা হয়েছে সেগুলো ও বেশ উপভোগ্য, যে যার জায়গায় ঠিক আছে। তবে গল্পের মূল নায়ক কে এই নিয়ে আমার সন্দেহ আছে, তবে দুই জনকেই ভাল লেগেছে। আর যথারিতী উনার বাকী বইগুলার মত এই বই এর নারী চরিত্র গুলাও আকর্ষনীয় ছিল :p । যদিও বই এ এদের ভূমিকা কেবল অলঙ্করণেই । তবুও যদি এই চরিত্র ও খন্ড গল্প গুলো না থাকত তাহলে অনেক সময় বোরিং লাগত। ১৯৫২ জিনিসটা কি সেটা পাঠক এই বই এর প্রচ্ছদ এর দিকে একটু ভাল মত তাকালেই বুঝতে পারবে, মূল রহস্য ও একে ঘিরেই। নাজিমুদ্দিন এর বই এর আরেকটা জিনিস আমার ভাল লাগে যে উনি আমাদের সমাজের যে খারাপ দিকগুলা আছে এবং সময়ের সাথে সাথে এখানকার যুব সমাজ যে একটি অন্ধকার দিকে পা বাড়াচ্ছে তা খুব সুন্দর ভাবে তাদেরই দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেন। যে জিনিসগুলা আমরা প্রত্যেকেই দেখি কিন্তু চুপ করে থাকি বা থাকতে বাধ্য হই। এ বই এও উনি এই দিকগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করেছেন। যারা গাড়ী ভালবাসেন তাদেরও এই বইটা ভালই লাগবে। কারণ বইটাতে যথেষ্ঠ গাড়ী চেজিং আছে। গল্পের প্লট এর বিস্তৃতি ছোট কিন্তু এটার উপরেই যে লেখক এত সুন্দর করে কাহিনী সাজিয়েছেন সে জন্যে অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে। তবে থ্রিলার এর কোন শাখায় যে এটা পড়বে তা বলা মুশকিল তবে মার্ডার মিস্ট্রি এর সাথে পলিটিকাল ড্রামার একটা মিশ্রণ বলা যেতে পারে। বই এর ভূমিকা তে লেখক যে পোয়েটিক জাস্টিস এর কথা বলেছেন শেষে এসে তা একেবারে সার্থক মনে হবে। প্রত্যাশা মতই আবার বিনোদন দেয়ার জন্যে উনাকে আবারো ধন্যবাদ। :)
একদম সাদামাটা একটা প্লট কে ৪০০+ পেজের বার্নিং থ্রিলারে রূপ দেওয়া রীতিমতো বিষ্ময়কর একটা ব্যাপার। গল্পের প্লট সত্যি বলতে আহামরি ছিল না। আবার কিছু যায়গা টেনে টেনে কাহিনীর অপ্রয়োজনেয় যথেষ্ট বিরক্তিকর পরিস্থিতির উদ্রেক ঘটেছে৷
ছোটবেলা থেকেই গাড়ির ঝোঁক সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেনের। কেবল শোরুম থেকে নতুন গাড়ি কিনে রাস্তায় নেমেছে সে। আর মনের অজান্তেই বাঁধিয়ে বসল দুর্ঘটনা। একেবারে গাড়ি চাপা দিয়ে দিল একজনকে। স্পট ডেড। নতুন গাড়ি কেনার দিন-ই মনের অজান্তেই ফেঁসে গেল সে। শুধুই এক্সিডেন্ট নাকি পরিকল্পিত খুন? ঢাকার রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আলফা রেমিও কনভার্টিবল গাড়ি, যার লাইসেন্স প্লেটের নম্বর ১৯৫২। কি রহস্য এই ১৯৫২ সংখ্যাটার?
দেশসেরা লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্যতম একটা স্ট্যান্ড অ্যালন থ্রিলার ১৯৫২: নিছক কোনো সংখ্যা নয়। এই বইটার শুরু গাড়ি নিয়েই। পুরো বইয়ের রহস্য আবর্তিত হয়েছে গাড়িকে ঘিরেই। বিশেষভাবে বললে আলফা রেমিও কনভার্টিবল গাড়িটিকে নিয়ে। গাড়ি প্রেমীদের বিশেষ ভালো লাগবে এই সুবিশাল সাসপেন্স থ্রিলার ধর্মী উপন্যাসটা। একটা কথা বলে রাখি, বাংলাদেশে তেমন লিগ্যাল থ্রিলার বই নেই। কিন্তু এই বইয়ের শুরুরএ কটা ভালো অংশ লিগ্যাল থ্রিলার। কোর্টরুমে-ই একটা ঘটনার দারুন বুদ্ধিদীপ্ত মীমাংসা ঘটে। এই জিনিসটা সবথেকে ভালো লেগেছে। বইটাতে পলিটিক্যাল ক্রাইম ও পাওয়ার প্র্যাকটিসিং, দুর্নীতি ও দলীয় বিবাদ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। এই হিসেবে এটাকে পলিটিক্যাল থ্রিলারও বলা চলে। চরিত্রায়ন খুবই গভীর। প্রধান চরিত্র সায়েম ও গোলাম মওলাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন, সেইসাথে নিশু নামক তরুণ আইনজীবী চরিত্রটিও অল্পের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে বিশেষভাবে বলতে হয় রকস্টার রুডি চরিত্রটির কথা। খুবই বিনোদন পেয়েছি এই কমিক চরিত্রটা থেকে। সব ছাপিয়ে বইটা পুরোটাই সাসপেন্স থ্রিলার। শুরু থেকে পুরো বইয়েই ধরে রাখা হয়েছে সাসপেন্স। টুইস্ট খুব বেশি নেই। তবে ছোট হলেও আনপ্রেডিক্টেবল। বইটার সাসপেন্স সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গিয়েছে। পুরো বইটাই উপভোগ্য। দারুন এক মৌলিক থ্রিলার।
১৯৫২: নিছক কোনো সংখ্যা নয়। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন পৃষ্টা: ৪২০ বাতিঘর প্রকাশনী
যেকোনো বইয়ের মূল অলংকার হচ্ছে তার যথাযথ প্লট বিল্ড আপ। কাহিনী যতই সাধারণ হোক না কেন, তাকে ধীরে ধীরে ঘনীভূত করলে সেটা মাস্টারপিসও হয়ে যায়। এই বইটার কথাই ধরি, একটা ছোট-সাধারন একটা প্লট, উত্তরা থেকে গুলশান, গুলশান থেকে উত্তরা। কিন্তু লেখক কাহিনীটাকে প্রেম, পলিটিক্সের মারপ্যাচ দিয়ে একটা এস্থেটিক কাহিনী বানিয়ে ফেলছে। কাহিনী পুরোটাই একটা গাড়ি নিয়ে, যার প্লেট নাম্বার ১৯৫২। সাংবাদিক সায়েম নতুন গাড়ি কিনে প্রথম দিনেই শিকার হয় দূর্ঘটনার। যাকে চাপা দেয় সে আর কেউ নয়, সাবেক এমপি আরেফ সুফির ছেলে আর ভাষাসৈনিক আদেল সুফির নাতি আদনান। ঘটনাক্রমে জানা যায় সায়েমের গাড়ির নিচে চাপা পড়ার আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় আদনান। খুনি কে, তা জানতে হলে উদ্ধার করতে হবে ১৯৫২ প্লেট নাম্বার লাগানো আদনান সুফির ব্যাবহৃত সেই গাড়িটি। গাড়িটা উদ্ধার করতে গিয়ে মাওলা আর সায়েম জড়িয়ে পড়ল রাজনীতির মারপ্যাচে।
প্রথমে ভাবছিলাম হয়ত লিগ্যাল থ্রিলার পড়তে যাচ্ছি। কিন্তু না, ধীরে ধীরে সেটা পলিটিক্যাল মিষ্ট্রি থিলারে মোড় নিয়েছে। প্রশাসনের সীমাবদ্ধতা, এমপি মন্ত্রীদের একমুখী আধিপত্য — এক কথায় রাজনীতির প্রায় সব দিক তুলে ধরেছে লেখক। কিছুক্ষণের জন্য আসা রুডি চরিত্রটাকে বেশ উপভোগ করেছি। একটা কমেডি কমেডি ভাইব এনেছে। প্রেম, চতুরতা, ক্ষমতার মিশেল বইটাকে অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে। ফেসবুকের ন্যাকা ন্যাকা প্রেমের দিকটাও তুলে ধরেছে 🥴 তবে শেষের দিকের ঘটনাটা একটু অসামঞ্জস্য লেগেছে। তাই এক তারা কাটা।
চমৎকার গল্প, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টান টান উত্তেজনা, আমাদের সমাজের অনেক বাস্তব সত্য উঠে এসেছে যা অনেকেই সাহস করে লেখেন না, চমৎকার একটা টুইস্ট আছে যা পাঠককে আলোড়িত করবেই।
আইসসালা! চোখ বন্ধ করে পাঁচ তারা দিয়ে দিব। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখা আমার পড়া দ্বিতীয় বই ছিল৷ উনার লেখা প্রথম পড়েছিলাম জাল, অতোটা ভালো লাগেনি। কিন্তু এই বইটা!!! মনে আছে, নিজেকে সামলাতে না পেরে বই পড়া শেষে মাথায় একগাদা পানি ঢেলেছিলাম 😌
লেখকের আগের দুটো থ্রিলারের চেয়ে এটায় থ্রিলের বেশ অভাব বোধ করলাম। ছোটো একটা কাহিনিকে টেনে বেশ লম্বা করা হলো। তেমন গতি ছিলো না গল্পে। শেষ দিকে বেশ একটা নীতিশিক্ষা মূলক ভাব চলে এসেছে বোধ হলো। সেটুকু সময়ের প্রেক্ষিতে হয়তো দরকারি, কিন্তু থ্রিলারের মানে ঘাটতি এনে দিলো।
বাবা ইদানিং খুবই বিরক্ত হচ্ছেন বই পড়া দেখে। মফস্বল শহরে রাত বলতে রাত ৯ টা বোঝায়। একটানা চার বছর ঢাকায় থাকার কারনে আমার রাত হয় রাত তিনটায়। লাইট অফ করে মোবাইলে ই পাব চলে আরেক দফা। ঠাকুমা যতক্ষন না ভয় দেখান ততক্ষন চোখ বন্ধ হয় না। রহস্য রোমাঞ্চ, গোয়েন্দা কাহিনী,মিষ্ট্রি,মার্ডার,থ্রিলার আমার পছন্দ তার একটি বিশেষ একটি কারন রয়েছে সেটা হচ্ছে থেকে থেকে সেখানে খাবার দাবারের কথা লেখা থাকে। আমি কত বার যে রেষ্টুরেন্ট এ গিয়েছি এমন মনে করে তার ইয়াত্তা নেই। ইহা একটি উপভোগ্য মার্ডার মিষ্ট্রি ছিল শুধু খাবার দাবারের বর্ননার কারনে নয়,দুষ্টু মিষ্টি প্রেমে টুইষ্ট এর কারনে। একটা ধারনা খুব ভাল ভাবে হয়েছে আপকো কাবিল হোনা চাইয়ে তো আপকো বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে। শেষের দিকে ইয়াবার,নেশা দ্রবের চ্যাপ্টারর কারনে ভাল লেগেছে আরো বেশি করে। বাস্তব কিছু ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছে। এক রাতের জন্যে বিশাল টুইষ্ট। প্রুফ রিড বিহীন বই, এছাড়া সমস্যা নেই।
বইমেলার শেষের দিকের কোন একদিন বলা যায় প্রায় জোর করেই এক ভাইয়ার কাছ থেকে নিয়েছিলাম ১৯৫২। সময় করে হাতে নেয়ার পর অল্প মুহুর্তের জন্যও হাতছাড়া করা দুষ্কর ছিলো। প্রথম অধ্যায়ে সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেনের গাড়ি দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া রহস্যের শেষ জানতে আপনাকে পড়ে যেতে হবে একদম শেষ পর্যন্ত! ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার,হত্যা, মাদকের করাল থাবায় যুবসমাজের অবক্ষয় আর নানা গোলক ধাঁধায় মোড়া চমৎকার এই ভিন্ন রহস্য উপন্যাস পড়ে আমি মুগ্ধ। তরুন আইনজীবি মিশু, নির্ভীক সাংবাদিক সায়েম, পুলিশ অফিসার মওলা, তাহিতি, অরিন, পাগলাটে সঙ্গীত শিল্পী রুডি, মায়াবতী নিম্মি প্রতিটা চরিত্রের প্রতিটা অভিব্যাক্তি যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম উপন্যাসের প্রতিটা পাতায়... আফসোস তো হচ্ছে কেন লেখকের বাকি বই গুলো সংগ্রহ করিনি...বইমেলাটা যদি আরো কিছুদিন থাকতো...
A journalist was driving in a rainy night and suddenly bumped into something. That something turned out to be someone from a respectable and renowned family. How the journalist escaped? 1952 is the answer.
A Member of the Parliament ( "to be" Minister) suddenly got accused of killing a young Turk of his very own political party who was also from his same constituency. Did he actually kill him? Or There's a 3rd party? 1952 is the answer.
I enjoyed the entire read except for the thunderous ending. All hacks explained in 2 pages. However, it's a Nazim Uddin thriller. U are bound to enjoy. Happy Reading.
দুবার বসাতেই শেষ করলাম চমৎকার এই বইটি। নাজিম উদ্দিনের লেখা বরাবরই খুব ভালো লাগে। মেদহীন লেখনী আর দূর্দান্ত প্লট এই ১৯৫২-এর! পড়তে যেয়ে একবারও ক্লান্তি অনুভব করিনি।
সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেনের সাধারণ (!) দূর্ঘটনা থেকে রহস্য ঘোলাটে হতে থাকে। বন্ধু এসি গোলাম মওলা জুড়ে যায় তার সাথে। সায়েমের দুঃসাহসিকতায় একে একে বেড়িয়ে আসতে থাকে ভয়াবহ এক পরিকল্পনা ও অপরাধ।
নাজিম উদ্দিন তাঁর এই লেখাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আর কতিপয় জাঁদরেল 'রাজনীতিক' দের তুলে ধরেছেন। বাঙলি ইতিহাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ এই বইটি নিঃসন্দেহে অসাধারণ কাজ। তাঁর কাছ থেকে এরকম ধাঁচের বই আরো আশা করব।
নাজিম উদ্দীনের অন্য সবগুলো বইয়ের মতো এই বইটাতেও পরতে পরতে সাসপেন্স রয়েছে। কিন্তু গল্পের কাহিনী খুবই ধীরে সুস্থে এগিয়েছে। কিন্তু আকর্ষণ ধরে রাখার মতো বই। ওভারঅল, ভালো লেগেছে।
ফ্যান্টাস্টিক = চমৎকার একটা পারফেক্ট স্টোরি বিল্ডাপওয়ালা বই পড়লাম দেশসেরা থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের। বইটির নাম '১৯৫২ঃ নিছক কোনো সংখ্যা নয়'। সহজ করে কাহিনীটা বললে, এক প্রখ্যাত সাংবাদিক সায়েম, নতুন গাড়ি কিনেই একসিডেন্ট করে হত্যা মামলা খেয়ে যান। কিন্তু পরে দেখা যায় এটা মামুলি কোনো একসিডেন্ট নয়। কেঁচো খুঁড়তে বেড়িয়ে আসে সাপ। পুরোটা ঘটনাটি একটা গাড়ি কেন্দ্রীক। এখান থেকেই কাহিনি শুরু। নাজিম উদ্দিন সাহেবের থ্রিলার গুলোর একটা ভালো দিক হচ্ছে, উনি শুধু শেষে একটা টুইস্ট দেবেন বলে কাহিনী জমান না। সাধারণত কোনো গোয়েন্দা বিভাগ কোনো দূর্ঘটনা হলে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর বের করেন। (what, when, where, why, who, how) নাজিম সাহেব সব গুলো প্রশ্নের উত্তরই শুরুতেই দিয়ে দেন/এটলিস্ট হিন্টস দেন। শুধু why আর How টুকু বের করেন শেষে। যে কারণে ক্লিশে টুইস্ট হয়না। বইটার শুরুতে একটা চমৎকার কোর্টরুম ড্রামার পার্ট ছিলো, এত ইন্টারেস্টিং! মাঝে আস্তে আস্তে স্টোরি বিল্ডাপ। তাড়াহুড়ো করেননি। তাই বলে রহস্য, উত্তেজনার কমতি ছিলোনা। বইটি ৪০০+ পৃষ্ঠার, বিশাল বই, আমার খুব বেশি সময় লাগেনি তবুও। কাহিনির তুলনায় একটু বড়ই বইটা! প্রতিটা ক্যারেক্টার কেই আলাদা আলাদা ফোকাস দিয়েছেন। প্লটহোল আছে ছোট ছোট কিছু, তবুও ভালো লেগেছে। সমাজের কিছু দিক তুলে ধরেছেন, যেগুলো সবাই জানি, কিন্তু না জানার ভান করে থাকি। বইটায় আমার সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র এখানে মূল নায়ক সায়েম কিংবা গোলাম মাওলা না, রুডি নামের এক রকস্টার! প্রচুর মজার একটা ক্যারেক্টার!!
দেশীয় ফ্যান্টাস্টিক থ্রিলারের তালিকায় এই নামটা সহজেই যুক্ত হতে পারে বলে আমি মনে করি।
[অনুসিদ্ধান্তঃ এই বই পড়ে আমরা শিখতে পারলাম, পৃথিবীর সকল গার্লফ্রেন্ড কোনো না কোনো প্যারা দেয়-ই, আর তারা ভুল এই ব্যাপারটা বুঝলেও, মেনে নিতে নারাজ। তাতে যা হয় হবে। :v ]
একটি সত্য গল্পের ছায়া নিয়ে লেখক তার লেখার স্বাধীনতার পূর্ণ ব্যবহার করেই গল্পটি লিখেছেন।
কাহিনীটা টেনেটুনে বেশ বড় করা হয়েছে, আর যে বিষয়গুলো দু এক লাইনেই বোঝানো যেত সেখানেও বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়ে���ে। বইটির বিশালাকারের কারণও এইটাই। তবে বইটি কাহিনীর তুলনায় একটু বড় হয়ে গেলেও পড়তে কোনও বিরক্তি আসে নি। পড়ার গতিও ছিল খুবই ভালো। তবে ফিনিশিং এ গিয়েই লেখক একটু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলেন। পাঠকদের জন্য বেশ বড়সড় একটা টুইস্ট রেখেছেন তিনি। কিন্তু সমস্যা হলও এই টুইস্টটাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে গিয়ে একটু বেশিই ঘোরালো করে ফেলেছেন। আর সবচে বড় বিষয় বাতিঘর এর বই হওয়া সত্ত্বেও বানান ভু��� নিয়েও কোনও অভিযোগ নেই।
বইটি একটি পলিটিক্যাল থ্রিলার জেনেই হাতে নিয়েছিলাম। তা পলিটিকাল থ্রিলারের আমেজ খানিকটা আছে বটে৷
সুপরিকল্পিত নাজিমীয় প্লট, সুন্দর এবং ধরে রাখার মতো গদ্যশৈলী। একটু পরপর ক্লিফহ্যাঙ্গার, যেটা নিয়ে যাচ্ছিলো পরের অধ্যায়ে। খানিকটা উত্তেজনা, একটুখানি সাসপেন্স। তিনটা প্রেম, কোনো ধরনের অশ্লীলতা ছাড়া। একটু একটু করে রহস্যের জট ছড়ানো। প্রোটাগনিস্টের বিপদে পড়া, জাল কেটে বেরিয়ে আসা। সবশেষে সমাধান৷ বরাবরের মতোই হতাশ করেননি নাজিম ভাই।
বইটার শুরুর দিকটা অত্যন্ত এনগেজিং। বৃষ্টির এক রাতে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয় এক সাংবাদিক। তার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যায় কেউ একজন। এরপর তাকে পুলিশ ধরে, কোর্টে তোলা হয়।
পুলিশ প্রসিডিওরাল এবং লিগ্যাল প্রসিডিওরাল যেই বিষয়গুলো নাজিম ভাই লিখেছেন, একদম শিয়ার ব্রিলিয়ান্স। আমি নিশ্চিত নাজিম ভাই কোর্টে উপস্থিত থেকে এসব চাক্ষুস করেছেন, অথবা কোনো এডভোকেটের সাথে কনসাল্ট করেছেন লেখার আগে৷ যেটা তার পেশাদারিত্বের সাক্ষর।
বইটার দুইশ পৃষ্ঠা বেশ এগোয়। রহস্যের জট ছড়ানোর বদলে আরও গেঁথে যায়। পলিটিকাল থ্রিলার হিসেবে আমেজ ছড়াতে শুরু করে।
এরপর কিছুটা ঝুলে যায় বইটার কাহিনী। মাঝের দিকে আরকি। তবে নাজিম ভাইয়ের গদ্যশৈলীর জন্য বইটা পড়তে বিরক্ত লাগে না।
পলিটিকাল থ্রিলারের আমেজ থাকলেও বইটা শেষ পর্যন্ত ক্রাইম থ্রিলার হিসেবে শেষ হয় আমার কাছে। কোনো পলিটিকাল ক্রাইম নেই, বিরাট কোনো পলিটিকাল ষড়যন্ত্র নেই। তবে একটা বড় ক্রাইম হয়েছে সন্দেহ নেই।
বইটা শেষ করে কেমন লেগেছে বলতে পারছি না। একরকম দোলাচলে আছি। তবে বইটা রেকমেন্ডেড।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্য থ্রিলারগুলোর তুলনায় এই বইটা অপেক্ষাকৃত নিরেস ঠেকল। কেন? প্রথমত, এত প্রেডিক্টেবল শুরু হলে ক্রাইম থ্রিলারের মজা অর্ধেক কমে যায়। দ্বিতীয়ত, নারায়ণ সান্যালের কাঁটা সিরিজের স্টাইলে কোর্টরুম ড্রামার অংশটুকু বাদ দিলে বাকি গল্পের টোন ও টেনরে উত্থান-পতনের তেমন কোনো নিদর্শন পেলাম না। তৃতীয়ত, এত আন্ডারহোয়েল্মিং পরিসমাপ্তি নাজিম উদ্দিনের লেখায় প্রত্যাশিত নয়। যাইহোক, এবার মনে হচ্ছে ওপারের কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যে নিমজ্জিত হওয়ার সময় আগতপ্রায়।
বইটা দারুণ! গল্পের শেষে এমন একটা চরিত্র চমকে দিবে ভাবনাতেও ছিল না। অপরাজনীতির কবলে পড়ে হত্যা-গুমের মতো কাহিনীকে কেন্দ্র করে জটপাকিয়ে উঠা রহস্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়া গল্পটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী একেবারে মানানসই একটি থ্রিলার বলা যায়। কোনোকিছুই বাড়িয়ে বলা না, কোনো অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটানো হয়নি টুইস্ট বা সাসপেন্স তৈরি করতে। "১৯৫২" সংখ্যাটার নাটকীয়তাই এ গল্পের মূল রসদ। নামকরণ সেক্ষেত্রে সার্থকই বলা যায়। "পোয়েটিক জাস্টিস" এর বেশ ভাল উদাহরণ এ গল্প। অনেককিছুই হওয়ার কথা ছিল না।কাকতালীয়ভাবে ঘটা কিছু ঘটনাই সবকিছু উল্টেপাল্টে দিয়েছে এই বইয়ে। তার আরো বেশকিছু ভাল ভাল লেখার কথা পড়েছি। সেগুলোর প্রতি সুবিচার করতেই আপাতত চার তারকা দিয়ে রাখা আর কি।
হুম, গতকাল শেষ করলাম অবশেষে। এই বই পড়ার অনুভূতি অনেকাংশেই মিশ্র।
লেখকের প্রথম বই নেমেসিস পড়েই বেশ ভালো লেগেছিল, এর পরের বই কন্ট্রাক্ট পড়ে ফ্যান হয়ে যাই, তারপরে নেক্সাস আর কনফেশন পড়েও ভালো লাগে। সমসাময়িক অপর সিরিজের প্রথম বই 'জাল' পড়ে অতটা ভালো না লাগলেও বেশ কিছু মানুষের রিভিউ দেখে আশা ছিল ১৯৫২ বইটি বেশ উপভোগ্য হবে।
কাহিনী প্রাথমিকভাবে শুরু করতেই একটু বেগ পেতে হচ্ছিলো, প্রায় তিনবার বই হাতে উঠিয়ে রেখে দিয়েছিলাম, এবং চতুর্থ বার ধরে শেষমেশ পড়ে শেষ করেছি দুই বৈঠকে। উপন্যাসের গঠনে কিছু জিনিশ লক্ষণীয়, যেমনটা জেমস প্যাঁটারসন এর গল্প গাঁথুনিতে দেখা যায়।
১ - ছোট ছোট অধ্যায়। ২ - পরিবারের আনাগোনা (যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই গল্পে তাদের তেমন ভুমিকাই ছিলনা।) ৩ - কিছু কিছু অধ্যায়ে ক্লিফ হ্যাঙ্গার দিয়ে পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য আকর্ষণ জিইয়ে রাখা।
গল্পে এক কথা বার বার বলা হয়েছে, এক সূত্র বিভিন্ন অধ্যায়ে একই ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এবং সমগ্র বিষয়টা শেষ হবার পড়ে মনে হয়েছে গল্পের পরিমান আরও অর্ধেক কমতে পারতো কমপক্ষে।
গল্পে কার কার কোনও ভূমিকা নেই ...
নিম্মি, তাহিতি, আমরিন, নিশুর বান্ধবী।
সুতরাং বোঝা গেল যে নারী চরিত্র সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন এই বইয়ে, যেখানে খুব সহজেই তাদেরকে কাজে লাগানোর সুযোগ ছিল।
গল্পে নিশু চরিত্রটি নেপথ্যে থাকলেও বেশ জোরালো ছিল, রুডি চরিত্রটি বেশ প্রাঞ্জল ছিল, আজমত চরিত্রটিও বেশ বলিষ্ঠ ছিল, এদের উপস্থিতি ভালোই লেগেছে।
গল্পে যেহেতু কোনও একক নায়ক নেই, সেহেতু সবাই মিলে বিষয়টার সমাধান হয়েছে, ভালো। কিন্তু কিছু কিছু কাজ একদম ছেলেমানুষি হয়ে গেছে। বিশেষ করে যখন অভিজ্ঞ এক সাংবাদিক বোকার মতো একের পর এক কাজ করে গেল, তখন পুরো বিষয়টাই অর্থহীন বলে মনে হয়েছে।
এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে আসল অপরাধীকে আন্দাজ করে ফেলতে পেরেছি বহু আগেই, তাই গল্পটা শেষ পর্যন্ত পড়ে গিয়েছি কাজটা কিভাবে হয়েছে সেটা জানার জন্য। আর শেষের দিকে এসে এই বিষয়টাও মাত্রাতিরিক্ত টেনে লম্বা করা হয়েছে। ফিনিসিং প্লট এতটা না পেচালেও পারতো, শেষমেশ যেটা মনে হয়েছে তাতে করে সব বিষয় মেলাতে গিয়ে শেষে ব্যাখার গতিপথ ধরে ধরে মেশাতে হয়েছে জোরপূর্বক।
তবে কাহিনীতে গতি রাখা হয়েছে মোটামুটি, একবার শুরু করলে এক টানে পড়া যাবে, স্নায়ু উত্তেজক কিছু জায়গাও রয়েছে গল্পে, বিশেষ করে সাংবাদিকের ভুল গুলো করার সময়কার ব্যাপার। এছাড়াও আদালতের শুনানিটা বেশ চমকপ্রদ ছিল, সম্ভবত ওটাই ছিল গল্পের সবথেকে চমকপ্রদ জায়গা।
যাই হোক, সবশেষে বলতে হয়, ১৯৫২, নিছকই একটি সংখ্যা। এছাড়া আরও কিছুই মনে হয়নি। মোটামুটি লেগেছে পুরো গল্প। তবে আমি এখনো লেখকের ফ্যান, আশা করছি ভবিষ্যতে তিনি আরও উৎকৃষ্ট গল্প আমাদের উপহার দেবেন।
সবাই ত পজেটিভ কথাই বললো,আমি না হয় একটু নেগেটিভ দিকটাই বলি।।। প্রথমত্ব প্রচুর স্লো মানের থৃলার,,নাজিমুদ্দিন এর আরো থৃলার পরেছি কিন্তু এটা তুলনামূলক সেই মজা পাইনি।দ্বিতীয়ত্ব মনে হয়েছে টেনেটুনে বড় করা হয়েছে,২০০ পেজ এর কাহিনী ৪০০পেজ করছে,, নার��� চরিত্র গুলো একটু লুতুপুতু বেশিই,মন চায়ছে সবকয়টাকে থাপরাই,,, সর্বাপরি,শেষ পাঠক এর জন্য চমক অপেক্ষয়মান,,,,
বইটা বেশ ভালো ছিল। অনেকদিন পর নাজিম উদ্দিনের বই নিয়ে পড়তে বসলুম। এবং বইয়ে এতটাই ভু্ঁদ ছিলাম একবসাতেই এটা শেষ করেছি। অনেক ফাস্ট ফেইসড আর রোমাঞ্চকর লেগেছিল এবং আমি সত্যিই বুঝতে পারছিলাম না আসলে কে করেছে খুন। শুরুটাই শুরু কোর্টরুম ড্রামা দিয়ে যেটা আমার পছন্দ, এবং কাহিনী খুব দ্রুত এগোচ্ছিল। আশা করছিলাম এই বুঝি ধামাকাদার কিছু হবে কিন্ত কনক্লুশন টা আমার পছন্দ হয়নি।
নাজিম উদ্দিনের গল্পে থ্রিলের কোনও অভাব না থাকলেও উনার স্টেরিয়টিপিকাল চরিত্রগুলো মাঝে মাঝে বিরক্তি ধরায়। সব পার্লার ব্যবসায়ীরাই যেমন দেহ ব্যবসা চালান না, তেমনি সব গার্লফ্রেন্ডরাও ওভারলী পজেসিভ হয়ে যোগাযোগ না করতে পারলেই অস্থির হয়ে দুনিয়া উল্টিয়ে ফেলে না। আর শেষের দিকে একটু অতি কাকতালীয়ও মনে হয়েছে ঘটনাগুলো।
১৯৫২: নিছক কোনো সংখ্যা নয় লেখক- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশক - বাতিঘর / অভিযান জেনার - থ্রিলার মুদ্রিত মূল্য- 470/-
১৯৫২: নিছক কোনো সংখ্যা নয় - নামটাই দারুন ইন্টারেষ্টিং লেগেছিল তাই বইটি সংগ্রহ করি। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং বাংলাদেশ এর মৌলিক থ্রিলার এর এটাই আমার পড়া প্রথম উপন্যাস। প্রচ্ছদ টিও দারুন। লেখক এর ভাষায় ১৯৫২ এর প্রেক্ষাপট এবং শেষ পোয়েটিক জাস্টিস এর এক দারুন উদাহরণ।এই থ্রিলার এর মুখ্য চরিত্র এক সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেন ও তার বন্ধু গোলাম মওলা। বইটা পড়ার সময় আমার মনেও প্ৰশ্ন জেগেছে ১৯৫২ আসলে কি? কিন্তু বইটা কিছুদূর পড়ার পর এ বুঝতে পারলাম ১৯৫২ নিছক একটি সংখ্যা নয় কেন? যদি জানতে চান তাহলে অবশ্যই পড়তে হবে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর এই অসামান্য থ্রিলার উপন্যাস ।
পটভূমি -
সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেন, গাড়ির প্রতি খুব সৌখিন, প্রথম গাড়ি কিনে বন্ধুদের পার্টি দিয়ে বাড়ি ফেরার পথেই ঘটে দুর্ঘটনা সেই দুর্ঘটনায় মারা যায় দেশের প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান আদনান সুফী। এটা কি নিছকই দূর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত খুন? এই হলো ঘটনার সূত্রপাত, এর পর লেখক একের পর ঘটনার স্তর সাজিয়েছেন আর লিখেছেন এক টানটান ঝরঝরে মেদহীন রূদ্ধশ্বাস ঘটনাবহুল থ্রিলার। সাংবাদিক ও তার পুলিশ বন্ধু গোলাম এর সঙ্গে যখন এই ঘটনার তদন্তে নামেন, একের পর এক বেরিয়ে আসে নোংরা রাজনীতির, ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের কুটিল চাল, প্রেম, পরকীয়া কিছু অপ্রত্যাশিত সত্য। দুই বন্ধুকে সত্য অব্দি পৌঁছতে নানারকম সংঘাত এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, প্রতিবার এ একটা রুদ্ধশ্বাস প্লট রচনা করেছেন লেখক। কিছু কিছু চেস এর বর্ণনা দারুন উপভোগ্য। এই থ্রিলার এর টুইস্ট টা সত্যিই মেনে নেওয়া টা খুবই চাপের, মানে ঠিক ছিটকে ফেলেছে আমাকে, কিন্তু কোনো অবাস্তব কিছুরই আশ্রয় নেননি লেখক, সুন্দর যুক্তিপূর্ণ টুইস্ট।
পাঠ প্রতিক্রিয়া -
যেকোনো থ্রিলার এর মূল হলো প্লট রচনা করা, সেই প্লট খুব সামান্য ঘটনাও হতে পারে যেমন এই বই টার ক্ষেত্রে উত্তরা থেকে গুলশান আর গুলশান থেকে উত্তরা পথেই নিছক একটি পথ দুর্ঘটনা। তারপর লেখক এই ঘটনাকেই রাজনীতি প্রেম পরকীয়া দিয়ে এতো সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন যে গল্প টা একটা মাস্টারপিস এ পরিণত হয়েছে ঘটনা প্রবাহ অত্যন্ত দ্রুত পাতার পর পাতা গিলে ফেলা যায়. ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম এর জন্য বইটি একটি দারুন উদাহরণ। বইটি মিস করবেনা না। ঘটনা প্রবাহের দ্রুততা থ্রীল রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় যেকোন নামি হলিউডি থ্রিলার এর সাথে তুলনা করা যায়।
অনেকদিন আগে যখন বইটা সামনে আসে নাম দেখে মনে মনে বলেছিলাম সত্যিই তো নিছক সংখ্যা নয়!! দারুণ লেগেছে প্লটটা। থ্রিলার বই হলেও শেষ দুই তিন পাতা পড়ে মনে হয়েছে,'খারাপ কি থ্রিলারের সাথে সমকালীন উপন্যাসের স্বাদ পাওয়া গেল।' শুরুর দিকে প্রধান চরিত্র কে এই প্রশ্নটা মনে মনে চিন্তা করতেছিলাম। তবে এখানে মোটামুটি প্রায় সব চরিত্রই প্রাধান্য পেয়েছে দেখে ভালোই লাগলো। তবে নারী চরিত্ররা কাহিনীতে মূখ্য ভূমিকায় না থাকলেও অলঙ্করণে বেশ ভূমিকা রেখেছে। রিসেন্টলি লেখকের বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ শেষ করার পর এটা পড়ে বুঝলাম লেখক সমকালীন রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমান জেনারেশনের ইমোশন্স আর অন্ধকার জগতে প্রবেশ নিয়ে বেশ ভালোই লিখেছেন। সব কিছুই আসলে লিংকড আপ এখন, লেখক তা খুব ভালো করেই বুঝিয়েছেন।
পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ ২০২৪ সালে প্রথম বই পড়ার সূচনাটি হলো আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে প্রকাশ হওয়া সেরা একটা থ্রিলার দিয়ে। যার নাম “১৯৫২ নিছক কোনো সংখ্যা নয়”, লিখেছেন বাংলার থ্রিলার সম্রাট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। সত্যি বলতে প্রথমে বইয়ের নাম দেখে ভেবেছিলাম খুব সম্ভবত গল্পের প্রেক্ষাপট হবে ১৯৫২ সালকে ঘিরে। অবশ্য ১৯৫২ সংখ্যাটি মাথায় এলেই আপনাআপনিই মাথায় চলে আসে আমাদের চিরচেনা সেই ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট। তাই ভেবেছিলাম ভাষা আন্দোলনের সময়কার কোনো প্লট কিংবা গল্প নিয়েই হয়তো এগিয়ে যাবে এই বিরাট আকারের ৪১৩ পৃষ্ঠার থ্রিলার বইটি। তবে জানুয়ারির এক তারিখে যখন পড়তে শুরু করলাম, আমি খানিকটা অবাকই হচ্ছিলাম। ভাবছিলাম, অনেকখানিই তো পড়ে ফেললাম কিন্তু বায়ান্নো বায়ান্নো ফিল পাচ্ছি না কেন? তারপরই বইয়ের বাকি অর্ধেক নামে চোখে পরলো আমার, নিছক কোনো সংখ্যা নয় - আচ্ছা! তারমানে অন্য কারবার। অবশ্য ততক্ষণে বুঝে গেছি কাহিনী আসলে আমাদের বর্তমান সময়েই চলছে, যুদ্ধপূর্ববর্তী কোনো সময়ে নয়। খুশিই হয়েছিলাম ব্যাপারটা বুঝে। যাইহোক, কাহিনীতে প্রবেশ করতে আমার মোটেও কোনোরকমের সমস্যা বোধ হয়নি। গল্পে গতি কম? না। কাহিনী সাজানোতে সময় লেগেছে? তাও না। চরিত্র বোঝাতে সময় বেশি লেগে গেছে? একদমই না। বরং এই তিনটা বিষয়েই লেখক মহোদয় যথেষ্ট সচেতন ছিলেন ফলে গল্পের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক আমার কাছে ছিল এই তিনটি।
কাহিনী সংক্ষেপে বলতে হলে বলবো, দেশের অন্যতম এক নামিদামি ব্যবসায়ী ও বিত্তবান ব্যক্তির একমাত্র ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত ব্যক্তির পরিবারের সাথে সমাজের বড়সড় সব লোকের চলাফেরা। এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সাথেও রয়েছে তাদের বিশেষ সখ্যতা। এমন একজন লোকের ছেলে এক রাতে মৃত্যুবরণ করেছে। গাড়ির নিচে চাপা পরে হয়েছে এই মৃত্যু। সেই গাড়ি চালক জনৈক মহাকাল পত্রিকার একজন সাংবাদিক। নাম সায়েম মোহাইমেন। রাতের বেলায় নিজের নতুন গাড়ি ড্রাইভ করে বাসায় ফেরার পথে প্রেমিকার সাথে ফোনে কথা বলছিল সে, হঠাৎ করে গাড়ির ঝাকি খেয়ে সে বুঝতে পারে কেউ একজনকে সে অজান্তেই গাড়ির নিচে পিষে দিয়েছে। কিন্তু স�� জানে না এই মানুষটা কে? এবং এ ঘটনাই যে মহাকালের সাংবাদিকের জন্য বিরাট আরেক কাল হয়ে দাঁড়াবে! তারপর?
তারপর থেকেই আসলে গল্পের সূত্রপাত। এক একজন চরিত্রের আগমন। নতুন সব রহস্যের আগমন৷ কী ছিল না গল্পে? রহস্য, রোমাঞ্চ, গা শিরশিরে অনুভূতি! সবই যেন লেখক তার নিপুণ হাতে বেঁধে দিয়েছেন এক সুতোয়। যে সুতোয় অটুট বাধনে আটকে আছে পুরো ১৯৫২। একের পর এক রহস্য, প্লট-টুইস্ট, রোমাঞ্চকর মুহূর্ত আমাকে বাধ্য করে যাচ্ছিল পরের পৃষ্ঠায় যেতে। ফলাফল, মাত্র চারদিনেই ৪১৩ পৃষ্ঠার এই বইখানা শেষ করে ফেলেছি আমি। এত দ্রুত কখনোই এত বড় বই পড়ে শেষ করা হয়নি এর আগে আমার। এটা পেরেছি কারণ গল্প আমাকে আটকে রাখতে বাধ্য করেছে সারাটা সময়৷ ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরেছি, একেবারেই বিরতিহীন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যতীত আমায় আর কেউ আটকাতে পারেনি পড়া থেকে। যতক্ষণ না শেষ করতে পারছি যেন আমার শান্তি পাচ্ছিল না। অবশেষে শেষ করার পর দারুণ এক অনুভূতি হচ্ছে, এক রোলারকোস্টার রাইড শেষ করে যেন মাত্রই বাহন ছেড়ে নামলাম; এমনই এক অনুভূতি।
গল্পের সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার দিকটা এর কাহিনী৷ ভয়ানক দারুণ। যথেষ্ট পাকাপোক্ত হাতের গাথুনি। মনেই হয় না এই লেখা আজ থেকেও দশ বছর আগের। দৃশ্যপট দেখেও বোঝার উপায় নেই এর বয়স আজ বছর দশ! অথচ আজকের জগতের সাথে কতই না মেলবন্ধন পাওয়া যাচ্ছিল গল্পের। লেখকের কল্পনার ক্ষমতাশক্তির তারিফ করতে বাধ্য হবে যেকেউ।
দ্বিতীয় দিকটা হলো চরিত্রায়ন৷ গল্পের চরিত্রগুলোই যেন এর প্রাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কেন্দ্রীয় চরিত্র সায়েন মোহাইমেন ও তার বন্ধু এসি গোলাম মওলা, দুইজনকেই যে এত সুন্দর করে লেখা হয়েছে। অবাক হতে হয়৷ তাদের কাজ, চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা, মাঝেমাঝে নেয়া পাগলের মতো সিদ্ধান্ত আর নিজেদের মধ্যকার কথোপকথন। কোনোটাতেই কোনো ধরণের বোরিং ভাবটা আসেনি এক মুহূর্তের জন্য। এই দুজনের এমন অনেক মুহূর্ত আছে যেখানে আমি খুবই হেসেছি, আবার কখনো চিন্তায় পরে পড়ার স্পিড অতিমানবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছি, কখনো তো রেগে গিয়ে কটমটও করেছিলাম। মনে হচ্ছিল এই চরিত্রগুলো একদম বাস্তব। এদের পাশাপাশি বাড়তি চরিত্র, যেমন নিশু, তাহিতি, নিম্মি, রুডি এরা সাপোর্টিং ক্যারেক্টার হিসেবেও দারুণভাবে জীবন্ত ছিল। বিশেষ করে তাহিতির ভাই নিশুকে যখন এসি গোলাম মওলা সায়েমের কেস লড়বার অফার করে এবং নিশু আদালতে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা ব্যাখ্যা করে ওই মুহূর্তটা সবচেয়ে সেরা একটি মুহূর্ত ছিল। তখন মনে হচ্ছিল পুরো গল্পটাই যদি এরকম ড্রামার উপর দিয়ে চলে তবে যেন আরো ভালো হয়। এছাড়াও নেতিবাচক চরিত্রগুলোতেও ফোকাস করা হয়েছে ভালোভাবেই। আজমত, আহকাম উল্লাহসহ সবাই ছিল প্রাণবন্ত। একবারের জন্য মনেও হয়নি যে গল্প পড়ছি৷ বারবার মনে হয়েছে বাস্তবতা দেখছি৷ লেখক এমনভাবেই লেখাগুলোকে বাস্তবতার মিশেলে ফুটিয়ে তুলেছেন। রাজনীতির নানান ব্যাপারে যে দিকগুলো দেখিয়েছেন তা তখনও যেমন ছিল, আজকের দিকেও তেমনি অক্ষতই আছে।
পুরো গল্পটা আমার জন্য অনেক উপভোগ্য ও সুপাঠ্য ছিল। শেষের ক্লাইম্যাক্স যদিও অনেক অপ্রত্যাশিত ছিল, তবে আমি মোটেও ভাবতে পারিনি এমন কিছু অপেক্ষা করে আছে। আর এখানেই লেখকের স্বার্থকতা। পাঠকের চেয়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে থাকা। এতে তিনি যথাযথ সফলও হয়েছেন৷ ক্লাইম্যাক্স সবারই পছন্দ না হতে পারে তবে আমার কাছে খারাপ লাগেনি মোটেও। কেননা সবকিছুর পেছনে যে ব্যক্তিরা ছিল বা যাদের ঘটনাটা ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তা আমাদের সমাজের বাস্তবতারই অংশ। আমাদের সামনে হরহামেশাই এই জিনিসগুলো দেখা যায়। সে হিসেবে শেষ রহস্যের উন্মোচনটাও আমার কাছে যথাযথ মনে হয়েছে।
পুরো একটা উপন্যাস, শেষ করলাম অথচ কোনো সমালোচনামূলক কথা বলার সুযোগ নেই; এমনটা খুব কম বইয়ের সাথেই হয়। নিঃসন্দেহে ১৯৫২ সেই তালিকার মধ্যে অনন্য এক স্থানে থাকবে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন স্যারকে একটা ধন্যবাদ, সময়টা এত দারুণ করে উপহারস্বরূপ বানানোর জন্যে৷ ওহ, যারা এখনো এই বই পড়েননি তাদের জন্য একটা প্রশ্ন করি? গল্পের অনেক জায়গায় ১৯৫২ কে নাম ধরে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন কেউ সংলাপে বলছে “ওই যে ১৯৫২”, “১৯৫২ বের হলো”, “১৯৫২ কোথায় আছে?”, “১৯৫২ কে দেখেছি আমি,” “১৯৫২ কে দেখেছিস মানে? কোথায়?” এ ধরণের প্রশ্ন দেখে আপনাদের কী মনে হচ্ছে এই ১৯৫২ টা কে? বলতে পারবেন? আমার মনে হয়, না পড়ে কেউই বলতে পারবে না ১৯৫২ বিষয়টা কী। বুঝতে না পারার কারণ একটাই, ১৯৫২ নিছক কোনো সংখ্যা নয়। সংখ্যার চেয়েও বড় কিছু। যা বুঝতে হলে পড়তে হবে এই মাথানষ্ট করা থ্রিলার।
উত্তেজনাপূর্ণ থ্রিলার। একবার শুরু করে শেষ না করে শান্তি নেই। মেয়ে চরিত্রগুলোর স্বভাবে ন্যাকামি বেশি ছিলো, যা মোটেও ভালো লাগেনি। এছাড়া কাহিনীর গতি মাঝে স্লো হয়ে গিয়েছিল।সর্বোপরি নাজিমুদ্দিন ভাই কে ধন্যবাদ এই রুদ্বশ্বাস থ্রিলার উপহার দেয়ার জন্য।
Thriller writing should not be confused with newspaper reporting and assorting facts from the society .A thriller should be larger than life but unfortunately this book fails to do justice to this phenomena .
এই প্রথম এতো বড় থ্রীলার পড়লাম। যথেষ্ট ভালো লেগেছে.... প্রায় সবসময়ই উত্তেজিত ছিলাম.... আর ৯৭টি অধ্যায় আমাকে বোরিং হওয়া থেকে যথেষ্ট পরিমাণে বাঁচিয়েছে.....
বইটি পড়ে আশা করছি, নাজিম উদ্দিন স্যারের আরো কয়েকটি থ্রীলার পড়ার সৌভাগ্য আমার হবে.....❤
আমি সবসময় একটা কথা বলি,নাজিম উদ্দিন স্যারকে বাংলার ড্যান ব্রাউন বলা যায়!এতো সাসপেন্স, টুইস্ট, থ্রিল জবাব নাই! একদম সোনায় সোহাগা।এই বইটার বেলায়ও একই কথা খাটে: রুদ্ধশ্বাসে এগিয়ে গেছে কাহিনী! দারুণ!