রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি নোবেল পেয়েছিলেন গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থ এর জন্যে।তাকে মনে হয় আরেকবার নোবেল দেয়া দরকার ছিল তার ছোট গল্পের জন্য।তাকে বাংলার সার্থক ছোট গল্পের জনক বলা হয় কেন???সেই উত্তর পাবেন তারই ছোট গল্পের সমাহার "গল্পগুচ্ছ" এ।গল্পগুচ্ছে মোট ৯১ টি ছোট গল্প আছে। এই ৯১ টা গল্প যেন বাংলা সাহিত্যের সৌন্দর্য। এই গল্পগুলিতে আছে হাসি-কান্না, সুখ- দুঃখ,আনন্দ -বেদনা,কষ্ট,মায়া,আবেগ বলতে গেলে জীবনের সকল উপকরণ। সমাজের ছবিও সুন্দরভাবে গল্পে ফুটিয়ে তুলেছে। পোস্টমাস্টার গল্পে রতন-পোস্টমাস্টার এর দূরে থেকেও আত্নীক বন্ধন,ব্যবধান গল্পে বনমালীর প্রতিক্ষা, হৈমন্তী গল্পের অবহেলিত হৈমন্তী,কাবুলিওয়ালা গল্পে আফগান ফল বিক্
Awarded the Nobel Prize in Literature in 1913 "because of his profoundly sensitive, fresh and beautiful verse, by which, with consummate skill, he has made his poetic thought, expressed in his own English words, a part of the literature of the West."
Tagore modernised Bengali art by spurning rigid classical forms and resisting linguistic strictures. His novels, stories, songs, dance-dramas, and essays spoke to topics political and personal. Gitanjali (Song Offerings), Gora (Fair-Faced), and Ghare-Baire (The Home and the World) are his best-known works, and his verse, short stories, and novels were acclaimed—or panned—for their lyricism, colloquialism, naturalism, and unnatural contemplation. His compositions were chosen by two nations as national anthems: India's Jana Gana Mana and Bangladesh's Amar Shonar Bangla.
কবিগুরুর গল্পগুচ্ছ নয়, এ হল গুরুর গল্পগুচ্ছ। বাংলা সাহিত্যে গুরুর যদি কিছু অবদান থেকে থাকে তো তার এক নম্বরে আসবে গুরুর বৈচিত্র্যময় গদ্যভাষা, যা কখনও ডোবায়, কখনও ভাসায়, কখনও উল্টেপাল্টে দেয়। দুনিয়া যখন কলতলায় পরিণত, চিন্তাহীনতাই যখন প্রকাশভঙ্গী, খেউড়ই যখন ভাষা, তখন একমাত্র নতুন এক পৃথিবীই আপনাকে অন্য আকাশ দেখাতে পারে। তারই এক ঝলক হল এ গল্পগুচ্ছ।
গল্পগুচ্ছ সম্পূর্ণ শেষ করেছিলাম ২০১৩ সালে। প্রায় দশ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে একটা-দুটো করে গল্প পড়তে পড়তে শেষে সব গল্প পড়ে ফেললাম। এখন মনে হচ্ছে আবার গল্পগুচ্ছ পড়া শুরু করা দরকার। গল্পগুচ্ছ বারবার পড়া উচিত। ছোট্ট জীবনে গল্পগুচ্ছ পড়ার যথেষ্ট সময় যেন আল্লাহ আমাদের দেননি। আমার স্মরণশক্তি তেমন নয়। তারপরও গল্পগুচ্ছের যেই গল্পগুলো এখনো মনে অনুরণন সৃষ্টি করে তার কয়টার নাম করছি - ছুটি, পোস্টমাস্টার, নষ্টনীড়, সমাপ্তি, রবিবার, ল্যাবরেটরি, কাবুলিওয়ালা, হৈমন্তী, একটা আষাঢ়ে গল্প, একরাত্রি, ক্ষুধিত পাষাণ, মণিহারা, অপরিচিতা, ইচ্ছাপূরণ, অসম্ভব কথা, গুপ্তধন, দিদি, মেঘ ও রৌদ্র, স্ত্রীর পত্র, করুণা (মনে না থাকায় ভাললাগা অনেক গল্পের নাম উল্লেখ করতে পারলাম না)। ৯১টি গল্পের প্রায় পঞ্চাশটির মত গল্প আমার খুব ভালো লেগেছিল, ভাল লাগে নি এমন গল্পের সংখ্যা খুবই কম।
বইটি অনেক আগের কেনা এবং পড়ব পড়ব করেও এতদিন পড়া হয় নি। আমি যে একটা বিশাল বড় অন্যায় করে ফেলেছি তা আর কাউকে বলতে হবে না। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা একটা বই এতদিন না পড়ে পড়েছিলাম সূতরাং আমি এতদিন আসলে আমি কোন বই-ই পড়িনি বলা যায়। গল্পগুলোর মূল্যয়ণ করার মত ধৃষ্টতা আমার নেই। শুধু বলব রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্পগুলোর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে অনেকগুলো চরিত্র রচনা করে গেছেন যেগুলো চিরকাল পাঠকের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে। পোস্টমাস্টার গল্পের রতন, সমাপ্তি গল্পের মৃন্ময়ী, কাবুলিওয়ালা গল্পের কাবুলিওয়ালা, ছুটি গল্পের ফটিক, হৈমন্তী গল্পের হৈমন্তী, জীবন্মৃত গল্পের কাদম্বিনী এরকম আরো অসংখ্য চরিত্র উপমা হিসেবে চলে আসছে। ছোটগল্প সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব একটি কবিতা উল্লেখ না করে পারছি না। " বর্ষার সমান সুরে অন্তর বাহির পূরে সংগীতের মুষলধারায়- পরাণের বহুদূর কূলে কূলে ভরপুর, বিদেশী কাব্যে সে কোথা হায়! তখন সে পুঁথি ফেলি দুয়ারে আসন মেলি বসি গিয়ে আপনার মনে- কিছু করিবার নাই, চেয়ে চেয়ে ভাবি তাই দীর্ঘদিন কাটিবে কেমনে। মাথাটি করিয়া নিচু বসে বসে রচি কিছু বহুযত্নে সারাদিন ধরে- ইচ্ছা করে অবিরত আপনার মনোমত গল্প লিখি একেকটি করে। ছোটো প্রাণ, ছোটো ব্যথা, ছোটো ছোটো দুঃখকথা নিতান্তই সহজ সরল- সহস্র বিস্মৃতিরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি, তারি দু-চারিটি অশ্রুজল। নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা, নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ- অন্তরে অতৃপ্তি রবে, সাঙ্গ করি মনে হবে শেষ হইয়াও হইল না শেষ। জগতের শত শত অসমাপ্ত কথা যত, অকালের বিচ্ছিন্ন মুকুল, অঞ্জাত জীবনগুলা, অখ্যাত কীর্তির ধুলা, কত ভাব, কত ভয় ভুল- সংসারের দশ দিশি ঝরিতেছে অহর্নিশি ঝরঝর বরিষার মতো- ক্ষণ-অশ্রু ক্ষণহাসি পড়িতেছে রাশি রাশি, শব্দ শুনি তার অবিরত। সেইসব হেলাফেলা, নিমিষের লীলাখেলা চারিদিকে করি স্তূপাকার তাই দিয়ে করি সৃষ্টি একটি বিস্মৃতিবৃষ্টি জীবনের শ্রাবণনিশার।
- বর্ষাযাপন।
ওহ হ্যাঁ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলা সার্থক ছোটগল্পের জনক বলা হয়।
রবীন্দ্রনাথের তুলনা কেবল তিনি নিজেই। তাঁর বইয়ের সমালোচনা করার ধৃষ্টতা দেখানোর ক্ষমতা আমার নেই। তাই শুধু বই পড়ার প্রতিক্রিয়াটুকুই বলতে পারি।
কত বিচিত্র ধরনের গল্পের সমাহার গল্পগুচ্ছে! মজার গল্প থেকে শুরু করে ভুতের গল্প, সাধারণ ঘরকন্নার গল্প — সবই আছে। গল্পগুলো খুব বেশি বড় নয়, অথচ তার রেশ থেকে যায় অনেকক্ষণ। তাঁর লেখা চরিত্রগুলোও অসাধারণ। "পোস্টমাস্টার" গল্পের রতন, "নষ্টনীড় ”গল্পের চারু এদের কি ভোলা যায়?
" ক্ষুধিত পাষাণ " গল্পটা এখনও আমাকে ভাবায়। মনে মনে চিন্তা করি সেই পয়লা নম্বরের বাবুটি কি ভুলতে পেরেছিলেন। অচিরা আর নবীনমাধব কি ভালোবাসাকে বিসর্জন দিয়ে তাদের নিজ নিজ কাজে সফল হতে পেরেছিল? অনুপম আর কল্যাণীর ই বা কী হল?
আরও বহুবার পড়ব গল্পগুচ্ছ, আবার নতুন করে প্রেমে পড়ব গল্পগুলোর সাথে।
প্রতিবার নতুন লাগে। যতবার পড়ি ততবার আলোকিত পুলকিত হই নতুন প্রাতে সূর্যের মতো।
যখন আমায় কেউ বই সাজেস্ট করতে বলে তখন আমি 'গল্পগুচ্ছ' এর কথা বলি।
আমার পায়ে চলার পথ, স্বপ্ন, আশা-দুরাশা, সুখ-দুঃখ-বেদনা, দিবালোক, মর্তলোক, সুরলোক সবই তুমি। মানবজীবনের অজানা দ্বীপে তোমার আগে আর কেউ পৌচ্ছাতে পারেনি এবং পারবে না কবি গুরু।
1. ঘাটের কথা 2. রাজপথের কথা 3. মুকুট 4. দেনাপাওনা 5. পোস্টমাস্টার 6. গিন্নি 7. রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা 8. ব্যবধান 9. তারাপ্রসন্নের কীর্তি 10. খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন 11. সম্পত্তি-সমর্পণ 12. দালিয়া 13. কঙ্কাল 14. মুক্তির উপায় 15. ত্যাগ 16. একরাত্রি 17. একটা আষাঢ়ে গল্প 18. জীবিত ও মৃত 19. স্বর্ণমৃগ 20. রীতিমত নভেল 21. জয়পরাজয় 22. কাবুলিওয়ালা 23. ছুটি 24. সুভা 25. মহামায়া 26. দানপ্রতিদান 27. সম্পাদক 28. মধ্যবর্তিনী 29. অসম্ভব কথা 30. শাস্তি 31. একটি ক্ষুদ্র পুরাতন গল্প 32. সমাপ্তি
অপূর্বকৃষ্ণ বি.এ. পাশ করিয়া কলিকাতা হইতে দেশে ফিরিয়া দুরন্ত এক কিশোরী মৃন্ময়ীর প্রেমে পড়ে এবং বিয়ে করে। বিয়ের পর আপূর্ব আইন পরিবার জন্য কলিকাতা চলে আসলে এক দিনের ব্যবধানে মৃন্ময়ী কিশোরীর কোল ছাড়িয়া যৌবনের কোলে আছড়ে পরে। পরিশেষে শাশুড়িসহ মৃন্ময়ী কলিকাতা রওনা দেয় অপূর্বর কাছে। “পৃথিবীতে অনেক মুখ চোখে পড়ে কিন্তু এক একটি মুখ বলাকহা নাই একেবারে মনের মধ্যে গিয়া উত্তীর্ণ হয়। সে কেবল সৌন্দর্যের জন্য নহে, আর একটা কী গুণ আছে। সে গুণটি বোধ করি স্বচ্ছতা। অধিকাংশ মুখের মধ্যেই মনুষ্যপ্রকৃতিটি আপনাকে পরিস্ফুটরূপে প্রকাশ করিতে পারে না; যে-মুখে সেই অন্তর-গুহাবাসী রহস্যময় লোকটি অবাধে বাহির হইয়া দেখা দেয়, সে মুখ সহস্রের মধ্যে চোখে পড়ে এবং এক পলকে মনে মুদ্রিত হইয়া যায়। এই বালিকার মুখে চোখে একটি দুরন্ত অবাধ্য নারীপ্রকৃতি উন্মুক্ত বেগবান অরণ্যমৃগের মতো সর্বদা দেখা দেয়, খেলা করে, সেইজন্য এই জীবনচঞ্চল মুখখানি একবার দেখিলে আর সহজে ভোলা যায় না।“
“রৌদ্রোজ্জ্বল নির্মল চঞ্চল নির্ঝরিণীর দিকে অবনত হইয়া কৌতূহলী পথিক যেমন নিবিষ্টদৃষ্টিতে তাহার তলদেশ দেখিতে থাকে, অপূর্ব তেমনি করিয়া গম্ভীর গম্ভীর নেত্রে মৃন্ময়ীর উর্ধ্বোৎক্ষিপ্ত মুখের উপর, তড়িত্তরল দুটি চক্ষুর মধ্যে চাহিয়া দেখিল এবং অত্যন্ত ধীরে ধীরে মুষ্টি শিথিল করিয়া যেন যথাকর্তব্য অসম্পন্ন রাখিয়া বন্দিনীকে ছাড়িয়া দিল।“
“রাত্রে ঘন মেঘ করিয়া ঝুপ ঝুপ শব্দে বৃষ্টি হইতে আরম্ভ হইল। অপূর্বকৃষ্ণ বিছানার মধ্যে অতি ধীরে ধীরে মৃন্ময়ীর কাছে ঈষৎ অগ্রসর হইয়া তাহাক কানে কানে মৃদুস্বরে কহিল, 'মৃন্ময়ী, তুমি আমাকে ভালোবাস না?' মৃন্ময়ী সতেজে বলিয়া উঠিল, 'না। আমি তোমাকে কক্খনোই ভালোবাসব না।' তাহার যত রাগ এবং যত শাস্তিবিধান সমস্তই পুঞ্জীভূত বজ্রের ন্যায় অপূর্বর মাথার উপর নিক্ষেপ করিল। অপূর্ব ক্ষুণ্ন হইয়া কহিল, 'কেন, আমি তোমার কাছে কী দোষ করেছি।' মৃন্ময়ী কহিল, 'তুমি আমাকে বিয়ে করলে কেন।“
“ঘরের মধ্যে স্থানাভাব, লোকাভাব, অন্নাভাব, কিন্তু ক্ষুদ্র ছিদ্র হইতে ফোয়ারা যেমন চতুর্গুণ বেগে উত্থিত হয় তেমনি দারিদ্র্যের সংকীর্ণ মুখ হইতে আনন্দ পরিপূর্ণ ধারায় উচ্ছ্বসিত হইতে লাগিল।“
“মৃন্ময়ী শয্যাত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইলে অপূর্ব তাহার দুই হাত ধরিয়া কহিল, 'এখন আমার একটি প্রার্থনা আছে। আমি অনেক সময় তোমার অনেক সাহায্য করিয়াছি আজ যাইবার সময় তাহার একটি পুরস্কার দিবে?' মৃন্ময়ী বিস্মিত হইয়া কহিল, 'কী।' অপূর্ব কহিল, 'তুমি ইচ্ছা করিয়া ভালোবাসিয়া আমাকে একটি চুম্বন দাও।' অপূর্বর এই অদ্ভুত প্রার্থনা এবং গম্ভীর মুখভাব দেখিয়া মৃন্ময়ী হাসিয়া উঠিল। হাস্য সংবরণ করিয়া মুখ বাড়াইয়া চুম্বন করিতে উদ্যত হইল--কাছাকাছি গিয়া আর পারিল না, খিল খিল করিয়া হাসিয়া উঠিল। এমন দুইবার চেষ্টা করিয়া অবশেষে নিরস্ত হইয়া মুখে কাপড় দিয়া হাসিতে লাগিল। শাসনচ্ছলে অপূর্ব তাহার কর্ণমূল ধরিয়া নাড়িয়া দিল।“
“গল্পে শুনা যায়, নিপুণ অস্ত্রকার এমন সূক্ষ্ণ তরবারি নির্মাণ করিতে পারে যে, তদ্দ্বারা মানুষকে দ্বিখণ্ড করিলেও সে জানিতে পারে না, অবশেষে নাড়া দিলে দুই অর্ধখণ্ড ভিন্ন হইয়া যায়। বিধাতার তরবারি সেইরূপ সূক্ষ্ণ, কখন তিনি মৃন্ময়ীর বাল্য ও যৌবনের মাঝখানে আঘাত করিয়াছিলেন সে জানিতে পারে নাই; আজ কেমন করিয়া নাড়া পাইয়া বাল্য-অংশ যৌবন হইতে বিচ্যুত হইয়া পড়িল এবং মৃন্ময়ী বিস্মিত হইয়া ব্যথিত হইয়া চাহিয়া রহিল।“
কৃষ্ণগোপালের বিশাল জমিদারি। বৃদ্ধ বয়সে সে তার সমস্ত জমিদারি তার ছেলে বিপিনের হতে সমর্পণ করে কাশী যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং কাশী গমন করেন। বিপিন জমিদারি হাতে নিয়া দেখেন সমস্ত প্রজা সম্প্রদায় তার পিতার সরলতার সুযোগ নিয়া এতদিন ঠকাইয়া আসতেছিল। বিপিন এ ক্ষতি মেনে নিতে পারলো না। সে সকল প্রকার প্রতি কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। সকল প্রজা মেনে নিলেও মেনে নিতে পারেনি মির্জাবিবির পুত্র মুসলমান ছেলে আছিমদ্দি। অবশেষে আছিমদ্দির সাথে মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত গড়ালে, মামলার সাক্ষীর দিন কৃষ্ণগোলাপ কাশী হতে চলে আসে মামলা নিষ্পত্তির আদেশ নিয়ে। বিপিন এর কারণ জানতে চাইলে তার পিতা তাকে জানায় যে, আছিমদ্দি তার ভাই।
সংসারে সাধু-অসাধুর মধ্যে প্রভেদ এই যে, সাধুরা কপট আর অসাধুরা অকপট
This one is one of my favorites of Rabindranath. It's a a complete collection of all of his short stories which include genres like- romance, comedy, tragedy etc. And among all of them I have two favorites. 1. Shomapti. 2. Oporochita. PS: to my Goodreads friends from abroad, I donno if this one has a translated version or not, if yes, you guys will love it.
Amazingly insightful....revealing those little ironies of life which is even difficult to comprehend or even notice.Definitely, the master story teller.Real evergreen stories.
"গল্পগুচ্ছ"/"Golpo guchho"- meaning- a collection of stories in Bengali...
I LOVE Rabindranath Tagore/Thakur's works! Especially written in Bengali... because they have "the essence" in them. My heart melts whenever I read anything written by the Nobel laureate! A True Gem of India💖
রবীন্দ্রসাহিত্যে আমার হাতেখড়ি ক্লাস সিক্সে। সে বছর জন্মদিনে সুমন স্যার রবীন্দ্রনাথের ছবিওলা খিটখিটে সবুজ মলাটের একটা 'গল্পগুচ্ছ' হাতে দিয়ে বলেছিলেন, "বাংলা সাহিত্যে তোমাকে স্বাগতম, মামুন! আর 'পোস্টমাস্টার' আগে পড়বে..." এ নিয়ে কতবার যে শুধু 'পোস্টমাস্টার'ই পড়া হয়ে গেছে হিসেব নেই। কম বেশি সবগুলো গল্পই কয়েকবার করে পড়া হয়েছে। তার মধ্যে যে ক'টা গল্পের আকে বাকে মন অবসর পেলেই সবসময় ঘুরে বেড়ায় - একরাত্রি, জীবিত ও মৃত, দেনাপাওনা, মেঘ ও রৌদ্র, নষ্টনীড়, বলাই, পয়লা নম্বর, স্ত্রীর পত্র, শেষের রাত্রি, হৈমন্তী, অপরিচিতা সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ছোটগল্পের যে একটা বিশেষ ব্যাপার আমাদের সকলেরই হয়ত জানা, দু'তিন পৃষ্ঠায় একটা গল্প শেষ হয়ে যায় ঠিক কিন্তু নিঃশব্দে মনের কোথাও রেখে যায় একটা অনিঃশেষ ভাবনা। পায়চারি করতে করতেই কখনও হুটহাট করে মাথায় চলে আসে, "হায় বুদ্ধিহীন মানব হৃদয়! ভ্রান্তি কিছুতেই ঘোঁচে না।'' অথবা, "কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরিয়াও মরে নাই।" আবার কখনও, "শিগগির চলে আয়, এই গাড়িতে জায়গা আছে।"
বলা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আর কিছু না থাকলেও কিছু ছোটগল্প আর গান থেকে যাবে। এই থেকে যাওয়াটা যে শত বছরের পরিধিকে পেরিয়ে সহস্রের কৌটায়, সে অনুমান অমূলক নয়। তবে বাংলা ভাষাভাষী পাঠক হিসেবে গল্পগুচ্ছ বইখানিকে আরো কিছু বইয়ের সাথে স্বর্গে বা নরকে সংগে নিয়ে যেতে চাই।
রবীন্দ্রনাথের গল্পগুলো বিশ্ব সাহিত্য অঙনে বেশ সমাদৃত। গল্পের পটগুলো অনন্য আর এর সাথে মিশেছে বাঙালি জীবনযাত্রার বর্ণিল মাত্রা। সাধারণ জীবন সংসারের গল্প নিয়ে এ সাহিত্যকল্প বোনা। বিদেশী অনুকরণের বালাই নেই। একেবারে দেশি বলা চলে। আর প্রেমকে যেন শিল্পে রূপ দিয়েছেন গল্পকার।
অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে শেষ হইয়াও হইল না শেষ।
-রবীন্দ্রনাথ মানেই অন্য কিছু। এখন পর্যন্ত সম্ভবত তিনি বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ ছোটগল্প লেখক। আর সে সব অসাধারণ গল্পের সংকলন এই বইটি। I would recommend it to anyone at anytime. If you are a native Bangla speaker or at least know Bangla you should read this phenomenal creation. Even for someone who doesn't know Bangla there is translations and those probably deserve a shot as well.
“গল্পগুচ্ছ” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অতুলনীয় সৃষ্টি, যেখানে প্রতিটি গল্প যেন একটি জীবন্ত ছবি, প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে নিহিত অক্ষয় মানবতা ও গভীর অনুভূতি। ঠাকুরের মধুর ভাষায় এক একটি গল্প জড়িয়ে থাকে সময়ের সুর, পৃথিবীর সমস্ত স্নিগ্ধতা এবং ক্ষণিকের দুঃখ। প্রতিটি পৃষ্ঠায় এক একটি নতুন দিগন্ত খুলে যায়, যেখানে প্রেম, বিরহ, শান্তি ও সংগ্রামের সৌন্দর্য ভেসে ওঠে। এই বইটি শুধুই গল্প নয়, এটি একটি মনমোহন একাকিত্বের সঙ্গী, যে কখনো আপনাকে হাসায়, কখনো গভীরভাবে ভাবায়, আর সবশেষে আপনাকে মানব জীবনের অমোঘ সত্যের সামনে দাঁড় করায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি নোবেল পেয়েছিলেন গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থ এর জন্যে।তাকে মনে হয় আরেকবার নোবেল দেয়া দরকার ছিল তার ছোট গল্পের জন্য।তাকে বাংলার সার্থক ছোট গল্পের জনক বলা হয় কেন???সেই উত্তর পাবেন তারই ছোট গল্পের সমাহার "গল্পগুচ্ছ" এ। গল্পগুচ্ছে মোট ৯১ টি ছোট গল্প আছে। এই ৯১ টা গল্প যেন বাংলা সাহিত্যের সৌন্দর্য। এই গল্পগুলিতে আছে হাসি-কান্না, সুখ- দুঃখ,আনন্দ -বেদনা,কষ্ট,মায়া,আবেগ বলতে গেলে জীবনের সকল উপকরণ। সমাজের ছবিও সুন্দরভাবে গল্পে ফুটিয়ে তুলেছে। পোস্টমাস্টার গল্পে রতন-পোস্টমাস্টার এর দূরে থেকেও আত্নীক বন্ধন,ব্যবধান গল্পে বনমালীর প্রতিক্ষা, হৈমন্তী গল্পের অবহেলিত হৈমন্তী,কাবুলিওয়ালা গল্পে আফগান ফল বিক্রেতার সাথে ছোট মেয়ে মিনির ভালবাসার সম্পর্ক, অতিথি গল্পে তারাপদের ফ্যান্টাসি, বলাই গল্পে বৃক্ষপ্রেমী বলাই সহ এই ৯১টা গল্পের সাথে জীবনের মিল হয়তো অর্থও খুজে পাওয়া যাবে।বাংলা সাহিত্যে আন্তন চেখভের মতো ছন্দময় এবং শেষ হয়েও হইল না শেষ এইভাবেই শেষ করেছেন। হয়তো বাকি কথা পাঠক এর জন্যে রাখা।