প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর আদিত্য মজুমদার এর প্রথম আত্মপ্রকাশ এই বইতে। লেখক অভিরূপ সরকার পেশায় অর্থনীতিবিদ। মনে করেন গোয়েন্দা উপন্যাস লেখার সাথে তাত্ত্বিক অর্থনীতি গবেষণার মিল আছে। এখানে দুটি উপন্যাস সঙ্কলিত হয়েছেঃ-
আনকোরা গোয়েন্দাদের খোঁজে বইপাড়া ঘোরার অভ্যেস থাকলে, আদিত্য মজুমদারের সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করতেই পারেন। বিত্তবান পরিবারের ছেলে আদিত্য। বাবার মৃত্যুর পর, ধার-দেনা সব চুকিয়ে, সর্বস্বান্ত হয়ে শখের টিকটিকি হওয়া। এহেন গোয়েন্দাকে কেন্দ্র করে, অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের কলমে, দুটো ছিমছাম রহস্য গল্পের সংকলন এই বইটি। মাসখানেক পূর্বে পড়া থাকলেও, বইটির স্তিমিত রেশ মনে রয়ে গেছে। তাই কটা কথা বলা।
অনেকটা জম্পেশ থ্রিল আশা করে এগোলে হতাশ হবেন। এই জিনিসে প্রভূত পরিমাণে বুদ্ধি ও চিন্তার খোরাক মেলবে না বলাই বাহুল্য। তবে লেখকের জমাট লেখনী ও ওয়ার্ল্ড বিল্ডিংয়ের প্রভাবে, সবটা পড়ে যাওয়া যায়। আদিত্যের মক্কেল ও কেস-সমূহ খুব একটা বাস্তবসম্মত নয়। কোথাও গিয়ে পুরনো ধাঁচের গোয়েন্দা গল্পের কথা মনে করায়। বড়লোক সব নিয়োগকারী, পুলিশমহলে উচ্চপদস্থ বন্ধু, ইত্যাদি, ইত্যাদি। ২০১৮-১৯র পটভূমিকায় লেখা হলেও, গল্পগুলোতে গত-দশকের ছোয়া।
সেই নিরিখে, হালফিলের বাস্তবনুরাগী সব রহস্যভেদীদের ভিড়ে আদিত্য কিছুটা বেমানান। শখের টিকটিকিদের একচেটিয়া গলা-ধাক্কা ও গালমন্দ, থেকে কিছুটা হলেও সে বঞ্চিত। তবে আমাদের গোয়েন্দার কর্মপদ্ধতি কষ্টকল্পিত নয়। এখানেই লেখক পরীক্ষায় উৎরেছেন। কোনো বাস্তবের ইনভেস্টিগেটরের মতনই, দিনের পর দিন, এক দরজা থেকে আরেক দরজায় ঘুরে বেড়ায় আদিত্য মজুমদার। মোটের ওপর কেস আসে না তার ঘিঞ্জি আপিসে। উপন্যাসের নায়কের মতন ঘড়ির ব্যান্ডের তলায় চামড়ার রং দেখে, রহস্যভেদ করার ক্ষমতা নেই যে তার।
অন্ধকার ঘরে বসে, দার্জিলিং চায়ের কাপে বা সস্তার সিগারেটের প্যাকেটেই ভাবনার খোরাক মেলে বেশি। তাই সবটা ঘটে ধীরেসুস্থে। একঘেয়ে কথোপকথন, পুনরাবৃত্তির প্রকোপ, সরগমের কলতান ও অপরাধের কুম্ভিপাকে পা ডুবিয়ে, সত্যের দোরগোড়ায় পৌঁছয় আদিত্য। যা ক্লান্তিকর, তবে বাস্তবসম্মত। যা চাইলে, বাজারে আরো হাজারটা বুদ্ধিদীপ্ত গোয়েন্দা কাহিনীর ভিড়ে, একবার পড়াই যায়। (তবে পারলে দ্বিতীয় গল্পটি আগে পড়বেন। টাইমলাইন অনুযায়ী, ওটাই সিরিজের প্রথম কাহিনী। দুটোকে এভাবে আগে-পিছে রাখবার কোনো মানে দেখলাম না।)
আদিত্য মজুমদারের দু'টি রহস্য উপন্যাস রয়েছে এই বইটিতে। কালানুক্রমে সাজালে প্রথমেই আসবে 'ভূতুড়ে টেলিফোন'। আপাতদৃষ্টিতে সন্দেহ এবং আশঙ্কা দিয়ে শুরু হওয়া এই কাহিনি বেশ সন্তোষজনক ভঙ্গিতে ঘনীভূত হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পাঠকের জন্য অনেক মশলা দিয়ে বেশ যত্নে রাঁধা হয়েছে এটিকে। তবে এর পরিণতি বড়ো দ্রুত এবং সরলভাবে হল। পরের (আসলে বইয়ের প্রথম) কাহিনি হল 'চৌধুরি বাড়ির রহস্য।' একটি আশঙ্কা এবং কয়েকটি দুর্ঘটনা দিয়ে শুরু হওয়া কাহিনি ক্রমে প্রথম তিন রিপুর অঙ্গুলিহেলনে ঘোরতর রক্তিম আকার নেয়। এমনিতে ফার্স্ট ক্লাস গল্প; শুধু পরিণতিটা কিঞ্চিৎ ডিলে। খুব সুন্দর লেখা, তবে বেশ কিছু তথ্যগত ভ্রান্তি আছে। লেখক ২০১৮-র পটভূমি দাবি করে যে কলকাতার ছবি এঁকেছেন, তা আদতে প্রাচীনতর। তবে ওগুলো উপেক্ষা করলে এই বইটি কিন্তু দারুণ। সুযোগ পেলেই পড়ে ফেলুন।
The Mistry of Chowdhury's (চৌধুরী বাড়ির রহস্য) by Avirup Sarkar
Aditya met Sohini because she was concerned for her mother. She thought someone wanted to kill her mother and needed Aditya to investigate the matter. Sohini's mother, Mandakini Devi, was an actress. She married a second time to a rich businessman, Mr. Chowdhury, leaving Sohini's father and her first husband, Nilanjan. Mr. Chowdhury had two children from his first marriage: Shankhadeep and Shankhamala. Mr. Chowdhury was unhappy due to his children. His only son, Shankhadeep, was a belligerent, rude, and addicted person, so there was no hope for him to continue the business empire. On the other hand, Shankhamala married her poor singing teacher.
Soon, Mr. Chowdhury died of a heart attack, and now Mandakini's life was in danger.
Mandakini's car was found at a gorge in Jalpaiguri. The car was wrecked, but no bodies were found, neither hers nor her driver's. All the Chowdhury family members were called by the solicitor to announce the will. Mandakini had made a will stating that if she died an unnatural death, no one would get any money from the property. Instead, all the property would be transferred to an NGO. Later that day, Shankhadeep was killed. After some days, Mandakini's and her driver's bodies were found at a secluded farmhouse. They had been shot dead at point-blank range.
Aditya revealed everything:
Though Nilanjan and Mandakini evinced bitterness between them in front of everyone, the reality was just the opposite. Nilanjan was a theatre artist and met Mandakini there. They fell in love and married. As per Sohini's description, they never fought with each other; moreover, Mandakini was very obedient to Nilanjan. The sudden fighting between her parents seemed unnatural to Sohini. Soon after, Mandakini married Mr. Chowdhury. Everyone blamed Mandakini for cheating on her husband, but unbeknownst to society, it was Nilanjan's plan all along. Nilanjan was suffering from a lack of money, so he devised a plan to solve this problem once and for all.
After marriage, Mr Chowdhury wanted a boy to run his business, but he couldn't perform in bed due to his old age. So, Mandakini brought him to an Ayurvedic doctor. She gave him this medicine continuously. According to the doctor, the medicine could not be given to a heart patient, and Mandakini and Nilanjan knew it would work as a slow poison. It happened just as they had planned; Mr. Chowdhury died of a heart attack.
Now their goal was to confiscate all the property, so they staged some murder attempts on Mandakini. But there was a problem—Shankhadeep. He found out that his father's death was a conspiracy. He started to threaten Mandakini, so he was killed. She had changed the will to transfer the property to an NGO, which was fake. They staged the car crash to corroborate her death.
But little did they know that Shankhadeep had a girlfriend, Martha Savio, to whom he had told everything. After Shankhadeep's murder, she knew who had killed him. She surmised that all these incidents were staged and that Mandakini's death was also part of the plan. She found their address and shot them point-blank to take her revenge. The driver was Nilanjan in disguise.
🌼📖বইয়ের নাম - চৌধুরি বাড়ির রহস্য📖🌼 ✍️লেখক - অভিরূপ সরকার 🖨️প্রকাশক - দীপ প্রকাশনী 🧾পৃষ্ঠা সংখ্যা - ৩০৪ 💰মূল্য - ৩০০₹
🌼📚এই বই তে দুটি উপন্যাস রয়েছে 📚🌼
🕯️🏚️চৌধুরি বাড়ির রহস্য🏚️🕯️ কাক ভোরে টেলিফোন আসে আদিত্য মজুমদারের কাছে, মক্কেলের নাম সোহিনী মৈত্র। সোহিনী মৈত্র র মা প্রাক্তন অভিনেত্রী তথা চৌধুরি এন্টারপ্রাইজেস-এর কর্ণধার “মন্দাকিনী চৌধুরি” যার ছবি রোজই খবরের কাগজে দেখা যায়। সোহিনী র ধারণা কেউ খুন করতে চাইছে মন্দাকিনী চৌধুরিকে। তাই মা এর প্রোটেকশনের জন্য আদিত্যর কাছ থেকে সাহায্য চায় সোহিনী। সোহিনী জানতে চায় , সত্যিই কি কেউ মন্দাকিনী চৌধুরি খুন করতে চায়? কে চাইছে ? কেনোই বা চাইছে? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো কাহিনী!জানতে হলে অবশ্যই এই রহস্যময় উপন্যাস টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। পড়ার সময় পাঠক বুঝতেই পারবে না খুনি কে! সেই খুনিকেই খুঁজতে খুঁজতে এগিয়ে চলবে এই উপন্যাস!
💡☎️ভূতুড়ে টেলিফোন☎️💡
এই ক'দিনে বুঝে গেছে আদিত্য মক্কেল বস্তুটা তার জীবনে কী ভীষণ দুর্লভ। হঠাৎ ই একদিন জিতেন্দ্রনাথ দত্ত তার সঙ্গে দেখা করতে আসে এবং তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা বলতে থাকে ( দশ বছরেরও বেশি হয়ে গেল মারা গিয়েছে,মেয়ে তখনও ইশকুলে পড়ে। মেয়ে মাধ্যমিক পাশ করতে না করতে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন।মেয়ের বিয়ের পর খুবই একা হয়ে পড়েছিলেন জিতেন্দ্রনাথ, জিতেন্দ্রনাথ বয়স তিপ্পান্ন, বছর তিনেক আগে আবারো একটা বিয়ে করেছেন! দ্বিতীয় স্ত্রী “বকুল” বিয়ের পর বছর দুয়েক বেশ ভালোই কাটল। আর তারপরেই শুরু হল ঝামেলা)। বাড়িতে ভূতুড়ে টেলিফোন আসতে শুরু করে , প্রত্যেকদিন অন্তত দশ-পনেরোবার টেলিফোন আসে। ফোন তুলে হ্যালো বললে সঙ্গে সঙ্গে কেটে দেয়। জিতেন্দ্রনাথ বাবু ভয় পায়, তার স্ত্রীকে কেউ ব্ল্যাকমেইল করছে গোপনে এই টেলিফোনের মাধ্যমে ! বকুলকে কি সত্যি সত্যি কেউ ব্ল্যাকমেল করছে ? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো গোপন রহস্য?? এই কেসটা আদিত্য নেয় , আদিত্য কি পারবে এই রহস্যময় টেলিফোন এর রহস্য সমাধান করতে জানতে হলে অবশ্যই উপন্যাস টি পড়তে হবে!
বইটার নাম ডাক অনেকই শুনেছিলাম তাই পড়ার আগ্রহ টা বেশ অনেকদিনের ছিল । একবার ভেবেছিলাম সানডে সাসপেন্স থেকেই শুনে নেব। সময় বাঁচবে কিন্তু আমি একটু অদ্ভুত ধরনের খুঁতখুঁতে মানুষ। যতক্ষণ না একটা গল্পের দারি, কমা অবধি জানছি ততক্ষণ শান্তি পাই না। তাই স্বভাবতই একদিকে বই পড়তে শুরু করি আর একদিকে শুনতে শুরু করি।
একঘন্টা শোনার পরেই বুঝেছি আমি বই টা পড়াই বেটার। এবার বই এর ব্যাপারে বলি।
এককথায় অনেকদিন পরে একটা বাংলা বই পড়ে বেশি ডিটেকটিভ ফিল পেয়েছি। হ্যাঁ, অনেকই বলতে পারে বাংলায় কত বই আছে। অবশ্যই আছে কিন্তু সবাই তো সব ভালোবাসে না। তাই ঠিক যেরকম ভাবে আমি শার্লক হোমস্ এর থেকে hercule Poirot ভালবাসি , সেই রকম ভাবেই অন্যান্য কিছু বাংলা ডিটেকটিভ পরে এই আদিত্য কে আমার ভালো লেগেছে। সাধারণ, স্বাভাবিক আর আমার মত।
অতিরিক্ত ইন্টেলেকচুয়াল নয় । অন্য বই গুলো পড়তে আগ্রহী রইলাম ।
গোয়েন্দা হিসেবে আদিত্য মজুমদারের আবির্ভাব ঘটে 'ভূতুড়ে টেলিফোন' গল্পে। কিভাবে পড়তি জমিদার বংশের ছেলে পেটের দায়ে গোয়েন্দা হলো, সেই ব্যাকগ্রাউন্ডটা বেশ ভালভাবে এসেছে। রহস্যটাও মন্দ না। তবে বেশি ভাল 'চৌধুরী বাড়ির রহস্য' গল্পটা। সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা, অতীত আর বর্তমান খুন মিলে জমজমাট গল্প। শেষের ট্যুইস্টটাও আরোপিত লাগেনি। সব মিলিয়ে ৩।