খানিকটা দূরে কয়েকটি চতুষ্পদ প্রাণী তাদের চারপায়ের ওপর ভর করে তাঁর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কী বিচিত্র এই প্রাণীটি আর কী বিচিত্র তার দৃষ্টি তাঁর সময়ে কখনো তিনি এই ধরনের কোনো প্রাণী দেখেন নি।
প্রাণীগুলো একধরনের হিংস্র শব্দ করতে করতে হঠাৎ চারপায়ে ভর করে তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে ....
আজহার ত্রুদ্ধ চোখে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে, দেখে মনে হল পারলে সে বুঝি তখনই চাঁদটাকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে। মুখ ভেংচে বলল, “দেখেন তাকিয়ে ...
মহিলাটা ডায়ালটা বেশ খানিকটা ঘুরিয়ে সুইচটা টিপে ধরতেই মানুষটা চেয়ার থেকে লাফিয়ে বের হয়ে আসার চেষ্টা করে, থরথর করে সারা শরীর কাঁপতে থাকে ...
সূচি
মুহম্মদ জাফর ইকবালের দশটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর সংকলন।এই বই-এর গল্পগুলো হল: - ১) অক্টোপাসের চোখ ২) কাবিনের জীবনের একটি দিন ৩) চাঁদ ৪) প্যারামন ৫) সিনাপ্সুঘুটিয়া ৬) এক্সপেরিমেন্ট ৭) মহাকাশযান টাইটুন ৮) স্মৃতি ৯) সাহস ১০) জিনোম জনম
Muhammed Zafar Iqbal (Bengali: মুহম্মদ জাফর ইকবাল) is one of the most famous Bangladeshi author of Science-Fiction and Children's Literature ever to grace the Bengali literary community since the country's independence in 1971. He is a professor of Computer Science & Engineering at Shahjalal University of Science and Technology (SUST). Before that, Iqbal worked as a research scientist in Bell Communication Research for six years until 1994.
Birth and Family Background: Iqbal was born on 23 December 1952 in Sylhet. His father, Foyzur Rahman Ahmed, was a police officer. In his childhood, he traveled various part of Bangladesh, because of his father's transferring job. Zafar Iqbal was encouraged by his father for writing at an early life. He wrote his first science fiction work at the age of seven. On 5 May 1971, during the liberation war of Bangladesh, the Pakistan's invading army captured his father and killed him brutally in the bank of a river.
Education: Iqbal passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1968 and HSC exam from Dhaka College in 1970. He earned his BSc in Physics from Dhaka University in 1976. In the same year Iqbal went to University of Washington to obtain his PhD and earned the degree in 1982.
Personal Life: Iqbal married Dr. Yasmeen Haque in 1978. Yasmeen is the Dean of the Life Science Department, Head of the Physics Department, Provost of the Shohid Janoni Jahanara Imam Hall and a researcher at SUST. They have two children - son Nabil and daughter Yeshim. Yeshim translated the book Amar Bondhu Rashed (Rashed, My Friend) written by her father. Iqbal's elder brother, Humayun Ahmed, was the most popular author and film-maker of Bangladesh since its independence. Humayun died after a nine-month struggle against colorectal cancer on the 19 July 2012. His younger brother, Ahsan Habib, is the editor of the satirical magazine, Unmad and one of the most reknowned cartoonist of Bangladesh.
Academic Career: After obtaining PhD degree, Iqbal worked as a post-doctoral researcher at California Institute of Technology (CalTech) from 1983 to 1988. He then joined Bell Communications Research (Bellcore), a separate corporation from the Bell Labs (now Telcordia Technologies), as a Research Scientist. He left the institute in 1994 and joined the faculty of the Department of CSE of SUST.
Literary career: Iqbal started writing stories from a very early age. Iqbal wrote his first short story at the age of seven. While studying in the Dhaka University Iqbal's story Copotronic Bhalobasa was published in a local magazine. But, a number of readers at that time felt that the story was based on a foreign story. To answer this allegation, he later rewrote the story and published the story in collection of stories named Copotronic Sukh Dukkho. Since then he is the most popular writer both in Bengali Science-Fiction and in Juvenile Leterature of the country.
Other Activities and Awards: Zafar Iqbal won the Bangla Academy Award, the highest award in literature in Bangladesh, in 2004. Iqbal also played a leading role in founding Bangladesh Mathematical Olympiad. In 2011 he won Rotary SEED Award for his contribution in field of education.
এপার বাংলার পাঠকদের দুর্ভাগ্য অনেক। রাষ্ট্রের তরফে চাপানো হিন্দি, বাজারের অমোঘ নিয়মে অপ্রতিরোধ্য ইংরেজি, এমনকি জামাত-প্রেমী রাজ্য সরকারের মদতপুষ্ট উর্দু, এইসব কিছু উপেক্ষা করে স্রেফ ভালোবাসার টানে সে বাংলা বই পড়ে। সেখানেও, লবি-বাজ কুলেখকদের দেওয়া পিটুলিগোলা সজ্ঞানে গিলে তাকে দুগ্ধপানের কল্পনা করতে হয়। এই ব্যাপারটা সবথেকে বেশি দেখা যায় কল্পবিজ্ঞান বা বিজ্ঞান-আধারিত লেখার ক্ষেত্রে। আজ, এই বইটা পড়ে "এতোদিন কোথায় ছিলেন"-এর পাশাপাশি এই দুঃখটাও মনে চাগাড় দিল। এই বই-এর গল্পগুলো হল: - ১) অক্টোপাসের চোখ ২) কাবিনের জীবনের একটি দিন ৩) চাঁদ ৪) প্যারামন ৫) সিনাপ্সুঘুটিয়া ৬) এক্সপেরিমেন্ট ৭) মহাকাশযান টাইটুন ৮) স্মৃতি ৯) সাহস ১০) জিনোম জনম এর মধ্যে মাত্র এক পাতার অণুগল্প যেমন আছে, তেমনই আছে বই-এর প্রায় অর্ধেক জুড়ে থাকা একটি নভেল্লা। আছে দুঃখ, বিস্ময়, হতাশা, ক্রোধ, আনন্দ আর আশা। আর সব থেকে বেশি করে আছে এক বিচক্ষণ মানুষের স্বচ্ছ দৃষ্টিতে দেখা আর স্বচ্ছতর ভাষায় প্রকাশ করা অনুভব।
আমি ভাগ্যবান, তাই বইটা পড়ার সুযোগ পেলাম। কিন্তু কলকাতা তথা কলেজ স্ট্রিটে আবদ্ধ বাঙালি যে কবে পিটুলিগোলা ছেড়ে এই দুধের সন্ধান পাবে, কে বলতে পারে?
মুহম্মদ জাফর ইকবাল ইদানীং ছাইপাঁশ সায়েন্স ফিকশন আর কতগুলো ক্লিশে বাণিজ্যিক শিশুসাহিত্য লিখলে ও শুরুতে উনি কিন্তু চমৎকার লিখতেন।বাংলাদেশে কিশোরদের কাছে সায়েন্স ফিকশনের জনপ্রিয়তার প্রধান নিয়ামক কিন্তু উনিই। কৈশোরকালে উনার লেখা পড়েই বিজ্ঞান নিয়ে পড়বার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিলো। ৯০ দশক থেকে ২০১০ পর্যন্ত প্রায় সব লেখা উনার চমৎকার।এরপরই লেখা ক্লিশে হতে শুরু করে।
অক্টোপাসের চোখ ' ১০ টি অনবদ্য সায়েন্স ফিকশন গল্পের সংকলন। গল্পগুলো সব কল্পবিজ্ঞান হলে বিষয়বৈচিত্র পাঠককে মুগ্ধ করবে। গা শিউরে উঠার মতো গল্প থেকে অদ্ভুত কমিক্যাল গল্প। জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশনের অন্যতম মুগ্ধকর দিক হচ্ছে মানুষের প্রতি লেখকের অপরিসীম ভালোবাসা।উনার সব গল্পের চরিত্রগুলোরই মানবিকতা পাঠকমের মন স্পর্শ করে,হোক সে চরিত্র রোবট কিংবা ভীনগ্রহের কোন প্রাণী।মানবতার উন্মেষ সম্পর্কে লেখকের পরম ইতিবাচক দৃৃষ্টিভঙ্গী আশাহত দেয়না কখনো আমাকে।
অক্টোপাসের চোখ' পড়ে লেখকের প্রতি পুনরায় মুগ্ধতা বাড়লো।বইটি মিস করা কারো উচিত নয়।বিশেষ করে ' চাঁদ' নামের গল্পটি তো একদমই না।এমন উদ্ভট কমিক্যাল কিন্তু মজার গল্প কখনো পড়িনি আমি।
অক্টোপাসের চোখ নয়টি গল্প এবং একটি ছোট উপন্যাসের সংকলন। গল্প গুলো হল ১) অক্টোপাসের চোখ ২) কাবিনের জীবনের একটি দিন ৩) চাঁদ ৪) প্যারামন ৫) সিনাপ্সুঘুটিয়া ৬) এক্সপেরিমেন্ট ৭) মহাকাশযান টাইটুন ৮) স্মৃতি ৯) সাহস ১০) জিনোম জনম
বইয়ের মূল আকর্ষন বলতে গেলে জিনোম জনম ছোট উপন্যাসটি। যেখানে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন সিনারিও দেখানো হয়েছে। অনেক বছর পরের আধুনিক সমাজে এখন আর মানুষ প্রাকৃতিক উপায়ে জন্মায় না, শুধু তাই নয় মানুষের জিনোমে জিনের সজ্জাও ইচ্ছে মত পরিবর্তন করে মহামানব বানায়ে দেওয়া যায়। অপর এক সিনারিও যেখানে নিম্ন অঞ্চলের মানুষেরা দরিদ্র অর্থের অভাবে তাঁদের এইসব সুযোগ নেই, তেমনি এক দম্পতি চিরাচরিত প্রাচীন নিয়মে জন্ম দেয় খুবই সাধারন একজন ছেলেকে। এই জেনেটিক্যালি মডিফাইড শিশু আর সাধারন শিশুর দেখা হবার মধ্য দিয়ে কাহিনী মোড় নেয়।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ছোট উপন্যাসটি ছাড়া বাকি সব গুলো গল্পই কেন জানি খাপ ছাড়া একটা ভাব আছে, অনেকটা যাস্ট লিখতে হবে তাই এমন মনে হয়েছে।
অক্টোপাসের চোখ জাফর ইকবাল স্যারের সায়েন্স ফিকশন গল্প সংকলন। মোট নয়টি গল্প এবং একটি উপন্যাসিকা নিয়ে এই বই। বইটা আমি প্রথম পড়ি ক্লাস সেভেনে পড়ার সময়। তারপর অসংখ্যবার পড়েছি।
মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নেওয়া হলো বিজ্ঞান আকাদেমির সভায়। দুইশ’ হাজার বছর আগের হোমোস্যাপিয়েন্স বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বর্তমান মানুষের পর্যায়ে এসেছে। এই বিবর্তনটুকু পুরোপুরি এসেছে প্রকৃতি এবং পরিবেশের প্রভাবে, স্বাভাবিকভাবে। কিন্তুএখন বিজ্ঞানের মহিমায় মানুষকে আর বিবর্তনের উপর নির্ভর করতে হয় না।মানুষের ভেতর ইচ্ছেমতো যেকোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের সকল সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে একশ বছর ধরে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা হলো মানুষের মধ্যে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে হস্তক্ষেপের ফল কি আদও ভালো হয়, এই নিয়েই প্রথম গল্প অক্টোপাসের চোখ।
কাবিনের জীবনের একটি দিন একটি ভবিষ্যতের গল্প। প্রথম থেকে গল্পের গতিপথ একরকম থাকলেও শেষে একেবারেই বদলে যায়। শেষ পাঁচ লাইন পড়ার পরই গল্পের প্রকৃত অর্থ অনুভব করা যায়। এটি একইসাথে সফলতা এবং হতাশার গল্প।
চাঁদ এই বইতে আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প। প্রকৃতির প্রতিশোধ বলতে যা বোঝায়, ঠিক তাই নিয়েই এই গল্প।
জাফর ইকবাল স্যারের সায়েন্স ফিকশন গুলোর মধ্যে একটা পরিচিত ধরন হল ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি এবং এর ওপর মানুষের সম্পূর্ণ নির্ভরতার কুফল। মানুষের মস্তিষ্কের দুটি অংশ, একটা অংশ থাকে মাথার করোটির ভেতর, আরেকটা বাইরে; অর্থাৎ পৃথিবীর সকল তথ্য ভান্ডার। যদি বাইরের এই তথ্যভান্ডারকে মস্তিষ্কের সাথে সরাসরি যুক্ত করা যায়, তবে মানুষের কর্মক্ষমতা বাড়বে শতগুণ। যে যন্ত্র এই কাজ করবে তার নাম প্যারামন। কিন্তু খোদার ওপর খোদকারীর ফল কি আদও ভালো হয়?
সিন্যাপ্সুঘুটিয়া এই বইয়ের একমাত্র হালকা ধাচের গল্প। এটা ছাড়া সব গল্পই বেশ সিরিয়াস। চোরের ওপর বাটপারি ধরণের গল্প, ভালো লেগেছে।
পদার্থ-প্রতিপদার্থ নিয়ে লেখা ছোট্ট একটি গল্প মহাকাশযান টাইটুন। ”যদি কোনো মহাজাগতিক মানুষ করমর্দন করার জন্য ভুল হাত এগিয়ে দেয়, তার সাথে করমর্দন কোরো না।”
সহস্র বছর ধরে অসংখ্য মানুষের স্মৃতিতে আশ্রিত এক এলিয়েনের গল্প স্মৃতি।
আমার পড়া সবচেয়ে ছোট সায়েন্স ফিকশন গল্প সাহস। আহামরি কিছু না হলেও বেশ ভালো লেগেছে।
বইয়ের প্রায় অর্ধেক জুড়ে আছে জিনোম জনম নামের ছোট্ট একটা নভেলা। একসময় মানুষের প্রতিভা নির্ভর করত অনেকটা ভাগ্যের ওপর। তবে এখন আর এজন্য মানুষকে ভাগ্যের ওপর নির্ভর করতে হয় না। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াররা জন্মের আগেই সন্তানের মধ্যে কাঙ্খিত গুণের বিকাশ ঘটাতে পারেন। তবে এটা প্রচন্ড ব্যয়বহুল; যেকারণে নিম্নাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ শিশুর জন্ম দিতে পারে না। কিন্তু জোরপূর্বক কি কাওকে মহাপুরুষ বানানো যায়? একজন সাধারণ এবং আরেকজন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে জন্ম দেওয়া কিশোরের মাধ্যমে সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজেছেন লেখক।
'অক্টোপাসের চোখ' এ রয়েছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা কল্পবিজ্ঞান ধর্মী নয়টি ছোটগল্প ও একটি নভেলা। নভেলাটি বাদে সবগুলো গল্পে যে মিলটি রয়েছে তা হলো নতুনত্ব ও ভিন্ন ধরণের টুইস্ট।
টাইটুলার গল্প 'অক্টোপাসের চোখ' মানুষের প্রাকৃতিক বিবর্তনের পরিবর্তে জোর করে জিনোমে কৃত্রিম পরিবর্তন ঘটিয়ে পারফেক্ট স্পিশিস তৈরীর চেষ্টা ও তার ভয়াবহ ফলাফল নিয়ে লেখা।
'কাবিনের জীবনের এক দিন' লেখা অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে থাকা এক ডিসটোপিয়ায় সাধারণ জনতা ও স্বার্থবাদী কোম্পানির দ্বন্ধ নিয়ে।
'প্যারামন' একটি ছোট্ট যন্ত্র নিয়ে লেখা, যা মানবমস্তিষ্ককে আউটার নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করে। অতিরিক্ত প্রযুক্তিনির্ভরতার বিপদ কে এই গল্পে মেটাফোর হিসাবে দেখানো হয়েছে।
সিনাপ্সুঘুটিয়া একটি রম্য গল্প। অতি চালাকের গলায় দড়ি টাইপ।
এক্সপেরিমেন্ট একটা চেইন আকারের গল্প, মানুষের পারস্পরিক এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে। আর সাহস বইটির সবচে ছোট্ট গল্প। সাহস ক্রমশঃ বাড়তে থাকলে সাহসী ব্যক্তি সাহসের যোগানদাতার ওপরও সাহস দেখিয়ে ফেলে - তা নিয়ে লেখা।
জিনোম জীবন একমাত্র নভেলা। দূর ভবিষ্যতে ধনীদের ঘরে পারফেক্ট জিনোম ম্যানিপুলেশন দ্বারা তৈরী পৃথিবীর বারোটি অতিমাত্রার মেধাবী শিশু, আর এদের সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে পাহাড়-জঙ্গল-হ্রদে হেসেখেলে বেড়ে ওঠা এক গরিব ঘরের শিশুকে নিয়ে লেখা নভেলাটি। সে ভবিষ্যতে স্বাভাবিক ভাবে দশমাস গর্ভধারণের পর শিশু ভূমিষ্ট হয়না। চার মাসের মাথায় ভ্রূণটিকে বের করে কৃত্রিম ভাবে বড় করে তোলা হয়। টাকা থাকলে জন্মের আগেই জিনোম ম্যানিপুলেট করে আগত শিশুটির মেধা, ক্ষমতা, শারীরিক গঠন ঠিক করে ফেলা যায়। সেই ভবিষ্যতে ধনী গরিবের চরম বৈষম্য, গরিবের সন্তান ধারণ করার জন্য দিতে হয় বড় অংকের টাকা। সেই ভবিষ্যতে দুই বিপরীতধারার শিশুদের মিলন নিয়ে লেখা নভেলাটি। মানুষ কাড়ি কাড়ি টাকা ঢাললেও, সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর প্রোগ্রামিং করলেও যে শিশুর চরিত্র, চিন্তাচেতনা নিজের মত কন্ট্রোল করা পসিবল না, বরং চারদেয়ালের বাইরে পরিবেশের সাথে মিলেমিশেই সে নিজের মানসিকতা চরিত্র গঠন করবে - এটাই নভেলার প্রতিপাদ্য।
আমার সবচে ভালো লেগেছে 'চাঁদ', 'মহাকাশযান টাইটুন' ও 'স্মৃতি'।গল্পগুলো ইউনিক। উপগ্রহ চাঁদের সাথে এক মানুষের ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নিয়ে লেখা চাঁদ। 'মহাকাশযান টাইটুন' ম্যাটার এন্টিম্যাটারের রিয়েকশন নিয়ে লেখা। আর 'স্মৃতি' লেখা এমন এক এলিয়েন কে নিয়ে, যে এক মানবমস্তিষ্ক থেকে আরেক মানবমস্তিষ্কে hopping করার মাধ্যমে বা নিজেকে ট্রান্সফার করার মাধ্যমে হাজার হাজার বছর ধরে বেঁচে আছে। সহজধারার এলিয়েনের কনসেপ্ট থেকে এটি অনেকটাই ভিন্ন। আমরা সবসময় ফিজিকাল দিকটা নিয়ে ভাবি, কিন্তু এলিয়েন যে ফিজিকাল না হয়ে একটি কনসেপ্ট, একটি থট হতে পারে তা আমরা ভাবিনা৷
অনেককেই বলতে শুনেছি মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখা গুলো ছেলেমানুষিতে ভরা, একেবারেই বাচ্চাকাচ্চা শিশু-কিশোরদের জন্য লিখা। কিন্তু আমি আবিষ্কার করলাম এই বুড়ো বয়সেও যথেষ্ঠ আনন্দ নিয়ে আমি তাঁর লেখা বইগুলো গোগ্রাসে গিলছি। কথা হচ্ছে সবচাইতে কঠিন বাস্তবতা দেখাতে হবে এমন তো না। তাঁর বইগুলোতে মানুষের ভালো দিকটা ফুটিয়ে তুলার একটা ব্যাপার লক্ষ করলাম। আশার আর স্বপ্নের একটা জগতের ইশারা পাওয়া যায় তার লেখায়।
এই গল্পগুচ্ছের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প জিনোম জনম। একদল মানুষ একজন মানুষের জন্য সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নিজেদের মধ্যে মনুষ্যত্বের বীজ বপন করেছে - তা দেখে মনে এক ধরনের আনন্দ হয়। খুব ভালো লেগেছে গল্পটি।
মনুষ্যত্বের জয় হোক। মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসা বেঁচে থাকুক।
Oh my god I just remember this, there's was this girl named JUMA in my class, sharpest eyes, short hair, always smiling. She got this book as a gift and before even reading it she gave it to me " tumi poroo adrita, I know u love sci-fi. Pore dio just take it!!" 😭
এর ৯ টি গল্প থেকে জিনোম জনম টা সবচেয়ে বেশি আর্কষনীয়।ছোট ও বড় সম্প্রদায় নিয়ে লেখা।সাথে তো আছে সাইনটিফিক বিষয়। মানে সবটাই ধারুন।বাকি গুলো তেমন সন্দুর না। জিনোম জনমটাই সবচেয়ে সন্দুর লাগছে।
বইটার শুরুর দিকে ভালই ছিল কিন্তু তারপর , প্রত্যেকটা গল্পের শেষে একেবারে কেমন জানি হয়ে গেছে। সবগুলোই আশাহীন ! একেবারে সবাই মারা যাচ্ছে! উদ্ভট লেগেছে আমার কাছে।
দশটি সায়েন্স ফিকশনধর্মী গল্পের গল্প সংকলন। বইয়ের শুরুর গল্প 'অক্টোপাসের চোখ' মোটামুটি ভালোই লেগেছে। 'সিনাপ্সুঘুটিয়া' গল্পটার মত কিছু ব্যাপার বোধহয় হুমায়ূন আহমেদের কোনো বইতে পড়েছিলাম। 'জিনোম জনম' গল্পটা বইয়ের সবচাইতে বড় গল্প। শুরুর দিকে ইন্টারেস্টিং বলে মনে হচ্ছিলো। খানিক পরে ইন্টারেস্ট হারিয়ে ফেলতে থাকি। বইয়ের বাকী গল্পগুলো চলনসই, খুব একটা ভালো বলা যাবে না।
এবার অন্য একটি প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলি। ফেসবুকে যারা টুকটাক লেখালেখি করে, তাদের প্রায়ই একটা কথা শুনতে হয়। আর তা হলো- আরে এই লেখাটা হুমায়ূন আহমেদের মত হইছে, লেখার ভেতর হুমায়ূন আহমেদের গন্ধ পাচ্ছি, হুমায়ূন আহমেদকে ফলো করা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার নিজেকেও কয়েকবার শুনতে হয়েছে। যাই হোক, আজ মুহাম্মদ জাফর ইকবালের এই বইটা পড়তে গিয়ে মনে হলো, হুমায়ূন আহমেদের লেখার প্রভাব যদি কারো মধ্যে সবচাইতে বেশী থেকে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তিটা হচ্ছেন উনি। তার লেখায় হুমায়ূন আহমেদের স্টাইলটা ইচ্ছাকৃতভাবে এসেছে নাকি অনিচ্ছাকৃতভাবে, সেটা নিয়ে বিতর্কে যেতে চাই না। সেটা লেখক নিজেই ভালো বলতে পারবেন। তবে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখায় হুমায়ূন আহমেদের মত আকর্ষণ ধরে রাখার ব্যাপারটা অনুপস্থিত।