—“ফোবিয়ান্স নামটা সার্থক স্যার! সবার জন্যই মূর্তিমান ফোবিয়া ছিল ওরা!” একশো এক বি হস্টেল রুম, জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ—হন্টেড রুম নামে পরিচিত। ত্রিশ বছর আগে শ্রেয়স নামের একটি ছেলের রহস্যময় মৃত্যু ঘটে সেই রুমে। তার দশ বছর পরে ঐ ঘরে ঘটে আরও একটি মৃত্যু। দু'জনেরই মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়াক ফেইলিওর বা হার্ট অ্যাটাক।
অধিরাজদের কাছে গোপনসূত্রে খবর আসে, সুপারি কিলার কালিয়া সুপারি পেয়েছে মাস-মার্ডারের। কিন্তু কালিয়া কিছু করার আগেই রহস্যজনকভাবে মৃত্যু ঘটছে তাদের। হয় কার্ডিয়াক ফেইলিওর বা হার্ট অ্যাটাক, নইলে অ্যাক্সিডেন্ট। ফরেনসিক রিপোর্ট বলছে স্বাভাবিক ডেথ, কমন ফ্যাক্টর শুধু একটাই—সকলেই মরার আগে প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলেন।
অতীত কি তবে আবার ফিরে আসতে চাইছে বর্তমানে? ওদিকে নিখোঁজ হল এক হসপিটালের মর্গের অ্যাটেনডেন্ট। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল টাকা ভর্তি ব্যাগ আর ব্র্যান্ডেড মদের বোতল। কার্ডিয়াক ফেইলিওর বা হার্ট অ্যাটাককে কি মার্ডার বলা চলে? কিন্তু মোডাস অপারেন্ডি? আর অস্ত্র? গুলি নেই, ছুরি নেই, বিষও নেই! তবে ভিকটিমরা মরছে কী করে? সূত্র শুধু একটাই—ভয়।
—“যো ডর গয়া, সমঝো মর গয়া! আমি ভয় পাই, তাই ভয় দেখিয়েই মারি। পারলে কেউ আমাকে থামিয়ে দেখাক।” অধিরাজ অ্যাডাল্ট সিরিজের পরবর্তী উপন্যাস—‘ডেয়ার অর ডাই'।
সায়ন্তনীর গড়িয়ায় বাস। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির শখ। কবিতা ও গদ্য দুইই চর্চার বস্তু।ক্লাস সেভেনে প্রথম প্রকাশ সংবাদ প্রতিদিনের শনিবাসরীয় পাতায়'চশমা' ছোট গল্প। তারপর প্রতিদিন, বর্তমান, সুখী গৃহকোণ, আর ছোটদের পত্রিকা সাহানা আর বাংলা দেশের পত্রিকা ভোরের কাগজে লাগাতার লিখে যাওয়া।
সায়ন্তনী আছেন সায়ন্তনীতেই, কিংবা বলা যেতে পারে 'অধিরাজ'এ। 'শিশমহল'এর সায়ন্তনী এবং অধিরাজ সিরিজের সায়ন্তনীকে কখনও মেলাতে পারিনি পাঠক হিসাবে। 'সর্বনাশিনী' পাঠান্তেও যা মনে হয়েছিল, 'ডেয়ার অর ডাই' পড়ে উঠেও সমীকরণ সেই একই রয়ে গেল যেন।
১) অধিরাজ, লেখিকার কলমে একজন সুপারম্যান। সে সর্বোত্তম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ। নারীচরিত্র মাত্রেই তার গায়ে উঠে পড়া ছাড়া বা তাকে হিরো হিসাবে দেখা ছাড়া কোন কাজ নেই, চরিত্রগুলি বড় ওয়ান ডায়মেনশানাল।
২) কমিক রিলিফ অবশ্যই দরকার, কিন্তু কমিক রিলিফ দিতে গিয়ে লেখিকা মাঝেমধ্যে এতটাই ড্র্যাগ করে ফেলেন, মনে হয় হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট বা ফরেন্সিক ল্যাব নয়, ক্লাস নাইনের ইতিহাস ক্লাসে শেষ বেঞ্চিতে বসে সেটাই করছি, 'হোয়াট অ্য ব্যাকবেঞ্চার ডাজ বেস্ট'!
৩) হইচইয়ের ৮০% ওয়েব সিরিজের যেমন লজিক খুঁজতে না যাওয়া ভাল, এখানেও তাই। অধিরাজ সিরিজে লজিক এবং রিয়্যালিস্টিক অ্যাপ্রোচ বেশি না খুঁজতে যাওয়াই ভাল। সিআইডি হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট এখানে মাস-মার্ডারের ইনপুট পেয়ে অকুস্থলে পৌঁছে আততায়ীর অপেক্ষা করতে করতেও বিরিয়ানি নিয়ে দিব্যি আলোচনা চালিয়ে যান।
ভাববেন না নিন্দেমন্দ করছি, এইগুলোই হয়তো অধিরাজ সিরিজের সবথেকে বড় ইউএসপি কারণ এতকিছুর পরেও এই অধমকেও স্বীকার করতে হয়, সায়ন্তনী পূততুন্ডের অধিরাজ সিরিজের কাহিনি ঝড়ের গতিতে পাঠক শেষ করতে বাধ্য হন, সেটাই হয়তো সায়ন্তনীর কলমের সবথেকে বড় এক্সফ্যাক্টর, তিনি জানেন গল্প বলতে বা পাঠককে শেষ পৃষ্ঠা অবধি ধরেবেঁধে রাখতে। 'ডেয়ার অর ডাই'-এর ক্ষেত্রে যে বিষয় নির্বাচন করেছেন লেখিকা, পাঠক হিসাবে আমার বেশ অভিনব মনে হয়েছে, মানুষের মনের কোণে লুকিয়ে থাকা ফোবিয়া বা ভয়কে নিয়ে আবর্তিত বেশ জটিল অথচ সুপরিকল্পিত কাহিনি। উপন্যাসটি শেষ পর্যন্ত উপভোগ্য তো অবশ্যই হয়ে ওঠে, কিন্তু হয়তো যবনিকা পতন অধিরাজের গাড়ি চালানোর স্পিডের মতো অচিরেই পড়ে যায়। যদিও অধিরাজ সিরিজ সম্পূর্ণভাবেই স্বতন্ত্র একটি সিরিজ কাহিনির দিক দিয়ে, তা আমার অজানা নয়, তবুও সেই উপভোগ্য কাহিনির মধ্যে দাঁড়িয়েও কিছুটা দোলাচলে ভুগতে থাকা এবং 'শিশমহল' এর হ্যাংওভারে আটকে থাকা আমি এই কাহিনিকে পাঁচে চারটি তারা দিতে চাইলেও একটু 'ডেয়ারিং' হয়ে তিনটি তারাই দিলুম গুডরিডস'এ। অধিরাজ সিরিজ চলতে থাকুক, রূপোলি পর্দায় এলেও এই কাহিনি সমান উপভোগ্য হবে, আশা করি।
বিভা পাবলিকেশনকে ধন্যবাদ 'বিভা ক্লাসিকস' সিরিজের এই নতুন সংযোজনের জন্য, মুদ্রণ প্রমাদ সেই অর্থে নেই বললেই চলে ৩০০ পাতার বইটিতে, প্রকাশনী এইদিকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করেছে বলে মনে হয়।
সায়ন্তনী, আপনার কলম থেকে আরেকটি 'শিশমহল'-এর অপেক্ষায় এখনও রয়ে গেলাম।
একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের 'ফোবিয়েন্স' নামের একটি দলের প্রাক্তনীরা পরপর মারা যাচ্ছেন। মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক, কিন্তু সকলেই নাকি মরার আগে খুব ভয় পেয়েছিলেন।
বহু বছর আগে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একটি হন্টেড রুমে একটি ছেলে মারা যায়। তারপর আরো অনেক ছাত্রছাত্রী কলেজ ছেড়ে দেয়, কেউ মারা যায় বা আত্মহত্যা করে এবং সেগুলোর জন্য দায়ী করা হয় ফোবিয়েন্স দলকেই। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোন প্রমান নেই। আজ হঠাত এরাই একে একে মারা যাচ্ছেন কেন?
অথচ ওঁদের মৃত্যুটা যে খুন সেটা মনে হলেও প্রমাণ করার রাস্তা নেই। সেই কেস সল্ভ করতে এবার এগিয়ে আসছে টিম অধিরাজ।
পাঠ প্রতিক্রিয়া- অধিরাজ সিরিজের উপন্যাসগুলো সত্যিই খুব 'থ্রিলিং'। শ্বাস বন্ধ করে পড়ার মত হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবে গত উপন্যাস 'চুপি চুপি আসছে'-তে অনেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন যে কিছু জায়গা বেশ অতিনাটকীয় হয়ে উঠেছিল। আমারও কিছুটা তাই মনে হয়েছিল বটে। এবারের উপন্যাসে সেটা ভারসাম্য রাখা হয়েছে বলেই আমার মনে হয়।
ভয়- এমন একটি জিনিস যা দেখিয়ে এক প্রান্তে একটি মানুষ যেমন কৌতুক বোধ করতে পারে, অপর প্রান্তে যে মানুষটিকে ভয় দেখানো হচ্ছে সে যে কতটা কুঁকড়ে যেতে পারে, এমনকি তাঁর জীবনটাই যে অন্য মোড় নিতে পারে, সেটা কি ভয় দেখিয়ে মজা করতে চাওয়া মানুষগুলো কখনও ভেবে দেখেন?
অধিরাজ সিরিজের একটি বিশেষত্ব, যেটি আমার ছোখে পড়েছে সেটি হল এই যে এখানে খুনি এমন কিছু অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যান বা তার এমন কিছু অতীত থাকে যে সে খুনী হলেও তার প্রতি আমাদের একটু হলেও সহানুভূতি রয়ে যায়। আরেকটি দিক হচ্ছে এই যে এইসব গল্পে এমন কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে আলোকপাত করা হয় যেগুলো আমরা হয়ত দেখেও দেখি না বা গুরুত্ব দিই না।
ভয়াবহ, অস্বাস্থ্যকর শৈশব যে একটি মানুষের ব্যক্তিত্বে কতটা ছাপ ফেলে যায়, সমকামীদের ওপরে সমাজ নিজের অজান্তেই যে কত অত্যাচার করে থাকে আর ঝগড়া বিবাদযুক্ত পরিবারের শিশুরা যে কতটা মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায়- সেসব কথা বারবার উঠে আসে এই অধিরাজ সিরিজের বইগুলিতে যা পাঠককে ভাবিয়ে তোলে, অন্য আঙ্গিকে বিষয়গুলোকে দেখতে শেখায়। এখানেই তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কেউ কেউ বলতে পারেন যে "এতটা প্ল্যান করে কি কেউ খুন করে? এগুলো কি বাস্তবে হয়?"- তার উত্তরে বলতে পারি যে আগাথা ক্রিস্টি থেকে শুরু করে আজকের গোয়েন্দা কাহিনী লিখিয়েরা সকলেই এমন প্লট তৈরি করেছেন, এতটা পারফেক্ট ক্রাইম হয়ত কেউ সহজে করতে পারেনি। কারণ এরকম প্লট না হলে কাহিনীতে সেই 'থ্রিলিং' ব্যাপারটাই থাকবে না আর সেটা উপভোগ্য হবে না।
যারা থ্রিলার পড়তে ভালোবাসেন তাঁরা বেশি চিন্তা না করে কিনে ফেলতেই পারেন 'ডেয়ার অর ডাই'।
চমক যা ছিল তা একেবারেই শেষে। তবে এক্ষেত্রে "শেষ ভাল যার সব ভাল তার" বলা গেল না। কারণ, গল্পের আগাগোড়া তেমন একটা উপাদেয় ছিল না। নায়ককে সুপুরুষ তৈরি করতে গিয়ে যাচ্ছেতাই রকমের বানিয়ে ফেলা হয়েছে। ঠিক যেমন কোনও তীব্র গন্ধময় সুগন্ধি হয়ে থাকে- হয়তো গন্ধটা মৃদু হলে সুবাসিত করতো, কিন্তু, তীব্রতা তাকে অসহনীয় করে ফেলে। পুরো গল্পে যা ব্যাতিক্রম তা হল খুনের হাতিয়ার। তবে ডিটেকটিভদের ব্যর্থতা বেশ প্রকট। তাছাড়া শেষে নেওয়া অন্তত একটি সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি।
গল্পে তারল্য রাখতে গিয়ে যে র��ম এবং যে পরিমান রসিকতা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে বিরক্তির উদ্রেক হয়েছে। অধিকাংশ নারী চরিত্রের শিথিলতা মর্মাহত করেছে। ফরেন্সিক ল্যাব প্রধানের চরিত্র খাপসই লাগেনি। নায়কের সাইডকিককে তার প্রেমিক মনে হয়েছে বেশি! নায়কের সাইকোলজিক্যাল ট্রমার ব্যাপারটা শুরুতে একটু ছুঁয়ে যাওয়া হলেও পরে আর একটা যায়গা বাদে তার উল্লেখযোগ্য অবতারনা হয়নি বললেই চলে। তথাকথিত নিষ্ঠুর কিছু বদমাশের ভয়ে জুজু হয়ে হাল ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারটাও বড়ই খেলো। সেদিক থেকে প্লট বেশ ইউনিক হলেও বাস্তব লাগেনি অতটা। ব্ল্যাক ম্যাজিকের ব্যাপারটা ফলস লিড হিসাবে বড় একটা জোরালো হয়ে ওঠেনি কোনও পর্যায়েই।
বইটি পড়ে যে হতাশ হয়েছি তা বলাই বাহুল্য। সিরিজটি অন্যতম প্রিয় থ্রিলার সিরিজ ছিল, তাই আশাও ছিল অনেক বেশি। সে আশা পূরণ হল না। আগামী বইটি পড়ার আগে বার দুয়েক ভেবে নিতে হবে।
সৌমিত্র, উৎপল, মৃন্ময়, শ্রুতি, সৌরেশ, আবীর, উমা। জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বিশ বছর আগে এই সাত জনের ফোবিয়ান্স নামের একটা গ্রুপ ছিল। র্যাগিং, বুলিঙের জন্য তারা ছিল কুখ্যাত। একটা ছেলের মৃত্যর পর তাদের দিকে আঙুল তোলা হয়, যদিও প্রমাণের অভাবে তাদের কোন বিচার হয়নি। বিশ বছর পর কিছু দিনের ব্যবধানে সৌমিত্র, উৎপল আর মৃন্ময়ের মৃত্যু হলো। সৌমিত্রের লাশ পাওয়া গেলো এক হাসপাতালের মর্গে, মৃন্ময়কে পাওয়া গেলো আরেক হাসপাতালের এম আর আই মেশিনের ভেতরে যেখানে তাদের থাকার কোন কারন ছিল না। খুনগুলো আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক হলেও তাদের মৃত্যুর একমাত্র কারন তারা সবাই ভীষন ভয় পেয়েছিলো। অধিরাজদের চোখের সামনে উৎপলের মৃত্যু হবার পর এই পর্যায়ে তদন্তে নামে অধিরাজ আর তার টিম। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, মোটিভটাও স্পষ্ট কিন্তু সাসপেক্টের সংখ্যা এত বেশি যে রীতিমতো হাবুডুবু খেতে লাগলো তারা।
কাহিনী ভালো হলেও একের পর এক প্রায় একই প্রক্রিয়ায় খুন হওয়াটা একসময়ে ক্লান্তিকর লাগে। আর হুমায়ূন আহমেদ যেমন 'রূপবতী' চরিত্র ছাড়া বই লিখতে পারতেন না, তেমনি সায়ন্তনী পরিতুন্ডের মারকাটারি রকম সুন্দরের প্রতি অবসেশন রীতিমতো বিরক্তিকর। সর্বনাশিনীতে সব কয়টা মেয়ে চরিত্র দুর্ধর্ষ সুন্দরী, এই উপন্যাসেও নতুন মুখ আইভি আর কৌশানী অনিন্দ্য সুন্দর, যেন সহজ স্বাভাবিক সাধারন দেখতে মানুষ লেখিকার ঠিক পছন্দ না। আর অধিরাজের কথা কী বলবো, তাকে দেখলে মেয়ে ছেলে সবাই তার রূপে পাগল হয়ে যায়। অধিরাজ সিরিজের প্রতি উপন্যাসের মতো এখানেও অসম্ভব বিরক্তিকর ননসেন্স জোকস দিয়ে ভরা, এটাকে কমিক রিলিফ না বলে ভাঁড়ামি বলাই ভালো।
সবমিলিয়ে একটানা পড়ে যাওয়া যায় কিন্তু চুপি চুপি আসছে বা সর্বনাশিনীর মতো দারুন কিছু না। একটা ভালো প্লটের দুঃখজনক অপমৃত্যু।
এই সিরিজের নতুন সংযোজন। ভালো লেগেছে। তবে আগের তিনটার মত সেই থ্রিলটা অনুভব করতে পারিনি। কোথাও গিয়ে যেনো কিছু একটার অভাব বোধ হয়েছে। মাঝে একটু বোরিং লাগতেও শুরু করেছিল। সর্বোপরি একটি ভালো উপন্যাস কিন্তু একটু বেশি ই আশা করেছিলাম। কারণ অধিরাজ মানে সুপারকপ। এবারে তার charisma টাও একটু ফিকে লেগেছে। আশা করি পরের বার থেকে আরো ভালো কিছু পাবো। তবুও অধিরাজ প্রেমীরা অবশ্যই পড়বেন। 😊
এই সিরিজের অন্য বইগুলোর মতই এখানে মেলোড্রামা আছে, কাঁচা ডায়ালগ আছে, অতি নাটকীয়তা এবং কাকতাল আছে, কিন্তু মোটের উপর কাহিনীর গতি কখনো বিঘ্নিত হয়নি, সেজন্য যাকে বলা যায় ফান রিড।
🍂✨📖উপন্যাসের নাম - ডেয়ার অর ডাই📖✨🍂 ✍️লেখিকা - সায়ন্তনী পুততুন্ড 🖨️প্রকাশক - বিভা 📃পৃষ্ঠা সংখ্যা - ৩০৪
🙂🤞(ডেয়ার অর ডাই - সাহস অথবা মৃত্যু)🤞🙂
🍂🍁“ ফোবিয়ান্স নামটা সার্থক স্যার । সবার জন্যই মূর্তিমান ফোবিয়া ছিল ওরা । ” একশো এক বি হস্টেল রুম , জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ — হন্টেড রুম নামে পরিচিত । ত্রিশ বছর আগে শ্রেয়স নামের একটি ছেলের রহস্যময় মৃত্যু ঘটে সেই রুমে । তার দশ বছর পরে ঐ ঘরে ঘটে আরও একটি মৃত্যু । দু'জনেরই মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়াক ফেইলিওর বা হার্ট অ্যাটাক । অধিরাজদের কাছে গোপনসূত্রে খবর আসে , সুপারি কিলার কালিয়া সুপারি পেয়েছে মাস - মার্ডারের । কিন্তু কালিয়া কিছু করার আগেই রহস্যজনকভাবে মৃত্যু ঘটছে তাদের । হয় কার্ডিয়াক ফেইলিওর বা হার্ট - অ্যাটাক , নইলে অ্যাক্সিডেন্ট । ফরেনসিক রিপোর্ট বলছে স্বাভাবিক ডেথ , কমন ফ্যাক্টর শুধু একটাই — সকলেই মরার আগে প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলেন । অতীত কি তবে আবার ফিরে আসতে চাইছে বর্তমানে ? ওদিকে নিখোঁজ হল এক হসপিটালের মর্গের অ্যাটেনডেন্ট । তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল টাকা ভর্তি ব্যাগ আর ব্র্যান্ডেড মদের বোতল । কার্ডিয়াক ফেইলিওর বা হার্ট - অ্যাটাককে কি মার্ডার বলা চলে ? কিন্তু মোডাস অপারেন্ডি ? আর অস্ত্র ? গুলি নেই , ছুরি নেই , বিষও নেই । তবে ভিকটিমরা মরছে কী করে ? সূত্র শুধু একটাই — ভয় । — “ যো ডর গয়া , সমঝো মর গয়া । আমি ভয় পাই , তাই ভয় দেখিয়েই মারি । পারলে কেউ আমাকে থামিয়ে দেখাক । ”🍁🍂
💫🌼মানুষ ভবিষ্যতকে ভয় পায় । সেইজন্যই ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা জানার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় । এই ভয়ের ওপরেই তো গোটা বিশ্ব দাঁড়িয়ে রয়েছে । মানুষ ভবিষ্যতকে ভয় পায় বলেই ব্যাঙ্ক ও লাইফ ইনশিওরেন্সের ব্যবসা চলে , জ্যোতিষীর কারবার ফুলে ফেঁপে ওঠে । রোগ আর মৃত্যুকে ভয় পায় বলেই ডাক্তার , হসপিটালের পোয়া বারো । শুধু মৃত্যুকে নয় , মানুষ জীবনকেও ভয় পায় । জীবন মানেই তো লড়াই । প্রতি মুহূর্তে এক অজানা প্রতিপক্ষের সঙ্গে পাঞ্জা কষে যাওয়া । যে কোনও সময়ে হেরে যেতে পারে । জীবনের চ্যালেঞ্জকে ভয় পায় বলেই ভুলে থাকার চেষ্টা করে । আর তার ওপরেই নির্ভর করে আছে সমস্ত বিনোদন । গোটা বিশ্ব সেই বিনোদনেই মেতে থাকে । তবে সবচেয়ে ভয়ংকর মানুষের অতীত । অতীত মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাও বটে ! আর অতীতের অন্ধকার আরও ভয়ংকর !🌼💫
🌝আম��� লেখিকার লেখনির অন্ধভক্ত। হা করে বসে থাকি কবে আবার নতুন একটা বই বের হবে, আর সেই বই যদি হই অধীরাজ সিরিজ এর 🌝তাহলে তো কথাই নেই 😍😍সেই টানেই এই বইটিও প্রিবুকিং করেছিলাম। তাই বোনাস হিসাবে লেখিকার সাক্ষর ও পেয়েছি। বইটা হাতে পেয়েই পড়ে শেষ করে ফেলেছিলাম, রিভিউ টা লেখা হয়নি। অনেক দিন পর লিখছি।
কিছু মন্তব্য করার আগে স্পইলার না দিয়ে একটু বিষইটি নিয়ে বলা যাক।
🍁এই কাহিনী আগের বইটি "চুপি চুপি আসছে " তাঁর পর থেকেই শুরু হয়েছে। আগের গল্পটা না জানা থাকলে, প্রথম দিকে পাঠকের একটু বুঝতে অসুবিধা হবে। আগের কেসের মেন্টাল শক এখন ও কাটিয়ে ��ঠেনি ঠিক মতো অধীরাজ, এর মাঝেই আবার একটা নতুন কেস আসে অধীরাজের কাছে। কেস নয় ঠিক, কোনো ভাবে তাঁদের কাছে খোঁজ আসে কালিয়া নামের একজন সুপারি কিলার নাকি কয়েকজন কে মারার জন্য সুপারি পেয়েছে। তাকে ধরতে গিয়েই দেখতে পেলো যাদের মারার জন্য সুপারি দেওয়া হয়েছে, তারা আপনা থেকেই অন্য কারণে মারা যাচ্ছে। প্রত্যেকের মৃত্যুর কারন ভয়, প্রচন্ড ভয় পেয়ে কার্ডিয়াক ফেলিওর। আস্তে আস্তে যারা মারা গেছে তাঁদের অতিত ঘাটতে গিয়ে বেরিয়ে আসে কিছু ভয়াবহ ব্যাপার। উঠে এসেছে কলেজ লাইফের ৱ্যাগিং করার মতো নোংরা কাজ।পুরো C I D টিম এই ঘটনার তদন্ত শুরু করলে সামনে আসতে থাকে একের পর এক চমক। কখনো আবার উঠে আসে হন্টেড রুমের মতো কাহিনী।
🍁এর মাঝে অধিরাজ সহ গোটা টীম কে কিভাবে বিপর্যস্ত হতে হয়, অধীরাজ কি পারবে এই রহস্যর সমাধান করতে, যদি পারে কিভাবে করবে? তা জানতে হলে পাঠকে অবশ্যই এই টান টান থ্রিলার টি পড়তে হবে।
🛡️গল্পের চরিত্র বুনয়ন খুবই সুন্দর। প্রত্যেকটা চরিত্র নিজের নিজের জায়গাতে অসাধারণ। যার মুখে যেমন সংলাপ প্রয়োজন তেমন টাই আছে, তবে কয়েকটা জায়গাতে ড. চ্যাটার্জী কে মনে হয়েছে একটু বেশি বেশি হাস্যকর করে ফেলেছেন।
🛡️সাইকোপ্যাথ কিলার মানে যে ব্যাপার টা থাকে, পুলিশের সাথে অপরাধী যেমন বুদ্ধির লড়াই খেলতে থাকে, পুরো উপন্যাস জুড়ে সেটা অনুভব করেছি। ২ জনের দিক থেকেই তাঁদের কে ভাবতে বাধ্য করেছে।
🛡️বইটাতে ফরেন্সিক সাইন্স এর অনেক বিষয় নিয়ে বলা আছে, যেগুলো আগে কখনো শুনিওনি।
🛡️বইটার পিছনে লেখা আছে অ্যাডাল্ট সিরিজ, যদিও এই বইটি পড়ার সময় আমার মনে হয়নি এটা অ্যাডাল্ট দের জন্য। আমার মনে হয় এটা সব বয়সী পাঠকদের জন্যই ঠিক আছে।
🛡️আগের বইগুলির মতো এটিতেও কোনো অলংকরণ নেই। সেটা থাকলে মনে হয় বইটি আরও চমকপ্রদ হতো।
🚫আগের বইগুলোতে যেমন সমাজের ভিতরে ঘটে চলা সমস্যাকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছিল, এই কাহিনীও সেই রকম একটা ঘটনা নিয়ে লেখা, যার কারণে বহু প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে।🥲স্বীকার করতে বাধা নেই এই ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছিলো একসময়, তাই এর ভয়াবহতা কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারি।
🍂সব শেষে এটাই বলার, একজন লোক অনেক দিন ধরে একই ওষুধ খেয়ে চলেছে, একটা সময় আসবে যখন ওই ওষুধ আর লোকটার উপরে কোনো প্রভাব ফেলবে না, সেটারই একটা বাস্তব উদাহরণ লেখিকা এখানে দিয়েছেন, ভয় পেতে পেতে যখন মানুষ ভয় পেতেই ভুলে যায়, সেই লোকটাই তখন কিরকম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। সব মিলিয়ে আবারো একটা বেশ ভালো রহস্য রোমাঞ্চ কাহিনী পড়লাম। পরের বইয়ের জন্য আগ্রহি। ❤
সায়ন্তনী পুততুণ্ডের ডেয়ার অর ডাই হাতে নিয়ে প্রথমেই আমি উত্তেজিত ছিলাম। মৃত্যুর হাতিয়ার হিসেবে ভয়—এমন এক ধারণা নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়। উপন্যাসটি একদল প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের গল্প, যারা একসময় অন্যদের উপর র্যাগিং এবং হেনস্থার মতো অত্যাচার চালিয়েছিল। এবার তারা একে একে মারা পড়ছে—ভয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। এই মৃত্যুগুলো কি শুধুই কর্মফল? নাকি কোনো প্রতিশোধপরায়ণ মনস্তাত্ত্বিক খেলার অংশ? এই প্রশ্নগুলিই উপন্যাসের মূল চালিকা শক্তি।
কিন্তু, আমি যা আশা করেছিলাম, ডেয়ার অর ডাই তা পুরোপুরি পূরণ করতে পারেনি। সত্যি বলতে, লেখিকার আগের বইগুলো পড়ে আমি যা ভেবেছিলাম, তা এখানেও প্রযোজ্য।
লেখিকার বইগুলোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো, নায়ক অধিরাজ যেন এক অতিমানব। সে সব জানে, সব বোঝে, আর বাকিরা তার আশেপাশে একেবারে নির্বোধ। এখানে সেই ক্লাসিক কনফিগারেশন ফিরে এসেছে। অধিরাজ এমন একজন সিআইডি অফিসার যে সরকার তাকে যা-খুশি কাজ করতে দেয়, এমনকি সাধারণ হৃদরোগের ঘটনায় সন্দেহ নিয়ে সম্পূর্ণ দল নিয়ে নেমে পড়ে। অথচ বাস্তবে, পুলিশের ফাইলের অনেক বড় বড় মামলা সমাধানের অপেক্ষায় পড়ে থাকে।
নারী চরিত্রগুলোও তার আশেপাশে একমাত্র তার প্রশংসা করতেই ব্যস্ত। নারী অফিসারদের নাম মনে রাখা যেন অধিরাজের পক্ষে এক অসম্ভব কাজ। গল্পে তাদের ভূমিকা এমন একমাত্রিক যে তাদের গুরুত্ব বোঝা কঠিন।
বইটিতে কমিক রিলিফ আনার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সেই রসিকতাগুলো এমনই টানা-হেঁচড়া যে মনে হয় আমি হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট নয়, বন্ধুদের আড্ডায় বসে আছি আর আবোল-তাবোল জিনিস নিয়ে মজা করছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি দৃশ্যে সিআইডি টিম এক হাই-প্রোফাইল হিটম্যানকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে বিরিয়ানি খেতে বসে আর তা নিয়ে কিছু সস্তা কমেডি। এই ধরনের দৃশ্য শুধু গল্পের গতি কমায় না, বরং পুরো বইয়ের গুরুত্বকে হালকা করে দেয়।
এতসব সীমাবদ্ধতার পরও, বইটির মূল ধারণা—ভয়কে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা—অসাধারণ। লেখিকা এমন একটি প্রশ্ন তুলে ধরেন, যা চিন্তার খোরাক দেয়: অপরাধীদের শাস্তি দিতে অপরাধী হওয়া কি ন্যায়সঙ্গত? এই নৈতিক দ্বিধাগুলো বইয়ের একটি শক্তিশালী দিক।
তবে, এই গভীর বিষয়গুলো যথেষ্ট গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হয়নি। মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলোতে আরও গভীরে যাওয়া যেত, কিন্তু সেগুলো শুধু পৃষ্ঠতলে ছুঁয়ে গেছে।
ডেয়ার অর ডাই এমন একটি বই, যা শুরুতে প্রতিশ্রুতির ঝলক দেখায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশ করে। অধিরাজের চরিত্রের অতিমানবীয় উপস্থাপনা, হালকা-চালের হাস্যরস, এবং বাস্তবতা থেকে দূরে থাকা উপাদানগুলো উপন্যাসের ভারসাম্য নষ্ট করেছে।
যদি আপনি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার ভালোবাসেন এবং নৈতিক জিজ্ঞাসা নিয়ে ভাবতে পছন্দ করেন, তাহলে এই বইটি একবার পড়তে পারেন। তবে, মনে রাখবেন, এটি এমন এক কাপ চা, যা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে—পান করতে পারবেন, কিন্তু পরিতৃপ্তি পাবেন না। আমার কাছে এটি একটি বড় হতাশা। গল্পের ভিত্তি শক্তিশালী হলেও, লেখিকার প্রচেষ্টায় সেই শক্তি পূর্ণতায় পৌঁছায়নি।
নিঃসীম আঁধারে ঢেকে আসা রাতের কলকাতা। চারিদিকে ভয়ানক এক শূন্যতা। এর মধ্যে চলছে মৃত্যু মৃত্যু খেলা! নাহ্। ঠিক মৃত্যু মৃত্যু নয়, বরং সাহস অথবা মৃত্যু খেলা। ডেয়ার অর ডাই!!!!! যে খেলায় মৃত্যু আসে নিঃশব্দে, কোন তাড়া নেই তার। সেই মৃত্যুগুলো ভীষণ নিরীহ মনে হলেও আদতে তাদের নেপথ্যে লুকিয়ে আছে ভয়ানক এক উৎপীড়ন।
সায়ন্তনী দেবীর এবারের উপন্যাসটি একেবারেই ভিন্ন স্বাদের ও প্লটের। শহরজুড়ে কিছু মৃত্যুর আনাগোনা, সব কটির কারণই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, তারা সবাই মৃত্যুর আগে ভয় পেয়েছিল! সেই ভয় থেকেই মৃত্যু। হত্যাকান্ডে নেই কোন আগ্নেয়াস্ত্র বা বিষের ব্যবহার। গোলাগুলি, ছোরা-ছুরি বা মারামারি ছাড়াই মরছে মানুষ গুলো। কেবল ভয় পেয়েই। ভয়ই সেখানে মারণাস্ত্র!
তদন্তে উঠে এল ৭ জনের কথা, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যারা বহু লোককে ভয় দেখিয়ে আনন্দ পেত। অদ্ভুত ভাবে এই ৭ জনই হত্যার শিকার হতে চলেছে। আর মরছে ভয় পেয়েই। প্রায় সূত্রবিহীন কেসগুলোর তদন্তে নানা সম্ভাবনা উঠে এল। তবে কি ভয়ই পাল্টা মৃত্যুবাণ হয়ে ফিরে এল তাদের জীবনে? নাকি কারো প্রতিশোধ, নাকি ব্যক্তিগত কোন আক্রোশ নাকি স্রেফ সাইকোপ্যাথ কিলিং?
উপন্যাসটিতে আরও মুখ্য হয়ে উঠেছে র্যাগিং এবং বুলিং এর মত অসামাজিক কর্মকাণ্ডের ভয়াবহ পরিণতি, কনডাক্ট ডিজঅর্ডার নামের ভয়ানক এক মনোবিকৃতি আর বিশেষ কিছু ফোবিয়া মানে ভয়ের বিবরণ।
আর উপন্যাস জুড়ে ছিল এক মানবিক প্রশ্নের আকুতি--- যে অপরাধী আরও কয়েকটি অপরাধীকেই নাশ করছে, সে অপরাধীকে আদৌ অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় কিনা নাকি বিবেকের আদালতই সে বিচার করে দেয়? উপন্যাসটির গঠনবিন্যাস, কাহিনী বিনির্মাণ, চরিত্র চিত্রণ, রহস্যভেদ এবং গতিশীলতায় কোথায় কোন খুঁত পাইনি। আর প্লট ও রচনা শৈলীতেও বাহবা বলতেই হয়। একাধারে জ্ঞানমূলক, আনন্দদায়ক এবং চেতনার উন্মেষক।
উফফ কি ছিল গল্পটা, এক মুহুর্ত বই নামিয়ে রাখার জো নেই। cliffhanger এর পর cliffhanger। twist এর পর twist দিয়ে কনফিউশন। 300 পাতার একখানা রুদ্ধশ্বাস মিষ্ট্রি থ্রিলারকে এভাবেই summarize করা যায়। আসি গল্পের ভালো দিকে: 💕 রহস্যের টানটান সুতোয় বোনা গোটা গল্প। এক মুহুর্ত ইনভেস্টিগেশন থেমে নেই। 🍄 মাঝে মাঝেই একবার করে ঝালিয়ে দেওয়া হয়েছে সাসপেক্ট লিস্টের সবাইকে। কাউকে ভুলে গেলেও মনে পড়ে যাবে। এটা খুব সাহায্য করেছে। 💕 মূল চরিত্র অধিরাজের শরীরের বর্ণনা একটু কম ছিল, তবুও তুখড়। নতুন চরিত্র কৌশানী বোসের রূপের বর্ণনাও খুব সুন্দর লেগেছে। কি অপরূপ। 🍄 অবশেষে একটা গল্পে অধিরাজ মাত খেল, তবে যারা খুন হচ্ছিল তারা কেউ ভালো লোক না, তাই দুঃখও তেমন হবে না। শেষটা খুব সুন্দর। 🌚 গল্পে কি একটা মিসিং লাগছিল, deduction, আততায়ীর পিছুপিছু দৌড়, forensic breakthrough সব ছিল, কিন্তু কি যেন একটা মিসিং। শেষে car chase এর থ্রিলিং সিকোয়েন্সটায় সেটাও লেখিকা পূরণ করে দিয়েছেন।
খারাপ দিক: নেই। ডাঃ চ্যাটার্জির মাচা কমেডিটা 3টে বই পড়ার পর আপনারও গা সওয়া হয়ে যাবে।
😅 এক অদ্ভুত উপলব্ধি: লেখিকা "মিস কাটমুন্ডু" হিসাবে নিজেকে প্যারোডি করেছেন এটা বুঝতে আমার 3টে বই লেগে গেল।
সব মিলিয়ে বলব: অধিরাজ সিরিজ ভালো লেগে থাকলে এই বইটা একদম must। ছাড়বেন না, পড়ে ছাড়ুন।
ফোবিয়ায় ওপর ভিত্তি করে লেখা এক অসাধারণ গল্প ।। খুন তো সাধারণ ব্যাপার , কিন্তু ভয় দেখিয়ে খুন করা মধ্যে যে চরম একটা বিভীষিকা আছে , সেটাই এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।।
ধৈর্য্য ধরতে না পেরে অবশেষে adult অধিরাজ সিরিজের শেষ বই পড়েই ফেললাম। মোটামুটি সবার রিভিউ পড়ে বুঝেছিলাম এই বইটি অতটা ভালো হয়নি। কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগলো। কনসেপ্টটা অসাধারণ বেছে নিয়েছেন লেখিকা। এখানেও আগের বইগুলোর মতো টানটান উত্তেজনা আছে। তবে হ্যাঁ কেসটার জটিলতা কম। মানে প্রথম থেকে আপনি ধারণা করতে পারবেন যে কারা খুনি হতে পারেন তবে শেষে গিয়ে তবুও লেখিকা আপনাকে প্রতিবারের মতনই চমকে দেবেন। অধিরাজ অর্ণবের কেমিস্ট্রি যথারীতি দারুণ উপভোগ করেছি। সর্বনাশীনি তে লিখেছিলাম কিছু কিছু কমিক রিলিফ ভাড়ামো লেগেছিল, তবে এখানে সেটা লাগেনি, বরং কমিক রিলিফাগুলো ঠিকঠাকই ছিল। সবচেয়ে যেটা মন ছুঁয়েছে সেটা হল বইয়ের শেষ টা, যেভাবে কেস টা শেষ হয় ওটা সবার মন ছুঁয়ে যেতে বাধ্য।
যেটা ভীষণ ক্রিন্জী লেগেছে সেটা হল অধিরাজের উমার ঘরে গিয়ে গিটার বাজিয়ে Elvis Prisley এর গান গাওয়া। ওই জায়গাটা ভীষণই অস্বস্তিকর। কারণ একজন ডিউটি তে থাকা সিবিআই অফিসার কি করে এমন কাজকর্ম করতে পারে তা স্বয়ং কোনো সিবিআই অফিসারও হয়তো কল্পনা করেননি। বেশ ড্রামাটিক হয়ে গেছে ওখানটা।
এছাড়া বাকি বেশ ভালো, লেখিকার লেখনশৈলী নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই, ডঃ চ্যাটার্জীর যে যথেষ্ট চয়েজ আছে মানতেই হবে। 😁
৪ তারা দেওয়ার কারণ একটাই - দুর্দান্ত অধিরাজের বুদ্ধিমত্তার জোরে কেস সলভ করার থেকে বেশি তার অপূর্ব পুরুষালি চেহারায় মেয়েরা কতটা কাতর, সেটার গুরুত্ব যেনো বেশি।
হয়তো এই পয়েন্টটা বলতাম না বিশেষ করে সেই সমস্ত মহিলারা যদি কোনো না কোনো দায়িত্বপূর্ণ পদে আসীন না থাকতেন। কেউ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, কেও সিআইডি অফিসার, এদিকে একজন সহকারী সিনিয়র অফিসারের প্রেমে সবাই একসাথে হাবুডুবু খাচ্ছেন। কেউ হাত ধরতে চায়, কেও ঘাম মুছিয়ে দিতে চায়। উচ্চপদস্থ মহিলারা কি এতই উদাসীন? ক্ষণে ক্ষণে কাজে মনোযোগ হারান সিনিয়র অফিসারকে দেখে?
এর থেকে তো অর্ণব হাজারগুনে ভালো। যতটা স্যারের দিকে যত্নবান ততটাই কাজের প্রতিও। এটাই তো চাই।
গল্পের ব্যাপারে বিশেষ কিছু না বলাই ভালো, এতে পড়তে আগ্রহটা তাজা থাকে। এটা বলতে পারি, লেখিকার এই সিরিজের বাকি লেখাগুলোর মত এটিও অনেকগুলি খুন, গোটা দশেক সাসপেক্ট, শখানেক ডেড এন্ড, হাজারখানেক সাসপেন্স আর লাখখানেক উত্তেজনা ভরপুর। এনার লেখা পড়তে আমার কোনদিন এক মিনিট বিরক্তি আসেনা। কি সুন্দর পাতার পর পাতা পড়ে যেতে ইচ্ছা করে আর শেষ না হওয়া অবধি শান্তি পাওয়া যায় না। 😬
বাকি আমি সায়ন্তনী ম্যাডামের লেখার বড়ো ভক্ত। এখনকার প্রিয় লেখিকা আমার।❤️ আরো অনেক অধিরাজ ম্যাজিকের অপেক্ষায় রইলাম।