Jump to ratings and reviews
Rate this book

Vignettes En Route

Rate this book
যাযাবরের গল্প-উপন্যাসগুলি নিয়ে কয়েকবছর আগে দে'জ পাবলিশিং এক খণ্ডে 'যাযাবর অমনিবাস' প্রকাশ করেছে। বইটির মুখবন্ধে রয়েছে 'লেখকের প্রথম বই 'দৃষ্টিপাত' প্রকাশিত হওয়া মাত্রই বাঙালী শিক্ষিত সমাজে যে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছিল তাহা যেমন বিস্ময়কর তেমনি অভূতপূর্ব। সেকালের বিমুগ্ধ পাঠক সম্প্রদায়ের মধ্যে আজও এই বই-এর অনেক লাইন, অনেক অংশ স্মৃতি থেকে উদ্বৃìত করতে পারেন। বস্তুতঃ এক নতুন গদ্যরীতি ও অভিনব রচনা-শৈলীর চমত্কারিত্বে দৃষ্টপাত বাংলা রম্যরচনার ক্ষেত্রে trend-setter - পথিকৃতের আসন দখল করিয়া রহিয়াছে।' কথাগুলি অতিশয় খাঁটি। বলা বাহুল্য, 'দৃষ্টিপাত' যাযাবর সবার জন্য লেখেন নি। 'দৃষ্টিপাত'-এর পটভূমিকা হল স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রীপসের মিশন - ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আর গল্প বলার জন্য যে আঙ্গিকটা যাযাবর বেছেছিলেন সেটাও অভিনব - একজনের চিঠির মাধ্যম (Belles Letters-এর মত)।

184 pages, Paperback

First published January 1, 1946

54 people are currently reading
657 people want to read

About the author

Jajabor

5 books32 followers
যাযাবর ছদ্মনামের আড়ালে থাকা মানুষটি বিনয় মুখোপাধ্যায় (Binoy Mukhopadyay, ? - ১৯৮৩)। তাঁর লিখিত বইগুলো হচ্ছে 'দৃষ্টিপাত', 'জনান্তিক', 'ঝিলম নদীর তীরে', 'লঘুকরণ', 'হ্রস্ব ও দীর্ঘ', 'যখন বৃষ্টি নামল'। এছাড়া স্বনামে লেখা দুটি বই হচ্ছে 'খেলার রাজা ক্রিকেট' ও 'মজার খেলা ক্রিকেট'।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
171 (43%)
4 stars
153 (39%)
3 stars
55 (14%)
2 stars
8 (2%)
1 star
4 (1%)
Displaying 1 - 30 of 54 reviews
Profile Image for প্রজাপতি মৌ.
15 reviews6 followers
November 20, 2017
যাযাবর এর দৃষ্টিপাত বিগত শতকের চল্লিশের দশকের দিল্লীর পটভূমিকায় লেখা। তখন একদিকে চলছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অন্যদিকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামও চলছিলো পুরোদমে। বিলেত থেকে আইনসভার সদস্য ক্রীপস এলেন সায়ত্ত্বশাসন প্রশ্নে আলোচনার জন্য অবিভক্ত ভারতের রাজধানী দিল্লীতে।এই আলোচনা নিয়ে আশাবাদ ছিলো অনেক। তখন মিত্র শক্তি-অক্ষ শক্তির লড়াই চলছে তুমুলে, বার্মা ফ্রন্টে জাপানীরা এলো বলে।সামরিকভাবে ভারতের পূর্বাঞ্চল ছিলো অরক্ষিত, নৌ বাহিনী বলতেও ছিলো না কিছু। তাই জনগণের সহায়তা ছাড়া জাপানীদের মোকাবেলা সম্ভব নয় ভেবেই ইংরেজ রাজ একটু নমনীয় হয়েছিলো, তারই ফলশ্রুতি ক্রীপস মিশন। সেই সময়ের প্রেক্ষিতে সারা ভারতের তথা বিশ্বের চোখ ছিলো এই আলোচনায়। ভারতের স্বাধীকারের আন্দোলনের কোনো রাজনৈতিক সমাধান হয় কি না তা নিয়ে কৌতুহল, আগ্রহ ছিলো। দেশ বিদেশের সংবাদপত্র তাদের প্রতিনিধি পাঠালো নিউদিল্লীতে। আমাদের কাহিনীর নায়ক বিলেত থেকে পড়াশোনা শেষে ভবিষ্যতে ব্যারিস্টারী করার স্বপ্ন নিয়ে আপাতত একটা বিলেতী কাগজের প্রতিনিধি হয়ে আসেন দিল্লীতে।তার নাম অবশ্য আমরা জানতে পারিনা, কারো কাছে তিনি মিনি সাহেব নামে পরিচিত, একদা শৈশবে পোটলা নামেও ডাকতো কেউ কেউ। ১৯১১ তে কলকাতা থেকে বৃটিশ সরকার রাজধানী দিল্লীতে সরিয়ে ফেলে। দিল্লী এর আগেও বহু আমলে বহু বার ভারতের রাজধানী ছিলো, তবে নয়াদিল্লী শহরটা নতুন, পরিকল্পিত ও গোছানো। সেখানে দালান, পার্ক বা মন্দির সবই সাজানো গোছানো পরিকল্পিত। ব্যবসায়ীদের শহর তখনও সেটা ছিলো না, ছিলো আমলাদের। বিচিত্র সব চরিত্রের ও দেখা মেলে লেখায় সবার নাম এ মুহুর্তে মনে পড়ছে না, আধারকার, মিঃ খোসলা, প্রিয়নাথবাবু, যুদ্ধের বাজারে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া দিল্লীতে হঠাৎ পাওয়া সেই বাল্যবন্ধুটি(নাম ভুলে গেছি) সবাই আলাদা, বিচিত্র। দিল্লীর ক্লাব, মন্দির, দোকানপাঠ, ফেরিওয়ালা, যানবাহনের ও নিটোল প্রতিচ্ছবি আছে লেখায়, আছে ইতিহাসের অনেক পাঠও। ক্রীপস মিশন যে ব্যর্থ হয়েছিলো তা আমরা ইতিহাস পড়েই কিঞ্চিৎ জানি, কেন ব্যর্থ হয়েছিলো তার বিশ্লেষনও আছে লেখাটিতে। এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলর এর বাড়িতে হে হে ক্লাবটির মতো ক্লাব এ দেশের আমলাতন্ত্রে এখনও আছে। আছে দুর্দান্ত কিছু পাঞ্চ লাইন, যা ছোট বেলায় আমরা ভাব সম্প্রসারনে পড়েছি। লেখার স্টাইল, ভাষার ও শব্দের ব্যবহার রবীন্দ্রনাথকে মনে করিয়ে দেয়। অতীব সুখপাঠ্য, এ নিয়ে দু’বার পড়লাম, বেঁচে থাকলে হয়তো আরও বেশিবার পড়া হবে।
Profile Image for Nabila Tabassum Chowdhury.
367 reviews273 followers
February 1, 2015
বইটা একই সাথে ইতিহাস, ভ্রমণ কাহিনী। সেই সাথে অল্প একটু প্রেম কাহিনীও বটে। সন্দেহ নাই লেখকের লেখার ধরণ আকর্ষণীয়। সরোষে রচনা করেছেন সরস বাক্য। ভ্রমণ কাহিনী যেটুকুকে বলছি তার মাঝে দর্শনীয় স্থানগুলোর সাথে জড়িত মধ্যযুগের ইতিহাসটুকুও রয়েছে। যেখানে ইতিহাস আছে, আমার মতে সেটা সঠিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। সে ব্যাপারে বলি, এটাকে আমি আসলে মূল্যায়ন করার মত যথেষ্ট জ্ঞান মাথায় রাখি না। তবুও লেখনীতে মনে হয়েছে লেখক কিছু কিছু জায়গায় লেখকের নিজেরই সন্দেহ রয়েছে। ইতিহাস যে অংশটুকুকে বলছি তা আসলে লেখকের সমকালীন ঘটনা, ক্রিপস এবং তার প্রস্তাব সম্পর্কিত ইতিহাস, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইতিহাস। এই ব্যাপারেও আলোচনা করবার মত নিজের জ্ঞানের অভাব স্বীকার করে নিচ্ছি। সে অংশে আছে লেখকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা তৎকালীন জীবনযাত্রা। এটুকুও ইন্টারেস্টিং। ইতিহাস, ভ্রমণ কাহিনী দুই-ই ছিল নিঃসন্দেহে সুখপাঠ্য। প্রেম কাহিনী অংশটুকুও খারাপ নয়, বইয়ে এই অংশটুকুর অন্তর্ভুক্তি পাঠকের জন্য সারপ্রাইজিং। এত কিছু এক বইতে পাওয়া পাঠকের জন্য সৌভাগ্যের।

তবুও এটা আমার প্রিয় বই নয়, হতে পারে না। কিছু কিছু বইয়ের ও জেন্ডার থাকে। এটার আছে। দুর্ভাগ্যক্রমে সে জেন্ডার আমার বিপরীত জেন্ডার। এবং সেই জেন্ডারের প্রভাব রয়েছে ইতিহাস এবং ভ্রমণ কাহিনী লেখনীতে। প্রভাব রয়েছে প্রেম কাহিনীতেও।
Profile Image for Emtiaj.
237 reviews86 followers
September 8, 2016
"কলকাতায় যাচ্ছো শুনলাম? একটা বই আনবে? ঢাকায় পাওয়া যায় না।
কি বই?
দৃষ্টিপাত, যাযাবরের।
হু, আনবো।"

চিত্রা নদীর পারে মুভিটা দেখেই বইটা পড়ার ইচ্ছে জেগেছিলো।

বইটা খুব অসাধারণ, এটুকুই বলতে পারি। <শেষের প্রেমের দৈর্ঘ্য একটু বেশি হয়ে যাওয়ায় এক তারা কম>
Profile Image for Umma Jannat.
43 reviews12 followers
May 25, 2023
"দৃষ্টিপাত" একটি পত্রাবলি সংকলন কিন্তু এটি একটি সার্থক উপন্যাসের মতো মনোরম,আকর্ষক ও সুখপাঠ্য।
বিনয় মুখোপাধ্যায় ওরফে যাযাবর লিখিত এই বইটিতে ১৯৪২-৪৩সালের দিল্লির রাজনীতি,সমাজ এবং অবকাঠামো প্রায় সবকিছুর যথার্থ বিবরণ আছে।বইটির ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে,ইতিহাসের যুগসন্ধিক্ষণের কিছু আভাস পাওয়া যায়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ কলোনিগুলো হস্তচ্যুত হচ্ছিলো ক্রমান্বয়ে,সে সময় ভারতবর্ষের স্বাধিকার আন্দোলন আন্তর্জাতিক নেতৃবর্গের সহানুভূতি ও সমর্থন লাভ করে।এই পর্যায়ে ভারতবর্ষের বিরোধ নিরসনে প্রধানমন্ত্রী চার্চিল মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ব্রিটেনের ওয়ার ক্যাবিনেটের সদস্য স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস-কে ভারতে পাঠান।কাজেই বইটির মূল পটভূমি হচ্ছে ক্রিপস-এর মিশন পাশাপাশি অন্যান্য শাখা-কাহিনী, মন্তব্য,বিশ্লেষণ,ভ্রমণবৃত্তান্তও বর্ণিত হয়েছে।
Profile Image for Pranta Biswas.
122 reviews3 followers
February 1, 2022
❝প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্মম দাহনে পলে-পলে দগ্ধ হলেন কান্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার।❞

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চলাকালীন সময়ে ভারতবর্ষের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার চমৎকার এক চিত্র ফুটে উঠেছে বইটিতে। বইটি বিলেত ফেরত এক বাংগালী যুবকের তার বান্ধবীকে বিভিন্ন বিষয়ে লেখা চিঠি থেকে সংকলিত। প্রথমে ভেবেছিলাম কোন ক্লাসিক উপন্যাস টাইপের বই হবে। কিন্তু আদতে তা না। সাহিত্যের প্রায় সকল শাখার স্বাদ পাওয়া যায় ১০৪ পৃষ্ঠার এই বইয়ে। দর্শন, ভ্রমন, রম্য, ইতিহাস কি নেই এতে! একদম টোটাল প্যাকেজ। আর সব শেষের চারুদত্ত আধারকারের কাহিনীটি তো যাকে বলে 'cherry on top.'
তৎকালীন ভারতসাম্রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থার বিবরণটুকু ছাড়া বাকি অংশ সুখপাঠ্যই মনে হয়েছে।
Profile Image for Mohammad Thowhid.
57 reviews6 followers
June 17, 2024
ত্রি-চরণে স্মরি: দৃষ্টিপাত
গল্পের ফাঁকে ফাঁকে ক্ষুদ্রপরিসরে হরেক ইতিহাস বলেছেন মিনি সাহেব। সুন্দর বয়ানে এ এক অমোঘ কাহিনি। শেষে এক না-হওয়া প্রণয়োপাখ্যানের আরও ক্ষুদ্র সমাপ্তি।
Profile Image for Shaon Arafat.
131 reviews29 followers
April 23, 2019
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারতবর্ষ। ভারতবর্ষের ইতিহাস, সে'যুগের বিশ্ব রাজনীতি, যুদ্ধ বিগ্রহ, কতিপয় মানুষের জীবন, দর্শন, টানাপোড়েন ও ভ্রমণ কাহিনীর এক বিশাল সমাহার। অার হ্যাঁ, অল্পবিস্তর প্রেম-ভালবাসাও আছে গল্পে। তবে কোনকিছুকেই অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়নি।

অত্যন্ত সুখপাঠ্য একটি বই। যাযাবরের সাহিত্য-ভাষা মনোমুগ্ধকর।
Profile Image for Raihan Ferdous  Bappy.
203 reviews9 followers
October 9, 2025
'যাযাবর' ছদ্মনামের পেছনে রয়েছেন বিনয় মুখোপাধ্যায়। তার লেখা 'দৃষ্টিপাত'-এ আপনি প্রেম, রাজনীতি, ভ্রমণ সবকিছুই খুঁজে পাবেন। গল্পের ফাঁকে ফাঁকে পাবেন চমৎকার সব ইতিহাস। পড়তে গিয়ে মূলত টের পেলাম লেখক পৃথিবীকে শুধু দেখেননি, অনুভব করার চেষ্টা করেছেন। একজন পর্যবক্ষকের মতো চোখ দিয়ে। বইয়ের ভাষা সহজ, সুন্দর। মনে হয় একধরনের কবিতার ছোঁয়া আছে।

যখন বইটা লেখা হয় তখন একদিকে চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, অন্যদিকে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
সেই সময়ের দিল্লী শহরের বর্ণনা আছে চমৎকারভাবে। লেখক ভ্রমণের সাথে ব্যক্তিগত ভাবনা চমৎকারভাবে মিশিয়েছেন। যা আসলেই প্রশংসার দাবিদার। বইয়ের শেষের দিকে মারাঠা যুবক আধারকারের সঙ্গে এক বিবাহিতা বাঙালি মহিলা সুনন্দার প্রেমকাহিনী দেখা যায়। ভাই এই পার্টটা আমার কাছে খুবই অন্যরকম লেগেছে। বেচারা আধারকারের জন্য খুব খারাপ লেগেছে৷

সবমিলিয়ে বলবো, কিছু কিছু জায়গায় একঘেয়েমি বা স্লো মনে হতে পারে। তবে, পুরো বইয়ের আবহ এতো সুন্দর যে ছোটখাটো ত্রুটি আর চোখে লাগে না। আমার বইটা শেষ করে মনে হয়েছে এইটা যেনো এক চলমান আত্মকথন। যেকোনো পাঠকের মনে 'দৃষ্টিপাত' এক দীর্ঘস্থায়ী ছায়া ফেলবে বলে আমার বিশ্বাস।
Profile Image for Nasrin Shila.
264 reviews89 followers
November 17, 2019
বইটার অনেক নাম শুনেছি। কিন্তু নাম শুনে একেবারেই বুঝতে পারি নি যে বইয়ের বিষয়বস্তু কি। পড়তে গিয়ে তাই অবাক হয়েছি। বইটা যদিও শুরু হয়েছে ক্রীপস মিশন দিয়ে কিন্তু বইতে প্রাধান্য পেয়েছে দিল্লী। দিল্লী ইতিহাস, স্থাপাত্য, মানুষই হয়ে উঠেছে মুখ্য। কিভাবে যেন পরপর শুধু দিল্লী নিয়ে বই পড়া হচ্ছে আর দিল্লী যাওয়ার ইচ্ছে বাড়ছে!

পুরাতন অনেক কথাই উল্লেখ করে লেখক বলেছেন যে, এটা ছোটবেলার ইতিহাস বইতে ছিল। অথচ আমাদের পাঠ্যবইতে পুরাতন ইতিহাসের প্রাধান্য খুব কম। আমার মনে আছে, প্রাচীন রাজাদের কথা পড়তে আমার খুব ভালো লাগত কিন্তু ক্লাস সিক্স/সেভেন এর দিকেই শুধু সেসব ছিল, বাকি সব ক্লাসেই পাকিস্তান আমলের ইতিহাসের কথাই বেশি। অবশ্যই এ সময়টা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এর প্রাধান্য থাকা উচিত, কিন্তু তার আগের ইতিহাসও তো জানা উচিত। বাচ্চারা আকবর কিংবা অশোকের মত সম্রাটদের নিয়ে তেমন কিছুই জানে না!

লেখকের বর্ণণানুসারে, সে সময়ই দিল্লীবাসীরা "সহধর্মিণী" শব্দটার মর্ম বুঝতে পেরেছিলেন। বাচ্চা দেখাশোনার জন্য আয়া আছে, পড়াশোনার জন্য বোর্ডিং স্কুল আছে, সেসবের জন্য আর স্ত্রীর দরকার নেই। তাই স্ত্রীর মধ্যে পুরুষেরা প্রকৃত অর্থেই বান্ধবী পেতে চাইতেন, সঙ্গী পেতে চাইতেন। তাই ছেলেমেয়ের দল বেঁধে পিকনিকে কিংবা সিনেমা দেখতে যাওয়ার কিংবা ক্লাবে যাওয়ার প্রচলন ছিল। এসব পড়ে অবাক হতে হয় কারণ প্রায় একশ বছর পরেও ঢাকাবাসীর মাঝে এমনটা পুরোপুরি দেখা যায় না! আফসোস!

যাই হোক, পুরো বইয়ের সাথে শেষে লেখকের পরিচিত একজনের যে ব্যক্তিগত কাহিনী বর্ণনা করা হল, তার কোন সম্পর্কই নেই! কেন হঠাৎ করে তার কাহিনী এমন বিস্তারিতভাবে বলল আর সেটা দিয়েই হঠাৎ করে বই শেষ করে দিল আমি বুঝলাম না!
Profile Image for Riton Khan.
14 reviews12 followers
January 4, 2019
দৃষ্টিপাত ৭

যাযাবরের দৃষ্টিপাত থেকে ৭টি উক্তি

যে-দৃষ্টির সঙ্গে মনের যোগ নেই সে তো দেখা নয়, তাকানো।

প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ।

পুরুষ মাত্রেরই বউ না থাকলে বাতিক থাকে। কারো তাস, কারো থিয়েটার, কাব্যে দেশোদ্ধার আর কাব্য বা সাহিত্য কিংবা স্বামীজি।

পুরাণে পুষ্পকরথের কথা আছে। তাতে চেপে স্বর্গে যাওয়া যেত। আধুনিক বিমানরথের গন্তব্যস্থল মর্তলোক। কিন্তু সারথি নিপুণ না হলে যে-কোনো মুহূর্তে রথীদের স্বর্গপ্রাপ্তি বিচিত্র নয়।

হীরের বিচার ঔজ্জ্বল্যে মসলিনের বিচার সূক্ষ্মতায়। সরকারী কর্মচারীর মূল্য নিরূপিত হয় বেতনে।

সংস্কারের মুক্তি তো যুক্তি দিয়ে হয় না, যেমন বুদ্ধি দিয়ে জয় হয় না ভূতের ভয়। সংস্কার রাতারাতি পরিহার করতে হলে চাই বিপ্লব, রয়ে সয়ে করতে হলে চাই অভ্যাস।

মাতাল বর নিয়ে ঘর করা যায়, কলহ করা যায় অন্যানুরাগী স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু উদাসীন ব্যক্তির স্ত্রী হওয়ার মতো দুর্ভাগ্য নেই জগতে। প্রেম ভালো, বিদ্বেষ দুঃখের, কিন্তু সব চেয়ে মারাত্মক ইন্ডিফারেন্স—যে কাছেও টানে না, দূরেও ঠেলে না—শুধু ভুলে থাকে।
Profile Image for Kazi Shoaib.
78 reviews21 followers
March 16, 2016
আলাউদ্দিন খিলজি মুঘলদের সাথে যুদ্ধ করেছেন?! বইয়ের ৭৪ পৃষ্ঠায় আছে "দ্বিতীয় দিল্লি নগরী প্রতিষ্ঠা করেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি। তাঁর রাজত্বকালে দুর্ধর্ষ মুঘল শত্রুদল ভারতবর্ষ আক্রমণ করল, হত্যা ও লুন্ঠনের দ্বারা বহু নগর নগরী বিধ্বস্ত করে উপনীত হল দিল্লিতে। " Mongol আর Mughal গুলিয়ে ফেলেছেন লেখক। দুটোই বাংলায় লিখেছেন মুঘল। অবশ্য ছাপার ভুলও হতে পারে।
Profile Image for Shakil Mahmud.
90 reviews34 followers
August 20, 2020
অতি উচ্চমার্গীয় লিখা। ভারতবর্ষের কিছু ইতিহাস আর আধারকর এর প্রেম কাহিনী বাদে বেশিরভাগ পলিটিক্যাল ক্যাচক্যাচানিই মাথার দশহাত উপ্রে দিয়ে গ্যাছে।
Profile Image for Abdullah Al Mehedi.
27 reviews1 follower
December 6, 2020
শেষ কবে এত সুন্দর বাংলা বই পড়েছি মনে পড়ে না। দীর্ঘ দশ বছরের রিডার্স ব্লক কাটাতে এই বইটা অনেক সাহায্য করলো!
Profile Image for Zannat.
41 reviews15 followers
September 3, 2021
- কলকাতা যাচ্ছ শুনলাম?
- হুম। পূজোর ছুটিতে।
- একটা বই আনবে? ঢাকায় পাওয়া যায় না।
- কী বই?
- দৃষ্টিপাত। যাযাবরের।
- হুম। আনব।

'চিত্রা নদীর পারে' চলচ্চিত্রের এই সংলাপ থেকেই মূলত দৃষ্টিপাত পড়ার জন্য উতলা হয়ে ছিলাম। তারপর, পড়লাম।
বইটাকে ঠিক কোন ক্যাটাগরিতে যে ফেলব! ভ্রমণকাহিনীর হাত ধরে ইতিহাসকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে নিয়ে গেছেন লেখক। সাথে খানিকটা প্রেম ও আছে।
বইয়ের বিষয়বস্তু যে কী! তা যদি জানতে চান, আমি নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। তবে, এই নির্দিষ্ট কোন বিষয়বস্তু না থাকার কারণেই বোধকরি লেখক অনেক বিষয় একত্রে যুক্ত করতে পেরেছেন। এবং কোনটাই অতিরঞ্জিত কিংবা অহেতুক মনে হবে না। এটাই বইয়ের ভালো দিক।

ক্রিপস মিশন দিয়ে শুরু হলেও শেষটা হয়েছে প্রেম কিংবা অপ্রেমে! মোঘল সাম্রাজ্যের ছিটেফোঁটা ইতিহাস যেমন আছে, তেমনি উঠে এসেছে সিপাহী বিদ্রোহের কথা। সাথে আরো কত কী!

তাঁর ছদ্মনামের সাথে বইয়ের বিষয়বস্তুর বেজায় মিল। যাযাবর, যাযাবরের মতোই যেন পাঠককে ঘুরিয়েছেন এখান থেকে সেখানে।

লেখকের লেখনশৈলী চমৎকার। তবে, হ্যাঁ! বইয়ের কিছু অংশে হয়তো আপনি লেখকের সাথে সহমত পোষণ না করতেও পারেন। আমি নিজেও করিনি।
Profile Image for Sujan.
106 reviews41 followers
October 26, 2015
দেশ বিভাগের ঠিক আগে ভারতে আগত ক্রীপস মিশন এর টালবাহানাকে পেছনে রেখে যাযাবর এর 'দৃষ্টিপাত' ইতিহাস-সমাজ-দেশ-মানবিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়কে স্পর্শ করে যাওয়া ভিন্ন স্বাদের এক স্মৃতিকথা। যাযাবরের যাযাবরসুলভ বিভিন্ন বিষয়ে খেয়ালখুশিমত ঘুরে বেড়ানোতে একটা বৈঠকী আড্ডার উষ্ণতা আর পরিতৃপ্তি পাওয়া যায়। এছাড়া তার পর্যবেক্ষণের গভীরতা, অনেক ব্যাপারে তার সাথে একমত না হওয়া সত্ত্বেও, প্রায়ই যুগপৎ বিস্ময় আর আনন্দের কারণ হয়ে উঠে।
Profile Image for A. M. Faisal.
76 reviews40 followers
December 31, 2021
কিছু ইতিহাস, কিছুখানি প্রেমোপাখ্যান, অনেকখানি ভ্রমণকাহিনী আর এক ছের রাজনীতির আলাপন - কাব্যিক ভাষায় যাযাবরের এক উপন্যাস/ভ্রমণালেখ্য/স্মৃতিকথা/রম্যরচনা। ভাষাগত সৌষ্ঠব আর শব্দের মাধুর্যে অনন্য উপভোগ্য এক রচনা।
দেরি হয়ে গেছে পড়তে।
চারুদত্ত আধারকরের মতো প্রেমিক আছে বলেই 'প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, আর মৃত্যুকে দেয় মহিমা'।

মুজতবীয় ছাপ বিদ্যমান।
Profile Image for Farhanur Rahman.
47 reviews11 followers
August 2, 2021
ক্রীপস সাহেব ও কংগ্রেসকে নিয়ে এত ভ্যাজর ভ্যাজর না করলে বইটা আরো ভাল লাগত। দিল্লির ইতিহাস বিষয়ক ঘটনাগুলো বেশ ভালো লেগেছিল। তবে এটি একটি অগোছালো বই। অগোছালো হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ কোনো একজন মানুষের চিঠিপত্র ঘেঁটে বই লিখতে গেলে এরকম হওয়াটাই ভবিতব্য হিসেবে মেনে নিতে হয়
Profile Image for শুভ.
105 reviews4 followers
July 18, 2023
এত নামকরা বই, অথচ পড়ে তো মজা পাইলাম না। তেমন কিছুই তো নতুন বা খুব মনে ধরার মত লাগলো না৷ লেখার স্টাইলও এলোমেলো, কোন ঘটনা থেকে কোথায় চলে যাচ্ছে কিছুই বুঝা যায় না। হুদাই সময় নষ্ট। তথাকথিত পাঠকরা কি দেখে এত রেটিং দিল বুঝতে পারছি না।
Profile Image for Munna Bhaiya.
48 reviews1 follower
December 18, 2020
বই : দৃষ্টিপাত
লেখক : যাযাবর
প্রকাশক : দি স্কাই পাবলিশার্স
ধরণ : সমকালীন উপন্যাস
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৯৬
প্রচ্ছদ : মোবারক হোসেন লিটন
প্রথম সংস্করণ : ফেব্রুয়ারি ২০১৮
সংস্করণ : ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ( প্রথম মুদ্রণ )
মুদ্রিত মূল্য : ১৫০ টাকা
ISBN : 984-826-027-7
রেটিং : 3.7/5



কাহিনী সংক্ষেপ :

যাযাবর এর দৃষ্টিপাত বিগত শতকের চল্লিশের দশকের দিল্লীর পটভূমিকায় লেখা অসাধারণ এক বই। বইয়ের পটভূমিতে দেখা যায় , একদিকে চলছিলাে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অন্যদিকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম। বিলেত থেকে আইনসভার সদস্য ক্রীপস আসে সায়ত্ত্বশাসন প্রশ্ন আলােচনার জন্য অবিভক্ত ভারতের রাজধানী দিল্লীতে। এই আলােচনা নিয়ে আশাবাদ ছিলাে অনেক। তখন মিত্র শক্তি-অক্ষ শক্তির লড়াই চলছে তুমুলভাবে ৷ আর বার্মা ফ্রন্টে যোগ দেয় জাপানীরা।

সামরিকভাবে ভারতের পূর্বাঞ্চল ছিলাে অরক্ষিত, নৌ বাহিনী বলতেও ছিলাে না কিছু। কাহিনীর নায়ক বিলেত থেকে পড়াশােনা শেষে ভবিষ্যতে ব্যারিস্টারী করার স্বপ্ন নিয়ে আপাতত একটা বিলেতী কাগজের প্রতিনিধি হয়ে আসেন দিল্লীতে।তার নাম অবশ্য আমরা জানতে পারিনা, কারাে কাছে তিনি মিনি সাহেব নামে পরিচিত, একদা শৈশবে পােটলা নামে ডাকে কেউ কেউ। ১৯১১ তে কলকাতা থেকে বৃটিশ সরকার রাজধানী দিল্লীতে সরিয়ে ফেলে । দিল্লীর ক্লাব, মন্দির, দোকানপাঠ, ফেরিওয়ালা,যানবাহন, সবকিছুর প্রতিচ্ছবি আছে লেখনিতে ৷


ব্যক্তিগত মন্তব্য :

বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম যাযাবর। বইটিতে নির্দিষ্ট কোন গল্প নেই। লেখক ইচ্ছাকৃতই হয়তো কাজটি করেছেন। গল্প না থাকার আড়ালে অনেক গল্প বলে গিয়েছেন। দিল্লীর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খুঁজে বের করেছেন বিস্ময়কর সব তথ্য, গল্প। বইটির মুখবন্ধে লেখক বলেন, ক্রিপস মিশন সম্পর্কে লেখার জন্য বিলেত ফেরত এক বাঙালী যুবক বিদেশী পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে দিল্লীতে যায়। সেখান থেকে তার বান্ধবীকে যে চিঠিগুলি সে লেখে - বইয়ের লেখনি সেখান থেকেই সংকলিত।

বইটিকে দিল্লির ডায়েরি বললেও ভুল হবেনা। দিল্লীর রাস্তায় অলিতে গলিতে যা কিছুর দেখেছেন সেটারই যেন পূর্ণ ইতিহাস তার মুখস্ত। মোঘল ইতিহাসের রোমাঞ্চকর ঘটনা গল্পের মধ্যদিয়ে পাঠককে বলেছেন। এমন কখনোই মনে হয়নি যে অতিরিক্ত তথ্যে দেওয়ার কারণে বইটি কারো পড়তে অনীহা জাগতে পারে । যাযাবরের মতন ঘুরতে ঘুরতে লেখক ফিরে আসেন ভারতবর্ষের মোঘল, কখনো বা রাজা বাদশাহদের গল্পে। সেখান থেকে ইংরেজ । আবার সেই ইংরেজদের সাথে মিল খুঁজে পেলেন ইসরায়েলের। গল্প পড়লে যে কেউ চমকিত হবে। এত ভালো উপমা আর তার সাথে বাস্তব তথ্যের সমাহার ! এজন্যেই হয়তো বা তার ছদ্মনাম যাযাবর ৷

একমাত্র বাংলা যে ভারতবর্ষে কখনোই অন্যায় শাসন মেনে নেয়নি তার অস্তিত্ব পাওয়া যাবে লেখকের লেখার মধ্যে। মাস্টার দা সূর্য সেন, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার তো বাঙ্গালীই। সিপাহী বিদ্রোহের শুরু এই বাঙলাতেই। ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, পুরো ভারতবর্ষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা এমন নজির। তাইতো বাঙালিরাই ছিল ইংরেজদের হাতে সব থেকে নির্যাতিত । আর সবশেষে বলতে হচ্ছে , বইটিতে বিভিন্ন কাহিনীর মধ্যে যেটি মনের মধ্যে গেঁথে যায় তাহলো একটি মারাঠি যুবক আধারকারের সঙ্গে এক বিবাহিতা বাঙালিনী সুনন্দার প্রেমকাহিনী। সুনন্দাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে আধারকার বাঙলা শিখলেন, রবীন্দ্রনাথ পড়লেন। সুনন্দাও অকুণ্ঠ চিত্তে আধারকারকে দিলেন তাঁর হৃদয়। আর এভাবেই এগিয়ে চলে গল্পেরা গল্পের স্রোতস্বিনীর মতন ৷
Profile Image for Nuhash.
221 reviews8 followers
March 11, 2024
যেখানে দৃষ্টি যায় কতটা হৃদয়গম হয় দৃশ্যের অবতারণা। মনের মাঝে কি দাগ কাটে একদিন এই জায়গায় বসে পূর্বপুরুষ রচনা করেছিলেন জীবনের। যে ছায়াতে বসে তৃপ্তি লাভ করে পথিক সে ছায়াতে কোনো রাজ পুরোহিত স্তবক রচনা করেছিলেন পূর্জার। আমি তো দেখিনি তুঘলক বংশের শাসন, আকবরের শাসনে রাজপুতদের বিদ্রোহ আমার চোখের সামনে হৃদয় বিদারক মৃত্যুর কথা বলে নি, ভারত উপমহাদেশের মানুষের কষ্ট জর্জরিত দেহ গুলো তো আমি দেখিনি। মাওলানা আজাদ কি লিখেছেন, ক্রীপসকে! ক্রীপস সমাজতন্ত্র নিয়ে যে মারা গিয়ে ছিল কতজন জানে তা? নিজের ড্রয়ারে পুষে রাখেনি সে মৃত্যুর আগে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা?

দিল্লির মসনদে যে যুবকটি আই.সি.এস হয়ে ইংরেজ সরকারের তাবেদারি করে প্রমোশনের জন্য, দেশের মানুষের জন্য যার কোনো কল্যাণ চিন্তা হয় না, সে ধারাটি যে আজও বাংলার বুকে বহাল থাকবে যাযাবর কি তা ভাবতে পেরেছে? বাংলার বুকে আজও কিছু মানুষ শিক্ষক হয়ে, কেউবা বিসিএস হয়ে স�� ধারার ক্রমান্বয় বজায় রেখেছে। তাদের চোখে মুখে দেশ নয়, নিজের স্বার্থসিদ্ধি।

যাযাবর "দৃষ্টিপাত" বইয়ে দিল্লিতে তিনি সাংবাদিক হয়ে যখন চারদিকে খোঁজ খবর সংগ্রহ করছিলেন সে সময়ের চিত্র তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। বাংলার মানুষ দিল্লিতে কেমন করে রয়েছে, ভারতে মুসলিম শাসনের অবসান থেকে শুরু করে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারা, প্রেম বিগ্রহ, মডার্ণ পৃথিবীর নারীদের উৎকর্ষ সাধন, নতুন বেনিয়া সাহেবদের বিকাশ সকল কিছুর তুলে ধরেছেন।

ক্ষমতার রদবদল থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চ মহলে অধিষ্ঠিত ভারতীয়দের ভোগ বিলাস তিনি তুলে ধরতেন কুন্ঠিত হোন নি। দুনীর্তির রেখা কেমন করে ছড়িয়ে পড়েছে, কেরানী হয়ে গেল বাবুর আসনে, প্রমোশনের জন্য তাবেদারি যেন প্রতিটি কর্মকর্তার মাঝে ছিল দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার কল হিসেবে।

সুশাসন আর স্বাধীনতার ধারণা যখন শিক্ষিত মানুষ বুঝতে পারে না তখন তাকে মুর্খ্য জ্ঞান করা সমীচীন। যে জানে না রাষ্ট্র যন্ত্র বিক্রি করছে তার সম্পদ সে ব্যক্তি মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করবে কেমন করে?

অপরপ্রান্তে ভালোবাসা ছাড়া যে মানুষ থাকতে পারে না। নারীদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া, ওহে সম্বোধন থেকে স্বামীকে সেন, গুপ্তা বলে সম্বোধন করার প্রচলন, তাদের ক্লাব, জীবন যাত্রা আমূল-পরিবর্তন তুলে ধরেছেন।

এককথায় সমগ্র ভারত বর্ষের পরিবর্তনের রেখা ব্রিটিশরা না দেখালেও ভারতীয়রা নিজ কর্মগুণে তা আয়ত্ত করেছে। বইটির মাঝে সুখ আছে, জানার কৌতূহল আছে, আছে বিষাদ।
Profile Image for Chayan Biswas.
35 reviews13 followers
August 19, 2019
বইঃ দৃষ্টিপাত
লেখকঃ যাযাবর
পেজঃ ৮৭

মাত্র তিনটি উপন্যাস, আটটি স্যাটায়ারধর্মী প্রবন্ধ ও তেরোটি ছোটবড় গল্প লিখে সাহিত্যের অমরাবতীতে অধিষ্ঠিত কত জন লেখক হতে পারে। এই অল্প পরিমাণ রচনা কতদিনই বা পাঠকের মনে রাখবে? কিন্তু এটা সত্যি, এক সাহিত্যিক সত্যিই ঐ অল্প পরিমাণ সাহিত্য রচনা করেই বাঙালী সুধীসমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছেন। বিস্ময়ের পর বিস্ময় এই যে, ঐ লেখক প্রথম উপন্যাসটির পরে আর কিছু না লিখলেও পাঠকদের পক্ষে তাঁকে ভুলে যাওয়া দুষ্কর ছিল। বিরলপ্রতিভা এই লেখকের নাম বিনয় মুখোপাধ্যায়। নামটি অপরিচিত লাগা স্বাভাবিক, কেননা সাহিত্যরচনা তিনি করেছেন ছদ্মনামে। যাযাবর ছিল তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম।

যাযাবরের 'দৃষ্টিপাত' বাংলা গদ্যরচনায় আজ একটি মাইলফলক স্বরূপ! যাযাবর তথা বিনয় মুখোপাধ্যায়ের প্রথম লেখা ‘দৃষ্টিপাত’, প্রকাশিত হয় ১৯৪৬ সালে। এই বই এর রিভিউ লেখার মত ক্ষমতা বা যোগ্যতা কোনটাই আমার নেই, তাই সেই দুঃসাহস করছি না, ভাল একটা পাঠ প্রতিক্রিয়া লেখাও হবে না আমকে দিয়ে, শুধু অসম্ভব ভাল লাগা একটা বই সম্পর্কে জানাতে চেষ্টা করছি মাত্র।

‘দৃষ্টিপাত’ কে আসলে ঠিক কোন গল্প বা উপন্যাস বলা যায় না। যাযাবর নিজেই বইয়ের ভূমিকায় বলেছেন----
“এই রচনাটির একটু ভূমিকা আবশ্যক৷ ১৯৩৬ সালে একটি বাঙ্গালী যুবক লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়িতে যায়৷ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে গাওয়ার স্ট্রিটের ভারতীয় আবাসটি জার্মান বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত হইলে আত্মীয়বর্গের নির্বন্ধাতিশয্যে যুবকটি ভারতবর্ষে ফিরিয়া আসে৷ স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রীপসের আলোচনার প্রাক্কালে বিলাতের একটি প্রাদেশিক পত্রিকা তাহাকে তাহাদের নিজস্ব সংবাদদাতা নিযুক্ত করিয়া দিল্লীতে পাঠান৷ লন্ডনে অবস্থানকালে এই পত্রিকায় সে মাঝে মাঝে প্রবন্ধ লিখিত৷ দিল্লীতে যাইয়া যুবকটি তাহার এক বান্ধবীকে কতগুলো পত্র লেখে৷ বর্তমান রচনাটি সেই পত্রগুলি হইতে সংকলিত…………. এই স্বল্পপরিসর পত্ররচনার মধ্যে লেখকের যে সাহিত্যিক প্রতিভার আভাস আছে, হয়তো উত্তরকালে বিস্তৃত সাহিত্য চর্চার মধ্যে একদা তাহা যথার্থ পরিণতি লাভ করিতে পারিত৷ গভীর পরিতাপের বিষয়, কিছুকাল পূর্বে এক আকস্মিক দূর্ঘটনায় তার অকালমৃতু্য সেই সম্ভাবনার উপরে নিশ্চিত যবনিকা টানিয়া দিয়াছে৷”

বইটিতে নির্দিষ্ট কোন গল্প নেই। লেখক ইচ্ছাকৃতই হয়তো কাজটি করেছেন। গল্প না থাকার আড়ালে অনেক গল্প বলে গিয়েছেন। দিল্লীর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খুঁজে বের করেছেন বিস্ময়ে চক্ষু বিস্ফোরিত হওয়ার মতন সব তথ্য, গল্প। বর্ণনার চমৎকারিত্বে, গভীর রসবোধে পুরো বই একেবারে ঠাসা।

এক কথায় বইটিকে দিল্লির ডায়েরি বললেও ভুল হবেনা। দিল্লীর রাস্তায় অলিতে গলিতে যেখানে কিছুর দেখা পেয়েছেন সেটারই যেন পূর্ণ ইতিহাস তার মুখস্ত। মোঘল ইতিহাসের রোমাঞ্চকর ঘটনা গল্পের মধ্যদিয়ে পাঠককে বলেছেন। এমন কখনোই মনে হয়নি যে তথ্যের ভারে বইটি কারো পড়তে অনীহা জাগতে পারে।
কথাগুলো যেন অতীব সত্য। গল্পের মাঝে মাঝে এমন কিছু লাইন আছে যা পাঠকের মন কাড়বে। যেমন---

১। "দূরকে নিকট এবং দুর্গমক্র সহজাধিগম্য করেছে যে বিজ্ঞান, তার জয় হোক। এতে উত্তেজনা আছে কিন্তু উপভোগ নেই"। "বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ"। -- এই উদ্ধৃতি কালের সীমা পেরিয়ে আজও আমাদের মনের মণিকোঠায় অনুরণন তোলে, 'তাতে আছে গতির আনন্দ, নেই যতির আয়েশ'।
২। মেয়েদের চুল ও ছেলেদের দাড়ি দু-এরই সমান প্রসাধন প্রয়োজন, সমান সময়সাপেক্ষ। তফাৎ শুধু এই যে, প্রথমটির যত্ন বৃদ্ধিতে, দ্বিতীয়টির বিনাশে। চুল রোজ বাঁধতে হয়, দাড়ি রোজ কামাতে।'
৩। একই বস্তু কেমন করে শুধু মাত্র আবেষ্টন ভাষা ও পরিবেশের তফাতে শ্লীল ও অশ্লীল ঠেকে তার আরও সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত আছে সিনেমায়। শ্বশুর, ভাশুর, পুত্রবধূ ও কন্যা-জামাতা একসঙ্গে মেট্রোতে বসে গ্রেটা গার্বো ও চার্লস বোয়ারের দীর্ঘস্থায়ী চুম্বন আর আলিঙ্গন দেখতে যাঁরা কিছু মাত্র সঙ্কুচিত হন না, বাংলা ছবির নায়ক-নায়িকার নিরামিষ প্রণয় নিবেদন দৃশ্য তাঁদেরই অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে দেখেছি। শরীরতত্ত্বের আলোচনায় যে কথা বাংলায় বলতে বাধে, ইংরেজিতে তা নিয়ে গুরুজনের সঙ্গে তর্ক করা অনায়াসে।'
৪। “সহজ হওয়ার মধ্যেই আছে কালচারের পরিচয়, আড়ম্বরের মধ্যে আছে দম্ভের। সে দম্ভ কখনও অর্থের, কখনও বিদ্যার, কখনও বা প্রতিপত্তির।”
৫। “সংস্কারের মুক্তি তো যুক্তি দিয়ে হয় না, যেমন বুদ্ধি দিয়ে জয় হয় না ভূতের ভয়৷ সংস্কার রাতারাতি পরিহার করতে হলে চাই বিপ্লব, রয়ে-সয়ে করতে হলে চাই অভ্যাস৷”
৬। “মানুষের নামের যদি কেবলমাত্র সনাক্তকরণ ছাড়া আর কোন প্রয়োজন না থাকত, তবে নামের বদলে সংখ্যা ব্যবহারের দ্বারাই তা অনায়াসে চলতে পারত। তা হলে মেয়ের জন্ম মাত্রেই মা তার নামনিত্তবাচন নিয়ে ভাবনায় পড়তেন না। নিত্য নতুন নামকরণের অনুরোধ জানিয়ে রবীন্দ্রনাথের কাছে চিঠি আসত না।
৭। “প্রেম ভালো, বিদ্বেষ দুঃখের কিন্তু সবচেয়ে মারাত্মক ইন্ডিফারেন্স- যে কাছেও টানে না- দূরেও ঠেলে না- শুধু ভুলে থাকে৷”
দৃষ্টিপাতের বিভিন্ন কাহিনীর মধ্যে যেটি মধ্যে যেটি মনে সবচেয়ে দাগ কাটে সেটি হল একটি মারাঠি যুবক আধারকারের সঙ্গে এক বিবাহিতা বাঙালিনী সুনন্দার প্রেমকাহিনী। সুনন্দাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে আধারকার বাঙলা শিখলেন, রবীন্দ্রনাথ পড়লেন। সুনন্দাও অকুণ্ঠ চিত্তে আধারকারকে দিলেন তাঁর হৃদয়। কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয় না। তাই কথিকার অন্তিমে সেই অমোঘ তিনটি অনুচ্ছেদ--

১। 'কোমলহৃদয় বলে আমার খ্যাতি নেই। কিন্তু আধারকারের জন্য সত্যিকারের বেদনা বোধ করলেম হৃদয়ে। সুনন্দা ব্যানার্জী আজ কোথায় আছেন জানিনে। অনুমান করছি, এতদিনে তাঁর যৌবন গত, দেহ বিগতশ্রী, দৃষ্টি বিদ্যুতহীন এবং কপোলের রেখাগুলি প্রচুর প্রসাধনপ্রলেপের দ্বারাও আজ আর কোনমতেই গোপনসাধ্য নয়। কোন দিন কোন অবকাশ মুহূর্তে বহু বর্ষ আগেকার এক মারাঠি ব্রাহ্মনের চরম নির্বুদ্ধিতার কথা স্মরণ করে ক্ষণেকের জন্যও তাঁর মন উন্মনা হয় কিনা, সে কথা আজ জানার উপায় নেই। অথচ তাঁরই জন্য আধারকার দিলেন চরম মূল্য। নিজেকে বঞ্চিত করলেন সাফল্য থেকে, খ্যাতি থেকে, ঐহিকের সর্ববিধ সুখ স্বাচ্ছন্দ্য থেকে! সব চেয়ে বড় কথা, নিজেকে বঞ্চিত করলেন সম্ভবপর উত্তরপুরুষ ��েকে, বংশের ধারাকে করলেন বিলুপ্ত।
২। 'কোনো দিন সন্ধ্যাবেলায় তাঁর কুশল কামনা করে তুলসীমঞ্চে কেউ জ্বলবে না দীপ, কোনো নারী সীমন্তে ধরবে তাঁর কল্যাণ-কামনায় সিন্দুরচিহ্ন, প্রবাসে অদর্শনবেদনায় কোন চিত্ত হবে না উদাস উতল। রোগশয্যায় ললাটে ঘটবে না কারও উদ্বেগকাতরহস্তের সু্খস্পর্শ, কোন কপোল থেকে গড়িয়ে পড়বে না নয়নের উদ্বেল অশ্রুবিন্দু। সংসার থেকে যেদিন হবেন অপসৃত, কোন পীড়িত হৃদয়ে বাজবে না এতটুকু ব্যথা, কোন মনে রইবে না ক্ষীণতম স্মৃতি।
৩। 'প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির দাহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার।'

পাঠ-পর্যালোচনাঃ বইটিতে উঠে এসেছে ভারত বিভাগের ঠিক আগের কিছু রাজনৈতিক ঘটনা, সেসময়ের দিল্লি আর সেখানকার মানুষেরা এর পাশাপাশি ইতিহাসও উঠে এসেছে দারুন ভাবে।

বইটিতে ইতিহাস আছে, ভূগোল আছে, উইট-হিউমার আছে, ব্যঙ্গ-বিষাদ আছে, ব্যক্তি আছে দেশ আছে, প্রেম কাহিনীও আছে আর যে কি কি আছে বলে বোঝানো যাচ্ছে না।

দৃষ্টিপাত অবশ্য শুধুমাত্র আধারকার-সুনন্দার প্রেমকাহিনী নয়। এইরকম অনেক ছোট ছোট খন্ডকাহিনী আছে এতে। সেসব কাহিনী কোথাও অতিক্রম করেছে দিল্লির ভৌগলিক সীমা, কোথাও বা তার কাল। আমরা পেয়েছি নানাবর্ণের ফুলে গাঁথা এক অনবদ্য কথামালা।

দৃষ্টিপাত আমার পড়া অন্যতম সেরা সুখপাঠ্য রচনা, বারবার পড়ার মত। পড়া না হয়ে থাকলে জোগাড় করে পড়ে ফেলুন। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, পস্তাবেন না।

হ্যাপি রিডিং ♥♥♥
পৃথিবী হোক বইময় ♥♥♥
Profile Image for L U B N A.
1 review6 followers
December 17, 2022
বইয়ের নাম: দৃষ্টিপাত।
লেখক: যাযাবর (বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়)।
পার্সোনাল রেটিং: ৪/৫

অনেক অনেক দিন পর পুরো একটা বই পড়ে শেষ করলাম। রিডিং ব্লকে থাকার দরুন অনেকগুলো বই পড়তে শুরু করলেও সবগুলোরই কিছুটা করে পড়ে রেখে দিয়েছি।

আস্তে আস্তে ব্লক কাটছে। প্রথম ধাপ হিসেবে এই বইটা পড়ে শেষ করেছি।

এটিকে ভ্রমণ কাহিনীই বলা চলে। তবে বইটি ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে লেখা হয়নি। লেখকের এক বান্ধবীকে লেখা কতগুলো পত্র এটি। সেই পত্রগুলো থেকেই এই বইটি সংকলন করা হয়েছে। বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় একটি প্রাদেশিক পত্রিকার নিজস্ব সংবাদদাতা হিসেবে দিল্লিতে যান স্যার স্টাফোর্ড ক্রিপসের আলোচনার উপর একটি রিপোর্ট করতে। তার সেই সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকেই এই বইটি রচিত হয়েছে।

আমার কাছে বইটি ভীষণ ভালো লেগেছে। লেখকের রসবোধ দারুন। সেই সঙ্গে তার লেখার ভঙ্গি, শব্দ চয়ন, ভাষার গতি সবকিছুর মিশেল এত সুন্দরভাবে ঘটেছে যে বইটি পড়তে বিন্দু পরিমাণও বেগ পেতে হয়নি। রম্য রচনার ক্ষেত্রে সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা আমার খুব পছন্দের। বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের লেখার ধরন অনেকটা সেই ধাঁচের। সব মিলিয়ে বইটি বেশ ভালো।
Profile Image for Sharmi.
9 reviews
July 13, 2020
আমার প্রিয় বই সমূহের তালিকায় সদ্য যুক্ত হলো এই বইটি। লেখকের "ক্রিপস মিশন"উপলক্ষে ভারতে আগমন, নানা স্থানে ভ্রমন সেই থেকে নানান ঐতিহাসিক কথনের অবতারণা, দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা, নানান মানুষের সান্নিধ্যে এসে তাদের চরিত্র বিশ্লেষণ, তাদের বিগত জীবনের আখ্যান লিখন, সর্বোপরি, সেই সময়কার দিল্লী তথা ভারতবর্ষের সামাজিক ব্যবস্থা, মানুষের জীবন যাপনের ধারা, সবটাই তুলে ধরেছেন। সাথে আছে এক বিষাদমাখা, বঞ্চিতের দীর্ঘশ্বাস ছোঁয়ানো, একপেশে ভালোবাসার গল্প।

লেখকের লেখনী এতই প্রাঞ্জল এবং সরস,শব্দচয়ন এতই মনকাড়া, এক একটি লাইন বার দুয়েক না পড়লে মনে তৃপ্তি আসে না। লেখনীর শক্তি এমনই অধিক, সে শক্তি বলে প্রতিটি চরিত্রে প্রাণ সঞ্চার করেছেন।
গভীর জীবনবোধ সম্পন্ন সুখপাঠ্য একটি বই, যা বারবার পড়তে মন চাইবে।
Profile Image for Khaled Tamim.
53 reviews3 followers
July 27, 2024
ছোটবেলার পাঠ্যবইয়ে এই বইয়ের রেফারেন্স কেন দিত, বইটা পড়ার পরে বুঝলাম। ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি, আর বাগধারা, প্রবাদ-প্রবচনে দক্ষতা মিলিয়ে লেখকের অসাধারণ সেন্স অফ হিউমারের প্রকাশ ঘটেছে বইয়ে। স্টাফোর্ড ক্রিপসের মিশনের সমকালীন লেখা বই, লেখকের আত্মকথন আবর্তিত হয়েছে সে মিশনের সময়সীমা ঘিরেই।
Profile Image for Sabbir Hossain.
60 reviews
April 27, 2025
বইটি সত্যিই অসাধারণ।। লেখক কখনো ভ্রমণকাহিনী শোনাচ্ছেন, কখনো ইতিহাস, কখনো প্রেমকাহিনি, কখনো নিজের মনের বাঞ্চনা।। কিন্তু এত মনে হয়নি যে গল্প হারিয়ে যাচ্ছে।। বরং গল্পের মধ্যে নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছি।।।
চিত্রা নদীর পারে মুভিতে যখন এই বইয়ের কথা শুনেছিলাম পড়ার একটা প্রবল ইচ্ছা কাজ করেছিলো।। সেটা পূরণ হলো।।
Profile Image for Sadia Shameem.
5 reviews2 followers
February 22, 2024
প্রাণ জুড়িয়ে গেছে অসম্ভব সুন্দর বাংলায় লেখা বইটি পড়ে। এটি বার বার পড়া যায় এমন একটি বই। বইয়ের পরতে পরতে রয়েছে নানা চরিত্র, যারা বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বিচরণ করলেও বর্তমানের সাথে পাওয়া যায় বেশ মিল।
Profile Image for Gain Manik.
313 reviews3 followers
April 9, 2024
খুবই ভাল ব‌ই, আমাকে কেউ রিকমেন্ড করেনি। হঠাৎ নাম সামনে আসলো তখন তো বুঝতেই পারিনি যে দৃষ্টিপাত না যাযাবর কোনটা আসলে ব‌ইয়ের নাম। ক্রীপস মিশন বা এইসব বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে বিধৃত হয়েছে। পড়ার যোগ্য ব‌ই
Profile Image for Masrura Tahiat.
8 reviews4 followers
June 19, 2024
মাত্র ৯৩ পৃষ্ঠার একটা বই হলেও পড়তে বেশ সময় লেগেছে। কারণ হয়তো লেখকের বর্ণনাশৈলীর ভিন্নতা।

অনেক অনেক বছর ধরে বইটি আম্মুর সংগ্রহে ছিল। কৌতূহলী হয়ে পড়া শুরু করলাম। আর লেখকের ফ্যান হয়ে গেলাম।

লেখকের সেন্স অফ হিউমার দারুণ। সেই সাথে লেখনী ও চমৎকার।

তৎকালীন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামাজিক রীতিনীতির উপর দৃষ্টিপাত করেছেন লেখক।

সেই সাথে শেষে রয়েছে ছোট্ট একটা হৃদয় বিদারক প্রেমের গল্প। এক মলাটের ভেতর এত কিছু পাওয়াটা পাঠক হিসেবে অবশ্যই আনন্দের।

সুযোগ পেলে অবশ্যই পড়ুন। এবং পরিচিত পাঠকদের পড়তে বলুন।
Profile Image for Shakib .
16 reviews
June 26, 2024
প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা।
কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী?
তাকে দেয় দাহ।
যে-আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে,
সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার।

বই: দৃষ্টিপাত।
লেখক: যাযাবর।
Displaying 1 - 30 of 54 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.