Jump to ratings and reviews
Rate this book

ত্রিশ লক্ষ শহিদ : বাহুল্য নাকি বাস্তবতা

Rate this book
যারা মুক্তিযুদ্ধকে নিজের চোখে না দেখেও সেটিকে শুধু মস্তিষ্কে নয়, হৃদয়েও ধারণ করে, তারা এ দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছে। ‘আরিফ রহমান’ ঠিক সে রকম একজন তরুণ, যে কাজটি এ দেশের বড় বড় গবেষকের করা উচিত ছিল, সে কাজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হয়েও সে করে ফেলার সাহস পেয়েছে। ‘ত্রিশ লক্ষ শহীদ : বাহুল্য নাকি বাস্তবতা’ নামের একটি বইয়ের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মানুষের সংখ্যা ও আনুষঙ্গিক যেসব বিষয় নিয়ে এ দেশে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়, সে বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছে। সম্ভাব্য সব তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, বিশ্লেষণ করেছে এবং সেটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছে। এ বইটিতে সে অসংখ্য তথ্যসূত্র দিয়েছে, অনেক ছবি সংযোজন করেছে, তালিকা তুলে ধরেছে। দেশদ্রোহীর যে দলটি এককভাবে মিথ্যাচার করে যে মিথ্যাগুলোকে প্রায় বিশ্বাসযোগ্য করে ফেলেছিল, আরিফ রহমান সেই মিথ্যাগুলো সবার সামনে প্রকাশ করে দিয়েছে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাডেমিক গবেষণা করবেন তাঁরাও এ বইয়ের অনেক তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন। আমি আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এই তরুণ গবেষক মুক্তিযুদ্ধকে নিজের গবেষণার বিষয় হিসেবে ধরে নিয়ে ভবিষ্যতে আরো কাজ করবে, পৃথিবীর তথ্যভাণ্ডারে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাডেমিক গবেষণার যে শূন্যতা আছে, সেই শূন্যতা পূরণ করবে।

- মুহম্মদ জাফর ইকবাল

215 pages, Hardcover

First published February 1, 2015

4 people are currently reading
170 people want to read

About the author

আরিফ রহমান

9 books66 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
35 (53%)
4 stars
21 (32%)
3 stars
5 (7%)
2 stars
4 (6%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 14 of 14 reviews
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews238 followers
July 20, 2023
ভালো ছিল। প্রচুর রেফারেন্স নিয়ে লেখক বেশ খেটেখুটেই লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের বইগুলো পড়লে একটাই সমস্যা.. এতো অত্যাচার, নির্যাতন, নির্মমতা নেওয়া যায় না। কেমন যেন অসুস্থ অসুস্থ লাগে :/
Profile Image for Emtiaj.
237 reviews86 followers
August 12, 2016
বই নিয়ে আমার যা সমস্যা -

১. (১৯তম পৃষ্ঠায়) সিরাজুর রহমানের মিথের খন্ডন করতে গিয়ে রাশেদ চৌধুরীর একটা ডকুমেন্ট দেয়া হল। তো সেখানে আছে, কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধুর সাথে আসাকালে তাঁকে দেশের পরিস্থিতি জানান। আমার কথা হচ্ছে কামাল হোসেন নিজেও তো বন্দী ছিলেন, তাঁকে কি দেশের পরিস্থিতি জানতে দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল? না দেশের পরিস্থিতি বলতে তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আগের ঘটনা বুঝিয়েছেন? আর একটা ব্যাপার হচ্ছে ... এই ভিডিওটা ইউটিয়ুবে আছে। এরপরেরেই রাশেদ চৌধুরীর নাম। তারমানে ওটা তাঁরই বক্তব্য। ১৯৭২ সালে ইউটিয়ুব আসে কিভাবে?

২. (৬৮তম পৃষ্ঠায়) রাবেয়া খাতুনের বর্ণনা দলিলের অষ্টম খন্ড আছে, ১৫তম খন্ডে নয়।

৩. (১৩তম পৃষ্ঠায়) শরণার্থীর সংখ্যা এক কোটি বিশ লক্ষের ব্যাপারে বইয়ে কোন উল্লেখ নেই। মানে বইয়ের কোথাও এর রেফারেন্স দেয়া নেই।

৪. আমার ধারণা ব্লগের পোস্টগুলো ডিরেক্ট কপি-পেইস্ট করে দেয়া হয়েছে। ছবিগুলোর প্রতি আলাদা কোন নজর দেয়া হয়নি। যারফলে অনেক ছবিই দেখতে বা পড়তে বেশ পরিশ্রম করতে হয়। আর যুদ্ধ ও নারী বইয়ের রকমারির লোগোযুক্ত প্রচ্ছদ দেয়ার মানে কি? একটা বইয়ে এটা মানায় না। এটা জাস্ট অসচেতনতার কারণেই হতে পারে।

৫. কাদের মোল্লা এবং গোলাম আযমের লেখা দুটো এখানে দেয়ার কোন যুক্তি খুঁজে পেলামনা। এবং গোলাম আযমের লেখাটার ব্যাপারে আমার একটু সমস্যা আছে। বইয়ে আছে রংপুরে থাকাকালীন ছাত্রদের প্রতিবাদ সমাবেশের নেতৃত্বে থাকায় গ্রেপ্তার হয়। এতে করে আসলে তার তথাকথিত ভাষাসৈনিকে কোন প্রমাণ হয়না কিন্তু লেখক যেভাবে বললেন যে, উনি খুব ভালোভাবে বইটা পড়েছেন তাতে এই লাইনটা এড়িয়ে যাওয়াটা ভালো দেখায়না আরকি।

৬. সাইটেশন ঠিকঠাক না দেয়া আর ব্লগীয় আমেজ থাকাটা মোটেই ভালো লাগেনি।

আমার বইটা ঠিক এই মুহুর্তে পড়ার কারণটা বলি। কোয়ারার এই পোস্টটার কারণেই। এরকম সুলিখিত বায়াসড লেখা এর আগে পড়েছি বলে মনে পড়েনা। ইনফ্যাক্ট লেখাটার স্টাইলের কারণে আমার পছন্দ হয়েছে এবং এটার মত বা মূলধারা: '৭১ এর মত করে বইটা লেখা উচিৎ ছিল। এবং আরো বেশি কনটেন্ট সমৃদ্ধ আরো ডিটেইলস বই হওয়া উচিৎ ছিল। আর একটা কথা, বইটা কিন্তু চমৎকারও। আশা করি এটার পরিবর্ধিত সংস্করণ বের হবে।
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
August 19, 2024
ক্লাস টেনে পড়ার সময় কোচিংয়ের শিক্ষক একদিন কথার মাঝে বলেছিলেন যে ১৯৭১ সালে ৩ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। শেখ মুজিব লাখকে মিলিয়ন বলার পর থেকেই ৩০ লাখ শহীদ কথাটির প্রচলন। সেদিন অবাক হয়ে ভেবেছিলাম এত বড় একটি বিষয় কীভাবে এতদিন ধরে চলে আসছে আমাদের ভেতর। তখন জানাশোনা ছিল না। বই-পত্তর পড়া হয়নি কিছুই। এই বইয়ের সূচিপত্রে যখন প্রথম অধ্যায়ের নাম দেখি 'বঙ্গবন্ধু কি সত্যিই তিন লাখ বলতে গিয়ে তিরিশ লাখ বলেছিলেন' তখনই আমার মনে পড়ে গিয়েছিল আমার সেই শিক্ষক আর অতীতের অজানার জগতের কথা।
এই বই পড়তে পড়তে আমি অবাক হয়েছি, ক্রোধিত হয়েছি, দুঃখ পেয়েছি। হানাদার বাহিনি আর রাজাকারেরা আমাদের সেই সময়ের মা-বোনদের সাথে যা করেছিল তা পড়তে গিয়ে আমার মনে এমন অনুভূতির জন্ম হয়েছিল যার কথা আমি লিখে প্রকাশ করতে সক্ষম হবো না কোনোদিন।
একাত্তরে প্রায় ১ কোটি মানুষ ভারতে শরনার্থী হিসেবে গিয়েছিল। বইয়ে উল্লেখ আছে ৯৮ লাখ ৯৯ হাজার মানুষের কথা। শরনার্থী শিবিরের ছবি দেখার সময় সেই অসংখ্য মানুষের ভীড়ে আমার মা-বাবাও যে ছিলেন এই কথা মনে পড়ায় অনুভূতিশুন্য হয়ে যাই।

নামে যদিও এটি ৩০ লাখ শহীদ বিষয়ে কিন্তু এই বইয়ে আরও অনেক কথা এসেছে। যেমন, কাদের মোল্লা ও গোলাম আজমের বিষয়ে জামায়তে ইসলামীর মিথ্যাচারের ঘটনা। এই দুইটা লেখাকে যদিও সরাসরি বইয়ের শিরোনামের সাথে যুক্ত করা যায় না কিন্তু এরপরেও এগুলো প্রাসঙ্গিক।

আরিফ রহমানের এই বইটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে পড়লেও আলোচনা হয়েছে তুলনামূলক কম। এর আরও প্রচার-প্রসার কামনা করি।
Profile Image for Hibatun Nur.
159 reviews
September 17, 2022
পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও
- হুমায়ুন আজাদ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, পাক বাহিনী এবং তাদের দোসরদের কীর্তিকলাপ নিয়ে কাজ যে কম হয়েছে তা নয়। কিন্তু পৃষ্ঠপোশকতা পায়নি খুব একটা। ‘স্বাধীনতার পক্ষের চেতনা’ এর কথা বলা লোকেরাও প্রকৃত ইতিহাস নয় বরং নিজেদের দাঁড় করানো ন্যারিটিভ প্রচারেই ব্যস্ত রয়েছে বহু বছর যাবৎ। যা সকলের কাছেই ঘোলা পানির ন্যায় অস্বচ্ছ হিসেবেই স্বীকৃত। প্রকৃত ইতিহাস তাই ঢাকা পড়ে যাচ্ছে ফালতু ন্যারিটিভ আর স্বাধীনতার বিরোধী শক্তির প্রোপাগ্যাণ্ডার তলে।
বাঙালী পাঠক হিসেবেও খুব একটা খ্যাতির দরজা রাখে না। রাখলে নিজ উদ্যোগে সঠিক ইতিহাস জানার জন্য তার রিসোর্সের অভাব হত না। তা না করে দূষিত ন্যারিটিভ আর স্বাধীনতা বিরোধী প্রোপাগাণ্ডার এক গোজামেলকে সত্যি ভেবে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে।
এই বইটি একটু হলেও উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে কাজে আসতে পারে।
বইটি তিনটি বিষয়ে আলোকপাত করেছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদের প্রকৃত সংখ্যা, বীরাঙ্গনাদের আসল সংখ্যা ও তাদের উপর হওয়া অমানবিক নির্যাতন এবং সর্বোপরি রাজাকার।
কিছু পয়েন্টঃ
১. বলতে লজ্জা নেই। আমিও এই বই পড়ার আগে তাদের একজন ছিলাম যার মনে হয়েছিল শহীদের সংখ্যা আর যাইহোক ৩০ লাখ হতে পারে না। বিরোধী শক্তির প্রোপাগাণ্ডার শিকার আমি নিজেও। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা ফেসবুকে আমি নিজেই দেখেছি যা আমার ধারণায় একটু হলেও স্কেপ্টিসিজম ঢুকিয়েছিল।
এই বই আমার সেই ধারণাতে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।
২. এ দেশের একটি এলিট অংশকে ‘রেপ অফ ন্যাঙ্কিং’-কে নিয়ে আহাউহু করতে দেখা যায়। সেখানে তাদের অবস্থান থাকা সত্ত্বেও ’৭১ এর বীরাঙ্গনাকে নিয়ে তাদের সরব হতে আমি দেখি না খুব একটা। তারা যে অবস্থানে বিরাজমান তারা চাইলে বীরাঙ্গনা ইস্যুটিকে নিয়ে যেমন সরব হতে পারতেন, যেমন গবেষণাধর্মী কাজ করতে পারতেন তেমনটা করে হওয়া ওঠেনি। যা হয়েছে তা লাইমলাইট পায় নি। পেলে গবেষণাধর্মী কাজগুলো আমাদের জাতীয় চেতনায় একটু হলেও নাড়া বেশি দিত।
তবে অবশ্য কাজে দিত কিনা সন্দেহ। ’৭১ পরবর্তী সময় আমরা বীরাঙ্গনাদের পাশে দাঁড়াই নি। তাদের সোশ্যাল আউটকাস্ট বানাতে চেয়েছিলাম উঠে পড়ে। এখনও ধর্ষণের দোষ আমরা নারীকেই দিয়ে নিজেদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকি।
বীরাঙ্গনাদের উপর যে নির্মমতা আর নির���শংসতার নিদর্শন এই বই পড়ে আমি জানতে পেরেছি তা আমি হজম করতে পারিনি। কি যে কষ্ট লেগেছে তা বলে বোঝানো সম্ভব না। বার বার পড়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। কেননা পড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
৩. আল বদরের নামের পিছনে যে বদরের যুদ্ধ সম্পর্কিত তা জানা ছিল না আমার। বইয়ের এই অংশে অনেক ফ্যাক্ট তুলে ধরার পাশাপাশি এর বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ফ্যাক্টে সমস্যা না থাকলেও লেখকের থেকে আরও উন্নত বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা আশা করেছিলাম।
এক জায়গায় সম্ভবত ১৯৭৯ এর বদলে লেখক ১৯৭৭ লিখেছেন।

এই তিনটি মূল বিষয় ছাড়াও আরও অনেক কিছু এই বইয়ে আলোচনায় এসেছে।
বইটিতে সংযুক্ত খবরের কাগজের ক্লিপিংসগুলো আরও স্পষ্ট হলে ভাল হত। একটা নির্ঘন্ট থাকলে পাঠকের সুবিধা হত। বইয়ের প্রিন্টিংগতও অনেক দূর্বলতা আছে যা এ ধরণের কাজের ব্যাপারে পৃষ্ঠপোশকতার অভাবের প্রতি নির্দেশ করে।

শেষে শর্মিলা বোসকে নিয়ে কিছু না লিখলেই নয়। একাডেমিক পর্যায়ে, গবেষণাধর্মী কাজ করতে হলে একটা নিরপেক্ষ মাইন্ডসেট নিয়ে তারপর এগুতে হয়। এই মহিলা তা একদমই করেন নাই। তিনি পরাজিত পক্ষের পারষ্পরিক বিরোধার্থক ন্যারিটিভ থেকে যেগুলোতে পরাজিত পক্ষকে ভাল আলোতে ফেলে সেগুলোকেই রেফারেন্স ধরে নিজের অপকর্মটি সেড়েছেন।
তিনি এমন কন্ডাসেণ্ডিং একজন জ্ঞানপাপী যাকে তার গবেষণার সমালোচনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন- যারা মুক্তিযুদ্ধের হতাহতের সংখ্যা বাড়িয়ে ফায়দা লুটছেন তাদেরই তার গবেষণা নিয়ে সমস্যা আছে।
যেখানে প্রথম থেকেই শহীদদের আর বীরাঙ্গনাদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপনে আমরা নাস্তানাবুদ সেখানে এই সংখ্যা নিয়ে ফায়দা নেয়ার কি দেখলেন তিনি আমি জানি না। তার আলোচনায় প্রকৃত সত্য আলোর দেখা পায় না কিন্তু বাঙালিদের দ্বারা বিহারী নারী ধর্ষণ আর বাঙালী নারীদের স্বেচ্ছায় পাকবাহিনীর কম্ফোর্ট গার্ল হওয়ার মনবৃত্তি লাইমলাইট পায়। হতাশা।
ওনার বায়াসের কারণটা ধরতে পারলাম না আমি। তিনি ৩০ লাখের বেশি শহীদ আর ৬ লাখেরও বেশি বীরাঙ্গনাদের স্মৃতির সাথে যে নোংরা খেলা খেলেছেন তার নিশ্চিন্তে ঘুম হয় কিভাবে আমি তাই ভাবি।
উল্লেখ্য, শর্মিলা বোস শরৎচন্দ্র বোসের নাতনি। সেই শরৎচন্দ্র বোস যিনি একদম শেষের দিকে দুই বাংলাকে এক রাখার একটা ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছিলেন। তিনি সুভাষচন্দ্র বোসের বড় ভাইও বটে। ব্যাপারটা আমার কাছে কেন যেন হাস্যকর লেগেছে। এই পরিবার এখন ক’দিন পর পর সুভাষচন্দ্র বেঁচে ছিলেন জাতীয় প্রোপাগান্ডা বেচে চীপ পাব্লিসিটি স্টান্ট করে আলোচনায় আসতে পছন্দ করে। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে শর্মিলা বোসের দূর্মতি অবাক করার মত না।
Profile Image for Mahmuda Shongskrity.
5 reviews9 followers
December 29, 2016
যে কোন বই শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত প্রতিটি শব্দ পড়াই আমার অভ্যেস। কিন্তু এই বইটির ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম করতে বাধ্য হলাম। বইটিতে নারী নির্যাতনের ছোট ছোট বেশ কিছু জবানবন্দী রয়েছে, যার দুই-তিনটি পড়েই হাত-পা শীতল হবার উপক্রম। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একেবারেই যে পড়াশুনো করিনি তা নয়, কিন্তু তার ভয়াবহতা ও নির্মমতা যে এতটা তীব্র তা জানা ছিল না!
আমার সব সময়ই একটা সুপ্ত ইচ্ছা ছিল, যদি সেই উত্তাল সময়টায় উপস্থিত থাকতাম তাহলে খুব কাছ থেকে সেই সময়টাকে অনুভব করতে পারতাম। সত্যি কথা বলতে এখন মনে হচ্ছে, নারী হয়ে অই সময়টায় না থেকে খুব বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। আমি জানি তখন অনেক নারীও অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন এবং অসংখ্য মানুষ শারীরিক নির্যাতন ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। ছোটবেলা থেকে এসব শুনে অভ্যস্থ আমি তা মেনে নিতে পারলেও, নারী-নির্যাতনের নতুন যেই সত্যটা এই বই পড়ে আমার সামনে উন্মোচিত হোল তা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
Profile Image for Masud Khan.
87 reviews17 followers
August 14, 2019
গবেষণালব্ধ ও তথ্যবহুল। যাদের মনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বীরাঙ্গনাদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ আছে তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
October 29, 2024
'মুজিব ত শহীদের সংখ্যা ৩ লাখ বলতে যাইয়া ৩ মিলিয়ন বলছিল। মানুষও তাই বিশ্বাস করে ফেলছে।' মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা কত এই যুক্তিতর্কে প্রথমোক্ত বক্তব্য অনেকেই উপস্থাপন করে থাকেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার দোসররা যে গণহত্যা চালিয়েছে সেখানে প্রকৃত নিহত মানুষের সংখ্যা কখনোই সঠিকভাবে খোঁজার চেষ্টা করা হয় নি। পাকিস্তানের হামুদুর রহমান কমিশন দায়সারা একটা তদন্ত করে রিপোর্টে উল্লেখ করে মাত্র ২৬০০০ বাঙালি নিহত হয়েছে; অন্যদিকে বাঙালি পক্ষের ভাষ্য সেটা ত্রিশ লক্ষ।

প্রথম প্রশ্ন হলো মুজিব কি আসলেই ভুল করে ত্রিশ লক্ষ বলেছিলেন? উত্তরটা হলো, না! মুজিব বলার পূর্বেই বিভিন্ন পত্রিকা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মুখে ত্রিশ লক্ষ মানুষ নিহত হওয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়। চরমপত্রের ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানেই ত্রিশ লাখ বাঙালি নিহত হওয়ার উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ২২ ডিসেম্বর দৈনিক পূর্বদেশের সম্পাদকীয়তে একই কথা উল্লেখ করা হয়। বিদেশী সংবাদপত্র হিসেবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাভদা পত্রিকা বহির্বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারাও ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি ত্রিশ লক্ষ শহীদ উল্লেখ করে খবর প্রকাশ করে। এটা ত গেল যুদ্ধ পরবর্তী বক্তব্য। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মে মাসে খালেদ মোশাররফ দশ লাখ মানুষ নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন; একই ভাষ্য পাওয়া যায় মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কন্ঠেও। ত্রিশ লক্ষ হত্যার কথা প্রথম উচ্চারিত হয়েছিল জেনারেল ইয়াহিয়ার কন্ঠে। তিনি বলেছিলেন বাঙালিদের ত্রিশ লক্ষ হত্যা করলেই বাকিরা নিঃশেষ হয়ে যাবে। সেই বক্তব্যকেই কি পুনরায় স্থাপন করা হয়েছে ইতিহাসে?

গবেষক মুনতাসীর মামুন একবার পাকিস্তানের জেনারেল রাও ফরমান আলী খানের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহত মানুষের সংখ্যা জিজ্ঞাসা করলে তিনি সংখ্যাটা ৪০-৫০ হাজার উল্লেখ করেন। সংখ্যাটা এতটাই যদি কম হয় তাহলে কার লাভ ছিল ত্রিশ লক্ষ বলায়? এমন না যে ত্রিশ লক্ষ বলার কারণে এটা আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যার স্বীকৃতি পেয়েছে। বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকা ও গবেষকেরা তাদের নিজস্ব গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে মুক্তিযুদ্ধে নিহত মানুষের সংখ্যা দশ থেকে ত্রিশ লাখের মাঝামাঝি। পৃথিবীর আরো অনেক দেশেই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে; সেসব গণহত্যার সাথে তুলনামূলক আলোচনা দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদের বক্তব্যকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করেছেন লেখক। শর্মিলা বসুর ডেড রেকনিং বইটি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালে। সেখানে পাকিস্তান আর্মির সংখ্যাকেও কমিয়ে বলা হয়, যাতে করে নিহতের সংখ্যা আপনা-আপনি কমে আসে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর আরেকটি মানবতাবিরোধী অপরাধ ছিল ধর্ষণ। বাঙালি নারীদের সম্মানহানি ও মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভাঙার জন্য এই ঘৃণ্যতম কাজ করেছিল তারা। এই সংখ্যাটাও সরকারি ভাষ্যমতে দুই লাখ। প্রকৃত সংখ্যাটা জানার উপায় নেই, কারণ অনেকেই আ ত্ম হ ত্যা করেছে এবং সম্মানের ভয়ে বাইরে প্রকাশ করেনি। যুদ্ধের পরে এই প্রসঙ্গে কমিশন কাজ করলেও বাংলাদেশের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি কার্যক্রমের সাফল্য আনতে পারেনি। অনেক যুদ্ধ শিশু ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দত্তক হিসেবে চলে গিয়েছিল। কয়েকজন বীরাঙ্গনার নির্যাতনের বর্ননা কঠোর হৃদয়ের মানুষের মনকেও আর্দ্র করবে।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যার মাঝে শুধু আর্মির গুলিতে নিহত মানুষ ছিল? এই প্রশ্নটারও খোলাসা করেছেন লেখক। শরনার্থী শিবিরে মৃত মানুষেরও দায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিতে হবে। কারণ তারাই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত নিহত মানুষের সংখ্���া জানতে না পারার আরেকটি কারণ হলো সত্তরের ঘূর্ণিঝড় এবং চুয়াত্তরের দূর্ভিক্ষ। এই দুই ঘটনাতেও অনেক মানুষ মারা যায়। তবে বিভিন্ন রিপোর্ট, গবেষণা, অন্যান্য গণহত্যা বিবেচনা করলে বাংলাদেশের ১৯৭১ সালে নিহত মানুষের একটি আনুমানিক সংখ্যা পাওয়া যায় ,যা ১৫ থেকে ৩০ লাখের মাঝেই থাকে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় এবং প্রকৃত শহীদদের সংখ্যা নিরূপণ করতে না পারার ব্যর্থতা আজীবন বয়ে বেড়াবে।

কাদের মোল্লা ও মুজাহিদের জামায়াত সংশ্লিষ্ট যুদ্ধাপরাধ এবং গোলাম আযমের ভাষা সৈনিক দাবির খণ্ডন করার চেষ্টা করেছেন লেখক। লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি আওয়ামীলীগের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সমান্তরাল হওয়াতে কিছু পক্ষপাতমূলক বক্তব্য দেখা যায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করে বিচারকে প্রভাবিত করার ব্যাপারে কোনো আলোচনা নেই। কিছু জায়গায় অগোছালো আলোচনা। লেখক মূলত বিভিন্ন সময়ে লেখা ব্লগের পোস্ট একত্রিত করে বই প্রকাশ করেছেন, তাই বইটিতে ব্লগের চেহারা-চরিত্র বিদ্যমান। লেখাকে সম্পাদনা করে বইয়ের উপযোগী করা উচিত ছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা কত সেটা কখনোই জানা যাবে না। তবে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যগুলোর প্রাথমিক ধারণা হিসেবে বইটি সহায়ক হবে বলে মনে করি। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for Asiful Haque Tomal.
36 reviews
February 23, 2025
পুরো বইটা মুক্তিযুদ্ধের ডকুমেন্ট এর একটা অসাধারণ ক্যাটালগ। ১ম ৯ টা পরিচ্ছেদ পড়তে সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য লেগেছে। এবং পড়ার পর মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ পাইনি। 'আমি বীরাঙ্গনা বলছি' বইটা পড়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু এই বইটা পড়ার পর আর সে সাহস করবো বলে মনে হচ্ছে না।
তবে বইয়ের পরবর্তি অংশটুকু আর বইসুলভ মনে হয়নি। মনে হয়েছে লেখাগুলো আসলে ফেসবুকিয় রিজনিং সাথে সেটাকে জাস্টিফাই করার জন্য অনেক অনেক তথ্য উপাত্য। অথবা এই অংশটা আরো ভালোভাবে আলাদা একটা বইয়ে জায়গা পেতে পারতো।
Profile Image for Pranjal Pranta.
26 reviews
March 17, 2021
মুক্তিযুদ্ধের শহীদ সংখ্যা নিয়ে ভালোমানের প্রামাণ্য লেখা প্রকাশ হতে এতদিন কেনো লাগলো, এই প্রশ্নের উত্তর জানিনে। বেটার লেট দ্যান নেভার। বই খুবই ভালো, অনেকগুলা কমন মিথ প্রপারলি ডিবাংক করা হয়েছে, এক শর্মিলা বোসের ডেড রেকনিং এর রেফারেন্স দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে গেসিলাম, এই বইটায় এটলিস্ট সেইটা কিছুটা খণ্ডন করা হয়েছে। এরকম লেখা আরো বেরোনো জরুরি।
Profile Image for Akib Un Noor.
17 reviews1 follower
July 17, 2023
আমার কাছের সংস্করণটা প্রথম প্রকাশের। বেশ কিছু বানান ভুল আর অস্পষ্ট সাদাকালো ছবি ব্যতীত সামগ্রিকভাবে লেখক যে অসামান্য পরিশ্রম করেছেন তথ্যগুলো তুলে ধরতে তার জন্যে সাধুবাদ জানাই।
ওনার নিবিড় গবেষণা একাত্তরের শহিদের সংখ্যা নিয়ে উদ্ভূত বিতর্কে একটি বড় চপেটাঘাত বলতে হচ্ছে। ধন্যবাদ লেখককে।
Profile Image for Tansa Rahman.
75 reviews7 followers
December 11, 2024
বইটা এতদিন ধরে খুঁজছি গুডরিডসে, পেলাম না কেন কে জানে!
স্কুল থেকে পুরস্কার পেয়েছিলাম। কি ভয়াবহ বর্ণনা! বিশেষ করে নারী নির্যাতনের অংশটুকু। ভাবতেই গা শিউরে ওঠে...
Profile Image for Himu.
51 reviews
December 16, 2024
তথ্যবহুল বেশ গুছানো একটা বই।
Profile Image for Rifat Sharna.
32 reviews4 followers
March 20, 2017
সবচেয়ে খারাপ- আসলে ভয়াবহ খারাপ লেগেছে বইয়ের "নির্যাতিত নারীর সংখ্যা কমপক্ষে সাত লক্ষ" প্রবন্ধটি পড়ে, জানোয়ারদের পাশবিক নির্যাতনের সেই বর্ণনাই যেন পড়ার যোগ্য না, যারা বর্ণনা করেছেন তাদেরকে পর্যন্ত নির্দয় মনে হয়- কী পাশবিক, নিষ্ঠুরের নিষ্ঠুরতম বললেও কম বলা হয়- মনের মধ্যে শিউরে ওঠা ভয়াবহ হাহাকার জেগে ওঠে! আর লাখের মত জানোয়ার- নৃশংসতম নরপশুর দল হাজির হয়েছিল ১৯৭১ এ- এই বাংলাদেশে, ত্রিশ লক্ষাধিক মানুষকে মেরে 'জল্লাদের গোরস্থান' তৈরি করেছিল, কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারত সীমান্তে ছুটল- কিন্তু দানব পশুদের হাত থেকে পালিয়ে মহামারি কলেরা দানবের প্রকোপে লাখ লাখ মানুষকে কী নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হল! আর ওই ঘৃণ্য হায়েনারা দেশের মা-বোনদের মধ্যে "সাচ্চা পাঞ্জাবী" বিকাশের আদেশে লোলুপ্ত হয়ে যে বর্বরতম নিষ্ঠুরতা করেছিল, তা চূড়ান্ততম ঘৃণারও অযোগ্য। সময় বয়ে যায়, ধীরে ধীরে সেই বাংলা জনপদের অনেক মানুষ যেন চোখের সামনে পর্দা দিয়ে,যেন মেকি রক্ষণশীলতা আর স্বার্থান্বেষী বেঁচে থাকার তাগিদে অনেক কিছু ভুলে যায়, পাশবিকতার ভয়াবহতম রূপ আড়াল করে থাকে- আর সেই সুযোগে স্বাধীনতাবিরোধী প্রভাবশালীরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মিথ্যে ইতিহাস বয়ানের চেষ্টা করে, "ত্রিশ লক্ষাধিক শহীদ, দুই লক্ষাধিক বীরাঙ্গনা"-প্রচলিত এ সংখ্যাগুলোকে মিথ হিসেবে দাঁড় করিয়ে "বড়জোর দুই লক্ষ, হাজারখানেক"-এসব জোচ্চুরি সাজানোর চেষ্টা করে। এসব অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সমুচিত জবাব হিসেবেই যেন যাবতীয় দলিল-প্রমাণ, আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান সমেত- তথ্য-প্রমাণবহুলভাবে রচিত এক অসামান্য গ্রন্থ- যা একজন স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষকেও কিছুক্ষণের জন্য নিজ দেশের রক্তের ঋণ, নিযুত-নিযুত মানুষের নির্মমতম,মহত্তম আত্মত্যাগের কথা মনে করিয়ে দিতে পারে! :( :( (y)
Displaying 1 - 14 of 14 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.