Jump to ratings and reviews
Rate this book

Humayun Ahmed (Chronological List) #196

জোছনা ও জননীর গল্প

Rate this book
জোছনা ও জননীর গল্প বাংলাদেশের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত একটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস।

505 pages, Hardcover

First published May 9, 2014

234 people are currently reading
3815 people want to read

About the author

Humayun Ahmed

456 books2,906 followers
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.

Early life:
Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.

Education and Early Career:
Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.

Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.

Marriages and Personal Life:
In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.

Death:
In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
2,955 (62%)
4 stars
1,186 (24%)
3 stars
435 (9%)
2 stars
121 (2%)
1 star
66 (1%)
Displaying 1 - 30 of 303 reviews
Profile Image for রিফাত সানজিদা.
174 reviews1,354 followers
August 28, 2016
আমি রগচটা মানুষ। দড়াম করে চেতে যাই। রাগের মাথায় নানা আকামকুকাম করেছি, কোনটার ফল-ই সুখকর হয়নি। রেগেমেগে লেখা রিভিউর স্বাদও খুব স্বাদু হবে না, বলাই বাহুল্য।
এটা দ্বিতীয় পাঠ। প্রথমবার এক তারা দিয়েছিলাম, বিশদে বিরক্তি ওগড়ানোর তেল ছিলো না বোধহয়।
এবার আছে। অতএব ঢালবো।

জোৎস্না ও জননীর গল্প মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ঐতিহাসিক উপন্যাস। বহু ঢাকঢোলমৃদঙ্গ বাজিয়ে এটি লেখক হুমায়ূন শেষবয়সে দেশমাতৃকার প্রতি ঋণশোধমূলক কাজ হিসেবে প্রসব করে গেছেন। না করলেও ক্ষতি ছিলো না। যাক গে।

আমরা জাতিগতভাবে অতিকথন পছন্দ করি, উপন্যাস আসমানী কিতাব না, তাতে ভুলত্রুটি থাকতেই পারে--পাঠের গোড়াতেই পাওয়া যায় এমন মুচলেকা। দলমতধম্মো সবকিছুর ওপরে উঠে যাওয়া সুখী সুন্দর বাংলাদেশ কামনা করে টানা হয় ইতি।
সহনশীলেরা যুক্তি দেন সুনীল গাঙ্গুলিতে ভর করে, ঐ যে প্রথম আলো। সেখানেও তো ফিকশান নামক তুলিতে কাদম্বরী দেবীকে আঁকা হয়েছে।
রঞ্জন বন্দ্যো, গায়ে যার গন্ধ, লেডি রাণুর কপোলে আদরের দাগ দেননি?

কিন্তু এই উপন্যাসের পটভূমি তো নিছক দেবর-বউদির বন্ধুত্ব নয়, আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধ। এই ঔপন্যাসিকের নাম হুমায়ূন আহমেদ।
এই ভদ্রলোকের নীল হাতী পড়ে শুনিয়ে আমাকে ছেলেবেলায় ভাত খাওয়ানো হতো।
বহু পড়ুয়ার মনোজগতের অদ্যাবধি একমাত্র ঈশ্বর হিসেবে হুমায়ূনের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর আদতেই অনেক বেশি!

মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হয় হুমায়ূনের বয়স তখন তেইশ।
মুঃ জাফর ইকবাল, কনিষ্ঠ ভাইও তখন যুবক, দুজনেই তখন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বরাবরই হুমায়ূন ছিলেন যাবতীয় রাজনৈতিক গোলযোগ থেকে স্বেচ্ছাদূরত্ব বজায় রাখা আইডিয়াল মেধাবী পড়ুয়া। এমনকি ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সময়েও তিনি ছিলেন উত্তেজনামুক্ত এক তরুণ।

.....বাইরে যখন ভয়াবহ আন্দোলন চলছে, আমি তখন দরোজা বন্ধ করে গান শুনছি—কেন পান্থ এ চঞ্চলতা?

হুমায়ূনের বাবা, পুলিশের ডিএসপি, সাহিত্য ও সঙ্গীতরসিক ফয়জুর রহমান,শহীদ হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। বলেশ্বর নদীর পাড়ে তাঁকে যখন হত্যা করা হয়, তখন পিরোজপুর শহরে ডিসির বাংলোর পাশেই জেলা স্কুলে ছিলো পাকবাহিনীর ক্যাম্প।
সে সময়ে পিরোজপুর জেলার দেল্লা রাজাকার, পাকবাহিনীর সহযোগী যুদ্ধাপরাধী 'মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী'র নেতৃত্বে পাড়েরহাট বাজার, টগরা, লক্ষ্মীদিয়া, লাহুড়ী গ্রামে নির্মমভাবে বাঙালিদেরকে হত্যা করা হয়। কাছাকাছি দূরত্বের কদমতলা ইউনিয়নের ভোরা গ্রামের এক গৃহবধু, ভাগিরথীকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের অপরাধে প্রকাশ্য দিবালোকে চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে দড়ি বেঁধে, ৫ মাইল ঘুরিয়ে ছেঁচড়ে,পিষে মারা হয়।

হুমায়ূনের জ্যোৎস্না ও জননীর গল্পে সেই ভাগিরথীর কথা আসেনি অবশ্য। অনুপস্থিত প্রতিবেশি সাঈদীসাবও।

শুধু ভাগিরথী বা রাজাকার সাঈদী কেন, লক্ষ লক্ষ নির্যাতিত বীরাঙ্গনাদের কথাও এ উপন্যাসে নেই। জুড়ে দেওয়া ভূমিকায় অত্যন্ত আবেগঘন ভাষায় লেখক গোড়াতেই জানান,বীরাঙ্গনাদের নিয়ে কিছু লিখতে তিনি অপারগ কারণ তাদের অবদান ও আত্মত্যাগ নিয়ে লেখার ক্ষমতাই তার নেই।

অদ্ভুতভাবে, সঙ্গে সঙ্গে তিনিই আবার গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন বীরাঙ্গনাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের মাত্রা নিয়ে তার সন্দেহ আছে। অবলীলায় প্রশ্ন করেন,
এই যে বলা হয়, মেয়েদের বই খাতা কলমসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল—একাত্তরে তো মেয়েদের পথে বের হবার-ই কথা নয়, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ ছিল তখন।
তাহলে বইখাতা হাতের এই স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এই পাকবাহিনীর নির্যাতন ক্যাম্পে আসে কিভাবে?

তিনি ভুলে যান, আমার আপন আঁধার এ নিজেই লিখেছিলেন যুদ্ধের সময়টার শেষদিকে, আনিস সাবেতসমেত তিনি ছিলেন ঢাবির হলেই; আহমদিয়া ভাতের হোটেল নিয়ে, ভুলে যান একাত্তরের দিনগুলিতে জাহানারা ইমাম লিখেছিলেন কিভাবে মাইকিং করে, পত্রিকায় সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে সে বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছিল স্কুলে, বিশ্বাসই করতে চান না নানা আবাসিক হলগুলো থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া দুর্ভাগা ছাত্রীদের নগ্নাবস্থায় কীভাবে উলটো করে ঝুলিয়ে রাখা হতো সিলিং থেকে।
যেখানে যুদ্ধ ও নারীর মতো মুক্তিযুদ্ধের নানা দলিলে, সাক্ষীদের বর্ণনায়, আমি বীরাঙ্গনা বলছিতে বীরাঙ্গনাদের নিজেদেরই ভাষ্যে সেসব অমানবিক, অমানুষিক অত্যাচারের বর্ণনা উঠে এসেছে বারংবার।

একাত্তরে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বাবাকে হারালেও মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন নি। মাসের পর মাস তাঁর মা আয়েশা ফয়েজ ছেলেমেয়েকে নিয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য দেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালিয়ে বেড়িয়েছেন। যুদ্ধকালীন সময়ে এবং যুদ্ধপীড়িত বাংলাদেশে স্বামীহারা মা, ভাইবোনদের নিয়ে এই পুরো পরিবারটিকেই কঠিনতম সব সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। এর মধ্যে একসময় তাঁর নানাজান রাজাকার হিসেবে নিহত হন।

সম্ভবত মাহফুজ আহমেদের নেয়া এক সাক্ষাৎকারে হুমায়ূন বলেছিলেন—
মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানকে সাপোর্ট করেছেন তাদের মধ্যে আমার নানাও একজন, যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মারা গেছেন। আমার এই নানার মতো ভদ্রলোক, পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত এত পরিপূর্ণ ভদ্রলোক এই জীবনে দেখিনি। আমার নানা একটি আদর্শ নিয়ে বড় হয়েছেন। একটি পূর্ণ মুসলিম রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন।
হয়তো সেজন্যেই তাঁর যুদ্ধ নিয়ে রচনায় সরাসরি দুষ্টু রাজাকারদের কথাটথা বিশেষ থাকে না।
সূর্যের দিন, আগুনের পরশমণি পড়েছেন নিশ্চয়ই, ছিলো কিছু? কিংবা ১৯৭১? তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কোন গল্প-উপন্যাসেই আসলে রাজাকারদের ঘৃণ্য ইতিহাস ঠিক প্রত্যক্ষভাবে উঠে আসেনি। বিশেষত ধর্ষণ ইস্যু তো নয়ই!

বরং সেফ সাইডার হুমায়ূন উপন্যাসে মন দিয়ে ব্যবহার করে চলেন এমন সব কোটেড অংশ, বিশেষভাবে বাছাইকৃত সব বইটই থেকে, যাতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সেই 'জিয়ে পাকিস্তান' কোন্দলটি চালু করে রাখা যায়।
১৯৭১ সালের পটভূমিতে আঁকা চরিত্র হলেও আসমানী স্বামীকে চিঠি লেখে ডিজুস জেনারেশনের স্টাইলে--মিসিং ইয়ু বেবি।
বুদ্ধিজীবি হত্যার অংশে, যেখানে ডঃ জি.সি দেব খুনীদের নিজেই জানিয়েছিলেন এ বাড়ীর সবাই হিন্দু, দৃশ্যটা উপস্থাপন করা হয় নিতান্তই হালকা ভঙ্গিতে।

রোকেয়া হল, চরমপত্র, অপারেশন জ্যাকপট, রুমিজামিবদিআলতাফমাহমুদ, ডাঃ ফজলে রাব্বী, রায়ের বাজার বধ্যভূমি....কতকিছুর বিনিময়ে এই দেশ পাওয়া গেলো।
আর হুমায়ূন বিশাল পটভূমিতেও বিশদে লিখলেন শুধু মেজর জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার কপি, গৌরাঙ্গের মদ্যপ অবস্থার হা-বিতং বিবরণ আর মাওলানা ইরতাজউদ্দীন কাশিমপুরীর বগলে থাকা পোষা রাজহাঁসের দুষ্টুমির ইতিহাস! হে হে।

বই কেনা ভালো অভ্যাস।
তবে ব্যক্তিগত মতানুসারে এক সময়কার অতীব প্রিয় কথাশিল্পী এবং ক্রমশ তীব্র অপছন্দের তালিকায় মূর্ত হয়ে ওঠা হুআ'র এই রিকনসিলিয়েশান ধাঁচঘেষা 'ওপন���যাস' টি ইতিহাসের (ভুয়া) দলিল বা শেলফে সাজানো, যে কোন পারপাজের জন্যেই না কেনাই উত্তম।
৪০০ টাকা দাম তো, গরিব টোকাই কাউকে সম্প্রদান কারকে দান করলে দু-চার বেলা ভাতডাল কিনে খেতে পারবে।

রিভিউ শ্যাষ! :)
Profile Image for Nabila Tabassum Chowdhury.
373 reviews274 followers
April 20, 2015
বইটি যেহেতু অনেক আগে পড়া এবং পুনরায় পড়ার ইচ্ছা নাই, তাই আমি বইটা সম্পর্কে কিছু লিখতে চাইনি। কিন্তু বইটার রেটিং দেখে প্রতিদিন শঙ্কিত হই। শুধু রেটিং নয় মাঝে প্রিয় দশটি বই বিষয়ক একটি খেলা ফেসবুকে ছিল এবং এতে অনেকের প্রিয় দশটি বইয়ের তালিকায় আমি বইটিকে দেখেছিলাম। এবং দেখে শঙ্কিত হয়েছিলাম। বইটি পড়ার সময় অনেকগুলো পয়েন্টে জানা তথ্যের সাথে অমিল ঘটেছিল। এখন সবগুলো আমার আমার মনে নেই। বছরখানেক আগে এটা নিয়ে ফেসবুক বই পড়ুয়া গ্রুপে আলোচনার সময় (তখনও আমার বইটির স্মৃতি তেমন ছিল না) নিজের ব্রেন টাকিয়ে-টুকিয়ে কিছু ভুলের কথা বলেছিলাম। আজ আরেকটা মনে পড়লো। এগুলো আপাতত লিখে রাখি, পরবর্তীতে আরও কিছু মনে পড়লে বা জানতে পারলে রিভিউ (রিভিউ না বলে ভুলের লিস্ট বলা ভাল) আপডেট করা হবে।

১/ উনি বইটির ভূমিকায় "স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রে"র নানা জায়গায় ওনার খটকা আছে বলে উনি উল্লেখ করেন। খটকার উদাহরণ দেবার জন্য একটি এখানে নারী নির্যাতনের একজন সাক্ষদানকারীর দেয়া জবানবন্দীকে উনি প্রশ্ন বিদ্ধ করে বলেছেন – “যা আমার কাছে একেবারে গ্রহণযোগ্য না তা হলো সাক্ষ্যদানকারী বলেছেন এই সব তরুণীদের বই-খাতা-কলম ছিল। অর্থাৎ স্কুল বা কলেজে যাবার পথে তাদের ধরা হয়েছে। যে ভয়ঙ্কর সময়ের কথা বলা হয়েছে সে সময় স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি সবই বন্ধ। বইখাতা নিয়ে কারো বাইরে যাবার প্রশ্নই উঠে না।”

এটি রাবেয়া খাতুন নামে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের এক সুইপারের সাক্ষ্য। সাক্ষ্যটি নানা গবেষক তাদের লেখায় ব্যবহার করেছেন। এর মাঝে আছেন শাহরিয়ার কবির,"একাত্তরের দুঃসহ স্মৃতি" বইতে এই সাক্ষ্য ব্যবহার করেন। এর মাঝে আছেন মুনতাসির মামুন, বইয়ের নাম মনে পড়ছে না। এবং আরও অনেকে।

আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় হুমায়ুন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে শুধু নিজের যুক্তিকে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষীর উপর স্থান দেবার আগে ন্যূনতম গবেষণা করেননি। পাকিস্তানী সরকার রীতিমত হুকুম জারী করে ঢাকায় স্কুল-কলেজ খোলা রাখার ব্যবস্থা করেছিল। ১ মে থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯ মে থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখা হয়। এমন কি ১৫ জুলাই থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়, পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে ছিল পুলিশ এবং রাজাকারদের টহল। পরীক্ষায় অংশ নেবার জন্য সরকার পক্ষ থেকে এবং অংশ না নেবার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে প্রচারণা করা হয়। এই তথ্য এত বইয়ে আছে যে এটা জানতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক পড়াশুনার দরকার হয় না। বহুল পঠিত জাহানারা ইমামের "একাত্তরের দিনগুলিতে"ই পাওয়া যায়।

২/ বইটিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে "জিয়ে পাকিস্তান" নিয়ে সুশীল গোত্রীয় একটি বিতর্ক উপস্থাপন করেন, যার কোনো উত্তর তিনি নিজে দেন নি। ৭ মার্চের ভাষনে বঙ্গবন্ধু "জিয়ে পাকিস্তান" বলেননি তার প্রমাণ পেতে এই পোস্টটি দেখতে পারেন।

৩/ বইটির মাঝামাঝি এক জায়গায় মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণাকেও সুশীলতার সাথে কিছু রেফারেন্স ব্যবহার করে প্রথম ঘোষণা বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন বলে যতদূর মনে পরে। কিন্তু উনি এটাকে প্রথম বলে দু-চারটা রেফারেন্স দিতে পারলে আমি বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে দিতে পারবো গাদাখানেক। এই পোস্টটা দেখা যেতে পারে।

আর আমি মুক্তিযুদ্ধের বইতে ভুল দেখলে তাকে শূন্য রেটিং দেয়ার পক্ষে, কিন্তু আফসোস শূন্য দেবার সিস্টেম নাই, তাই এক।
Profile Image for Monirul Hoque Shraban.
171 reviews52 followers
September 19, 2021
অতীব সুন্দর এবং অনন্য এক মাস্টারপিস। হুমায়ূন আহমেদের কলমে এমন একটা উপন্যাস তার লেখক জীবনকে নিঃসন্দেহে পূর্ণতা এনে দিয়েছে। পড়ার মাঝে একটা জিনিস বার বার ভাবছিলাম, এ বাংলার মাটি এত এত দুঃখ কীভাবে ধারণ করে আছে? দুঃখে ভারী এই মাটিতেই আমরা হাটছি, চলছি কিন্তু অনুভব করতে পারছি না সেই লক্ষ কোটি মানুষের কান্না আর কষ্টকে। একাত্তরে মাত্র ১ বছরে এত হাহাকার সহ্য করেছে এই বাংলা, এখন আমরা অনুধাবনই করতে পারি না। উপন্যাসে অল্প অল্প করে চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে সেই দুঃখগুলোকে যেভাবে অনুভব করানো যায়, ইতিহাসের বইয়ে তা পারা যায় না। সেজন্য আলাদা করে এই উপন্যাসটি মূল্যবান। পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম, উপন্যাসটি লেখার জন্য লেখককে তো নিশ্চয় ঘটনার খোঁজ করতে হয়েছে, জনে জনে কথা বলে গল্প সংগ্রহ করতে হয়েছে। এত এত দুঃখ কীভাবে তিনি একত্র করলেন? এ রকম কাজে আমি মাঠে নামলে তো এক সপ্তাহেই কলিজা ফেটে মরে যেতাম।

হুমায়ূন আহমেদকে ধন্যবাদ 'জোছনা ও জননীর গল্প' লেখার জন্য। তার অনেক অনেক উপন্যাসের মাঝে কয়েকটা উপন্যাস আছে রত্নের মতো। কয়েকটা রত্নের মাঝে এটা একটা। তিনি যে পরিমাণ পাঠকের কাছে পৌঁছেছিলেন এবং যে যে ইস্যুতে তার উপন্যাস নিয়ে সমালোচনা হতো সেসবকে হটিয়ে তার ক্ষমতাকে প্রমাণ করার জন্য এই উপন্যাসটা দরকার ছিল। কৃতজ্ঞতা রইলো। বেঁচে থাকলে হয়তো এ রকম মূল্যবান আরো কিছু লিখতেন সে আফসোসও রইলো।

পড়েছি। সুন্দর লেগেছে। এ উপন্যাস নিয়ে, উপন্যাসের উপস্থাপনা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। উপন্যাসটি পড়ার পর বিতর্কগুলোও জেনে রাখা প্রয়োজন। বিষয়টা যেহেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে তাই জেনে নেওয়াটা দরকারি। ঘাঁটাঘাঁটি করলে সেসব পাবেন।
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
June 8, 2023
এক দু কথায় এ বইয়ের রিভিউ লেখা আমার পক্ষে সম্ভব না। তার চেয়ে বরং নিজের জন্য নোট করে রাখি 'আমার পড়া হুমায়ুন আহমেদের ২০০ তম বই এটাই'। এবছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়া দুটো বই ই (আরেকটা কিশোর পাশা ইমনের 'আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে') মারাত্মক ছিল । আরো দুটো সংগ্রহে আছে। সময় পেলেই হামলে পড়ব।
Profile Image for Akash.
446 reviews150 followers
October 13, 2023
যখন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কোনো উপন্যাস পড়ে শেষ করি তখন আমার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা নানার কথা মনে পড়ে। নানার সংগ্রামী জীবনের কথা মনে পড়ে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও নানা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। তখন ঢাকা শহর রিকশা চালিয়ে আমার মা খালাদের নানা পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করেছে। নানা সারাজীবন তার চরম কষ্টের কথা সবার থেকে লুকিয়ে ছিল।

২০১০ সালে আম্মাকে যখন সরকারী চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হল তখন থেকে আমি এ দেশ ছাড়ার স্বপ্ন দেখি। আম্মার দোষ ছিল আব্বা কেন বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা।

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নানা যখন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এমপি মুজিবুর রহমানের কাছে আম্মার চাকরি বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করেছিল তখন সেই লোচ্চা এমপি নানা এবং আম্মাকে আপমান করে তার টর্চার রুম থেকে বের করে দেয়।

২০১৫ সালে যখন সরকার থেকে বলা হল যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ঢাকায় ফ্ল্যাট দেওয়া হবে তখন নানা নিতে চেয়েছিল ফ্ল্যাট। কিন্তু ��খন নানা শুনে যে সেই বিনামূল্যের ফ্ল্যাট পেতে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হবে তখন নানা ঘৃণা মনে সে ফ্ল্যাটের আশা ত্যাগ করেছে। ঘুষ দিয়ে বিনামূল্যের প্রাপ্য ফ্ল্যাট নেয়নি নানা।

রিভিউ লিখতে এসে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সত্যিকারের গল্প বলে ফেললাম। নানা তুমি জীবিতকালে তোমার কাছ থেকে কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে চাইনি। ক্ষমা করে দিও আমাদের। যেখানেই থেকো, ভাল থেকো। যখনই কোনো মুক্তিযুদ্ধের গল্প পড়ি শুধু তখনই কেন তোমার কথা মনে পড়ে! অন্য সময় মনে পড়ে না কেন! তাহলে তুমি কি শুধু মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ঘৃণা করি। শুধু মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা করি।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
June 25, 2023
জানিনা ফ্যাক্টস এর মাঝে কতটুকু ফিকশন এর আশ্রয় আছে। তবে সত্যিই সেরা, সত্যিই অনবদ্য।
Profile Image for Rubell.
188 reviews23 followers
April 20, 2022
হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসে একটা বৈশিষ্ট্য খেয়াল করা যায়। তিনি পজিটিভ এনার্জির প্রতি গুরুত্ব বেশি দেন। কিছু মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সহযোগী, এবং কিছু মুক্তির শুভাকাঙ্ক্ষী সুন্দর মনের মানুষের জীবনের ত্যাগ, সংগ্রাম, ভালোবাসা, ও ট্র্যাজেডির গল্প ফুটিয়ে তোলেন তিনি। তাঁর উপন্যাসে ভিলেনের নৃশংসতার কাহিনীও উপস্থিত থাকে, কিন্তু নৃশংস পাকিস্তানি সেনাদের প্রতি রাগ, বা বিশ্বাসঘাতক রাজাকারদের প্রতি ঘৃণার যে অনুভূতি; সেটাকে ম্লান করে দেয় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষদের প্রতি ভালোবাসার অনুভূতির শক্তি। জোছনা ও জননীর গল্প পড়ে বাংলাদেশের জন্য আনন্দ হয়, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সহযোগীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাবোধ জাগে, তাদের শোকে চোখ অশ্রুসিক্ত হয়।

ঘৃণা একটা শক্তিশালী রাজনৈতিক হাতিয়ার। রাজনীতিতে সক্রিয় বা রাজনীতির গতিবিধির সাথে যাদের স্বার্থ জড়িত তাদের অবশ্য ব্যবসায়িক কারণেই ঘৃণা নিয়ে কাজ করতে হয়। হুমায়ূন আহমেদের ঘৃণা নিয়ে কাজ করার কোন রাজনৈতিক স্বার্থ ছিল না বটে, কিন্তু পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দালালদের প্রতি ঘৃণায় উন্মত্ত হওয়া স্বাভাবিক ছিল তাঁর পক্ষে, কারণ মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বাবাকে হারিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ, হয়তো কোন রাজাকারের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই তাঁর বাবাকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। বাবা তাঁর জীবনের দিশারি ছিলেন, হুমায়ূন আহমেদ বহু জায়গায় সেকথা লিখেছেন। তারপরও হুমায়ূনের মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনায় ঘৃণা আর ক্ষোভকে ছাপিয়ে যায় ভালোবাসা! মনে হয়, তিনি কোন অতিমানবীয় ক্ষমতার অধিকারী!
Profile Image for Moumita Hride.
108 reviews65 followers
July 27, 2017
অসাধারন! বইটা পড়ার পুরোটা সময় মনে হচ্ছিল আমি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে আছি। হুমায়ূন আহমেদের এই জাদুকরী লেখার আবেশ কতদিন পর পেলাম! না আমি বলব না "জোছনা ও জননীর" গল্প মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা সবচেয়ে বেস্ট বই কিন্তু উনি মুক্তিযুদ্ধের যে দিকগুলো তুলে ধরে এত দীর্ঘ একটি উপন্যাস লিখেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে! এই বইটা কিনে ২ বছর ঘরে রেখে দিয়েছিলাম, মনে হত যে এই বইটা পড়লেই উনার লেখা সব বই পড়া হয়ে যাবে! বইটা শেষ করার পর কেমন জানি শূন্য লাগছে....! এরকম লেখা আর পড়তে পারব না! কি কষ্টের ব্যপার :(
Profile Image for Amanna Nawshin.
191 reviews57 followers
September 11, 2017
“নাইমুল কথা রাখেনি। 
সে ফিরে আসতে পারেনি তার স্ত্রীর কাছে। 
বাংলার বিশাল প্রান্তরের কোথাও তার কবর হয়েছে।

কেউ জানে না কোথায়।

এই দেশের ঠিকানাবিহীন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার কবরের মাঝে তারটাও আছে। তাতে কিছু যায় আসে না। বাংলার মাটি পরম আদরে তার বীর সন্তানকে ধারণ করেছে।

জোছনার রাতে সে তার বীর সন্তানদের কবরে অপূর্ব নকশা তৈরি করে।

গভীর বেদনায় বলে-
আহারে… আহারে…” - হুমায়ূন আহমেদ
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books356 followers
August 7, 2020
হ্যাঁ অনেক আবেগী, অনেক নাটকীয়; কিন্তু মানুষকে একদম ঐ সময়ে নিয়ে ফেলতে পারছে এই বই। এজন্য এই বইটা ভালো
Profile Image for Musharrat Zahin.
404 reviews490 followers
March 26, 2022
রেটিং: ৩.৫🌟/৫🌟

সার-সংক্ষেপ:

২৫ শে মার্চের আগের রাতে আসমানী তার স্বামী শাহেদের সাথে ঝগড়া করে মেয়ে রুনিকে নিয়ে বান্ধবীর বাড়ি চলে যায়। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে সে আর বাড়ি ফিরতে পারে না। সে বান্ধবীর পরিবারের সাথে তাদের গ্রামের বাড়ি চলে যায়। এদিকে শাহেদ তাদের হন্য হয়ে খুঁজে বেড়ায়। অপরদিকে সদ্য বিবাহিত নাইমুল যুদ্ধে চলে যায়। তার স্ত্রী তাকে খুঁজতে খুঁজতে ঢাকায় চলে আসে।

শেষ পর্যন্ত গল্প কোন দিকে মোড় নেয়? যুদ্ধের প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে শাহেদ কি পারবে আসমানী ও তার সন্তান রুনিকে খুঁজে বের করতে? আর নাইমুল কি পারবে তার স্ত্রী মরিয়মের কাছে ফিরতে?
.
.
পাঠ-প্রতিক্রিয়া:

হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসগুলোর একটা কমন প্যাটার্ন আছে। সেটা হচ্ছে উনি একটা বইয়ে একের অধিক আলাদা আলাদা সাব-স্টোরি বিল্ড করেন এবং শেষে যেয়ে সব গল্প এক সুতোয় গাঁথেন। এই বইয়ের ক্ষেত্রেও তাই।

"মানুষকে যেমন পিতৃঋণ-মাতৃঋণ শোধ করতে হয়, দেশমাতার ঋণও শোধ করতে হয়। আর একজন লেখক সেই ঋণ শোধ করেন লেখার মাধ্যমে"- এই অসাধারণ কথাগুলো বলেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। দেশের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় ধরে রাখার জন্য লিখেছেন এই উপন্যাসটি।

ভূমিকাতেই হুমায়ূন আহমেদ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে "জোছনা ও জননীর গল্প" কোনো ইতিহাসের বই না। কিন্তু তিনি এত বাস্তব ভাবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও সেই সময়ের চিত্রগুলো তুলে ধরেছেন যে এটা যেকোনো কাল্পনিক উপন্যাসের উর্ধ্বে।

পুরো বইজুড়ে রয়েছে সে সময়কার যুদ্ধের গল্প, দুটি পরিবারের গল্প। ঢাকার গল্প, নীলগঞ্জ গ্রামের গল্প, বরিশাল বা পিরোজপুরের গল্প, শরনার্থী শিবিরের গল্প, কলকাতার গল্প, অস্থায়ী সরকারের গল্প। যুদ্ধের বীভৎসতা, তৎকালীন সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশ, অবস্থার উত্থান-পতন ভিন্ন মাত্রায় কাল্পনিক আবার বাস্তবতার মিশেলে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন লেখক। তিনি এখানে আরো দেখিয়েছেন কলিমুল্লাহর মতো গিরগিটি টাইপের মানুষদের, যারা সময়ের প্রয়োজনে নিজেদের লেবাস পরিবর্তন করে। লেখক ইতিহাসের কিছু বিখ্যাত চরিত্রও এখানে সংযুক্ত করেছেন যেমন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম মুজিব, মেজর জিয়া, ইন্দিরা গান্ধী, ইয়াহিয়া খান, ধীরেন্দ্রনাথ রায় প্রমুখ। এখানে তিনি আরো দেখিয়েছেন, কীভাবে ভারতকে দমিয়ে রাখার জন্য চীন পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং কীভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের পাশে এসে দাঁড়ালো।

তাঁর লেখার ধরন নিয়ে আসলে আলাদা করে বলার কিছু নেই। গল্প যেমনই হোক না কেন, উনার লেখা বরাবরই সুখপাঠ্য। কিন্তু, আমি কেন জানি এই বই থেকে আরো বেশি কিছু আশা করছিলাম। বইটা শুরু করার আগে খুব হাইপড ছিলাম, কিন্তু পড়া শেষে মনে হল কী জানি একটা নেই। আরেকবার পড়লে হয়তো বুঝতে পারবো যে ঠিক কোন জিনিসটা আমার কাছে নাই মনে হয়েছে।
Profile Image for Pranta Dastider.
Author 18 books329 followers
November 8, 2015
উপন্যাস নিয়ে বহু আশা ছিল। এবং তা আংশিক পূর্ণতা পেয়েছে।

জোছনা ও জননীর গল্প। উপন্যাসটিকে দুইভাবে দেখা সম্ভব,

১ - একটি উপন্যাস যেটি স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কিছু চরিত্রের জীবনকে চিত্রিত করে রচিত।
২ - স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি ভগ্নাংশ দলিল।

আমি প্রথম আঙ্গিকে দেখার চেষ্টা করেছি। আমার ইতিহাস পড়তে তেমন একটা আগ্রহ লাগে না। বস্তুত সেজন্যই ঐতিহাসিক উপন্যাস পড়েছি খুবই কম। তবুও এবছরই পড়া মুহাম্মদ জাফর ইকবালের 'গ্রামের নাম কাঁকনডুবি' বইটিকে আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের উপর লেখা বই হিসাবে এই বই থেকে এগিয়ে রাখব। কেননা সেখানে একটি উপন্যাস রচিত হয়েছে, তার ভেতর বিবিধ দলিলাদি টেনে ভজঘট পাকিয়ে দেয়া হয়নি। গল্পকে গল্পই রাখা হয়েছে, এবং তা সত্যি পরিস্থিতি নির্দেশ করেছে।

জোছনা এবং জননীর গল্পও এই আশা নিয়েই পড়তে শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম এভাবেই মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরা হবে। কিন্তু আশাহত হয়েছি। গল্পের প্রথম এক চতুর্থাংশ চমৎকার লেগেছে এবং এইসময় গল্পের গতি প্রকৃতি কিংবা প্রগতি নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। ২৬শে মার্চের কিছু দলিলের উপস্থাপনাও যৌক্তিক মনে হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে বিবিধ বিষয় নিয়ে এলোপাথাড়ি কোণাকাঞ্চিতে যেভাবে তথ্য ইনপুট দেয়া হয়েছে সেটা ভালো লাগেনি। খুবই খাপছাড়া এবং অহেতুক মনে হয়েছে। একই জিনিশ গল্পের মধ্যে দিয়ে ভিন্নভাবে বলা যেত। এবং বললেই বরং ভালো হতো।

এছাড়াও গল্পে টুকিটাকি ভুল আছে। একটি জায়গার কথা মনে পড়ছে যেখানে গৌরাঙ্গর মেয়ের নাম শাহেদ নিজের মেয়ের নামের যায়গায় বলে ফেলে! আমার মনে হয় পরবর্তী সংস্করণে হয়তো এগুলো সংশোধন করা হয়েছে। যদি না করা হয়, তাহলে করা উচিত।

যদি দলিলাদি বাদ দিয়ে কেবল গল্পটি দেখি তাহলে যেসব চরিত্র আমার বিশেষ লেগেছে তারা হচ্ছে, ইরতাজউদ্দিন, নাইমুল, শাহ্‌ কলিম, মাসুমা, প্রমুখ। ইরতাজউদ্দিনকে সততার প্রতীক হিসাবে দেখানো হয়েছে। নাইমুলকে বুদ্ধিমত্তার, শাহ্‌ কলিমকে বর্ণচোরার এবং মাসুমাকে নিখাদ প্রেমের প্রতীক হিসাবে দেখানো হয়েছে। তাদের উপস্থিতি উজ্জ্বল এবং বাস্তব। গল্পের আসমানি চরিত্রটির চড়িয়ে দাঁত ফেলে দিতে ইচ্ছে করেছে। একই কথা প্রযোজ্য তার মেয়ে রুনির ক্ষেত্রে। শাহেদকে প্রথমটায় বিরক্তিকর লাগলেও আসমানি তার জীবন থেকে বিদেয় হবার পর ভালো লেগেছে। জোহর চরিত্রটি বহুমাত্রিক, তারও কিছু নৈতিকতা রয়েছে, সেটা ভাবার মতো বিষয়।

বইটি পড়ে সামগ্রিকভাবে আতঙ্কিত হয়েছি। ঘৃণাবোধ করেছি। এবং বুঝেছি, যুদ্ধ কখনও ভালো হতে পারে না। দেশের নারীদের উপরে যেভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, কিংবা যেভাবে অকারণে মানুষকে মারা হয়েছে, তার কোনও ক্ষমা নেই। তবে এটাও ঠিক, যুদ্ধে হত্যা হবেই। দুপক্ষই কারণে কিংবা অকারণে খুন করেছে, মানুষ মেরেছে। কিন্তু একটা জিনিশ কোনওভাবেই মেনে নেয়া যায়না, সেটা হচ্ছে ধর্ষণ। যুদ্ধ হবে, কিন্তু তার সাথে ধর্ষণের কি সম্পর্ক? ধর্ষণ করে কি লাভ? কে জানে!! তাছাড়া যুদ্ধের সময় কেবল নিজের পক্ষ এগিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিপক্ষ দুর্বল এমনটা ভাবাও যে কত বড় ভুল, সেটা গল্পে দারুণভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ধর্মীয় জের টেনে মানুষের মাঝে বিভেদ তৈরির প্রক্রিয়াটি বাজে লেগেছে। কিচ্ছু বলার নেই।

আরও একটি কথা, বইয়ের নামকরনে আমার কিছু আপত্তি আছে। আরও যৌক্তিক নাম দেয়া সম্ভব ছিল। লেখক দেননি। আমার ধারণা এটা তার এক প্রকার খামখেয়ালী।

যাই হোক, গল্পের যেটুকু ভালো লেগেছে বেশ ভালো লেগেছে। যেটুকু ভালো লাগেনি, বিরক্ত লেগেছে। যুদ্ধ ভালো লাগার কথা নয়। তবুও উপন্যাস যখন পড়ছি, আমি চাই উপন্যাসের মতোই পড়তে। তাতে সব আবেগ আসতে হবে গল্পের আঙ্গিকে, বাস্তবতার প্রতিচ্ছবিও সেভাবেই চিত্রিত হবে। তাতে এতো দলিলাদি এলোপাথাড়ি যোগ করে অযথা ওজন বাড়াতে চাইলে হবে না। সুতরাং বইটি যতটা ভালো লাগা প্রয়োজন ছিল ততটা লাগলো না। জানি অনেকের লেগেছে। আমার লাগেনি। আমি একটু নিম্নশ্রেণীর পাঠক। তাই হয়তো! কে জানে! এতসব ভেবে লাভ নেই।

কেউ পড়তে চাইলে উপন্যাসটি পড়তে পারেন। হয়তো ভালো লাগবে। কিন্তু নিঃসন্দেহে এটি লেখক হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস নয়। অন্তত আমার দৃষ্টিতে।

Profile Image for Sayeem Shams.
Author 17 books74 followers
September 2, 2022
প্রচুর ফাও কথা ও বর্ণনা আছে, বিশেষ করে প্রথম ১০০ পৃষ্ঠায়। বাংলা সিনেমার মতো একটু পর পর বিভিন্ন চরিত্র কল্পনায় চলে যায় আর লেখক অনর্থক ঘটনাবলি ও কথোপকথন লিখে পৃষ্ঠা ভরান, যেগুলোর কোনো গুরুত্ব নেই, পে অফ নেই। খুবই বিরক্ত লেগেছে। ১৫০ পৃষ্ঠার পর থেকে লেখক গুরুত্ব দিয়ে বইটি লিখতে শুরু করেন এবং পাঠক হিসেবে আমি চুম্বকের মতো আটকে যাই। লেখার টানে খুব দ্রুত বাকি পৃষ্ঠাগুলো পড়ে ফেলি।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হিংস্রতা, ভয়াবহতা লেখক খুব যত্ন নিয়ে ফুটিয়ে তুললেও রাজাকারদের প্রতি তিনি সদয় ছিলেন। রাজাকারদেরকে কিছু ক্ষেত্রে ‘কিছুটা ভাল মানুষ’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। লেখকের নানা রাজাকার ছিলেন তাই হয়তো এমনটা করেছেন তিনি। তবে বিষয়টা আমার মন্দ লাগেনি। কারণ সাধারণত একজন মানুষ পুরোপুরি খারাপ হয় না। মানুষের চরিত্র ধূসর বা গ্রে রঙের; না কালো, না সাদা।

বি.দ্র. মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই, উপন্যাস যারা পড়েননি তাদের কাছে এই গড়পড়তা মানের বইটিকে ‘মাস্টারপিস’ মনে হতে পারে।
Profile Image for Shadman.
23 reviews6 followers
March 22, 2013
I consider it as the best work of Humayun Ahmed. Probably the best book on 1971 by any writer so far. I found myself at the time frame of liberation war while reading this one. I literally cried after reading this book. A must read for each n every Bangladeshi.
Profile Image for Rakibul Islam.
20 reviews4 followers
May 5, 2014
ভালো লেগেছে। ইতিহাস পড়তে যাদের ভালো লাগে না তাদেরও এই বইটি পড়তে ভালো লাগবে। তবে মনে রাখতে হবে ঐতিহাসিক পটভুমিতে হলেও এটি একটি ফিকশান।
Profile Image for Emtiaj.
237 reviews86 followers
December 14, 2014
জিয়ে পাকিস্তান প্রসঙ্গ আর বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডকে নিছক হালকাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, এটা��� আমার বেশি মনে পড়ে। এমনিতে ভালো বই :) [চার পাওয়ার মতো বই :D ]
Profile Image for Samanta Alam.
28 reviews21 followers
September 15, 2024
"সে বড় অদ্ভুত সময় ছিল। স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের মিশ্র এক জগত।সবই বাস্তব, আবার সবই অবাস্তব। আমি সেই ভয়ংকর সুন্দর সুররিয়েলিস্টিক সময় পার করে এসেছি। তার খানিকটাও যদি ধরে থাকতে পারি,তাহলেই আমার মানবজীবন ধন্য"। ~ হুমায়ুন আহমেদ।
(জোছনা ও জননীর গল্প।বইটার পুর্ব কথা অনুচ্ছেদে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের বর্ননা দিতে লেখকের বক্তব্য এটা। মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের এক টিভি ইন্টারভিউ তে SUST এর ক্যাম্পাসে তার লেখক জীবনের শুরু অনুপ্রেরণার কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তাদের পারিবারিক পরিবেশের কথা বলেছিলেন। সেই সাথে তাদের পুরোনো ঠিকানা খুজে হুমায়ুন আহমেদ ��� তাদের পুর্ব অভিজ্ঞতার খোজ মেলে যা এই উপন্যাসের উপরের বক্তব্য প্রমান করে।মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের মা ও ভাইবোনের যাত্রা বাবার মৃত্যু সবই তাদের জীবন ডকুমেন্টস।)

২৩ এর পর ২০২৪ এ এই আমার ঘটা করে কোনো বই নিয়ে আলোচনা বাংলায়। ২৩ এর শেষ দিন হাবিজাবি মস্তিষ্কের জটলা খোলার ইচ্ছে ছিল না বলেই এতোদিনের শীত নিদ্রা। প্রতিবার এটায় ভাবি যে নিজের কাজগুলো চালিয়ে যাবো তবুও সেই ভাবতে ভাবতে ঘুম বা বিরতি! এহেন কাজের জন্য বহু লোকের বকা খেতে হয়েছে, তবু এই ডাফার ব্রেইন নাছড়বান্দা! কয়েকঘন্টা যাবত খুজোখুজি করে শেষে এই বইখানার কথায় মনে ধরল। বইটা নিয়ে বিশদ কিছু লিখব না। কারণ লেখক যে হুমায়ুন আহমেদ। এনার সাথে আমার বই পড়া এবং ব্যক্তিত্ব আলোচনার সম্পর্কটা আসলে দুইরকম। হুমায়ুন সাহিত্য দিয়ে এই অধমের বাংলা উপন্যাস যাত্রা শুরু হলেও তার সাহিত্য বা ব্যক্তি হুমায়ুন নিয়ে কথা বলার মতো পারদর্শিতা অর্জন করতে পারিনি।সাধারণত কোনো ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এমন ব্যক্তিগনের সাথে নিজের মিল খোজার চেষ্টা এবং পছন্দ মতো ভালো কোনো দিক নিজের মতো করা আমার সহজাত অভ্যেস।তবে হুমায়ুন আহমেদ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।তাকে নিয়ে এমন কোনো ইচ্ছে এখনো পর্যন্ত হয়নি। বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে আমি আছি সে জায়গায় হয়ত এখন কোনো বই নিয়েই কথা বলা বা মাতামাতি করা অন্যায়সম! তবে মস্তিষ্ক ঝড় থামানোর কোনো সাংগঠনিক উপায়ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই একে নিজের মতোই চলতে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে আমার নিকট- ব্যক্তিলোক থেকে।

এই মস্ত বড় ৫২৮ পৃষ্ঠার ইতিহাস গড়া বইটা আমার নিজের সংগ্রহের না। এই বইখানা ধার দেওয়া হয়েছিল পড়ার জন্য। সেই সময়টাতেও আমার পরিস্থিতি ও মন-মানসিকতার সাথে বইটা পড়া অন্যায়সম ছিল। সে সময়ও মস্তিষ্ক আমার দেহ থেকে বিদায় বলার অপেক্ষায় ছিল।।।আরেকটু হলেই আমাকে মানসিকভাবে হালকা করে ওনি নিজে কর্মাব্যহুতি নিয়ে পালাতে বসেছিলেন!!
এই সব আজগুবি পরিস্থিতি লিখে রাখার চেষ্টা করছি। কারণ মানব মস্তিষ্ক এতো সব তথ্য রাখার মতো উপযুক্ত নয়।।বেশি হয়ে গেলে ইচ্ছে মতো ডিলিট বাটন চেপে দেবে! তাই এগুলো ইন্টারনেট মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষে রেখে দিচ্ছি যেন সময়ে খুজে পায় আবার।

বইটার স্পয়লার দিতে চায় না। তবে শুধু বলব এটা বাস্তব লেখা। পড়ার সময় ১৯৭১ এর ভিন্ন ভিন্ন মানুষের অবদান ও তাদের একাত্ম হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ সবই প্রতিটি চরিত্রের অংকনের মাধ্যমে উল্লেখিত হয়েছে। বাধা-ধরা নিয়মের মতো মুক্তিযুদ্ধের বর্ননা করা হয়নি। বরং পড়তে পড়তে মনে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের এহেন দিকও ছিল! মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার ৩২ বছর পর জন্ম নেওয়া আমার মতো আরো তরুনের কাছে মুক্তির গল্পকাহিনী হয়ত তাদের পুর্বপুরুষের বলা গল্পই সম্বল। সে ক্ষেত্রে হুমায়ুন আহমেদের গল্প আরো বাস্তব মনে হয়েছে। ।। সব মিলিয়ে হুমায়ুন সাহিত্য আবারও জিন্দাবাদ।।
(24.03.24)
(10.09.24 2.02am)
Profile Image for Nazrul Islam.
Author 8 books228 followers
August 18, 2018
অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম। আশাহত। জোর করে পড়তে হইছে। সুবিশাল বই যদি জোর করে পড়তে হয় তাহলে অনেক প্যারা লাগে।
লেখক সম্ভবত একাত্তরের জনসাধারনের দৈনন্দিন জীবন তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এর সাথে মাঝে মাঝে কিছু ঐতিহাসিক দলিল দিয়ে মুক্তিযুক্তের তাৎপর্য । সেই সময়ে গন মানুষের ভাবনা এবং যা তাঁরা দেখেছেন তাই বর্নণা করার চেষ্টা করেছেন।

সত্যি বলতে বই পড়ে নতুন কিছুই জানতে পারি নাই। বইটা না হয়েছে ঘরকা না ঘটকা।ঐতিহাসিক ঘটনা তিনি যা বলেছেন তা বাচ্চাকালেই সবাই পড়ে ফেলেছে। মোটামোটি সবাই জানে তা। এছাড়া ঘটনা পরিক্রমাও নতুনত্ব কিছু নেই। যদিএকই ঘটনা অন্য ঢঙে বলার চেষ্টা করতেন তাহলেও হয়তো মোটামোটি এক্সেপ্ট করা যেত।
না চাইলেও সুনীলের "পূর্ব পশ্চিম" এর সাথে তুলনা এসে পড়ে। তখন আরো পানসে লাগে :/
Profile Image for Shadin Pranto.
1,469 reviews560 followers
October 8, 2023
'মুক্তির মন্দির সোপানতলে
কত প্রাণ হলো বলিদান
লেখা আছে অশ্রুজলে

কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা
বন্দীশালায় ঐ শিকল ভাঙা
তারা কি ফিরিবে আর
তারা কি ফিরিবে এই সুপ্রভাতে
যত তরুণ অরুণ গেছে অস্তাচলে
যারা স্বর্গগত তারা এখনো জানে
স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি' - মোহিনী চৌধুরী



একাত্তরে কয়েকমাস পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। জীবদ্দশায় সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা তিনি পারতপক্ষে বলতে চাইতেন না। একাত্তরে বেঁচে থাকা প্রত্যেকটি বাঙালির বলার মতো এক-একটি গল্প আছে। থাকতে বাধ্য। সারাদেশ তখন পরিণত হয়েছিল বন্দিশিবিরে। সেই বন্দিশিবিরের কথা হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন। লিখেছেন দেশমাতাকে জিঞ্জির মুক্ত করতে মুক্তিসংগ্রামের কথা।

এই বইতে সকল স্বাধীনতাকামী মানুষকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন নীলগঞ্জ হাইস্কুলের আরবি শিক্ষক মাওলানা ইরতাজউদ্দিন কাশেমপুরী।
Profile Image for Tawheeda Rufah Nilima.
294 reviews58 followers
June 25, 2021
"জোছনা ও জননীর গল্প" বইটা প্রতি বিজয় দিবসে কিছুটা হলেও পড়া দরকার। কিন্তু এতো পাতার বই, আর পুরো বইটাই এতো ভালো যে কোনখান থেকে পড়া যায় এইটা ভাবতে ভাবতেই দিনটা চলে যাবে।


বইটা অনেক দিন ধরেই আমার কাছে ছিলো। পড়বো পড়বো করেও পড়া হচ্ছিলো না। অবশেষে গত ১৩ জুন পড়া শুরু করলাম। একটু সময় নিয়েই পড়ছিলাম। আর একটু আগে বইটা পড়ে শেষ করলাম আর কান্না করার পর সেই অনুভূতির থেকে যাওয়া রেশ নিয়েই পোস্টটা লিখছি। এই বই পড়তে নিয়ে ঠিক কতবার যে কাঁদলাম, হিসেব নাই।

"জোছনা ও জননীর গল্প" বইখানা লিখে রেখে যাওয়ার জন্যে হুমায়ূন আহমেদ স্যার কে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা।

যেকোনো বইয়ের রেটিং শুধু ৫ তারা দেওয়ার ই অপশন থাকে, কিন্তু আমি এই বইটিকে আকাশের সব তারা দিতে চাই।
Profile Image for Angira Datta Dandapat.
28 reviews5 followers
January 13, 2024
অসামান্য এক উপন্যাস। স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ।
Profile Image for Susmita Sarker (বাচ্চা ভূত).
193 reviews11 followers
August 27, 2023
সবচেয়ে সেরা মুক্তিযুদ্ধের কোনো উপন্যাস যদি থেকে থাকে তাহলে সেটা নিঃসন্দেহে "জোছনা ও জননীর গল্প".... পড়তে পড়তে আপনার চোখ ভিজে উঠবেই উঠবে!
Profile Image for অনিরুদ্ধ.
143 reviews23 followers
September 5, 2023
এলোমেলো। হ্যা একথায় এটি বললই হতো। কিন্তু স��বিশাল এই বই যখন আমাদের জাতির আবেগের স্থান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা তখন আর দুটি কথা না বললেই নয়।

শুরুতেই ঘটনাপ্রবাহ। এটাকে ইতিহাসভিত্তিক বই বলা যায়। এক্ষেত্রে কোন ঘটনার পর কোনটি ঘটছে সেটা জানা জরুরি। সেরকম কিছু পাইনি। উপরন্তু ঘটনাপ্রবাহ আমাকে আলাদা করে মনে রাখতে বেগ পেতে হয়েছে। যাকে বলে হ-য-ব-র-ল।

আরো সহজ করে বললে হুমায়ুন আহমেদ চারটি বই (একটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস, ইতিহাস, আত্মজীবনী ও নিজের দর্শন) মনে মিক্স করে বইটি লিখেছেন। কিন্তু সমস্যাটা সেখানে নয়। এই "চারটি বই" বই যে জোড়াতালি দিয়ে এক করা হয়েছে, এটা খুব বাজেভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ছিলো। যা পড়ার আনন্দ অনেকাংশেই কমিয়ে দিয়েছে।

তাড়াহুড়ো নাকি অন্য কোনো কারণ আমি জানিনা। কিন্তু হুমায়ুন আহমেদের পরিকল্পনা বিশাল থাকলেও সে তুলনায় আয়োজন খুবই সামান্য হয়েছে। তাই পড়বার সময় বারংবার মনে হয়েছে তিনি আর একটু সময় দিলেও পারতেন!

মুক্তিযুদ্ধ নাামের পেছনে কে, কারা, কি লুকিয়ে আছে আমরা খুব কমই জান। অপারেশন সার্চলাইট বা কালোরাত্রি, মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় আমাদের মনে আলাদা কিছু আর জাগায় না। তাই সেটার জন্য ক্ষুদ্রতম চেষ্টা হলেও তিনি করেছেন, যা প্রশংসার দাবিদার!
Profile Image for Lubaba Marjan.
119 reviews46 followers
November 28, 2025
বাস্তবের সমাপ্তি এরকম ছিল না। নাইমুল কথা রাখে নি। সে ফিরে আসতে পারেনি তার স্ত্রীর কাছে। বাংলার বিশাল প্রান্তরের কোথাও তার করব হয়েছে। কেউ জানে না কোথায়। এই দেশের ঠিকানাবিহীন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার কবরের মধ্যে তারটাও আছে। তাতে কিছু যায় আসে না। বাংলার মাটি পরম আদরে তার বীর সন্তানকে ধারণ করেছে। জোছনার রাতে সে তার বীর সন্তানদের কবরে অপূর্ব নকশা তৈরি করে। গভীর বেদনায় বলে, আহারে! আহারে!
Profile Image for Mehedi Hasan.
4 reviews2 followers
November 17, 2019
কিংবদন্তী কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের হৃদয়ছোঁয়া অসাধারন উপন্যাস। আসলে উপন্যাস বললে ভুল বলা হবে এটা তার চেয়েও বেশি কিছু।
Displaying 1 - 30 of 303 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.