ইয়াজউদ্দিন সাহেব এবং রেহানা বেগমের একমাত্র ছেলে শুভ্র। সুদর্শন, এলোমেলো চুল আর বড় বড় দুটি কালো চোখ শুভ্রের। কিন্তু শুভ্রের এই কালো দুটি চোখ ঢেকে থাকে মোটা চশমার আড়ালে। হাসলে শুভ্রকে খুব সুন্দর লাগে। আর এজন্যই শুভ্রের মা রেহানা বেগম তার সাতাশ বছর বয়সী সুদর্শন এই ছেলেটির দিকে তাকিয়ে মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন আর বলেন, ছেলেদের এতো সুন্দর হতে হয় না! শুভ্রের বাবা ইয়াজউদ্দিন সাহেব একজন ব্যবসায়ী। বলা যায়, একজন সফল ব্যবসায়ী। মাত্র তিনশ টাকা নিয়ে এখন তিনি কোটি টাকার মালিক। ইদানিং তিনি শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় শুভ্রকে ব্যবসার সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে। কিন্তু শুভ্রের শুধু বয়সই বেড়েছে। বাইরের জগৎ সম্পর্কে শুভ্রের তেমন ধারণা নেই বেশি। কারণ শুভ্রের তেমন বন্ধুও নেই। খুব কম বন্ধু তার। এদের মাঝে জাহেদ শুভ্রর খুব ভালো বন্ধু। জাহেদ টিউশনি করে চলে, মামার বাসায় থাকে। হুট করে একদিন কেয়া নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে জাহেদ। এদিকে রেহানা বেগম এবং তার দূর সম্পর্কের এক বোন রিয়া শুভ্রের বিয়ের জন্য মেয়ে খুজেঁ বেড়াচ্ছেন। আর শুভ্র! সে তার বন্ধু সাবেরের বড় বোন নিতুকে পচ্ছন্দ করে। সাবের মারা যাওয়ার পরও শুভ্রের এই বাড়িতে আসা বন্ধ হয়নি। সাবেরের বাবা মাহিন সাহেবের সাথে শুভ্র গল্প করে। শুধু কি গল্প করতেই আসে নাকি নিতুর কাছে আসে শুভ্র? আবার নিতু তার থেকে বড়। শুভ্রের নিতুকে বিয়ে করলে সবাই মেনে নিবে তো? তার থেকে বড় কথা, নিতু কি রাজি হবে? নাকি মা আর খালার পচ্ছন্দের মেয়েকে বিয়ে করবে শুভ্র?
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
শুভ্র সিরিজের পড়া দ্বিতীয় বই। প্রথমটা ছিলো শুভ্র গেছে বনে, সেটা খুব সাধারণ লেগেছিলো, লেখার জন্য লেখা মনে হয়েছিলো। আজ মেঘের ছায়া পড়লাম। হুমায়ূন আহমেদের খুব কম বই ই শেষ করার পর তার একটা অস্তিত্ব বুকের ভেতর রেখে যায়। এই বইটা ও বুকের ভেতরে একটা অস্তিত্ব রেখে গেছে।
অতি উচ্চবিত্তরা নিম্নবিত্তদের কষ্ট অনুভব করতে পারেন না। অন্যের কষ্টকে অনুভব করতে পারাটা অনেক উচু মানবিক গুণ বলে আমি মনে করি। বেশিরভাগ উচ্চবিত্তদের এই মানবিক গুণ নেই বলেই তারা সহজে অন্যের প্রতি নিষ্ঠুর হতে পারে, অবলীলায় শোষণ করতে পারে। শুভ্রর বাবা এরকম একজন উচ্চবিত্ত মানুষ, কিন্তু শুভ্র ব্যতিক্রম। সে তার চারপাশের মানুষকে, তাদের কষ্টকে অনুভব করতে পারে। সে মানুষকে বোঝার চেষ্টা করে। অন্যায়কে সে পরে দেখে, আগে দেখে অন্যায়ের পেছনের কারণ। যেমন, শুভ্রর মা শুভ্রর চশমা লুকিয়ে রেখেছিল যাতে শুভ্র জাহিদের বিয়েতে না যেতে পারে। শুভ্র বিয়েতে যেতে পারেনি, সে কষ্ট পেয়েছে। সে এটা বুঝেছে যে তার মা ইচ্ছে করে এটা করেছে কিন্তু সে রাগ করেনি, রাগ দেখায়নি কারণ সে জানে তার মা তার প্রতি ভালোবাসার জন্য এরকমটি করেছে। এরকম একটা ব্যাপারে ৯৫% মানুষ রেগে যাবে, মার সাথে খারাপ ব্যাবহার করবে। শুভ্র করেনি, কারণ সে কর্ম দেখেনি কর্মের কারণ দেখেছে।
আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলো সবসময় এরকম কাজ করে যায়; যেগুলো তারা মনে করে আমার জন্য ভালো বা উচিত। তারা অনেক সময় অনেক কিছু চাপিয়ে দেয় অবার অনেক সময় অনেক কিছুতেই বাঁধা দেয়। আমরা তখন রেগে যাই, ঝগড়া করি, মন খারাপ করি কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসাটুকু দেখি না। আমাদের অনেকের এই ভালোবাসাটুকু দেখার চোখ নেইও। শুভ্রর এই চোখ আছে। আমাদের সকলের মাঝে সেই চোখ খুলে যাক, যে চোখ দিয়ে আমরা ভালোবাসাটুকু আগে দেখবো, ভালোবাসা থেকে করে ফেলা অন্যায় বা ভুল কাজগুলো পরে দেখবো।
বইয়ের ভালো লাগা দুটো লাইনঃ আত্নহত্যা সহজ পথ তবে খুবই নিম্ন মানের পথ। আত্নহত্যা খুনের চেয়েও খারাপ। খুন করার পর অনুশোচনার একটা সুযোগ থাকে আত্নহত্যার পর সে সুযোগও থাকে না।
সৌভাগ্যের সংবাদ বাড়ি বাড়ি দিয়ে আসতে হয়, দুর্ভাগ্যের সংবাদ দিতে হয় না, সবাই জেনে যায়।
বিস্তর হাহাকারে ভরা একটি উপন্যাসিকা। হুমায়ূন আহমেদের বইতে মানুষ এন্ডিং খুঁজে না পেলেও আমি পাই। ওপেন এন্ডিং। জীবনের কোন একটা গল্প যেমন শেষ হয় না তেমনি হুমায়ূন আহমেদের বইতে জীবনের কোন একটা অংশের গল্প শুরু হলেও গল্পটা শেষ হয় না। তবুও তার এন্ডিং আমার ভালো লাগে। তবে এই বইটির এন্ডিং আমি আসলেই পাইনি। কোত্থেকে শুরু হলো সেটা বুঝতে পারলেও কোথায় শেষ হলো সেটা বুঝতে পারিনি। তবু আমার ভালো লেগেছে। গল্পের জাদুকরের লেখায় মোহাবিষ্ট আমার, তার সব লেখাই ভালো লাগে। একটা প্রশ্ন শুধু, যারা শুভ্র পড়েন বা পড়েছেন। আচ্ছা আপনারা কি কখনো শুভ্রকে রাগতে দেখেছেন? প্রকৃতি একটা সিস্টেমে চলে। সেই সিস্টেমের অংশ মানুষ এবং মানুষের মাঝে স্বাভাবিক ভাবেই রাগের অনুভূতি থাকে। কেউ অল্পতে রাগে, কেউ হয়তোবা বড় কারণ কারণ ছাড়া রাগে না। কিন্তু রাগে সবাইই। এই ছেলেটি কেন রাগছে না?
আমি লিখতে পারি না। কিছু লিখলেই মনে হয়, এই বাক্য না লিখলেও তো হয়, এই বাক্য তো বাহুল্য, এটি না লিখলেও তো কিছু যায় আসে না। আমার লেখা নিয়ে যখন আমি নিজেই তুষ্ট নই, পাঠক যদি ধৈর্য নিয়ে পড়েন সে আমার বড় পাওয়া। তবুও লিখি, নিজেকে সবার মাঝে বিশিষ্ট করার তাগিদে, সকলের সাথে মিলিত হওয়ার তাগিদে। একজন লেখক বহু মানুষের গভীরে পৌছুতে পারেন একথা সত্য বটে, তবে তার চেয়ে বড় সত্য এই উপলব্ধি যে, কত মানুষই না লেখক মানুষটাকে চিনতে পারে, বুঝতে পারে! কত মানুষ লেখককে একাত্ম করে নেয়। এই ক্রুয়েল জীবনে ঐটুকু অমৃতের জন্য ছুটে চলা যায়ই।
মেঘের ছায়া প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সনে। এটা শুভ্র সিরিজের দ্বিতীয় উপন্যাস। এই লেখার উদ্দেশ্য উপন্যাসটির রিভিউ লেখা। যতই সময় অতিবাহিত হচ্ছে, আমার টাইপিং মন্থরতরো হচ্ছে। আমি পূর্বের অসংখ্যবারের মতো এবারো অনুভব করছি, রিভিউটা আমি লিখতে পারব না। আমার সেই ভাষাগত দক্ষতা নেই, যে আমি মনের ভাবকে ভাষায় অনুবাদ করব- আরেকবার আবিষ্কার করলাম এই অপারগতা। আর বইয়ের রিভিউ কিভাবে লিখতে হয় তাও জানি না।
জাহেদ আর কেয়াকে হুমায়ূন যেভাবে এঁকেছেন তেমন করে কজন আঁকতে পেরেছেন আমার জানা নেই। প্রতিটি চরিত্র এত বাস্তব, এত জলভরা। এই যে জাহেদ, কেয়া, নীতু, মাহিন, রেহানা, ইয়াজুদ্দিন এরা কি আমাদের মাঝে নেই? এই সত্যটা আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন যে, প্রত্যেকের জীবন পবিত্র। লেখক যখন কোন চরিত্রকে ধরার চেষ্টা করেন লেখেন তখন ঐ পবিত্রতাকে স্পর্শ করতে পারলে চরিত্রের প্রতি ন্যায়বিচার করা হয় । হুমায়ূন আহমেদ মনে হয় বিশ্বাস করতেন:, “I do not and cannot believe that man can be evil”.
উপন্যাস অনেক রকমের হয়। মানুষ কবিতা কেন পড়ে? ধরুন, আপনি আমি যদি কখনো “আলো অন্ধকারে যাই মাথার ভিতরে, স্বপ্ন নয় কোন এক বোধ কাজ করে” ধরুন, আপনি আমি কখনো এই বিপন্ন বিস্ময়ে স্তব্ধ হই নাই। যে লোক এই জিনিস কখনো অনুভব করে নাই সে লোক জীবনানন্দকে বুঝবে কী করে! সাহিত্যকে আমি সমাজের দর্পন মনে করি। আমরা যা দেখি, যার ভেতর দিয়ে যাই তা সাহিত্যে আসা চাই। একইসাথে, আমরা যা দেখি না নিত্যদিনের ব্যস্ততায়, অথবা এই ক্রুয়েল পৃথিবীর বীভৎসতার দরুণ শক্ত হয়ে যাওয়া হৃদয় যা অনুভব করতে পারে না; একজন কবি তা দেখেন, স্বর্ণ হৃদয় দিয়ে তা অনুভব করতে পারেন। লেখক সেইসব দিনরাত্রির ছবিটি অকৃত্রিম সততায় আঁকলে তার চেয়ে বেশি কিছু আমি চাই না৷ আমি দেখতে চাই, আমাকে দেখাও; আমি শুনতে চাই, কোথায় সে ধ্বনি যে আমাকে গল্প বলে চলবে এই কোটি কোটি জীবনের স্রোতধারার।
হুমায়ূন আহমেদ এই কাজটিই করেন। একেবারে সাধারণ মানুষও তার বই পড়ে, কারণ সে নিজেকে দেখতে পায় সেখানে৷ সে দেখে বাইরের দুনিয়ার কাছে আপাত মূল্যহীন তার জীবন হুমায়ূন আহমেদের লেখনীতে কী স্নিগ্ধ পবিত্রতায় সমুন্নত । সে জানে, তার অনুভব, তার গ্লানি-বেদনা-সংগ্রাম তার একার নয়, তার মতো অনেকেই পথে পথে হেঁটে যাচ্ছে ।
হুমায়ূন আহমেদকে অনেকেই পছন্দ করেন না৷ আজকাল দেখি অনেকে তার বইয়ের রিভিউতে ডিসক্লেইমার দিয়ে রাখেন যে তিনি হুমায়ূনভক্ত নন বা একসময় তার লেখা ভালো লাগলেও এখন ঐ লেখা তিনি মানোত্তীর্ণ মানেন না৷ দুই বা তিন স্টার দিয়ে আরো বলেন এসব হচ্ছে গড়পড়তা লেখা। এসব টিকবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেকে তো বলতেও ভয় পান তিনি হুমায়ূন আহমেদের লেখা পছন্দ করেন। আমিও মাঝে মাঝে ভয় পেতাম। এখন পাই না। কী অবনতি আমার!
কেন যেন এতদিন এই বইটা পড়া হয়ে উঠেছিল না, শুভ্র সিরিজের বাকি গুলো গিলে ফেলেছি সেই কবেই। সমসাময়িক কাল কে স্যার যেভাবে নিদারুন অবহেলার মাধ্যমে দারুন ভাবে ফুটিয়ে তোলেন তাঁর নজীর কি আমি আর কারো লেখায় পেয়েছি? না মনে হয়! দু' তিন যুগ ধরে শুভ্র'র বাবা ইমতিয়াজ সাহেব যে সম্রাজ্জ্য গড়ে তুলেছেন সেটা যখন শ্রমিক ইউনিয়ন এর আন্দোলনের মুখে ধ্বসে পড়তে যাচ্ছিলো তখন হঠাৎ শ্রমিক নেতা গুম হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা মনে হয় না আমাদের খুব একটা অচেনা। তবে জাহেদ আর কেয়ার কি হল সেটা জানা হল না, যেমন মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ইমতিয়াজ সাহেবের দেখা হল না শুভ্র'র প্রিয় মুখটা।
মাঝে মাঝে আগের পড়া বই আবারো পড়তে বেশ লাগে। বই পড়ার সাথে সাথে সেই সময়কার অনুভূতিগুলো ফিরে ফিরে আসে। যাই হোক, কোনকালেই হুমায়ূন আহমেদের খুব বেশী ভক্ত ছিলাম না, কিন্তু বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অস্বীকার করার মত ছেলেমানুষী আমি করবো না।
একবার পড়ার জন্য ঠিক আছে।এভারেজ।বইয়ের প্রত্যেকটা চরিত্রই খুব সুন্দর।সবার নিজস্ব একটা ব্যাপার আছে,একটা ভাইব আছে।কিন্তু কাহিনী একদম সাদামাটা।বলতে গেলে সেরকম কিছুই না।
কোন একসময়ে নিয়মিত হুমায়ূন পড়ার কারনে আমাদের অনেকেরই হয়তো মনে হয়েছে যে তাঁর সব লেখা পড়ে ফেলেছি। এরপর বইয়ের তালিকা ঘাঁটলে রবীন্দ্রনাথের পংক্তি অনুপ্রাণিত কাছাকাছি বইয়ের নামগুলোও বেশ বিভ্রান্ত করে। তাঁর উপন্যাসের আরেক বিপদ হল ঘটনাগুলোও কাছাকাছি। আর হুমায়ূনের অসাধারণ লেখনীর জন্য সেগুলো আবার একঘেয়েও না! সুতরাং, বই হাতে নিয়ে কিছুদুর না পড়লে বোঝার উপায় নেই যে পড়েছি কি পড়ি নাই। আর মাঝে মাঝে দেখা যায়, বই শেষ করে ‘দে জা ভু’ এর একটা বোধ আসে। তখন বুঝি যে পড়েছিলাম হয়তোবা কোন এক সময়ে! কিন্তু, আরেকবার পড়লেও মনে হয় না যে ‘ধ্যুর, আগে পড়েছি জানলে পড়তাম না!’
আমি যে শুভ্র সিরিজের দ্বিতীয় বই পড়ি নাই, তা জানতাম না। তাও, বইয়ের নামটা কানে লাগায় ও হুমায়ূনের বইয়ে ছাড় থাকায় বইটা কিনেছিলাম। আরেকটি বিষয় বইটি সংগ্রহে সাহায্য করেছিল। তা হল মনে মনে কোন এক সময়ে তাঁর যতো বই তাকে নেই বা তাক থেকে যেগুলো কেউ নিজের মনে করে নিয়ে গেছে, সেগুলো সব যোগাড় করার ইচ্ছা। এই বই তাকে ছিল না। সুতরাং, কোন এক কালে কিনে রেখে শেষমেশ যখন গত মাসে পড়লাম, তখন জানলাম যে, এই বই আগে পড়ি নি। একটি মজার তথ্য হল, পরিবারের সবাই আমরা কম বেশি হুমায়ূন পড়ি আর তারাও পড়ে জানালো যে আগে আমরা কেউই তাঁর ‘মেঘের ছায়া’ পড়ি নাই।
‘মেঘের ছায়া’ পড়ে শুভ্রকে মনে পড়ল আবার। নিপাট ভালো মানুষটি বাস্তবতার পঙ্কিল পথ নিয়ে এখানেও অতো ওয়াকিবহাল না। পড়ুয়া যুবকটি বরং চিন্তায় আছে যে তাঁর চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবার আগে সব বই পড়ে শেষ করতে হবে। তাঁর মা বাবা একারনেই হয়তো ছেলেকে নিয়ে সবসময়ে উদ্বিগ্ন থাকে। এদিকে মায়ের ভালোবাসাপ্রসূত যুক্তিহীন কাজে মন খারাপ করলেও শুভ্র তা চেপে যায়। নিজের বন্ধুদের নিয়ে তাঁর বাবার ধারণা যে ভুল, তা নিয়ে মৃদু তর্ক করে। কিন্তু, শান্ত ও সুন্দর শুভ্র কখনোই সীমা ছাড়ায় না। এবারে সে একজনের প্রেমে পড়ে তাঁকে জানায়। বয়সের ব্যবধান ও সম্পর্ক যে ভালোবাসার প্রকাশে ‘বাঁধা’ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা তাঁর সহজ মন বুঝতে চায় নি। এমনকি বন্ধুর বিয়েতে যাওয়া ও তাঁকে উপহার হিসেবে যেকোন কিছু দিতে চাইলেই তা যে সহজ চোখে দেখা হবে না, তাও শুভ্রর মাথায় আসে নি। পড়তে পড়তে খেয়ালী মানুষটার প্রেমে পড়ে যেতে হয়। শুধু কঠিন দুনিয়া থেকে না, উপন্যাসের পাতা থেকেও এরা যেন এখন গায়েব হয়ে যাচ্ছে!
বইটি শেষ করে হুমায়ুনের মৃত্যুমাসে কি হারিয়েছি তাঁর পাঠক হিসাবে, তা প্রতিবারের মতো বুঝলাম। আমার মনে হয় তাঁর মতো কেন কেউ লিখছে না, এরকম একটা অভিযোগ করা যারা লিখছে তাঁদেরকে অনুৎসাহিত করার মতো একটা কথা। তাঁর মতো লেখা কি আসলেই সম্ভব? আর লিখলে কি সেটা ‘তাঁর মতো’ বাদে আর কিছু হবে? আর তা কি আসলে দরকার? তাঁর লেখা তো আছেই। পাঠক হিসেবে আমার আবদার এটাই যে যেকোন লেখক হুমায়ুনের মতো বলতে পুরোপুরি নিজের মতো লিখে পাঠকের মন জয়ের চেষ্টা করে যাক। শুধু শুধু তাঁর মতো হতে গিয়ে বা আঁতেলদের কৃপাতলে ঠাই পেতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে নিজের লেখায় নিজের সবটুকু ঢেলে চেষ্টা করতে থাকা যেকোন লেখক বরং অনেক অনেক বেশি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার যোগ্য। কারন, হুমায়ূন একজনই ছিলেন এবং থাকবেন।
এরপর আবার তাঁর কোন বই তুলে নিব তাঁর জন্মমাসে বা অযথাই। আরেকটি হুমায়ূন পড়া পর্যন্ত 'মেঘের ছায়া' এর শুভ্রর জন্য এর স্রষ্টাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
পড়ার আগে জানতাম না শুভ্র সিরিজের বই এটি, যাইহোক প্রথম লাইনেই তা বুঝতে পারি।
মাঝখান পর্যন্ত রিভিউ দিলে সেটা ২ তারারও কম হতো বোধহয়। তবে ধীরে ধীরে কিছুটা ভাল লাগতে শুরু করে, আরো ছোটবেলায় পড়লে হয়তোবা আরো ভাল লাগতো, তবে ভারী বই পড়ার মাঝে মাঝে এরকম হালকা কিন্তু অন্যরকম বই(বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের) পড়তে মন্দ না। জাহেদ-কেয়া, ইমতিয়াজ সাহেব-শুভ্র এইতো অন্যরকম। এমনকি এক পর্যায়ে বইটি আমাকে আবেগতাড়িতও করে অবশ্য (সে হিসেবে ৩.৫/৫ দেওয়া যায়)।
চশমা ছাড়া বেগতিক শুভ্র বুদ্ধিমান বটে, তবে বাস্তবতা আর বাইরের পৃথিবী নিয়ে খুব চিন্তিত না। মানুষের ভাল লাগা আছে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে হয়তো সেটা অন্যায় আবদার কিন্তু মন-মস্তিষ্ক দ্বারা তো কত কিছুই ভাবি আমরা।
হুমায়ূন আহমেদের এ ধরনের বইগুলোতে আমার ধারণা অনুযায়ী তিনি বাস্তবতার সাথে কল্পনার বেশ অন্যরকম মিশেল ঘটিয়েছেন, খুবই বাস্তববাদী পাঠকের জন্য হয়তোবা এরূপ বই পড়া কষ্টকর বা সময় অপচয় বলে বোধ হতে পারে। পড়তে পড়তে মনে হতে পারে, আরে এমনটা হয় নাকি। ঠিক তখনই বাস্তবতার সাথে মিলে যায় এমন কোনো ঘটনা পাবেন পরবর্তী পাতায়।
এ বইয়ের সবচেয়ে বিরক্তিকর যে ব্যাপারটা (আমার লেগেছে) ��েটা হচ্ছে পাতায় পাতায় চা বানানো। একটু পরপরই চা নিয়ে কথা :') অতীব চা-প্রেমীদের জন্য সুখকর বা লোভনীয় হলেও মাঝখানে এর আধিক্য যারপরনাই বেশি :)
"শুভ্রকে ভালই লাগে আমার, হিমুর চেয়ে বেশি কি?"
নির্ঝরকে ধন্যবাদ, তোর অর্ডারের বই পড়লাম। আজই তোকে দিয়ে দিব এটা আর বাকিগুলোও পেয়ে যাবি। কোনোদিন যদি গুডরিডসে এসে দেখিস আমার এ রিভিউ তাহলে কিছু একটা লিখে ই-মেইল করিস একটা। জানাবি না আমাকে, আম���ই দেখে নিব ইনশাআল্লাহ।
ওহ হ্যাঁ, পরপর বাবা সম্বন্ধীয় দুটো বই পড়লাম,"বৃষ্টি ও মেঘমালা" র রিভিউটা পরে লিখব, ওটা ঢের ভাল লেগেছে :)
আমার রিভিউ বেশ আনাড়ি হাতের, তবে আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা বড় ভাই-বোনেরা কখনো পড়লে গঠনমূলক সমালোচনা করে দু লাইন সময় করে লিখে গেলে নিজের উন্নতি করতে সুবিধা হবে বলে বিশ্বাস।
আমি রিভিউতে বই রিভিউয়ের পাশাপাশি স্মৃতিগুলো জমা করার জন্যেও লিখে রাখি বেশি কিছু, হয়তো কোনো একদিন ঢুঁ মেরে দেখে যাব আমার আনাড়ি হাতের অসাধারণ শব্দগুলো :)
এই বইটা আমি আমার এক বন্ধুকে উপহার দিয়েছিলাম। আশ্চর্যের কথা হচ্ছে এর পরপরই আমার ওর সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়, সে বই পড়েছে কিনা পড়লেও কেমন লেগেছে তা আমি জানতে পারিনি।
শুভ্র, সেই চিরকালিন নিষ্পাপ এবং কোমল হৃদয়ের চরিত্র। এই বইয়ে, সে আগের মতোই নিষ্পাপ ও প্রিয়, জীবনের কঠিন বাস্তবতার চেয়ে বই পড়ার চিন্তায় ব্যস্ত। তার বিশুদ্ধ, অপরাধহীন দৃষ্টিভঙ্গি, চ্যালেঞ্জের মুখেও একইসাথে মুগ্ধকর ও বিরক্তিকর।
হুমায়ূন আহমেদের দৈনন্দিন জীবনের সত্তা ধারণ করার ক্ষমতা শক্তিশালী। তিনি সাধারণ বিষয়গুলো এত যত্নের সাথে তুলে ধরেন যে তা অসাধারণ মনে হয়। পারিবারিক বন্ধন, নীরব সংগ্রাম, ও কোমল প্রেমের বর্ণনা তার লেখায় এক ধরনের সূক্ষ্মতা এনেছে যা কেবল হুমায়ূনই করতে পারতেন। কিন্তু, তার লেখার সাথে পরিচিতি থাকলেও, এবারের বইটি আমার প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রতিধ্বনি সৃষ্টি করতে পারেনি।
মেঘের ছায়া আমার সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত হতে পারেনি। গল্পটি বেশ পরিচিত, পুনরাবৃত্তিমূলক মনে হয়েছে, যেন আমি আগে কখনো পড়েছি। প্লট পূর্বানুমেয় ছিল এবং চরিত্রগুলো, যদিও প্রিয়, কিছু নতুন কিছু প্রদান করেনি। যে নস্টালজিয়া একসময় আমাকে তার বইগুলি ভালোবাসতে প্ররোচিত করেছিল, এখন তা পুরনো জমিনে হাঁটার মতো মনে হচ্ছে।
এছাড়া, আমি অনুভব করেছি যে হুমায়ূনের সৃষ্টি করা বিশ্ব, যদিও এখনও সুন্দর, আস্তে আস্তে ম্লান হচ্ছে। শুভ্রের নিষ্পাপতা, যদিও প্রিয়, বর্তমান সময়ের কঠোর বাস্তবতার সাথে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। এটি আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে যে হুমায়ূনের বিশ্ব ধীরে ধীরে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।
তবে, এসব আপত্তির পরও, আমি বইটি পুরোপুরি খারিজ করতে পারি না। হুমায়ূন আহমেদের লেখার মধ্যে যে অস্বাভাবিক সান্ত্বনা আছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এটি পুরনো বন্ধুর সাথে পুনরায় দেখা করার মতো, যেখানে আপনি জানেন ঠিক কি প্রত্যাশা করতে হবে, এবং সেই পরিচিতিতে স্বস্তি অনুভব করেন। কিন্তু যতই আমি সেই সান্ত্বনায় আনন্দিত হই, আমি কিছু নতুনত্বও চাই, কিছু চ্যালেঞ্জিং যা এই বইটি প্রদান করতে পারেনি।
শেষে, মেঘের ছায়া একটি আরামদায়ক পাঠ, বিশেষ করে যারা হুমায়ূন আহমেদের কাজের সাথে পরিচিত। তবে, এটি আমার জন্য সেই একই ম্যাজিক অফার করতে পারেনি। এটি একটি বই যা অনেকের জন্য অবশ্যই আকর্ষণীয় হবে, কিন্তু যারা কিছু নতুন খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি হয়তো অপ্রতুল হতে পারে।
প্রধান চরিত্রঃ শুভ্র - বাবা বিশাল বড়লোক - খুবই মেধাবী ছাত্র - চোখ ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অনেক পাওয়ার এর চশমা পরতে হয়, চশমা ছাড়া প্রায় অন্ধ - বন্ধু-বান্ধব খুবই সাধারন - খুব অর্থ কষ্টে আছে এমন এক বন্ধুকে নিয়ে কিছু কোথা - আরেক বন্ধু, মারা গেছে, তার প্যাঁরালাইজড বাবা, চাকুরীজীবী-বিবাহিত বোন মীতু
My heart leaps up when I behold A rainbow in the sky: So was it when my life began; So is it now I am a man; So be it when I shall grow old, Or let me die! -William Wordsworth
"মেঘের ছায়া" হুমায়ূন আহমেদ এর শুভ্র সিরিজের একটি বই। যারা বইটা পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন বইটা কেমন। আর যারা পড়েন নি, পড়ে জেনে নিবেন। আমার ভালোই লেগেছে বইটা।
শুভ্র হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট আত্মকেন্দ্রিক একটা চরিত্র। আমার ভালোই লাগে শুভ্র চরিত্রটা। উপন্যাসটা ভালোই লেগেছে। জাহেদ এবং কেয়া জুটির কষ্টগুলো লেখক অল্পকথায় অনেক গভীরভাবে বুঝিয়েছেন। বর্তমান সমাজে এরকম অনেক জুটি দেখা যায়। সাবের এর বাবার জন্য খারাপ লেগেছে। নীতু আপার ব্যাপারটা অনেক বেশী সিরিয়াস হয়ে গেছে। সর্বশেষে ইয়াজউদ্দিন সাহেব প্রিয় মুখটা দেখে যেতে পারেননি, এই ব্যাপারটা আসলেই খারাপ লেগেছে। সমকালীন কিছু বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে উপন্যাসটিতে।
উপন্যাসটা তিনটি পরিবারের গল্প। তিন ধরণের অনুভূতি এখানে মিলেমিশে একাকার হয়েছে; উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্তের। তবে মধ্যবিত্ত না বলে দুই পরিবারকে নিন্মবিত্ত বলাই শ্রেয়। অভাবের তাড়না ও ভালবাসার ঘনঘটা দুইটাই পাবেন। উপন্যাসটা মনের গহীনে আলতো করে হাত বুলিয়ে যায়। মানুষের মনে এতখানি ভালবাসা কী বাস্তবে থাকে? হয়তো থাকে যদি বিপরীতে থাকা মানুষটা হয় একমাত্র ভরসা। যাকে নিয়ে পাড়ি দেয়া যায় অনন্তকাল। মানুষের জটিল মনের নানাদিক উপন্যাসে খুব নিখুঁত ও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। সাইকোলজিক্যাল নানাদিক বুঝাচ্ছি। বিশ্লেষণ, গল্প বর্ণনা ও চরিত্র গঠন সবই খুব নিখুঁত হয়েছে বলে আমি মনে করি।
উপন্যাসের পীর চরিত্র বা সাদা মনের মানুষ হচ্ছে শুভ্র। নামেই তার পরিচয়। শুভ্রকে কেন্দ্র করে যেই সকল চরিত্র উপন্যাসে ঘুরঘুর করছে তারা ভীষণ দুখী। বেকার বন্ধুর চাকরি নেই, টাকা নেই, কিন্তু বিয়ে করতে বাধ্য। অন্যদিকে আরেক বন্ধুর মৃত্যুর পর বন্ধুর বড় বোন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ওদিকে বাবা প্যারালাইজড। বাবার যত্ন নিয়ে মেয়ে অফিস করে কোনোরকমে সংসার চালায়। অসুস্থ বাবাকে একা রেখে বিয়েও করতে পারছে না।
সবাইকে এক পা বাড়িয়ে কেউ যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চায় সে হচ্ছে শুভ্র। কিন্তু বাস্তবতা কী সবসময় সহায় হয়? জানতে হলে উপন্যাসটা পড়ে দেখতে পারেন৷
নানা জটিলতায় পরিপূর্ণ কিন্তু বাস্তবতায় স্পষ্ট একটা উপন্যাস। উপন্যাসটা যে কারো পছন্দ হবে যদি সামাজিক উপন্যাস পড়তে অসুবিধা না থাকে।
হুমায়ূন আহমেদের শুভ্র সিরিজটাকে মানুষজন সুপার আন্ডারেটেড ইত্যাদি ইত্যাদি বলে বলে মাথার ঘাম ঝড়িয়ে ফেলে। আর এদিকে আমার হুমায়ূন আহমেদের লেখা সবচেয়ে ফালতু ক্যারেক্টার লাগে এই শুভ্রকে! কোন প্রোপার ক্যারেক্টারিস্টিক নাই এর। আমি যখন শুভ্র সমগ্র শুরু করে ছিলাম, একবারে প্রথম উপন্যাসটা অর্থাৎ দারুচিনি দ্বীপ আমার কাছে দারুণ লেগেছিল। উপন্যাসটা উপভোগ্য ছিল কারণ এখানে এক আপাদমস্তক শুভ্রর পর হুমায়ূন স্যার।ফোকাস দেন নাই আরো গুরুত্বপূর্ণ ক্যারেক্টার ছিল। কিন্তু এর পরবর্তী সবগুলা আমার কাছে জঘন্য লেগেছে। কাহিনির মাঝে কোন ফিলিংস নাই, ক্যারেক্টার অন্য ক্যারেক্টার কে কিভাবে ডিল করতেছে, তাদের মানসিক স্টেট সবই উদ্ভট উপস্থাপন করা। শুভ্র সমগ্র শেষ করতে গিয়ে আমার আধমরা অবস্থা হয়ে গেছিল।
পরবর্তীতে যখন জানলাম এখনো মেঘের ছায়া বাকি আছে, সত্যি বলতে আমার মনে একটু আশা ছিল যে এটা হয়ত দারুচিনি দ্বীপের মতন হবে কিন্তু না সেম সিট ইন ডিফারেন্ট কভার।
আমি কখনো কাউকে শুভ্র রিকমেন্ড করবো না। হুমায়ূন আহমেদের অনেক অনেক অসাধারণ উপন্যাস রয়েছে কিন্তু শুভ্র ইম্যাচিউর মাএারিক্ত আবেগী মানুষ বাদে কারোরই ভাল লাগবে না, বরং নেকামীতে উল্টা ডিজগাস্ট ফিল করবে!
এইটি হচ্ছে শুভ্র সিরিজের দ্বিতীয় বই। শুভ্র সমগ্রে যদিও এই বইটি ছিল না এই বইটি আমি আলাদা ক্রয় করি। এইবার আসি গল্পে___
আগের গল্পের মত এখানেও খুবই সাদামাটা সহজ সরল একটি ছেলে। তবে এই উপন্যাসে শুভ্র এর গল্প থেকে তার বন্ধু জাহেদ এর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বেশি আকর্ষণ করে। যার কোন চাকরি নেই, সে এক কেয়া নামের মেয়েকে ভালোবাসতো, তার বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক হয়ে যায় তাই সে তখনই তাকে বিয়ে করে ফেলে। এই কাজ তাকে অনেক বিপদে ফেলে। জাহেদ নিজে টিউশনি করে মামার বাসায় থাকে। অন্যদিকে রেহানা বেগম এবং শুভ্র খালা, শুভ্রকে বিয়ে করানোর জন্য মেয়ে খুঁজছে। অন্যদিকে শুভ্র যে কিনা তার বন্ধুর বড় বোন নিতু কে পছন্দ করে। যদিও তার বন্ধু সাবের আর জীবিত নেই। কিন্তু শুভ্র সেই বাসায় আসা যাওয়া বন্ধ হয়নি। সাবেরের বাবা মাহিন সাহেব অনেক পছন্দ করেন। শুভ্রর সাথে গল্প করতে পছন্দ করেন। কিন্তু শুভ্র তো আর গল্প শুনতে যায় না শুধু। সে যায় নিতুর সাথে দেখা করতে। কিন্তু নিতু কি আদৌ তাকে পছন্দ করে?