Jump to ratings and reviews
Rate this book

জাগরী

Rate this book
জাগরী (১৯৪৬) সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম উপন্যাস। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালি শিক্ষিত সমাজ এই উপন্যাসটিকে অভ্যর্থনা জানান। পঠনকৌশল, চরিত্র-সৃষ্টি এবং বিষয়বস্তু-সমস্ত দিক থেকেই এই গ্রন্থটি একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাসরূপে স্বীকৃত হয়েছে। রাজনীতির আবর্তে চক্রায়িত এক পরিবার-পিতা, মাতা এবং দুই পুত্র। এক পুত্রের সাক্ষ্যের ফলে আরেক পুত্রের মৃত্যুদণ্ডের পূর্বরাত্রির ঘটনা চারটি চরিত্রের স্বগতোক্তির মধ্য দিয়ে উদ্ভাসিত হয়েছে।

192 pages, Hardcover

First published October 1, 1945

42 people are currently reading
569 people want to read

About the author

Satinath Bhaduri

17 books39 followers
Satinath Bhaduri was a Bengali Indian novelist and politician. He was known by his literary pseudonym, Chitra Gupta. His ancestral home was in Krishnanagar in the district of Nadia. He obtained an MA degree in Economics from the University of Patna in 1930. In 1931 he completed his BL degree. He started practising law at Patna between 1932 and 1939. He then joined Indian National Congress and became a district secretary of Purnia. He was imprisoned in Bhagalpur Jail twice: 1940-41 and 1942-45. In 1948, he fell out with the Congress and joined the Socialist Party.

Satinath's first novel was Jagari (1946), for which he received the very first Rabindra Puraskar (1950). This book earned him considerable fame, and was translated into English in 1965 as part of the UNESCO Collection of Representative Works.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
121 (50%)
4 stars
99 (41%)
3 stars
16 (6%)
2 stars
1 (<1%)
1 star
3 (1%)
Displaying 1 - 30 of 51 reviews
Profile Image for Shuhan Rizwan.
Author 7 books1,107 followers
June 11, 2016
তুলনারহিত।

২০১৬তে এ পর্যন্ত পাঠক হিসেবে সবচেয়ে বড় পাওয়া এই যে, সতীনাথ ভাদুড়ির মতো একজন লেখককে আবিষ্কার করা গেলো।

সতীনাথের প্রথম উপন্যাস জাগরী, প্রকাশের পরেই তুমুল আলোড়ন তুলে পেয়েছিলো রবীন্দ্র পুরস্কার। চারটি মাত্র চরিত্র, তাদের একরাতের আত্মবিশ্লেষণ নিয়েই উপন্যাসটি।

প্রায় বিস্মৃতির আড়ালে চলে যাওয়া এই লেখককে যারা পাঠ করবেন প্রথমবার, তাদের ঈর্ষা না করে উপায় নেই।
Profile Image for Yeasin Reza.
508 reviews84 followers
January 18, 2023
সতীনাথ ভাদুড়ি! এই নামটা পাঠকদের কাছে নয় বরং লেখকদের মুখে প্রায়ই শুনতাম। সুনীল, হুমায়ুন, মাহমুদুল হক সহ আমার অনেক প্রিয় লেখকদের প্রিয় লেখক ছিলেন উনি। বাংলা উপন্যাসের সাহিত্য সমালোচনায় যার নাম অবধারিতভাবে থাকবেই। কিন্তু সাধারণ পাঠক কুলের মধ্যে উনার উল্লেখ তেমন হয়না।আমি ভাবতাম উনার সাহিত্যিক ভাষা হয়তো জটিল যেমন কমলকুমার কিংবা অমীয়ভূষণ এর। পাঠকদের একটু প্রস্তুতি নিতে হয় উনাদের পড়তে তাই সম্ভবত সর্বসাধারণের নাগালের বাইরে।কিন্তু জাগরী পড়ার পর আবার বিস্মিত হলাম যেমনটা হয়েছিলাম মাহমুদুল হকের ' কালো বরফ ' পড়ার পর। এত সহজ প্রাঞ্জল মধুর ভাষা! যে কেউ ডুবে যাবে অনাসায়ে, পাঠক হিসেবে পূর্ব প্রস্তুতির দরকার নেই। তবুও কেন সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা এত দেরী তে পড়তে হবে!


উপন্যাসের প্রেক্ষাপট ভারত উনিশ শো পঁয়তাল্লিশের আগের চলতে থাকা গান্ধী আন্দোলন। । বিলু একজন গান্ধীবাদী কংগ্রেস রাজনৈতিক কর্মী।রাজনৈতিক কারনে যার ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।নীলু বিলুর সহোদর কিন্তু স্বভাব ও মতাদর্শ বিপরীত মেরুর।বিলুর বাবা যিনি একজন শিক্ষক ও মনেপ্রাণে কংগ্রেস কর্মী।বিলু-নীলুর মা একজন চিরায়ত মমতাময়ী মা। যার কাছে জীবনের মানেই সন্তানরা। জাগরী মানে যারা জাগরিত, নিদ্রাহীন। পুরো উপন্যাসটি ফাঁসির রায় কার্যকরের রাতে এই চারজন জেল কয়েদীর মানস অবস্থার অসাধারণ বিবরণী।চরিত্রগুলোর পারস্পারিক সম্পর্ক নিয়ে ভাবনা,নিজেদের জীবন খতিয়ে দেখা,কারাগারের নিখুঁত অতি বাস্তব বর্ণনা, স্মৃতিচারণা, আত্মবিচ্ছেদের মাধ্যমে মানব জীবসের সমস্ত সারকথার হ্নদয়গ্রাহী বর্ণনা এই উপন্যাস।



সতীনাথ ভাদুড়ী সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী এবং আইনজীবী ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকবার রাজনৈতিক কারনে জেল খাটেন। ফলে ওই সময়কার রাজনৈতিক ও জনজীবনেরর অভিজ্ঞতা উনি নিজে যা উপলব্ধি করে ছিলেন তারই হ্নদয়গ্রাহী বর্ণনা দিয়েছেন। জেল দুনিয়ার বিস্ময়কর নিখুত বর্ণনা আর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিটেইলসের রসদ লেখক নিজ অভিজ্ঞতা থেকেই দিয়েছেন।

উনার ঢোঁড়াইচরিতমানস' নাকি আবার একেবারে ভিন্ন সৃষ্টি।সুনীলের মতে এই একটা বই নোবেলের জন্য যথেষ্ট। পড়ার আগ্রহ রইলো..
Profile Image for বিমুক্তি(Vimukti).
156 reviews88 followers
December 22, 2020
এ বই নিয়ে বেশি কিছু লেখার নেই, কঠিন গঠনগত সমালোচনা করাও আমার সাধ্যের বাইরে। শুধু এটা বলতে পারি, এ বইয়ের মতো কিছু আমি কোনোদিন পড়ি নি। কথার কথা না, সত্যিই আমি এর'ম কিছু পড়ি নি আগে কোনোদিন।


সতীনাথ ভাদুড়ী আমাদের সাহিত্যের আকাশে একজন ধ্রুবতারা এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই লেখককে খোঁজে পেতে অনেকেরই দেরি হয়ে যায়। আমি অনেক বাঘা বাঘা পাঠকের সাথে গত দুইদিনে বইটি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অবাক হয়ে গেছি, অনেকে নাম পর্যন্ত শুনেন নি লেখকের!


বিভূতিভূষণ, মানিক, শরৎ, তারাশঙ্করকে আমরা যেভাবে কাছে টেনে নিয়েছি সতীনাথ বাবুকে সেভাবে নিতে পারি নি। উনি আমাদের কাছে বিহারের মতোই দূরবর্তী। কিন্তু উনার বাচনভঙ্গি...গল্প বলার স্টাইল, এতোটা ইউনিক যে অবাক না হয়ে পারা যায় না। প্রত্যেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিসের এতো ডিটেইলস বর্ণনা করেছেন যে বইয়ের প্রতিটা লাইন মিষ্টান্নের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক রাতেরই তো গল্প, একজন আদর্শবান রাজনৈতিক যিনি ফাসির আসামী তার জীবনের হতে চলা অন্তীম রাতকে কেন্দ্র করেই গল্প বর্ণিত। বাবা, মা-ও জেলে, আদরের ছোট ভাই রাজনৈতিক আদর্শে বলীয়ান থাকায় ভিন্ন মতাদর্শী ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে তাকে ঝুলানোর ব্যবস্থা করেছে.....এই গল্পকেই সতীনাথ ভাদুড়ী দু'শো পৃষ্ঠা জুড়ে বর্ণনা করেছেন। আর বর্ণনার কি বাহার! কুলি করে পানি ফেলা, ল্যাম্পের আলো, আকাশের এক ফালি চাঁদ....এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস থেকেই অতীতের একেকটি মুহূর্ত তোলে ধরেছেন লেখক। অতুলনীয়!


যারা সতীনাথ ভাদুড়ী আগে পড়েছেন, তারা তো আর জানেনই। যারা এখনও পড়েন নি....তাদেরকে শুভ কামনা জানাচ্ছি। আপনারা দারুণ কিছুর মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। বাংলা সাহিত্যের এক ধ্রুব তারাকে আবিষ্কার করার আনন্দ সহজ কথা নয়।


রেটিং? এখানে পাঁচ তারার বেশি দেয়া যায় না, নইলে হাজার তারা দিতাম।
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
March 13, 2022
'But there is no sleep, when men must weep
Who never yet have wept;
So we the fool, the fraud, the knave-
That endless vigil kept,
And thought each brain, on hands of pain
Another's terror crept..'

- The Ballad of Reading Gaol/ Oscar Wilde



জা গ রী
Wakeful/Guideless/Sleepless

ইংরেজিতে একটি টার্ম আছে Bookklempt, অর্থাৎ একটি বই পাঠ করা শেষ হয়েছে, তারপর আর কোনো অধ্যায় নেই জানা সত্ত্বেও সমাপ্তিটুকু হজম করতে সময় লাগছে- সতীনাথ ভাদুড়ী'র চিরায়ত এই উপন্যাস পড়ার পর আমার অবস্থা এখন খানিকটা সেরকমই।

জেলজীবনের মতো রসকষহীন, অচিত্তাকর্ষক বিষয়ও যে এমন অপ্রতিমভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে, এতদিন পর্যন্ত বোধগম্য ছিল না। জানি না সাধারণ পাঠককুলের মধ্যে ক'জনের সতীনাথ ভাদুড়ীকে পাঠ করা হয়েছে, তবে এত দেরিতে তাঁকে পড়তে পারা, জানতে পারা, খানিকটা উপলব্ধি করতে পারার আফসোসটুকু মনের মধ্যে কিঞ্চিৎ খোঁচা দিয়ে চলেছে।

জাগরী

এক আদর্শ রাজনৈতিক পরিবারের চার জন সদস্যের নিদ্রাহীন এক রাত্রিতে উঠে এসেছে আগস্ট আন্দোলন, স্মৃতিকাতরতা, বেদনা, অনিশ্চয়তা, মৃত্যুচিন্তা, অপেক্ষা সবকিছু। ফাঁসি সেলে মৃত্যুর অপেক্ষারত বিলুর অন্তহীন ভাবনা, আপার ডিভিশন ওয়ার্ডে বাবার অসহায়তা, আওরৎ কিতায় মায়ের মমতাময়ী স্মৃতিরোমন্থন, জেলগেটে রাত জেগে বসে থাকা নীলুর অবসাদ- একশ বিরানব্বই পৃষ্ঠার মধ্যে আবদ্ধ করেই লেখক মহাশয় ক্ষান্ত হননি, ঢুকিয়ে দিয়েছেন আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের চিলেকোঠার সেপাই, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের অলীক মানুষ এর সাথে এখন পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে সতীনাথ ভাদুড়ী'র জাগরী- সবচেয়ে প্রিয় হয়ে ওঠার!

উপন্যাসে বিলু'র অসংখ্য ভাবনার মধ্যে একটি দিয়ে লেখা শেষ করি-

'যে দেশে মৃত্যুদন্ড নাই সে দেশে যদি আমার সাজা হইত তাহা হইলে? তাহা হইলে আজীবন কারাবাসের দন্ড হয়তো আমাকে বৈচিত্রময়ী ধরণী হইতে আচ্ছন্ন করিয়া রাখিত। কিন্তু জেলের মধ্যেও তো একখন্ড জগৎ আছে। জেলের মধ্যেও তো শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার পরিবর্তন অনুভব করিতে পারা যায়। আকাশ, বাতাস, চন্দ্র-সূর্য--তারা সেখানেও মাধুর্য বিলাইতে কার্পণ্য করে না। কালব��শাখীর মাতলামি, প্রথম বৃষ্টির পর ভিজা মাটির গন্ধ, নিশীথ রাতের বারিধারার মাদকতাভরা রিমিঝিমি, কত স্মৃতিভরা শরতের সোনালী তবকমোড়া রৌদ্র, রহস��যভরা শীতের কুয়াশা,- জেলের প্রাচীরের ভিতরেও ইহাদের নিরঙ্কুশ গতি। তাহার উপর মানুষের মুখ দেখা- হউক তাহারা চোর ডাকাত তবু মানুষ তো। তাহাদের মধ্যে বাঁচিয়া থাকা কি একটি দড়িতে ঝুলিয়া মরা অপেক্ষা ভালো না?'


(১৪.০১.২২)
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
March 1, 2021
ধরুন, আগামীকাল ভোরে আপনার ফাঁসি হবে। শুধু একটা রাতের ব্যবধান, তারপরেই ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলতে থাকবেন। রাতে কি করবেন আপনি? ঘুমাবেন? মৃত্যুর চিন্তা করতে থাকবেন? নাকি হাজারো স্মৃতির ডালি নিয়ে বসবেন?

বিলু বাবু সবকিছুই করেছে, মৃত্যু চিন্তা, স্মৃতিকাতরতা, একটু ঘুমিয়েও পড়েছিল বোধহয়। তারপর আবার সজাগ! কানখাড়া হয়ে আছে তার- একটা মোটর গাড়ির শব্দের জন্য, ওতে করেই ফাঁসিকার্য পরিচালনা করার লোকজন আসবে।

পূর্ণিয়ার সেন্ট্রাল জেলে ঘুম নেই আরও তিনজন মানুষের। দু'জন আছেন আপার ডিভিশন ওয়ার্ডে, বিলুর বাবা-মা; আর একজন বিলু বাবুর লাশ নেয়ার জন্য আছে জেল গেটে, নীলু: বিলু বাবুর ছোট ভাই। নীলুও জেলে ছিল, ছাড়া পেয়েছে। ভাববার বিষয় হচ্ছে ফুল ফ্যামিলি জেলে কেন!? আদর্শ রাজনৈতিক পরিবার বলা চলে, সকলেই কংগ্রেসী। এরা সকলেই ব্রিটিশ সরকারের রাজবন্দী। ১৯৪২ এর আগষ্টের আন্দোলন আর রাজনৈতিক অবস্থাকে ভিত্তি করে এই "জাগরী" উপন্যাস। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে বিলুর ফাঁসির রায় হয়েছে নিলুর দেয়া সাক্ষ্যের কারণে! নিলু কংগ্রেস ছেড়ে কম্যিউনিস্টের আদর্শ ধারণ করে দাদার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ বজায় রেখেছে। যদিও ঐসব মূখ্য বিষয় নয়। প্রাধান্য পেয়েছে ঐ রাতের অংশ আর নিলু, বিলু আর বাবা-মা; ওরা সকলেই রাতটাকে কিভাবে নিচ্ছে, কি ভাবছে? রাতটিকে ঘিরে জেগে থাকা চারজন মানুষের আত্নবিশ্লেষণ নিয়েই জাগরী। সকলেরই চিন্তায় ছেদ পড়ে একটি মোটর গাড়ির শব্দে। ফাঁসির সময় হয়ে এলো.......



কি চমৎকার উপস্থাপনা। চারটি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একই কাহিনী বর্ণিত হচ্ছে চারভাবে। দারুণ! অপূর্ব লেগেছে ব্যাপারটা।

One kind of gem!
রেকোমেন্ডেশন না পেলে এই বই আসলেই পড়া হতো না আমার। ধন্যবাদ মজুমদার ভাই :)

~ ১ মার্চ, ২০২১
Profile Image for Omar Faruk.
263 reviews15 followers
January 18, 2023
সতীনাথ ভাদুড়ী'র সাথে পরিচয় মূলত "ঢোঁড়াই রচিত মানস" উপন্যাসের মাধ্যমে। ঢোঁড়াই চরিত মানস আমকে খুব বেশি মুগ্ধ করেছিল। যদিও উপন্যাসের ভাষায় বাংলার সাথে হিন্দির ব্যবহার আছে, তবুও বলতে হয় উপন্যাসের রস উপভোগ করার ক্ষেত্রে ভাষাটা অন্তরায় হয়নি একটুও। লেখকের কথা প্রথম জানতে পারি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখার মাধ্যমে। সুনীলের বেশ কিছু বইয়ে সতীনাথ ভাদুড়ীর কথা বেশ জোরালো ভাবে বলা হয়েছে। বিশেষ করে "জাগরী" আর "ঢোঁড়াই চরিত মানস" উপনাস দুটির কথা। সে সূত্রে জাগরী পড়া, পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি, সে মুগ্ধতা ঢোঁড়াই চরিত মানসের চেয়েও বেশি।

উপন্যাসটি যে আঙ্গিকে লেখা, তেমন উপন্যাস আগে কখনো পড়েছি বলে মনে হয়না। বিলুর ফাঁসিকে কেন্দ্র করে মূল কাহিনী। ফাঁসির রাতে বিলুর মানসিক অবস্থা, নিজের অতীত জীবনের স্মৃতিচারণ সহ অন্যান্য অনেক বিষয় লেখক তুলে এনেছেন। সাথে বিলুর পরিবারের মা, বাবা ও ছোট ভাই নিলুর মানসিক টানাপোড়েন সহ বিলুকে ঘিরে তাদের নিজস্ব যে জগৎ ছিল তার এক ঝকঝকে ছবি লেখক একেঁছেন। তাছাড়া জেল জীবনের কথা যেমন সুক্ষ্মভাবে বর্ণনা করেছেন সেটা শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থাকলেই সম্ভব, সেটা লেখকের আছে বলেই জানি। সেটার যথাযথ ব্যবহার লেখক সুন্দরভাবেই এই উপন্যাসে করে দেখিয়েছেন।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
May 19, 2020
জাগরী মানে জেগে আছে যে।

অবশ্য আজ রাতে আর ঘুম আসবে কি করে৷ আজকে রাতটাকে কাল রাত্রির সাথেই বুঝি বা তুলনা চলে। রাত পেরিয়ে ভোরে, না, ভোরে না ঠিক, ভোরের আলো ফুটবার আগেই বিলুবাবুর ফাঁসি। কি চলছে তার মনের মাঝে? শুধু কি বিলু? তার বাবা-মা, ভাই.. কি ভাবছে ওরা।

ও আচ্ছা! বিলুবাবুর পরিচয়ই তো দেয়া হয়নি। বইয়ের পটভূমি ১৯৪২/৪৩ সালের অগাস্ট আন্দোলন। বিলুবাবু কংগ্রেস সোস্যালিস্ট পার্টির ত্যাগী কর্মী, বর্তমানে ব্রিটিশ সরকারের রাজবন্দী। বড্ড অদ্ভুত পরিবার তার৷ পুরোটা পরিবারই এলাকার লোকেদের ভাষায় 'রাষ্ট্রীয় পরিবার' মানে যে পরিবারের সকল সদস্যই রাজনীতির সাথে জড়িত৷ বিলুবাবুর বাবা মাস্টারসাব নামেই অধিক পরিচিত, তিনি তার চাকুরী জীবনে হুট করে একদিন সিদ্ধান্ত নেন, অনেক হয়েছে ইস্কুলে শিক্ষকগিরি৷ এখন দেশে স্বরাজ আনতে হবে৷ মহত্মা গান্ধীর আদর্শ অনুকরণ করে গোটা বাড়িটাকেই আশ্রম বানিয়ে তুললেন৷ ছেলেদেরও রাজনীতিতে হাতেখড়ি সে পথ ধরেই৷

মানুষ পরিবর্তনশীল। অন্ধ অনুকরণীয় আদর্শেও কতো সময় ভাঙ্গন ধরে অর্থাৎ নানান কারণে সেই মতের পরিবর্তনও হয়ে থাকে। বাবার অহিংস কংগ্রেসী মতামত ভালো লাগেনি দুই পুত্র বিলু, নীলুর৷ কংগ্রেসের সোস্যালিস্ট দলের সমর্থক হয়ে কাজ করতে থাকে৷ সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত আর জেল খাটবে না.. তা কি হয় কখনও? জেলে আসা যাওয়া চলে বাবা ও দুই ভাইয়ের৷ সেই সাথে চলে দেশসেবাও। জেলে থাকতে থাকতে মতের পরিবর্তন হয় নীলুর। জড়িয়ে পড়ে কম্যুনিস্ট দলের সাথে৷ একটা পরিবার.. তাতে তিন ধরণের রাজনৈতিক দর্শন। অদ্ভুত আবার অদ্ভুত-ও না।

ফিরে আসি বিলুর কথায়। রাজবন্দী সে, সাজা হয়ে গেছে তার৷ আজ বাদে কাল তার ফাঁসি৷ পরিবারকেও কাছে পাচ্ছে না বেচারা৷ বাবা-মা দুজনেই জেলে, রাজবন্দী। সবচেয়ে প্যাথেটিক ব্যাপার কি জানেন? বিলুর বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছে তার আপন ছোটভাই নীলু। পরিবারে চারটি মাত্র সদস্য, একজন কনডেমন্ড সেলে ফাঁসির অপেক্ষায়, বাকি দু'জন আলাদা আলাদা সেলে, আরেকজন জেল গেটে বসে অপেক্ষার প্রহর গুণছে। শুধুমাত্র একটা রাতের বয়ান, চারটি দৃষ্টিকোণ থেকে৷ অসাধারণ বললেও কম হয়ে যাবে। বইয়ের শুরু বিলুর জবানীতে, তার খন্ড খন্ড চিন্তাভাবনা, স্মৃতি আরও কতো কি! একবার মনে হয় মুষড়ে পড়ছে সে, আবার দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দেয়া সত্ত্বাটি তাকে স্বান্তনা দেয়, ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে৷ সমস্ত বই জুড়ে কেমন একটা হাহাকার.. চাপা বেদনা। বাবা-মায়ের জবানীতে ধীরে ধীরে পরিষ্কার হতে থাকে বিলু চরিত্রটি। ছোট্ট বিলু থেকে ক্রমেই পরিণত বিলু হয়ে উঠা৷ চরিত্রদের মনস্তাত্ত্বিক দহন, একটুখানি আফসোস, অনেকখানি দুঃখ, কাতরতা, অন্তর্দ্বন্দ, রাজনৈতিক দর্শন, জেল জীবন সব মিলিয়ে একটু একটু করে পরিস্ফুটিত হতে থাকে বইয়ে৷ বইয়ের পাতায় পাতায় কেমন একটা মন খারাপ করা ভাব।

রাত প্রায় তিনটে। সকলেই টের পায় জেল কর্মকর্তাদের ভিতরের কর্মব্যস্ততা। ফাঁসির মঞ্চও তৈরি.. ঐ তো রাতের নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে ইঞ্জিনের শব্দ শোনা যাচ্ছে.. লড়িও চলে এসেছে..

আর মাত্র কিছুক্ষণ বাকি...



বই-জাগরী
লেখক-সতীনাথ ভাদুড়ী




#Happy_reading
#বই_হোক_অক্সিজেন
Profile Image for Sujan.
106 reviews42 followers
July 8, 2016
এই ভদ্রলোক কোন বিস্মৃতির অতলে এতকাল হারিয়ে ছিলেন? ( অবশ্য সহসা এরকম একজনকে ��বিষ্কার করতে পারার আনন্দটাও তো অল্প নয়।)

কথাসাহিত্যে মনস্তত্ত্বের টানাপোড়েন সর্বদাই টানে বেশি, আমাদের দেশের সাহিত্যে যে জিনিসের অভাব অনেক বেশি বোধ করেছি। ভাদুড়ীর এই উপন্যাসে কিন্তু আর কিছুই নাই, শুধু আছে মানুষের মন আর তার ক্রমাগত ব্যবচ্ছেদ। ইন্টেরিয়র মনোলগের মাধ্যমে একই পরিবারের চার চরিত্রের মনকে অনুসরণ করতে গিয়ে ভাদুড়ী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তাদের অতীত অভিজ্ঞতা, পারস্পরিক সম্পর্ক, মানস গঠন, ব্যক্তিত্ত্ব সবকিছুর মিশেলে একটা সামগ্রিক ছবি আমাদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন। কথাসাহিত্যকে যদি ধরি বিশাল গোপন ক্রিপ্টিক মানবমনকে জানার একটা তরিকা, তাহলে ভাদুড়ীর এই অদ্ভূত চেষ্টাকে ওই গোপনকুঠুরীর ভেতর এক টুকরো আলোর ঝলকানি মেনে নিতে আপত্তি থাকার কথা নয়।

ভাবি, আমাদের বর্বর পাঠকরুচির পেষণে আরও কত ভাদুড়ী না জানি হারিয়ে আছেন কোন অন্ধকার প্রকোষ্ঠে!
Profile Image for Momin আহমেদ .
112 reviews49 followers
September 27, 2024
এক রাতের জাগরণ। এক রাষ্ট্রীয় পরিবার। বাবা মা দুই ভাই। এক ঐতিহাসিক সময়। রাজনৈতিক আদর্শ। তরুণদের বামপন্থি রাজনীতিতে ঝোক। জেলখানায় বিভিন্ন শ্রেণীর জীবনব্যবস্থা।
বইটা নিয়ে লিখতে গেলে সেই সময় সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা থাকা দরকার। এর আগে এই সময়ের উপর লেখা একটা বই পড়েছিলাম অনেক আগে। সুনীলের একা এবং কয়েকজন। তাও এখন সব আবছা আবছা হয়ে গেছে।
লেখক আমাকে বইটা টানা পড়ে যেতে বাধ্য করেছেন তার লেখার সম্মোহনী শক্তির জোড়ে। পুরো গল্পে কোথায় লেখার ছন্দপতন হয়নি। এমন নয় টানটান উত্তেজনাকর ঘটনার জন্য এমন হয়েছে। বলতে গেলে লেখার গতি ধীর। সাধুভাষায় লেখা। এক বিষন্নতা মনে ভর করে রেখেছে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
Profile Image for Meem Arafat Manab.
377 reviews256 followers
September 15, 2017
বইয়ের ভেতর কী হবে জেনেশুনেই বইটা পড়তে গিয়েছিলাম। কী হয় বইয়ের ভেতর? স্পয়লারটা তাহলে দিতেই হচ্ছে!

প্রথমেই অনেক দূর একজনের চোখ দিয়ে আমরা একটা জেলখানা দেখি, ধ্রুপদী কারাগার সাহিত্যদের মত তার বয়ানও আমাদেরকে কারাগারের খুটিনাটি সম্পর্কে একটা বিশদায়িত ধারণা দিতে থাকে। এছাড়াও আসে কংগ্রেসের আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রসঙ্গ, কারণ সালটা ১৯৪২/৪৩, অগাষ্ট আন্দোলনের কয়েক মাস পরের ঘটনা চলছে। আসে পরিবারের কথা, সেটাই এক সময়ে বড় হয়ে দাঁড়ায়। আমরা একটা সময়ে জানতে পারি, এটাই সেই অকিঞ্চিৎ স্পয়লারদের ছোটোটা, বক্তার একটু পর ফাঁসি।

তারপর তার জীবনের সাথে সংযুক্ত আরো দুই চারজন তার সম্পর্কে নিজের সম্পর্কে এটা সেটা বলে, আমরা একই পরিবেশেরে একই রাতে অনেক জায়গা থেকে দেখতে থাকি, এবং বড় স্পয়লার, বইয়ের শেষে, বিশ্বাসঘাতকতা করে যেই প্রাক্তন কমরেড নায়ক বিলুর ফাঁসির পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে এসেছে বিলেত সরকারের কাছে, সেই জুডাস এবং তার সাথে সাথে আমরাও জানতে পারি যে, ফাঁসিটা হচ্ছে না।

এখন এই বইটা ভালো কেনো? একদিকে তখনকার ডিটেল নিয়ে চমৎকার দুইশ পাতা সাজিয়ে যাওয়ার জন্য, ছন্দপতন নাই কোনো পুরা বইয়ে। আর আরেকদিকে, আমি ভাবতেছিলাম, এই যে চরিত্রটা, বিলু, সে মরে গেলে কি বেশি জমে উঠতো না? এখন কি বিষয়টা সে বেঁচে গিয়ে একটু হইলেও কৌতুককর হয়ে উঠেছে?
কিন্তু এটা যদি কৌতুককর হয়, তাহলে ত যীশুর ফিরে আসাও কৌতুককর, প্রভু যীশুর মতই কি কমরেড বিলু জীবনের টান ছেড়ে দিয়ে আমাদের হয়ে ওঠে না, ভারতবর্ষের হয়ে ওঠে না?

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা তিন তিনটি বরাহশাবক গোত্রের রাষ্ট্রের জন্ম দিয়ে থাকলেও, সেই স্বাধীনতার জন্য যারা মরতে গেছেন, যারা পুনর্জ্জীবন পেয়ে ফিরে এসেছেন, তারা রক্তমাংশের লোক, এবং তারা আমাদের, এবং তারা কিছুটা প্রভুগোত্রীয়ও। সেই তাদের নিয়ে এত ভালো উপন্যাস খুব বেশি হয় না, সুতরাং সতীনাথ ভাদুড়ীকে একটা ধন্যবাদ। লবণ আন্দোলন, আগষ্ট আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় নিয়ে অনেক ফালি কাগজ আছে নেতাদের উপর, কিন্তু সেই সময়ের মানুষদের কাছে যাওয়ার হাতে গোনা রাস্তাদের একটা ভাদুড়ী সাহেব গড়ে দিয়ে গেলেন।

শিরাচৌকেও ধন্যবাদ, ধার দেবার জন্য।
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
March 31, 2023
জাগরী শব্দের অর্থ জাগরণকারী। জাগরী উপন্যাসটি রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট একই পরিবারের চারজন ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ হতে লেখা। পিতা-মাতা ও দুই ভাইয়ের সংগ্রামী জীবন, জেলখাটা এবং স্মৃতিচারণের মাধ্যমে অসাধারণ এক উপন্যাসের জন্ম দিয়েছেন সতীনাথ ভাদুড়ী। ফাঁসি সেল, আপার ডিভিসন ওয়ার্ড, আওরত কিতা এবং জেল গেট এই চার ভাগে উপন্যাসটি বিভক্ত। যেখানে চারজন ব্যক্তির উত্তম পুরুষের বর্ননায় উপন্যাসটি রচিত।

আগামীকাল বিলুর ফাঁসি। বলাই থেকে বিলু। বিলুর ভালো একটা নাম আছে 'পূর্ণ'। বিলুর পুরো পরিবারটাই রাজনৈতিক পরিবার। বিলুর বাবা-মা কংগ্রেসের অহিংসপন্থী সমর্থক। অন্যদিকে বিলু কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য এবং বিলুর ছোট ভাই নীলু কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। সকলেই একসময় একই দলের সমর্থক ছিল কিন্তু আদর্শগত দ্বন্দ্ব তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। বিলুর এই যে ফাঁসি হবে এর কারণ নীলু। কারণ নীলু তার পার্টির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছে।

বিলু যেমন জেলে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। তেমনি তার মা-বাবাও জেলে বন্দি অবস্থায় নিজ ছেলের মৃত্যুর অপেক্ষা করছে। আর বিলুর ফাঁসির পর তার লাশ নেয়ার জন্য জেলগেটে অপেক্ষা করছে ছোট ভাই নীলু। সময়টা ভারত ভাগের কিছুকাল আগের। ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলনের পরবর্তী সময়ের। তখন স্বরাজ দাবিতে বহু লোককে কারাবরণ করতে হয়েছে। নীলুও বিলুর সাথে জেলে গিয়েছিল । কিন্তু সে কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক এবং ফ্যাসিস্ট বিরোধী হওয়ায় জেল হতে ছাড়া পায়।

একটা রাতের প্লটে একটা উপন্যাস। কেমন হবে যদি আগামীকাল আপনার ফাঁসি হবে এবং সেটা আপন ভাইয়ের সাক্ষ্য প্রদানের কারণে? আবার এদিকে বাবা-মা জেলে বন্দি, যাদের সাথে শেষ দেখাও হবেনা। রাত যেন ফুরোয় না। কখন হবে সকাল? আর কখন দিবে ফাঁসি? এই ফাঁসিকে কেন্দ্র করে চার জন ব্যক্তির চার রকম মনোভাব লেখক অত্যন্ত সূচারুভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এছাড়া বিলুর পরিবারের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার শুরু, বিলু-নীলুর ছোটবেলা এবং তাদের দুরন্ত শৈশবের স্মৃতিচারণ পাওয়া যায় বিলুর বাবা-মায়ের জবানিতে।

এক কথায় অসাধারণ একটি রাজনৈতিক উপন্যাস। সতীনাথ ভাদুড়ী নিজে ছিলেন রাজনীতির মানুষ। তাই উপন্যাসটিতেও রাজনীতির চরিত্রায়ন ছিল দারুণ। বইটি পড়লে মনেই হবেনা এটি লেখকের প্রথম উপন্যাস। একরাশ মুগ্ধতা দিয়েই যেন বইটি হুট করে শেষ হয়ে গেল। লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা রইল। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for Joynab Rimu.
75 reviews115 followers
May 12, 2021
"........কিন্তু দাদা নিশ্চয়ই বলিবে যে এসবগুলিই অল্পবিস্তর নাটকীয়। দাদা এসব কিছু করিবে না। উহার ওষ্ঠকোণে লাগিয়া
থাকিবে অবজ্ঞাভরা হাসি। সে তাচ্ছিল্যের সম্মুখে সুপারিন্টেণ্ডেষ্টের চক্ষু নত হইয়া যাইবে, ম্যাজিস্টেট অন্য দিকে দৃষ্টি ফিরাইয়া লইবেন, জেলরসাহেব অকারণে টর্চ জ্বলিয়া মণিবন্ধের ঘড়িটি দেখিবেন ; যে নির্বিকার কয়েদী কিছু ‘রেমিসন’ ও পাঁচটি টাকার জন্য ঘাতকের ঘৃণ্য কাজ করিতেছে, তাহারও হৃদস্পন্দন কিছু দ্রুত হইয়া যাইবে। দাদার অন্যরূপ আচরণই আমার নিকট অপ্রত্যাশিত।••••••"

পূর্ণিয়ার জেলে ফাঁসির আসামি বিলুবাবু কে ঘিরে চারটি চরিত্রের যে মনস্তাত্ত্বিক উপস্থাপন, নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে, এতদিন পর আম�� সতীনাথ ভাদুড়ীকে আবিষ্কার করলাম!

অসাধারণ বললেও অত্যুক্তি হয়না।
Profile Image for Farhanur Rahman.
47 reviews11 followers
April 23, 2021
অবশেষে শেষ করলাম ক্ল্যাসিক বইটি। জেলের মত নিরস বিষয়ের অনেক শক্ত-মক্ত বর্ণনা থাকলেও শেষ পাতার টুইস্টে লেখক খেল দেখিয়েছেন। লেখকের জয় হোক....
40 reviews3 followers
September 5, 2017
চমৎকার অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে। "জাগরী"- চারটা অধ্যায়, চারজনের বয়ানে একটা অন্তিম ঘটনার দিকে এগিয়ে যাওয়া। চারজনই জেলখানায়, একজন বাদে বাকিরা বন্দী, আলাদা আলাদা ওয়ার্ডে বা সেলে। ফার্স্ট পার্সনে কথা বলে চলে উপন্যাসটা।

ভাদুড়ি পুরো উপন্যাসে সূতাটা টানটান করে রেখেছেন। ভাবলাম কীভাবে পারলেন। উপন্যাসে সেরকম লিনিয়ার কোন গল্প নাই। চারটা অধ্যায় যেন চারজনের একরকম স্মৃতিকথা, তাই স্বাভাবিকভাবেই, গল্পগুলা বিচ্ছিন্ন। এই বলা হচ্ছে তারুণ্যের কথা, পরক্ষণেই শৈশবের গল্প। প্রত্যেকেই। বিলু, বাবা, মা, নিলু। তবে সবাই ঘুরে ফিরে মূল গল্পকে ঘিরে স্মৃতিচারণ করছে।

বিলুর ফাঁসির হুকুম হয়েছে। পটভূমি ১৯৪২ সালের আগস্টের ভারত ছাড় আন্দোলন। বিলু কংগ্রেসি। বিলুর মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে তারই ছোট ভাই নিলু, যে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ফাঁসির আগের রাত থেকে ফাঁসি হবার আগ পর্যন্ত প্রত্যেকের মানসিক অবস্থা, পরিপার্শ্ব এই নিয়েই চলে উপন্যাসটা।

আশ্চর্য মুন্সিয়ানা সতীনাথ ভাদুড়ির। জেলে ঘটনা ঘটছে জেনে প্রথমে ভাবছিলাম একঘেয়ে লাগবে। তা হলো না। বারবার তিনি পাঠককে রিলিফ দিয়েছেন। সোজা ফ্লাশব্যাকে গল্প বলেন নি। ভেঙে ভেঙে, জেলে ঘটা বিভিন্ন ঘটনার মাঝে মাঝে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন গল্প, এই অমুক আসছে, ওই তমুক, এই একটু কমিক ব্যাপারস্যাপার, সেই অর্থে এইসব গল্পে ক্যারেক্টার দাঁড়াবার কথাও না, কারণ এসব তো ফাঁসির আসামী ও তাঁর মা বাবা আর ভাইয়ের মনোজগতে ফিরে ফিরে আসা ঘটনাবলি। এই সত্যি ব্যাপারটাকে গল্পে তিনি ভায়োলেইট করেন নাই। ফলে চরিত্র হিসাবে মা বাবা বিলু নিলু- চার অধ্যায়ের এই চার বক্তাই দাঁড়িয়ে আছে, বাকিরা আসছে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে ফিরে আসছে, আর উপন্যাসটা উজ্জ্বল বাস্তব হয়ে দেখা দিচ্ছে।

শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত ফাঁসির উত্তেজনাটুকু ধরে রেখেছেন ভাদুড়িবাবু। আর কী পরিমিত বয়ান তাঁর যখন তিনি রাজনীতি নিয়ে চরিত্রদের কথা বলান। থিওরির কচকচানি না, জাস্ট কী হয়, কী হয়ে এসেছে। শুনতে শুনতে মনে হয় সত্যিই গল্প শুনছি। এই বইটা পুরোটা সময় শুধু পড়বার না, শুনবারও অভিজ্ঞতা দিয়ে যাবে।

বাকিটুকু স্পয়লার, চাইলে পড়তে পারেন।

বিলুর ফাঁসি মওকুফ হয়ে যায় শেষ পৃষ্ঠায়। না, ঘটনাটা অবিশ্বাস্য না, ঐতিহাসিক সত্য, সেসময় এরকম ঘটনা ঘটেছিল। ফলে ফাঁসি আটকে যাওয়ায় আমার আপত্তি নাই। বরং আমার তো ভালই লেগেছে, এই যে বিলু এত আপন হয়ে উঠল, সে যে বেঁচে গেল। কিন্তু এই প্রশ্নও মনে উত্থাপিত হয় যে, এই বই কি দ্বিতীয়বার পড়তে একই রকম লাগবে? উত্তর হল "না"। শেষটুকু জানলে আমরা অধ্যায়গুলো পড়ব একরকম কৌতুক নিয়ে। এক ফাঁসির আসামি, তা বাবা, মা যারা একই জেলে বন্দি, আর বাইরে থাকা ছোটভাই- যারা অপেক্ষা করছে কাল ভোরেই বিলুর ফাঁসি, অথচ আমরা জানি সে বেঁচে যাবে। না এই বই দ্বিতীয়বার পড়তে একই রকম লাগবে না।

প্রথমবারেই এই বই অসামান্য। জানতাম না সে বেঁচে যাবে। অনিবার্য মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে একজন, আর আমি তাঁর জীবন, পরিপার্শ্ব, জেলের ঘটনা, সবকিছু পড়ে যাচ্ছি, বলা ভাল, শুনে যাচ্ছি, যেন আমি জেলে ওদের সামনে বসে আছি, আর ওদের অনুভব করতে পারছি।। উৎকণ্ঠাটা প্রতি মুহুর্তে টোকা দিচ্ছিল, তার ফলে প্রতি চ্যাপ্টারের শেষে হয় পড়বার গতি কমে যাচ্ছিল, বা বেড়ে যাচ্ছিল।

সাধুভাষায় লেখা, পড়বার সময় মনেই হবে না যে আটকে যাচ্ছে, এত সাবলীল গদ্য সতীনাথ ভাদুড়ির। খুবই ভাল বই, মানুষকে পড়তে বলার মতন বই।

চার তারকা না দেবার কোন কারণ দেখিনা।
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews771 followers
August 17, 2023
জাগরী শব্দের মানে হলো জাগরণকারী। অর্থাৎ যে নিদ্রাহীন রাত্রি যাপন করছে। সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা অনবদ্য রচনা জাগরী। ভদ্রলোক নিজে ছিলেন ভারত ছাড়ো আন্দোলনের একজন সক্রিয় স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং পূর্ণিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি। আন্দোলনের সুর ধরে কারাবাসও করেছেন। সেই কারাবাসের স্মৃতি নিয়ে ১৯৪৫ সালে লিখেছেন জাগরী। রবীন্দ্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত এই উপন্যাসটি তিনি উৎসর্গ করেছেন ভারত বর্ষের অজ্ঞাতনামা রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় ইতিহাসে-বিবরণে যাদের নাম কোনো দিনই লেখা হবে না!

চার অধ্যায়ের এই উপন্যাসটি লেখা হয়েছে চারজন কারাবন্দীর কথনে। একই পরিবারের চারজন - বিলু নীলু দুই ভাই আর ওদের বাবা মা পূর্ণিয়া জেলের পৃথক পৃথক সেলে বন্দী। বিলু রাজবন্দী। তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কনিষ্ঠ সহোদর নীলুর সাক্ষি সেই ফাঁসির পথ সুগম করে দিয়েছে। এই চার ব্যক্তি বিলুর ফাঁসির পূর্বরাত্রি অনিদ্রায় কাটিয়ে কে কী ভাবছে ভাদুড়ীবাবু সেই অনুভূতিরই ব্যবচ্ছেদ করেছেন তাঁর জাগরী গ্রন্থে।

এক কথায় দুর্দান্ত!
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews192 followers
November 11, 2020
কিছু কিছু বই পড়ার জন্য আসলে পাঠক হিসেবে এক ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়। 'জাগরী' নিঃসন্দেহে সেই ধরনের একটি বই। সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখনশৈলী চিনেছি 'ঢোঁড়াই চরিত মানস' পড়ে, তবে এই বইটাতে ওইটার চেয়ে একটু আলাদা। কারণ, দুটোর প্রেক্ষাপট এবং সময় সবই অন্যরকম।
উপন্যাসটি আবর্তিত হয়েছে মোট ৪টি চরিত্র ঘিরে। বিলু, নীলু এবং তাদের বাবা-মা। সকলেই কারাগারে বন্দী। এর মধ্যে বিলু এবং তার বাবা-মা গান্ধীবাদী এবং নীলু কমিউনিস্ট। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলে নীলু নিজের পার্টির প্রতি আনুগত্য বজায় রাখার জন্য সাক্ষী দেয় বিলুর বিপক্ষে। যে কারণে বিলুর ফাঁসির আদেশ হয়।
মূল ঘটনা এতটুকুই। বাকিটা বর্ণিত হয়েছে প্রতিটা চরিত্রের আলাদা আলাদা কথনে। কাজেই উপন্যাসটিও মূল ৪ ভাগে বিভক্ত।
বিলুর মনের কথার মধ্য দিয়ে উপন্যাসের শুরু একটি অসাধারণ লাইনের মাধ্যমে,
'দুই নম্বর ওয়ার্ডের অশত্থ গাছটির উপরের শাখাটিতে গোধূলির ম্লান আলো চিক-চিক করিতেছে।'
এর পরেই ধীরে ধীরে উঠে এসেছে একজন ফাঁসির আসামীর মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি। কিন্তু সবকিছুর মধ্য দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল ভাই নীলুর সাথে কাটানো স্মৃতি এবং মা-বাবা-আত্মীয়-প্রতিবেশীদের নিয়ে সকল অতীত গ্রামীণ মুহূর্তগুলো।
একই ভাবে বিলুর বাবার মনেও নানান চিন্তা খেলে যায়, বিলুর জন্য গভীর মমতা, নীলুর কাজটির যথার্থতা, নিজের স্ত্রীকে রাজনীতিতে নিয়ে আসা এসব কথা তিনিও নিজের মনেই পর্যালোচনা করেন। গান্ধীর প্রতি একনিষ্ঠতা ফুটে উঠেছে এই স্কুল মাস্টারের, এছাড়াও বিলু যে খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি সেই ক্ষোভটাও তাঁর পিতৃত্বকে প্রকাশ করে।
মায়ের মনে রাজনীতির ভাবনা থেকে অনেক বেশি সংসার এবং মাতৃত্বের ভাবনা। বিলুকে হারানোর সম্ভাবনায় তিনি শেষ পর্যন্ত মনে মনে গান্ধীকেই দায়ী করেন, ভাবেন দেশের স্বাধীনতার জন্য এত ভাবলেও তাঁর নিজের স্বাধীনতার জন্য কিই বা ভেবেছেন তিনি? এইভাবে স্বামীকে অনুকরণ করে রাজনীতিতে এসে তিনি হয়েছেন অনেকের হাসির খোরাক আবার হারাতে বসেছেন ছেলেদেরও।
আর নীলুর মনেও খেলা করে একই সাথে আবেগ, মমত্ববোধ এবং কর্তব্যনিষ্ঠা। খানিকটা পাপবোধও।
প্রতিটা চরিত্রের এই যে আলাদা আলাদা ভাবনা এবং ব্যক্তিত্ব, তার মধ্য দিয়ে তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির আঁচটা পাওয়া যায় খুব ভালো করে। একই সাথে পারিবারিক এবং গ্রামীণ স্মৃতিরোমন্থন ও উপন্যাসটাকে দিয়েছে অন্য মাত্রা। শব্দ ব্যবহারের ব্যাপারে লেখকের মুন্সীয়ানা অবিসংবাদিত।
তবে উপন্যাসটির শেষটা এত চমকপ্রদ! এমন শেষ আমি আশা করিনি, আর তাই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভাল��� লেগেছে আমার উপসংহারটুকুই।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই উপন্যাসটি পড়তে পেরে নিজেকে নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের অধিকারী মনে করছি।
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
361 reviews34 followers
August 6, 2021
বইঃ জাগরী
লেখকঃ সতীনাথ ভাদুড়ী
প্রকাশনীঃ কবি
প্রচ্ছদঃ সব্যসাচী হাজরা
পৃষ্ঠাঃ ১৮৬
মূল্যঃ ৩২৫ টাকা।

একজন প্রসিদ্ধ ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার সতীনাথ ভাদুড়ী, তিনি জন্মগ্রহণ করেন ২৭ অক্টোবর ১৯০৬ সালে পূর্ণিয়ায়। শিক্ষা-দীক্ষা এবং কর্মজীবনের শুরুটাও ওখানেই। ওকালতি ছিল তাঁর বৃত্তি, পরে কংগ্রেসের কর্মীরূপে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কয়েকবছর ভাগলপুর জেলে থাকেন।

আগস্ট আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত হয় "জাগরী" উপন্যাস। প্রকাশের সাথে সাথে আলোড়নের সৃষ্টি করে। এটি লেখকের প্রথম উপন্যাস। প্রকাশের পরেই পেয়েছিলো রবীন্দ্র পুরস্কার। চারটি মাত্র চরিত্র, তাদের একরাতের আত্মবিশ্লেষণ নিয়েই "জাগরী" ।

রাজনৈতিক আদর্শের এক পরিবার। যেখানে বাবা, মা আর দুই ভাই - বিলু ও নীলু ।

পূর্ণিয়ার জেলে আছে বিলু, তার ফাঁসির রায় হয়েছে। উপন্যাসের শুরুটা এখান থেকেই তবে কাহিনি র শুরুটা আরও আগে থেকেই।
ফাঁসির আগের রাত্রে বিলুর মৃত্যু চিন্তার থেকে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে পূর্বের স্মৃতি এবং এই রাত্রে মশারির নিচে একটু সুন্দর ঘুম দিতে। তবে এই সব ছাড়াও বিছিন্ন এবং ছেড়া ছেঁড়া চিন্তা এসে ফাঁসির ভাবনাটাকে এলোমেলো করে দিচ্ছে। একই সাথে ভাবনায় আসছে ফাঁসির মূহুর্ত এবং তার ফাঁসির কাজে ব্যবহৃত হওয়া জিনিস গুলো।
সব কিছু ছাড়িয়ে নিজের মাঝে থেকে থেকে একটা ভাবনা শিহরণ দিচ্ছে বিলুকে যে-- তার আর মৃত্যু মাঝে ব্যবধান শুধু একটা দরজা।

অপর দিকে একই সেন্ট্রাল জেলের আলাদা সেলে আছেন বিলুর বাব মা। আর জেলের বাইয়ে অপেক্ষায় আছে ভাই নীলু।
নীলুও জেলে ছিলো তবে সে ছাড়া পেয়েছে এবং আশ্চর্যের ব্যাপার নীলুর স্বাক্ষী দেবার কারনে নিলুর আজ ফাঁসির আদেশ হয়েছে। একটি রাজনৈতিক পরিবার। রাজবন্দী সকলেই। আগষ্টের আন্দোলন আর রাজনৈতিক অবস্থাকে ভিত্তি করেই এই "জাগরী" উপন্যাস।

চারজন মানুষের দৃষ্টিকোন থেকে রাতটাকে তুলেধরেছেন লেখক। নিজেদের জায়গা থেকে আত্মোপলব্ধি এবং স্মৃতিচারন এবং একটা ত্রাস যা ক্ষণে ক্ষণে কাঁপিয়ে দিচ্ছে অন্তর।

সকলেই ভোরের অপেক্ষা তবে এই ভোর না আসার প্রার্থনাও মিশে আছে সকলের মনে।

এটা লেখকের প্রথম উপন্যাস!কি চমৎকার উপস্থাপনা। চারটি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একই কাহিনী বর্ণিত হচ্ছে চারভাবে। দারুণ লেগেছে ব্যাপারটা।
তাছাড়া বর্ণনার বাড়াবাড়ি নাই, নাই অহেতুক ঘটনার ঘনঘটা।
১৯৫০ সালে "জাগরী" রবীন্দ্র পুরস্কার পায়।
Profile Image for Shanto.
45 reviews15 followers
July 20, 2016
এই বইয়ে পাঁচতারা না দেয়া অন্যায়। তারপরেও একটা তারা কেটে নিলাম মাঝে বেশ কিছুক্ষণ মনযোগ হারিয়েছিলাম এই অভিযোগে। এই অভিযোগের দায় পাঠক হিসেবে আমিও হয়ত নিতে পারতাম কিন্তু আপাতত এই দায়টা লেখকের ঘাড়েই চাপিয়ে দিলাম। টানটান উত্তেজনা নিয়ে পড়ার মতো বই এটি নয়। অন্তত আমার কাছে তা মনে হয় নি। একটা রাতের একটা মাত্র ঘটতেও পারে এমন ঘটনা নিয়ে চারজন মানুষের নিজের সাথে কথোপকথন নিয়েও একটা মাস্টারপিস হতে পারে সতীনাথের জাগরী তাই জানিয়ে গেল। আরেকটু সময়ের দূরত্ব তৈরি হলে এই বই নিয়ে কখনও সময় করে বড় করে রিভিউ লিখব এটা নিজেকে প্রতশ্রুতি দিয়ে আপাতত সদ্য পাঠের মুগ্ধতা জানিয়ে বিদেয় হই।
Profile Image for Anirban Nanda.
Author 7 books40 followers
April 18, 2016
(Read it in original Bengali.)
This book is my introduction to Bengali modernist novels. First published in 1946, it’s a commendable effort from the writer to write a difficult novel, such as this, in breathless stream of consciousness narrative.

The complete book is divided into four parts and spans only few hours. The family (father, mother and two brothers, Nilu and Bilu) was engaged in Indian politics, the Congress i.e. Gandhiji’s Quit India Movement. For this reason Bilu and his parents were arrested. Bilu was sentenced to death for sabotaging government assets. Nilu gave the witness against his elder brother, thus betraying with his family, solely for his own political ideals.

Hence just few hours before the hanging, each character’s thought process is depicted with scientific precession (thus four chapters for four characters).

Name of the chapters:
1. Cell for Death sentenced- Bilu.
2. First Division Cell- Father
3. Women’s cell- Mother
4. Jail Gate- Nilu

The fractured narrative, trailing off to old memories and coming back to current state several times within even a small paragraph has reminded me of Woolf’s To the Lighthouse. But, I don’t want to compare the quality or techniques of these two books, for both are different and have their unique essences (Actually, I have found this one a lot more enjoyable and relatable, perhaps because it is written in my mother tongue).

Lastly, I want to say this that SOC in Bengali seemed natural to me than in English and without this book, I would never have known that Bengali, at times can sound so sweet and ear-pleasing upon employing SOC narrative.

To give you a small glimpse of the narrative, I am translating a part from chapter 3.

Everyone is sitting around me silently in the dark ─now if even a needle drops, the sound can be heard. Only the hand-fan is making a continuous vibration… A beetle is flying. Sounding whirr, whirr…! It drops down with a ‘thak’. It rises again, flies, again bangs onto something and drops. Haven’t flown till now, not yet; still not yet. Now when it’ll fly, I’ll count one, two, three till ten. If it drops down before I count to ten, every way of saving Bilu will become impossible. And if I can complete my count before the insect drops, then I am sure, God will somehow save my Bilu. Have to count quickly; as quickly as possible for me. It flies now ─one, two, three, four, five, six, seven─ damn! It has dropped down. What have you done O Almighty!


Profile Image for Jahid Hasan.
135 reviews160 followers
September 5, 2018
গল্পটা শুরু করা যাক ভাগলপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে। দেখা যাচ্ছে জেলের একজন রাজবন্দী রাত জেগে কি যেন লিখছেন। লিখছেন মুখ গুঁজে, লিখছেন অনবরত।
এই রাজবন্দী অবশ্য বরাবরই অন্য সবার থেকে খানিকটা ব্যতিক্রম। এইতো কিছুদিন আগেই তিনি জেল সুপারিন্টেনডেন্টের কাছে গিয়ে বললেন তাকে যেন 'টি সেলে' পাঠানো হয়।
শুনে সুপারিন্টেনডেন্ট যারপরনাই অবাক। টি সেলে কেউ স্বেচ্ছায় যেতে চায়! সেখানে তো কেবল ভয়ানক অপরাধীদের রাখা হয়। ঘুপচি মতো ছোট্ট একফালি ঘর। তার ওপর একা একা থাকা। আলো বাতাস নেই বললেই চলে। সেখানে সে কেন যেতে চাইছে?
সুপারিন্টেনডেন্ট জিজ্ঞেস করতেই রাজবন্দী উত্তর করলেন, 'একা থাকলে লেখাপড়ার কাজটা ভালো হয়।'
সুপারিন্টেনডেন্ট বললেন, 'বেশ, ব্যবস্থা করছি তাহলে।'
ব্যবস্থা করা হলো। এবং সেই টি সেলের ঠান্ডা মেঝেতেই ঘাড় গুঁজে একটা রুল টানা খাতায় লেড পেন্সিলে নিজের জীবনের প্রথম উপন্যাসখানি লিখতে শুরু করলেন জেলের সেই রাজবন্দী সতীনাথ ভাদুড়ী।

উপন্যাসের নাম-- জাগরী।

সময়টা ১৯৪২। তখন গোটা ভারতবর্ষ গাঁধীজির ভারত ছাড় আন্দোলনে মুহুর্মুহু কাঁপছে ঠিক সে সময়ই '৪২ এর আগস্ট আন্দোলনের পটভূমিকায় লেখক সতীনাথ ভাদুড়ী রচনা করলেন জাগরী। এমন এক উপন্যাস যা প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লেখক পেলেন রবীন্দ্র পুরষ্কার।
অথচ তখনও সতীনাথ এক অজ্ঞাত নাম। লেখকের অন্য কোন লেখা তো দূর, তার নামের সাথেও কারও পরিচয় নেই।
কী এমন আছে তাহলে জাগরীতে?
আছে আশৈশব অতীত থেকে মানুষের সুচতুর ভবিষ্যতের দিকে যাওয়া।

জাগরী উপন্যাসটি গল্পের প্রধান চার চরিত্রের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে বলা হচ্ছে। তবে মজার ব্যাপার হলো, কথক বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে গল্পের ভাষা, চরিত্রের আচরণ এমনকি চিন্তা-ভাবনা। যেন প্রকৃতই প্রত্যেক চরিত্রের সাইকোলজি জানেন লেখক।
সতীনাথ ভাদুড়ী নিজে আইন নিয়ে পড়াশুনা করেছেন। পাটনা ল' কলেজ থেকে আইন পাশ করেছিলেন তিনি। তবে ঐ আইন পড়ার চাইতেও বোধ হয় তাঁর পছন্দের মূল রসদ তিনি পেয়েছিলেন আদালতের বার লাইব্রেরীতে। ঘন্টার পর ঘন্টা ডুবে থাকতেন লাইব্রেরীর বইয়ের স্তুপে। ক্রমাগত পড়ে যেতেন একের পর এক কেস হিস্ট্রি।
এক জায়গায় তো নিজেই লিখলেন, "বার লাইব্রেরী হচ্ছে জেলার ব্রেন-ট্রাস্ট। কী ছাই ইতিহাসের বই পড়ে লোকে! এখানকার বুদ্ধিদীপ্ত মিঠেকড়া মন্তব্যগুলো দেশের অলিখিত ইতিহাস। আসল ইতিহাস। এরা প্রত্যহ মুখে মুখে ইতিহাসের ডিকটেশন দিয়ে যাচ্ছে।"
তাই বোঝা যায় আইনের ফাঁক-ফোকড় আর দুর্বলতা সম্পর্কে ভালই ওয়াক���বহাল ছিলেন তিনি। কতকটা সে কারণেই হয়ত জাগরীর পাতায় পাতায় আইনের ডিটেলিং-এ কোন প্রকার ছাড় দেননি লেখক।
ঝরঝরে ভাষায় এমন সহজবোধ্য উপন্যাস, যে এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও পুনর্বার এর প্রকাশকালটা দেখে নিতে হয়-- সত্যি ১৯৪৫ এর অক্টোবরে এর আত্মপ্রকাশ? সত্যি তো?
Profile Image for Abu khan.
51 reviews6 followers
January 7, 2019
১৯৪৫-৪৬ সালে প্রকাশিত জাগরী সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম উপন্যাস যা তৎকালীন সমাজে ব্যাপক সাড়া জাগানো উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত। ১৯৪২ সালের অগাস্ট আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা উপন্যাস রচনাকালীন লেখক কংগ্রেসপন্থী ছিলেন বলে জানা যায়, উপন্যাসেও সে ছাপ পড়েছে স্পষ্টভাবেই। তাই রাজনৈতিক মতাদর্শ ছাপিয়ে পারিবারিক ভিত্তিমূলে আঘাত হানে দ্বিমুখী দুই দলের সমর্থক আপন দুই ভাই। শেষে পর্যন্ত কংগ্রেসপন্থী বিলুর কাছে হেরে যায় ছোট ভাই নীলু। একদিকে পিতার যোগ্য উত্তরসূরি বিলু সমাজে প্রচলিত ভদ্র নম্র ছেলেদের যোগ্য উদাহরণ, অন্যদিকে বিলুর বিরুদ্ধে ন্যায় সাক্ষ্য দিয়েও ভিলেন বনে যায় নীলু। কংগ্রেসের রাজনীতিকে অপরিহার্য ঘোষণা করে নীলুকে দিকভ্রান্ত-বিভ্রান্ত বলা লেখক স্পস্ততই পক্ষপাতিত্ব করেছেন বলে অভিযোগ তুললে তা বোধহয় ভুল হবেনা। তবে উপন্যাসে নিরপরাধ দেশপ্রেমিক বিলুর ফাঁসির আদেশ এবং একে ঘিরে যে বেদনাদায়ক এবং সহানুভূতিশীল আবহ লেখক তৈরি করেছেন তা এক কথায় অতুলনীয়।
Profile Image for Shuvongkar Shitu.
44 reviews17 followers
February 21, 2021
জেলে থাকা মানুষদের কেমন অনুভূতি হয়? যারা বাইরে থেকে তাদেরকে দেখেন তাদের কেমন অনুভূতি হয়? ফাঁসির আসামীর কী মনে হয় শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত? অনুভূতিগুলো এতোটা গভীরে যাওয়া সম্ভব? এতটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যবচ্ছেদ করা সম্ভব? অনেক প্রশ্ন, অনেক অনেক প্রশ্ন...
Profile Image for Nabil Muhtasim.
Author 23 books275 followers
August 9, 2018
সাড়ে চার স্টার হবে আসলে। চমৎকার উপন্যাস।
Profile Image for Zauad Mahmud.
37 reviews7 followers
October 6, 2025
সতীনাথ ভাদুড়ির গল্প বলার ধরণে একটা ভিন্ন ব্যাপার আছে। প্যাটার্ন অনেকটা কেস স্টাডির মতো। খুব বিশ্লেষণ করে লেখা হয়েছে যেন প্রতিটা তথ্য। উপন্যাসের শুরুটা বেশ ইন্টারেস্টিং। একই ঘটনাকে চারজন ব্যক্তির স্বগতোক্তি দিয়ে সাজান পুরো উপন্যাস। ভাষার ব্যবহার প্রাঞ্জল, যেটা আমি আশা করছিলাম না। সব মিলিয়ে ইন্টারেস্টিং এক্সপেরিমেন্ট বলতে হয়।
Profile Image for Imtiaz Emu.
60 reviews33 followers
March 27, 2019
১৯৪২ সালে আগস্টে আন্দোলনে পূর্ণিয়ার জেলে বন্দী থাকা অবস্থায় ট্রায়াল সেলে বসে যে উপন্যাস সতীনাথ রচনা করেছেন, তা তার ব্যাক্তিগত জীবনের বহু ঘটনা, বহু চরিত্র, পূর্ণিয়ার রাজনৈতিক সামাজিক পরিবেশ ও মানুষ, জেলের বিচিত্র ঘটনা, বন্দীদের বিচিত্র মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।
একটি রাজনীতি সচেতন পরিবারের কাহিনী "জাগরী"। ভারতের স্বাধীনতাকামী মানুষের মনের একমুখী ভাবনার সুত্রে গাঁথা একটি পরিবারবিধৃত জীবনের ইতিহাসকে লেখক আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
'জাগরী' অর্থ জাগরণকারী। একটি পরিবারের চারজনের জীবনের আদ্যেপান্ত নয়, বরং একটি পরিবারের চার সদস্যের বিচ্ছিন্নভাবে বিনিদ্র রজনী যাপনের কাহিনী 'জাগরী'। দিনের শেষ আলোটুকু জেলের গাছপালার আড়াল হতেই চরিত্রগুলোর আত্মচারণ শুরু হয়েছে এবং নীলু বাদে প্রত্যেকের আত্মকথন শেষ হয়েছে একটি মোটরগাড়ির হর্ণের শব্দে, জেলের গেট খুলে যাওয়ার শব্দে ও ভারি বুটের আওয়াজে। এইরকম গল্পের গাঁথুনি আর প্রবাহ আমার কাছে প্রথম। একমাত্র নীলুই অপেক্ষা করেছে - পেয়েছে আনন্দ। মূলত নীলুকে আপনি আপাতদৃষ্টিতে গল্পের ভিলেনের চরিত্রে দেখলেও সে তার অাত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেয়েছে, ছেড়েছে স্বস্তির নিঃশ্বাস।
পুরো উপন্যাসে একটা বিষয় ইন্টারেস্টিং। নীলু শুধু চলিত ভাষায় কথা বলেছে। বাকি তিনজনই সাধু ভাষায়। এই উপন্যাস কোন রাজনৈতিক উপন্যাস নয়। এটা একটা পরিবারের খন্ডচিত্র, যা পরিবারের বৃত্তে এসে মিশে আলোকিত করেছে পুরো ভারতবর্ষকে।
Profile Image for Enamul Reza.
Author 5 books174 followers
January 4, 2017
থাকেনা এমন বই, পড়লেন আর কিছু বিষয় আপনাকে একেবারে নাড়িয়ে দিয়ে গেল? জাগরী পড়তে পড়তে সবচে' বড় যে বিষয় মগজের আয়নায় ধরা পড়েছে: চরিত্রগুলোর আত্মদন্দ্ব; প্রতিটা চরিত্রের মনস্তত্ত্ব এমন আশ্চর্য উত্থান-পতনে ভরপুর, এমন তাদের চিন্তাভাবনা বাঁক বদলায়, অবাক লাগে। যেন লেখক ঢুকে পড়েন আমাদের মনে, আমরা নিজে নিজে কথা বলি যেমন কাউকে না শুনিয়ে, একান্ত নিজের সাথে--জাগরী হচ্ছে সেই বিচিত্র মনোলগ।
Profile Image for Nadia Jasmine.
213 reviews18 followers
February 28, 2025
‘জাগরী’ এর শেষটা পড়ে কুপোকাত অবস্থা। একটুও আশা করি নাই এমন কিছু ঘটবে 😋

ধরেই নিয়েছিলাম যে যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এমন সমাপ্তির সম্ভাবনা নেই।

সতীনাথ নির্মোহ কলমে উত্তম পুরুষে যা বলেছেন, তাও চারটি চরিত্রের জবানীতে, তা পড়লে মনে হয় চারটি জীবনই তাঁর। আর এতো খাঁটি লেখা পড়লে অনেক লেখককেই দূর ছাই করতে মন চায়। কারন, সতীনাথ একবারও আপনাকে তিনি কতো দারুন লিখেন, তা বোঝাতে চান না। আপনি শুধু পড়তে পড়তে বুঝতে পারেন তাঁর জগতে প্রবেশের অধিকারটাই এক বিশাল প্রাপ্তি। আর সেটা যে খুব রূপকথার রাজ‍্য এমন না, বরং, এমন এক বাস্তবতা, যাতে তিনি লিখেছেন বলেই আপনি সেটার অংশ হয়েছেন। আর কোন উপায় নেই সেই জগতে ঢোকার, যদি আপনি তাঁর বই না পড়েন।

শেষটা এ কথাও মাথায় আনে যে, সিস্টেম আসলে নির্ধারণ করতে পারে চাইলে যে আপনি ভিলেন হবেন কিনা। আপনি ভিলেন নাও হতে পারেন, যদি ক্ষতিটাই না হয়। কিন্তু, আপনার কাজের জন‍্য যদি পরে কারোর ক্ষতিই হয়, তাহলে আপনি সরাসরি যুক্ত না থাকলেও ভিলেন হবেন।

রাজনীতির আসলে শুদ্ধতম রূপ নাই সম্ভবত। শেষমেশ কি হল, তাই জরুরী। যা হয়, তা রক্ষা করতে না পারলে আপনি ভিলেন হবেন। কোন সন্দেহ নাই তাতে। ব‍্যর্থ মানেই আদর্শসহ মাটির সাথে মিশে যেতে হয়। এটাই এই নিষ্ঠুর খেলার নিয়ম।
Profile Image for Raka.
116 reviews35 followers
November 10, 2016
It was an incredible read. I am surprised I never read any of his writings before. Highly recommended for anyone who likes reading jail fictions :)
Profile Image for Shoumik Debnath.
8 reviews5 followers
April 26, 2022
কিছু কিছু বই আছে যেগুলা পড়লে একটা ঘরের মধ্যে চলে যেতে হয়, এটা নিঃসন্দেহে তেমনই একটা বই।
বইটা শুরু হয় একজন ফাঁসির আসামির জবানে। ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় নাম না জানা যেসব বিপ্লবীদের রাজদ্রোহে ধরে নিয়ে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল সেরকময়ই একজন।ফাঁসির আগের রাতে একজন আসামির নিজের সাথে কথোপকথন, কষ্ট, রাগ,দ্বেষ, সুখেনুভূতি, মৃত্যুভয়, আপনজনকে দেখার জন্য ব্যাকুলতা, মুক্তির আকুলতা সবই এতো অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে পড়তে পড়তে ঘরের মধ্যে চলে যেতেই হয়।
উপন্যাসটির একটি অনন্য দিক হলো এখানে শুধু protagonist এর জবানেই নয় তার সাথে আর যাদের জীবন জড়িত, তার পরিবারের বাবা,মা,ভাই সবার জবানে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে একটা ফাঁসি ফুটে উঠেছে। উপন্যাসটি পড়ার সময় কখনো একজন পিতার চোখে, কখনো একজন মায়ের চোখে, কখনো বা একজন ভাইয়ের চোখে ঘটনাক্রম দেখেছি।
বইটি আসলে সবার জন্য না। শুরুতে অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। তবে একবার গল্পে ঢুকে যেতে পারলে রস আস্বাদন নিশ্চিত।
সেই বইমেলায় কিনে জমিয়ে রেখেছিলাম। আজ অবশেষে এরকম একটা মাস্টারপিস পড়ার সুযোগ হলো। ঘোর কাটার আগে তাড়াহুড়া করে ছোট্ট একটা রিভিউ রেখে দিই।
Profile Image for Yasin Akib .
60 reviews4 followers
March 22, 2021
নতুন উপায়ে লিখা একটা উপন্যাস। আমি কোথাও চমকাই নি শুধু এটা বলব। কিন্তু লিখার ধরন টা তো ভাল। না স্বীকার করে উপায় নেই। তখনকার সাড়া জাগানো উপন্যাস এখনও আপনার মনে সাড়া জাগাবে এমন আশা না করাই ভালো। সহজ মনে পড়তে বসুন। খারাপ লাগবে না।
Displaying 1 - 30 of 51 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.