Jump to ratings and reviews
Rate this book

দক্ষিণায়নের দিন

Rate this book
সময় বিমূর্ত, প্রবহমান। বির্মূত সময়ের বস্তুগত চেহারা প্রতিবিম্বিত হয় কেবল ব্যক্তি-মানুষের ভেতর দিয়েই। ব্যক্তির ওপর দিয়েই সময় বয়ে যায়। অনুকূল বা প্রতিকূল সব রকম পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করে ব্যক্তি-মানুষ জীবনযাপন করে। সময়ের চাপে বা তাপে ব্যক্তি-মানুষের ক্ষয়, বিকাশ বা বিনাশ ঘটে। সময়ের প্রবহমানতায় ব্যক্তির বিশ্বাস, মূল্যবোধ, চিন্তা-চেতনারও রূপান্তর হয়। ব্যক্তির বদলে যাওয়া এই স্বরূপের মধ্যে আমরা সময়ের বস্তুগত চেহারার বিচিত্র মুখশ্রী অবলোকন করতে পারি। ষাটের দশকে, বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত মানসের আর্থসামাজিক, রাজনীতির স্বপ্নময় আকাক্সক্ষা ও আশাভঙ্গের বেদনা, যাতনা নিয়ে রচিত হয়েছে শওকত আলীর সুবৃহৎ উপন্যাস দক্ষিণায়নের দিন (১৯৮৫) কুলায় কালস্রোত (১৯৮৬) এবং পুর্বরাত্রি পূর্বদিন (১৯৮৬)। শকত আলীর শিল্পসত্তার মৌলিক প্রবণতা হচ্ছে ইতিহাস ও সময়নিষ্ঠতা। সময়ের প্রবহমান অভিঘাতে ব্যক্তি-মানুষ কীভাবে পর্যুদুস্ত হয, সমাজ ও রাজনীতির দ্বন্দ্বময় সংঘাতে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে, তারই স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে শওকত আলীর উপন্যাস ত্রয়ী বা ট্রিলজি।

320 pages, Hardcover

First published February 1, 2010

12 people are currently reading
172 people want to read

About the author

Shawkat Ali

44 books65 followers
Shawkat Ali (Bangla: শওকত আলী) is a major contemporary writer of Bangladesh, and has been contributing to Bangla fiction for the last four decades. Both in novels and short stories he has established his place with much glory. His fiction touches every sphere of life of mass people of Bangladesh. He prefers to deal with history, specially the liberation war in 1971. He was honored with Bangla Academy Award in 1968 and Ekushey Padak in 1990.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
15 (22%)
4 stars
27 (39%)
3 stars
22 (32%)
2 stars
3 (4%)
1 star
1 (1%)
Displaying 1 - 25 of 25 reviews
Profile Image for Harun Ahmed.
1,662 reviews420 followers
November 29, 2025
দুর্দান্ত!

এই উপন্যাসত্রয়ীতে মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী বাংলাদেশ তার সমগ্র রূপ নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রথম পর্বের নাম "দক্ষিণায়নের দিন", শুরুটা বেশ সাদামাটা। ঢাকার এক মধ্যবিত্ত পরিবার এবং এর সদস্যদের প্রতিদিনের জীবন ঘিরে আবর্তিত হয়েছে গল্প। পরিবারের কর্তা রাশেদ সাহেব নিপাট ভালোমানুষ। বড়ছেলে মনি বিপ্লবী ও মৃত, বড়মেয়ে বুলু সরল, ওর স্বামী হাসান জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যে কোনো কিছু করতে রাজি, ছোটমেয়ে রাখী উদ্দেশ্যহীন। এই একটি পরিবারের হাত ধরেই শওকত আলী শিল্পায়ন ও নগরায়নের চাপে পারিবারিক মূল্যবোধ- নৈতিকতা কীভাবে ভেঙে পড়ছে তা দেখিয়েছেন। ব্যক্তিজীবন থেকে পরের দুই পর্ব "কুলায় কালস্রোত" ও "পূর্বরাত্রি পূর্বদিন" -এ লেখক প্রবেশ করেছেন জাতীয় জীবনে।  কুলা অর্থ পাখির বাসা। পাখির বাসা যেমন ঝড় ঝঞ্ঝায় সহজেই ভেঙে পড়ে, বিপন্ন হয়ে যায় পাখিদের জীবন তেমনি কালস্রোতে রাখীর পরিবারেরও ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। রাখী পলায়নপর,আত্মপর এক সাধারণ মানুষ। কিন্তু রাষ্ট্রীয় জীবনের তুমুল অভিঘাত তার পক্ষে কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।উপন্যাসের নায়ক বলা যায় বিপ্লবী সেজানকে। কিন্তু রাখী-ই লেখকের মুখপাত্র।মেয়েদের কলেজের শিক্ষক হিসেবে রাখী ঠাকুরগাঁও যায়। সেখানকার ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ দেয়, বাংলাদেশ এখনো সেই অবস্থা থেকে বেশিদূর এগোয়নি। চূড়ান্ত পর্ব উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান। রাখী পালাতে চায়। ঠাকুরগাঁও যাওয়ার সময় বান্ধবী সুমিতা ওকে বলে "ফিরে আসবার চেষ্টা করিস।" কিন্তু ওর ফেরার জায়গা নেই বলতে সুমিতা তাকে বলে, " এই জটিলতা সাময়িক, নিজের মনকে খুঁজে দেখিস - তুই ফিরে আসবার পথ খুঁজে পাবি।"

মানুষ সময়ের সন্তান, সময়কে উপেক্ষা করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই রাখীকেও পথ খুঁজে পেতে হয়, যেমন পেতে হয়েছিলো বাংলাদেশকে। রাখীর সমান্তরালে লেখক উপস্থাপন করেছেন পুরো দেশকে। একান্ত ব্যক্তিগত হয়ে গেছে "সার্বজনীন।" লেখকরা এভাবেই সময়কে ধারণ করে তা অতিক্রম করে যান। রাখী যেমন পদে পদে ভুল করে একটা সময় লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হয়, ঠিক তেমনি প্রস্তুত হয়েছিলো একটি জাতি, নতুন এক আরম্ভের জন্য।
Profile Image for Shuhan Rizwan.
Author 7 books1,108 followers
March 16, 2020
সবকিছু বিক্ষিপ্ত বোধ হতে থাকলে ক্লাসিকের কাছে ফিরে যেতে হয়।

দক্ষিণায়নের দিন, কুলায় কালস্রোত, পূর্বরাত্রি পূর্বদিন- শওকত আলীর ত্রয়ী এই উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছিলো সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার তিন বছরের (১৯৭৬, ৭৭’, ৭৮’) ঈদ সংখ্যায়। বই আকারে প্রকাশ পায় তারও একদশক পরে প্রায়। গুগল জ্যাঠা আপাতত জানাচ্ছেন যে সমরেশ মজুমদারের অনিমেষ ট্রিলোজি তার পরের কাজ। তুলনাটা টানা এ কারণেই যে শওকত আলীর এই ট্রিলোজি পড়ে মনে পড়ে যাচ্ছিলো সমরেশের সেই বিখ্যাত-তর কাজটিকেই। একটি পরিবার, রাজনীতির একটি উথালপাতাল সময়, কেন্দ্রে একজন মানুষ; সমরেশের ক্ষেত্রে অনিমেষ, শওকত আলীর ক্ষেত্রে রোকেয়া রাখী। পার্থক্য হচ্ছে আকারে, শওকত আলীর তিনটি উপন্যাস একত্র করলে তবে সেটা আকারে সমরেশের একটার মতো আকার পায়।

তবে মাথা থেকে ওই আঁতলামি সরিয়ে রেখে যখন সত্যি কেউ করতে চায় উপন্যাসের সাথে যাত্রা, ত্রয়ী এই উপন্যাস টানা পড়ে গেলে সে তখন ভারাক্রান্ত হয় অনুভূতিতে। অনুভূতিটা ক্যামন, পাঠক তা ব্যাখ্যা করতে পারে না কোনোভাবেই; কিন্তু সে জানে আগেও অনেকবার এমন সে বোধ করেছে বইয়ের পাতা ওলটানো শেষ করে, এবং তার এই অনুভূতি আগেও অগণিত বার অজস্র পাঠকের ঘাড়ে চেপেছে ধ্রুপদী কোনো উপন্যাস পাঠের পর।

জীবনের কোনো দর্শন নিখুঁতভাবে ধারণ করলেই কোনো উপন্যাস ধ্রুপদী হয়ে ওঠে হয়তো, আমি ঠিক জানি না। কিন্তু, অনুভব করি, কোনো উপন্যাস ধ্রুপদী হয়ে ওঠে তখন, যখন সেটা পড়ার পরে জীবনকে আর পূর্বের দর্শনে দেখা যায় না কিছুতেই।

শওকত আলীকে সশ্রদ্ধ প্রণাম।
Profile Image for Md Shariful Islam.
258 reviews84 followers
August 21, 2021
স্বাধীনতার স্বল্পকাল পরেই স্বাধীনতা-পূর্ব অস্থির সময়ের চিত্র তুলে ধরতে ‘ দক্ষিণায়নের দিন’ নামে একটা ট্রিলজি লেখেন লেখক। এটা সেই সিরিজের প্রথম পর্ব। এখানে উঠে এসেছে সদ্য পড়াশোনা সমাপ্ত করা অস্থিরমতি রাখীর জীবনের নানা দিকের কথা। আরও বিস্তারিতভাবে বললে রাখীর পরিবারের কথা ; তার মৃত ভাই, বোন বুলু ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী দুলাভাই হাসানের কথা, অতীত আঁকড়ে থাকা বাবা রাশেদ সাহেবের কথা আর রাখীর তিন প্রণয় প্রার্থী জামান, সেজান ও মাজহারের কথা। সাথে সেই সময়ের বামপন্থী রাজনীতিও উঠে এসেছে একটু একটু করে।

অস্থিরমতি, সর্বদা দোদুল্যমান রাখীকে আমার বেশ লেগেছে, আমিও ওর মতোই বলে বোধহয়! চাকরীর প্রশ্নে, সঙ্গীর প্রশ্নে, জীবনের প্রশ্নে রাখীর যে দোদুল্যমানতা সেটা আমার মধ্যেও খুব বেশি পরিমাণে আছে। ‘ পড়াশোনা তো শেষ, এবার কি?’ এই প্রশ্নটা যে চিরকালীন সেটার আরেকবার প্রমাণ পেলাম। রাশেদ সাহেবের মতো আদর্শবাদী বলেই হয়তো উচ্চাকাঙ্ক্ষী হাসানকে পছন্দ হয় নি যে জীবনকে উপভোগ্য করতে যেকোনো পথ বেছে নিতে রাজী। রাশেদ সাহেব আর সালমার বিয়ের ঘটনা চমৎকার লেগেছে। বুলুর নিঃসঙ্গতা, কাছের মানুষকে পর হতে দেখার বিষয়টা খুব কষ্টদায়ক। তবে বইটা শেষ হয়েছে অনেক প্রশ্ন সামনে রেখে। যেসবের উত্তর জানতে ট্রিলজির পরের দুই পর্ব পড়তে হবে শীঘ্রই।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews238 followers
August 26, 2020
পড়াশোনার পাট সবে চুকিয়েছে রাখী। যেখানেই যায়, যার সাথেই দেখা হয়, সবার এক কথা, এক প্রশ্ন.. 'এবারে কী করবে?'

আসলেই তো এবারে রাখী কী করবে? বিচিত্র এই সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে সে। মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনকে তার অনেক কিছু দেয়ার আছে, করার আছে অনেক কিছু। আবার একেক সময় মনে হয়, 'নাহ! আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। কোন দায় নেই, দায়িত্ব নেই-কেমন পাগল পাগল খাপছাড়া সব।' চিন্তা করতে থাকে রাখী। পড়া তো শেষ হলো, একটা চাকরি খুঁজে নেবে নাকি আর সবাই যেমন করে.. খুঁজেপেতে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করে ফেলবে? আবার সেই সিদ্ধান্তহীনতা। চাকরি নেয় রাখী কিন্তু চারপাশের নানান জটিলতায় ভালো লাগে না তার। তাকিয়ে দেখে আশেপাশে রয়েছে তার রূপ এবং গুণমুগ্ধ পুরুষেরা। এবারে কি তবে বিয়ে করে থিতু হওয়া? আর এটাই কী তাহলে জীবন? জন্ম-পড়াশোনা করা-চাকুরি-বিয়ে-সন্তান-মৃত্যু, ব্যস? একটা জীবন এভাবেই শেষ হয়ে যাবে?

রাখীর জীবনের এতো সব প্রশ্ন আর পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে শওকত আলীর বিখ্যাত ট্রিলজির প্রথম পর্ব দক্ষিণায়নের দিন। অবশ্য এ প্রশ্ন শুধু রাখীর না, সদ্য পাশ করা প্রায় সব বিভ্রান্ত তরুণ-তরুনীদের :/ জানি না সেই ষাটের দশকে বিসিএসের এরকম ঝোঁক ছিল কি না। রাখী এই যুগে হলে আমি এক শ পার্সেন্ট নিশ্চিত পথেঘাটে মুরুব্বিরা দেখলেই 'এখন কি করবে?' প্রশ্ন না করে বলতো 'বিসিএস দিচ্ছো তো? বিসিএস দাও ওটাই জীবনের আসল লক্ষ্য'😤 আর রাখীও তখন অংক আর সাধারণ জ্ঞান বই সামনে নিয়ে চিন্তা করতে থাকতো, 'এই কী জীবন? এর জন্যই কি তবে এতো কিছু? মানুষের সুখ তবে কোথায়?'

সুখ বড় বিচিত্র জিনিসরে ভাই! সুখ ব্যাপারটাই আপেক্ষিক��� এক জন যেভাবে সুখী হবে, অন্যে তাতে হবে না। আর সেই সুখকেই সারাটাজীবন হন্য হয়ে খুঁজে গেলো রাখী। লেখাপড়া শেখাটাকে যদি জীবনের একটা অধ্যায় হ��সেবে বিবেচনা করি, দ্বিতীয় অধ্যায় নিশ্চিতভাবেই হবে তার প্রয়োগ। অর্থাৎ, একঘেয়ে চাকরি কিংবা ঘ্যাটঘ্যাটে সংসার জীবন। রাখীর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় নিয়ে লেখা ট্রিলজির দ্বিতীয় পর্ব 'কুলায় কালস্রোত'। আর রাখীর জীবনের উল্লেখযোগ্য কিছু সময় নিয়ে লেখা হয়েছে ট্রিলজির শেষ পর্ব 'পূর্বরাত্রি পুর্বদিন'। রাখীর জীবনের উত্থানপতনের সাথে পুরোটা বইয়ে জড়িয়ে ছিল রাজনীতি। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ-এ সবের প্রস্তুতি কাল ছিলো ষাটের দশক। এই উত্তাল সময়ে আপাতদৃষ্টিতে এক বিভ্রান্ত তরুণী, তার পরিবার-পরিচিত জন, পারিপার্শ্ব, রাজনীতি, দ্বন্দ্ব সবকিছু নিয়ে লেখা এই ট্রিলজি 'দক্ষিণায়নের দিন'।

বি.দ্র. প্রথম দুইটা পর্ব একটু বোরিং লেগেছে 😤 ভেবেছিলাম শেষ করতে পারব না। পরে তৃতীয় পর্ব পর্যন্ত পড়ে আর খারাপ লাগে নাই।
এই বিখ্যাত বই পড়ার শখ ছিলো বহুদিনের। দক্ষিণায়নের দিন ডাওনলোড করে গোরুখোঁজা খুঁজেও অন্য দুইটার পিডেফ পাইনি দেখে মনের দুক্ষে দক্ষিণায়নের দিন ওপেন করেই আমি হতবাক! ইয়া মাবুদ! আমার কি কপাল! তিন বই একসাথে? ভাগ্য বিশ্বাস হচ্ছিল না, আবার মাত্র ৩১৮ পেজে একটা ট্রিলজি-সেটাও বিশ্বাস হচ্ছিল না। পরে দেখি, নাহ! ঠিকই আছে। বই এতোটুকুই🐸 প্রথম দুইটা মোটামুটি লাগলেও শেষ পর্বটা বেশ লেগেছে।
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews306 followers
January 15, 2025
ষাট এর দশকের বাংলাদেশ, মানুষগুলো ডুবছে ত ডুবছেই। কখনো নিজের স্বার্থপরতায়, কখনো টাকার লোভে, কখনো বা ক্ষমকার, কখনো বা রাজনীতির আবর্তে। এ থেকে যেন উত্তরণ নেই।
আজ এই ২০২৫ -এ দাঁড়িয়েও কি আমরা একই হতাশায় ডুবছি না?
আলো কোথায়! উত্তরণ কোথায়! কোথায় সেই শান্তিময় জীবন!
Profile Image for DEHAN.
277 reviews81 followers
June 7, 2020
তিনটা উপন্যাস এক মলাটে !
তো কি হইছে কি ?
আসল কথা হলো ‘’প্রত্যাশা’’ । এই জগতে প্রত্যাশা খুব খুব খুব ই বাজে একটা জিনিস ।
আপনি প্রত্যাশা করলেই ধরা খাবেন । খাইতে বাধ্য । জীবন থেকে বলছি যার উপরেই প্রত্যাশা করেন না কেন সে হয় আপনার প্রত্যাশা থেকে ভালো কিছু করবে নাইলে মন্দ কিছু করবে কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু করবে না ।এখন প্রত্যাশা হইলো এমন একটা জিনিস যে এর চাইতে বেশি হলে বিরক্তি লাগে আর কম হইলে লাগে হতাশা। এতো কথা কেন বলতেছি ? আচ্ছা তাইলে ডায়রেক্ট বিষয়বস্তু তে আসি, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন চমৎকার একটা উপন্যাস ছিলো । দক্ষিণায়নের দিন শুরু করছিলাম ঐ চমৎকার লাগার ভরসা করেই, যে এটা হয়তো ওরকম ই কিছুই উন্নত মানের হবে । কিন্তু না ,খাইছি বিরাট ধরা ।
এম এ পাশ করার পর ইতিহাসের ছাত্রী মোসাম্মৎ রোকেয়া রাখী এই দেশের অনেক ছাত্রছাত্রীর মতোই চিন্তাজগতে কিছুক্ষণের জন্য কালবৈশাখী শুরু করে দেওয়া ঝাঁঝালো এবং বিকলাঙ্গ ‘’তা এবার কি করবে ?’’ প্রশ্নটির বারবার সম্মুখীন হয় । অনেক ভেবেচিন্তে সে তার দুলাভাইয়ের সুপারিশে একটি চাকুরী করতে শুরু করে আর নিজেকে বুঝায় যে এখন বিয়ে টিয়ে করে সংসার টংসার করা ফরাই যুক্তিসংগত কিন্তু ভেতর থেকে এই প্রশ্নও আসে যে তাহলে এতো পড়াশোনার সার্থকতা কোথায় থাকলো ! মেয়েমানুষের জন্ম কি এজন্যই হয়? ব্লা ব্লা ব্লা…… এদিকে আবার রাখীরে কনফিউজ করে দেওয়ার জন্য আশেপাশে প্রায় সব পুরুষ ই তার প্রেমে ট্রেমে পইড়া অস্থির ।
অফিসের বস , ভার্সিটির প্রফেসর , ভাইয়ের বন্ধু …… এ যেন কৃষণ চন্দরের এক লায়লা হাজার মজনুর বঙ্গদেশীয় ভার্শন ।
এই বস্তু পড়ার পর মনে হলো একটা মেয়ের জীবনে অনেক সমস্যা আছে কিন্তু সবচাইতে বড় সমস্যা হইলো আশেপাশে বেশ কয়েকজন যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের মধ্যে নিজের জন্য কেউকে বেছে নেওয়াটা ।
যাই হোক পুরাতন কথায় আসি । কোথায় ছিলাম যেন ? ও হ্যাঁ প্রত্যাশা । তা আমাদের গল্পের নায়িকাও প্রত্যাশা কইরা প্রমান সাইজের একটা ধরা খায় ঠিক যেমন আমি এই বস্তু পড়ে খেয়েছি । উপন্যাসের প্রত্যেকটা চরিত্র কোন না কোন কাজ করতেছে আর সমানে ধরা খাইতেছে । কেউ ভালোবেসে খাইতেছে , কেউ বিয়ে করে খাইতেছে , কেউ রাজনীতি করে খাইতেছে , কেউ ব্যবসা করে খাইতেছে , এমনকি এক গোবেচারা ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করতে এসেও খায়…
উপন্যাসের নাম দক্ষিণায়নের দিন না দিয়ে ‘’ ধরা খাওয়ার দিন ‘’ দিলে উপযুক্ত হইতো ।
Profile Image for Zarin Tasnim.
4 reviews23 followers
December 20, 2025
পড়তে গিয়ে অনেকবারই ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়েছি, কিছু কিছু জায়গায় মনে হয়েছে, জীবনকে এত জটিলভাবে না দেখালেই কি নয়! বহু বহুদিন পর কোনো বই পড়তে গিয়ে মনে হলো, একটা সূক্ষ্ম যন্ত্রণা অনুভূত হচ্ছে কোথায় যেন। তবু সব জটিলতা পাশ কাটিয়ে গিয়েছে অন্যরকম এক ভালো লাগা। বড় বেশি বাস্তব মনে হয়েছে সবকিছুকে। হয়তো বইয়ের পাতায় এত বেশি রূঢ় বাস্তবতা দেখতে অনভ্যস্ত এই মন তাতে আহত হয়েছে অনেক সময়েই। তবুও ভালো লাগা, কিংবা রাখীর প্রতি অদ্ভূত এক ভালোবাসা ফিঁকে হয়ে যায়নি। শেষ হওয়ার পর খুব বিষণ্ণ লাগছিল, এটাই হয়তো জীবন৷ সব শেষ তো আনন্দের হয় না! 
Profile Image for Rehan Farhad.
244 reviews12 followers
October 4, 2025
বর্ষার শেষ, শরৎ এসেছে বেশ কিছুদিন। হালকা সাদা মেঘ দেখা যাচ্ছে আকাশে। কামিনী ফুল ফুটতে শুরু করেছে। শিউলি গাছে অসংখ্য কুড়িতে দু-একদিনের মধ্যে ফুলের মহোৎসব দেখা যাবে। শরতের এই মুহূর্তে শুরু হয় ‘দক্ষিণায়নের দিন’। ‘দক্ষিণায়নের দিন’, ‘কুলায় কালস্রোত’ ও ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’ উপন্যাস তিনটি শওকত আলীর ত্রয়ী উপন্যাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শওকত আলী নিজ চোখে দেশভাগ দেখেছেন। কৈশোরে দেখা দেশভাগে মানুষের যন্ত্রণা ও এই বেদনার পিছনের রাজনীতি তার শিল্পীসত্তার মূখ্য উপাদান হয়ে উঠেছে। ‘দক্ষিণায়নের দিন’ ত্রয়ী উপন্যাসে লেখকের সেই বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রতি পাতায় দেখা মেলে। ষাটের দশকে শিক্ষিত বাঙালিরা বামরাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়তে থাকে। রাজনীতিতে বাম ধারার রাজনীতি দক্ষিণপন্থী হিসেবে পরিচিত। ‘দক্ষিণায়নের দিন’ উপন্যাসে বাংলাদেশের সত্তরের দশকের রাজনৈতিক চিত্র দৃশ্যমান হয়। এই সময় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিত যুবকেরা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। ‌’কুলায় কালস্রোত’ উপন্যাসে সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির চরম বিপর্যয় শুরু হয়। কুলায় কালস্রোত অর্থের মতই সবকিছু উল্টেপাল্টে,ভেঙেচুরে পড়তে থাকে। ত্রয়ী উপন্যাসের শেষ অংশ ‘পূর্বরাত্রি পূর্ব দিনে’ নতুন বাংলাদেশ, নতুন সময়ের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। 

‘রাখী, এবার কী করবে?’ এই প্রশ্নের অবতারণার সাথে সাথে ‘দক্ষিণায়নের দিন’ উপন্যাসের গল্প শুরু। আর এই প্রশ্নেই লুকিয়ে আছে আমাদের জীবনের সব সমস্যা-জটিলতা; যার কেন্দ্রবিন্দু রাখী। গল্প গড়ে উঠেছে তাকে ঘিরেই। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে রাখী পড়াশোনার পাট চুকিয়ে সামনের দিনগুলোতে কী করতে চায়? এই প্রশ্নের উত্তরের সাথে জুড়ে রয়েছে সত্তরের দশকের বাঙালি সমাজের ইতিহাস, তাদের জীবনের গতিধারা। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখীর মতো মেয়ের জীবনে কোনো প্রেমে আসে নি। পড়াশোনা পরবর্তী সময়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখী চাকুরী করতে যায়। পরে নিজ পছন্দে জামানকে বিয়ে করে নিজের মতো সংসার গোছানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু জামানের মতো নারীলিপ্সু ছেলের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়ে রাখী জীবনে প্রথমবারের মতো বড়সড় ভুল করে ফেলে। রাখীর এই ভুল কী নিজস্ব নাকি পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজালে বন্দী একজন নারীর অপরিপক্কতার ফল? পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায��� নারীর সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতাকে যেভাবে বেঁধে রাখা হয়, এখানে নারীদের প্রতিবাদকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়েছে রাখীর সামগ্রিক সিদ্ধান্ত ও চিন্তাভাবনার মাধ্যমে। রাখীর বাবা রাশেদ সাহেবের স্মৃতিচারণে আমরা দেখতে পাই কীভাবে ঢাকা শহরের মধ্যবিত্ত ক্ষয়িষ্ণু পরিবারগুলা ধুঁকছে। তারা চেষ্টা করছে নিজেদের সময়,জীবন,সন্তান সব বলি দিয়ে সমাজ ও বাস্তবতাকে পরিবর্তন করার কিন্তু দিন শেষে তাদের সব স্বপ্ন ডাস্টবিনের আবর্জনার মতো পঁচে যাচ্ছে। নাগরিক জীবনে রাশেদ সাহেবের মতো প্রবীণরা নিজেদের আর্দশ টিকিয়ে রাখতে গিয়ে ক্রমেই সমাজের একদম তলানিতে গিয়ে মাথা ঠুকে মরছেন। অন্যদিকে তরুণ সমাজের একাংশ পাকিস্তানপন্থীদের সাথে আপোষ করে রাতের আঁধারে ফুলেফেঁপে কলা গাছ হতে চায়। ‘দক্ষিণায়নের দিন’ পড়ার সময় তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি মাথায় না নিয়ে পড়লে এই বই আপনার পাঠক মনকে তৃপ্তি দেবে না, একঘেয়ে বর্ণনা মনে হতে পারে। এই ত্রয়ী উপন্যাসের মূল ভিত্তি এখানেই গড়ে উঠেছে। 

‘কুলায় কালস্রোত’ উপন্যাসে আমরা দেখি, ব্যক্তি রাখী ও বাঙালী সমাজের সত্তা একদম মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। আপনারা অবশ্যই জানেন আমাদের জীবনের বহির্বাস্তবতা(External Reality) এবং অন্তর্বাস্তবতা(Internal Reality) একে অন্যের পরিপূরক ও পরস্পর নির্ভরশীল। শওকত আলী কাহিনির পরতে পরতে বহির্বাস্তবতাকে প্রকাশ করেছেন অন্তর্বাস্তবতা দিয়ে। হৃদয়ভাঙ্গা রাখীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার(Internal) সঙ্গে ষাটের দশকের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের(External) সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাওয়ার একটি প্রতীকী মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এ বিষয়টি প্রকট হয় জামানের সাথে রাখীর বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে বিবেচনা করলে। একটু চিন্তা করলেই পাঠক বুঝতে পারবেন, ধর্মের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙ্গালীদের জীবন ছিল শোষণ নির্যাতনের। বাঙালি মুসলিমরা সেই বন্ধনকে অস্বীকার করতে পারতো না, আবার স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন ছাড়া বাঙালি জাতিসত্তাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না। পূর্বপাকিস্তানকে আপনি সহজেই রাখীর শিশুর সাথে তুলনায় আনতে পারেন; যে শিশু জন্মের আগেই, বিকশিত হবার পূর্বেই ঝরে যাওয়া ফুল। রাখীর জীবনকে চিত্রিত করতে গিয়ে শওকত আলী স্বাধীনতাপূর্ব উত্তাল সময়কেই মলাটবন্দী করেছেন। 

‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’ উপন্যাসের শুরু থেকেই দেখা যায়; নিজের ঘুণেধরা সংসার, জীর্ণ পরিবারকে ফেলে আসা রাখী নতুন জায়গায়, নতুনভাবে সমাজকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করছে। কলেজ ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক উন্মেষ ঘটনোর প্রচেষ্টায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় আমাদের মফস্বলি, ধর্মীয় লেবাসধারী মহল। যাদের ধর্মের আড়ালে লুকিয়ে থাকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মানসিকতা; আর সেই ক্ষমতার পেছনে ছিঁচকে চোরের মতো লুকানো থাকে তাদের কুচক্রী মনোভাব, চারিত্রিক দূর্বলতা। এখানে ‘দক্ষিণায়নের দিন’ এর লম্পট মাজহারের আরেক প্রতিবিম্বের দেখা মেলে কলেজ গর্ভনিং বডির সভাপতি নিজামউদ্দিনের মধ্য দিয়ে। উপন্যাসে অন্য প্রেক্ষাপটে দেখা যায়; বামরাজনীতি বুর্জোয়াপন্থী রাজনীতির কাছে সমানে মার খাচ্ছে, তাদের সাথে টাইটানিক জাহাজের মতো ডুবছে এদেশের সংগ্রামী জনতা। সেজান বামরাজনীতির আদর্শে ফাটল দেখতে পায়, তার আজীবনের লালিত আদর্শ ধীরে ধীরে কালের ধুলোয় মিশে যেতে থাকে। রাখী ও সেজান; আমাদের সমাজের ব্যর্থ মানুষদের মতো শেষ পর্যায়ে একই বৃত্তের ভেতরে ঘুরপাক খেতে থাকে। পাঠক খেয়াল করবেন, ধর্মের ভিত্তিতে যে পাকিস্তান টেকেনি; সেই একই সূত্রে জামানের সাথে রাখীর ধর্মীয় বন্ধন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সেজানের স্পর্শে। এই স্পর্শে নারী-পুরুষের জৈবিক লালসা ছিল না, ছিল সমাজকে প্রত্যাখ্যান করার প্রতিবাদ। সেজানের সন্তান ধারণের মাধ্যমে রাখী চূড়ান্তভাবে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ধর্মের বন্ধন ও তথাকথিত সামাজিক স্বীকৃতিকে। বিপ্লবী সেজান পুলিশের গুলিতে শহিদ হলেও তার সন্তান রয়ে যায় রাখীর গর্ভে। রাখীর অনাগত সন্তানের মধ্য দিয়ে আমাদের ব্যর্থ সংগ্রামের বীজ সুপ্ত থেকে যায়। এই সুপ্ত চেতনার বীজ থেকেই নতুন বাংলাদেশের অঙ্কুরোদগম ঘটে। এখানেও দেখা যায়, নতুন সেজানের (Internal Reality) মায়ের গর্ভে বেড়ে উঠা এবং বাংলাদেশে অভ্যুদয় (External Reality) একই সমান্তরালে ব্যক্তি ও সমাজসত্তার বিমূর্ত প্রতীক। 

রাখীর চরিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে লেখক সত্তরের দশকের দিনলিপি তার উপন্যাসে ধারণ করেছেন। এজন্যই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ছাড়াও প্রত্যেকটি চরিত্রই স্বতন্ত্রভাবে বিকশিত, সেই সময়ের ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে তারা। কাহিনির ঘনঘটায় তাদের উপস্থিতি কখনো দীর্ঘ সময়ের জন্য না হলেও প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজের মতো শাখা প্রশাখা মেলেছে। রাখীর পিতা পুরানো বিশ্বাস ও জীবনযাত্রাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার সন্তানেরা পিতার সে সব মূল্যবোধ্যকে শ্রদ্ধা করলেও লালন করে না। রাশেদ সাহেব চোখের সামনে বেড়ে উঠতে দেখেছেন পুঁজিবাদী সমাজের ক্ষমতালোভী, পাকিস্তানপন্থী এক শ্রেণীর এলিট নাগরিকদের। এখানে রাশেদ সাহেব মধ্যবিত্ত জরাগ্রস্ত সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন। রাশেদ সাহেবের বিপরীতে তার জামাই হাসান, রাখীর অফিসের কর্মকর্তা মাজহার, রাখীর স্বামী জামানকে দেখা যায় পুঁজিবাদী এলিট সমাজের সুবিধাবাদী-ভোগবাদী চরিত্র হিসেবে। প্রতিটি চরিত্রই নিজের অস্তিত্ব সংকটে ভোগে, নিজের স্বার্থকে দেশ-জাতি-সমাজের আগে দেখতে চায়। 

সরল চোখে পাঠকের মনে এই ত্রয়ী উপন্যাস ‘রোকেয়া আহমদ রাখীর’ স্বপ্ন ভাঙাগড়ার কাহিনি; জীবনসংগ্রামের দিনলিপি; কখনো বা রাখীর মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনচিত্র মনে হলেও, আদতে পুরো উপন্যাসের সব চরিত্রই আমাদের সমাজ ও সময়কে ধারণ করে। লেখক ব্যক্তি রাখীর মধ্যে দিয়ে আমাদের আবহমান কালের বাঙালী জাতিসত্তার দলিল রচনা করেছেন। এই বিষয়টা আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’ এর সাথে তুলনা করা যায়। ইলিয়াসের উপন্যাস ‘৬৯ এর গনঅভ্যুত্থানের যেকোনো নন-ফিকশন বইয়ের থেকে বেশি বাস্তব ও অত্যন্ত জীবন্ত। শওকত আলী তার উপন্যাসের চরিত্রের মধ্য দিয়ে সেই সময়কে ধরে রেখেছেন। এত বছর পার হবার পরও আমাদের জীবনে সেই সময় ভিন্নরূপে ফিরে এসেছে। লেখক স্বপ্ন দেখিয়েছেন, বাঙালীর নিজস্ব জাতিসত্তা জেগে উঠবে নতুন যুগে নতুন এক বাংলাদেশের বুকে। উপন্যাসের শেষে আমরা দেখতে পাই, রাখী নিজের অনাগত ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভাবতে থাকে। রাখী ভাবতে থাকে, একদিন তার দেখানো পথেই তার ছেলে হাঁটবে, মিছিলে যাবে। যে রাস্তায় বাবা(সেজান) মিছিল নিয়ে প্রতিবাদ করতে যেতো, একই রাস্তায় আবারো তাদের ছেলে নতুন সেজান হাঁটবে; যে পথে রাখী-সেজান হেঁটেছিল মেঘ ডাকা দিনে। নতুন সেজানের পথে হাঁটবে নতুন বাংলাদেশ। শরতের শিউলি পাতায় শিশির ঝরার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দক্ষিণায়নের দিন। 

🖍️ 15.02.25
Profile Image for Mahrin Ferdous.
Author 8 books208 followers
August 3, 2021
শওকত আলীর ত্রয়ী উপন্যাস দক্ষিণায়নের দিন, কুলায় কালস্রোত এবং পূর্বরাত্রি পূর্বদিনকে একত্রে ‘দক্ষিণায়নের দিন’ শিরোনামে এক মলাটে প্রকাশ করা হয় ১৯৮৫ সালে।

দক্ষিণায়নের দিনে বসবাস করা হলো গত কিছুদিন…

কেমন লেগেছে বইটি জানাতে গেলে বলা যায় বহুকিছু। ষাটের দশকের শহুরে জীবন, বাম রাজনীতি, মধ্যবিত্ত জীবনের গতানুগতিক ভাবধারা ও শ্রেণিবিন্যাস, সমাজমুখী বাস্তবতা, ব্যক্তি পর্যায়ের দ্বন্দ্ব সবকিছুই ছিল এখানে। তবে রাজনৈতিক জীবনজিজ্ঞাসা কিংবা মনস্তাত্ত্বিক সংবেদশীলতায় কাছাকাছি পটভূমিতে আরও বিশদ ও বিস্তারিত উপন্যাস লিখে গেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় কি সমরেশ মজুমদার। পরবর্তীতে মধ্যবিত্তই জীবনকে বিহ্বল আবেগ ও চঞ্চল কথোপকথন দিয়ে আলোর রোশনাই ছড়িয়ে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। সুতরাং কাহিনীর উপস্থাপনভঙ্গি ভিন্ন কিছু মনে হয়নি। সেই সাথে এই উপন্যাস নিয়ে আশাহত হবার মতো বিষয় ছিল সচেতন কোন পাঠক হিসেবে উপন্যাসের চরিত্রগুলোর পর���ণতি আগেই টের পেয়ে যাওয়া। ফলে, একটা সময়ে এসে উপলব্ধি হলো ষাটের দশকের ঢাকামুখী জীবনের কিছু বিচ্ছুরণ ও রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতাটুকু ছাড়া আর কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছি না বইটি পড়ার। উপন্যাসের মূল চরিত্র হিসেবে রোকেয়া আহমেদ রাখীকে পাঠক যেভাবে দ্বিধায়, প্রশ্নে, আত্মদহনে খুঁজে পায় সেভাবে পাওয়াটুকু হয়তো সে সময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক ছিল, যা আজ একবিংশ শতাব্দীতে এসে গতানুগতিক। আর কোথাও যেন একটা খামতি, বিলীন হতে না পারার অসফলতা। যেখানে এসে মনে হয় রাখী চরিত্রটি ঔপন্যাসিকের হাতে সৃষ্টি হলো কিন্তু পূর্ণাঙ্গ প্রাণের স্পর্শ পেলো না।

তবে উপন্যাসের পাঠক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে সবচেয়ে মুখ্য অনুভূতি হলো, দীর্ঘ একটি আখ্যান শেষ হবার পর, একটি উপন্যাসের সাথে টানা কিছুদিন থাকার পর, সেই বইটির শেষ লাইনটি পড়ে যে চূড়ান্ত অনুভূতি কাজ করে সেই বোধটুকু। কারণ, সেই বোধটুকুই হলো একজন পাঠকের সবচেয়ে বিশুদ্ধ অনুভূতি।

তাই, দক্ষিণায়নের দিন, কুলায় কালস্রোত কিছুটা নিরাশ করে গেলেও পূর্বরাত্রি পূর্বদিনে এসে চারপাশের সমস্ত চরিত্র ঝরে পড়ে যখন রাখীর ব্যক্তিসত্তার উথান ও তৎকালীন জীর্ণ রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে তখন মনে হয়, ক্যাপসুল লিফটে করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে অবশেষে পরিণতি খুঁজে পেতে যাচ্ছে আর পেছনে প্রতিটি চরিত্রের খুঁটিনাটি মিলিয়ে ইতি টানতে যাচ্ছে উপন্যাসটি। আর বইয়ের শেষ লাইনটি পড়ে শেষ করার পর যে প্রশ্নবোধক চিহ্নে এসে থামা হয়, সেখানে পৌঁছে এই চূড়ান্ত অনুভূতি কাজ করে যে প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক শওকত আলী আসলে শেষ পর্যন্ত কী বলতে চেয়েছেন আমি তা বুঝতে পেরেছি। আমি বুঝতে পেরেছি ‘সূর্যের দক্ষিণ দিকের গমনকাল’।

একজন রচয়িতার সার্থকতাটুকু এখানেই…
Profile Image for Farhanur Rahman.
47 reviews11 followers
May 28, 2021
১. এক বইতে তিনটি উপন্যাস: ১. দক্ষিণায়নের দিন ২. কুলায় কালস্রোত ৩. পূর্বরাত্রি পূর্বদিন।

২. "দক্ষিণায়নের দিন" ও "কুলায় কালস্রোত" এই দুইটি পর্ব পড়ার সময়টা উপভোগ করেছি বেশ। খুব আদুরে এবং মায়াবী ভাষায় যেন লেখা। রাশেদ সাহেবের তার জীবন-সংসার নিয়ে আক্ষেপ; বুলুর নিজের গন্ডি ভেঙ্গে তার নিজস্ব সত্তাকে বিলিয়ে দিয়ে চিরতরের জন্য হারিয়ে যাওয়া; হাসানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা; জামানের লাম্পট্য মিশ্রিত উচ্চাভিলাসী জীবনের জন্য দৌড়ঝাঁপ; রাখীর অবোধ মনের খামখেয়ালি; পারভিনের প্রথম যৌবনের চপলতা সব মিলিয়ে এক অনুপম জীবনালেখ্য যেন প্রথম দুটি পর্ব।

৩. ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে লেখক ৩য় পর্ব "পূর্বরাত্রি পূর্বদিন" না লিখলেও ভালো করতেন। প্রথম ২০-৩০ পৃষ্ঠার মত পড়তে ভালো লেগেছিল। রাখী তার পূর্ব জীবনের ভুল হিসাব নিকাশের পাঠ চুকিয়ে যেভাবে গুছিয়ে উঠছিল তাতে খুবই আশাব্যঞ্জক একটি পর্বের আশা করেছিলাম। কিন্তু তারপরেই রাখীর মতিভ্রম, একই সাথে সাথে উপন্যাসের কেমন জানি ছন্দপতন। রাখীর খামখেয়ালি মনোভাবের কারণে উপন্যাসটি পড়ার শেষের দিকে কেমন জানি বিরক্ত লাগছিলো৷ ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে রাখী বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে অপরিপক্ক নারী চরিত্র। এতটা খামখেয়ালিপনা একজন মানুষকে মানায় না, একেবারেই না.....
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
June 10, 2025
৩.৫/৫

স্বাধীনতার পূর্বের দশকের একটি পরিবারকে কেন্দ্র করে লেখা তিনটি উপন্যাসিকাকে এক মলাটের মধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

ঐ সময় নিয়ে যা সাহিত্য হয়েছে, তার মতোই অবারিতভাবে এতেও রাজনীতির কথা উঠে আসে।

রাজনীতি এখানে একটা মূখ্য ভূমিকা পালন করলেও, কেবলমাত্র, রাজনৈতিক উপন্যাস হিসেবে একে উপস্থাপন করা যায় না।
Profile Image for Anika.
29 reviews42 followers
April 5, 2017
This is less a book, and more a canvas with shades of human life. It seemed melancholic, but at the end human life isn't always happy go lucky. The reason, this book will always be very special to me, is the protagonist - Rakhee, seemed very close to me, she was someone I know, or maybe who knows, she was me. I face the same dilemma as her while taking decision, I can totally relate to her condition of being 'not ambitious', like her I too second guess the decisions that I finally make. This is a novel of life, of finally seeing the light at the end of the tunnel, of finding love and then getting deprived of it. This story shows how we are given but then again denied. A marvelous read.
Profile Image for Nazia Moon.
7 reviews8 followers
August 29, 2018
অসাধারণ একজন লেখকের সাধারণ একটি সৃষ্টি! সবসময় সাহিত্যগুনে পরিপূর্ণ  লেখাই লেখকদের লিখতে হবে তা আমি মানি না। গল্প-উপন্যাসে আসাধারণ কাহিনী,  সাহিত্যরস থাকলেই আমি পড়বো, এমন পাঠক অবশ্য আমি নই ও।সব গল্পে একই ধরণের উচ্চ সাহিত্যিক ভাবগাম্ভীর্যের লেখনি থাকতে হবে না, লেখনি হবে গল্পকে সাপোর্ট করার জন্য। এই বইয়ের গল্পে সেই উপযুক্ত লেখনির ব্যবহারই চোখে পরে।  ষাটের দশকের কিছু মানুষের জীবনকে নিয়ে লেখা এইখানে এর থেকে সরলভাষা আর সমসাময়িক ভাবধারা বজায় রেখে সম্ভব হয়তো ছিল, কিন্তু লেখক তার ভিন্ন লেখনির সাথে আমাদের পরিচয় করান এইখানেই। তিনি ছবি এঁকেছেন এখানে, চোখকে সইয়ে দেয়ার গোধূলির রংদিয়েছেন। একে, প্রাদোষে প্রাকৃতজনের সাথে তুলনা করলে হবে না, এর তুলনা হতে হবে এর নিজেকেই।
Profile Image for Shahidul Nahid.
Author 5 books141 followers
July 31, 2018
তিনটি উপন্যাসের একত্রে 'দক্ষিণায়নের দিন' । প্রথম দু'টো উপন্যাস বেশ ভাল লাগলেও, স্টোরি ডিটেইলিং ভাল লাগলেও তিন নম্বর উপন্যাসে আর নিতে পারছিলাম না উপন্যাসটাকে... শেষে ৬০/৭০ পৃষ্ঠা অযথাই টেনেছেন মনে হলো।
Profile Image for Nasrin Shila.
266 reviews88 followers
December 17, 2021
এই উপন্যাস পাঠ্য করার কারণ কি বুঝলাম না। উপন্যাসটা ভালো কিন্তু খুব আহামরি কিছু মনে হয়নি।

রাখী চরিত্রটিও খুব অসাধারণ মনে হয়নি। শক্তিশালী একটি চরিত্র হওয়ায় সম্ভাবনা নিয়েও যেন কেমন মলিন হয়ে গেল।

গণ অভ্যুত্থানের উপন্যাস কিন্তু আন্দোলন সেভাবে উঠে এসেছে বলে মনে হয়নি, বরং রাখীর ব্যক্তিগত জীবনই এখানে প্রধান ছিল।

সব মিলিয়ে খারাপ না, কিন্তু আরও ভালো কিছু আশা করছিলাম।
Profile Image for দিপু .
14 reviews
May 20, 2023
অনেকেই বলে পৃথিবী একটা অদ্ভূত জায়গা। তার পিছনে যুক্তিটা কি সেটা অবশ্য পরিষ্কার করে বলেনা কেউ। যেহেতু পৃথিবী একটা অদ্ভূত জায়গা সেহেতু পৃথিবীর বুকে জেগে থাকা মানুষগুলার মাঝেও একটু অদ্ভূত ভাব জেগে থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিক নিয়মে সুখ আছে দুঃখ আছে, ইচ্ছা আছে আবার অনিচ্ছাও আছে। একটা থাকলে তার বিপরীতে অন্য কিছু থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।

কিন্ত সুখ-দুঃখ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা এইসব ব্যাপার আপেক্ষিক বা হরমোনের ক্ষরণ বলে ধরে নেওয়া যায়। এইসব আমাদের যাপিত জীবনে রোজকার ঘটে থাকে। আমরা সুখী হই, তারপর দুঃখী হই, আমাদের ইচ্ছা হয়, সময় ফুরিয়ে গেলে অনিচ্ছা। সব ফুরিয়ে গেলে আমাদের ভালো লাগেনা, আমরা একা হয়ে যাই। একাকীত্ব আমাদের ঘিরে বসে। এটাই প্রতিদিনকার ঘটনা।

গল্পের মুখ্য চরিত্র রাখির ভার্সিটি পড়া অবস্থায় তার মনে সর্বদা একটা প্রশ্ন ঘুরত ফিরত "কি করবে এবার?" আমাদের সবার ক্ষেত্রেই এমন হয়। জীবনের এক একটা ধাপ শেষ হয় আর প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসে, কি করবে এবার? কিছু না কিছু আমাদের করতেই হয়। সুযোগের অভাব চারদিকে আর তাই বলেই আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সবকিছু করা হয়না। রাখিরও করা হয়ে উঠে নি। লেকচারার হতে গিয়ে কোন এক ট্রাভেল এজেন্সির রিসেপশনিস্ট হয়ে গেলো সে। হয়ে গেলে ক্ষতি ছিলো না কিন্ত ক্ষতি হয় তখনই যখন মনের গভীর চেতনাবোধ থেকে ভেসে আসে একটি প্রশ্ন যার উত্তর দিতে না পারলে ক্ষতি হয়ে যায়। এটাই কি হতে চেয়েছিল সে?


উপন্যাসটা মূলত রাজনৈতিক বলা হলেও রাজনীতি এখানে তেমন একটা নেই। বরং বলা চলে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। মনের ঘাত প্রতিঘাত, ইচ্ছা অনিচ্ছা আর সুখ দুঃখের গণ্ডি পেরিয়ে নিজেকে তথা নিজের সত্বাকে ফিরে পাওয়াটাই মূলত আসল কাজ। রাখী পেয়েছিলো আসা করি রাখির মত যারা আছে তারাও পেয়ে যাবে।
Profile Image for Kanis Murshida.
91 reviews9 followers
August 30, 2020
প্রত্যাশা হচ্ছে প্রয়োজনীয় অমঙ্গল এর মত। জীবনে চলার পথে প্রত্যাশা যেমন অপরিহার্য উপাদানের মত কাজ করে জীবনকে সুন্দর করতে, একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে ; তেমনি প্রত্যাশার পরিমাণ টা যখন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় তখন তাই জীবনের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।
দক্ষিণায়নের দিনগুলো শিরোনামের এই ত্রয়ী উপন্যাসটি কেমন যেন একটা ঘোরে ফেলে দিয়েছিলো। কেন্দ্রীয় চরিত্র রাখি এবং তার পার্শ্ববর্তী চরিত্র গুলো সামাজিক পারিপার্শ্বিকতাকেই বর্ণনা করেছে, তবুও কোথাও একটা ছন্দপতন রয়েছে। ব্যার্থতা, হতাশা, আত্মগ্লানি আর জীবনের প্রতি অবহেলার পুনঃপুন অবতারণা একঘেয়ে ছিলো। কেউ ব্যাবসায়ে, কেউ প্রেমে, কেউ সংসারে, কেউ বন্ধুত্বে কেউ বা আবার রাজনীতিতে ব্যর্থ। সুখ নামের সোমার হরিণ টা কারো বাগ মানছে না। প্রধান চরিত্রের নিজের প্রতি এক ধরনের হীনমন্যতা ছিলো।
তবে শুরুর দিকে রাখীর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন, লেখাপড়া শেষে সে কি করবে এই প্রশ্ন ও তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার সময় দোদুল্যমান মন,( সবাই যা করে সেই স্রোতে গা ভাসাবে না, নিজের ইচ্ছে কে মূল্য দিবে);- এই অংশের সাথে রিলেট করতে পারায় ভালো লেগেছিল।
এজন্য পুরো ট্রিলোজি টাকে ২ তারকা।
Profile Image for Hasibul Ahsan.
32 reviews2 followers
May 9, 2021
ক্ল্যাসিক আখ্যান থাকা একটা বই পড়তে খারাপ লাগলে, পাঠক হিসেবে নিজের গভীরতা সম্বন্ধে প্রশ্ন জাগে প্রায়ই। ঠিক যেমন টা এই বই পড়া শেষেও মনে হলো।
শেষ বই টা পড়েছিলাম হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখি, মুগ্ধ হয়েছিলাম। বেশ প্রত্যাশা নিয়েই শুরু করলাম, ট্রিলজির ১ম ২ টা উপন্যাস পড়ার পর ই কেনো জানি আর খুব একটা পড়তে ইচ্ছা হলোনা। শেষের টা প্রায় টেনে টেনেই শেষ করেছি।
রাখীর জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপ নিয়েই এতো কনফিউশন, নিজের সাথেই নিজের এত যুদ্ধ, আমার কেন জানি বিরক্ত লেগেছে একটা পয়েন্টে। এটা আমার নিজস্ব মানসিকতার জন্য ও হতে পারে, জানিনা।
খুব আশা নিয়ে শুরু করে, হতাশ না হলেও, মুগ্ধ হতে পারলাম না। এর পিছে হয়তো পাঠক হিসেবে লেখকের ভাবনাতে না পৌছানোও থাকতে পারে, কে জানে!
Profile Image for Shahariare Shihab.
14 reviews
March 18, 2024
শওকত আলীর রচিত 'দক্ষিণায়নের দিন', 'কুলায় কালস্রোত' এবং 'পূর্বরাত্রি পূর্বদিন' যেগুলোকে ত্রয়ী উপন্যাস বলা হয়। এই তিনটি উপন্যাস একত্রে প্রকাশ করেছে 'বিশ্বসাহিত্য ভবন' এবং বইটির নামকরণ করা হয় 'দক্ষিণায়নের দিন' নামে। বইগুলো এর আগে প্রকাশ করেছিল 'বিদ্যাপ্রকাশ'। কিন্তু লেখক অসুস্থ হয়ে গেলে তার সাথে প্রতারণা করে বিদ্যাপ্রকাশ, এমন কথা স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে উল্লেখ করে স্বাক্ষর করে গেছেন লেখক নিজে। সুতরাং বইগুলো কেউ কিনলে প্রকাশক দেখে কিনবেন। লেখকের এই ত্রয়ী উপন্যাস 'ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপ্ত হয় ১৯৮৬ সালে। আমার বেশ পছন্দের একটি বইয়ের তিনটি উপন্যাস, একটি কালের প্রবাহ। আপনারাও পড়ে ফেলতে পারেন।
Profile Image for Masum Billah.
185 reviews3 followers
April 1, 2021
দক্ষিণায়নের দিন + কুলায় কালস্রোত + পূর্বরাত্রি পূর্বদিন এই তিনটি উপন্যাসের সংকলন হলো বইটি। তিনটি বইয়ের কাহিনী আলাদা হলেও পাত্রপাত্রী একই আর টাইমলাইন বজায় থাকায় এটিকে ত্রয়ী উপন্যাস বলা হয়ে থাকে।
রাখী নামের সদ্য কলেজ পাস করা এক মেয়েকে ঘিরে কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। রাখিকে একাদিক ছেলে ভালোবাসলেও রাখী কাকে ভালোবাসে তা তার জানা নেই। ভাইয়ের বন্ধু সেজান, নাকি প্রফেসর জামান। এরি মাঝে হঠাৎ করেই বিয়ে করে বসে রাখী। স্বামীর চরিত্র কাটার মতো পবিত্র। এর সাথে আছে রাখীর বড় বোন বুলুর গল্প, ফুপাত বোন পারভীন আর বান্ধবী নার্গিস আর সুমিতার গল্প। আছে পাকিস্তানের উত্তাল সময়ের রাজনৈতিক উত্থান পতনের গল্প।
Profile Image for Rezaul Karim Sajib.
18 reviews9 followers
March 21, 2020
Well written . I liked the personality of the central character but didn’t like the ending
Profile Image for Sourav Atik.
26 reviews8 followers
May 2, 2021
শওকত আলীর বাকি বই গুলার চাইতে দক্ষিণায়নের দিন ট্রিলজি আমার পছন্দের। নারী প্রোটাগনিস্ট হিসেবে অনেক বই-ই পড়েছি। এইটা প্রিয়।
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books357 followers
September 28, 2017
একটা পরিবার, কিছু মানুষ। সময়টা ষাটের দশক। কারও তখন উপরে ওঠার চিন্তা, কারও চলে জীবনের খোঁজ। ওদিকে সময় এগিয়ে যায় খুব দ্রুত, পালাবদল চলে সবখানে। একটা জীবনকে কেন্দ্রে রেখে গল্পকার এঁকেছেন একটা দেশের, একটা সময়ের ছবি।
1 review
Want to read
August 11, 2017
dsf
This entire review has been hidden because of spoilers.
Displaying 1 - 25 of 25 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.