ফ্ল্যাপে লিখা কথা রুনু বসে আছে ইঞ্জিন বসানো ছোট্ট একটা নৌকার পাটাতনে। পাটাতনে শীতলপাটি বিছানো। শুভ্র পা ছড়িয়ে হাতে ভর দিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিতে আধশোয়া হয়ে আছে। তার দৃষ্টি স্থির না। সে সব কিছুর উপর দিয়ে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। মাঝে-মাঝে হাসিমুখে তাকাচ্ছে রুনুর দিকে। মনজু বসেছে মাঝির কাছে। নৌকার অল্প অল্প পানি উঠছে। মনজু অতি ব্যস্ত ভঙ্গিতে সেই পানি তুলে নদীতে ফেলছে। ....
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
বইটা পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হলো বুঝলাম না। আরও বড় হলে খুব শান্তি পেতো মনটা। এ সিরিজের মধ্যে যখন যে বই পড়ি কেন জানি আমার কাছে সবসময়ই ভালো লাগে।এটা পড়ার সময় মনে হয়েছিল, অনেকসময় অনেক ইচ্ছা পোষন করলেও সবসময় সবকিছু আমাদের হাতে থাকেনা। কিছু জিনিষ আগে থেকেই ঠিক হয়ে থাকে।
উপন্যাস টি শুরু হয়েছে, শুভ্রর ঘুম ভাঙার পরে খুব মজার একটা ঘটনা দিয়ে। বিষয় টা হলো সকালের সময় বলে দেওয়া ঘড়ি না দেখে, আর এরকম টেকনিক তো আমাদের বুদ্ধিমান শুভ্র র মাথা থেকেই বের হবে। বরাবরের মতো এইবারো শুভ্রর বাবা মোতাহার সাহেব শুভ্রর দেখাশোনা করার জন্য একটি লোক রেখেছেন, তার নাম মজনু।
মজনুর দ্বায়িত্ব শুভ্র সারাদিন কোথায় যাবে তার খেয়াল রাখা। কাজটাতে মজনু প্রথমে খুশি হলেও পরে বিরক্ত হয়ে যায় কারন শুভ্র আর ১০ টা ছেলের মতো এতো বাইরে যায়না। এরই মধ্যে শুভ্রর হঠাৎ ইচ্ছা করে একা কোথাও গিয়ে বসবাস করতে, আবার সে এটাও জানে তার বাবা মা তাকে কতোটা ভালোবাসে, সেই ভালোবাসার সুত্র ধরে কখনে তারা রাজি হবেনা।।।। কিন্তু আসলেই কি মোতাহার হোসেন তার আদরের একমাত্র সন্তান এর এই ইচ্ছা পুরন করবে?? পড়তে থাকুন ।অবশ্যই ভালো লাগবে আশা করি।
শুভ্রকে নিয়ে হুমায়ুন আহমেদ মোট পাঁচটি উপন্যাস লিখেছিলেন। ১. দারুচিনি দ্বীপ; ২. রূপালী দ্বীপ; ৩. শুভ্র; ৪. এই শুভ্র এই... ; এবং ৫. শুভ্র গেছে বনে।
স্বভাবতই পাঠক যারা শুভ্র পড়বে তারা শুভ্রের মাঝে কোনটা সেরা কোনটা কি এমন বাছাই করবে। শুভ্র সংক্রান্ত উপন্যাসে আমার ভাল লাগার তালিকায় “এই শুভ্র এই” উপন্যাসটা তলানিতে আছে। এর অর্থ এই না যে উপন্যাসটা খারাপ, ব্যাপারটা হচ্ছে এর থেকে অন্য উপন্যাসগুলো বেশি ভাল লেগেছে। শুভ্র সিরিজে এটা ভাল লাগার ক্রমে সবার নিচে।
এই উপন্যাসেও তার আগের সিরিজ উপন্যাস “শুভ্র”র মত নায়ক কোনো একভাবে জেনে যায় সে যাদের মা-বাবা বলে জানে আসলে তারা তার মা-বাবা নয়। উপন্যাসটার শেষের কয়েকটা লাইন-
“জাহানারা এতক্ষণ নিঃশব্দে কাঁদছিলেন, এবার শব্দ করে কেঁদে উঠলেন। শুভ্র বলল, মা, তুমি আমাকে এত ভালোবাস কেন? জাহানারা ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললেন, তুই পাগলের মত কথা বলিস কেন? নিজের ছেলেকে আমি ভালোবাসব না? শুভ্র চোখ বন্ধ করল। হঠাৎ তার কাছে মনে হল রহস্যময় প্রকৃতি কেন হোমোসেপিয়ানস তৈরি করেছে তা সে যেন স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছে।
এই উপন্যাসে শুভ্রকে একটি সফটওয়্যার তৈরি করতে দেখা যায়। এই ব্যাপারটা উপন্যাসের সাথে বেখাপ্পা হয়েছে। লেখক ভাল করে সফটওয়্যার নির্মাতাকে তুলে আনতে পারেন নি। গুলিয়ে ফেলেছেন। এই ব্যাপারে অভিজ্ঞতা না থাকার ফলে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। :/
এমন দুয়েকটা জায়গা বাদ দিলে, শুভ্র এবং শুভ্রর চারিদিকে অন্যান্য চরিত্র মিলিয়ে গড়ে ওঠা এই সল্পায়তনের উপন্যাসটা উপভোগ করার মত।
'I often see flowers from a passing car That are gone before I can tell what they are. Heaven gives its glimpses only to those Not in position to look too close'
শূভ্র সমগ্রের চতুর্থ উপন্যাস ছিল এটি। "শূভ্র" শেষ হয় একভাবে কিন্তু, "এই শুভ্র এই" শুরু হয় অন্য ভাবে। এখানেও সেই জাহানারা মহিলার টক্সিসিটি, শূভ্রর অতিরঞ্জিত উপস্থাপন। "শুভ্র" পড়ার পর মেজাজ খারাপ ছিল, ভাবছিলাম এটা একটু ভাল লাগবে, হ্যা, লাগছে ভাল। শুভ্র থেকে ভাল তবে আহামরি না। কেন জানিনা আমার, দারুচিনি দ্বীপের পর থেকে একটাও ভাল লাগতেছে না। 🤡
বইটা পড়ে ভাল লাগল । এই বই পড়ে মনে হচ্ছে হুমায়ুন আহম্মেদ 'হিমু', 'মিসির আলি'র পাশাপাশি শুভ্র নামের আরেকটা শক্তিশালি চরিত্র তৈরি করেছিলেন । কিন্তু আফসোস পাঠক এই আনন্দ থেকে এখন বঞ্চিত ।
'এই শুভ্র! এই' পড়তে শুরু করার পর বুঝলাম অনেক দিন আগেই একবার পড়েছিলাম বইটা। আগে পড়া হলেও কাহিনী তেমন মনে ছিল না তাই নতুন নতুন ই লেগেছে। গল্পের পরিসর ছোট। চরিত্র অল্প সংখ্যক এবং লেখক সবারই ভালভাবে উপস্থিতি ঘটিয়েছেন। আনন্দ, দুঃখ, রম্য সবকিছু মিলিয়ে আমার মতে শুভ্র সিরিজের একটি খুবই ভাল সংযোজন 'এই শুভ্র! এই'...
শুভ্র বললো " মা আমাকে তুমি এত ভালোবাসো কেন?" জাহানারা ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললেন, '"তুই পাগলের মত কথা বলিস কেন? নিজের ছেলেকে আমি ভালবাসব না?" শুভ্র চোখ বন্ধ করল । হঠাৎ তার কাছে মনে হল রহস্যময় প্রকৃতি কেন হোমোসেপিয়েন্স তৈরি করেছে তা অস্পস্ট ভাবে বুঝতে পারছে।
অনেকদিন পর হুমায়ূন পড়লাম। আজ এত বছর পরেও ভাবলে খারাপ লাগে "আর কেউ লিখবে না" ।
বাথরুমের আয়নায় লেখা - I often see flowers from a passing car That are gone before I can tell what they are. Heaven gives its glimpses only to those Not in position to look too close
বইঃ এই শুভ্র! এই লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ ধরণঃ সমকালীন উপন্যাস পৃষ্ঠাঃ১১২ প্রকাশিতঃ ২০০৩ রেটিংঃ ৫⭐/৫⭐
👓কাহিনী সংক্ষেপঃ
ওয়ারীর এক হুলস্থূল টাইপ বাড়িতে শুভ্র, তার মা-বাবা ও কর্মচারীরা থাকে | বাসার নাম Maya Lodge | শুভ্রর বাবা বিশাল পরিমাণ অর্থের মালিক হলেও শুভ্রকে সুস্থ করতে পারছে না | শুভ্রকে অনেক ডাক্তার দেখানোর পর ও কোনো কাজ হচ্ছে না | সব ডাক্তারই একই কথা বলে যে , শুভ্র যেকোনো সময় অন্ধ হয়ে যাবে কারণ তার Optic nerve শুকিয়ে যাচ্ছে | এই ব্যাপারটি নিয়ে শুভ্র চিন্তিত এবং অন্ধ হয়ে যাবার আগে প্রকৃতির বিভিন্ন সুন্দর দৃশ্য দেখার পরিকল্পনা করে একটি খাতায় লিখে রাখছে কিন্তু কোনোটাই দেখা হচ্ছে না |
এই উপন্যাসের আরেকটি চরিত্র হচ্ছে মঞ্জু |পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার জন্য সে ঢাকায় চাকরি খুঁজতে এসেছে এবং পরে মঞ্জু শুভ্রর কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি পেয়ে যায় |মঞ্জুর কাজ হচ্ছে যখনই শুভ্র বাইরে যাবে, মঞ্জুও যেন তার সাথে থাকে এবং তার খেয়াল রাখে | শুভ্র তার অনেক কল্পনা মঞ্জুকে বলে যা শুনে মঞ্জু অনেক অবাক হয় |
👓পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ
লেখক মূলত Maya Lodge এ বাস করে আকাশ-পাতাল তফাৎ বিশিষ্ট দুটো জীবন-শুভ্র ও মঞ্জুর জীবনের কথা বইটিতে তুলে ধরেছেন | এছাড়াও কত সহজভাবে জীবনটাকে নেওয়া যায় এবং প্রকৃতিকে কীভাবে উপভোগ করা যায় এইসব বিষয় ও লেখকই বইটিতে তুলে ধরেছেন |
আচ্ছা, শুভ্র কি আমাদের মধ্যে কখনও ছিল, থাকলেও থাকতে পারে। সে এই পৃথিবীর শুদ্ধতম যুবক। তার চেহারার কাছে রাজপুত্রও মলিন। জীবনের কোন পরীক্ষায়ে সে সেকেন্ড হয় নাই। যারা শুভ্রের আগের ৪ টি বই পরেছেন এবং ওই কাহিনি গুলোর পরের সেকুয়াল ভাবেন তাহলে আশা হতো হবেন। এখানে, শুভ্র অন্য, তার বাবা মোতাহের হোসেন অবশ্য তিনিও বড়লোক। তাই ঘটনা খুব আলাদা কিছু হবে না, কিংবা আপনাকে আগের বই [শুভ্র] এর মত ধাক্কাও খেতে হবে না। তবে শুভ্র এখানেও জানে যে সে তার নিজের বাবা মার সন্তান না। তাকে কুড়িয়ে আনা হইসিল। বইটার কিছু কিছু অংশে খুব হাসি পাইসে, বিশেষ করে মঞ্জুর দাইলগ গুলতে না হেসে পারা যায় না। আশা করি, এই বইটাতে আপানাদের শুভ্রের সাথে সময় ভাল কাটবে।
This book was about a character named শুভ্র and the people surrounding him. He had a problem with his eyes that would lead him to blindness at any moment.
This was the first book I've read from the 'শুভ্র' series and it left an imprint on my mind. For some reason, I didn't come back to this series for a long time up until recently. I'm so glad that I did. Because it made me realize again how much I really liked শুভ্র's character. In my opinion, he is one of the best characters Humayun Ahmed has created. Some readers might disagree. But I don't care. I just love him.
কেবল লিখতে ইচ্ছে করছে বলেই কিছু কথা লিখব। বুক-রিভিউ না।
• গড়পড়তা পাঠকদের তুলনায় শুভ্র আমি পড়েছি-পড়ছি বেশ দেরিতেই। 'দারুচিনি দ্বীপ' ছোটবেলা থেকে বহুবার দেখায়, সেটা আমার অন্যতম ভীষণ প্রিয় সিনেমা হওয়ায় মাথায় শুভ্র হিসেবে রিয়াজ, শুভ্রর মা হিসেবে ডলি জহুর আর শুভ্রর বাবা হিসেবে আব্দুল্লাহ আল মামুনের চেহারা গেঁথে গেছে ভালোভাবে। পরবর্তীতে শুভ্রর প্রতিটা বই পড়ার সময় আমি এই চরিত্রগুলোকে ওভাবেই কল্পনা করেছি। শুভ্র সিরিজের প্রিভিয়াস বইটা, মানে, 'শুভ্র' পড়ার সময় থেকে একটা ব্যাপার হচ্ছে আমার সাথে। সবসময় না, মাঝেমধ্যে। এইচএসসি চলে, গ্যাপ দিয়ে গ্যাপ দিয়ে পড়ছি তো.. যাহোক, ব্যাপারটা হলো, মাঝেমাঝে আমি শুভ্র হিসেবে রিয়াজকে না দেখে আমার সো কল্ড 'ক্রাশ'কে দেখছি (এখানে বলি, 'ক্রাশ' শব্দটা ওর জন্য পছন্দ হয় না আমার)। যদিও ওর সাথে খুব বেশি মিল নেই শুভ্রর! বই পড়ে অনেক, এক্ষেত্রে মিল আছে। কিন্তু সে চশমা পরে না! আর চশমা পরে না বলেই ব্যাটা পোক্ত হয়ে শুভ্রর চেহারায় বসতে পারছে না। বসতে না পারাই উচিত। পারবেও না আশা করি।
সিরিজ শেষে আমার প্রিয় বই কোনটা হবে সিরিজে? শেষ হলে বলতে পারবো। এখন পর্যন্ত 'শুভ্র'। মনে হচ্ছে এটাই টিকবে। দেখি!
• শুভ্রর মাকে নিয়ে একপ্রকার অবসেসড ছিলাম আমি। কেন ছিলাম, এক্সাক্ট ব্যাখ্যা করতে পারবো না। অনেকটা কারণ ছাড়াই বলা যায়। অবসেশন ছুটে গেছে।
শুভ্রর বাবার জীবনমরণ নিয়ে দেখি হুমা'মেদ দারুণ খেলা খেলেছেন সিরিজে! হা হা! আগেও হয়তো বলেছি কোথাও, এখানেও বলে রাখি, হুমায়ূন আহমেদকে আমি হুমা'মেদ বলে ডাকি। আশা করি ভক্তেরা ক্ষেপবেন না। আমরা মানুষরা আদর, ভালোবাসা দিয়ে নামকে কেটে ছোট করি।
• আমি একটা ভীষণ দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি৷ আর এই সময়ে হুমা-মেদ পড়াটা আমার জেগে থাকা সময়ের সবচেয়ে soothing ব্যাপার।
হুমা-মেদকে সংজ্ঞায়িত করতে 'জাদুকর' শব্দটার উপযুক্ততা অনুভব করছি তীব্রতরভাবে। যে জাদু রেখে মৃত্যুর ওপারে গেছেন লোকটা, সেই জাদু কেমন খাপে খাপে জাদুর মতো প্রভাবিত করছে আমাকে! জাদু, জীবনের সবখানে!
আমার মনোজগৎ যেন একখণ্ড কাপড়, যাকে এর বুননের ফাঁকফোকর খুঁজে এগিয়ে চলা সূঁচরূপী লেখাগুলো সুতোয় সাজিয়ে পূর্ণ করে দিচ্ছে। ভেবে ভালো লাগছে— হরেকজনের হরেক লেখা পড়তে পড়তে পড়তে, হরেক রঙের সুতোয় সাজতে সাজতে আমি একদিন একটা শৈল্পিক রুমাল হয়ে যাবো।
• হঠাৎ করেই মনে হচ্ছে, হুমা'মেদের সব লেখা আমার পড়ে ফেলা দরকার। এখনও 'মাতাল হাওয়া', 'মধ্যাহ্ন', 'জোছনা ও জননীর গল্প', 'তেঁতুল বনে জোছনা'র মতো জনপ্রিয় বই পড়িনি। হুমায়ূন আহমেদের লেখা পড়ার আমার অনেক বাকি। কমই পড়েছি।
বইটি পড়ে সবচেয়ে ভাল লেগেছে একজন কাজের বুয়া যে এতো সুন্দর ভাবে কথা বলতে পারে তা খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে বইটিতে!!!! বইটিতে মূল চরিত্র হলো শুভ্র!! শুভ্র এক অন্যরকম মানুষের নাম। তার চালচলন,চিন্তাধারা সবার চেয়ে আলাদা। সে এক কাক পুষতো,তার সাথে সকালবেলা গল্প করতো। তার মনে এক ভয় আছে,অন্ধ হয়ে যাবার ভয়। তবুও তার অলীক সব চিন্তাধারা চলতে থাকে অবিরাম গতিতে। ছেলের অদ্ভূত এই জীবন নিয়ে আশঙ্কায় ভোগেন শুভ্রর বাবা-মা। ওদিকে ভঙ্গুর পরিবারের কল্যাণার্থে "মঞ্জু" নামের এক যুবক কাজ খুঁজতে খুঁজতে হাজির হয় শুভ্রর বাবা মোতাহার হোসেনের কাছে। মোতাহার সাহেব তাকে নিয়োগ দেন ছেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে। শুভ্র ও মঞ্জুর দুটো আলাদা জগৎ নিয়েই এই গল্পটি, যেখানে শুভ্র তার অলীক কল্পনায় দিন পার করে আর মঞ্জু সেই অলীক কল্পনাগুলো শুনে প্রতিনিয়ত অবাক হয়। স্বভাবে ঠগ হলেও মঞ্জুর জীবনের স্বার্থে সংগ্রামী হতে হয় নিজেকে। একই ছাদের তলায় আকাশ-পাতাল তফাৎ বিশিষ্ট দুটো জীবন যেন আপন গতিতে ছুটতে থাকে। লেখক পরম যত্নে তার গল্পে দেখিয়েছেন জীবনটাকে কীভবে কত সহজভাবে নেয়া যায়,চারপাশটাকে কীভবে খুব সহজেই উপভোগ করা যায়। পরিশেষে এই গল্প পড়তে গিয়ে পাঠক আরো একবার মুগ্ধ হবে শুভ্রর শুভ্রতায়।🙂🙂
আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন, তো ভাবলাম তার একটা বই পড়া যাক। হুমায়ূন আহমেদের হিমু বা মিসির আলী চরিত্রকে সবাই যেভাবে চেনে শুভ্রকে সেভাবে চেনে না। কিন্তু আমার কাছে শুভ্রকে সমানভাবেই ভালো লাগে; কিছু ক্ষেত্রে একটু বেশিই। কোজ আই থিংক আই অ্যাম দি শুভ্র মাই সেলফ। যদিও শুভ্রর মতো সুদর্শন চেহারা কিংবা তীক্ষ্ম বুদ্ধি কোনটাই আমার নেই, যা আছে সেটা হচ্ছে চোখের সমস্যা আর প্রহর গোণা কবে অন্ধ হবো।
যাইহোক, বইয়ের প্রসঙ্গে আসি। বইটা আমি আগেও কয়েকবার পড়েছি কিন্তু তবুও আমার আবার পড়তে ইচ্ছে হচ্ছিলো। হুমায়ূন আহমেদের লেখনীর একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর মধ্যে অতি তথ্যসমৃদ্ধ, থ্রিলিং কিংবা কালজয়ী কিছু নেই। কিন্তু তবুও সেটা পাঠককে আটকে রাখে। বইয়ের শেষ অবধি নিয়ে যায়। হাসায়, কাঁদায়, চিন্তা করায়। “এই শুভ্র! এই” বইটাও তেমনই একটা বই। উদ্ভট কর্মকাণ্ড, তীক্ষ্মবুদ্ধি, মাতৃস্নেহ, পিতৃছায়া, ভালোবাসা-বিচ্ছেদ এগুলো নিয়েই বইটার গল্প এগিয়েছে।
ফ্ল্যাপ থেকে__ রুনু বসে আছে ইঞ্জিন বসানো ছোট্ট একটি নৌকার পাটাতনে। শুভ পা ছড়িয়ে হাতে ভোর দিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিতে আদ শোয়া হয়ে আছে। তার বৃষ্টির স্থির না। সেসব কিছুর উপর দিয়ে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে হাসিমুখে তাকিয়ে রুনুর দিকে। মঞ্জু বসেছে মাঝির কাছে। নৌকার অল্প অল্প পানি উঠছে। মঞ্জু অতি ব্যস্ত ভঙ্গিতে সেই পানি তুলে নদীতে ফেলছে।।
মনজু হচ্ছে শুভ্রর এসিস্ট্যান্ট। কারণ তার বাবা মা ঠিক করেছেন শুভ্রকে পাহারা দেয়ার বা দেখাশোনা করার জন্য একজন লোকের খুবই প্রয়োজন। তাই মুরগির আমি এই ব্যক্তিকে শুভ্র বাবা-মা ঠিক করেছে। রুনু হচ্ছে মঞ্জুর মামাতো বোন।। ছবিটা ঠিক করলে একদিন মঞ্জুকে নিয়ে ঘুরতে যাবে, কথায় কথায় মঞ্জু তার বোনের কথা তুললে শুভ্র তাকে অর্থাৎ কেউ সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে।। তারপর তারা তিনজন একসাথে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঘুরতে যায়।
This entire review has been hidden because of spoilers.
শুভ্র'র যেই সৌন্দর্যের কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে ওরকম কাউকে দেখার প্রবল ইচ্ছা আমার। এ সিরিজের মধ্যে যখন যে বই পড়ি কেন জানি আমার কাছে সবসময়ই ভালো লাগে। ব্যক্তিগত ভাবে আমার হিমু, মিসির আলী চরিত্রের থেকে "শুভ্র" চরিত্র টি বেশি ভালো লেগেছে। এর কারণ আমার অজানা।
এই বইতে বাবার সাথে শুভ্র'র বন্ধুত্ব, মায়ের ভালোবাসা সিরিজের আগের উপন্যাসগুলো থেকে আরো বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শুভ্র এর মাকে আমার খুব বিরক্ত লাগে। শুভ্রকে বইতে কম পেয়েছি আরেকটু বেশি পেলে ভাল্লাগতো।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার হুমায়ূন স্যার এর "হিমু" চরিত্রের থেকে "শুভ্র" চরিত্র টি বেশি মনে ধরেছে। এর কারণ আমার অজানা। হিমু মামার গল্প, হিমু রূপার গল্প পড়া হলেও, শুভ্র সিরিজের "এই শুভ্র! এই" উপন্যাস টি আমার পড়া প্রথম উপন্যাস। অর্থাৎ শুরুতেই শুভ্র কে ভালো লেগে গিয়েছে আমার।
শুভ্র, ধনিক পরিবারের এক অসাধারণ ছেলে। অসম্ভব সুন্দর
হুমায়ূন আহমেদ তাঁর রচনায় অনুভূতিকে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলো ভীষণভাবে যুক্তিপূর্ণ। শুভ্র সবই স্বাভাবিকভাবে নেয়। হ্যাঁ, এটাই উচিত। আমরা জীবনে কষ্ট পাব। কিন্তু তা মেনে নিতে হয়। এভাবেই বেঁচে থাকতে হয়।
হুমায়ুন আহমেদের বইগুলোর নাম আমার কাছে এক রহস্য। বইগুলো শেষ করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নামের কোনো কারণ ধরতে পারিনা! এটা ব্যতিক্রম। শুভ্রর মা তার জন্য একটি ময়না কিনেছিলেন, পাখিটিকে শেখানো ছিলো বলতে 'এই শুভ্র,এই'। অদ্ভুত! এই বইটির এটাই রিভিউ কারণ আর বিশেষ কিছু বলার নেই।
বড়লোক বাবা মায়ের একমাত্র ছেলেকে নিয়ে আদিখ্যাতা ছাড়া কিছুই মনে হয়নি। মনজু চরিত্রটাকে বেশ ভালো লেগেছে। দারুচিনি দ্বীপ ছাড়া বাকি সব গল্পেই শুভ্রর মা কে বিরক্ত লাগে, এই গল্পে মনে হয় সবচেয়ে বেশি বিরক্ত লাগলো। দুই তারা দিব ঠিক করেছিলাম, এন্ডিং এর জন্য এক তারা বোনাস।
ইন্টারনেট বন্ধ হবার কদিন পরে আজ ইন্টারনেট চালু হলো। বিভৎস সব তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শুভ্র পড়ছি সব কলুষতা থেকে দূরে থাকবার জন্য। সময়টা ভালো কাটছে... বাইরে অস্থির পরিবেশ আর আমি হুমায়ূন আহমেদের লেখায় শান্তি খুঁজি! আহ্ শুভ্র 🤍