জীবন প্রকৃতির নিয়মে চলে যায় তার নিজস্ব গতিতে । যেখানে প্রকৃতির মতই ঋতু বদলায়। কখনো রং ছড়ায়, কখনোবা রং বিনাশ হয়ে নির্জীব হয়ে যায় জীবন। তবে জীবন নতুন করে ফিরে পায় অন্য কোন রং, স্বাদ অথবা গন্তব্য। “খোলা সম্পর্ক” উপন্যাসে এমন তিনটি প্রধান চরিত্র রয়েছে যাদের জীবন প্রকৃতির মত ভরাডুবির জীবনচক্রে আবর্তিত । চলমান জীবনের জয় পরাজয়, রহস্য, মানসিক দ্বন্দ্ব ও চাপ, চরম দুর্গতি তবুও আশাবাদের এবং মুক্ত তবে জটিল সম্পর্ক নিয়েই “খোলা সম্পর্ক” উপন্যাস।
ঢাকা শহরের জনাকীর্ণ একটি এলাকায় বেড়ে উঠা মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে রাইমি, পেশায় একজন সাংবাদিক, চারকুল ছাপিয়ে যখন প্রখর বিষণ্ণতায় ভোগে তখন জীবনের চলতি পথে আবিষ্কার করে তার থেকেও অনেক বেশী ধূসর জগতে বিপন্ন মানুষের জীবন। যাদের প্রশস্ত এবং প্রাণবন্ত হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকে শীতল ধূসর দুঃখ জগত। আরও দুটি প্রধান চরিত্র হচ্ছে অনন্যা যে একজন মেধাবী বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার এবং সাংবাদিক। যূথিকা অপরূপা সুন্দরী বলরুম ডান্সার। এই তিন চরিত্রকে ঘিরেই ঘটনা চক্রে আসে অনেক চরিত্র।
‘ইন অ্যান ওপেন রিলেশনশিপ’- সহজভাবে বললে শুধুমাত্র একজন সঙ্গীর প্রতি শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পর্কে না থেকে পরস্পরের সম্মতিক্রমে একের অধিক শারীরিক ও মানসিক সম্পর্কে জড়িত থাকাকেই ওপেন রিলেশনশিপ বা উন্মুক্ত সম্পর্ক বলা হয়ে থাকে। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা, ধর্মীয় রীতি এ ধরণের সম্পর্ক নিয়ে যতই নেতিবাচক কিংবা ধিক্কারমূলক কথা বলুক না কেন, বহু আগে থেকেই এমন সম্পর্কের প্রচলন থেকে গিয়েছে, আছে আজও। যেমন, সুধীর চক্রবর্তী তাঁর রচিত ‘গভীর নির্জন পথে’ বইতে বাউলদের চিরন্তন অন্তর্যামী সত্ত্বার সন্ধান, ধর্মে ধর্মে অযৌক্তিক ভেদাভেদ ও তাঁদের যৌনজীবন নিয়ে লিখেছেন। সেখানে এমন উন্মুক্ত সম্পর্কের জের প্রেম ও সাধনার অংশ। এছাড়াও পাশ্চাত্য দেশগুলোর অনেক স্থানেই এ ধরণের সম্পর্কের আলাদা গ্রহণযোগ্যতা আছে। মূলত, এই ওপেন রিলেশনশিপকেই ‘খোলা সম্পর্ক’ নামে আখ্যায়িত করেছেন ঔপন্যাসিক চারুলতা আরজু।
উপন্যাসের মূল পটভূমি ঢাকায়। সাংবাদিক রাইমিকে নিয়ে। যে বিবাহ বিচ্ছেদের ট্রমা ও হতাশা কাটাতে চলে যায় সিলেট। বিত্তশালী কাজিন অন্তরার কাছে। সেখান থেকেই একটু একটু করে ডালপালা ছড়াতে থাকে চেনা, অচেনা, গোপন, নিষিদ্ধ নানা সম্পর্কের আখ্যান। একদিকে সামাজিক অবস্থানের গরিমা তো অন্যদিকে জটিল ও ভঙ্গুর কিছু মানবিক সংযোগের মুখোমুখি হওয়া মানুষ দেখে রাইমি। এ সব কিছুর মাঝেই রাইমির জীবনে প্রেম আসে, আসে নতুন করে স্বপ্ন দেখার প্রত্যশা। কিন্তু বদলে যায় অনেককিছুই আর ঘটনাচক্রে ঢাকা ফিরে এসে একটি টিভি চ্যানেলে কাজ নেয় সে। রাইমির জীবনের নতুন বাঁকবদল শুরু হয় এখান থেকেই। পরিচয় ঘটে ইংল্যান্ড থেকে বার এট ল করে এসেও বর্তমানে সাংবাদিকতায় জড়িত হয়ে যাওয়া ধারালো তরুণী অনন্যার সাথে। এরপর থেকে দুজনেই সমান্তরাল রেললাইনের মতো আগাতে থাকে নিজেদের অনুভূতি, কাজ, নীতি ও অভিজ্ঞতা দিয়ে। রাইমি এক সময় জানতে পারে অনন্যার অত্যাধুনিক জীবন, আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্বের আড়ালের জীবন নিয়ে। এটাও যেন খোলা সম্পর্কের আরেক রূপ। যেখানে মানুষ বাইরের ব্যক্তিত্ব নিয়ে ভাবে একরকম আর অন্তরালে আবিষ্কার করে অন্যকিছু। উপন্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এখানের বেশিরভাগ চরিত্রই নারীপ্রধান। এদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন সংকটে আছে। তবে সেই সংকটকে উজ্জ্বল র্যাপিং পেপারে মুড়ে তারা চলতে চায় মাথা উঁচু করে। আবার সেখান থেকে বের হয়ে না আসার জন্য মনের কোথাও তারা সুপ্ত বেদনাও রাখে। কেউ কেউ আবার সমালোচকের, ভুলশোষকের শাসনত্রাসন ভেঙ্গে ফেলতে এগিয়ে আসে। বাস্তবতার পাশাপাশি সামলে রাখে হৃদয়টাকেও। তবে নারীপ্রধান বয়ান হলেও, কাহিনির এক পর্যায়ে কলগার্ল ধর্ষণের যে ঘটনায় সামাজিক সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, সেখানে দেখা যায় দিনশেষে দুর্নীতিতে আক্রান্ত সমাজ ব্যবস্থার আসলে কোন লিঙ্গ নেই। নারী কি পুরুষ উভয়েই সেখানে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
এই উপন্যাসের শুরু মূল চরিত্র রাইমিকে দিয়ে হলেও শেষ পর্যন্ত গন্তব্যের কাছাকাছি আসলে উজ্জ্বল হয়ে উঠে অনন্যা। আর পুরো উপন্যাস জুড়ে নানা সম্পর্কের জের ধরেই আলো অন্ধকারময় এক সমাপ্তি আসে কাহলিল জিব্রানের এক উক্তি ধরে-
“ Love one another but make not a bond of love: let it rather be a moving sea between the shores of your souls. ”
‘খোলা সম্পর্ক’ উপন্যাসটি চারুলতা আরজুর প্রথম উপন্যাস। প্রথম উপন্যাস বলেই বইটি পড়ার জন্য আগ্রহ ছিল। পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে, খুব বড় ও জটিল একটি পটভূমি নিয়ে লিখতে বসেছেন তিনি। সহজ দৃষ্টিতে শুদ্ধ সমাজ ও পারিবারিক বন্ধনের যে রঙিন ধূলি আমরা চোখে মেখে রাখি তার অতলে হাতুড়ি দিয়ে গল্প বলা সহজ কিছু নয়। তবে চারুলতার কাহিনিতে সেই চেষ্টা দৃশ্যমান। গল্পের মধ্যে গল্প বলায় তিনি সাবলীল। আর প্রোটাগনিস্ট বলেই তাকে পাঠকের চোখে ভালো লাগাতে হবে এমন কোন দায়বদ্ধতায়ও তিনি নেই। পাঠকের চোখে মুগ্ধতা আঁকার চেয়েও তিনি নিজের ভাবনার জগত তুলে ধরতে বেশি আগ্রহী। এই স্পষ্টতাটুকু প্রশংসনীয়। তবে উপন্যাসে বিষয়বস্তু অনুযায়ী এই কাহিনি ও কিছু চরিত্রের ব্যাপ্তি আরও বৃস্তিত হবার দাবী রাখে। তাই, পাঠক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে আশা করছি ঔপন্যাসিক এই দিকগুলো পরবর্তী লেখার ক্ষেত্রে বিবেচনা করে দেখবেন।
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া "খোলা সম্পর্ক" বইয়ের রিভিউ: লেখিকাঃ চারুলতা আরজু
মানব মন বিচিত্রতায় পরিপূর্ণ। কখন যে কি চলে তা বোধহয় স্বয়ং যে চিন্তা করছে সেও সবসময় বুঝতে পারেনা। কিছুটা আবেগ আর কিছুটা সংশয় মিশ্রিত মিশ্র অনুভূতির একটা দোলাচলে দুলতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যেই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা অন্যের খুঁত ধরতে পছন্দ করি, আদতে সেই একই বা কাছাকাছি কাজ নিজে করলে কোনো না কোনো একটা অজুহাত কিংবা যুক্তি ঠিকই দাড় করিয়ে নেই। আবার কখনও কখনও একটা তীব্র অপরাধবোধও ভেতরে ভেতরে কুড়ে খেতে থাকে। মনের এবং সম্পর্কের এই দোলাচলে দুলতে থাকা তিনটি চরিত্র এবং কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে সমকালীন উপন্যাস "খোলা সম্পর্ক"।
বইটির নাম শুনে যতটা সহজ লাগছে আদতে সেটি তা নয়। বেশ গভীর এবং ভাবনার খোরাক রয়েছে যা পাঠকের মনকে নাড়া দিবে। সম্পর্কগুলোকে উপর থেকে দেখতে যতটা সহজ মনে হয় এর শাখাপ্রশাখা ঠিক ততটাই গভীর এবং অস্পর্শিত। সবচেয়ে বেশি যেই ব্যাপারটা ভালো লেগেছে তা হল বইটা নিছক নায়ক নায়িকা কেন্দ্রিক প্রেমের গল্পকাহিনী নয় বরং সমাজের কিছু বাস্তব সম্পর্ক এবং তার উত্থান পতন আর সামাজিকতার ভীড়ে অসামাজিক কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে গঠন করা হয়েছে।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
উপন্যাসের রাইমি চরিত্রটা একটু ভিন্ন ধাঁচের। তাসের ঘরের মত নিজের সাজানো গুছানো সংসারটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর যখন পৃথিবীর সবকিছু বিষাদময় বলে ঠেকছিল ঠিক সেইসময় সে আশ্চর্যজনক ভাবে আবিষ্কার করে তার অত্যন্ত কাছের একজন মানুষের জীবনের অবস্থা অত্যন্ত স্পর্শকাতর সম্পর্কের মায়াজালে আবদ্ধ। এমনকি সেই পরিচিত মানুষের পরিবারের কলঙ্কজনক ঘটনাগুলো তো আরও বিভৎস ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অমানবিক। যার মধ্যে সাফিনা খালা এবং ফাহমিদা বেগম চরিত্রটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবুও এমন একটি পরিবারের একজনের প্রতি মেয়েটির কেমন যেন এক টান অনুভব হয়। কাজটি ভালো না মন্দ সেটি নিয়েও নিজের মনে বিভ্রান্ত তৈরী হয়। এসবের দোলাচলে হঠাৎই নিজের মন দিয়ে বসেই বুঝতে পারে কোথাও একটা ছন্দপতন হচ্ছে। কিছু যেন ঠিক নয় এবং তার সেই ভাবনাকেই দূরে সরাতে শুরু করল নতুন করে পথচলা। তবে এখানেও যেন আরেক চমক অপেক্ষায় ছিল।
নারীবাদী ও নারীবিদ্বেষী আখ্যায়িত এক পাবলিক ফিগারের সঙ্গে সে কাজ করার সুযোগ পায়। কিন্তু সেখানেও যেন সবকিছু ঠিকঠাক ছিলনা। চেনা মুখোশের আড়ালে অচেনা মানুষে ভর্তি ছিল সেটি। আন্তরিকতা থাকলেও কিছু কিছু মানুষ অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়েও সেটিকে হালাল করার বেশকিছু নাম দিয়েছিল। তাতে করে ঘরের বিরিয়ানী আর বাইরের পান্তাভাত দুটোই যেন সমান তালে টিকে থাকে।
তবে রাইমি যেই উদ্দেশ্যে কাজটাতে জয়েন করেছিল সেটার একটি ঘাটতি থেকে যাচ্ছিল। পারিবারিক টেলিভিশন চ্যানেল হওয়ার জন্যই নিজের ভাইয়ের মেয়েকে ইংল্যাণ্ড থেকে বার এট্ ল করিয়ে এনে সাংবাদিকতায় এবং টিভি শো অ্যাংকরিং এর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। ফলে মেয়���টিকে দেখলে অনেকের হিংসে হত এবং রাইমিও ছিল সেই দলে। আর কপাল এমন ওই অনন্যার টীমেই রাইমিকে কাজ করতে বলা হয়। ফলে কাজের সুত্রে মেয়েটির সঙ্গে রাইমির একটা অলিখিত বন্ধুত্ব হয়ে যায় যেখানে সে জানতে পারে ওর জীবনের অত্যন্ত গোপন আর ভীষণ কষ্টের কিছু কথা। যেসব কষ্ট রাইমির সামান্য দুঃখকেও হার মানাবে। ঠিক ওই একই সময় কাজের সুত্রে একটি বারবনিতার সাক্ষাৎকার নিতে গেয়ে দেখে গোটা সমাজের নামীদামী লোকেদের গোপন চাহিদার খোরাক একজন মেয়েকে বীভৎসভাবে ধর্ষণ করা হয় আর দিনশেষে সেই অন্যায়কারীর সঙ্গেই আপোষ করে বারবনিতা মেয়েটি নিজের জীবনকে নতুনভাবে শুরু করে। কারণ তার কাছে বেচে থাকার ইচ্ছে প্রবল ছিল।
এছাড়াও রয়েছে আরও একটি চরিত্র যেখানে বোঝানো হয়েছে পরকিয়া শব্দটি অনেক খারাপ তবে দূর্ধর্ষ প্রেম বললে যুক্তিটা ধোপে টিকে। অর্থাৎ বউ বাচ্চা বাড়িতে রেখে অনৈতিক সম্পর্কগুলো আদতে সময় ক্ষেপন। এগুলো ভালোবাসা নয়। নিছক সময়কে কাজে লাগানো আর সেই সঙ্গে বেচে থাকার জন্য একটা ক্ষনিকের সেটেলমেন্ট। যার পারমানেন্ট সলিউশন নেই। অর্থাৎ, কিছু কিছু সম্পর্কের কোন নাম না থাকা সত্বেও অধিকার যেমন জন্মায় তেমনি সেই অধিকার চট্ করে হরনও করে নেওয়া যায় না। কারণ ততদিনে সেটির শাখাপ্রশাখা অনেক গভীরে বিস্তার করে থাকে। চাইলেই ঝেড়ে ফেলা যায় না।
মোটকথা এই সম্পর্কের সঠিক কিংবা বেঠিক; সামাজিক নাকি অসামাজিক কোনটি ঠিক সেসবের কিছু বিশ্লেষণ পুরো বইটি জুড়েই পাবেন। অতএব চিন্তা করে আনন্দ পাবেন এটা ভেবে যে আপনি সেখানে থাকলে কিভাবে রিঅ্যাক্ট করতেন বা করবেন। অতএব এসব বাস্তব ঘটনাগুলোকে একটি মলাটে পেতে পড়ে দেখুন সমকালীন উপন্যাস "খোলা সম্পর্ক" বইটি। লিখেছেন: চারুলতা আরজু।
শিক্ষনীয়:
- ছোটবেলায় মুরুব্বিদের কাছে একটা কথা শুনেছিলাম..."দূর থেকে সরষে গাছ অনেক ঘন লাগে"। সত্যিকার অর্থে বাস্তবেও তার ভুরি ভুরি প্রমাণ মেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাঁতের পাটি বের করে হাসলে কিংবা স্বামী-স্ত্রীর লুতুপুতু ভালোবাসা দেখে এটা ভাববার কোনোই কারন নেই যে তারা ভীষন সুখী দম্পতি। বরং অনেক সময় মানুষজন ঠিক উল্টোটাই বোঝাতে ওখানে পোষ্ট করে থাকে। নিজেকে সুখী ভাবানোর একটা ছলনা মাত্র। তাই তাদের ওসব আবেগপূর্ণ পোষ্ট দেখে নিজের সাজানো সংসারে অশান্তির মাত্রা না বাড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ। পাশের মানুষটি যদি বুঝদার হয় তাহলেই বুঝবেন জীবনে আপনি যথেষ্ট সুখী।
- দ্বিতীয়ত, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক সেটা যেমনই হোক না কেন, সেটি এককথায় অসামাজিক এবং অনৈতিক। একে গালভরা সব ভালো ভালো নাম আর যুক্তি দিয়ে যতই হালাল বলুন না কেন, আপনার পাশের মানুষটিও এমন করলে কিছুতেই আপনিও মেনে নিতেন না। এটাই বাস্তব। তাই বৈবাহিক সম্পর্কে যদি আগ্রহ কাজ না করে তবে সেই মিথ্যে সম্পর্ক থেকে পাশের জনকে মুক্তি দিয়েই যা ইচ্ছে করেন। তবুও ঘরের বিরিয়ানী আর বাইরের পান্তাভাত একত্রে টেকাতে যাবেন না। আপনি হয়তো জানতেও পারবেননা নিজের অজান্তেই দুটো মানুষকে আপনি দুঃখী করে দিলেন।
- সবথেকে ইম্পরটেন্ট ব্যাপার হল পরিবারের মুরুব্বি বা গুরুজনদের ভূমিকা তাদের সন্তানের প্রতি। প্রত্যেকটি সন্তান তার বাবা মায়ের অনেক আদরের হয়। তাদের কোন একজন অকালে ঝরে গেলেই অনেকসময় দেখা যায় বাবারা সৎমা নিয়ে আসে। তবে আমার মনে হয় এক্ষেত্রে একটু সময় নিয়ে সন্তানের মতামত নিয়ে কিংবা তাকে যথাযথ ভাবে বুঝিয়ে তারপর আনলে ব্যাপারটা ভালো হয়। নয়তো ডিপ্রেসন থেকে সেল্ফ হার্মিং টেন্ডেসি গড়ে ওঠে শিশুমনে যেটা পরিনত বয়সে গিয়ে ভয়ানক আকার ধারণ করে বসে। তাই প্রতিটা প্যারেন্টসদের উচিৎ সন্তানকে সময় নিয়ে বুঝিয়েই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা।
লেখিকা আপুকে ধন্যবাদ অন্যরকম চিন্তাশীল একটি উপন্যাসকে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য। অপেক্ষায় রইলাম এমন আরও গল্পের জন্য।
কলমে: সারাহ্ তৌফিক অক্সফোর্ড, ইংল্যাণ্ড থেকে ১ জুন ২০২২!
This entire review has been hidden because of spoilers.