ক্রাইম রিপোর্টার সিদ্ধার্থর জীবনে একদিকে সুদক্ষিণা, তার হারিয়ে যাওয়া প্রেম; অন্যপ্রান্তে তৃষ্ণার্ত উন্মুখ পরস্ত্রী, তনিমা। তিন মানব-মানবী, তাদের চারপাশে অনেক সাদা কালো চরিত্রের ভিড়। আর, আখ্যানবৃত্তের বাইরে নিভন্ত দৃষ্টিতে রঙ্গভূমির দিকে তাকিয়ে থাকেন বৃদ্ধ সোমশেখার।
💠সৌরভবাবুর লেখার সাথে প্রথম পরিচয় হয় যখন ক্লাস এইট এ পড়ি, আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী তে বেরিয়েছিল 'মেঘ ছেঁড়া রোদ'। লেখার গুণগত মান বিচার করার মতো বোধশক্তি তখনও হয়তো হয়নি, কিন্তু ওই ছোটো বয়সেই উপন্যাসটা পড়ে ঝরঝর করে কেঁদেছিলাম এটুকু স্পষ্ট মনে আছে। কী অসম্ভব পরিমাণ স্ট্রাগল সদ্য বাবা হারানো ওইটুকু বাচ্চা ছেলের! বয়সের তুলনায় তখনই সে হয়ে উঠেছিল অনেক পরিণত। 💠 'গ্রন্থি' তে প্রথমেই আমাদের পরিচয় হয় বৃদ্ধ সোমশেখর বাবুর সাথে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধের জীবন, ছেলে ও বৌমা থাকা সত্ত্বেও ভীষণ ভাবে নিস্তরঙ্গ এবং নিঃসঙ্গ। সময় কাটতে চায় না বলে তাই তিনি বেশিরভাগ সময়ই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। 💠 গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সিদ্ধার্থ একজন ক্রাইম রিপোর্টার,তিনি ভাড়া থাকেন সোমশেখর বাবুর বাড়িতেই। এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে অনেক কষ্টে মানুষ হওয়া সিদ্ধার্থ আজ একজন সফল পুরুষ। কিন্তু তার মন মাঝে মাঝেই অভিমানের চাদরে ঢেকে যায় পুরোনো প্রেমিকা সুদক্ষিণার জন্য, যে তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। 💠 কলেজ ছাত্রী প্রাণচঞ্চল সুদক্ষিণাও সিদ্ধার্থ কে ভুলতে পারে না, কিছু অপারগতার কারণে। এক অন্ধকার অতীতের কাছে হার মেনে সে তাকে ছেড়ে চলে এসেছিল। কী সেই অতীত? 💠অপরদিকে সোমশেখর বাবুর পুত্রবধূ তনিমা যখন স্বামীর অন্যায় অত্যাচারে জর্জরিত তখনই সে সিদ্ধার্থর সাথে গড়ে ওঠে তার এক অবৈধ সম্পর্ক, তাকে অবলম্বন করেই তনিমা নতুন ভাবে বাঁচতে চায়। 💠এরপরই সুদক্ষিণার সাথে সিদ্ধার্থের আচমকা একদিন দেখা হয়ে যায়। কী পরিণতি হয় এদের সকলের? দুজনের অন্ধকার অতীত কাটিয়ে কি তারা ফিরতে পারে একে অপরের কাছে? জানার জন্য অবশ্যই পড়তে হবে 'গ্রন্থি'। 🍂 কাহিনীর মধ্যে সেইভাবে চরম ওঠাপড়া না থাকলেও লেখকের অদ্ভুত লেখনীশৈলী আপনাকে পুরোটা পড়তে বাধ্য করবে। উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র নিজগুনে স্বতন্ত্র হলেও তারা প্রত্যেকে কোথাও যেন একই সুতোয় বাঁধা। তাই এরইমধ্যে মনের কোণে এক আলাদা জায়গা করে নিয়েছে 'গ্রন্থি' ❤️
এর আগে সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের দুই তিনটে লেখা পড়েছি। যেমন 'প্রথম প্রবাহ', 'ধুলোখেলা'। প্রথম প্রবাহ - আমার খুবই প্রিয় একটা উপন্যাস। আজ পড়লাম সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের লেখা প্রথম উপন্যাস, 'গ্রন্থি'।
ক্রাইম-রিপোর্টার সিদ্ধার্থের জীবনে একদিকে সুদক্ষিণা, তার হারিয়ে - যাওয়া প্রেম ; অন্য দিকে ভাড়া বাড়ির মালিকের তৃষ্ণার্ত উম্মুখ পরস্ত্রী, তানিমা। তিন মানব-মানবী, তাদের চারপাশে অনেক সাদা কালো চরিত্রের ভিড়। আর, আখ্যানবৃত্তের বাইরে নিভন্ত দৃষ্টিতে রঙ্গভূমির দিকে তাকিয়ে থাকেন বৃদ্ধ সোমশেখর।
সৌরভ বাবুর, অন্য উপন্যাস গুলোর মত এই উপন্যাসের প্রধান আকর্ষণ চমৎকার লেখনশৈলী। প্রত্যেকটা চরিত্র খুব সুন্দর করে গড়ে তোলা হয়েছে। বৃদ্ধ সোমশেখরের কথাগুলো গুলো মনে হচ্ছিল, আমাদের চারপাশে সমস্ত বয়স্ক মানুষের উপলব্ধি।
কিন্তু হঠাৎ করে যেন শেষ হয়ে গেল, সেই সমস্ত বদমাশ গুলোর কিছু হল না, তানিমার শেষ পরিণতি কী হল জানা গেল না।