অম্বুবাচি-অন্তিম পর্ব; পরাধীন ভারতের একটি বাঙালি যৌথ পরিবারের কয়েকটি বছরের ঘটনার দলিল। বিপ্লবী সূর্যশঙ্কর তার প্রতিজ্ঞা পূরণে বদ্ধ পরিকর। একদিকে প্রিয় সম্পর্কগুলির উপর ভালোবাসা আর কর্তব্য পালনের তাগিদ অন্য দিকে দেশপ্রেম। বিপ্লবীদের সঙ্গে নানা পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি নিয়েই তার চিন্তার জগৎ পরিপূর্ণ। জ্যোতির্ময়ীর দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নেয় কুমুদ। বাঙালি পরিবারের তৎকালীন জীবনযাত্রার নানা টানাপোড়েন আর এক মিষ্টি প্রেমের ফল্গুধারা, অম্বুবাচি-অন্তিম অধ্যায়।
শেষ করলাম অম্বুবাচি সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ খণ্ড। খুব মিষ্টি একটা সিরিজ পড়লাম । এই বইটা নিয়ে বেশি কিছু কথা বললে spoilor চলে আসবে, যদি কেউ আগের পর্ব গুলো না পরে থাকে । তাই অল্প করে কিছু কথা বলে যাই ।
🍂এই অন্তিম পর্ব যখন শুরু হয় সেটা ১৯২১ সাল, আর শেষ যখন হয় সেটা ১৯২৮। অর্থাৎ দীর্ঘ ৭ বছরের ও দীর্ঘ সময়কাল নিয়ে ১৬০ পাতার এই গল্প। তবে এই পর্বে এত কিছু আছে যেটা একটু বড় পরিসর দাবি করে । বিংশ শতাব্দীর বাঙালি যৌথ পরিবারের দলিল এই গোটা সিরিজ টি । ছিলো পরিবারের টানাপড়েন, বাল্য বিবাহ, ইংরেজ দের শাসন, বিপ্লবী কার্যকলাপ আর অনেক মিষ্টতা । পুরোপুরি বাঙালিয়ানায় ঠাসা একটা উপন্যাস । এই তিনটি পর্বের প্রধান চরিত্র কুমুদ ও বিম্ববতী হলেও আরও অনেক চরিত্র আছে যেগুলি প্রাধান্য পেয়েছে লেখিকার কলমে ।
ব্যক্তিগত অভিমত 🔹 এই পর্বে অনেক কিছু ঘটনা আছে, আগের পর্বের অনেক ঘটনা পূর্ণতা পেয়েছে এই গল্পে । লেখিকার ভাষার সরলতা যেন আমাকে সেই সময় নিয়ে গিয়েছিল। 🔹 প্রধান চরিত্রের বিচরণ অনেকটাই কম এই পর্বে । এটা দ্বিতীয় পর্বেও লক্ষ্য করেছিলাম । কিন্তু অন্য চরিত্ররা এতটা প্রাণবন্ত যে চোখ সরানো যায় না। 🔹 তবে এই গোটা সিরিজ এ আমার প্রিয় চরিত্র কুমুদ এর সেজবউদি কামিনী । এই চরিত্র টা দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা । 🔹 বাঙালিয়ানার সাথে আধুনিকতার প্রমাণ মেলে লেখিকার কলমে, তখনকার দিনে বিধবা বিবাহ এর মতো জিনিস কে কী সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন । 🔹 তবে আমার মনে হয় এই পর্ব টি আরও একটু বড় হতে পারত । অনেক কিছু ঘটেছে এই অন্তিম পর্বে, যেটা আরও একটু বৃহত্তর পরিসর দাবি রাখে । 🔹 এই গোটা সিরিজ এর তিনটি বইয়ের প্রচ্ছদ দারুণ লেগেছে ।
🍂এই পর্ব টা বাঁচিয়ে রেখেছিলাম কারণ এটা পড়লেই তো শেষ হয়ে যাবে কুমুদ, বিম্ববতী, কামিনীদের গল্প। গল্পের শেষে মনে হচ্ছিল yeh dil mange more! এদের বিদায় জানাতে মন চাইছিল না । মনের কোণে জায়গা করে নিয়েছে এই সিরিজ।
🍂📖বইয়ের নাম - অম্বুবাচী (অন্তিম পর্ব)📖🍂 ✍️লেখিকা - মধুমিতা সেনগুপ্ত 🖨️প্রকাশক - বিভা পাবলিকেশন 📑পৃষ্ঠা সংখ্যা - ১৬০
🎀🌼পরাধীন ভারতে একটি বাঙালি যৌথ পরিবারের কয়েকটি বছরের ঘটনার দলিল । বিপ্লবী সূর্যশঙ্কর তার প্রতিজ্ঞা পূরণে বদ্ধ পরিকর । একদিকে প্রিয় সম্পর্কগুলির উপর ভালোবাসা আর কর্তব্য পালনের তাগিদ অন্য দিকে দেশপ্রেম । বিপ্লবীদের সঙ্গে নানা পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি নিয়েই তার চিন্তার জগৎ পরিপূর্ণ । জ্যোতির্ময়ীর দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নেয় কুমুদ । বাঙালি পরিবারের তৎকালীন জীবনযাত্রার নানা টানাপোড়েন আর এক মিষ্টি প্রেমের ফল্গুধারা অম্বুবাচি — অন্তিম পর্ব । বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকের প্রেক্ষাপটে এই উপন্যাসের সূচনা । তৎকালীন বাঙালি যৌথ পরিবারগুলির মধ্যে প্রচলিত রীতিনীতি , বাল্য বিবাহের ভালোমন্দ নিয়েই এই উপন্যাস । শুদ্ধ বাঙালিয়ানার স্বাদে পরিপূর্ণ মিষ্টি প্রেমের উপন্যাস ‘অম্বুবাচি ’ ! পুরনো দিনের বাঙ্গালি বনেদী বাড়ির বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান , সাথে অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া দুজনের মিষ্টি প্রেম সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ্য ! আর প্রচ্ছদ এর কথা না বললে অন্যায় হবে , কারণ প্রচ্ছদ টাই আমাকে এই বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করেছিল ! এই তিনটি পর্বের মধ্যে দিয়ে কুমুদ বিম্ববতির ছোট থেকে বেড়ে ওঠা দেখলাম । আজ ভাবতেই অবাক লাগছে ,যে বিম্ব ছোট্ট একটি পুতুলের মত ছিল , সেই বিম্ব আজ মা হয়েছে , হয়ে উঠেছে স্বয়ংস্পূর্ণআ । আজ সে সংসার সামলাচ্ছে । অপরদিকে যে কুমুদ বাতাবি গেছে উঠে বাতাবি পারতো , সে আজ একজন দায়িত্ববান ডাক্তার !! সত্যিই এইভাবেই তো পরিবর্তন আসে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে । এতটাই মিশে গেছিলাম ওদের সাথে যে অন্তিম পর্ব, পড়তে পড়তে বারবার ভয় হতো যদি এই পর্বেও আগের পর্বের মত সেই ভয়ানক কিছু ঘটে, যদি আবারও অন্ধকার নেমে আসে তাদের জীবনে, আবারও যদি ফিরে আসে সেই চিরবিচ্ছেদের মর্মান্তিক যন্ত্রণা ! এই উপন্যাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় টিই হলো পারিবারিক বন্ধন । কোনো সম্পর্কের জটিলতা নেই , কোনো আক্রোশ, হিংসা- প্রতিহিংসা নেই । দায়িত্ব , কর্তব্য, ভালোবাসা , আবেগ এগুলোই এই উপন্যাস কে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করেছে !!🌼🎀