Shoroli Shilon's Blog, page 2
July 23, 2023
কয়েকটা মাছ এবং সব এলোমেলো
একটা পঁচা পুকুরে কিছু মানুষ বড়শি পেতে বসে আছে। খুব বেশি মাছ নেই পুকুরে। সবার ভেতর টানটান উত্তেজনা। দক্ষতা আর ভাগ্য মিলে বিশাল এক প্রতিযোগিতা। সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে এসেছে। কারো বড়শিতে মাছ ধরা পড়ছে না। লোকে বলাবলি করছে দু’দিন আগে নাকি কারা এসে সমস্ত পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরে নিয়ে গেছে। তবুও কিঞ্চিত আশায় সামান্য অর্জনের জন্য সারাটাদিন ধরে এখানে পড়ে আছে সবাই। বহু প্রতীক্ষার পরে হঠাৎ একজনের বড়শিতে একটা মাছ উঠলো। হুলুস্তুল কান্ড বেঁধে গেলো সবার মধ্যে। চরম হিংসা থেকে শুরু তর্কাতর্কির এক পর্যায় রুপ নিলো ধস্তাধস্তিতে। শেষমেশ ওই লোকের কপালে মাছ তো রইলোই না বরং পরদিন সকালে গ্রামবাসীরা তাকে আবিষ্কার করলো মাছ হয়ে পুকুরে ভাসতে।
এক লাফে ঘুম থকে উঠে বসলো নাহিদ। নিজের শরীর ভালোমত ছুঁয়ে দেখছে। মাছ নয়তো সে! এমন বিদ্ঘুটে স্বপ্ন ও আগেও দেখেছে। এমন সব স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি আদৌ আছে? খুব জানতে ইচ্ছে করে ওর। অসময়ে ঘুমানোর এই একটা অসুবিধা! কিছুই ভালোলাগেনা এ সময়ে। নিজেকে নবজাতক শিশুর মত মনে হয়। আশেপাশের সবকিছু অচেনা-অজানা লাগে। বিশ্রী এক ফ্যাকাশে অনুভূতি!
নাহিদরা দুই ভাই-বোন। ছয় বছর বয়সে বড় বোন এখন শশুরবাড়িতে কলুর বলুদ খাটছে। মাও বাসায় নেই আজ। ছোট খালার বাসায় গিয়েছে। আর বাবা অনেক আগেই জ্ঞাত হয়েছেন।
ঘড়িতে আটটা বেজে দশ মিনিট। বাসি ভাত আর একটা ডিম ভাজা দিয়ে রাতের খাবার শেষে ছাদে গিয়ে একটা সিগারেট ধরালো। আজকের রাতটা নিস্তব্ধ আর তারা গুলো অন্যান্য রাতের তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল। পুরো আকাশটা আজ বেশ আড়ম্বর করে সেজেছে। তারা গুনতে গুনতে এখন আকাশকুসুম কল্পনা করছে নাহিদ। অনেক টাকা দরকার ওর। টাকার বিছানায় শুয়ে শুয়ে ওসব অদ্ভুত স্বপ্ন দেখতেও আরাম লাগার কথা! ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে গেলে খেই হারিয়ে ফেলে এজন্য ভাবনা-চিন্তাও বাদ দিয়ে দিয়েছে। একটা সস্তা চাকরি পেতে গেলেও যে হাড়ভাঙাখাটুনি চাই!
পরেরদিন সকালে খুব তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়।উদ্দেশ্য, টিউশনির টাকা আনতে যাবে। ছাত্রের মা বলে দিয়েছে এরপর থেকে আর পড়াতে যেতে হবে না। কেনো যেতে হবে না ও জানতে চায়নি। যার যা ইচ্ছা করুক! এটা নতুন কিছু নয়!
বাসায় ফিরে টের ও পেলো মা চলে এসেছে। রান্নাঘর থেকে লাউ এর তরকারির মিষ্টি ঘ্রাণ আসছে। কিছু টাকা রেখে বাকিটা মায়ের কাছে দিয়ে দিলো সে। স্বামীর পেনশনের টাকা আর টুকটাক বুটিক এর কাজ করে সংসার চালান নাহার বেগম।
দুপুরের খাবার সেরে বিশাল এক ঘুম দিয়ে নাহিদ দেখলো বাসায় কেউ নেই। একটা কল আসলো আননোন নাম্বার থেকে। রিসিভ করে জানতে পারে একটা ফার্ম থেকে কলটা এসেছে। দু’মাস আগে যে চাকরির জন্য ও এপ্লাই করেছিলো সেখান থেকে ওকে ডেকেছে। ধুর! স্ক্যাম ছাড়া আর কিহ! পরে মেইল চেক করে দেখলো ঠিকই তো ও এপ্লাই করেছিলো সাথে সাথে এপোয়েন্টমেন্ট লেটার ও এসেছে। বলে দিয়েছে কবে কি করতে হবে। স্বপ্ন না বাস্তব বুঝতে পারছে না সে। সবকিছু একটা ঘোর মনে হচ্ছে। পাশে মায়ের ঘরে গিয়ে বুঝতে পারলো মা নেই। কোথায় গিয়েছে জানেনা। খালাকে ফোন দিলে উনি বললেন, ‘এই বোকা তুই কি পাগল হয়ে গেছিস নাকি আমার সাথে ফাজলামি করছিস? তোর মা কোত্থেকে আসবে?’ কিছু বোঝার বাকি রইলো না। সব কেমন গোলমেলে, ধোঁয়াশা লাগলো!
এর মাঝে কিছু সময় পার হলো। বিশাল বড় ধাক্কা আর ঘোর কিছুতেই কাটছে না। সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। বুঝে উঠতে পারছে না কীভাবে কি হয়ে গেলো!
এক মাস পর নাহিদ চলে গেলো ফার্মটাতে। এখানে আরো অদ্ভুৎ কান্ড যেটা ঘটলো সেটা হচ্ছে, তার পোস্টে আরো দুজনকে ডাকা হয়েছে। তিনজন একই সারির পরপর তিনটা চেয়ারে তিনজন বসা। পর্যায়ক্রমেঃ নীল, লাল, হলুদ। ফার্মের কেউ একজন তাদের তিনজনকে ৩ টা খাম দিয়ে গেলো। এবং সাথে বলা হলো যে খামে ছোট একটা লাল কাগজ মিলবে তাকে এই পোস্টটা দেওয়া হবে। নাহিদ খামটা খোলার আগে ওর বাম ও ডানে বসা দু’জনের খামের দিকে চোখ বুলালো। ফলাফলঃ তারা নিরাশ। তার খামেই যে কাগজটা আছে তা বুঝতে আর বাকি রইলো না। চরম উত্তেজনায় লোকটার কাছে কাগজ সহ খামটা ফিরিয়ে দিলো। ‘কংগ্রাচুলেশনস, ইউ আর জয়েনিং ফ্রম টুমরো।’ পেছন ফিরে দেখলো বাকি দুইজন লোক নেই। এক মিনিটে কোথায় যেন চলে গিয়েছে। এবার পাশের করিডোর এ দাঁড়িয়ে পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করলো নাহিদ। গ্যাসলাইটে আগুন জ্বালালো, সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎটাও চলে গেলো। ধারাম করে একটা শব্দ, নিজেকে আবিষ্কার করলো মেঝেতে। পেছনে সেই দুজন। ঝাপসা চোখে দু’জন কে চারজন দেখাচ্ছে। হাতে রডের মত কিছু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সাথে সাথে আরেকটা বারি দিলো ঠিক বুকের উপর। এবার তার হাত-পা, চোখ বেধে একটা বস্তায় ভরে কোথাও একটা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নাহিদ সব ভেতর থেকে সব টের পাচ্ছে কিন্তু ওর মুখ থেকে এক ফোঁটাও শব্দ বের করতে পারছে না। এ কেমন ধূম্রজাল এ পড়েছে ও? বারবার নিজের কাছে প্রশ্ন ছুড়ছে। হঠাৎ ভেতর থেকে রুক্ষ কন্ঠস্বর ভাসছে। ‘মালডারে এই পঁচা ডোবায় ফালায় দে। হালায় আমাগোর চাকরি খাইয়া ফালাইসে। ফালা অরে।’
নাহিদের হৃদ স্পন্দন শঙ্কিত অবস্থায়। মাছ হয়ে ভেসে না ওঠার করুণ আকুতি মিনতি জানাচ্ছে। হাতুড়ি পেটানোর মত করে ভারী কিছু বুকের উপর চেপে রাখা হয়েছে। উঠতে পারছে না। উঠতে গেলে আরো চেপে ধরছে। হঠাৎ তীব্র বজ্রপাতের সাথে বৃষ্টি শুরু হলো, বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা চোখের কাপড়কে আরো পুরু করে দিলো। অদ্ভুত এক অদৃশ্য শক্তি এসে কাপড়ের গিট আলগা করে দিতেই সে নিজেকে আবিষ্কার করলো তার ঘরের মেঝেতে। ঘামে ভেজা সমস্ত শরীর হাঁসফাঁস করছে।সেমিকোলন এর মত দীর্ঘ এক শ্বাস নিলো। আশেপাশে কেউ নেই। রান্নাঘর থেকে প্রেশার কুকারের উইসেল এর শব্দ আসছে।
এতক্ষণ যা যা ঘটেছে তার সবই কি স্বপ্ন দেখেছে নাহিদ? স্বপ্নের ভেতরে স্বপ্ন এবং সে স্বপ্নের ভেতরেও স্বপ্ন! নিজের গায়ে চিমটি কেটে নিশ্চিত হলো ঝড় থেমে গিয়েছে।
July 3, 2023
মধ্যরাত কিংবা ক্যাকোফোনি
ভয় জন্মেছিলো রাতে, অনেকরাতে। হলদে ফুসফুসে চিমনি বেয়ে আসা বাতাস আর ক্যাফেইন এর গাঢ় নিশ্বাস একাকীত্বের স্পর্শে যেন আরো বলিষ্ঠ হয়ে উঠছিলো। মধ্যরাতে টিভি বেয়ে ভেসে আসা ঝিরঝির শব্দ, রান্নাঘরে সিংক এর চকচকে শরীরে দু’য়েক ফোঁটা পানির নৃত্য আর ইঁদুরের দাঁত কুটমুটে অভিযান রাতের নিস্তব্ধতায় কোলাহল ডেকে আনে! ওপাশ থেকে পোলকা ডট টাইটা হ্যাংগার এর গলায় ঝুলে একবার ডানে আরেকডান বামে আর কিছুটা স্থির হয়ে বিড়বিড় করে, “রাত আর কত বাকি!”

তিন ঘন্টা তেত্রিশ মিনিট ধরে একটা চুয়িংগাম চিবোচ্ছে বর্গীয়-জ প্রথমাক্ষরের কেউ। পানসে গালে কামড় বসাতেই মনে পড়লো কেউ একজন তাকে মনে করছে। বাইরের জানালা দিয়ে দেখলো রাস্তায় কয়েকটা কুকুর ডেকে যাচ্ছে একনাগাড়ে। মাঝেমধ্যে টহল পুলিশের বাঁশির শব্দ। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে জেগে থাকার খোয়াইশ আরো বাড়লো। গ্যাসলাইটের আগুণ, মার্লবোরো এডভান্স। সিগারেটের ধোঁয়ায় অবশ ঠোঁটে বিরবির করে কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলো! কিছু একটা! কিন্তু কাকে? কে শুনবে?
ড্রয়ার থেকে একটা সেডিল ৫ এম.জি মুখে ছুড়ে দেয়। ফ্রিজ খুলে কাঁচের ঠান্ডা পানির বুদবুদ আকারে ভেসে ওঠা মাছের খাবি খাওয়ার মতন। খেয়াল করে দেখে, একবার বাম চোখ ছোট করে তো আরেকবার ডান। দেখতে দেখতে আস্ত ট্যাবলেট টাই গিলে ফেলেছে পানি ছাড়া। অন্ধকারে কটকটে সবুজ ডিম লাইটের আলো একটু আলোর নিশানা পেয়ে সমস্ত ফ্রিজের শরীরে লেপটে পড়েছে। টিকটিকি দেয়ালে বসে ঠিকঠিক করে। ঘড়ির কাঁটার শব্দ, কুকুরের ডাক, পুলিশের বাঁশি, ট্যাপের পানির আছড়ে পড়া আর বুকের ভেতর ড্রামস। অদ্ভুত সাইকেডেলিয়া!
মধ্যরাত পেরিয়ে এসেছে প্রায়। চারটে বেজে ছাপ্পান্ন মিনিট। লুসিড ড্রিমস এ জীবন্ত করুণ ক্যাকোফোনি কপাল জুড়ে হাতুড়ি পিটায়। এলার্ম বাজার আগেই উঠে পড়ে। অফিসে যেতে হবে যে! আগেরদিন ইস্ত্রি করে রাখা কালো শার্ট-প্যান্ট পড়তে ইচ্ছা করেনা। হঠাৎ করে ভ্যাপসা গরম ভেসে আসে। টলটলে জলে ভেসে ওঠা চোখে ঘুম চশমার চিকন ফ্রেম এ কয়েদীর মত নিষ্প্রভ। আরো একটা দিন, নতুন ভোর, কর্পোরেট জীবন যুদ্ধ, “ডু নট স্কিপ মিলস” টুং করে বেজে ওঠা, বাসে ঠাসাঠাসি করে ঘরে ফেরা, নিঃসঙ্গ রাত, সিগারেটের ধোঁয়া আর পোলকা ডট টাই এর ফিসফিসিয়ে বলতে থাকা, “রাত আর কত বাকি?”
May 25, 2023
Blue Tangerine
Once upon a time there was a girl. Let’s give her a name, a blue tangerine suits well. She used to dream about cascade of indigo skies. Her hand full of roses, sparkles in the eyes. Her vision was transparent, clearer the thoughts, infatuating to the heart.
She was a lullaby to the wind, whispers of her was the mellow to the earth. But oneday everything fell apart and she disappeared. What happened to her at the end? People asked and asked.
Maybe she fell on a lybrinth, passed into some oblivion or concealed with dark magic spells.
Oneday out of the blue the girl came from nowhere. That vivid jolliness, sparkles in the eyes, sweet corns on her smiles-all were missing. She now has become a total stranger with gloominess all over her face. Suppressing the dark clouds among her veins. Again people asked her about her departure but she couldn’t return their answers. How could she? Because only she knows she’s a mystery to herself.
January 6, 2022
An Endless loop
I outlived the night reluctantly, somehow. I sit under the same old sky with my eyes glittered with shining stars. I look at the moon. It reminds me of pain. It reminds me of the days when I felt shattered, terrible and intangible.

To find love where there are the valleys of uncertainty and the faces of the unknown is illusive there we dive. There we try, we try even harder to push ourselves changing into someone we fancy. We understand the superior feeling of loving someone or nurturing someone is greater than being loved. We start loving the fleeting moments. With wide eyes open we know the fact that we might get devastated. We fall, we try, we rise, we cry and we start loving despair like a bird humming to the soul. And then oneday we concede–”Sadness is poetry, where happiness is dim.”
July 16, 2021
The Soil Grins

পায়ের নিচে ধূসর মাটির আহাজারি। তারা ক্রন্দনে ফেঁটে পড়ে “তবে এর কি কোনো শেষ নেই?” তাদের বুক আজ স্তব্ধ। তারা দৈবদোষ বহন করে। এটাই কি তাহলে শাস্তি? আজ সাক্ষী তারা, সাক্ষী হাজারো গল্পের ভীড়ে পিষ্ট মনস্তাপ আর থেতলানো জীর্ণ মর্মযন্ত্রণারা। আহারে, কি যন্ত্রণা!
বাতাসে লাশের গন্ধ। লাশেরা শেষমেশ অতল কক্ষে তাদের গৃহের সন্ধান পায়। উজ্জ্বল সোনালি পাতারা নিরুপায়, তারা এ বিশ্রী দমবন্ধকর গন্ধ সহ্য করতে পারেনা। তারাও কাঁদে, তবে এ কান্না শোক তাপের নয়, রেহাই এর ছন্দে মুক্তির প্রার্থনার। প্রিয় স্বজনের দীর্ঘশ্বাসে আকাশ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে, বাতাসে বৃষ্টির ফোঁটা। আর এদিকে মৃত লাশের সৎকারে কাকের দল হয়ে ওঠে তৎপর। আবার ও বোধহয় দূর থেকে লাল বাতির ক্রমান্বয়ে জ্বলে নিভে ওঠার সঙ্কার পালা। কোথা থেকে ক্ষণে ক্ষণে মৃদু শব্দ ভেসে আসে। অত:পর, প্রিয় মানুষের কান্নায় ফেঁটে পরে সমস্ত প্রিয় অপ্রিয় শহর-নগর-বন্দর।
প্রিয় আনা,
সেদিন কেমন লেগেছিলো তোমার?
Grey dust beneath my feet moaning. They burst into tears, “Is this a never ending loop?” Chests are heavy, rigid like a mahogany tree. They carry misfortune, they witness thousand stories wrapped in heartache, grief and misery. What a burden!
Corpse concedes it as their belonging. The bright golden leaves are helpless, they can’t stand this awful suffocating smell.They also weep, but this weeping is not of mourning, but the prayer for liberation in the rhythm of relief. The sky sighs and cries too, raindrops fall from the air. Crows become brisk in burying the dead body. The red swinging signal floating around and suddenly vanished in somewhere; Maybe where I stood.
Henceforth, all the beloved unpleasant city-ports bursting into the tears of the beloved people.
Dear Anna,
How did you feel that day?
Shoroli Shilon's Blog
- Shoroli Shilon's profile
- 9 followers

